রাজধানীর উত্তরায় বক্স গার্ডার দুর্ঘটনার পেছনে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের অবহেলার আরেক নমুনার কথা জানিয়েছে ক্রেন পরিচালনাকারীকে গ্রেপ্তার করা র্যাব।
বাহিনীটি জানিয়েছে, যে গার্ডারটি গাড়িতে তোলা হচ্ছিল, সেটির ওজন ৭০ টন। কিন্তু যে ক্রেন দিয়ে সেটি তোলা হচ্ছিল, সেটি বড়জোর ৫০ টন তোলার ক্ষমতা রাখে।
এই ক্রেনটির কাগজে-কলমে উত্তোলন ক্ষমতা ৮০ টন হলেও পুরোনো হওয়ার কারণে শক্তি ক্ষয়ে সেই ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
গত সোমবার বিকেলে উত্তরার জসিম উদ্দীন মোড়ে রাখা গার্ডারটি একটি গাড়িতে তোলার সময় সেটি পিছলে পাশ দিয়ে চলা একটি প্রাইভেট কারকে পিষ্ট করে। এতে এর পাঁচ আরোহী মারা যান। বেঁচে ফেরেন কেবল দুজন, যাদের বিয়ে হয়েছে দুর্ঘটনার কেবল দুই দিন আগে।
এই দুর্ঘটনার পরপরই জানা যায়, নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি না করেই এই গার্ডারটি তোলা হচ্ছিল। সেদিনই প্রশ্ন ওঠে, ক্রেনটির এই সক্ষমতা ছিল কি না, আর আসলে সেই ক্রেনটি কে পরিচালনা করছিলেন।
তবে ক্রেনের চালক এবং ঠিকাদারি কোম্পানির কর্মীরা সবাই পালিয়ে যাওয়ায় সেদিন এসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি।
দুর্ঘটনার দুই দিন পর ক্রেনচালকসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। আর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কী পাওয়া গেছে, সেটি বাহিনীটি প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার।
দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীটির মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ হারানো ক্রেনটির সর্বোচ্চ ৪৫ থেকে ৫০ টন ওজনের গার্ডার সরানোর সক্ষমতা ছিল। কিন্তু সোমবার ১৫ আগস্ট দুর্ঘটনার দিন এই সক্ষমতার ক্রেনটি দিয়ে ৬০ থেকে ৭০ টন ওজনের গার্ডার সরানো হচ্ছিল।
‘এত ভারী গার্ডার উঠানোর সময় ক্রেনে কাউন্টার ওয়েট রাখার দরকার ছিল। তাও রাখেনি দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। ফলে ক্রেনের বাড়তি ওজন বহন করা সম্ভব হয়নি।’
এই দুর্ঘটনায় ঠিকাদারি কোম্পানির অবহেলার আরেক নমুনার কথা জানান এই র্যাব কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া ক্রেনটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী। চালক নিজেরও এ ধরনের কোনো ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না।’
এই দুর্ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক হাদিউজ্জামান ঠিকাদারি কোম্পানি, বাস্তবায়নকারী সংস্থা আর তদারকি সংস্থা তিন সংস্থার অবহেলাকেই দায়ী করেছিলেন।
সেদিন তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্রেন ঠিক আছে কি না। তার আগে দেখতে হবে ক্রেন যে অপারেট করছিল, তার লাইসেন্স আছে কি না। সে অভিজ্ঞ কি না, এটাও তদন্তের মাধ্যমে দেখতে হবে।
‘আমার গার্ডারের যে ওজন এবং ক্রেনের যে সক্ষমতা, সেটা ঠিক আছে কি না। এই জিনিসটাও গুরুত্বপূর্ণ।’
এখানে প্রশাসনিক অবহেলা আছে বলেও মনে করেন এই দুর্ঘটনা বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটা করছে, ভালো কথা। কিন্তু তারা ঠিকমতো প্র্যাকটিস করছে কি না, এটার নজরদারি বা তদারকির দায়িত্ব তো বাস্তবায়নকারী সংস্থার। এই ধরনের প্রকল্পের সুপারভিশনের দায়িত্ব আরেক সংস্থার থাকে।
‘তার মানে কাজটা ঠিকমতো হচ্ছে কি না, সেটার জন্য সুপারভিশন সংস্থা আছে, আমাদের বাস্তবায়নকারী সংস্থা আছে, এটার একটা সমন্বয় দরকার। আমি যেটা মনে করি, এই ধরনের কাজ একটা বড় কাজ।
‘পাশাপাশি এটা অনেক বিজি একটা করিডর। এই করিডরে কাজ করতে গেলে অবশ্যই যারা বাস্তবায়ন করছে, তাদের ২৪ ঘণ্টা ৭ দিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি এবং তদারকি করতে হবে। কোথাও যদি কনস্ট্রাকশন প্র্যাকটিসের ব্যত্যয় হয়, তাকে কিন্তু জবাব দিতে হবে। এই জবাব দিতে হয় না বলেই আমরা দেখছি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে যেভাবে কাজ করার কথা, সেভাবে হয় না। তাদের মধ্যে অবহেলার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে।’
এই দুর্ঘটনার পর যে প্রাথমিক তদন্ত করেছে সরকার, তাতে ঠিকাদারি কোম্পানির অবহেলার প্রমাণ উঠে এসেছে বলে জানানো হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনায় বাস্তবায়নকারী সংস্থা বিআরটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলামকেও তদন্তের আওতায় আনতে বলেছেন।
এই নির্মাণকাজ নিয়ে সফিকুলের যে অবহেলা রয়েছে, সেটি দুর্ঘটনার দিন তার বক্তব্য ও র্যাবের বক্তব্যের পার্থক্যে উঠে এসেছে। সফিকুল ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেছিলেন, যে ক্রেন দিয়ে বক্স গার্ডারটি তোলা হচ্ছিল সেটির সক্ষমতা ছিল।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘বিআরটি প্রকল্পের থার্ড পার্টি হিসেবে বিল্ড ট্রেড ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেড থেকে মাসিক ভাড়ার চুক্তিতে ক্রেনটি আনা হয়। ক্রেনটি ১৯৯৬-৯৭ সাল থেকে চলছে। প্রথমে ক্রেনটির সক্ষমতা ৮০ টন ছিল। পরে আস্তে আস্তে ক্রেনটির সক্ষমতা কমে যায়। সর্বশেষ ক্রেনটি দিয়ে ৪৫ থেকে ৫০ টন ভর শিফট করা সহজ ছিল। কিন্তু এই ক্রেন দিয়ে ৬০ থেকে ৭০ টন ওজনের গার্ডারটি শিফট করা হচ্ছিল।’
তিনি জানান, ২০২১ সালে সর্বশেষ ফিটনেস যাচাই করা হয়, এরপর ক্রেনটির আর কোনো ফিটনেস যাচাই করা হয়নি।
খন্দকার মঈন বলেন, ‘আমরা গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, অতিরিক্ত ভার বহন করায় ক্রেনটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায়। এ ধরনের গার্ডার শিফট করতে কাউন্টার লোড ব্যবহার করা উচিত ছিল। আরেকটি ক্রেন পাশাপাশি স্ট্যান্ডবাই রাখা উচিত ছিল। নিরাপত্তাব্যবস্থার অনেক ঘাটতি ছিল।’
আরও পড়ুন:কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত রমজান মিয়া জীবন মারা গেছেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকেল ৩টার দিকে মারা যান তিনি।
জীবন পুরান ঢাকার বংশালের আলুবাজার এলাকায় স্যান্ডেল তৈরির একটি কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
জীবনের চাচা মোহাম্মদ রোমান মিয়া বলেন, ‘আমাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার দিলালপুর ইউনিয়নের পাঠানহাটি গ্রামে। ওর বাবার নাম মোহাম্মদ জামাল মিয়া। ভাই-ভাবী পরিবার নিয়ে মিরপুরের লালমাটি এলাকায় থাকেন। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে জীবন ছিল তৃতীয়। ওর স্ত্রী সাহারা খাতুন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ওর বাবা নর্দা এলাকার একটি বাসার নিরাপত্তা কর্মী।’
তিনি আরও বলেন, ‘জীবন বিএনপির কর্মী ছিল। ৫ আগস্ট মিরপুরের বাসায় যাওয়ার কথা বলে সকালে সে কারখানা থেকে বেরিয়ে আসে। পরে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগ পার্টি অফিসের আশপাশের এলাকায় বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে আহত হয় সে। পরে লোকজন তাকে রিকশায় ঢামেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
‘সংবাদ শুনে ঢামেক হাসপাতালে এসে শতাধিক আহতের মাঝে ওকে খুঁজে পাই। শুনেছি ওর মাথায় গুলি লেগেছে। জ্ঞান ছিল না। আর জ্ঞান ফেরেনি। হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে আজ ছেলেটা একেবারে চলেই গেল।’
অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার স্ত্রী-সন্তান এবং একান্ত সচিব মনির হোসেনের বিরুদ্ধে পাঁচটি পৃথক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বুধবার এসব তথ্য জানান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অনুসন্ধানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, তাদের ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান ও মেয়ে সাফিয়া তাসনিম খানের অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। আসাদুজ্জামান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ৬০ কোটি ৫৫ লাখ ৯৯ হাজার ১৫৬ টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুদক। পাশাপাশি তাদের নামে ৩৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৪১৬ কোটি ৭৪ লাখ ৮৬ হাজার ১৯ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
আর দুদকের অনুসন্ধানে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব মো. মনির হোসেনের ১৮ কোটি ৮২ লাখ ৫৬ হাজার ১৪২ টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার ১২টি ব্যাংক হিসাবে ৩১ কোটি ৩১ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৪ টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আসাদুজ্জামান আত্মগোপনে রয়েছেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বিএফআইইউ’র নির্দেশে ১৩ আগস্ট আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার স্ত্রী, পরিবারের সদস্য ও তাদের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে।
মামলায় কামালের বিরুদ্ধে ১৬ কোটি ৪১ লাখ ৫৭ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও আটটি ব্যাংক হিসাবে ৫৫ লাখ ৯২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৬ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন এবং মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনে দুদক। এই মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এই মামলার একমাত্র আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল।
দ্বিতীয় মামলায় স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খানের সঙ্গে আসামি কামাল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কামালের দুর্নীতির টাকায় সম্পদশালী হয়েছেন তাহমিনা। তাহমিনার ১০টি ব্যাংক হিসাবে ৪৩ কোটি ৭৭ হাজার ৭৪৫ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১), মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২), ৪ (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন।
তৃতীয় মামলার আসামি কামাল ও তার ছেলে শাফি। তাদের বিরুদ্ধে ১৯ কোটি ৮৯ লাখ ৭৮ হাজার ৫০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। শাফি তার নামে ব্যাংক হিসাব খুলে সেখান ৮৪ কোটি ৭৭ লাখ ৫৭ হাজার ৫৭২ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন করেছেন।
চতুর্থ মামলার আসামি কামাল ও তার মেয়ে শাফিয়া তাসনিম। তাদের বিরুদ্ধে আট কোটি ৭৭ লাখ ৬৮ হাজার ৪৮৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। শাফিয়ার ব্যাংক হিসাবে ২৬ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ৫৪২ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন পাওয়া গেছে।
পঞ্চম মামলায় আসামি কামালের এপিএস মনির হোসেন। তার বিরুদ্ধে ১৮ কোটি ৮২ লাখ ৫৬ হাজার ১৪২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ব্যাংক হিসাবে ৩১ কোটি ৩১ লাখ ৭০ হাজার ৮৩৪ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের পেয়েছে দুদক।
গত ১৫ আগস্ট আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। ২১ আগস্ট কামালের পরিবার এবং তার সাবেক পিএস হারুন অর রশিদ বিশ্বাস, যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেন, সহকারী একান্ত সচিব মনির হোসেন এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপুসহ আটজনের ব্যাংক হিসাবের সব লেনদেনের তথ্য তলব করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ঘুষ হিসেবে বস্তা বস্তা টাকা নিতেন। পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস থেকে এই টাকা আদায় করা হতো। এজন্য তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাসের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন তিনি।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
গুমের শিকার সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাসিনুর রহমান বীরপ্রতীক বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বরাবর এই অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগ দাখিল শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হাসিনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাকে গুম করার ঘটনার বিচার চেয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেছি। আমাকে দুই দফায় গুম করা হয়। সেখানে অমানুষিক ও বর্বরোচিত নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
‘আয়না ঘরে আমাকে এই নির্মম নির্যাতন করা হয়। গুমের শিকার সাবেক সেনা কর্মকর্তা আজমিসহ আরও অনেককে সেখানে দেখতে পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘গুমের ঘটনায় ন্যায়বিচার, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন চেয়েছি।’
হাসিনুর রহমান বীরপ্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক কর্মকর্তা। সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়ার সময় তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে ছিলেন। তিনি ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট থেকে এক বছর ছয় মাস ১৪ দিন আয়নাঘরে গুম ছিলেন।
চাকরিতে থাকা অবস্থায়ও তাকে দীর্ঘদিন গুম করে রাখা হয়েছিল বলে জানান এই খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে একটি চক্র চরম বেআইনি ও অমানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল। বাংলাদেশের গর্বিত সেনাবাহিনীর একটি উচ্ছিষ্টলোভী অংশ এই অন্যায় কাজে জড়িত ছিল। আশা করি তা তদন্তে বের হয়ে আসবে।’
হাসিনুর রহমান জানান, সেনাবাহিনীতে চাকরি করা অবস্থায় ২০০৮ সালে তাকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে বলা হয়। তিনি অনীহা প্রকাশ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে তার ওপর নানা নির্যাতন শুরু হয়। ২০১২ সালে তাকে সেনাবাহিনী থেকেও বরখাস্ত করা হয়।
পিলখানায় বিডিআর হত্যাযেজ্ঞের ঘটনায় একজন সেনা কর্মকর্তা হিসেবে উচ্চবাচ্য ও প্রতিবাদ করাও তার ওপর পরিচালিত নির্যাতনের অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেন এই সাবেক সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীর একটি অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়াও আমার ওপর নির্যাতনের কারণ ছিল।
‘গুম নিয়ে মিডিয়ায় কথা বলায় আমার বিরুদ্ধে ১০টির বেশি মামলা হয়। আমি কারাগারে ছিলাম। খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার পরও জেলখানায় আমাকে ডিভিশন দেয়া হয়নি।’
হাসিনুর রহমান বলেন, ‘র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে কর্মরত থাকা অবস্থায় জঙ্গিদের আটকে আমার সাফল্যের কথা সবাই জানেন। জেলে আটক অবস্থায় আমাকে জঙ্গি দিয়ে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমানের ছেলে কারাবন্দি নাবিল আমাকে হত্যা করা হবে বলে জানিয়েছিল। আল্লাহর অশেষ কৃপায় আমি প্রাণে রক্ষা পেয়েছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ সব শহীদ ও আহতদের প্রতি স্যালুট জানিয়ে হাসিনুর রহমান বলেন, ‘তাদের আত্মত্যাগের কারণেই আজ ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা ও স্বাধীন-মুক্ত পরিবেশে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।’
জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য ফাঁসের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে প্রধান আসামি করে ১৯ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলায় ১১ নম্বর আসামি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগ পাওয়া উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী।
এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি বুধবার রাজধানীর কাফরুল থানায় এই মামলা করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাফরুল থানার ওসি কাজী গোলাম মোস্তফা।
তিনি বলেন, ‘মামলা হয়েছে। বাকি তথ্য হেডকোয়ার্টার থেকে দেয়া হবে।’
মামলার এজাহারে বলা হয়, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ক্ষমতার অপব্যবহার করে সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে জনগণের জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য বিক্রি করেছেন। জাতীয় নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে, ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেস লিমিটেডকে এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসার অনুমতি দেন অভিযুক্তরা। সেসব তথ্য দেশ ও দেশের বাইরের প্রায় ১৮২টি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হয়। তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য পাচার হওয়ায় জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে।
এভাবে জনসাধারণের এনআইডির তথ্য বিক্রি করে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও আনা হয় এই মামলায়।
মামলার আসামিদের মধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয় ছাড়াও রয়েছেন- সাবেক ডাক এবং টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক; সাবেক ডাটা সেন্টার পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ; ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসের পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান শরিফ; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম; সাইবার নিরাপত্তা, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ডাক, টেলিযোগযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহাবুবুর রহমান; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক পরিচালক (অপারেশন) আবদুল বাতেন; নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক সিনিয়র মেইন্টেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার মু. আশরাফ হোসেন; ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. রাকিবুল হাসান; মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক উপ-সচিব মো. রেজাউল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক (সদ্য নিয়োগ পাওয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য) ড. মো. হায়দার আলী; অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহফুজুল; রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সাবেক সিস্টেম এনালিস্ট অলিউল হাসান; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপসচিব মো. তবিবুর রহমান; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সাবেক সহকারী পরিচালক মুহা. সরওয়ার হোসেন; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সাবেক পরিচালক আব্দুল মমিন সরকার; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম; বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ম্যানেজার (সিকিউরিটি অপারেশন) মোহাম্মদ মহিদুর রহমান খান; ম্যানেজার, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সফটওয়্যার ডেভেলপার মো. সিদ্দীকুর রহমান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাদী এনামুল হক বলেন, ‘এজাহারে আমি আমার বক্তব্য দিয়েছি। সেটিই আমার বক্তব্য।’
এ ব্যাপারে জানতে কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মান্নান জামিন পেয়েছেন। বুধবার বিকেলে সুনামগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালতে এর আগে সকালে এম এ মান্নানের জামিন শুনানিতে দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল হয়। হট্টগোলের এক পর্যায়ে এজলাস ছেড়ে যান বিচারক। পরে বেলা আড়াইটায় শুনানির সময় নির্ধারণ করা হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও এম এ মান্নানের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার এম এ মান্নানের পক্ষে জামিন শুনানির এডমিশন করা হয়। এরপর আদালত আজ শুনানির তারিখ ধার্য করেন। এভাবে এই আদালতে এর আগে বহুবার জামিন শুনানি হয়েছে। এ নিয়ে বাদী পক্ষ সকালে হট্টগোল শুরু করলে আদালত বিকেলে শুনানি করেন। অসুস্থতা ও বয়স বিবেচনায় সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের জামিন মঞ্জুর করে আদালত।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী মল্লিক মইনউদ্দিন সোহেল বলেন, ‘কোনো আইনজীবীর সাবমিশন ছাড়া এডমিশনটা অস্বাভাবিক। এতে আদালতকে নিয়েও প্রশ্নের উদ্রেক হয়। আমরা মনে করছি অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জামিন শুনানি অস্বাভাবিকই হবে। এজন্য আমরা জামিন শুনানির আপত্তি জানিয়েছি।’
বাদীপক্ষের আরেক আইনজীবী শেরেনুর আলী বলেন, “আমরা বলেছি, এই মামলাটা এই আদালতে অস্বাভাবিকভাবে আনা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বাদী পক্ষ জানি না। এ নিয়ে আজ শুনানি করতে চাই না।
“অন্যান্য মামলার মতো এই মামলার শুনানির তারিখ পরবর্তীতে দেয়ার জন্য আদালতকে বলেছি আমরা। কিন্তু আদালত আমাদের কথা শুনতে চাননি। আসামি পক্ষ শুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য তোড়জোর করেছে। এ নিয়ে হট্টগোল হয়েছে। পরে ‘আদালত’ এজলাস থেকে নেমে যান।”
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি হিসেবে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার সকালে সিলেট কারাগার থেকে তাকে ওসমানী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কেবিনে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তাকে মেডিসিন বিভাগের অধীনে কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, ‘সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীর বুকে ব্যথা রয়েছে। এছাড়া তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই। তার চিকিৎসার জন্য ছয় সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।’
সুনামগঞ্জ ৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনের চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মান্নানকে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ এলাকার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে ছিলেন। শনিবার বিকেলে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন:উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে খালাস দিয়েছে আদালত।
ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালত বুধবার মামলাটি খারিজ করে তাদের খালাস দেয়।
এদিন মামলার ধার্য তারিখ ছিল। তবে এ নিয়ে মামলার বাদী এবি সিদ্দিক ২০ বার আদালতে অনুপস্থিত রয়েছেন। পরে আদালত মামলাটি গরহাজির দেখিয়ে খারিজ করে দেয় এবং আসামিদের বেখসুর খালাস দেয়।
দাঙ্গা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ এনে ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট এবি সিদ্দিকী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ২০২২ সালের ৯ জুন আদালত মামলাটি আমলে নেয়।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফকে আহত অবস্থায় কারাগার থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি এম এ লতিফ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাথরুমে পড়ে মাথায় আঘাত পান। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়। বর্তমানে তিনি নিউরোসার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন।
চমেক সূত্র জানায়, এম এ লতিফ মাথায় আঘাত পেয়েছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার মস্তিষ্কে জমাট বাঁধা রক্তের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। তবে বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত। চিকিৎসা চলছে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফকে এখানে আনা হয়েছে। তিনি বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছেন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার মাথায় একটা সমস্যা পাওয়া গেছে। সমস্যাটা হলো ব্রেনে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে, যেটাকে আমরা চিকিৎসা ভাষায় হেমাটোমা বলি। এছাড়া তিনি বাইপাসের রোগী। তিনি এখানে চিকিৎসাধীন আছেন।’
এ বিষয়ে কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘এম এ লতিফ অজু করতে গিয়ে বাথরুমে পড়ে মাথায় আঘাত পান। এই ঘটনাকে অন্যভাবে বলে গুজব রটানো হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ১৬ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকা থেকে এম এ লতিফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এরশাদ নামে এক ব্যক্তি আহত হওয়ার ঘটনায় এম এ লতিফসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মন্তব্য