২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার ডেথ রেফারেন্সসহ আসামিদের করা আপিল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। হাইকোর্টের বেঞ্চ ঠিক করে দিতে প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদনও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, তারাও প্রস্তুত রয়েছেন শুনানিতে অংশ নিতে।
আলোচিত এ মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, নিম্ন আদালত পেরিয়ে মামলাটি এখন হাইকোর্টে বিচারের অপেক্ষায়। এরই মধ্যে মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হামলার মাধ্যমে রাষ্ট্রের একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা। এর শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে একটি দরখাস্ত করেছি। প্রধান বিচারপতি একটি বেঞ্চ ঠিক করে দেবেন।’
রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা জানান, ডেথ রেফারেন্স হিসেবে যে মামলাগুলো হাইকোর্টে আসে, সেগুলো প্রধান বিচারপতি নির্দিষ্ট করে হাইকোর্টের বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। পরে সেই বেঞ্চেই শুনানি হয়। সে কারণে এই মামলা শুনানির জন্য একটি বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিতে প্রধান বিচারপতির কাছে দরখাস্ত করা হয়েছে।
আদালতের আগামী অবকাশকালীন ছুটির পরই প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানির জন্য একটি বেঞ্চ ঠিক করে দিতে পারেন বলে আশা করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। যে বেঞ্চ ঠিক করা হবে, সেই বেঞ্চেই শুনানি করবে রাষ্ট্রপক্ষ।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আদালতের কাছে আমাদের প্রার্থনা থাকবে বিচারিক আদালত আসামিদের যে সাজা দিয়েছে, তা যেন উচ্চ আদালতেও বহাল থাকে। মামলায় আসামিদের সাজা বহাল রাখতে যে ধরনের আইনগত দিক আছে, তা তুলে ধরার চেষ্টা করব।’
এ মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২১ আগস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের রায় হয়েছে ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট। হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলার শুনানি হয় বছর এবং ক্রম অনুসারে। সে হিসেবে হাইকোর্টে বর্তমানে ২০১৬ সালের ডেথরেফারেন্স মামলার শুনানি চলছে। নম্বর ও বছরের ক্রম মেনে যদি স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী শুনানি হয়, তাহলে হয়তো আরও দু-তিন বছর সময় লাগতে পারে।
‘তবে প্রধান বিচারপতির এখতিয়ার আছে, তিনি যখন ইচ্ছা যেকোনো মামলা কার্য তালিকায় আনতে পারেন। সে হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি যদি শুনানির জন্য বেঞ্চ ঠিক করে দেন, তাহলে শুনানি হবে। আসামিপক্ষ থেকে আমরা শুনানির জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’
এ মামলার অন্যতম আসামি লুৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামলাটিকে বলা হয়, জজ মিয়া নাটক। আসলে সব থেকে বড় নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে মুফতি হান্নানের মাধ্যমে। এ মামলায় এক সময় ৬০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি হয়ে গিয়েছিল। সেই চার্জশিটে কোথাও তারেক রহমান, বাবরের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তাদের আজ্ঞাবহ তদন্তকারী কর্মকর্তা দিয়ে নতুন করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়, যেখানে মুফতি হান্নানকে দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ানো হয়।
‘পরে কিন্তু হান্নান অস্বীকার করেছেন, তিনি এমন জবানবন্দি দেননি। এটি দিয়ে প্রমাণ হয়, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হয়রানি করার জন্যই এ মামলায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আসামি করা হয়েছে। আশা করি উচ্চ আদালতে তারা নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।’
এই আইনজীবী জানান, গত বছরের ১২ অক্টোবর দুদকের মামলায় রায়ের সময় বাবরের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে। এরপর আর কোনো সাক্ষাৎ হয়নি। বর্তমানে তিনি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন বলে জানান এই আইনজীবী।
২০২০ সালের ১৬ আগস্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত হয়ে বিজি প্রেস থেকে হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়। এরপর সেটা যাচাই-বাছাই করে প্রস্তুত করা হয় পেপারবুক।
বর্বরোচিত এ ঘটনার ১৪ বছর পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় দেয় বিচারিক আদালত। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় এবং ১১ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
ওই বছরের ২৭ নভেম্বর দুই মামলার রায়সহ প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পৃষ্ঠার নথি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়। পরে ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি মামলায় আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য গ্রহণ করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। সে সময়ে দ্রুত পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেয় আদালত। পরে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলার পেপারবুক তৈরি করা হয়।
মেহেরপুরে নকল মোড়ক বানিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির ভেজাল মানহীন আইসক্রিম, রোবো, আইস ললি ও জুস বানানো কারখানায় অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় এসব নকল খাদ্যপণ্য তৈরি ও বিক্রি করার অপরাধে আইকন আইসক্রিম ফুড ও বেভারেজ কোম্পানির ম্যানেজার লিখন আহমেদকে ৫০ হাজার টাকা এবং জব্দকৃত মালামাল ধ্বংস করার পাশাপাশি কারখানিটি বন্ধ সাময়িক রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে জেলার গাংনী উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়নের হাড়াভাঙ্গা মোল্লাপাড়ার আব্দুস সালামের বাড়িতে এই অভিযান চালানো হয়।
কোম্পানির মালিক আব্দুস সালাম পেশায় একজন সেনা সদস্য।
অভিযান পরিচালনা করেন জেলা ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তা সজল আহমেদ।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি হাড়াভাঙ্গা গ্রামের মোল্লা পাড়ার সেনা সদস্য আব্দুস সালামের বাড়িতে বিভিন্ন কোম্পানির নকল মোড়ক বানিয়ে কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে, নকল আইস ললি, রোবো, জুস ও আইসক্রিমসহ শিশুখাদ্য যা দণ্ডনীয় অপরাধ।
‘আমরা এ ভেজাল কারখানায় অভিযান চালিয় নকল এসব পণ্য ও পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত কেমিক্যাল জব্দের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার লিখন আহমেদ আটক করে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করাসহ জব্দকৃত মালামাল নষ্ট করার পাশাপাশি কারখানাটি বন্ধের নির্দেশ দেই।’
আইকন ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ম্যানেজার লিখন আহমেদ বলেন, ‘আমার মহাজন সালাম মিলিটারি মাস ছয়েক হবে কারখানাটি চালু করেছেন। উনি ফোনের মাধ্যমে ব্যবসার দেখভাল করেন। আমরা এই কারখানায় আইস ললি, রোবো, জুস ও আইসক্রিম তৈরি করে কয়েকটি জেলায় বিক্রি করতাম। আজ অভিযানের পর বুঝতে পারলাম এ পণ্যগুলো বিক্রি ও বানানো অপরাধ।’
আব্দুস সালামের বাবা ওহাব আলী বলেন, ‘আমার ছেলে ছুটিতে এসে এই কারখানাটি দিয়েছিল। এখনও সরকারিভাবে অনুমোদন পাইনি। তবে অল্পদিনেই লাইসেন্স হাতে পাওয়ার কথা রয়েছে।’
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার উত্তর পাকুরীয়া গ্রামের এক নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় এক মাদ্রাসা শিক্ষককে দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে।
নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার বুধবার এ রায় দেন। জরিমানার অর্থ ভুক্তভোগী ছাত্রীকে প্রদানের নির্দেশ দেন বিচারক।
দণ্ডাদেশ পাওয়া ওই শিক্ষকের নাম আবুল হাসান। ২৫ বছর বয়সী আবুল হাসান বদলগাছী উপজেলার উত্তর পাকুরীয়া গ্রামের বাসিন্দা ও একটি মাদ্রাসার আরবি বিষয়ের শিক্ষক।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২৯ মে সকাল ছয়টার সময় নয় বছর বয়সী ওই মেয়েটি একই গ্রামের আরবি শিক্ষক আবুল হাসানের বাড়িতে আরবি পড়তে যায়। সে সময় অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা না আসায় তাকে একা পেয়ে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর মা বদলগাছী থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা মেলায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালত আট জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন।
এদিন আসামির উপস্থিতিতে তাকে দেয়া সাজার রায় পড়ে শোনানো হয় এবং শেষে তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আজিজুল হক ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামলা পরিচালনা করেন। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করে এবং আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানায়।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরীর নেতৃত্বে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা।
টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (টিসিএ) উদ্যোগে বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ডিইউজে সভাপতি সাজ্জাদ আলম তপু ও সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব, বাচসাস সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা নানা ক্ষেত্রে আজ নির্যাতিত। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেন তাদেরকে আমরা মননশীল মনে করি। কিন্তু তারা যখন মাস্তানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তখন তারা সমাজে কী বার্তা দেন?
নারকীয় এই হামলায় নেতৃত্ব দেয়া জয় চৌধুরী, শিবা শানু ও আলেকজান্ডার বোসহ হামলায় জড়িত সবাইকে শিল্পী সমিতির সদস্যপদ বাতিলসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে আরও অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন বিটের সাংবাদিকরা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে শিবা শানু, জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বোর নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়। এতে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন চারজন।
তদন্ত কমিটি
এদিকে হামলার ঘটনা তদন্তে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাঁচ জন করে রাখা হয়েছে। আর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন প্রযোজক আরশাদ আদনান।
দশজনের তদন্ত কমিটিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয় ও আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানাশাহ, রুবেল ও রত্না রয়েছেন।
আরও পড়ুন:সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নতুন তিন বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। বৃহস্পতিবার তারা শপ্রথ গ্রহণ করবেন।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বুধবার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারককে তাদের শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করেছেন।
আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত বিচারপতিগণ হলেন- বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ, বিচারপতি মো শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।
বৃহস্পতিবার শপথ
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার বলা হয়, আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত তিন বিচারপতি বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণ করবেন। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে প্রধান বিচারপতি তাদেরকে শপথ পাঠ করাবেন।
পঞ্চগড়ের বোদা-দেবীগঞ্জ জাতীয় মহাসড়কে ট্রাক ও ট্রলির (ট্রাক্টর) মুখোমুখি সংঘর্ষে এক পথচারী নারীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চার জন।
বুধবার সকালে বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের কলাপাড়া নামক স্থানে মহাসড়কে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- বোদা পৌরসভার সদ্দারপাড়া গ্রামের সাফিরের স্ত্রী ৬০ বছর বয়সী নুরজাহান ও একই উপজেলার মাজগ্রাম এলাকার মানিক ইসলামের ছেলে ২৫ বছর বয়সী জাহিদ ইসলাম।
বোদা থানার ওসি মোজাম্মেল হক দুজনের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেবীগঞ্জ থেকে পঞ্চগড়গামী একটি দ্রুতগামী ট্রাক ও বিপরীতমুখী একটি ট্রলির সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে থাকা এক পথচারী নারীকে গাড়িদুটি চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। দুর্ঘটনায় ট্রলির চালক জাহিদও ঘটনাস্থলে নিহত হন। এছাড়া স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারা সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তদন্তে প্রমাণিত ৩৫ রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কক্সবাজারে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে- তা জানতে চেয়েছে উচ্চ আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়। খবর বাসসের
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জানান, ২০১৬ সাল থেকে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কিছু ক্ষমতাধর কথিত জনপ্রতিনিধির যোগসাজশে অর্থের বিনিময়ে অসংখ্য রোহিঙ্গাদেরকে জাল ঠিকানা, ভুয়া বাবা-মা সাজিয়ে ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে জন্ম নিবন্ধন, ভোটার আইডিসহ দেশের নাগরিকত্ব দিতে সরাসরি সহায়তা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, ওই ইউনিয়নে অন্তত ৩৭০ জন রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন ও ভোটার আইডি দেয়া হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় স্থানীয় এক বাসিন্দা ৩৮ জন রোহিঙ্গার নাম উল্লেখ করে বিবাদীদের প্রতি অভিযোগ দাখিল করেন। ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনে ৩৮ জনের মধ্যে ৩৫ জন রোহিঙ্গার বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়।
আইনজীবী আরও জানান, এতে ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের জড়িতদের প্রমাণ পাওয়া যায় এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছেন। কিন্তু এসব রোহিঙ্গাকে নাগরিকত্ব দেয়া সংক্রান্ত কাগজপত্র বাতিল করে তাদের নাম ভোটার তালিকে থেকে বাদ দেয়ার জন্য জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এসব রোহিঙ্গাদের ভোটার রেখেই ওই ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হয়। এ অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হামিদ হাইকোর্টে রিট করেন।
শুনানি শেষে বিবাদীদের প্রতি চার সপ্তাহের রুল জারি করে ভোটার তালিকা থেকে তদন্তে প্রমাণিত রোহিঙ্গাদের নাম বাদ এবং আগামী ৬ জুনের মধ্যে কক্সবাজার জেলায় কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে- তা তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে আজ উচ্চ আদালত।
রিটে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সংশ্লিষ্ট ১৭ জনকে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নতুন তিন বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বুধবার জারি করা হয়েছে। খবর বাসসের
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারককে তাদের শপথ গ্রহণের তারিখ হতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করেছেন।
নবনিযুক্ত আপিল বিভাগের বিচারপতিগণ হলেন-বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।
মন্তব্য