পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরেও গ্রাহক পর্যায়ে সারের দাম বেশি হওয়ার পেছনে প্রশাসনের ব্যর্থতা আছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
সচিবালয়ে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েত চিয়েনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন চাষিরা ধান লাগানোর জন্য পাগল হয়ে গেছেন। তাদের সারও কিনতে হয়। হয়তো ডিলার বলতেছেন গাড়ি আসেনি বা কোনো কারণে আজকে সার নেই, কাল আসেন। কৃষক হয়তো বলেন না থাকলেও কিছু দাও, তখন চালাকি করে কারসাজি করে দাম বেশি নিচ্ছেন।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ডিসি, এসপি, কৃষি কর্মকর্তাদের টেলিফোন করি, সবাই বলে আমাদের এখানে সারের কোনো সমস্যা নেই। আমাদের গুদামে সারের সংকট নেই, গত বছরের চেয়ে এবার বেশি সার দিচ্ছি। তারপরও কেন দাম বাড়বে। এখানে আমাদের প্রশাসনের কিছুটা ব্যর্থতা নিশ্চয়ই আছে। দাম বাড়ার তো কোনো কারণ নেই। সংকট নেই।’
তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের লোক থাকতে পারে, সেটাও আমরা দেখছি। খুব শক্তভাবে, কঠোরভাবে আমরা এটা করার চেষ্টা করছি। রংপুর ও বগুড়ায় এটা বেশি হয়েছে, আমরা এগুলো তদন্ত করছি।’
সম্প্রতি আমন চাষের ভরা মৌসুমে বগুড়ায় সার না পাওয়ার অভিযোগ করেন কৃষকরা। তারা সারের দাবিতে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভও করেন। তবে সরকারের দিক থেকে সব সময় বলা হচ্ছে, সারের কোনো সংকট নেই।
এমন অবস্থায় সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি বা কারসাজি করলে জরিমানার পাশাপাশি ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি জানান, অনিয়মের অভিযোগে চলতি আগস্ট মাসে সারা দেশে ৩৮৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত ৩৮৩ জন ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীকে ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রবীণ এই নেতা বলেন, ‘যশোর জেলায় সবচেয়ে বেশি ৬০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহে ৩৫টি, নওগাঁয় ৩১টি, ঠাকুরগাঁও ও নড়াইলে ২০টি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।
‘নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যারা অনিয়ম করেছে তাদের লাইসেন্স বাতিল করার। লাইসেন্স দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। আমরা তাদের কাছে সুপারিশ পাঠাচ্ছি, তারা এটা পরীক্ষা করবে এবং অনেক ডিলারের লাইসেন্স বাতিল হবে বলে আমরা মনে করছি।’
দেশে সারের কোনো সংকট নেই বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী। বলেন, ‘আগস্টে আজকে পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে আমদানি করা ১ লাখ ৮০ হাজার টন এমওপি সার দেশে পৌঁছেছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ১ লাখ ১৬ হাজার টন সার দেশে পৌঁছাবে। অন্যদিকে, সেপ্টেম্বরে ৫১ হাজার টন ও অক্টোবরে ৭০ হাজার টন এমওপি সারের চাহিদা রয়েছে। ফলে চাহিদার চেয়ে মজুত অনেক বেশি হবে।’
তিনি বলেন, ‘চাহিদার বিপরীতে দেশে সব রকমের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। বর্তমানে (২৫ আগস্ট) ইউরিয়া সারের মজুত ৬ লাখ ৫৬ হাজার টন, টিএসপি ৩ লাখ ৯৪ হাজার টন, ডিএপি ৮ লাখ ২৩ হাজার টন, এমওপি ২ লাখ ৭৩ হাজার টন।’
এ ছাড়া মজুতের বিপরীতে আমন মৌসুমে (আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত) সারের চাহিদা রয়েছে ইউরিয়া ৬ লাখ ১৯ হাজার টন, টিএসপি ১ লাখ ১৯ হাজার টন, ডিএপি ২ লাখ ২৫ হাজার টন, এমওপি ১ লাখ ৩৭ হাজার টন।
আগের বছরগুলোর তুলনায় এই সময়ে সারের মজুত বেশি রয়েছে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
নওগাঁর ধামইরহাটে রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল নামে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দিলেও তিনি আসলে তা নন, প্রতারণার স্বার্থে ভুয়া পরিচয় ধারণ করেছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার রুপনারায়নপুর গ্রাম থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।
২৫ বছর বয়সী রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী ম্যানুয়েল তপন জানান, ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে তিনি (পিয়াল) তার কাছ থেকে ২৯ হাজার ৫৩৮ টাকা গ্রহণ করেন এবং আরও টাকা দাবি করলে স্থানীয় জনতা তাকে চ্যালেঞ্জ করে। এরপর সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দেয়া হয়। পরে থানা পুলিশ গিয়ে প্রতারক পিয়ালকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
তপন বলেন, ‘বেশকিছু দিন ধরে আমার মতো এলাকার অন্য লোকজনের কাছেও বিভিন্ন ফন্দি এঁটে প্রতারণা করে আসছে এই প্রতারক।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে ধামইরহাট থানার ওসি মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘প্রতারক রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন। ইতোমধ্যে একজনের কাছে থেকে ২৯ হাজার টাকা নিয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাও নিতেন তিনি।
‘এদিনও প্রতারণা করতে গেলে জনগণ তাকে আটক করে রাখে। এরপর পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ মামলা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর হাতিয়ায় ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মো. সুলতান নামে এক রোহিঙ্গা নাগরিকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাৎক্ষণিক এই হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১১৬ নম্বর ক্লাস্টার থেকে পুলিশ সুলতানের মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারের বাসিন্দা ছিলেন।
ভাসানচর থানার ওসি কাওসার আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি বলেন, সুলতান ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারে বসবাস করতেন। ১১৬ নম্বর ক্লাস্টারের খালি জায়গায় তিনি সবজি চাষ করতেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলে তার জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে বাবাকে দেখতে না পেয়ে তার ছেলে ওই ক্লাস্টারে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তার বাবার গলা কাটা মরতেজ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এ সময় অন্য ক্লাস্টারের লোকজন এগিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি কাওসার আহমেদ জানান, পেছনের দিক থেকে গলা কেটে এই রোহিঙ্গা নাগরিককে হত্যা করা হয়। শুক্রবার সকালে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন:গাইবান্ধায় ভাঙারির দোকানে চুরি করা রেলপাত (রেললাইন) বিক্রির সময় এক অটোচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এসময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ব্রিজ রোড এলাকার আশা ভাঙারি দোকানে সরকারি এসব রেলপাত বিক্রির সময় তাদের হাতেনাতে আটক করে গাইবান্ধার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)।
এ সময় চুরি করে বিক্রি করতে নিয়ে আসা রেলপাত এবং সেসব পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশাও জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার পশ্চিম দুর্গাপুর এলাকার ৩০ বছর বয়সী সাগর মিয়া, ফুলছড়ি উপজেলার উত্তর কঞ্চিপাড়া এলাকার ৪০ বছর বয়সী ওয়াহেদ মিয়া ও আশা ভাঙারি দোকানের শ্রমিক সদর উপজেলার বালুয়া বাজারের পাকারখুটি এলাকার ৩৩ বছর বয়সী মোকলেছুর রহমান। এদের মধ্যে ওয়াহেদ মিয়ার অটোরিকশায় এসব মালামাল পরিবহন করা হয়েছিল।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশের ওসি খাইরুল ইসলাম তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের ব্রিজ রোডের একটি ভাঙারির দোকানে সরকারি রেলপাত অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়কালে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এ সময় তাদের কাছ থেকে খণ্ড খণ্ড তিন ফুট দৈর্ঘ্যের ৯ টুকরা রেললাইনের পাত উদ্ধার করা হয়, যা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেয়া হবে।’
রেলপাতগুলো বালাসিঘাটের পরিত্যক্ত রেলপথ থেকে খুলে আনা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আটককৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া এদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। ঢাকার সাভারের বোট ক্লাবের পরিচালক নাছির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর, হত্যাচেষ্টা, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে করা মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালতে বৃহস্পতিবার এই আবেদন করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল। শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য রেখেছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন সম্প্রতি ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে দ্বিতীয় তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন।
পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন।
একপর্যায়ে পরীমনি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসির উদ্দিনকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেন। বাদী এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি বাদীকে গালমন্দ করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, বাদী ও আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে পরীমনি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির উদ্দিন মাথা ও বুকে আঘাত পান। এ সময় পরীমনি ও তার সহযোগীরা নাসির উদ্দিনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেন ও ভাঙচুর করেন।
বাদী মামলায় আরও উল্লেখ করেন, এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য পরীমনি সাভার থানায় বাদী নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেন।
২০২১ সালের ১৪ জুন ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে পরীমনি সাভার থানায় মামলা করেন।
ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
২০২২ সালের ১৮ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন নাসিরসহ তিন আসামি। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
আরও পড়ুন:অপহরণের ৬ ঘণ্টার মধ্যে সিরাজগঞ্জ থেকে তামিম হোসেন নামের ৭ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় এ মামলার আসামি আল-আমিন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে বেলকুচি উপজেলার চন্দনগাতী গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে র্যাব ১২-এর একটি দল। বুধবার দুপুর তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার হানুরবাড়াদি গ্রাম থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত তামিম হোসেন চুয়াডাঙ্গার হানুরবাড়াদি গ্রামের মো. সুন্নত আলীর ছেলে। অপরদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ২৯ বছর বয়সী আল-আমিন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানায় মেষতলী বাজারের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব ১২-এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অপহরণের পর শিশুটির বাবা সুন্নত আলী চুয়াডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি র্যাবকে জানালে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান নির্ণয় করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, তামিমের বাবার সঙ্গে আল আমিনের দুই মাস আগে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়েই সুকৌশলে তামিমকে অপহরণ করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিপণের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হস্তান্তর করার আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রুমা থানার দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এক নারীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলায় ৫৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বান্দরবান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে একাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, রুমা থানার জিআর মামলা নং- ৪ ও ৭ মামলায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে ৫২জনকে দু’দিন করে রিমান্ড এবং একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৮জন নারী ও ৩৯জন পুরুষ বন্দিকে দুটি গাড়িতে করে আদালতে হাজির করা হয়। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের ঘটনায় তাদেরকে রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বান্দরবানে চলমান যৌথ অভিযানে সন্দেহভাজন আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৬জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের কালকিনিতে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
ওই কলেজছাত্রীর মা এ মামলা করেন বলে বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
মামলার প্রধান আসামি ও তার পরিবারের সদস্যরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন।
স্থানীয়, পুলিশ ও কলেজছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার একটি গ্রামের নাজমুছ সাকিবের সঙ্গে একই এলাকার কলেজছাত্রীর প্রায় দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর জেরে গত শুক্রবার রাতে ওই কলেজছাত্রীকে তার বসতঘরে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন নাজমুছ সাকিব।
এ ঘটনা জানতে পেরে স্থানীয় লোকজন সালিশ করে নাজমুছ সাকিবকে জিজ্ঞাসা করলে ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে করবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন, কিন্তু সালিশের বেশ কয়েক দিন পার হলেও ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে না করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান সাকিব।
পরে কলেজছাত্রীর মা বাদী হয়ে নাজমুছ সাকিবসহ তার পরিবারের তিনজনকে আসামি করে আদালতে ধর্ষণের মামলা করেন। এর প্রেক্ষাপটে থানা পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়।
মামলার বাদী কলেজছাত্রীর মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ করেছে নাজমুছ সাকিব, কিন্তু এখন আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চায় না বলে ধর্ষণকারীসহ তার পরিবারের তিনজনের নামে আমি মামলা করেছি। আমি এর বিচার চাই।’
বিষয়টি জানার জন্য অভিযুক্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের এলাকায় পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘এই ঘটনা জানতে পেরে আমরা নাজমুছ সাকিবকে জিজ্ঞেস করলে ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয়, কিন্তু ঘটনার বেশ কয়েক দিন পার হলেও ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে না করে ধর্ষণকারী ও তার পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়, তবে ওই যুবকের বিরুদ্ধে এই ধরনের ঘটনা আরও আছে।’
কালকিনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আদালতে একটি মামলা হয়েছে। পরে ওই ছাত্রীকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য