সিলেট অঞ্চলের চা শ্রমিকরা যখন দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে ধর্মঘটে ব্যস্ত ছিলেন, সে সময় চুটিয়ে কাজ করে গেছেন উত্তরে চায়ের নতুন ঠিকানা পঞ্চগড়ের চা শ্রমিকরা। মজুরি নিয়ে কোনো খেদ নেই তাদের মধ্যে। কারণ সেখানকার মজুরি কাঠামো সিলেট অঞ্চলের কাঠামোর চেয়ে অনেক ভালো।
শ্রমিকরা জানান, সেখানে দিনে ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারছেন তারা। আর এই অর্থে মোটামুটি চলে যাচ্ছে দিন।
পঞ্চগড়ের শ্রমিকদের জন্য অবশ্য মালিকরা রেশন, আবাসন, চিকিৎসা ইত্যাদি সুবিধা দেন না, যেটির কথা বলে সিলেট অঞ্চলের বাগান মালিকরা দাবি করে থাকেন, দিনে মজুরি ১২০ টাকা হলেও সব সুযোগ-সুবিধা মিলিয়ে তা ৪০০ টাকার বেশি নয়।
শ্রমিকরা যদি সব সুযোগ-সুবিধা মিলিয়ে দিনে ৪০০ টাকার বেশিও পান এবং তারা যে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা দাবি করছেন, সেটি যদি মালিকপক্ষ শেষ পর্যন্ত মেনেও নেয়, তাহলেও সেটি ৬০০ টাকায় পৌঁছবে না, যে টাকা অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করে পঞ্চগড়ের শ্রমিকরা পাচ্ছেন।
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পঞ্চগড় সফরে গিয়ে সীমান্তের ওপারে ভারতে চা বাগান দেখতে পান। তখন তিনি এপারেও কেন বাগান হবে না, সে প্রশ্ন রেখে আসেন।
এর পর থেকেই শুরু। পরীক্ষামূলক বাগান করার পর যখন দেখা যায় এখানে চায়ের মান বেশ ভালো, তখন থেকে প্রতি বছরই বাড়ছে বাগানের আয়তন। যে জমি পতিত থাকত, সেই জমিতে এখন দুটি কুঁড়ি একটি পাতা তুলতে ভোরের আগে থেকেই শুরু হয় ব্যস্ততা।
পঞ্চগড়সহ পার্শ্ববর্তী পাঁচ জেলায় ১০ হাজার ২০০ একর জমিতে চা আবাদ হচ্ছে। সেখানে নিবন্ধিত ৯টি আর ২১টি অনিবন্ধিত চা বাগান রয়েছে। এ ছাড়া কৃষক পর্যায়ে ৮ হাজার ৬৭টি ক্ষুদ্র আকৃতির বাগানে চা চাষ হচ্ছে।
গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অঞ্চলে রেকর্ড ৭ কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার কেজি সবুজ চা পাতা থেকে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার কেজি বা ১৪ দশমিক ৫০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে।
কেবল বাগান নয়, সেখানে গড়ে উঠেছে ৪১টি কারখানা, যার মধ্যে ২২টিতে এখন উৎপাদন শুরু হয়েছে।
সিলেট অঞ্চলের মতো সেখানে কেবল চা বাগানের জন্য আলাদা শ্রমিক নেই। বাগানে তাদের জন্য নেই আবাসের আলাদা বন্দোবস্ত।
সেখানে শ্রমিকরা অস্থায়ীভাবে কাজ করেন। তারা কেজি হিসাবে কাঁচা চা পাতা তুলে টাকা বুঝে নেন। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও এ কাজে নিয়োজিত থাকেন।
প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতা তুলে শ্রমিকরা পারিশ্রমিক পান ৩ টাকা করে। নারী শ্রমিকরা প্রতিদিন দেড় শ থেকে দুই শ কেজি এবং পুরুষ শ্রমিকরা সাড়ে তিন শ থেকে চার শ কেজি পর্যন্ত কাঁচা চা পাতা তুলতে পারেন।
সে হিসাবে একজন নারী শ্রমিক প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা এবং পুরুষ শ্রমিকরা ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন।
৯ মাস পাতা তোলার কাজের পর এই শ্রমিকরাই আবার পরের তিন মাস বাগান পরিচর্যার কাজ করে থাকেন।
প্রতি বছরের মার্চ থেকে শুরু হয়ে নভেম্বর পর্যন্ত চলে চা উৎপাদনের কার্যক্রম। এক মৌসুমে সাত পর্বে পাতা তোলার কাজ করা হয়। আর ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি- এই তিন মাস চা পাতা সংগ্রহ ও কারখানাগুলোতে চা উৎপাদন বন্ধ থাকে। এ সময় চাষিরা তাদের বাগান প্রুনিং করে থাকেন।
সদর উপজেলার জগদল এলাকার চা শ্রমিক হোসনে আরা বেগম জানান, তিনি প্রতিদিন গড়ে ২০০ কেজি কাঁচা পাতা তুলছেন। এই হিসাবে তার আয় দিনে ৬০০ টাকা।
একই এলাকার চা শ্রমিক খয়রুল হোসেন জানান, আগে তিনি কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে সর্বোচ্চ দৈনিক মজুরি পেতেন ৫০০ টাকা। কয়েক বছর ধরে তিনি চা বাগান থেকে পাতা তোলার কাজ করছেন। এখানে প্রতিদিন তিনি উপার্জন করছেন ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত।
তেঁতুলিয়া উপজেলার বিল্লাভিটা এলাকার চা চাষি কাজী আনিস জানান, তারা অস্থায়ী ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োগ দেন। এসব শ্রমিক কেজি দরে বাগান থেকে চা প্লাক করে থাকেন।
একই উপজেলার শিলাইকুঠি বালাবালি এলাকার চা বাগান মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাগান থেকে ছোট করে পাতা কাটি। এ জন্য প্রতি কেজি কাঁচা পাতা কাটার জন্য শ্রমিককে দিই ৪ টাকা করে। একজন পুরুষ শ্রমিক ২০০ থেকে ৩০০ কেজি এবং নারী শ্রমিকরা ১০০ থেকে ১৫০ কেজি পর্যন্ত পাতা কাটতে পারেন। আগে বড় করে পাতা কাটতে দিতাম ৩ টাকা কেজি দরে।’
শ্রমিকরা জানান, সেখানে দিনে ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারছেন তারা। আর এই অর্থে মোটামুটি চলে যাচ্ছে দিন।
গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অঞ্চলে রেকর্ড ৭ কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার কেজি সবুজ চা পাতা থেকে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার কেজি বা ১৪ দশমিক ৫০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে।
পঞ্চগড় চা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শামীম আল মামুন বলেন, ‘সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের শ্রমিকরা স্থায়ী। মজুরি ছাড়াও তারা রেশন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। পঞ্চগড়সহ উত্তরের চা বাগানগুলোতে চা শ্রমিকরা অস্থায়ীভাবে কাজ করেন। এই অঞ্চলের শ্রমিকরা বাগান থেকে কাঁচা চা পাতা তোলেন কেজি হিসাবে। বর্তমানে এই অঞ্চলে প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতা তুলে শ্রমিকরা পান ৩ টাকা করে। এই হিসাবে তাদের আয় দিনে ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।’
এই কর্মকর্তা জানান, পঞ্চগড় জেলার চা বাগানগুলোতে প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন, যার অর্ধেকই নারী শ্রমিক। এদের অধিকাংশ আবার সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী থেকেও সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। ফলে তাদের প্রকৃত আয় সিলেট অঞ্চলের শ্রমিকদের আয়ের চেয়ে বেশি।
পঞ্চগড়ের শ্রমিকরা যদি ৬০০ থেকে এক হাজার টাকা আয় করতে পারে, তাহলে সিলেটের শ্রমিকদের ৩০০ টাকা মজুরি মেনে নিতে কী সমস্যা- জানতে চাইলে সিলেটের আহমেদাবাদ চা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আফজাল রশীদ চৌধুরী দাবি করেন, সেখানে সব শ্রমিকরা এই সুবিধা পায় না।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পঞ্চগড়ে যেসব বাগানে গ্রিন টি উৎপাদন করা হয় সেগুলোর শ্রমিকরাই কেবল বেশি মজুরি পেয়ে থাকেন। কারণ, গ্রিন টির জন্য বিশেষ ধরনের চা পাতা প্রয়োজন হয় এবং বিশেষ ধরনের শ্রমিকের প্রয়োজন। এছাড়া সাধারণ চায়ের চেয়ে গ্রিন টি দিগুনের চাইতেও বেশি দামে বিক্রি হয়। ফলে সেখানকার শ্রমিকদের বেশি মজুরি দেয়া সম্ভব হয়।
‘তবে আমাদের অনেক শ্রমিকও দিনে সবমিলিয়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করে।’
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে তাপসী তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ! কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।’
এমন স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানতে চাইলে রোববার তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি পোস্ট দিয়েছি এটাই তো যথেষ্ট। অনলি মি করেছি, বিভিন্ন কারণে হতে পারে।’
পরে তিনি বলেন, ‘এ বিষয় আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
বায়ুদূষণ কমাতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) ২০ বছরের বেশি পুরনো বাস-মিনিবাস এবং ২৫ বছরের বেশি পুরনো ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান সড়ক-মহাসড়ক থেকে প্রত্যাহার করতে চিঠি দিয়েছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
রোববার দেয়া চিঠিতে পুরনো ডিজেলচালিত বাস ও ট্রাকের ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়ার সময় বাধ্যতামূলকভাবে নিঃসরণ পরীক্ষা চালু করতেও বলা হয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নেতৃত্বে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বায়ুদূষণ রোধে ইকোনমিক লাইফ অতিক্রান্ত যানবাহন প্রত্যাহার এবং ডিজেলচালিত পুরনো যানবাহনের নিঃসরণ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্য বিআরটিএকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কমিটির প্রথম ও দ্বিতীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে ফিটনেসবিহীন ও ইকোনমিক লাইফ অতিক্রান্ত হয়েছে এমন যানবাহনকে রাস্তা থেকে প্রত্যাহারের জন্য বিআরটিএ কর্তৃক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঢাকায় পুরনো ডিজেলচালিত বাস ও ট্রাকের ফিটনেস পরীক্ষার সময় নিঃসরণ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হবে।
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে পর্যটকদের আপাতত ভ্রমণ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। আগামী ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪ দিন এই দুটি জেলা ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন রোববার বিকেল ৪টায় জানান, অনিবার্য কারণবশত ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভ্রমণপ্রত্যাশী পর্যটকদের বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এর আগে দুপুরে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন থেকে জারি করা এক নির্দেশনায়ও ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে ভ্রমণ না করার অনুরোধ জানানো হয়।
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে জেলা প্রশাসন।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আগামী সাতদিনের মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। একইসঙ্গে তিনি বর্তমান সরকারের কাছে আরও সাতটি দাবি তুলে ধরেছেন।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব দাবি জানান তিনি।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ও বেআইনি সংগঠন ঘোষণা করতে হবে। গত ১৬ বছরে দেশের সব সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য একমাত্র ছাত্রলীগ দায়ী। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সারাদেশে যত শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে, সব করেছে পুলিশ ও ছাত্রলীগের বাহিনী।’
মতবিনিময় সভায় সরকারের প্রতি বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে মাহমুদুর রহমান বলেন- ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রাজনৈতিক সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে এক সপ্তাহের মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। যমুনা সেতুকে শহীদ আবু সাঈদের নামে নামকরণ করতে হবে, যাতে মানুষ সেখান দিয়ে পার হওয়ার সময় শতাব্দীর পর শতাব্দী আবু সাঈদকে দেখতে পায়।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালের পর থেকে ভারতের সঙ্গে যতগুলো চুক্তি হয়েছে তার প্রতিটির ধারা-উপধারা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। জনগণকে জানাতে হবে ভারতের সঙ্গে কী কী চুক্তি হয়েছে এবং সেগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করতে হবে, যেখানে ভারতের ও ফ্যাসিবাদের দোসর থাকতে পারবে না।’
আমার দেশ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এভিনিউকে শহীদ আবরারের নামে নামকরণ করতে হবে। কারণ শহীদ আবরার এই ফ্যাসিবাদ আন্দোলনের প্রথম শহীদ।
‘মনে রাখতে হবে শেখ মুজিব বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরাচারী নেতা। আর শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের আইকন হচ্ছেন শেখ মুজিব।’
দাবি তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নমিনেশন অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে। কেননা পুতুলকে নমিনেশন দেয়া হয়েছিল জালিয়াতির মাধ্যমে।
‘আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে কারাগারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টুর হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে হবে।’
আরও পড়ুন:বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ১০৫টি শিশু নিহত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নিহত প্রতিটি শিশুর পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় এক কোটি ২০ লাখ বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। তাদের ৪৩ ভাগই ভাতা পাওয়ার যোগ্য নয় বলে ইউনিসেফ একটি পরিসংখ্যান দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। এজন্য তালিকাটি যাচাই-বাছাই করা হবে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংস্কারের পর নির্বাচন হবে। নির্বাচন নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।
সমাজসেবা কার্যালয় ও উপজেলা রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের মোট ৮২ লাখ ৭০ হাজার ৮৯৮ টাকার সেবা দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
বাংলাদেশ পুলিশের দেড়শ’ বছরের পুরনো আইন সংস্কারসহ এটিকে জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে যা যা করা দরকার সেসব নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সুপারিশ জমা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সফর রাজ হোসেন।
রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
সফর রাজ হোসেন বলেন, ‘পুলিশকে জনগণের আস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। বেঁধে দেয়া সময় তিন মাসের মধ্যে সব পর্যায়ের মানুষের মতামত নেয়া হবে। প্রয়োজনে ওয়েবসাইট তৈরি করে সাধারণ মানুষের মতামত চাওয়া হবে।’
এ সময় সেখানে উপস্থিত স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘কমিশনকে কারিগরি সহায়তা দেয়া হবে। তিন মাস পর সুপারিশ পেলেই শুরু হবে পুলিশ বাহিনী পুনর্গঠন ও সংস্কারের কাজ।’
এর আগে গত ৩ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পুলিশ সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটির গেজেট প্রকাশ করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ও যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ সাজ্জাদ আলী, ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ মো. গোলাম রসুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা এবং মানবাধিকার কর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান। এছাড়া কমিশনে আরও থাকবেন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর স্টেডিয়ামে রোববার সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিশিষ্ট চিকিৎসক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল ১০টার দিকে এ জানাজায় উপস্থিত হন হাজারো মানুষ।
জানাজায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অংশ নেন।
তৃতীয় জানাজা শেষে সাবেক রাষ্ট্রপতির মরদেহবাহী কফিন বহনকারী গাড়ি রওনা হয় তার গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে।
জোহরের নামাজের পর গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় চতুর্থ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে।
মন্তব্য