রিমন কর্মকার নামে এক যাত্রী সকালে নিউজবাংলার ফেসবুক পেজে ক্ষোভ ঝাড়েন। তিনি লেখেন, ‘তরঙ্গ প্লাস আজকে ওয়েবিল কাটছে। কিন্তু কাল নিউজে দেখলাম কোনো চেকার থাকবে না।’
ওয়েবিলে বাস চলছে কি না, একজন গণমাধ্যমকর্মী ফেসবুকে এই প্রশ্ন রাখার পর ফাহিদ মোনায়েম নামে একজন কমেন্টে লেখেন, ‘রামপুরা আলিফ, রবরব, অছিম, রাজধানী, স্বাধীন, রমজান এরা ওয়েবিল ও চেক করছে। চেক ও চেকের আগে উঠলেই চেকের বিল দিতে হবে।’
হাসান ইমন লেখেন, ‘রামপুরা বনশ্রী, মেরাদিয়া, ত্রিমোহনী ব্রিজে চেকার দেখা গেছে, রাজধানী, অছিম, আলিফ পরিবহনে দেখা গেছে।’
অর্থাৎ রাজধানীতে নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হয় যে কৌশলে, সেই ওয়েবিল তুলে দেয়ার অঙ্গীকার করেও কথা রাখেননি বাসমালিকরা।
ওয়েবিলে নয়, কিলোমিটার হিসেবে ভাড়া কাটা হবে- বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মালিক সমিতি এমন ঘোষণা দেয়ার পরও বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বাস ভাড়ায় সেই নৈরাজ্য চলছেই।
বাসমালিকদের সমিতি ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত কার্যকরে কয়েক মাস সময় লাগবে। এমনকি এ নিয়ে ইতিবাচকভাবে লেখার অনুরোধও করেছেন তিনি।
তবে অন্তত ১৬টি বাস রুটে খোঁজ নিয়ে একটাতেও এনায়েত উল্লাহর অনুরোধের ইতিবাচক দিক খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সাভার থেকে যাত্রীবাড়ী রুটে চলা এমএম লাভলী ও লাব্বাইক পরিবহন, মোহাম্মদপুর থেকে বনশ্রী পর্যন্ত চলা স্বাধীন পরিবহন, ঘাটারচর থেকে উত্তরা রুটে চলা প্রজাপতি ও পরিস্থান পরিবহন, গাবতলী থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত চলা বসুমতি, মোহাম্মদপুর থেকে শাহবাগ হয়ে বনশ্রী পর্যন্ত চলা তরঙ্গ প্লাস, মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটি থেকে বনশ্রী ও মিরপুর-১ থেকে বনশ্রী রুটে চলা আলিফ পরিবহন, গাবতলী থেকে বাড্ডা লিংক রোড রুটে চলা রবরব পরিবহন, গাবতলী থেকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার রুটে চলা আছিম পরিবহন, গাবতলী থেকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার রুটের রাজধানী পরিবহন, মোহাম্মদপুর থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি হয়ে বনশ্রী রুটের রমজান পরিবহন, রায়েরবাগ থেকে গুলিস্তান রুটের শ্রাবণ পরিবহন, মিরপুর চিড়িয়াখানা থেকে কেরানীগঞ্জ রুটের দিশারী পরিবহনসহ অসংখ্য কোম্পানি এখনও ওয়েবিলে ভাড়া নিচ্ছে।
সাংবাদিক জেনে ওয়েবিলে ‘নাটক’
ওয়েবিলে বাড়তি ভাড়া কেন নিচ্ছে জানতে চাইলে এম এম লাভলী পরিবহনের ভাড়া কাটার দায়িত্বে থাকা মো. আনোয়ার বলেন, ‘ভাই আমি নতুন মানুষ। অল্প কয়েক দিন এই বাসে কাজ করতেছি। বুঝি নাই।’
রাজধানীর ইস্কাটন এলাকায় আনোয়ারের সঙ্গে কথোপকথন চলার সময় চেকার হিসেবে বাসে উঠে যাত্রী গুনতে শুরু করেন রিফাত হোসেন রাব্বি নামে একজন। কতজন ছাত্র আছেন, পুলিশ পাস আছে কি না, এসব প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে তিনি ওয়েবিলে সই করার পরই নিজের অবস্থান পাল্টে ফেলেন।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রশ্ন করতেই রাব্বির মুখে পুরো উল্টো বুলি। ওয়েবিলে যাত্রী তোলার দায় তিনি ভাড়া কাটার দায়িত্বে থাকা আনোয়ারকে দোষারোপ শুরু করেন।
তিনি বলেন, ‘তুমি কেন বেশি ভাড়া নিছ?’
আনোয়ার প্রথমে অস্বীকার করে বলেন, ‘নেই নাই।’ পরে প্রমাণ দেয়ার পর বলেন, ‘ভাই ভুল হয়ে গেছে।’
এরপর রাব্বী ওয়েবিলে যাত্রীসংখ্যা লিখে ওয়েবিলের উল্টো পাশের পৃষ্ঠায় ‘২০০ টাকা জরিমানা’ লিখে দেন।
এই ২০০ টাকা কে নেবে, আদৌ কেউ নেবে কি না, বা নিলে যাত্রীর লাভ কী, এমন অনেক প্রশ্নের জবাব না জেনেই সেখান থেকে ফিরতে হলো।
কয়েক মাস সময় লাগবে: এনায়েত উল্লাহ
গত নভেম্বরের মতোই এবারও ওয়েবিলে বাস না চালানোর ঘোষণা দিয়েও যাত্রীদের ঠকিয়ে যাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে বাসমালিক সমিতির এই নেতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদেরকে কাজটা করতে দেন না ভাই। আমরা তো শুরু করলাম মাত্র। আমাদেরকে করতে দেন। শুরুতে যদি নেগেটিভভাবে দেখেন তাহলে আমাদের কাজটা করতেও অসুবিধা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা কীভাবে মনে করেন এটা দুই-চার ১০ দিনে হয়ে যাবে? আমরা এটা নিয়ে কয়েক মাস কাজ করব। সব ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব।’
কীভাবে চেষ্টা করছেন?- এমন প্রশ্নে এনায়েতউল্লাহ বলেন, ‘এদেরকে (বাস কোম্পানি) সিস্টেমে আনার জন্য আমরা সব সময় চেষ্টা করতেছি। গতকালও আমি বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে বসেছি। আমাদের ৯টা দল মাঠে কাজ করতেছে। একেক দলে মিনিমাম পাঁচজন কাজ করছে।’
গত নভেম্বরেও এনায়েত উল্লাহর বাস মালিক সমিতি ঠিক এই কাজগুলো করেছিল এবং পরে এনায়েত নিজে বলেছেন, ওয়েবিল ছাড়া সম্ভব নয়।
ওয়েবিলে চলবে না, ঘোষণা নতুন নয়
ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর পর গত নভেম্বরে কিলোমিটারে বাস ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সা নির্ধারণ করার পর বিআরটিএর ঘোষণা ছিল, ওয়েবিল অবৈধ। সেটি থাকবে না। এমনকি আইন না মানলে বাস কোম্পানির রুট পারমিট বাতিলের হুমকিও দেয়া হয়।
সে সময় খন্দকার এনায়েত উল্লাহ সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দেন, ওয়েবিলে বাস চলবে না। ভাড়া কাটা হবে কিলোমিটার হিসেবে।
এবার লিটারে তেলের দাম আরও ৩৪ টাকা বাড়ানোর পরও বিআরটিএ থেকে একই কথা বলা হলেও কার্যত সড়কে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই তাদের। আর ইচ্ছাও আছে কি না, সেই প্রশ্ন ওঠে এ কারণে যে সংস্থাটির চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেছেন, যদি ওয়েবিলে চলে এবং তাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা অভিযোগ পায়, তাহলে তারা ব্যবস্থা নেবেন। অর্থাৎ বিআরটিএ চেয়ারম্যান জানেন না, রাজধানীতে ওয়েবিলে কোনো বাস চলে কি না।
তিনি বলেন, ‘তারা ওয়েবিল বন্ধ করে পজ মেশিনের মাধ্যমে ভাড়া কাটুক। ঢাকা নগর পরিবহন, বিআরটিসি এই পজ মেশিনের মাধ্যমে ভাড়া কাটে। বাসে একটা করে পজ মেশিন দিয়ে দিলেই তো দূরত্ব অনুযায়ী ভাড়া কাটা সহজ হয়।’
‘এসব ঘোষণা লোক দেখানো’
যাত্রী অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী মনে করেন ওয়েবিল নিয়ে বাসমালিকদের ঘোষণা লোক দেখানো।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ওয়েবিল বন্ধ করতে এত মাস লাগবে কেন? ওয়েবিল বন্ধের জন্য এনায়েত উল্লাহর ঘোষণা এই নিয়ে চতুর্থ দফা। আসলে তারা কী করতে চায় এটাই বড় প্রশ্ন।’
কিলোমিটার হিসেবে নয়, চলছে ইচ্ছামতো ভাড়া আদায়
কিলোমিটারে আড়াই টাকা, সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা- এই নিয়মের থোরাই কেয়ার করছে নগরে চলা বাসগুলো। কেউ সর্বনিম্ন ভাড়া আদায় করছে ১৫ টাকা, কেউবা ২০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি। আবার চার কিলোমিটারের ভাড়া ২০ বা ২৫ টাকা- এভাবেও আদায় চলছে।
চার কিলোমিটারের জন্য ভাড়া হওয়ার কথা ১০ টাকা। কিন্তু বিভিন্ন কোম্পানির বাসে এই পথে ২৫ টাকা, কেউ ২০ টাকা, কেউ এমনকি ৩০ টাকাও আদায় করছে।
বেসরকারি বাস কোম্পানির পাশাপাশি হাতিরঝিলে সরকারি সংস্থা রাজউক পরিচালিত চক্রাকার বাসও এই অনিয়মের বাইরে নয়। তিন কিলোমিটারে ২০ টাকা, চার কিলোমিটারে ২৫ টাকা আদায় চলছে সেখানে, অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভাড়া হওয়ার কথা ১০ টাকা।
আরও পড়ুন:আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে।
অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মুঃ রইচ উদ্দিন খান ও মোঃ তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব পঙ্কজ বড়ুয়া।
কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র: বাসস
গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পদ্মা সেতুতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাশলেস, টোল কালেক্টর ব্যতীত ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের টোল পরিশোধ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় এসেছে।
বর্তমানে বিকাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের অ্যাপ এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর টোল পরিশোধ করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা বিকাশ অ্যাপে গিয়ে “টোল” অপশনের অধীনে “মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করুন” এ প্রবেশ করে গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ ৪ (চার) ডিজিট প্রদান করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। সফল রেজিস্ট্রেশনের পর ফিরতি এসএমএসে একটি Ekpass ID প্রেরণ করা হবে।
এই Ekpass ID ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাপের “Pay Bill” অপশনের “D-Toll Top-Up” সেবার মাধ্যমে রিচার্জ করতে হবে। এরপর পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজার নিকটস্থ রেজিস্ট্রেশন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত RFID ট্যাগ প্রথমবারের মতো যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে, যানবাহন কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে ETC লেন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবে।
১৮ অক্টোবর সেতু বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ পদ্মা সেতুর ইটিসি বুথ পরিদর্শন করেন এবং ইটিসি সেবা ব্যবহার করে পদ্মা সেতু পারাপার করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ETC সিস্টেমের লাইভ পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই সেবার পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ETC সিস্টেমের মাধ্যমে মোট ১,৮১৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং মোট ৩৪,৯১,৭০০ টাকা টোল আদায় সম্পন্ন হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মহোদয়ের বিশেষ নির্দেশনা ও দিকনির্দেশনায় পদ্মা সেতুতে এই ETC সিস্টেম বাস্তবায়িত হয়েছে। এটি দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা সময়, জ্বালানি ও মানবসম্পদের অপচয় হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ এই সেবার আওতায় যুক্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর a2i (এটুআই) কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং নতুন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে সংযুক্তির কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই টোল কালেক্টর ব্যতীত নন স্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে পদ্মা সেতু ব্যবহারকারীরা দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছভাবে টোল পরিশোধ করতে পারবেন—যা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৫ আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহিদ ৫৮ টি পরিবার এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহিদ ১৯টি পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবার প্রতি ১০ লক্ষ টাকা করে, মোট ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, "শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আজকের এই স্বীকৃতি তারই প্রমাণ।" শহীদ পরিবারদেরকে স্বীকৃতি দিতে পেরে সরকার গর্বিত উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন ইতিহাস থেকে যেনো কেউ ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরের শহীদদের নাম মুছতে না পারে, এজন্য শাপলা চত্বরেই খোদাই করে লেখা হবে শহীদদের নাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন,"শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহিদদের আর্থিক সহায়তা প্রদান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ।" এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মোদি বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, "স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এই মহতী উদ্যোগে সারা বাংলার আলেম সমাজ সম্মানিত হয়েছে। "
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান জনাব মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি জনাব নুরুল হক নুর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঐক্য ও সংস্কারের পথে বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
তিনি আরও বলেন, এটি ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার ফেসবুক পোস্টে মিলার লেখেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। এই দলিল মৌলিক সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গড়ে ওঠা ব্যাপক ঐকমত্যের প্রতিফলন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ২০২৬ সালের নির্বাচনের পথে দেশটি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তারই প্রমাণ।
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ মোট ২৫টি রাজনৈতিক দল যোগ দেয়।
অনুষ্ঠানে মিলারের উপস্থিতি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও শাসনব্যবস্থা সংস্কারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগীতা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত বহন করে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের পক্ষে তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
এ লক্ষ্যে ইইউ কারিগরি সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রস্তাবও দিয়েছে। এসব উদ্যোগ গণতান্ত্রিক চর্চা ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি ইইউর প্রতিশ্রুতির অংশ। সূত্র: বাসস
ইতালির রোমে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব খাদ্য ফোরাম ২০২৫-এ যোগ দিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে আরও রয়েছেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান ও অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি উইং) ড. মো. মাহমুদুর রহমান।
উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ফোরামে দেশের কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সদস্য দেশসমূহের সাথে বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহণ করবে। সফরকালে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা ইতালির ইন্টেরিয়র মিনিস্টার এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতালির রোমস্থ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য এ ফোরাম ১০ অক্টোবর শুরু হয়ে চলবে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। সূত্র: বাসস
মন্তব্য