ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা ইউনিয়নের কাপরকাঠি গ্রামের পেয়ারা বাগান থেকে এক এনজিও কর্মকর্তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান।
নিহত ব্যক্তির পকেটে থাকা কাগজপত্রের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে তার নাম সজল চন্দ্র। বয়স ৩২ বছর। কীর্তিপাশা ইউনিয়নের ‘দক্ষিণ বাংলা উন্নয়ন সংস্থা’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক পদে ছিলেন তিনি। পেয়ারাচাষিসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষুদ্র ঋণ দেয় ওই এনজিও।
পুলিশ ও স্থানীয়রা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে কেউ হয়তো সজলকে হত্যা করে তার মরদেহটি পেয়ারা বাগানে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে।
স্থানীয় পরিমল সমদ্দার বলেন, ‘কাপরকাঠি গ্রামের যতীন কয়ানের পেয়ারার বাগানে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মৃতদেহটি পড়ে থাকতে দেখে আমরা পুলিশে খবর দিই। পুলিশ এসে বেলা ২টায় লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে।’
কীর্তিপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম জানান, কীর্তিপাশা বাজারসহ পার্শ্ববর্তী কাপরকাঠি, ভীমরুলি ও বাউকাঠি গ্রাম এলাকায় সজল চন্দ্র এনজিও কর্মকর্তা হিসেবে সবার কাছে পরিচিত।
ঘটনাটি পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলেও আশাবাদী তিনি।
ঝালকাঠি থানার ওসি বলেন, ‘পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না দেখে কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’
মৃতদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন:শব্দদূষণের মাত্রা নওগাঁয় প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে শব্দদূষণে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, অতিরিক্ত শব্দদূষণ শিশুসহ সব বয়সের মানুষের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত শব্দে মস্তিষ্কে বিরক্তির কারণ ঘটে। ফলে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি হয়, কর্মক্ষমতা কমে যায়, মেজাজ খিটমিটে হয়ে যায়।
এ ছাড়া ব্যক্তির বিশ্লেষণ ক্ষমতা কমে যায়, মানুষ যখন ধীরে ধীরে বার্ধক্যে পোঁছে যায় তখন পরিলক্ষিত হয় শব্দদূষণের প্রভাব।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় প্রতিদিন শহরবাসীর যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মাইকের উচ্চ শব্দে এমন কিছু ঘোষণা, যেমন ‘সুখবর সুখবর উন্নত জাতের একটি মহিষ জবাই করা হইবে, মহিষটির দাম … টাকা। প্রতি কেজি মাংস ... টাকা’, ‘সম্মানিত রোগী ভাইদের জন্য সুখবর, এখন থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ঢাকা থেকে আগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ নিয়মিত রোগী দেখিবেন’, ‘ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের জন্য সুখবর। অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা কোচিং দেয়া হইতেছে।’
এর সঙ্গে আছে বিভিন্ন জনসভার মাইক। নওগাঁ শহরবাসীরা জানান, বিষয়টি তাদের জন্য অসহনীয় পর্যায় পৌঁছে গেছে। এর পর আসে ইট ও পাথর ভাঙা মেশিন ও কাঠের আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত যন্ত্র ও টাইলস কাটার মেশিনের বিকট কান ফাটানো শব্দ।
হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে গিয়েও দেখা যায় একই চিত্র। এ সব স্থানে মাইকিং বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও মানছে না কেউ।
স্থানীয়রা জানান, নওগাঁ শহরের মধ্যে ভারী যানবাহন না চললেও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের ইলেক্ট্রনিক হর্ন আর উচ্চ শব্দের সাইলেন্সর লাগানো বাইকের শব্দের কারণে অতিষ্ঠ নওগাঁবাসী।
সাধারণের প্রশ্ন, এ সব নিয়ন্ত্রণের কি কেউ নেই? এর উত্তর আছে। গেজেট বলছে কঠোর আইন আছে।
নওগাঁ কেন্দ্রীয় মুসলিম গোরস্তান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট সমাজকর্মী জিয়াউর রহমান বাবলু বলেন, ‘প্রতিদিন মাইকের শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। এরা স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, সরকারি অফিস আদালত কিছুই মানে না। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব যে কে পালন করবে তাও বুঝি না। বিষয়টি দিন দিন অত্যাচারের পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে।’
এ বিষয়ে কথা হয় নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, নওগাঁ জিলা স্কুল ও নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাধিক অভিভাবকদের সঙ্গে।
তারা জানান, অভিভাবকরা ছেলে-মেয়েদের স্কুলে দিয়ে বাইরে অপেক্ষা করেন। স্কুলের সামনে দিয়ে একটির পর একটি মাইক উচ্চ শব্দে প্রচার করতে করতে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান এর কি কোনো প্রতিকার নাই?
নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কায়েশ উদ্দীন বলেন, ‘মাইকের উচ্চ শব্দসহ যত্রতত্র পাথর ভাঙা ও ইট ভাঙা চলছেই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানান তিনি।
২০০৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
বিধিমালায় যা বলা আছে
নীরব এলাকায় দিনে ৫০ রাতে ৪০, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ রাতে ৪৫, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ রাতে ৫০, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ রাতে ৬০, শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ রাতে ৭০ ডেসিবল মানমাত্রার সাউন্ডে মাইকে প্রচার করা যাবে।
তবে এই বিধি রাষ্ট্রীয় কোনো দিবসের (স্বাধীনতা, ২১ ফেব্রুয়ারি, বিজয় দিবস, জাতীয় দিবস) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। এ ছাড়া মৃত্যু সংবাদ, কোনো ব্যক্তি নিখোঁজ থাকলে, গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হারিয়ে গেলে, সরকারি বা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রচারকালে এ বিধি প্রযোজ্য হবে না।
বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নীরব এলাকা ব্যতীত অন্য এলাকায় ব্যবহারের জন্য পূর্বেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে আবাসিক এলাকার শেষ সীমানা হতে ৫০০ মিটারের মধ্যে ইট বা পাথর ভাঙা মেশিন ব্যবহার করা যাবে না। সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত অন্য যন্ত্রপাতি চালানো যাবে না।
নির্দিষ্ট মানমাত্রার অতিরিক্ত শব্দদূষণের সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অভিযোগ জানানো যাবে। সে ক্ষেত্রে নির্ধারিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে ব্যক্তিকে কারাদণ্ডসহ জরিমানা করা হবে।
উপজেলায় এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা তৎকর্তৃক ক্ষমতা প্রাপ্ত কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা বলেন, ‘শব্দদূষণ অবশ্যই একটি বড় ধরনের সমস্যা। অভিযোগের ভিত্তিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কন্সালটেন্ট (ইএনটি) তারেক হোসেন বলেন, ‘শব্দদূষণে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আগে সাধারণত ৫০ বছর বয়সের ব্যক্তির মধ্যে যে সমস্যাগুলো দেখা দিত তা এখন ৪০ বছর বয়সেই দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে পথচারী, ট্র্যাফিক পুলিশ, টাইলস শ্রমিকসহ উচ্চ শব্দযুক্ত মেশিন ও মাইকের শব্দে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।’
নওগাঁ সদর ট্র্যাফিক পুলিশের ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) বিকর্ণ কুমার চৌধুরী বলেন, ‘নওগাঁ শহরের কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হয় না। এর কারণে এখন পর্যন্ত শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইনে কোনো মামলা হয়নি। তবে মাইকসহ অন্য শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা ট্র্যাফিক পুলিশের এখতিয়ারের বাইরে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের কালুরঘাটের বিসিক শিল্পনগরী এলাকার একটি কারখানায় আগুন লেগেছে।
বিসিকের কাদের ট্রেডিং নামের কারখানায় শনিবার সকাল আটটা ৫৫ মিনিটে এ আগুন লাগে।
ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিস কাপ্তাই অঞ্চলের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ হারুন পাশা বলেন, ‘কারখানাটিতে তুলাসহ বিভিন্ন পণ্য প্রক্রিয়াজাত করা হয়। আমরা ৯টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি।
‘এখন পর্যন্ত কালুরঘাট স্টেশনের তিনটি, বায়েজিদের দুটি এবং চন্দনপুরার দুটি মিলিয়ে মোট সাতটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।’
মুন্সীগঞ্জে একটি আবাসিক ভবনে আকস্মিক বিস্ফোরণে নারী ও শিশুসহ একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়েছে।
তাদের মধ্যে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
শহরের ইদ্রাকপুর এলাকায় শনিবার সকাল সাতটার দিকে পাঁচতলা একটি ভবনের পঞ্চম তলায় ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, তবে কী কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অগ্নিদগ্ধরা হলেন ৪২ বছর বয়সী রিজভি আহমেদ রাসেল, তার স্ত্রী রোজিনা বেগম, তাদের তিন বছরের শিশু সন্তান রাইয়ান আহমেদ ও রিজভি আহমেদের মা সাহিদা খাতুন। তাদের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। বর্তমানে তারা ওই ভবনের পঞ্চম তলায় ভাড়া থাকতেন।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোস্তফা মোহসিন বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি, তবে বিস্ফোরণের কারণ এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি।’
মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সোহেল রানা রানু বলেন, ‘সকালে বিস্ফোরণের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় রিজভি আহমেদ রাসেল, রোজিনা বেগম ও তাদের শিশু সন্তান রাইয়ান আহমেদকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠিয়েছে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’
চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসন থেকে তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রধান তিন নেতা এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। যাচাই-বাছাইয়ে বৈধও হয়েছে তাদের মনোনয়নপত্র।
তিন প্রার্থী হলেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আলহাসানী আল মাইজভাণ্ডারী।
তাদের মধ্যে সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী ও সৈয়দ সাইফুদ্দীন মাইজভাণ্ডারী সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা।
মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফের কারণে ফটিকছড়ির আলাদা পরিচিতি রয়েছে। ফটিকছড়ির ভোটারদের মধ্যে একটি বড় অংশ মাইজভাণ্ডার দরবারের অনুসারী হলেও ভোটাররা জাতীয় রাজনীতির মতোই দুই ধারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে বিভক্ত।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক। শরিক দল হিসেবে সৈয়দ নজিবুল বশর ভাণ্ডারী গেল দুবার নৌকা মার্কায় নির্বাচন করে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও তিনি নৌকা পাওয়ার আশায় রয়েছেন। অন্য দুই দল বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিও (বিএসপি) সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ১৯ নম্বরে নিবন্ধন পায় তরিকত ফেডারেশন। ২০০৮ সালের ৯ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন পায় দলটি। দলটির নির্বাচনী প্রতীক ‘ফুলের মালা’। কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার ধানমন্ডিতে। দলটির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী।
নির্বাচন কমিশনে ৩৫ নম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পায় বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর নিবন্ধন পায় দলটি। দলটির নির্বাচনী প্রতীক ‘মোমবাতি’। কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার ধানমন্ডিতে। দলটির চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন।
নির্বাচন কমিশনে সবশেষ নিবন্ধিত দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। দলটির নিবন্ধন নম্বর ৪৯। দলটির নির্বাচনী প্রতীক ‘একতারা’। কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার মিরপুরে। দলটির চেয়ারম্যান শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও এ তিনজনই প্রার্থী হয়েছিলেন। তার মধ্যে ফটিকছড়ি আসনে মহাজোটের সমর্থন নিয়ে নৌকা প্রতীকে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৪৩০ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। একই আসনে মোমবাতি প্রতীক নিয়ে ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১০ হাজার ১৭৪ ভোট পান শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ।
এ প্রসঙ্গে মাওলানা এম এ মতিন বলেন, ‘আমরা এককভাবে নির্বাচন করছি। ফটিকছড়ি এবং পটিয়া আসন থেকে এককভাবে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি।
‘ফটিকছড়িতে আমাদের বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। ইসলামী ফ্রন্টের বিশাল কর্মীবাহিনী রয়েছে। আমাদের ভোট ব্যাংক রয়েছে এখানে।’
বিএসপি চেয়ারম্যান শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আলহাসানী আল মাইজভান্ডারী বলেন, ‘আমরা এককভাবে নির্বাচন করছি। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’
অপরদিকে আসনটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী দেয়া হলেও এবারও ১৪ দলীয় জোটের সমর্থন প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী।
তিনি বলেন, ‘আমরা জোটে আছি। জোটের বাইরে কোনো হিসাব নেই। জোট আগেও ছিল,এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।’
রাজনৈতিক মহলে আলোচনা রয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট থেকে চাচা-ভাতিজা দুজনের একজনকে এই আসন থেকে সমর্থন জানানো হতে পারে। যদিও আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। তিনি গতবারও মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু জোটের কারণে সরে দাঁড়ান। এবারও তাকে সরে দাঁড়াতে হতে পারে।
তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারাও দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছেন দল থেকে প্রার্থী দেয়ার জন্য। বাইরের কাউকে যাতে এই আসনটি ছাড়া না হয়।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের আলোচিত পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবার ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে।
জেলা শহরের ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে আগে আটটি দানবাক্স থাকলেও এবার একটি বেড়ে এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯টিতে। প্রতি তিন মাস পরপর এ বাক্সগুলো খোলা হয়। এবার খোলা হয়েছে ৩ মাস ২০ দিন পর।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে সকাল পৌনে আটটার দিকে দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে।
এখন চলছে নয়টি দানবাক্স থেকে পাওয়া ২৩ বস্তা টাকার গণনার কাজ। গণনা শেষে টাকার পরিমাণ বলা যাবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘টাকা গণনা কাজে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ.টি.এম ফরহাদ চৌধুরী, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর শেখ জাবের আহমেদ, সহকারী কমিশনার রওশন কবীর, মাহমুদুল হাসান, সামিউল ইসলাম, আজিজা বেগম, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, মাদ্রাসার ১১২ জন ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।’
দানবাক্সগুলো খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করছেন উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে এসেছেন দূর-দূরান্ত থেকে।
এর আগে ১৯ আগস্ট তিনমাস পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ২৩ টি বস্তায় ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। ঐতিহাসিক এই মসজিদের দানবাক্সে একসঙ্গে এতো টাকা পাওয়াটা তখন ছিল নতুন রেকর্ড।
এছাড়াও মসজিদে নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ।
মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূইয়া জানান, করোনা সংক্রমণের শুরুতে মসজিদে মুসল্লিদের চলাচল এবং নারীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ থাকলেও দান অব্যাহত ছিল। পাগলা মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়া হয়। অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তাও করা হয়।
তাছাড়া সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদেরও এ দানের টাকা থেকে সহায়তা করা হয়েছে।
মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করছে এই মসজিদে। যারা দান করতে আসেন তারা বলে থাকেন, এখানে দান করার পরে নাকি তাদের আশা পূরণ হয়েছে। তাই এখানে দান করেন তারা।
জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দার তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। বর্তমানে সেটি সম্প্রসারিত হয়ে ৩ একর ৮৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহারসহ বিভিন্ন অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে দেশের ছয় জেলার বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে মোট ৮৭ জনকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। ওই ৮৭ জনসহ মোট ৯৩ জনকে কেন্দ্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শুক্রবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩-এর প্রথম পর্বের পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৩৭ জনকে আটক করা হয়েছে গাইবান্ধা জেলায়। এ ছাড়া দিনাজপুরে ১৮, লালমনিরহাটে ১৩, কুড়িগ্রামে ১২, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭ ও ঝালকাঠিতে একজনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর মিলেছে।
গাইবান্ধায় ৩৭ জনের নামে মামলা
গাইবান্ধায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহারের মাধ্যমে জালিয়াতির অভিযোগে আটক পরীক্ষার্থীসহ ৩৭ জনের নামে মামলা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা চলাকালে জেলার বিভিন্ন কেন্দ্র ও স্থান থেকে তাদের আটক করে র্যাব-১৩ গাইবান্ধা ক্যাম্পের সদস্যরা।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৩২ জন এই নিয়োগ পরীক্ষার পরীক্ষার্থী এবং পাঁচজন বহিরাগত বলে জানান র্যাব-১৩ রংপুর বিভাগের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) দেওয়ান মওদুদ আহমেদ মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম ধাপের গাইবান্ধার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নকলমুক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা নেয়া হয়েছে। তারা বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহার করে অসদুপায়ে পরীক্ষা দেয়ার সময় ৩৭ জনকে আটক করে এবং কেন্দ্র থেকেই ৩৬ জনকে বহিষ্কার করা হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৩ রংপুর বিভাগের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম জানান, অভিযান চালিয়ে গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে থেকে ৩২ জন পরীক্ষার্থী ও এই চক্রের হোতা মারুফ, মুন্না, সোহেল, নজরুল ও সোহাগসহ মোট ৩৭ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে ২২টি মাস্টার কার্ড, ১৯টি ব্লুটুথ ডিভাইস, ১৬টি মোবাইল, স্ট্যাম্প ও ব্যাংক চেক উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আটককৃত পরীক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং মোবাইলের মাধ্যমে সুকৌশলে পরীক্ষা দিয়ে আসছিলেন। চক্রের এই পাঁচ হোতা বিভিন্ন পরীক্ষার্থীকে ১৪ থেকে ১৮ লাখ টাকায় চাকরি দেয়ার শর্তে অংশগ্রহণ করায়। এর মধ্যে এই চক্রের সোহেল নামে এক সদস্য ডিভাইস সংগ্রহ ও বিতরণ করতেন, নজরুল পরীক্ষার্থী সংগ্রহ করতেন এবং মারুফ ও মুন্না বেইরে থেকে প্রশ্নপত্র সমাধান করে পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করতেন।
‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। পাশাপাশি আটককৃতদের নামে মামলা করে গাইবান্ধা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গাইবান্ধার সাত উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে প্রায় ৭০০টি শূন্য পদের বিপরীতে চাকরিপ্রার্থী ৩০ হাজার ৮৮ জন। এর মধ্যে উপস্থিত ২২ হাজার ৮১৩ জন পরীক্ষার্থী জেলার সদর, পলাশবাড়ি ও ফুলছড়িসহ তিন উপজেলার মোট ৪৭টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার লিখিত (বহু নির্বাচনি) প্রথম ধাপের পরীক্ষায় অংশ নেন।
দিনাজপুরে আটক ১৮ পরীক্ষার্থী
দিনাজপুরের ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের পর তাদের বহিষ্কার করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ নিয়োগ পরীক্ষার ৮টি কেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয় বলে জানান দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ওসি ফরিদ হোসেন।
আটককৃতরা হলেন- বিরল উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মো. আজহারুল ইসলামের ছেলে ৩২ বছর বয়সী মো. কামরুজ্জামান, একই উপজেলার রানীপুর গ্রামের আবুল কাদেরের স্ত্রী ২৬ বছর বয়সী রাহেনা খাতুন; বীরগঞ্জ উপজেলার এলেঙ্গা গ্রামের প্রদীপ রায়ের স্ত্রী ৩৩ বছর বয়সী শেফালী রায়, একই উপজেলার পশ্চিম কালাপুকুর গ্রামের তাশদিকুল আলমের ছেলে ৩০ বছর বয়সী মো. মনিরুজ্জামান, কগিরপাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে ৩১ বছর বয়সী জামিল বাদশা ও বনগাঁও গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ২৮ বছর বয়সী মো. রাকিব; দিনাজপুর সদর উপজেলার মুরাদপর গ্রামের বেলাল হোসেনের স্ত্রী ২৮ বছর বয়সী মুসলিমা খাতুন, একই উপজেলার দাইনুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ২৮ বছর বয়সী শরিফুল আলম, ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল সালামের মেয়ে ২৮ বছর বয়সী উম্মে সালমা ও খানপুর গ্রামের সুলতান মাহমুদের মেয়ে ২৯ বছর বয়সী নাসরিন জাহান; চিরিরবন্দর উপজেলার দক্ষিণ আলোকদিঘী গ্রামের ২৭ বছর বয়সী কবিতা রানী রায়, একই উপজেলার দক্ষিণ আলোকদিঘী গ্রামের যতিশ চন্দ্র রায়ের ছেলে ৩৪ বছর বয়সী সবজ চন্দ্র রায়; হাকিমপুর উপজেলার মাধবপাড়ার গোলাম বিকরিয়ার স্ত্রী ২৬ বছর বয়সী জাকিয়া ফেরদৌস; বিরামপুর উপজেলার দক্ষিণ দায়োরপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ৩২ বছর বয়সী মহিদুল ইসলাম; নবাবগঞ্জ উপজেলার মতিহারা গ্রামের আবু তালেব সরকারের মেয়ে ৩১ বছর বয়সী তানিয়া মোশতাবী; বোচাগঞ্জ উপজেলার শহিদপাড়ার আব্দুল গফুর মোল্যার ছেলে ২৯ বছর বয়সী সায়েম মোল্যা তন্ময়; ফরিদপুর জেলার নগরবান্দা থানার দফা গ্রামের ফারুক মাতব্বরের মেয়ে ২০ বছর বয়সী উর্মিলা আক্তার এবং ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার বকুয়া গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে ২৭ বছর বয়সী সুজন আলী।
ওসি ফরিদ হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্রে কর্মকর্তারা ১৮ জনকে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা দেয়ার অভিযোগে আটক করেন। পরে তাদেরকে পুলিশে কাছে সোপর্দ করেন তারা।
‘আটককৃত ১৮ জনের মধ্যে ৯ জন নারী ও ৯ জন পুরুষ রয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
লালমনিরহাটে বহিষ্কার ১৬, ১৩ জনের নামে মামলা
লালমনিরহাটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় একই অভিযোগে ১৬ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। এদের মধ্যে অপরাধ বিবেচনা করে ১৩ জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয় যাদের নামে পরে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বাকি তিনজনকে কেন্দ্র থেকে সরাসরি বহিষ্কার করা হয়।
লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার চৌধুরী বলেন, ‘জেলায় মোট ১৬ হাজার ৩২৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২ হাজার ৪২৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে পরীক্ষা চলাকালে ইলেকট্রনিক ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে জালিয়াতি করার কারণে ১৬ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে অপরাধ বিবেচনায় ১৩ জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
ওই ১৩ জন পরীক্ষার্থীকে আসামি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস মামলা করেছে বলে জানান তিনি।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘আটককৃতদের মধ্যে ১০ জন নারী ও তিনজন পুরুষ রয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের হল সুপার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা তাদের আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। পরীক্ষা আয়োজক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আটক আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।’
কুড়িগ্রামে বহিষ্কার ১৫, পুলিশে দেয়া হয়েছে ১২ জনকে
কুড়িগ্রামে নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ ধরা পড়ে মোট ১৫ পরীক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছেন। এদের মধ্যে ১২ জনকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নবেজ উদ্দিন সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার এ কুড়িগ্রামের ৪৫টি কেন্দ্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মোট ২৬ হাজার ৮০৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ২০ হাজার ৭১ জন। অনুপস্থিত ছিলেন ৬ হাজার ৭৩৪ জন।
ঠাকুরগাঁওয়ে আটক ৭ পরীক্ষার্থী
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় কেন্দ্রে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যাবহার ও অবৈধভাবে ওএমআর শিট নিয়ে প্রবেশের অভিযোগে মোট সাত পরীক্ষার্থী আটক হয়েছেন। এদের মধ্যে চার যুবক ডিভাইস ব্যবহার করার অভিযোগে এবং তিন নারী পরীক্ষার্থী ওএমআর শিট নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের অভিযোগে আটক হন। ধরা পড়ার পর ওই সাতজনকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করে পুলিশে দেয়া হয়।
আটককৃত চার যুবক হলেন- রাণীশংকৈল উপজেলার বাজে বকশা গ্রামের পঞ্চানন চন্দ্রের ছেলে টংকনাথ বর্মণ; তিনি পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে আটক হন। একই উপজেলার আলশিয়া গ্রামের মো. হুমায়ুনের ছেলে সোহানুর রহমান; তিনি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আটক হন। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আলোকসিপি গ্রামের হাসান আলীর ছেলে আনোয়ার খালিদ সরকারি কলেজ কেন্দ্র থেকে আটক হন। পীরগঞ্জ উপজেলার পাটুয়া পাড়া গ্রামের আজিম উদ্দীনের ছেলে ওমর ফারুক। তিনি কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে আটক হন।
তিন নারী পরীক্ষার্থী হলেন- পীরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের সামিরুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. আর্জিনা; তিনি আর কে স্টেট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আটক হন। এ ছাড়া বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারি গ্রামের আনিসুর রহমানের স্ত্রী হাসনা হেনা এবং সদর উপজেলার রুহিয়া মধুপুর গ্রামের আজহারুলের স্ত্রী রোড ডিগ্রি কলেজ থেকে আটক হন।
এসব তথ্য নিশ্চিৎ করে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ কবির জানান, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চারজন ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার ও অবৈধভাবে ওএমআর শিট নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ ও ব্যবহার করার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আটককৃতদের পুলিশে সোপর্দ করে। এ বিষয়ে আইনগত পক্রিয়া চলমান রয়েছে।
ঝালকাঠিতে প্রক্সি দিতে এসে ধরা যুবক
অন্যের হয়ে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিতে এসে ঝালকাঠিতে আটক হয়েছেন এক পরীক্ষার্থী। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩-এর প্রথম পর্বের জেলা পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা চলাকালে অবৈধ ইলেকট্রনিক ডিভাইসহ তাকে আটক করা হয়।
আটককৃত ওই যুবকের নাম অভি চন্দ্র দাস। ২২ বছর বয়সী অভির বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা ইউনিয়নে। সেখানকার গোবিন্দ ধবল গ্রামের অরুণ চন্দ্র দাসের ছেলে তিনি।
রাজাপুর উপজেলায় গালুয়া ইউনিয়নের কানুদাসকাঠি গ্রামের গণি হাওলাদারের ছেলে ইব্রাহীম নামের মুল পরীক্ষার্থীর পক্ষে প্রক্সি দিতে আসেন তিনি। শুক্রবার ঝালকাঠি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ডিভাইসে যান্ত্রিক ত্রুটি কল্যাণে তিনি ধরা পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এক ঘণ্টার পরীক্ষার ৩০ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর অভির কানে বসানো ইলেট্রনিক ডিভাইসটিতে টিট টিট আওয়াজ দিতে থাকে। বিষয়টি হল পরিদর্শকের নজরে এলে তিনি অভিকে আসন থেকে উঠিয়ে কেন্দ্র পরিদর্শক মো. আব্দুল করিমের কাছে নিয়ে যান। সেখানে থাকা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হাসান মোহাম্মদ সোয়াইব এবং কেন্দ্রের সুপারইন্টেনডেন্ট অধ্যক্ষ জিন্নাত রেহানা ফেসদৌসী ওই পরীক্ষার্থীর কাগজপত্র যাচাই করে তার প্রক্সির বিষয়টি নিশ্চিত হন।
এ ঘটনায় প্রকৃত পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং দুপরে অভিকে সদর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রীয়া চলছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জড়িতদের তথ্য বের করা হবে।’
নিউজবাংলার গাইবান্ধা, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও ও ঝালকাঠি প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে গাছে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় দুই বন্ধু নিহত হয়েছে।
উপজেলার কাশদহ গ্রামের হান্নানের মোড় নামক স্থানে রাত সাড়ে ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুজন হলো ১৬ বছর বয়সী জুয়েল রানা ও ১৫ বছর বয়সী সাজিদ মিয়া। জুয়েল রানা রংপুরের পশ্চিম খাসবাগ তিনমাথা এলাকার আল আমিন মিয়ার ছেলে। সে রংপুরের একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। অপরজন সাজিদ মিয়া একই এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে। সে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। তারা দুজন বন্ধু বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান জানান, দুই বন্ধু হাত ছেড়ে দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে সুন্দরগঞ্জ এলাকা থেকে রংপুরের দিকে যাচ্ছিল। চালকের আসনে ছিল জুয়েল। সে হাত ছেড়ে মোটরসাইকেল ড্রাইভ করছিল। আর সাজিদ পেছন থেকে দাঁড়িয়ে ছিল। যখন তারা কাশদহ গ্রামের হান্নানের মোড় নামক স্থানে পৌঁছায় তখন তারা মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে মোটরসাইকেলটি দুমড়েমুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অপরজনকে হাসপাতালে নেয়ার পথে তারও মৃত্যু হয়।
তিনি আর জানান, স্থানীয়দের খবরে পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করে এবং পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়। পরে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য