মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে অনড় হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালির ২৪টি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসনের হলরুমে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়েছে। বেলা ২টা পর্যন্ত বৈঠক চলছিল।
বৈঠকে জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিন্টু চৌধুরী, পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈলেন চাকমা, চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্কর, চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিক, মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলামসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন।
বৈঠকে চা শ্রমিকদের পক্ষে রয়েছেন চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির প্রধানরা। নেই শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
এদিকে ১৬ দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা। সকাল থেকে বিভিন্ন বাগানের শ্রমিক চান্দপুর ফ্যাক্টরির সামনে এসে জড়ো হন। প্রধানমন্ত্রী নিজমুখে না বললে কাজে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
চান্দপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির প্রধান সাধন সাঁওতাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা মা বলি। আমাদের মা যদি ভিডিও বার্তা বা অন্য কোনো মাধ্যমে নিজের মুখে আমাদের কাজে ফিরে যেতে বলেন, তাহলে আমরা কাজে ফিরে যাব।’
সংকট সমাধানে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির নেতাদের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়নের একটি দীর্ঘ যৌথ বৈঠক হয়।
এদিনও সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাস না পেলে কাজে ফিরবেন না বলে জানান শ্রমিকরা। দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
সাধন সাঁওতাল বলেন, ‘মঙ্গলবার চান্দপুর রাবার বাগানের মাঠে লস্করপুর ভ্যালির ২৩টি বাগানসহ হবিগঞ্জের ২৪টি বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা বৈঠকে বসেন। দীর্ঘ আলোচনা শেষে নেতারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।’
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করার দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলনে নামেন দেশের ১৬৬ চা বাগানের দেড় লাখের বেশি শ্রমিক। চার দিন ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তারা।
কিন্তু চা বাগানের মালিকরা দাবি না মানায় ১৩ আগস্ট থেকে পুরোপুরি কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। ধর্মঘটের আট দিনের মাথায় শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে শ্রম অধিদপ্তর ও সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসেন চা শ্রমিক নেতারা।
বৈঠক শেষে শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানান। তবে নেতাদের এই সিদ্ধান্ত জানানোর পরই ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ চা শ্রমিকরা। এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
এদিন ২৫ টাকা মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন তারা। এ সময় নেতাদের বিরুদ্ধেও বিষোদ্গার করেন শ্রমিকরা। পরে রাতে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এরপর রোববার রাত ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের বৈঠক হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নতুন মজুরি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান দৈনিক ১২০ টাকা মজুরি ঠিক রেখে চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন। এ ছাড়া শ্রমিকরা যে কয়দিন কর্মবিরতি পালন করেছেন, মালিকপক্ষ তাদের নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকদের সেই মজুরি দেবেন বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।
এ সিদ্ধান্তও মেনে নেননি শ্রমিকরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির নেতাদের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়নের একটি দীর্ঘ যৌথ বৈঠক হয়। এদিনও সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাস না পেলে কাজে ফিরবেন না বলে জানান শ্রমিকরা।
সাধন সাঁওতাল বলেন, ‘প্রথমে আমরা বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের ডাকে আন্দোলনে নেমেছিলাম। এখন যেহেতু তারা আমাদের সঙ্গে নেই, তাই আমরা শিগগিরই নতুন কমিটি ঘোষণা করে তাদের নেতৃত্বে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
আরও পড়ুন:প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে বিল ভাউচার, কোথাও কোথাও নামমাত্র বাস্তবায়ন, কোথাও আবার কৃষকের ফসলি জমিতে সাইনবোর্ড লাগিয়ে প্রদর্শনী দেখিয়ে বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠা কৃষি কর্মকর্তাকে বদলি করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ছাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশে এ বদলি করা হয়।
এ আদেশের এক কপি এসেছে এ প্রতিবেদকের হাতে।
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদও বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বদলি হওয়া কৃষি কর্মকর্তার নাম সুমন কুমার সাহা, যিনি ২০২৩ সালের ১৭ মে থেকে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় কর্মরত ছিলেন।
এ কর্মকর্তার অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে গত ২ নভেম্বর ‘উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম। এরপর ৩ নভেম্বর তাকে সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
তাড়াইল উপজেলায় পাঁচটি প্রকল্পে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুমন সাহা প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে কৃষি কর্মকর্তার দাবি, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের সব উপকরণ বিতরণ করেন তিনি। যদিও তার এমন দাবি নাকচ করেছেন সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। তাদের ভাষ্য, কোনো প্রদর্শনীর বরাদ্দের পরিমাণ জানেন না তারা।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে তিন সন্তানের মৃত্যুর পর প্রাণ হারিয়েছেন মোহাম্মদ বাবুল মিয়া (৪০), যার শরীরের ৬৬ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় চারজনের প্রাণহানি হলো।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার দিকে বাবুলের মৃত্যু হয়।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম জানান, ভোরের দিকে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে ছেলে-মেয়েসহ চারজন মারা গেলেন।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে দুজন চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে বাবুলের স্ত্রী শেলির দেহের ৩০ শতাংশ এবং মেয়ে মুন্নির দেহের ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর পর ৯ বছর বয়সী শিশু তাসলিমার মৃত্যু হয়েছে।
এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজনের প্রাণহানি হলো।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মঙ্গলবার রাতে শিশুটির মৃত্যু হয়।
গত শুক্রবার গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধ হয়ে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার ভোরে সোহেল ও ইসমাইল নামের দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয় আইসিইউতে। মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে আইসিইউতে তাদের ছোট বোন তাসলিমাও মারা যায়, যার শরীরের ৬৩ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
তিনি আরও জানান, তিনজনের বাবা বাবুলের দেহের ৬৬ শতাংশ, মা শেলির দেহের ৩০ শতাংশ এবং তাদের স্বজন মুন্নির দেহের ২০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। চিকিৎসাধীন এ তিনজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন:বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ কোন সমুদ্রবন্দর থেকে কত দূরে, তা জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি বুধবার আবহাওয়ার পাঁচ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় (২৩ অক্টোবর, ২০২৪) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।’
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের আশপাশে বাতাসের গতিবেগ নিয়ে বলা হয়, ‘ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।’
বন্দর ও জেলেদের উদ্দেশে বার্তায় বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
‘উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও বর্ষীয়ান রাজনীতিক মতিয়া চৌধুরীর প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
রমনা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে তার বাসভবনের সামনে বৃহস্পতিবার জানাজা সম্পন্ন হয়।
এর আগে মতিয়া চৌধুরীর মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স তার বাসায় পৌঁছালে বন্ধুবান্ধব, পরিবার ও অনুসারীরা তাকে শেষ বিদায় জানায়।
মতিয়া চৌধুরীর ভাই মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, সিটি করপোরেশনের কাছে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফনের জন্য নতুন কবর চাওয়া হয়েছে। যদি পাওয়া যায়, তাহলে সেখানে দাফন করা হবে। অন্যথায় স্বামী বজলুর রহমানের কবরে তাকে দাফন করা হবে।
রাজধানী এভারকেয়ার হাসপাতালে বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮২ বছর বয়সে মারা যান প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
বঙ্গোপসাগরে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার বহির্নোঙরে এলপিজিবাহী ‘সোফিয়া’ নামের লাইটারেজ জাহাজে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
এ ঘটনায় জাহাজে থাকা ৩১ জন ক্রুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
আগুনে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
রাতে ঘটনার পরপরই খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং ক্রুদের উদ্ধারকাজ শুরু করে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের কয়েকটি জাহাজ। উদ্ধারকাজে অংশ নেয় মেটাল শার্ক ও চারটি অগ্নিনির্বাপণী ও উদ্ধারকারী দল।
বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া উপকূলের পশ্চিমে বহির্নোঙর এলাকায় শনিবার রাত পৌনে একটার দিকে আগুনের ঘটনা ঘটে বলে জানান কোস্ট গার্ড পূর্ব জোনের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি।
আগুনের সূত্রপাত কীভাবে ঘটেছে, তা নিশ্চিত করতে না পারলেও হতাহতের কোনো ঘটনা নেই বলে জানান তিনি।
কোস্ট গার্ডের এ কর্মকর্তা জানান, জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে যাচ্ছিল, তবে কোন দেশ থেকে এলপিজি বহন করে আনছিল, তা নিশ্চিত নন তিনি।
মুনিফ তকি বলেন, “এলপিজি বহনকারী ‘সোফিয়া’ নামের লাইটারেজ জাহাজটি কুতুবদিয়া উপকূলের পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে নোঙর করেছিল। শনিবার মধ্যরাতে জাহাজটিতে আকস্মিক আগুন লেগে যায়। এতে আগুন ভয়াবহ রূপ নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
“কুতুবদিয়ার উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের কয়েকটি জাহাজ। দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজটির আগুন নিয়ন্ত্রণ ও ক্রুদের উদ্ধারকাজ চালায় কোস্ট গার্ডের দুটি জাহাজ এবং নৌবাহিনীর পাঁচটি অত্যাধুনিক জাহাজ।”
সোয়া ১১ ঘণ্টা চেষ্টার পর রোববার দুপুর ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে জাহাজটির ভেতরে পুনরায় অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি এড়াতে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা কাজ চালাচ্ছেন।
কোস্ট গার্ডের গণমাধ্যম কর্মকর্তা বলেন, ‘জাহাজটিতে মোট ৩১ জন ক্রু ছিল। তাদের সবাইকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
‘তাদের উদ্ধারের পর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রামের হোটেল আগ্রাবাদে রাখা হয়েছে।’
এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি কোনো ধরনের নাশকতা, তা জানতে কোস্ট গার্ডসহ সংশ্লিষ্টরা খোঁজখবর নিচ্ছে বলে জানান খন্দকার মুনিফ তকি।
আরও পড়ুন:শেরপুরে আকস্মিক বন্যায় গবাদি পশুর খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
বন্যার অজুহাতে গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারি সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন বানভাসিরা।
গবাদি পশু বাঁচাতে দ্রুত সরকারি সহায়তা প্রদানের দাবি করেছেন তারা।
১৯৮৮ সালের পর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখেছেন শেরপুরের লোকজন। হঠাৎই উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় নাজেহাল হয়ে পড়েছেন জেলার মানুষ। টানা চার দিনের বন্যায় ভেঙে পড়েছে জনজীবন।
গবাদি পশু নিয়ে বেশ বিপাকে রয়েছেন বানভাসিরা। বাড়িঘর ও গোয়ালঘরে পানি প্রবেশ করায় রাস্তার পাশে ও উঁচু স্থানে গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয় নেন বন্যা কবলিতরা।
বন্যার পানিতে সবজি ক্ষেতসহ মাঠ ডুবে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে ঘাসের অভাব। এ ছাড়া বাড়িঘরে পানি ওঠায় নষ্ট হয়ে গেছে খড়ের গাদা।
গাজীরখামারের করিম মিয়া বলেন, ‘এবার বন্যায় সব শেষ। ধান সব শেষ। খেড় (খড়) কই পামু পরে। আর সব তো ডুইবা আছে। ঘাসও নাই। কামাই, রোজগারও নাই। গরুর খাওয়া কিনমু ক্যামনে?’
বালুরঘাটের হারুন বলেন, ‘গরু-ছাগল নিয়া বিপদে পড়ছি। গরু রাস্তায় নিয়া রাখছি। রাতে পাহারা দিতাছি। গরুর খেড় সব ডুইবা গেছে।’
কলসপাড়ের সামসুল বলেন, ‘বন্যায় গরু-ছাগলের জন্য খাওয়া কেউ দিলে এল্লা উপকার হইত। টাকা-পয়সাও নাই যে খাওয়া কিনমু। ওদেরও পেট আছে। অনেক কষ্ট করতাছে গরু-ছাগল গুইল্লা।’
কলসপাড়ের রফিকুল বলেন, ‘আমরা বন্যার এত দিনেও কোনো সহায়তা পাইনি। আমাদের গবাদি পশু নিয়ে খুব বিপদে আছি। নিজেরা খাবার পাইতাছি না। আবার গরু-ছাগলের খাওয়ার ব্যবস্থা নাই।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এবিএম আবদুর রউফ জানান, প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গবাদিপশুর খামারিদের প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ছাড়া খাদ্য সংকট নিরসনে দুর্গত এলাকায় ৩ টন গোখাদ্য বিতরণ করা হবে।
তিনি আরও জানান, এ বন্যায় জেলার ৬৬ জন খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দুর্গত এলাকাগুলোতে অনেক প্রাণী খাদ্য সংকটে পড়েছে এবং নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য