বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মিশেল ব্যাচেলেট উদ্বেগ প্রকাশ না করার বিষয়ে সরকারের দুই মন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে সম্পর্কে অবস্থান প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশন মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ ক্ষেত্রে ‘ভুল তথ্য’ ছড়ানোর কথা তুলে ধরে ব্যাচেলেট কোন প্রেক্ষাপটে কী বক্তব্য দিয়েছেন তার উল্লেখ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভুল তথ্যের (মিস-ইনফরমেশন) বিষয়ে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাইকমিশনার সরকার, নাগরিক সমাজ ও অন্যদের সঙ্গে সংলাপে এবং তার ঢাকা সফরের বিবৃতিতে মানবাধিকারের বিস্তৃত ক্ষেত্রে তার উদ্বেগের জায়গাগুলো নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করেছেন।
সফরের শেষ দিন ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এ বিষয়ে আলোচনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।
হাইকমিশনারের সফরে বিভিন্ন বৈঠকে মানবাধিকার পরিস্থিতির পাশাপাশি গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়টি উঠে আসে বলে জানিয়েছিলেন মন্ত্রীরা।
সংবাদ সম্মেলনে মিশেল ব্যাচেলেটের বক্তব্যের বড় অংশজুড়েও ছিল এসব বিষয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের কেন্দ্রও ছিল গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের অবস্থান ঘিরে।
স্বাধীন ও বিশেষায়িত নতুন একটি সংস্থার মাধ্যমে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানান চিলির সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
মিশেল ব্যাচেলেট ওই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটিসহ সংস্থার বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে কয়েক বছর ধরে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।
‘এসব অভিযোগের অনেকগুলোই বর্তায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ওপর এবং এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে জবাবদিহির অভাবের অভিযোগ নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে এসব গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছি এবং এসব অভিযোগের নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছি।’
ঢাকা সফর শেষে ফিরে যাওয়ার এক সপ্তাহ পর ২৫ আগস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার হিসাবে জেনেভায় শেষ সংবাদ সম্মেলন করেন মিশেল ব্যাচেলেট।
তবে ওই সংবাদ সম্মেলনে বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মোটাদাগে আলোচনা করলেও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলাদা করে কিছু বলেননি তিনি।
ওই সংবাদ সম্মেলনের সূত্র ধরে করা প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সফরকারী জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতিসংঘের দৃষ্টিতে মানবাধিকার বা অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো উদ্বেগ প্রকাশিত হয়নি।’
বারবার এ নিয়ে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় বলে আসছি যে বিএনপি একটি অবস্থা সৃষ্টির জন্য বিভিন্নভাবে রটনা করে যাচ্ছে। যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই এবং তারা এর সত্যতা দেখাতে পারেনি।
‘ভিত্তি না থাকার কারণে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার আমাদের দেশের মানবাধিকার নিয়ে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি।’
জেনেভায় গিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ না করার বিষয়ে এক প্রশ্নে রোববার আইনমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার সংগঠন ও অন্যান্য বিষয়ে যেসব সংগঠন আছে, যারা বলে যে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তারাও জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছেন, কথা বলেছেন।
‘সবকিছু দেখে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন। সে ক্ষেত্রে আমরা বুঝতে পারি যে মন্তব্যটি অত্যন্ত ডিপ রুটেড এবং ওয়েল আন্ডারস্টুড।’
জেনেভায় দেয়া বক্তব্য কোনোভাবেই ‘বৈশ্বিক রিপোর্ট’ নয় উল্লেখ করে মঙ্গলবারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যেহেতু হাইকমিশনার বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়টি ইতোমধ্যে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন, সেহেতু ২৫ আগস্ট জেনেভায় তার মেয়াদ শেষের বক্তব্যে জোর দিয়েছেন বৈশ্বিক ইস্যুগুলোর ওপর, যা বাংলাদেশসহ সব দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’
‘পাশাপাশি পাঁচ বছর পূর্তির ওই দিনে রোহিঙ্গা সংকটের ওপরও তিনি আলোকপাত করেছেন। এটাকে বৈশ্বিক রিপোর্ট হিসেবে ধরার কথা ছিল না।’
ঢাকায় হাইকমিশনারের দেয়া একটি বক্তব্য মঙ্গলবারের বিবৃতিতে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘যেভাবে হাইকমিশনার ঢাকায় তার বিবৃতিতে বলেছেন, ‘চ্যালেঞ্জকে স্বীকার করাই হচ্ছে সেটাকে উত্তরণের প্রথম পদক্ষেপ’ এবং হাইকমিশনারের সুপারিশ অনুযায়ী সহযোগিতার পাশাপাশি বাংলাদেশের মানবাধিকারের উন্নয়ন ও সুরক্ষায় কাজ করতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় প্রস্তুত রয়েছে।’
ব্যাচেলেটের আহ্বান মানতে বলছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস
আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশে গুমের অভিযোগগুলো গভীরভাবে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। মঙ্গলবার সকালে দূতাবাসের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেয়া পোস্টে এই আহ্বান জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের অভিযোগগুলো নিয়ে যে গভীর তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিলেন তা পুনর্ব্যক্ত করছে দূতাবাস।
ওই পোস্টের সঙ্গে মিশেল ব্যাচেলেটের বক্তব্যের লিংক যুক্ত করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। বাংলাদেশ সফর শেষে ঢাকার একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেন ব্যাচেলেট। এতে তিনি বলেছিলেন, গত কয়েক বছর ধরে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা গুম নিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে যাচ্ছিল। ঢাকায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ নিয়ে তার গভীর উদ্বেগের কথা তিনি জানিয়েছেন।
ব্যাচেলেট সরকারকে একটি স্বাধীন এবং বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বলেছেন, যাতে করে এ ধরনের ঘটনার শিকার ব্যক্তি, পরিবার এবং সিভিল সোসাইটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত করা যায়। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে এ রকম একটি সংস্থা গড়ে তুলতে তার দফতর বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন:সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে ও সেই সঙ্গে অস্বস্তি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অস্থান নিয়ে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
শনিবারের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে।
তাপপ্রবাহ নিয়ে বলা আছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশালের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে যা অব্যাহত থাকতে পারে।
বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা আছে, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্য স্থানে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:কদিন ধরেই তীব্র গরম। দেশের কোথাও মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে, তবে গরম অবশ্য কমছে না। আবহাওয়া আপাতত এমনই থাকবে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এতে বলা হয়, একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আগামী পাঁচ দিনের পূর্বভাসে বলা হয়েছে, তাপপ্রবাহ প্রায় একই রকম থাকতে পারে। আবহাওয়ায় তেমন পরিবতর্তন আসবে না।
দেশে চলমান দাবদাহ শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ কথা জানায়।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
‘জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।’
৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে বলা হয়, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা এবং ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
অপপ্রচার রোধে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরাফাত বলেন, ‘অপপ্রচার রোধে ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে। তারা কীভাবে কাজ করে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং প্রক্রিয়া-পদ্ধতি বিনিময় জানা-বোঝার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যেসব কো-অপারেশন আছে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বিটিভিতে দুই ঘণ্টার একটি চাংক নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষণ, চলমান ঘটনাপ্রবাহ এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে ভারতের যে সংবাদ সংস্থাগুলো আছে, বিশেষ করে এএনআইয়ের সঙ্গে কোলাবরেশন করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘যেহেতু বিটিভি ইন্ডিয়াতে দেখানো হয়, সেহেতু দুই ঘণ্টার এ চাংক আমরা ধীরে ধীরে দুই, তিন, চার ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়াব। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতে চাচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে। এর বাইরেও বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব ভারতীয় দর্শকদের আকৃষ্ট করতে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে ইনস্টিটিউশন আছে, তাদের সঙ্গে কোলাবরেশন করা, বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম ও ট্রেনিং করা।’
‘সম্প্রতি মুজিব শিরোনামের যে সিনেমাটি সহ-প্রযোজনা হয়েছে, এমন অন্য কোনো সিনেমায় সহ-প্রযোজনার সুযোগ আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে’- যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের সিনেমা যেহেতু বাংলাদেশের বাজারে চলে সেহেতু বাংলাদেশেরও ভালো মানের সিনেমা ভারতে চালানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দর্শককে জোর করে কিছু দেখানো যায় না। বাজারে কোনো জিনিসের চাহিদা থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাবে-আসবে। সিনেমা যেহেতু প্রোডাক্ট, সেহেতু ভারতের বাজারে দর্শক থাকলে অবশ্যই যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আরও কো-অপারেশনের সুযোগ আছে, সেসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি- বাংলাদেশ এ বিষয়ে বেশি লাভবান হবে। কারণ ভারতের ফিল্মে, টেলিভিশনে বা অন্যান্য জায়গায় যে অভিজ্ঞতা আছে, তা আমরা যত বেশি নেয়ার চেষ্টা করা যায়। দেশের উন্নয়নের জন্য এসব জরুরি।’
আরও পড়ুন:সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অর্জনে অবদান রাখতে এবং দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবকিছু করছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘ডিফেন্স ডিপ্লোমেসি: স্ট্র্যাটেজি ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি
সেনাপ্রধান বলেন, ‘মাতৃভূমিকে রক্ষা করা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য এবং আমরা তার জন্য প্রস্তুত আছি। আমরা সবকিছুই করছি।’
বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতির বাণী ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে আমরা সবকিছু করছি।’
জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রেখে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘কূটনীতি যেকোনো ধরনের জাতীয় স্বার্থ অর্জনের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
বেসামরিক শক্তির সহায়তায় সেনাবাহিনী কীভাবে দেশে গঠনমূলক কর্মকাণ্ড, দেশ-বিদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘যেখানেই সুযোগ আছে, তা প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ, আমরা সুযোগ গ্রহণ করি এবং বাংলাদেশের স্বার্থে সবকিছু করি।’
সামরিক কূটনীতির কথা বলতে গিয়ে জেনারেল শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আরও সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ করে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমরা জানি কীভাবে এটা করতে হয়। কিন্তু আমাদের এটা করার সামর্থ্য থাকা উচিত।’
মিয়ানমার ইস্যু প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের কেউ কেউ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হচ্ছেন এবং এখানে নিজেদের সমস্যায় ফেলার ঝুঁকি রয়েছে।
‘এক বন্ধুকে খুশি করার জন্য আমরা আরেক বন্ধুর বিরোধিতা করতে পারি না। বেশকিছু বিষয় রয়েছে যা আমাদের খেয়াল করতে হবে। এসব ঘটনার প্রভাবও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং আমরা সঠিক পথেই রয়েছি।’
জেনারেল শফিউদ্দিন বলেন, দূর থেকে চালানো যায় এমন কিছু যানবাহন দেশেই তৈরি হচ্ছে যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বেশ উপকারে আসবে। আগে এসব যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হতো। তাই এখন আমাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কেবল যুদ্ধে লড়াই করাই শেখে না, বরং জাতীয় স্বার্থে কীভাবে যুদ্ধ প্রতিরোধ বা এড়াতে হয় তা-ও জানে। আমরা সঠিক পথেই আছি এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবো না।’
একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সামরিক বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব। এটি তারা কখনও ভুলে যায় না এবং এ কাজে সবসময় তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
‘উদ্দেশ্য রাতারাতি পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু সক্ষমতা রাতারাতি পরিবর্তন হয় না। আজ আপনি আমার বন্ধু, আগামীকাল বন্ধু না-ও হতে পারেন। কিন্তু জাতীয় স্বার্থ, মাতৃভূমি রক্ষায় আমাদের সক্ষমতা থাকতে হবে- পররাষ্ট্রনীতির এই আদেশ আমাদের সবার জন্য সমান।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার ও মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
মন্তব্য