চকবাজারের দেবিদ্বারঘাট এলাকার কামালবাগের চারতলা ভবনে আগুনের ঘটনায় মারা যাওয়া ছয়জনই হোটেল কর্মচারী। তারা সবাই ভবনটির নিচতলার বরিশাল হোটেলের কর্মচারী, হোটেলটির ঠিক উপরেই তাদের থাকার ব্যবস্থা ছিল। রাতভর কাজ শেষে সোমবার সকালে তারা একসঙ্গে ঘুমাতে গিয়েছিলেন। এরপর অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান তারা।
নিহতদের শনাক্ত করেছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার পর থেকে এই ছয় কর্মচারীর কোনো খোঁজ মিলছিল না।
নিহতরা হলেন- স্বপন সরকার, আবদুল ওয়াহাব ওসমান, বিল্লাল সরদার, মোতালেব, মো. শরীফ ও মো. রুবেল।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরিশাল হোটেলটি ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে। দুই শিফটে ভাগ করে কর্মচারীরা কাজ করেন। মারা যাওয়া ছয়জনই রোববার নাইট শিফটে কাজ করে সোমবার সকালে হোটেলের উপরে থাকার ঘরে ঘুমাতে গিয়েছিলেন।
স্বপন সরকারের গ্রামের বাড়ি সিলেটের হবিগঞ্জ জেলায়। তার বাবার নাম রাকেশ সরকার, মা মালতী সরকার। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার বড় ভাই সজল সরকার ছোট ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করেছেন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ছোট ভাইকে দেখেই আমি চিনেছি। রোববার সারারাত ডিউটি করে সকালে ঘুমাতে গিয়েছিল। কে জানতো আমার ভাইয়ের এটাই ছিল শেষ ঘুম।’
ওসমানের বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থানার দক্ষিণ বড় কাসমা গ্রামে। ওসমান আবুল কালাম সরদার ও পেয়ারা বেগমের সন্তান। ওসমানের বড় ভাই আবদুল নিউজবাংলাকে জানান, ওসমান বরিশাল হোটেলের শুরু থেকেই কাজ করতেন। তার বয়স ২৭ বছর। ওসমান বরিশাল হোটেলে নাস্তা কারিগর। সারারাত কাজ করে সোমবার বেলা ১১টায় ওসমান হোটেলের উপরের ঘরে ঘুমাতে যান।
আবদুল বলেন, ‘আগুনের ঘটনা টিভিতে দেখে ওসমানের নম্বরে ফোন দিলে তা বন্ধ পাই। এরপর শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় আসি। বাবা, মা আর ভাইবোনের মধ্যে ওসমান আর আমি মিলেই সংসার চালাতাম। বরিশাল হোটেলে দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি পেত সে।’
ওসমানের এলাকার বড় ভাই রাব্বী ঘটনার পর ওসমানের মরদেহ শনাক্ত করতে পেরেছেন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওসমান আমার গ্রামের পরিচিত ছোট ভাই। আমি নিজেও চকবাজারে কাজ করি। ঘটনার পর ওসমানের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়ায় আমি এখানে চলে আসি৷ আগুন নেভানোর পর আমি সিঁড়ি দিয়ে হোটেলের উপরের ঘরে উঠে গিয়েই দেখি ওসমান আর বিল্লাল পাশাপাশি পড়ে আছে। আমি প্রায় সময়ই ওসমানের হোটেলে আসতাম, ওসমান আর বিল্লাল ঘনিষ্ঠ ছিল তাই ওদের দুইজনকেই চিনতে পেরেছি।’
বিল্লাল সরদারের বাড়ি বরিশালের মুলাদী থানার টুমচর গ্রামে। তার বয়স ৩৭ বছর। বিল্লাল বরিশাল হোটেলে এক বছর ধরে মেসিয়ার হিসেবে দৈনিক সাড়ে তিনশ টাকা মজুরিতে কাজ করতেন। গতরাতে তিনিও বরিশাল হোটেলে ডিউটি করেছেন।
বিল্লালের বড় বোন রুমা বেগম বলেন, ‘ছোট ভাই গ্রাম থেকে আমাকে ফোন করে জানায়, বিল্লালের দোকানে আগুন লেগেছে। তারপর আমি বিল্লালের মোবাইল বন্ধ পেয়ে এখানে চলে আসি। বিল্লালের স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে। তারা গ্রামের বাড়ি থাকে।’
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে বিল্লালের মরদেহ শনাক্ত করেছেন তার ছোট ভাই আইয়ুব আলী।
মোতালেবের গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার হিজলা থানার শংকরপাশা গ্রামে। তার বয়স ১৬ বছর। তার বাবার নাম মোস্তফা এবং মা মমতাজ বেগম। মোতালেব বরিশাল হোটেলের মেসিয়ার হিসেবে কাজ করত। তার পরিবারে বাবা-মা সহ আরও দুই ভাইবোন আছে। তিন ভাইবোনের মধ্যে মোতালেব দ্বিতীয়।
সকালে মোতালেবের সঙ্গে ফোনে কথা হয় মামা নিজাম দপ্তরীর। তিনি বলেন, ‘সকালে আমি খবর নেয়ার জন্য মোতালেবকে ফোন দিয়েছিলাম। তখন সে ডিউটি শেষ করে গোসল সেরে ঘুমাতে যাচ্ছিল। এরপর টিভিতে খবর দেখে এই ঘটনা জনতে পারি। ওর ফোন এখনও বন্ধ।’
সন্ধ্যায় মর্গে মোতালেবের লাশ শনাক্ত করেন মামা নিজাম দপ্তরী। তিনি বলেন, ‘মোতালেবের মাথা আর শরীরের পুরো চামড়া পুড়ে গেছে। কিন্তু চেহারা চেনা যায়।’
১৬ বছর বয়সী শরীফের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা থানার তিতচর গ্রামে। তার বাবার নাম মিজান আর মায়ের নাম ফাহিমা। শরীফের আত্মীয় আবুল কাশেম জানান, বরিশাল হোটেলে কোরবানি ঈদের পর থেকে শরীফ কাজ শুরু করে। শরীফ দৈনিক ২০০ টাকা মজুরিতে ধোয়া-মোছার কাজ করত। শরীফের বাবার মেরুদন্ডের সমস্যা থাকায় কাজ করতে পারেন না। তাই সংসারের খরচ চালাতে এক মাস আগে তিনি বরিশাল হোটেলে কাজ করতে পাঠান শরীফকে। বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে শরীফ।
রুবেলের বয়স ২৮ বছর। তার বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি থানার দক্ষিণ আকাল বরিশ গ্রামে। বাবার নাম সাত্তার হিলালু আর মায়ের নাম আনোয়ারা বেগম। তার স্ত্রী এবং সাড়ে তিন বছরের ছেলে সন্তান গ্রামের বাড়িতে থাকে। রুবেল গত দুই সপ্তাহ আগে বরিশাল হোটেলে মেসিয়ার হিসেবে কাজ নেন। তার মরদেহ শনাক্ত করেছেন বড় ভাই মোহম্মদ আলী। মোহম্মদ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রুবেলের সঙ্গে আমার আরেক ভাইয়ের বেলা পৌনে ১২টায় কথা হয়। টেলিফোনে সে জানায়, রাতে ডিউটি শেষে সে এখন ঘুমাতে যাবে। কথা শেষ করার আগেই রুবেল কোনো একটা সমস্যার জন্য ফোন রেখে দেয়। এরপরই আমরা আগুনের ঘটনা শুনি আর রুবেলের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।’
এদিকে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ছয় জনের ময়নাতদন্ত শেষ হবে মঙ্গলবার। পাশাপাশি তাদের পরিচয় শনাক্তে পরিবারের সদস্যদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করবে সিআইডি। যদি তাদের পরিচয় শনাক্ত নিয়ে কোনো দ্বিধা না থাকে তবে ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে৷
সোমবার সন্ধ্যায় ৬ জনের পরিবারই আলাদাভাবে মরদেহ শনাক্ত করতে পেরেছে। এক্ষেত্রে মরদেহ হস্তান্তরে কোনো জটিলতা তৈরি হবে কিনা জানতে চাইলে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার জাফর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে পরিবারের সদস্যরা মরদেহ চিনতে পেরেছেন। ময়নাতদন্তের পর আবারও আরেকবার শনাক্তের সুযোগ দেয়া হবে। যদি তখনও তারা নিশ্চিত থাকেন তাহলে মরদেহ মঙ্গলবার হস্তান্তর করা হবে। আর সিআইডি যেহেতু ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ এবং টেস্ট করবে তাই তারা যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে ডিএনএ টেস্টের পর মরদেহ হস্তান্তর করা হতে পারে।’
আরও পড়ুন:ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদের’ এক পরিবেশকের এক কোটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানায়, ‘আব্দুল খালেক নয়ন নগদের একজন পরিবেশক। তিনি উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্লাটে থাকেন। শনিবার সকালে তিনি তার চারজন এমপ্লয়িকে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে বাসার পাশেই পরিবেশক অফিসে পাঠাচ্ছিলেন। সাথে এক কোটি টাকার বেশি ছিল।’
‘তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল দুটি বারো নম্বর রোড ক্রস করে যখন তেরো নম্বর রোডে ঢুকছিল, তখন ওৎপেতে থাকা একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত তিন থেকে চারজন নেমে এসে টাকার ব্যাগ বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীদের ধাওয়া করে।’
পুলিশ আরও জানায়, এদের মধ্যে একজন আরোহী দৌড়ে পালিয়ে গেলেও তিনজনকে টাকার ব্যাগসহ তারা মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরবর্তীতে তারা উত্তরা সতেরো নম্বর সেক্টরে নগদ মাইক্রোবাস থেকে তাদের ফেলে দিয়ে টাকার ব্যাগ সহ পালিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে উত্তরা ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার মইদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ‘ঘটনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফোটেজ সংগ্রহ করেছেন। ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
ঈদ উপলক্ষে লম্বা ছুটিতে বেশ কিছুদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা হয়ে গেছে শহর ঢাকা। সড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ; স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও বন্ধ; রাস্তায় লোকজনও হাতেগোনা। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমে গেলেও রাজধানীর বাতাসের মানে খুব বেশি অবনতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল মাত্র ৬৬। আর দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আরও অবাক হওয়ার মতো। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিলেও ঢাকার অবস্থান আজ ৫৫তম।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ মাঝারি হলেও ‘ভালো’ থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
এই সময়ে ৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকার ৫২তম স্থানে ছিল স্পেনের বার্সেলোনা, ৫০তম স্থানে সুইজারল্যান্ডের বেয়ার্ন, ৬৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি, ৭০ ও ৭১ স্কোর নিয়ে ৪৪ ও ৪৩তম স্থানে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি, ৭৩ স্কোর নিয়ে ৩৮তম স্থানে কানাডার টরেন্টো, ৮০ স্কোর নিয়ে ২৭তম দূষিত শহর শিকাগো, ৯৯ স্কোর নিয়ে ১৫তম স্থানে ইতালির রোম এবং ১২৮ স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে মিলান।
তবে ১৬৮ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের দিল্লি। ১৬২, ১৫৬ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে এর পরের তিন দূষিত শহর যথাক্রমে ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের লাহোর ও সৌদি আরবের রিয়াদ।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফল পেতে ১৪ জুন থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন(ডিএসসিসি) এলাকায় দ্বিগুণহারে কীটনাশক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমে (ফগার মেশিন দ্বারা পরিচালিত) বর্তমানে ব্যবহৃত ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক প্রতিদিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠন ও জনবল ঘাটতি পূরণে উদ্যোগসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় মশক কর্মীদের সকাল ও বিকেলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাই, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং মশক কর্মী দ্বারা বাড়ির ভিতর, আঙিনা ও ছাদের জমানো পানিসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে অঞ্চল ভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া, ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ডিএসসিসি সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। মশক নিধনে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ ডেঙ্গু ও করোনা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সেলিম (৪৫), রফিক (৪০), সাদ্দাম (৩০), উজ্জ্বল (৩২) ও শামীম (২৫)।
গতকাল সোমবার (৯জুন) মোহাম্মদপুর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের মধ্যে রয়েছে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১জন, মাদক মামলায় ১জন, দূস্যতার মামলায় ১জন এবং অন্যান্য মামলায় ২জন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর পল্লবী থানার মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহত ওই যুবকের নাম রাকিবুল হাসান সানি (২৯)। ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সকাল সাতটার দিকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদক বিক্রির আধিপত্য বিস্তার ও দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রাতের আঁধারে হত্যাকারীরা কীভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে; তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, সানি একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গেল রমজান মাসেও একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র তার ওপর হামলা চালিয়েছিল।
ঘটনার পর থেকে মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং এলাকায় পুলিশ ও সিআইডি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য