বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে আসা অভিযোগগুলো অস্বীকার না করে সরকারকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট।
ঢাকা সফরে এসে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ব্যাচেলেটের এই সফরকে ঘিরে বাংলাদেশে মানবাধিকার সংগঠন, মানবাধিকার কর্মী, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নানামুখি তৎপরতা ছিল।
ব্যাচেলেট সফরে এসে সরকারের পাশাপাশি কথা বলেছেন বিএনপি, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গে যারা দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নানা অভিযোগ করে আসছেন।
ব্যাচেলেট বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন বডির সঙ্গে আলোচনায় আমি এই আহ্বান জানিয়েছি যে, অভিযোগ অস্বীকার না করে আমলে নিন। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মেকানিজমের মাধ্যমে তদন্ত করুন। তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে বাদ, তবে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নিন।’
বিশ্বের সব দেশকেই এ ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে একই পরামর্শ দেয়ার কথাও জানান জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার।
ঢাকা সফর নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক সমস্যা ও আগামী বছর হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কেও আমরা সরকারকে সব স্টেকহোল্ডার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের সঙ্গে বসে, সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের পরামর্শ দিয়েছি।’
এই সফরের আমন্ত্রণ জানানোয় বাংলাদেশ সরকারকে ‘উষ্ণ ধন্যবাদও’ জানান ব্যাচেলেট। বলেন, ‘আমি আশা করি আমার এই সফর জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থার সঙ্গে সরকারের সম্পৃক্ততাকে গড়ে তুলবে এবং আমাদের সঙ্গে সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে, বাংলাদেশে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসাও করেন জাতিসংঘ কমিশনার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং কয়েক বছরের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) অবস্থা থেকে উন্নীত হওয়ার পথে রয়েছে। বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে উন্নতি, নারী ও শিশুদের মৃত্যুহার, খাদ্য, পানি এবং স্যানিটেশনে প্রবেশের ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করেছে।’
বিচারবহির্ভুত হত্যা ও গুম নিয়ে গভীর উদ্বেগ
ব্যাচলেটের এই সফর নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে এই দুটি বিষয় নিয়ে।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের বিভিন্ন মানবাধিকার ব্যবস্থা - জাতিসংঘের কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চারসহ, বেশ কয়েক বছর ধরে জোরপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। যার অনেকগুরোর জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে দায়ী করা হয়েছে এবং এক্ষেত্রে জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে।
‘আমি সরকারের মন্ত্রীদের কাছে এই গুরুতর অভিযোগ সম্পর্কে আমার গভীর উদ্বেগ উত্থাপন করেছি এবং নিরাপত্তা খাত সংস্কারের সঙ্গে এই অভিযোগগুলোর একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছি।’
তিনি বলেন, ‘সকল প্রকার বিচারবহির্ভুত হত্যা ও গুমের ঘটনার ক্রমাগত অভিযোগ নিশ্চয়ই উদ্বেগের। বিশেষ করে এ ধরনের অভিযোগের যথযথ তদন্তের অগ্রগতির অভাব দেখা যায়। এইসব অভিযোগ ন্যায়বিচারের অন্যতম বাধা ও দীর্ঘস্থায়ী হতাশার কারণ। আমি সরকারকে একটি ম্যাকানিজম তৈরি করতে উত্সাহিত করেছি। যা গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ তদন্ত করতে ভিকটিম, পরিবার এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার বলেন, ‘আমার অফিস আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কীভাবে এই জাতীয় সংস্থার নকশা করা যেতে পারে সে সম্পর্কে পরামর্শ দেয়ার জন্য প্রস্তুত। এনফোর্সড ডিসপিয়ারেন্স বিষয়ক জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপকে বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানানোও এই সমস্যাটির নিষ্পত্তিমূলক সমাধানের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করবে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি ইউনিফর্ম পরা কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে মানবাধিকার স্ক্রিনিং নিশ্চিত করার জন্য একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা ও নিশ্চিত করা যায়।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংস্কারের প্রস্তাব ও মৃত্যুদণ্ডে বিরোধিতা
ব্যাচেলেট জানান, তিনি সরকারকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংস্কারের প্রস্তাব করেছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ দেশীয় আইন করতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমার কার্যালয় এবং সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পুনর্বিবেচনার বিষয়ে আলোচনা করছে। আমি অনলাইন স্পেস নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করেছি। এর মাধ্যমে অনলাইন ঘৃণাত্মক বক্তৃতা, বিভ্রান্তি এবং সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করা। এই উদ্বেগগুলিকে মোকাবেলা করা সহজ নয়, কারণ যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করা সব সময় মত প্রকাশের স্বাধীনতার সুরক্ষার জন্য ঝুঁকি তৈরি করে।’
জাতিসংঘ দৃঢ়ভাবে যে কোনো এবং সব পরিস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ড আরোপের বিরুদ্ধে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘আমি এর সুযোগ কমাতে এবং স্থগিতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ নিতে সরকারকে উত্সাহিত করেছি।’
‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা চায় জাতিসংঘ’
জাতিসংঘ বাংলাদেশের সকল মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চায় বলে জানান ব্যাচলেট।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক ও মানবাধিকারকর্মী, বিরোধী দল এবং সাংবাদিকদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশসহ সকল নাগরিকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা জরুরি। রাজনৈতিক সহনশীলতা ও সহঅবস্থান আগামী নির্বাচনের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে।
‘এটি নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো যাতে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ না করে প্রতিবাদ সমাবেশ সামলাতে পারে, তাদের সে ধরনের প্রশিক্ষণ সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, সামাজিক স্থীরতা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে আরও সংলাপের জন্য জায়গা থাকা দরকার। নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের এবং বিশেষ করে তরুণদের কণ্ঠস্বর শোনা দরকার।
‘বাংলাদেশের সংবিধান জাতিসংঘের মূল মানবাধিকার চুক্তির পক্ষে’
ব্যাচেলেট বলেন, মানবাধিকার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সংবিধান, আইন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারে একটি দৃঢ় কাঠামো রয়েছে। এটি জাতিসঙ্ঘের সমস্ত মূল মানবাধিকার চুক্তির পক্ষে। এটা আন্তর্জাতিক কনভেনশন ফর দ্য প্রোটেকশন অফ অল পার্সন ফ্রম ফোর্সড ডিসপিয়ারেন্স এর অংশ। যা আমি সরকারকে অনুমোদন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছি।
‘জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সার্বজনীন পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনা প্রক্রিয়া এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা এই সুপারিশগুলি তৈরি করেছেন। আমি সরকারের কাছে এর বাস্তবায়ন এবং অনুসরণের জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার উপর জোর দাবি জানিয়েছি। এই সুপারিশগুলি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি, এবং মানবাধিকার এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলির মধ্যে সংযোগ জোরদার করতে সাহায্য করে।’
হিন্দুদের ওপর সহিংসতায় উদ্বেগ
ব্যাচলেট বলেন, ‘আমি ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য সরকারের আইনি স্বীকৃতিকে স্বাগত জানাই এবং আমি আশা করি সমকামীদের মৌলিক মানবাধিকারকে সম্মান, সুরক্ষা পূরণ করতে তারা পদক্ষেপ নেবে।
‘আমি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে হিন্দু এবং আদিবাসীদের বিরুদ্ধে চালানো সহিংসতা ও জমি দখলের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছি। সকল সহিংসতা ও হামলার হাত থেকে তাদের রক্ষার ওপরে জোর দিয়েছি।’
পার্বত্য শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের সুপারিশ
শেখ হাসিনার প্রথম শাসনামলে পার্বত্য শান্তি চুক্তির প্রতিটি ধারা বাস্তবায়নের সুপারিশও করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার।
তিনি বলেন, ‘২৫ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি হয়েছিল। এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্রমাগত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, ভূমি বিরোধ এবং নিরস্ত্রীকরণের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে যুক্ত। আমি শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের ওইসব এলাকায় অবাধ প্রবেশাধিকারের আহ্বান জানিয়েছি।’
রাজনীতিতে নারীর আরও অংশগ্রহণ চায় জাতিসংঘ
ব্যাচেলেট বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নারীদের আনুষ্ঠানিক অংশগ্রহণের উন্নতি হয়েছে। আমি সরকারকে সকল স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছি।
‘অনেক অগ্রগতি হয়েছে - কিছু সেক্টরে আরও বেশি সংখ্যক মহিলা শ্রমশক্তিতে প্রবেশ করেছে, মেয়েদের শিক্ষার উন্নতি হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে লিঙ্গ সমতা পৌঁছেছে। কিন্তু বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নীতি কাঠামো গ্রহণ করা সত্ত্বেও, লিঙ্গ সমতার চ্যালেঞ্জগুলি রয়ে গেছে।
‘এখনও এদেশে যৌন সহিংসতাসহ নারীর প্রতি সহিংসতা উচ্চ রয়ে গেছে এবং ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা পাওয়া কঠিন।’
রোহিঙ্গাদের চোখে আতঙ্ক ও ভয়
ব্যাচলেট বলেন, ‘আমি কক্সবাজার সফর করেছি। সেখানকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের আমি আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় পেয়েছি। সাধারণ রোহিঙ্গারা আমাকে জানিয়েছে, তারা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটায়। এমন কি তারা টয়লেটে যেতেও ভয় পায়। এই আতঙ্ক নিরাপত্তাহীনতার।
‘ক্যাম্পে ইদানিং অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। পাচারের শিকার হচ্ছেন অনেকে। অনেকে মাদক চোরাচালানে জড়িত হচ্ছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ওয়েস্টিন পারনাস হোটেলে আজ থেকে ০৩(তিন) দিনব্যাপী (১৬-১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কো-অপারেশন কনফারেন্স (জিআইসিসি)-২০২৫ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। সম্মেলনে সেতু সচিব সেতু বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের উপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সেতু সচিব প্রেজেন্টেশনে উল্লেখ করেন সেতু বিভাগের কয়েকটি প্রকল্পে কোরিয়ান ইডিসিএফ/ইডিপিএফ (EDCF/EDPF) অর্থানয়ের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের পরিবহন খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
জিআইসিসি-২০২৫ সম্মেলনের লক্ষ্য কোরিয়ান নির্মাণ সংস্থাগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করা এবং বিভিন্ন দেশের প্রকল্প বাস্থবায়নকারীদের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করা। এটি মূলত একটি বিজনেস-টু-বিজনেস প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যেখানে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো বিদেশী সরকার, প্রজেক্ট ডেভেলপার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে। সম্মেলনে প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ৩০টি দেশের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এবং কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ সংস্থাগুলির কর্মকর্তারা রয়েছেন।
এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো: বিভিন্ন দেশের আসন্ন অবকাঠামো প্রজেক্ট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান, বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন, নতুন প্রজেক্টে অংশগ্রহণের জন্য চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কোরিয়ান উন্নত প্রযুক্তি যেমন স্মার্ট সিটি, হাই-স্পিড রেল, এবং স্মার্ট পোর্ট সিস্টেমের সাথে পরিচিতি করা।
এছাড়াও সম্মেলনের বাকী অংশে বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের প্যানেল আলোচনা, বিভিন্ন দেশের প্রজেক্ট ব্রিফিং, ব্যক্তিগত বিজনেস মিটিং, কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো তাদের নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সারা দেশে দেশীয় মাছের সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। এই সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের কোন বিকল্প নাই। সরকার দেশের নদ-নদীতে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে কার্যক্রম গ্রহণ করছে।
উপদেষ্টা আজ সকালে কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,নারী কৃষক এবং স্হানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বন্যায় নদীগুলোতে পলি পরার কারণে নাব্যতা হ্রাস, পানি দূষণ, চায়না জাল ব্যবহার ও ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে মাছ কারণে দিনদিন মাছের পরিমাণ কমছে। জোরালো অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ মাছ ধরার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করতে হবে। অভিযান চলমান রাখতে নদীগুলোতে স্পীড বোটের ব্যবহার করা হবে।
চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে তারা সরকারি অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া তিনি প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।
খামারিদের উৎপাদিত দুধ সংরক্ষণ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, যথাযথ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের অভাবে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই এই অঞ্চলে চিলিং সেন্টার স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
জুলাই যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, জুলাই যোদ্ধাগণ অনেকে জীবন উৎসর্গ করেছেন আবার অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের এই ঋণ ভুলবার নয়। এজন্য তিনি সরকারি ও এনজিওর উদ্যোগে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানান।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের সভাপতিত্বে আরো উপস্হিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোক্তাদির খান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানাসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এরপর উপদেষ্টা কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের ছড়ারপাড় গ্রামে নারী কৃষকের বাড়ি পরিদর্শন করেন।
সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
মন্তব্য