রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় পাঁচজনের তিন দিন করে রিমান্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
হত্যায় ব্যবহার করা মোটরসাইকেলচালক শামীম হোসাইন ওরফে মোল্লা শামীমসহ ওই পাঁচজনকে অস্ত্র আইনের মামলায় রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার আসামিদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর খিলগাঁও থানায় করা অস্ত্র আইনের মামলার তদন্তের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মজিবুর রহমান তাদের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন।
শুনানি শেষে তাদের প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম মঈনুল ইসলাম।
রিমান্ডে পাঠানো অন্য আসামিরা হলেন- তৌফিক হাসান ওরফে বাবু, সুমন হোসেন, এহতেশাম উদ্দিন চৌধুরী অপু ও শরিফুল ইসলাম হৃদয়।
বেনাপোল সীমান্ত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গত সোমবার মোল্লা শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যে দক্ষিণ গোড়ান থেকে শরিফুল ইসলাম ওরফে হৃদয়কে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি বিদেশি পিস্তল, ৮ রাউন্ড গুলি ও ৩টি ম্যাগজিনসহ আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তৌফিক হাসান ওরফে বাবুর তথ্যে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি দক্ষিণ গোড়ান থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় রাজধানীর খিলগাঁও থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার।
গত ২৪ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনির কাঁচা বাজারসংলগ্ন রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় ফেরার পথে শাহজাহানপুর আমতলা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক টিপু। সে সময় রিকশায় থাকা কলেজছাত্রী প্রীতিও গুলিতে নিহত হন। আহত হন টিপুর গাড়িচালক মুন্না।
এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
এখন পর্যন্ত মামলাটিতে ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ড নামে একটি বিপণিবিতানের সামনে খুন হন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কী। আলোচিত সেই হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন তৎকালীন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু।
আরও পড়ুন:ঢাকার আশুলিয়া থানায় হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে সাফি মোদ্দাসের খান জ্যোতির চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এর আগে শনিবার ভোরে রাজধানী ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা পুলিশ।
শনিবার তাকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আবু তাহের মিয়া সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ভুক্তভোগী মো. রবিউল সানি বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় এই মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার ৪ নং এজাহারনামীয় আসামি হলেন সাফি।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ইউজিসির সাবেক সচিব ড. ফেরদৌস জামান, সাবেক সদস্য ড. মুহাম্মদ আলমগীর, ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র, ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
উপজেলার থুমনিয়া শালবনের পাশে একটি ধানক্ষেত থেকে শনিবার সকালে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত রাসেল ইসলাম সদর উপজেলার কাকডোব গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে।
এ ঘটনায় আনিছুরের বন্ধু সাহেদকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় লোকজন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম ডন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, বন্ধুকে খুন করে রক্তাক্ত দেহ নিয়ে ঘুরছিলেন সাহেদ। পরে স্থানীয়রা আটক করে গায়ে রক্তের কারণ জানতে চাইলে তিনি খুনের কথা স্বীকার করেন। পরে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে দেয় তাকে।
আটক সাহেদের বরাত দিয়ে থানা পুলিশ জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থুমনিয়া শালবাগানে দুই বন্ধু নেশা করতে আসেন। নেশা করা অবস্থায় তুচ্ছ বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে সাহেদ তার বন্ধু রাসেলকে ছুরি দিয়ে পেটে ও গলায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ রাতেই সাহেদকে সঙ্গে নিয়ে মরদেহের সন্ধানে শালবনে যায়। অনেক খোাঁজাখুজির পরও মরদেহ না পেয়ে ফিরে আসে পুলিশ।
এক কৃষক শনিবার সকালে শালবনের পাশে ধানক্ষেত পরিচর্যার জন্য গিয়ে মরদেহের সন্ধান পায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ধানক্ষেত থেকে রাসেলের মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি খায়রুল আনাম জানান, রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক সাহেদকে চিকিৎসার জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে সাফি মোদাচ্ছের খান জ্যোতিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানা পুলিশ।
আশুলিয়া থানার একটি মামলায় শুক্রবার রাতে রাজধানী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এসপি বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) রাতে অভিযান চালিয়ে ঢাকার উত্তরা থেকে জ্যোতিকে আটক করা হয়। আশুলিয়া থানার হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এক নারীকে কান ধরিয়ে উল্লাস করা যুবককে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
সৈকতে দুই নারীকে ‘মারধর ও হয়রানির’ তিনটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিও ফুটেজে থাকা যুবককে আটক করে।
যুবকটিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘স্থানীয় সমন্বয়ক’ বলে দাবি করেছেন ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেখানো অনেকে।
তারা বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে ওই নারীদের ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে।
যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কক্সবাজারে শুরু থেকে সক্রিয় থাকা স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধিরা জানান, যুবকটি ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নন। আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা মত ও পথের ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। যুবকটিরও আন্দোলনে অংশগ্রহণ থাকতে পারে।
কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কে ভোলা বাবুর পেট্রল পাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত যুবকটিকে আটক করা হয় বলে জানান জেলা ডিবির পরিদর্শক জাবেদ মাহমুদ।
আটক মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম (২৩) একই এলাকার বাসিন্দা। তিনি পরিবারের সঙ্গে ওই এলাকায় থাকেন। তাদের আদি বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকায়।
ফারুকুলের ফেসবুক আইডিতে এর আগে বুধবার কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড় এলাকায় ভাসমান যৌনকর্মীদের লাঠি নিয়ে তাড়িয়ে মারধর করার একটি ফুটেজ আপলোড করা হয়।
ডিবির পরিদর্শক জাবেদ মাহমুদ বলেন, ‘সৈকতে নারী পর্যটককে মারধর ও নির্যাতনের কিছু ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। পরে পুলিশ ফুটেজগুলোতে দেখা মেলা যুবকটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
‘শুক্রবার রাতে শহরের ভোলা বাবুর পেট্রল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় সদর থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে হেফাজতে নিয়েছে।’
অভিযুক্ত যুবক এখন সদর থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন বলে জানান তিনি।
আযম খান নামের এক ব্যক্তি শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে তিনটি ভিডিও ফুটেজ আপলোড করে ক্যাপশনে লিখেন, ‘কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে শরিয়া পুলিশিং চালাচ্ছে স্থানীয় সমন্বয়করা। কোনো নারীকে একা পেলে, কারও পোশাক পছন্দ না হলে লাঠিসোটা নিয়ে তাদের আক্রমণ করছে। কক্সবাজার এখন আফগানিস্তান।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা যায়, রাতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একা বসে থাকা এক তরুণীকে লাঠি হাতে নিয়ে ঘিরে ধরেছেন চার যুবক। তারা প্রথমে ওই তরুণীর পরিচয় এবং কী কাজে এত রাতে, একা অবস্থান করছেন, তা জানতে চান। পরে তরুণীটি ঘুরতে আসার কথা জানালে তারা সন্তুষ্ট হননি।
একপর্যায়ে যুবকরা সৈকতের ‘সামাজিক পরিবেশ’ নষ্ট করার অভিযোগ তুলে ওই তরুণীকে সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করেন।
অপর একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আরেক তরুণীকে ঘিরে রয়েছে বেশ কিছু কৌতুহলী মানুষ। এসব মানুষের মাঝে লাঠি হাতে নিয়ে অবস্থান করছেন কয়েকজন যুবক।
যুবকরা লাঠি দেখিয়ে ওই তরুণীকে নির্দেশ দিচ্ছেন কান ধরে উঠবস করতে। পরে ভয়ার্ত ওই তরুণী উঠবস করতে থাকলে ঘিরে ধরা লোকজনকে অশ্লীল ভাষায় মন্তব্য করতে শোনা যায়।
আরেকটি ভিডিও ফুটেজে সৈকতের ট্যুরিস্ট পুলিশ বক্সে কয়েকজন পুলিশের পাশাপাশি কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ভুক্তভোগী এক তরুণীসহ আরও একজনকে দেখা যায়। সাদা পোশাকে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ভুক্তভোগী তরুণী কান্নারত অবস্থায় অভিযোগ ও নিজের তথ্য দেন।
একপর্যায়ে পুলিশ বক্সে প্রবেশ করেন আরেকটি ভিভিও ফুটেজে লাঠি হাতে আরেক তরুণীকে উঠবস করার নির্দেশদাতা যুবকটি।
ওই সময় পুলিশ কর্মকর্তাকে লক্ষ্য করে যুবকটির বিরুদ্ধে মোবাইল ফোন সেট কেড়ে নেয়ার অভিযোগ তুলে তরুণীটিকে বলতে শোনা যায়, ‘উনি আমার ফোন কেড়ে নিয়েছেন। দয়া করে ফোনটি ফেরত দিন। প্রয়োজনে মোবাইলে থাকা সবকিছু ডিলিট করে দেব।’
এদিকে পুলিশের অভিযানে আটক মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পর্যায়ের কেউ নন বলে দাবি করেছেন কক্সবাজারের স্থানীয় সমন্বয়করা।
আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা মত ও পথের ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের তথ্য দিয়ে স্থানীয় সমন্বয়ক শাহেদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, ‘আটক যুবক জেলার সমন্বয়ক বা নেতা পর্যায়ের কেউ নন। আন্দোলনে যেহেতু শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা শ্রেণি-পেশা, মত ও পথের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল, আটক যুবকেরও অংশগ্রহণ থাকতে পারে। তাই বলে তিনি সমন্বয়ক পরিচয় দেয়ার এখতিয়ার রাখেন না।’
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কেউ যদি নিজ উদ্যোগে বা সাংগঠনিক প্রক্রিয়া ছাড়া কোনো কর্মসূচি নিয়ে থাকেন, সেটার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দায়বদ্ধ নয় বলে মন্তব্য করেন এ সমন্বয়ক।
তার ভাষ্য, ব্যক্তির দায়ভার সংগঠন নেবে না। ব্যক্তির কর্ম-অপকর্মের বিষয়ে ব্যক্তিকেই জবাবদিহি করতে হবে।
আরও পড়ুন:রাজশাহী মহানগরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালানো জহিরুল ইসলাম ওরফে রুবেলকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে শুক্রবার রাত পৌনে একটার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব সদরদপ্তর গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জহিরুল গত ৫ আগস্ট রাজশাহী মহানগরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দুই হাতে দুটি পিস্তল নিয়ে গুলি বর্ষণ করেন। এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর চলমান অভিযানে সারা দেশে ১০ দিনে ১৪৪টি অস্ত্র উদ্ধার ও ৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তর সূত্র শুক্রবার ইউএনবিকে এ তথ্য জানায়।
উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে আছে আটটি রিভলভার, ৪১টি পিস্তল, ১১টি রাইফেল, ১৭টি শটগান, পাঁচটি পাইপগান, ১৯টি শুটারগান, ১০টি এলজি, ২২টি বন্দুক, একটি একে-৪৭, একটি গ্যাসগান, একটি চাইনিজ রাইফেল, একটি এয়ারগান, একটি টিয়ার গ্যাস লঞ্চার, তিনটি এসএমজি ও তিনটি এসবিবিএল।
যৌথ অভিযানে রয়েছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, কোস্ট গার্ড ও র্যাব।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে গত ১৬ জুলাই থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৮৭৫ জন নিহত ও ৩০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)।
গণমাধ্যমে শুক্রবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরে সংগঠনটি।
১২টি জাতীয় দৈনিক, এইচআরএসএসের তথ্য অনুসন্ধানী ইউনিট ও সারা দেশ থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্দোলনে ৭৭ শতাংশের মৃত্যু হয় গুলিতে।
এতে উল্লেখ করা হয়, মোট ৭৭২ জনের মৃত্যুর ধরন সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৯৯ জন বা ৭৭ শতাংশ গুলিতে নিহত হয়েছেন। ৬১ জন (৮ শতাংশ) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। ৮৫ জনকে (১১ শতাংশ) পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অন্যান্য কারণে মারা গেছেন ২৭ জন (৪ শতাংশ)।
এইচআরএসএস জানায়, নিহত ব্যক্তিদের একাংশের বয়স, পেশা, মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ১৬ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত ৩২৭ জন এবং ৪ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (অনেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরে মারা যান) ৫৪৮ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ৭৭ শতাংশ গুলিতে মারা গেছেন।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিহতদের মধ্যে ১৯ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মৃত্যুহার ৫৩ শতাংশ। আর ৩০ বছরের মধ্যে বয়স ধরলে নিহতের হার দাঁড়ায় ৭০ শতাংশে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী, যে হার ৫২ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন গুলিতে ও পুলিশের হামলায়।
এইচআরএসএস আরও জানায়, ছাত্রলীগকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য আদেশ দেয়া হয়। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, আনসার, সোয়াট, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হেলিকপ্টার থেকে গুলির বেআইনি ব্যবহার, কাঁদানে গ্যাসের শেল, এ কে অ্যাসল্ট রাইফেলের মতো প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য