রাজপথে আন্দোলন অনেকটাই জোরদার করতে শুরু করেছে বিএনপি। আন্দোলন যাতে ক্ষমতাসীন দল ও সরকার ভেস্তে দিতে না পারে সে জন্য নেতাকর্মীদের সতর্ক থেকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এমন কথা বলেন।
সেই সঙ্গে তিনি সরকার হটানোর এবারের আন্দোলনই ‘শেষ লড়াই’ বলে নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের এবার হচ্ছে শেষ লড়াই। এবার আমাদের জীবন-মরণ লড়াই করতে হবে। এবার সেই জাগপার কথায় বলতে চাই, হয় জীবন না হয় মরণ।
‘আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে একটা দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলি, যা ওই উত্তাল সমুদ্রে যে সুনামি হয় সেই সুনামির মতো এই সরকারকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। দেশনেত্রীকে মুক্ত করব, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনব, এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।’
ফখরুল ইসলাম নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘আমরা আজকের এই ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অত্যন্ত সংকটময় মুহূর্তে পালন করছি। আমাদেরকে প্রতিটি পদক্ষেপ অত্যন্ত সর্তকতার সাথে নিতে হবে, যেন কোনো মতেই তারা সুযোগ না পায়; আমাদেরকে তারা ভেঙে দিতে বা গুঁড়িয়ে দিতে না পারে।
পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান রেখে তিনি বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে নই, আমরা কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে নই। আমার ট্যাক্সের পয়সায় তাদের বেতন হয়, তাদের সংসার চলে, তাদের ছেলে-মেয়েরা লেখা-পড়া শিখে, তাদের বউ-বাচ্চাদের কাপড় দেয়। তাই বলে তারা আমাদের লোকজনকে গুলি করে মেরে ফেলবে, এটা কী আমরা মেনে নেব?
‘আমরা বলতে চাই, আপনাদেরকে আমরা কখনো প্রতিপক্ষ বানাতে চাই না। আপনারা দয়া করে জনগণের প্রতিপক্ষ হবেন না। আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু সাহেবে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের একটা প্রতিষ্ঠান র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আপনারা কি চান পুলিশের ওপর এভাবে নিষেধাজ্ঞা আসুক, আপনারা কি চান এই বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের ওপর স্যাংশন জারি করুক? নিশ্চয় চায় না।’
‘আমরা সবাই আশা করব, পুলিশ জনগণের যে ন্যায্য অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার সেজন্য তারা সহযোগিতা করবে এবং যারা অন্যায় করছে, অবিচার করছে, যারা গুলি করে হত্যা করছে তাদের বিরুদ্ধে জনগণ জেগে উঠেছে, লড়াই শুরু করেছে, সেই লড়াইয়ে তারাও শরিক হবেন- এই আশা আমরা করতে পারি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অনেক চরাই উতরাই পার হতে হয়েছে। বার বার আঘাত এসেছে বিএনপিকে ধবংস করবার জন্যে, বার বার বিএনপিকে শেষ করে দেয়ার কাজ হয়েছে। কিন্তু বিএনপি কখনো দমিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি, বিএনপি প্রতিবারই ধবংসস্তুপের মধ্যে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে। এ দেশের মানুষকে সামনে নিয়ে আবারও তারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে গেছে বার বার।’
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনাসভার শুরুতে জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজনে ‘হরিলুটের রাজা’ নামের পথনাটক মঞ্চস্থ হয়।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুবদলের সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন ও কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন:বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব অনিয়ম ও ব্যত্যয় ঘটেছে সেগুলো নির্বাচন কমিশন সংস্কার বিষয়ক কমিটি চিহ্নিত করবে। এসব নির্বাচনে ভালো কিছু হয়ে থাকলে সেগুলোও চিহ্নিত করা হবে।
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। এ সময় তিনি কমিশনের অন্যান্য কার্যক্রমও তুলে ধরেন।
বদিউল আলম বলেন, ‘নির্বাচনি প্রক্রিয়াটা একদিনের বিষয় নয়। এটি একটি সাইকেল। এই সাইকেল পর্যালোচনা করে ব্যত্যয় যা ঘটেছে তা চিহ্নিত করে আমরা সুপারিশ করব।’
নির্বাচনে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সুপারিশ থাকবে। তবে সে কথা বলার সময় এখনও আসেনি। আমরা কর্মকর্তা এবং কমিশনের বিষয়ও পর্যালোচনা করব।’
বদিউল আলম বলেন, ‘কমিটি নির্বাচনি আইন-কানুন ও বিধিমালা পর্যালোচনা করছে। একটি ওয়েবসাইট তৈরি করছি। এতে কী থাকা উচিত তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের ফেসবুক পেজ হবে, ই-মেইল ঠিকানাও হবে।
‘সবার কাছ থেকে তথ্য, প্রস্তাব, সুপারিশ- এগুলো আমরা চাইব। ওয়েবসাইটটি ইসির ওয়েবসাইটের সাব-ডোমেইন হবে। এক সপ্তাহের মধ্যেই এসব হয়ে যাবে।’
ওয়েবসাইটে কী বিষয়ে মতামত চাওয়া হবে, সংবিধান সংস্কার নিয়ে কী আলোচনা করা হয়েছে- এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা লাইন ধরে ধরে পর্যালোচনা করছি। সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু নয়। যেদিন আমরা সুপারিশ সরকারের কাছে পাঠাব, সেদিন এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে।’
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির প্রধান বলেন, ‘সবচেয়ে বড় আইন হলো গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)। আরপিও আমরা গভীরভাবে পর্যালোচনা করছি। জাতীয় নির্বাচনের জন্য এটা মাদার অব ল।
‘এরপর সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন আছে, ভোটার তালিকা আইন আছে, ইসি সচিবালয় আইন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন আছে। এগুলো পর্যালোচনা করতে হবে। পর্যালোচনা করে সে বিষয়ে সুপারিশ করতে হবে। কমিশনের নিয়োগের আইন অগ্রাধিকার। সরকার যখন চাইবে আশা করি তখনই আমরা তাদের (উপদেষ্টা) একটা খসড়া দিতে পারব।’
‘না’ ভোট রাখার বিধানের বিষয়টি নজরে আনলে তিনি বলেন, ‘আমরা সবকিছুই বিবেচনায় নেব। যত মতামত আসবে পর্যালোচনা করব। নির্বাচন বিষয়ে যে কেউ যে কোনো মতামত দিতে পারবেন। উন্মুক্ত মতামত নেয়া হবে।’
বদিউল আলম আরও বলেন, ‘আমরা তো নিশ্চিত করতে পারব না যে কেউ অপকর্ম করবে না। তবে আমরা গাইডলাইন তৈরি করব। সিঁড়ির পাশ দিয়ে যেমন ব্যারিয়ার থাকে। কেউ যেন পড়ে না যায়। কেউ যদি ঝাঁপ দিতে চায় তাহলে তো কিছু করার নেই। কিন্তু আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করব এমন সব সুপারিশ করার, যেন একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত হয়।’
আরও পড়ুন:ডেঙ্গু মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুততার সঙ্গে বড় ধরনের কার্যক্রম হাতে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রহুল কবীর রিজভী।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।
রিজভী বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স দুই মাসের বেশি হয়ে গেছে। আমরা মনে করি, জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরে আসবে। নির্বাচিত সরকারই একমাত্র জনগণের জন্য কাজ করতে পারে। যেখানে মানুষের বেঁচে থাকার প্রশ্ন, সেখানে নির্বাচিত সরকার কাজ করতে পারে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে স্বাস্থ্য খাতে যেসব সরঞ্জাম কেনা হয়েছিল তা ছিল অতি নিম্নমানের। করোনার সময়ে আমরা দেখেছি এ ঘটনা। টাকা আত্মসাৎ করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার।
‘দেশের হাতেগোনা কয়েকটি হাসপাতালে অক্সিজেন ছিল। মানুষকে অক্সিজেন ও সেবার অভাবে কাতরাতে দেখেছি। মাস্ক থেকে শুরু করে সব সরঞ্জাম অত্যন্ত নিম্নমানের ছিল। করোনার সময়ে অনেকের চাকরি চলে গেছে। তাদের পুনর্বাসন নিয়ে ভাবা হয়নি।’
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফসল বর্তমান সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার তো জনবান্ধব। এই সরকারের উচিত ছিল, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।’
প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, ‘ডেঙ্গু একটি পুরনো রোগ। এ বিষয়ে আগাম প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া দরকার ছিল। এখন তো ফ্যাসিস্ট সরকার আর ক্ষমতাই নেই। জনসমর্থিত সরকার হয়ে ডেঙ্গুতে জীবনহানি ঠেকাতে সরকার কী কী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলো?’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা কয়টা ফ্লাইওভার করলাম, তাতে মানুষের জীবন বাঁচবে না। মানুষের জীবন বাঁচাতে যেসব কাজ করা দরকার আগের স্বৈরশাসক তা করেনি।’
বিএনপি গণভিত্তিক একটি দল উল্লেখ করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী আমল থেকেই বিএনপি বেসরকারি উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে সেবা দিয়ে আসছে।
‘বর্তমানেও দলের সামর্থ্য অনুযায়ী আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছি। ডেঙ্গুর প্রকোপ না কমা পর্যন্ত সচেতনতা ও সেবামূলক কার্যক্রম আজ থেকে আরও বেগবান করা হলো।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে দলের চিকিৎসকরা যেমন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তেমনই আজকে ডেঙ্গু আক্রান্ত নগরবাসীসহ দেশবাসীর পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। এজন্য সরকারকে বড় উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা তো বেসরকারিভাবে কাজ করতে পারি।’
রিজভী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ডেঙ্গু মোকাবিলার কাজ শুরু করেছি। আমাদের চিকিৎসকরাও কাজ শুরু করেছেন। বিশেষ করে ঢাকার দুই সিটির জনতার মেয়র ইশরাক হোসাইন ও তাবিথ আওয়াল ডেঙ্গু সচেতনতায় কাজ করছেন।
‘ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ব্লাড সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সহায়তায় হটলাইন চালু করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসাইন বলেন, ‘ডেঙ্গু সচেতনতায় দুই সপ্তাহ ধরে আমরা নগরবাসীকে সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ করে যাচ্ছি। সেসঙ্গে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করার জন্যও কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবদুল সালাম আজাদ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল, আমিনুল হক, তানভীর আহমেদ রবিন, এসএম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
আরও পড়ুন:সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে এক নারীর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে রোববার তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত একটি পত্রে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
ওই পত্রে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির রোববার এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।’
ইমরান হোসেন শিশিরের বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া সদরের সাফাইশ্রী এলাকায়। তার এক প্রতিবেশী নারীর তিন মিনিট ৪১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও রোববার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ওই নারী ইমরান হোসেন শিশিরের সঙ্গে প্রায় ছয় বছর ধরে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেন।
দুজন ভারতে ৯ দিন এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে একসঙ্গে আবাসিক হোটেলে একই কক্ষে রাত্রিযাপন করেছেন বলেও দাবি করেন ওই নারী।
শিশিরের চাপে একাধিকবার গর্ভপাত করতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তার অভিযোগ, এতদিন পর্যন্ত তাকে বিয়ের আশ্বাস দিলেও গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে শিশির তার সঙ্গে সর্ম্পক ছিন্ন করে নানা রকমের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এ কারণে বাধ্য হয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতাদের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি।
এদিকে ওই নারী শ্রীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় সংবাদ সম্মলন করে তার বক্তব্য সংবলিত ভিডিও সুপার এডিট করে বানানো হয়েছে বলে দাবি করেন। এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারও দাবি করেন তিনি।
যদিও স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন, শিশিরের চাপে পড়ে ওই নারী সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা কারও ওপর কোনো জুলুম ও অবিচার চাই না। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে যেসব কালাকানুন করেছে তার ভিত্তিতেই তাদের বিচার হোক। তারা যেন তাদের সঠিক পাওনাটা পায়।’
রোববার রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের রুকন (সদস্য) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াত ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
জামায়াতের আমীর বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে বাংলাদেশের মানবতা, গণতন্ত্র এবং জনগণের ইচ্ছা ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে জবাই করা হয়েছিল। ওইদিনই সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ পথ হারিয়েছিল।
‘তারা সেদিনের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। বহু শিশু এই দৃশ্য দেখার পর একনাগাড়ে অনেকদিন রাতে ঘুমাতে পারেনি, চিৎকার দিয়ে উঠেছে। কিন্তু মজলুমরা তার বিচার পায়নি।’
তিনি বলেন, ‘মুষ্টিমেয় কিছু দুর্বৃত্ত ছাড়া বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ মজলুম ছিলেন। আর মজলুমদের সামনের কাতারে ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
‘দীর্ঘ সাড়ে ১৭ বছর বহু ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ আবার আপন পথ ফিরে পেয়েছে।’
ডা. শফিকুর বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে সাজানো-পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেছিল তারা। এখন তাদের নাম সাহস করে কেউ নেয় না। তাদের দল (আওয়ামী লীগ) যারা করে তারাও সেই নাম নিতে চায় না। আমরা মজলুম জনগণ তাদের নাম নেব কেন?
‘তাদেরকে তারা নিজেরা নিষিদ্ধ করার ইতিহাস আছে। তারা যখন বাকশাল কায়েম করে তখন তাদের দলসহ সব রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করেছিল। আর এবার আল্লাহর সাহায্য নিয়ে জনগণ তাদের দলকে নিষিদ্ধ করেছে।’
জামায়াতের আমীর বলেন, ‘সাড়ে ১৫ বছর দাপটের সাথে তারা দেশ শাসন করেছে। ক্ষমতায় আসার মাত্র দু’মাসের মাথায় দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর গায়ে তারা আঘাত করে ৫৭ জন চৌকস ও দেশপ্রেমিক, প্রতিশ্রুতিশীল সেনা কর্মকর্তাকে বেদনাদায়কভাবে হত্যা করেছিল।
‘সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার ঘটনায় তদন্তের যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছিল, তা জনগণকে ধোঁকা দেয়ার জন্য। নেপথ্যের নায়কদের, হুকুমদাতাদের, দৃষ্কৃতকারীদের আড়াল করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের নায়ক-নায়িকারা তাদের অপরাধের পাওনা এখনও পায়নি। এ পাওনা তাদেরকে পেতে হবে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব হত্যার বিচার করতে হবে।
‘তবে অগ্রাধিকারভিত্তিতে আগে সাম্প্রতিক গণহত্যায় জড়িতদের বিচার করতে হবে। তাদের বিচার এজন্য করতে হবে- শহীদদের তাজা রক্ত এখনও ভাসছে। আহতরা কাতরাচ্ছে। সাক্ষী মজুদ। আলামত জীবন্ত ও স্পষ্ট। যত দ্রুত সম্ভব ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে ওদেরকে সঠিক পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে।’
জামায়াতের প্রধান বলেন, ‘২০১৩ সালের ৫ মে বিভিন্ন দাবিতে সোচ্চার অরাজনৈতিক একটি সংগঠন হেফাজতের ওপর ক্র্যাকডাউন করা হয়েছিল। তা ছিল আরেকটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। এটি ছিল আরেকটি গণহত্যা। কতজনকে হত্যা করা হয়েছে তা আজও জাতি জানতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘অতীত অপকর্মের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা না চেয়ে আনসার লীগ, বিচার লীগ ও নানারকম দাবিদাওয়ার লীগ নামে তারা আরেক রূপে ফিরে আসার চেষ্টা করছে।
‘তাদের অনেকে দাড়ি ও টুপি পরছে (আর্টিফিসিয়াল কিনা জানি না)। একদিকে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে ও বিশ্ববাসীকে মেসেজ দেয়া যে, আমরা যতদিন ছিলাম ততদিন চরমপন্থার উত্থান হতে দেইনি। আমরা নাই তাই এখন বাংলাদেশে চরমপন্থা আছে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা কোনো সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আইন হাতে তুলে নিয়ে প্রতিশোধ নেব না। কিন্তু ন্যায়বিচার পেতে আমরা বিদ্যমান আইনের মাধ্যমে জুলুমের প্রতিকার চাইব। আমরা সেই প্রতিকারটিই চাচ্ছি।
‘গণঅভ্যত্থানের পর মজলুম দল হিসেবে প্রতিশোধ নেয়ার অধিকার ছিল জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের। কিন্তু ৫৪ হাজার বর্গমাইলের দেশের কোথাও একটিও প্রতিশোধ নেয়া হয়নি।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠন করতে চাই। তাই আমাদের সীমাহীন ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে হবে।’
আরও পড়ুন:ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সরকার পরিবর্তন ছাড়া অন্য কিছুই বদলায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, ‘সরকার বদলে গেছে; কিন্তু তুমি-আমি একই আছি, যা ছিলাম আগে।’
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় গয়েশ্বর রায় এসব কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে ‘দুর্যোগ প্রশমনে বিএনপির ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী প্রচার দল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আন্দোলনে আওয়ামী লীগের পতন হলেও বাংলাদেশের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। অধিকারের জন্য দীর্ঘ ১৬ বছর যারা রক্ত দিয়েছে, যারা গুম হয়েছে, যারা সন্তানহারা হয়েছে- এরা সব হারিয়েছে। মাঝে শেখ হাসিনা নেই। আর সব আগের মতোই আছে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘এক-এগারোর সময় আওয়ামী লীগের সব মামলা যদি উঠে যেতে পারে তাহলে এখন কেন আমাদের মামলা উঠছে না। প্রধান উপদেষ্টাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে অপমানিত করা হয়েছিল। এতে গোটা জাতি ক্ষুব্ধ হয়েছে। তাহলে আমাদের ওপর এতো অত্যাচার-নির্যাতন-মিথ্যা মামলা কেন বর্তমান সরকারের বিবেচনায় আসছে না।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির অন্যতম এই সদস্য বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার ব্যাপারে যদি আমরা সমব্যথী হতে পারি, সোচ্চার হতে পারি, তাহলে আপনারা দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আমাদের মামলাগুলো আগের মতোই আছে, আগের মতোই আদালতে যেতে হচ্ছে কেন?’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনও নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারেননি। কিন্তু জনগণের ভোট করতে হলে তো নির্বাচন কমিশন লাগবে। যেখানে এখনও উইদাউট নির্বাচন কমিশন, সেখানে আমি কীভাবে বিশ্বাস করব আপনি নির্বাচন করবেন? নির্বাচন যত শিগগির হবে, জনগণের পার্টিসিপেশনের জোয়ারের মধ্যে হবে।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যেটুকু সংস্কার দরকার সেটুকু বিবেচনা করবেন। আমরা তো ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছি। এসব সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে আগামী দিনে। জনগণের প্রতিনিধিরা পার্লামেন্টে আসবেন, তারা ঐকমত্যের ভিত্তিতে সেসব সংস্কার করবেন।’
তিনি বলেন, ‘কোটা-বৈষম্যবিরোধী থেকে শুরু করে জনগণের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার যে আন্দোলন সেটি ছাত্রদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কোনো সাংঘর্ষিক না, একই ধারার আন্দোলন। কিন্তু বর্তমান সরকার তাদের (ছাত্রদের) আলাদা করতে চায় কেন?
‘ছাত্ররা সচিবালয় ঘেরাও করবে কেন? কিছু থাকলে তারা সমাবেশ করে সরকারকে সতর্ক করবে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর যদি আরেকটি বৈষম্য সৃষ্টি হয় তার মাশুল কে দেবে?’
গয়েশ্বর রায় সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য কতটুকু সময় লাগবে তা বলেন না কেন? সেনাপ্রধান বলেছেন ১৮ মাস, পরের দিন কেন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটা সরকারের কথা না। তাহলে সরকারের কথাটা কী? ৩৬ মাস? ৩০ মাস? তাই বলেন না! বলতে তো হবে আপনাকে।
‘আমরা যদি জানতে পারি আপনারা এত মাস পরে নির্বাচন করবেন, আমাদের তো কাজ আছে। জনগণের কাছে যেতে হবে, তাদের বোঝাতে চেষ্টা করব– আমি এই করব, সেই করব। আমাদেরও তো আকাঙ্ক্ষা আছে জনগণকে কনভিন্স করার। সুতরাং আপনাদের টার্গেট ঠিক করতে হবে।’
জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের সভাপতি মাহফুজ কবির মুক্তার সভাপতিত্বে আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মুহাম্মদ নেছারুল হকসহ জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের নেতারা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:সারাদেশে এবার দুর্গাপূজা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে এবার দুর্গাপূজা পালন করেছে। পূজা নিয়ে পরাজিত শক্তির সব অপকৌশল রুখে দিয়েছে বিএনপি।
রোববার দুপুরে মহম্মদপুর উপজেলার হাটবাড়িয়ার নিজ বাড়িতে দূর্গাপুজা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরি।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘মাগুরায় এবার দুর্গাপূজায় জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে পরিদর্শন করেছেন। জেলার কোথাও কোন স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জেলায় এবার দুর্গাপূজা সম্পন্ন হয়েছে। সব সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে সম্প্রতি বজায় রেখে আমরা চলতে চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির নেতা মনোয়ার হোসেন খান, সাবেক জেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক খান হাসান ইমাম সুজা, মিথুন রায় চৌধুরি, আলমগীর হোসেন, সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন কুতুব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আশরাফুজ্জামান শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে তর্কের মধ্যে ঘি ঢেলেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ।
তিনি বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এ আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শনিবার রাতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে ফেসবুকে লেখেন, “আশ্চর্য হওয়ার কিছুই থাকবে না যদি কয়েক দিন পর শোনা যায় যে, আসল ‘মাস্টারমাইন্ড’ হচ্ছে সজীব ওয়াজেদ জয়।”
সম্প্রতি সরকারের পতনের আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড কে তা নিয়ে নানা পক্ষ থেকে কৃতিত্বের দাবি উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বমঞ্চে তার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমকে ‘ব্রেইন বাহাইন্ড দ্য হোল রেভ্যুলুশন’ তথা গোটা বিপ্লবের নেপথ্যের ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। মূলত এর পর থেকেই ‘মাস্টারমাইন্ড’ শব্দটি নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু শনিবার দাবি করেন, “এই আন্দোলনের একমাত্র ‘মাস্টারমাইন্ড’ হচ্ছেন তারেক রহমান। কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যা করা দরকার, সবই করেছেন তিনি।”
ফেসবুক পোস্টে সোহেল তাজ লিখেছেন, “আজকে পত্রিকায় পড়লাম বিএনপির নেতা শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন যে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ‘মাস্টারমাইন্ড’ তারেক রহমান। আবার জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান সাহেব বলেছেন, এই গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার, কোনো দলের নয়। আবার কিছুদিন আগে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এই গণঅভ্যুত্থানের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হচ্ছে মাহফুজ।”
তিনি আরও লেখেন, “আশ্চর্য হওয়ার কিছুই থাকবে না যদি কয়েকদিন পর শোনা যায় যে আসল ‘মাস্টারমাইন্ড’ হচ্ছে সজীব ওয়াজেদ জয়।”
সোহেল তাজ স্মরণ করিয়ে দেন, ‘আমাদের সবার নিশ্চই মনে আছে, বেচারা প্রিন্স চার্লসের কত বছরই না অপেক্ষা করতে হয়েছিল রাজা হওয়ার জন্য।’
তার পোস্টে আবদুর রহিম খাঁন বাবু নামের একজন কমেন্ট করে লেখেন, ‘পচানোর একটা ডিপ্লোমেটিক সিস্টেম থাকে, কিন্তু আপনি সজীব ওয়াজেদ জয়কে পচাতে এসে আপনি নিজেই চরম হীনমন্যতায় ভুগছেন তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট করে দিলেন।’
তার মতো অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী সোহেল তাজের এ পোস্টের পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য