গাজীপুরের কালীগঞ্জ এলাকায় এক প্রসূতির মৃত্যুর চাঞ্চল্যকর ঘটনায় 'জনসেবা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে' সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দেন এক মা।
এ সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয় শিরিন বেগম নামে ওই মায়ের। তার রক্তের গ্রুপ এবি পজিটিভ হওয়ায় স্বজনদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এর মধ্যে তার শরীরে বি পজিটিভ রক্ত পুশ করা হয়।
যার ফলে শিরিন বেগম নামে ওই মায়ের খিচুনি ওঠে। এরপর ওই হাসপাতালে তার চিকিৎসা করতে থাকেন ওটি বয় ও নার্সরা। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় আনার পথে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যান ওই মা।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ওই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন হাসপাতালের পরিচালক বন্যা আক্তার, মো. আশিকুর রহমান, সংগিতা তেরেজা কস্তা, মেরী গমেজ, সীমা আক্তার ও শামীমা আক্তার।
এ সময় ভিকটিমের চিকিৎসাসংক্রান্ত ও হাসপাতাল পরিচালনার মেয়াদ উত্তীর্ণ নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি জানান, গত ২১ আগস্ট সকালে গাজীপুরের কালীগঞ্জের বাসিন্দা ভিকটিম শিরিন বেগমের প্রসববেদনা উঠলে পূর্বপরিচিত 'জনসেবা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের' ব্যবস্থাপনা পরিচালক বন্যা আক্তারের মাধ্যমে ওই হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য ভর্তি হন।
পরবর্তী সময়ে ওটি বয় আশিকের তত্ত্বাবধানে রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা ও আল্ট্রাসনোগ্রাম করে সিজারের জন্য রোগীকে ওটিতে নেয়া হয়। ডাক্তার মাসুদ গাইনোকলজিস্ট না হয়েও সে রোগীর সিজার করেন।
ওটি শেষে ব্লিডিং হওয়ায় মাসুদের পরামর্শে আশিক এবং বন্যা রোগীর পরিবারকে এবি পজিটিভ রক্ত সংগ্রহের কথা বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে ভিকটিমের ভাই ও ননদের ছেলের এবি পজিটিভ গ্রুপের রক্ত হওয়ায় তাদের থেকে রক্ত সংগ্রহ করার ব্যবস্থা হয়।
প্রথমে ভিকটিমের ভাইয়ের শরীর থেকে এক ব্যাগ রক্ত নিয়ে রোগীর শরীরে পুশ করা হয়। আরও এক ব্যাগ রক্ত নিতে ননদের ছেলেকে বেডে শোয়ানো হয়। এরই মধ্যেই হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সরা ভিকটিমের শরীরে বি পজিটিভ গ্রুপের রক্ত পুশ করেন।
ভিকটিমের এবি পজিটিভ গ্রুপের রক্তের পরিবর্তে বি পজিটিভ রক্ত পুশ করায় রোগীর খিচুনি উঠলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে আশিকের তত্ত্বাবধানে রোগীর চিকিৎসা চলতে থাকে। একপর্যায়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যার দিকে রোগীকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেয়। ভিকটিমের পরিবার রোগীকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করলে অবস্থার আরও অবনতি হলে উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, 'জনসেবা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ নিয়মিত কোনো ডাক্তার ছিল না। অথচ সেখানে গড়ে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০টি সিজারিয়ান অপারেশনসহ প্রায় ৫০টির অধিক বিভিন্ন অপারেশন সম্পন্ন করা হতো। মেয়াদোত্তীর্ণ কাগজে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছিল হাসপাতালটি। ওটির জন্য রোগী ভেদে বিভিন্ন প্যাকেজে ১০-১৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করা হতো।
বন্যা আক্তার ওই হাসপাতালের অন্যতম অংশীদার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার কোনো নার্সিং ডিগ্রি নেই। তবে তিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালে সাত বছর নার্সিং ও আড়াই বছর ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছিলেন। বর্তমানে হাসপাতালটির মালিক তিনজন বলে জানা যায়।
আশিক এসএসসি পাস করে ২০১৬ সালে ম্যাটস থেকে তিন বছরের ডিএমএফ কোর্স পাস করেন।
হাসপাতালে ২০ হাজার টাকা মাসিক বেতনে ওটি বয় ও ডক্টর সহকারী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন তিনি। ঘটনার দিন আশিক ডা. মাসুদের সহকারী হিসেবে ওটিতে উপস্থিত ছিলেন। তবে সেখানের নার্স ও ভিকটিম পরিবার তাকে ডাক্তার হিসেবে জানত। রোগী তদারকি, ডাক্তারদের সঙ্গে সমন্বয় রাখা, বিভিন্ন ধরনের টেস্ট করা ও ডাক্তারদের পক্ষে কাগজপত্রে ভুয়া স্বাক্ষর করতেন তিনি।
সংগিতা তেরেজা কস্তা এসএসসি পাস এবং ওই হাসপাতালে সিনিয়র নার্স হিসেবে কর্মরত। মেরী গমেজ এসএসসি পাস এবং জুনিয়র নার্স, সীমা আক্তার এসএসসি পাস এবং নার্স, শামীমা আক্তার এসএসসি পাস এবং হাসপাতালের একজন রিসিপশনিস্ট হিসেবে কর্মরত।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির লাইসেন্সের মেয়াদ ৩০ জুন ২০২১ তারিখে শেষ হয়েছে। এ ছাড়া ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ ৩০ জুন ২০২২ তারিখে শেষ হলেও তারা আর নবায়ন করেননি।’
টানা চতুর্থ দিনের মতো ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে আন্দোলন ও বিক্ষোভ করছেন সরকারি কর্মচারীরা। অধ্যাদেশটি বাতিল না হলে আরও কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ভবনের নিচে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে আন্দোলন ও বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা। পরে সচিবালয়ের ভিতরে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
এ সময় বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যাননুরুল ইসলাম জানান, চাকরি অধ্যাদেশ পুরোপুরি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।
কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
সরকারি কর্মচারীরা অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। । এটি বাতিল করার জন্য সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি ছাড়াও কয়েকজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
সারা দেশে লঘুচাপের প্রভাবে গত দুদিন ধরে বৃষ্টিপাতের কারণে বাতাসে দূষণের উপস্থিতিও কমে এসেছে অনেকটা। গত দুদিনের মতো আজও ঢাকার বায়ুমান ‘ভালো’র কাছাকাছি রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল ৯টায় ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৪। এই সূচক ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত, যেকোনো প্রকার অস্বাস্থ্যকার শ্রেণি থেকে যা অনেক দূরে।
কণা দূষণের একিউআই সূচক যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
ফলে আজ সকালে রাজধানী ঢাকার বাতাস দূষণ থেকে দূরে এবং ‘ভালো’র একপ্রকার কাছাকাছি বলা চলে।
এই সময়ে ১৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহর ছিল পাকিস্তানের লাহোর। সূচক ১৫২, ১৩৯, ১৩৭ ও ১৩৫ নিয়ে তারপরই ছিল যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা, চিলির রাজধানী সান্তিয়াগো, ফিলিপাইনের ম্যানিলা এবং কুয়েত সিটি।
এ ছাড়াও ৯৯ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে ছিল পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের শহর দিল্লি। তবে দূষণের মাত্রা কম থাকায় একই সময়ে ঢাকার অবস্থান ছিল অনেক নিচে; ৫৪ নম্বরে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে ঢাকা। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়। বর্ষার শুরুতেই অবশ্য এই আভাস মিলতে শুরু করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে মানি এক্সচেঞ্জে ব্যবসায়ীর ২২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনার পর আসামিদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের সূত্র ধরেই অস্ত্রসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গত মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-চক্রের হোতা মো. জলিল মোল্লা (৫২), মো. জাফর (৩৩), মোস্তাফিজুর রহমান (৪০), সৈকত হোসেন ওরফে দিপু মৃধা (৫২), মো. সোহাগ হাসান (৩৪) ও পলাশ আহমেদ (২৬)। এ ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, তিনটি মোটরসাইকেল, পিস্তল, গুলি, জাল টাকা ও লুণ্ঠিত টাকা-বিদেশি মুদ্রাও উদ্ধার করা হয়েছে।
পেশাদার চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে টাকা ও স্বর্ণালংকার ডাকাতি করে আসছিল। চক্রটি দীর্ঘদিন মানি এক্সচেঞ্জের মালিকের ওপর নজরদারি করে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মিন্টুরোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান যুগ্ম-কমিশনার ডিবি (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গত ২৭ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাহমুদ মানি এক্সচেঞ্জের মালিক রাসেল ও তার ভগ্নিপতি জাহিদুল হক চৌধুরী মিরপুর-১১ সি-ব্লকের বাসা থেকে ২১ লাখ টাকা ও বিভিন্ন দেশের মুদ্রা নিয়ে হেঁটে মিরপুর-১০ নম্বরের অফিসে যাচ্ছিলেন। শেরে বাংলা স্টেডিয়াম ও ফায়ার সার্ভিসের মাঝামাঝি গলির মুখে পৌঁছালে মোটরসাইকেলযোগে ওত পেতে থাকা ৭ থেকে ৮ জন মুখোশধারী ছিনতাইকারী তাদের গতিরোধ করে। তাদের একজন পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা ভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। বাধা দিলে আরেকজন গুলি ছোড়ে এবং একজন ধারালো চাপাতি দিয়ে জাহিদুলের কোমরে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় জাহিদুল রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। ডাকাতরা চারটি মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার ভিডিও একজন পথচারী মোবাইল ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে তা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় আহত জাহিদুল হক চৌধুরী বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেন। ঘটনার পরপরই ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে ডিবির একাধিক টিম মাঠে নামে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিবি প্রথমে ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস শনাক্ত করে। মাইক্রোবাসের চালক জাফরকে (৩৩) গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাফর ছিনতাইয়ের ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে তথ্য বিশ্লেষণ করে একযোগে ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ ও যশোরে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের মূল পরিকল্পনাকারী জলিল মোল্লাসহ চক্রের আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, হত্যা ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। আসামিদের কাছ থেকে ডাকাতির ৫ লাখ ৩ হাজার টাকা, ১০৬টি বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, ২ লাখ ১২ হাজার টাকার জাল নোট, একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলি, একটি চাপাতি এবং তিনটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এ চক্র আগেও ভয়াবহ কয়েকটি ঘটনায় জড়িত ছিল। গত ২৪ জানুয়ারি কামরাঙ্গীরচর এলাকায় গুলি করে ৫০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই এবং ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডে গুলি চালিয়ে ৫২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এ চক্রের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আসামিরা।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ ডাকাতি চালাতে এ চক্র আধুনিক প্রযুক্তি, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিভিন্ন ছদ্মবেশে কার্যক্রম পরিচালনা করতো। বাকি অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত সম্পদ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে যুগ্ম-কমিশনার ডিবি (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল করা না হলে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সচিবালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। তাছাড়া, অধ্যাদেশটি বাতিল না হওয়ার পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানান তিনি।
বুধবার (১৮ জুন) সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের নিচে মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে আন্দোলনকালে এসব কথা জানান তিনি।
নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আট বিভাগে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেছে। আলোচনার নামে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আস্থা ভঙ্গ করেছেন, বিশ্বাস নষ্ট করেছেন। আমরা চাই আমাদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হোক। এ ছাড়া যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলা রয়েছেন, তাদের তাড়াতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকারি কর্মচারী, আমরা নিয়ম-শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী। অধ্যাদেশ বাতিল না হলে রবিবার (২২ জুন) আরও বৃহত্তর আন্দোলন আসবে।’
এর আগে, চাকরি অধ্যাদেশ পুরোপুরি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।
কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
সরকারি কর্মচারীরা অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এটি বাতিল করার জন্য সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি ছাড়াও আজ (বুধবার) সমাজকল্যাণ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদের’ এক পরিবেশকের এক কোটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানায়, ‘আব্দুল খালেক নয়ন নগদের একজন পরিবেশক। তিনি উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্লাটে থাকেন। শনিবার সকালে তিনি তার চারজন এমপ্লয়িকে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে বাসার পাশেই পরিবেশক অফিসে পাঠাচ্ছিলেন। সাথে এক কোটি টাকার বেশি ছিল।’
‘তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল দুটি বারো নম্বর রোড ক্রস করে যখন তেরো নম্বর রোডে ঢুকছিল, তখন ওৎপেতে থাকা একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত তিন থেকে চারজন নেমে এসে টাকার ব্যাগ বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীদের ধাওয়া করে।’
পুলিশ আরও জানায়, এদের মধ্যে একজন আরোহী দৌড়ে পালিয়ে গেলেও তিনজনকে টাকার ব্যাগসহ তারা মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরবর্তীতে তারা উত্তরা সতেরো নম্বর সেক্টরে নগদ মাইক্রোবাস থেকে তাদের ফেলে দিয়ে টাকার ব্যাগ সহ পালিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে উত্তরা ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার মইদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ‘ঘটনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফোটেজ সংগ্রহ করেছেন। ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
ঈদ উপলক্ষে লম্বা ছুটিতে বেশ কিছুদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা হয়ে গেছে শহর ঢাকা। সড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ; স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও বন্ধ; রাস্তায় লোকজনও হাতেগোনা। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমে গেলেও রাজধানীর বাতাসের মানে খুব বেশি অবনতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল মাত্র ৬৬। আর দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আরও অবাক হওয়ার মতো। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিলেও ঢাকার অবস্থান আজ ৫৫তম।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ মাঝারি হলেও ‘ভালো’ থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
এই সময়ে ৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকার ৫২তম স্থানে ছিল স্পেনের বার্সেলোনা, ৫০তম স্থানে সুইজারল্যান্ডের বেয়ার্ন, ৬৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি, ৭০ ও ৭১ স্কোর নিয়ে ৪৪ ও ৪৩তম স্থানে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি, ৭৩ স্কোর নিয়ে ৩৮তম স্থানে কানাডার টরেন্টো, ৮০ স্কোর নিয়ে ২৭তম দূষিত শহর শিকাগো, ৯৯ স্কোর নিয়ে ১৫তম স্থানে ইতালির রোম এবং ১২৮ স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে মিলান।
তবে ১৬৮ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের দিল্লি। ১৬২, ১৫৬ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে এর পরের তিন দূষিত শহর যথাক্রমে ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের লাহোর ও সৌদি আরবের রিয়াদ।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
মন্তব্য