পদ্মা সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ গার্মেন্টস কর্মী নুরুজ্জামানকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, তীব্র স্রোতের কারণে ডুবুরি দল নদীর তলদেশে যেতে পারছে না। তবে নুরুজ্জামানকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের ডিফেন্সর স্টেশন অফিসার সঞ্জয়।
সোমবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে সেতুর ঢাকামুখী মাওয়ার ১০/১১ নম্বর পিলার অংশে চলন্ত প্রাইভেট কার থেকে ঝাঁপ দেন ৩৮ বছরের নুরুজ্জামান। তার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানা এলাকায়। নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরের উর্মি গার্মেন্টসে কাজ করতেন তিনি।
এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়েও তার খোঁজ পায়নি ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের উদ্ধার অভিযান শুরু করে নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
তবে তীব্র স্রোতের কারণে ডুবুরি দল নদীর তলদেশে যেতে পারছে না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে ঠিক কী কারণে ওই ব্যক্তি নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে মাওয়া নৌ-পুলিশ। নদীতে ঝাঁপ দেয়ার কারণ বলতে পারছেন না নুরুজ্জামানের স্ত্রী ও ঝাঁপ দেয়ার সময় প্রাইভেট কারে থাকা ওমর ফারুকও।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে হেফাজতে নিয়েছে নৌ-পুলিশ।
সোমবার রাতে সেতু থেকে ঝাঁপ দেয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি ধারণ করা হয় পাশের লেনে থাকা বিপরীতগামী অন্য একটি চলন্ত গাড়ি থেকে। বলা হচ্ছে, চলন্ত প্রাইভেট কার থেকেই লাফ দেন নুরুজ্জামান। তবে গাড়ি চলন্ত অবস্থায়ই তিনি লাফ দিয়েছেন কি না, ওই ভিডিও থেকে তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
নুরুজ্জামান যখন নদীতে ঝাঁপ দেন, সে সময় চালক ছাড়া প্রাইভেট কারে ছিলেন পেশায় অটোমিস্ত্রি ওমর ফারুক। তারা নারায়ণগঞ্জে একই এলাকায় থাকেন।
ঘটনার পর তিনি জানান, ১৫ আগস্ট উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিতে এদিন সকাল ৭টার দিকে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে রওনা দিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যান তারা। তবে তারা সমাধিতে ফুল দিতে পারেননি। সেখান থেকে ফেরার পথেই পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ দেন নুরুজ্জামান।
ওমর ফারুকের বর্ণনায়, ‘তিন-চার দিন আগে থেকে (নুরুজ্জামান) বলতেছিল- আমারে নিয়া টুঙ্গিপাড়ায় যাইব, বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিব, শ্রদ্ধা জানাইব। আমার তো কাজ আছে, আমি যাইতে পারুম না বলি। তখন সে আমাকে বলল, তোমার কাজের মজুরি আমি দিয়া দিব, আমার সঙ্গে চলো। আমি লোকটার কথা ফালাইতে পারিনি। সে জন্য আমি তার সাথে গেছি।
‘কাঁচপুর থেকে তার সাথে আমি গাড়ি ভাড়া করি। সেখান থেকে আমরা সকালে রওনা দিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় যাই। ওইখানে যাওয়ার পর আমাদের কার্ড নাই, তাই আমরা ঢুকতে পারি নাই। তখন প্রধানমন্ত্রীর আসার সময় ছিল। বড় নেতারাও ওইখানে দাঁড়াতে দিচ্ছিল না। নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিল, তারাও আমাদেরকে ওখান থেকে সরে যেতে বলে। তখন আমরা সাইডে আইসা পড়ছি।’
সমাধিতে ফুল দিতে না পেরে নুরুজ্জামান সে সময় মোবাইল দিয়ে ভিডিও করছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সে ভিডিও করার সময় বলতেছিল, এই ভিডিওগুলি আমি ফেসবুকে ছাইড়া দিমু। আমি ফুল দিতে পারি নাই, কষ্ট পাইছি। সাড়ে ১০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করি। আমি সারা মাসের বেতনের টাকা খরচ কইরা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল ও শ্রদ্ধা জানাইতে আসছি, আমি বঙ্গবন্ধুরে কতটুকু ভালোবাসি তাই ভিডিওর মধ্যে...’
ওমর ফারুকের ভাষ্য, সেখানে ২ ঘণ্টার মতো অবস্থান করে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিতে ব্যর্থ হয়ে তারা বাড়ি উদ্দেশে রওনা দেন। ফেরার পথে পদ্মা সেতুতে ঢাকাগামী লেনটিতে কাজ চলছিল। সে কারণে তাদের প্রাইভেট কারটিও ধীরগতিতে ছিল। তখনই কারের পেছনের সিটে বসা নুরুজ্জামান হঠাৎ দরজা খুলে নদীতে ঝাঁপ দেন।
এ ঘটনার কারণ জানেন না স্ত্রী সবুরাও। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি, আমার স্বামী পদ্মা সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দিছে। খবর শুনে সেখানে গিয়ে আমি তাকে খুঁজতে থাকি। কী কারণে সে নদীতে ঝাঁপ দিছে বলতে পারি না।’
এ বিষয়ে মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অহিদুজ্জামান বলেন, ‘টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার জন্য একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করেছিলেন নুরুজ্জামান। কিন্তু ফুল দেয়ার অনুমতি কার্ড না থাকায় সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়। এরপর পদ্মা সেতুতে ঢাকামুখী লেন দিয়ে ফেরার পথে নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি।
‘এ ঘটনায় নুরুজ্জামানের সঙ্গে গাড়িতে থাকা ওমর ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফাঁড়িতে নেয়া হয়েছে।’
ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের ডিফেন্সর স্টেশন কর্মকর্তা সঞ্জয় বলেন, ‘তীব্র স্রোতের কারণে ডুবুরি দল নদীর তলদেশে যেতে পারেনি। তবে নৌ-পুলিশের সহায়তায় সেতুর আশপাশ এলাকায় নুরুজ্জামাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।’
গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আশরাফ আলী নামের এক রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরগঞ্জ-কুপতলা সড়কের ৭৫ নম্বর রেলগেট নামক এলাকায় এ ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সাদেকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৫০ বছর বয়সী রিকশাচালক আশরাফ আলী সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের সাহার ভিটার গ্রামের মৃত ফয়জার রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ছিনতাই ও হত্যায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম কুপতলা ইউনিয়নের রামপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা।
ওসি জানান, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আশরাফ আলী। তিনি কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। আশরাফ আলী এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাটিও উদ্ধার করা হয়। পরে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সাদেকুলকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:দীর্ঘ এক যুগ বন্ধ থাকার পর পুনরায় শ্রীমঙ্গল-পাত্রখোলা সড়কে বাস পরিষেবা চালু করেছে শ্রীমঙ্গল-শমশেরনগর-কুলাউড়া বাস মালিক সমিতি।
বৃহস্পতিবার সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসিদ আলী ও ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন শ্রীমঙ্গল বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই রুটে ৫০ মিনিট পরপর ২৪টি বাস চলাচল করবে বলে সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল থেকে ভানুগাছ মাধবপুর সড়ক দিয়ে ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা বাগান পর্যন্ত এ বাস চলাচল করবে।
কুরমা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত বাসভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ টাকা। এছাড়া পাত্রখোলা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৫০ টাকা, মাধবপুর থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৪০ টাকা, কুরমা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ৪০ টাকা, পাত্রখোলা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ২৫ টাকা, মাধবপুর থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ১৫ টাকা এবং ভানুগাছ থেকে শ্রীমঙ্গল ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টাকা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কুরমা নতুন বাস স্ট্যান্ডে বাস চলাচলের উদ্বোধন শেষে মতবিনিময় সভায় শ্রীমঙ্গল-শমসেরনগর-কুলাউড়া বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. তসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রকৌশলী যোগেশ্বর চন্দ্র সিংহের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়া, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান শাওন, ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ, নুরুল হক, বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, গ্রুপ সভাপতি কাসেম মিয়া ও আব্দুস সালাম প্রমুখ।
এর আগে মাধবপুর বাজারে বাস প্রবেশ করলে এলাকাবাসী বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় যাত্রীদের মানসম্পন্ন সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
এদিকে সিএনজি থেকে ভাড়া কম করে বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় যাত্রীসহ স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীরা বেজায় খুশি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় চাওয়াই নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে আলমি আক্তার ও ইসরাত জাহান সিফাত নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে জেলার সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের চাওয়াই নদীর চৈতন্যপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১২ বছরের আলমি ওই এলাকার আব্দুল আজিজের মেয়ে এবং ৯ বছরের সিফাত সাইফুল ইসলামের মেয়ে। তারা দুজনে সম্পর্কে ফুফু-ভাতিজি।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুরে আলমি ও সিফাত বাড়ির পাশে চাওয়াই নদীতে গোসল করতে যায়৷ গোসল করতে গিয়ে সিফাত পানিতে ডুবে যেতে থাকলে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় আলমি৷ পরে দুজনেই পানিতে ডুবে যায়। এ সময় নদীর পাড়ে থাকা অন্য আরেক শিশু ঘটনাটি দেখে দৌড়ে তাদের পরিবারের লোকজনকে খবর দিলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে মৃত অবস্থায় নদী থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে পুলিশ দুই শিশুর মরদেহের সুরতহাল করে।
পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘দুই শিশুর মধ্যে একজন সাঁতার জানত, আরেকজন জানত না। একজন আরেকজনকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনেই একসঙ্গে ডুবে মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্থনীয়রা।’
মরদেহের সুরতহাল শেষে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম। বাড়ি তার বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর গ্রামে। বর্তমানে ঢাকার সুত্রাপুর থানায় কর্মরত।
৩৮ বছর বয়সী এ যুবকের নেশা বিয়ে করা। যেখানেই যান সেখানেই তিনি বিয়ে করেন। এ পর্যন্ত ৭টি বিয়ে করেছেন।
সর্বশেষ তিনি বিয়ে করেন ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি এলাকার। ঢাকায় থাকাকালে সেঁজুতি নামের পবহাটির একটি মেয়ের সঙ্গে সপ্তমবারের মতো সংসার শুরু করেন তিনি।
তবে এর মানে এই নয় যে, তার আগের সব স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রী পারভীন তার গ্রামের বাড়িতে এবং ষষ্ঠ স্ত্রী রয়েছেন যশোরের বেনাপোলে। ২ স্ত্রীর ঘরে ২টি সন্তানও রয়েছে তরিকুলের।
সম্প্রতি সংসার জীবন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই যুবক। স্বামীকে ফিরে পেতে আড়াই বছরের মেয়েকে নিয়ে ঝিনাইদহের পবহাটিতে আসেন ষষ্ঠ স্ত্রী হোসনে আরা আক্তার সাথী। তরিকুলকে স্বামী দাবি করলে সেখানে বেঁধে যায় রণক্ষেত্র। স্বামীকে নিয়ে সেঁজুতির সঙ্গে শুরু হয় তার কাড়াকাড়ি। কোনো উপায় না পেয়ে পালিয়ে যান আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম।
নিউজবাংলাকে সাথী জানান, বেনাপোল বন্দরে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজেকে এতিম পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ে করেন তরিকুল। ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ের পর থেকে একসঙ্গেই ছিলেন দুজন। তবে ২০২২ সালে বদলি হয়ে ঢাকায় চলে যান তরিকুল। তার কিছুদিন পর থেকে সাথীর সঙ্গে তার সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ।
তিনি জানান, ঢাকায় বদলি হওয়ার পর থেকে তার ও তাদের সন্তানের কোনো খরচ পাঠাতেন না তরিকুল। এরই মধ্যে সেঁজুতির সঙ্গে তার ইমোতে পরিচয় হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে সেঁজুতিকে বিয়ে করেন তিনি।
সাথী বলেন, ‘গত ঈদে আমার কাছে গিয়ে ৬ দিন ছিল। সেখানে আমাকে ভুলিয়ে আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসে। তারপর আবার সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার আড়াই বছরের মেয়েটি বাবার জন্য সব সময় কান্নাকাটি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ঝিনাইদহ আছে- এমন খবর পেয়ে আমরা ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আর এর মধ্যে আবার পালিয়েছে সে (তরিকুল)। আমি তরিকুল ও সেঁজুতির বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে আনসার সদস্য তরিকুলের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে একটি পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপের মধ্যে পড়ে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১১টার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের পূর্ব নেমাজপুর গ্রামে মাঠের মধ্যে থাকা ওই পাইপ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন।
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মানসিক প্রতিবন্ধী রনি বর্মনকে (২৩) অবশেষে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, বিএমডিএর গভীর নলকূপটির পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায়, নতুন করে আরেকটি গভীর নলকূপ কিছুদিন আগে বসানো হয়, ফলে আগেরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে ছিল। ওই পরিত্যক্ত নলকূপের পাইপের মধ্যেই পড়ে যান রনি বর্মন।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তারেকুর রহমান জানান, প্রায় ৫ ঘণ্টার বেশি সময়ের চেষ্টায় বিকেলে সোয়া ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রনি বর্মনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে পুলিশ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে।
স্থানীয়রা জানান, রনি বর্মন গভীর নলকূপের ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করতেন। সকালে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপের কাছে গেলে,পড়ে যান। এ সময় মাঠের কয়েকজন কৃষক ওই নলকূপের কাছে পানি খাওয়ার জন্য এসেছিলেন, তারা ছেলেটির কান্নার আওয়াজ শুনে সবাইকে জানান, খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে।
মানিকগঞ্জে মাদ্রাসার ছাদে খেলার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে মাহিয়া আক্তার নামের এক ছাত্রী নিহত হয়েছে।
শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার বাসস্ট্যান্ডের কাছে অবস্থিত আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদ্রাসায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১৭ বছর বয়সী মাহিয়া আক্তার মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বড় কালিয়াকৈর এলাকার আল মামুনের মেয়ে। সে আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্রী ছিল।
মাদ্রাসার শিক্ষিকা শারমিন আক্তার জানান, সকালে ক্লাসের ফাঁকে মাদ্রাসার ছাদে খেলাধুলা করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাদ্রাসার ভবনের চার তলা থেকে নিচে পড়ে যায়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছিল, কিন্তু ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. হাবিল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মন্তব্য