বাস র্যাপিড ট্রানজিট- বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের বক্স গার্ডার চাপায় পিষ্ট হয়ে নিহত আইয়ুব হোসেন রুবেলের স্ত্রীর দাবি নিয়ে মরদেহ নিতে হাসপাতালে ভিড় করেছেন মোট সাত জন। আরও এক স্ত্রীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছে।
রত্না নামে রুবেলের মেয়ে পরিচয় দিয়ে একজন তার বাবার ছয় স্ত্রীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বাকি একজনকে চেনেন না জানিয়েছেন। বলেছেন, তার মায়ের সঙ্গে রুবেলের বিচ্ছেদ হয়েছে।
আলোচিত এই দুর্ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার নিহত পাঁচজনের ময়নাতদন্ত হয় রাজধানীর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
দুপুরের আগে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘ময়নাতদন্ত হয়ে গেছে। এখন লাশ হস্তান্তর করবে। আর এ কাজটি করবে উত্তরা পশ্চিম থানা।’
বেলা ৩টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোহসীন জানান, রুবেলের মরদেহ কার কাছে হস্তান্তর করা হবে, তা এখনও নির্ধারণ হয়নি।’
কেন এই সিদ্ধান্তহীনতা- সে বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, একাধিক নারী এসে নিজেদের রুবেলের স্ত্রীর দাবি করছেন।
মোট কতজন নারী স্ত্রী দাবি করে মরদেহ নিতে চাইছেন- জানতে চাইলে মোর্শেদ আলম বলেন, ‘আমরা শুনেছি দুইজন এসেছেন। ওখানকার দায়িত্বশীল যারা আছেন, তারা পরিচয় শনাক্ত করে লাশ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করছেন।’
তবে সংখ্যাটি দুইয়ের অধিক বলে জানিয়েছেন ওসি মোহাম্মদ মোহসীন। বলেন, ‘সেখানে আমাদের লোকজন আছেন। সেখান পাঁচজনের মরদেহ আছে। এর মধ্যে চারজনের মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু একজনের একাধিক স্ত্রী আসায় কার কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে, তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
ঘটনাস্থলে যান রুবেলের মেয়ে পরিচয় দেয়া রত্না নামে এক তরুণীর কাছ থেকে জানা যায় সাতজনের কথা।
তিনি জানান, তার মায়ের সঙ্গে বাবার বিচ্ছেদ হওয়ার পর যোগাযোগ ছিল না। এর মধ্যে দুর্ঘটনার মৃত্যুর কথা জেনে তিনি সেখানে এসেছেন।
রুবেলের স্ত্রী পরিচয়ে আসা পাঁচজন নারীর নাম উল্লেখ করেন রত্না। বলেন আরও একজন আছেন যিনি নাম বলতে নিষেধ করেছেন।
রত্মা এও জানান, আরও এক নারী নিজেকে রুবেলের স্ত্রী দাবি করছেন, তবে তার কথা তিনি জানেন না আর কখনও দেখেনওনি।
সোমবার চাপা পড়া গাড়িটি চালাচ্ছিলেন আইয়ুব হোসেন রুবেলই। থাকতেন বিমানবন্দর সড়কের কাওলা এলাকায়।
তার ছেলে হৃদয়ের সঙ্গে রিয়া মনি নামে এক তরুণীর বিয়ে হয়েছে শনিবার। সোমবার ছিল বৌভাত। এই অনুষ্ঠান শেষে রিয়া মনির স্বজনরা জামাতাকে আশুলিয়ার বাড়িতে অতিথি করে নিয়ে যেতে আসেন।
রুবেলই গাড়িতে করে তাদের এগিয়ে দিতে চান। সঙ্গে ছিলেন হৃদয়, রিয়া, রিয়ার মা, খালা এবং খালাতো ভাই ও বোন।
হৃদয় ও রিয়া বেঁচে গেলেও মারা যান বাকি সবাই।
যা বললেন মেয়ে
হাসপাতালে পাশে থাকা এক নারীকে দেখিয়ে রুবেলের মেয়ে রত্না বলেন, ‘উনি আমার আব্বুর বউ। আরেকজন আছে, এখন পরিচয় দিচ্ছে না। আমি ওনার বাসায় গেছি, আমার আব্বুর সাথে। ওনার বাসায় আমাকে নিয়ে গেছে, ওনার সাথে আমি থাকছি, এখন উনি পরিচয় দিতে চাইতেছে না যে আমি তোমার আব্বুর ওয়াইফ।’
মোট কতজনের কথা জানেন- এমন প্রশ্নে রত্না বলেন, ‘আমার জানামতে এই আন্টি, হৃদয়ের মা, রেহানা আন্টি, শাহিদা আন্টি, পারুল আন্টি, আরেকজন আছেন ওনি এখানে নাম বলতে মানা করছেন।
‘আরেকজন এখানে এসে আমি শুনছি। ওনার নাম আমি কোনো দিন শুনিও নাই, দেখিও নাই।’
রত্মা জানান, কয়েক বছর তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। দুই মাস আগে দেশে ফেরার পর ফোনে কথা হয় বাবার সঙ্গে। সেদিন ঝগড়ার পর আর কথা হয়নি।
সোমবার দুর্ঘটনার পর রত্নার চাচাতো ভাই সাইফুল ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার পর বাবার মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারেন রত্নাও। এরপর তিনিই রুবেলের স্ত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
সাত বছর পর অনেক স্ত্রীর তথ্য জেনেছেন পুতুল
সালমা আক্তার পুতুল নামে একজন বলেন, ‘এক আপুর সাথে আমার পরিচয় ছিল। ওই আপু আমাকে পরিচয় করিয়ে দিছে। বলছে, উনি বিয়ে করবে ওনার ওয়াইফ অসুস্থ। ওনার বউ দরকার। আমার হাসব্যান্ড তখন ছিল না। আমার হাসব্যান্ডের সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গেছে। তখন কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে রাজি হইছি।
‘২০১৪ সালে আমাদের বিয়ে হয়। আমাদের বিয়ের কিন্তু কাজি রেজিস্ট্রি ছিল না। মৌখিকভাবে বিয়ে করছে। এক বছর-দুই বছর করতে করতে ২১ সালে এসে শুনি ওনার এতগুলো বউ। আমি ফেসবুক চালাইতাম না। ফেসবুক চালাতে গিয়া ওনার সাথে অ্যাড যাদের যাদের আছে, তাদের অ্যাড করতে যেয়ে অনেকগুলো বউ বের হয়েছে।
‘তখন আমার মাথা নষ্ট, আমি অনেক রাগারাগি করছি। কোনো বউ স্বীকার করে না। পরে লাস্টে আমি উকিলের সঙ্গে কথা বলে মামলা করছি।’
অন্য এক প্রশ্নে পুতুল বলেন, ‘উনি প্রতি সপ্তাহে এক দিন একেক জনের বাসায় ঘুমাইত।’
তিনি জানান, রুবেল তার কাছ থেকে ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন জমি কিনে দেবেন বলে। কিন্তু টাকা দেননি। এরপর সব অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে বিয়ের কথাও অস্বীকার করে বলেন, বিয়ের কোনো কাগজ নেই। এই কথা বলার পরই তিনি মামলা করেন।
অন্য একজন স্ত্রী আছে জানতেন তিনি
অন্য এক নারী নিজেকে রুবেলের স্ত্রী দাবি করার পর গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চান, তিনি একাই স্ত্রী ভাবতেন কি না। তখন সেই নারী জানালেন, অন্য এক স্ত্রী আছে বলে জানতেন।
-রুবেলের সঙ্গে তার পরিচয় কত দিনের।
সেই নারী বলেন, ‘অনেক দিন।’
-আপনি কী চান?
সেই নারী বলেন, ‘আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নাই। আমার গার্জিয়ান আছে বড়। তারা যেটা মনে করে, সেটাই আমি রাজি, আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নাই।’
-দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া হৃদয়ের সঙ্গে বা অন্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না?
সেই নারী বলেন, ‘আমি ওদেরকে চিনি না। এই ফার্স্ট টাইম ওদেরকে দেখছি। এক যুগের মধ্যে ফার্স্ট আমি দেখছি। আমি ওদেরকে চিনি না।’
-আপনি জানতেন আপনি একা?
সেই নারী বলেন, ‘না না না, আরেকজন আছেন রত্নার আম্মু, ওনাকে আমি চিনতাম। ওনার বাসায় গেছি, আইছি।’
-আপনার সঙ্গে হাসব্যান্ডের লাস্ট কবে দেখা হয়েছে?
সেই নারী বলেন, ‘আমার সাথে তো কালকেই… আমার ঘর থেকে আসছে, বাসা থেইক্যা।’
-আপনার কোনো ছেলেমেয়ে আছে?
সেই নারী বলেন, ‘ছেলেমেয়ে তো আছে অবশ্যই। একটা ছেলে আর একটা মেয়ে।
আরও প্রশ্ন করতে থাকলে সেই নারী বলেন, ‘ভাই আমি আর কিছু বলতে চাই না। ভাই আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।’
মানিকগঞ্জের শাহিদা জানান, তাদের বিয়ে ’৯৯ সালে
সেখানে মানিকগঞ্জ থেকে আসা শাহিদা খানম নামে অন্য এক নারী বলেন, ‘তাকে কত সালে বিয়া করছে, তার কোনো কাগজপত্র আছে কি না, আমার তো কাবিনের কাজগপত্র আছে। একজনে বউ দাবি করলেই… একজন রাস্তা থেকে ব্ল্যাকমেইল করে যে সে আমার হাসব্যান্ড। কিন্তু ডকুমেন্টস থাকতে হইব। আমার সম্পূর্ণ ডকুমেন্ট আছে।
‘আমার বিয়া হইছে ১৭-৮-১৯৯৯। এর মধ্যে এলাকার কেউ বলতে পারব না স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো কিছু নিয়া ঝগড়া হইছে।’
আইয়ুব হোসেন রুবেল কি ঢাকায় থাকতেন?
শাহিদা বলেন, ‘না, না, না, আমার স্বামী গ্রামে থাকে। ঢাকায় উনি আসছিল, ব্যবসা করে। প্রতিদিন যায়। …বৃহস্পতিবার দিন আসছে আবার বৃহস্পতিবার দিন গেছে। আবার শনিবার দিন আসছে। শুক্রবার দিন আমার বাসায়।
‘শনিবার দিন বলল, উত্তরায় একটা পার্টি আছে। আবার ১৫ আগস্ট কালকে। বলল কী, ওখানে আমার একটা অনুষ্ঠান আছে। আমি অনুষ্ঠানে থাকব। আমার গাড়ি চাইছে আমি গাড়ি দিব না। আমি নিজে ড্রাইভ করব।’
শাহিদা জানান, বেলা ২টার সময় ফোনে তার সঙ্গে কথা হয় রুবেলের। বলেন ২ ঘণ্টা পরেই তিনি আসছেন।
এ সময় শাহিদা হাতে থাকা মোবাইল ফোন দেখিয়ে বলেন, ‘আমাদের কাছে অনেক ছবি আছে। আমরা অনেক জায়গায় ঘুরতে গেছি।’
এরপর নিজের হাতের মোবাইল ফোনে থাকা ছবি দেখাতে থাকেন। তখন সেই নারীর মেয়ে বলেন, ‘আমি নিজে ভিডিও করছি।’
সেই মেয়ে বলেন, ‘পরশু দিন শনিবার ঢাকায় যায়। বলছে কি তার একটা মিলাদ না কী যেন আছে। সেখানে তার থাকতে হবে। আমরা তো নরমালি যেভাবে বাসায় থাকি, সেভাবে থাকতাম। তারপর খবর আসছে বাবা নাই।
শাহিদার ছেলের সঙ্গে দুপুর পর্যন্ত, এরপর আরেক পক্ষের ছেলে হৃদয়ের বৌভাতে
রুবেলের ছেলে পরিচয় দিয়ে এক তরুণ বলেন, ‘আমার মাকে আমার বাবা ১৯৯৯ সালে বিয়ে করেছিল। আমি তখন অনেক ছোট। আমি আগের সংসারের।’
রুবেলের আগের বিয়ের তথ্য জানতে পারার কথাও জানান এই তরুণ। তবে রুবেল সেটি স্বীকার করেননি।
সেই তরুণ বলেন, ‘আব্বুর আগে বিয়ে হয়েছিল। সেই ব্যাপারটায় আমরা আংশিক ছিলাম, ক্লিয়ার ছিলাম না। আব্বু আমাদের কখনও বলে নাই, কখনও স্বীকার করে নাই। ইভেন ওই ফ্যামিলি থেকে আমাদের ইনবক্স করা হতো, নানা ধরনের মেসেজ দিত। আব্বু বলত, এইগুলো প্রশ্রয় দিও না, ব্লক করে দাও।
‘তাদের সঙ্গে আমাদের কখনও দেখা হয় নাই।’
এই তরুণ জানান, আইয়ুব হোসেন রুবেল মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে ডুপ্লেক্স বাড়ি করছেন। ২২ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছেন। আরও বেশ কিছু সহায়-সম্পত্তি করেছেন।
সেই তরুণ এও জানান, সোমবার দুপুর পর্যন্ত তিনি রুবেলের সঙ্গে ছিলেন। রুবেল তাকে তখন অন্য একটা কাজের কথা বলে হৃদয়ের বৌভাতে যান।
তিনি বলেন, ‘যেদিন আব্বু দুর্ঘটনায় পতিত হন, সেদিন দুপুর ২টা পর্যন্ত আব্বু আমার সাথে। ২টার সময় আব্বুকে বিদায় দিই। বিদায় দেয়ার পর আমি একজনকে গাবতলীতে আগায় দিতে গেছি। এরপর যে কাজটার জন্য আব্বুকে ডাকছিলাম, ওইটার জন্য ব্যস্ত হয়ে যাই।
‘আব্বু আমাকে বলছে বনানীতে একটা প্রোগ্রাম আছে। সাম হাউ আমাদেরকে মিথ্যা কথা বলছিল। বিকালের পর একটা অ্যাকসিডেন্টের ছবি দেখেছি, আমরা গায়ে মাখি নাই। আব্বু বনানীতে, উত্তরায় হয়েছে, অন্য একটা ইনটেনশনে ছিলাম, আমি খেয়াল করি নাই।
‘যখন আম্মু আমাকে সাড়ে ৭টা নাগাদ ফোন দিয়া বলতেছে, আমি তোর আব্বুর নামে এটা ওটা শুনতেছি। তোর আব্বু তো মনে হয় আর নাই। আব্বুর কাছে তাড়াতাড়ি যা।’
এরপর সেই তরুণ উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে গিয়ে গাড়িতে থাকা হৃদয় ও তার স্ত্রীকে দেখতে পান। তাদের সঙ্গে কথাও বলে আসেন।
সেই তরুণ বলেন, ‘আব্বু যখন আমার কাছ থেকে বিদায় নিল, তখন আব্বু মেইনলি যাচ্ছিল আগের ঘরে যে সন্তান আছে, ওনার বৌভাত নাকি ছিল। ওনার বউকে আনার জন্য নাকি গিয়েছিল।’
হৃদয়ের বাবা হিসেবে গণমাধ্যমে পরিচয় আসায় কিছুটা মনক্ষুণ্ণ এই তরুণ। বলেন, ‘তাদের ইহজীবনে কোনো নাম-গন্ধ ছিল না। অ্যাকসিডেন্টের পর যেটা হয়েছে, তারাই এখন মেইন ফ্যামিলি হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ওয়েস্টিন পারনাস হোটেলে আজ থেকে ০৩(তিন) দিনব্যাপী (১৬-১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কো-অপারেশন কনফারেন্স (জিআইসিসি)-২০২৫ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। সম্মেলনে সেতু সচিব সেতু বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের উপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সেতু সচিব প্রেজেন্টেশনে উল্লেখ করেন সেতু বিভাগের কয়েকটি প্রকল্পে কোরিয়ান ইডিসিএফ/ইডিপিএফ (EDCF/EDPF) অর্থানয়ের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের পরিবহন খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
জিআইসিসি-২০২৫ সম্মেলনের লক্ষ্য কোরিয়ান নির্মাণ সংস্থাগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করা এবং বিভিন্ন দেশের প্রকল্প বাস্থবায়নকারীদের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করা। এটি মূলত একটি বিজনেস-টু-বিজনেস প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যেখানে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো বিদেশী সরকার, প্রজেক্ট ডেভেলপার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে। সম্মেলনে প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ৩০টি দেশের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এবং কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ সংস্থাগুলির কর্মকর্তারা রয়েছেন।
এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো: বিভিন্ন দেশের আসন্ন অবকাঠামো প্রজেক্ট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান, বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন, নতুন প্রজেক্টে অংশগ্রহণের জন্য চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কোরিয়ান উন্নত প্রযুক্তি যেমন স্মার্ট সিটি, হাই-স্পিড রেল, এবং স্মার্ট পোর্ট সিস্টেমের সাথে পরিচিতি করা।
এছাড়াও সম্মেলনের বাকী অংশে বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের প্যানেল আলোচনা, বিভিন্ন দেশের প্রজেক্ট ব্রিফিং, ব্যক্তিগত বিজনেস মিটিং, কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো তাদের নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সারা দেশে দেশীয় মাছের সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। এই সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের কোন বিকল্প নাই। সরকার দেশের নদ-নদীতে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে কার্যক্রম গ্রহণ করছে।
উপদেষ্টা আজ সকালে কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,নারী কৃষক এবং স্হানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বন্যায় নদীগুলোতে পলি পরার কারণে নাব্যতা হ্রাস, পানি দূষণ, চায়না জাল ব্যবহার ও ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে মাছ কারণে দিনদিন মাছের পরিমাণ কমছে। জোরালো অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ মাছ ধরার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করতে হবে। অভিযান চলমান রাখতে নদীগুলোতে স্পীড বোটের ব্যবহার করা হবে।
চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে তারা সরকারি অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া তিনি প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।
খামারিদের উৎপাদিত দুধ সংরক্ষণ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, যথাযথ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের অভাবে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই এই অঞ্চলে চিলিং সেন্টার স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
জুলাই যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, জুলাই যোদ্ধাগণ অনেকে জীবন উৎসর্গ করেছেন আবার অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের এই ঋণ ভুলবার নয়। এজন্য তিনি সরকারি ও এনজিওর উদ্যোগে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানান।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের সভাপতিত্বে আরো উপস্হিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোক্তাদির খান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানাসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এরপর উপদেষ্টা কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের ছড়ারপাড় গ্রামে নারী কৃষকের বাড়ি পরিদর্শন করেন।
সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
মন্তব্য