ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বেস স্থাপনের অনুমতি পাচ্ছে না ফ্লাইটের অপেক্ষায় থাকা বেসরকারি এয়ারলাইনস এয়ার অ্যাস্ট্রা। বিকল্প হিসেবে সিলেট বা চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করার পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। এ নিয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতিও শুরু করেছে এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় এই মুহূর্তে এই বিমানবন্দরে নতুন করে কোনো এয়ারলাইনসকে জায়গা দেয়ার সুযোগ নেই। টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ হলে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে।
এদিকে এয়ার অ্যাস্ট্রা বলছে, আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে তাদের প্রথম উড়োজাহাজটি দেশে পৌঁছাতে পারে। এটিআর সেভেনটি টু মডেলের এই উড়োজাহাজটি বেবিচকের এয়ারওর্দিনেস সার্টিফিকেট (এওসি) পাওয়ার পর এটি দিয়েই যাত্রা শুরু করবে এয়ারলাইনসটি।
এয়ার অ্যাস্ট্রার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের প্রথম উড়োজাহাজটি যুক্তরাজ্যে পেইন্টিংয়ের কাজ শেষে বুলগেরিয়ায় এসেছে। আমরা সেখান থেকেই উড়োজাহাজটি ডেলিভারি নেব। বুলগেরিয়া থেকে আমরা আশা করছি সেপ্টেম্বরের প্রথমার্থের কোনো এক সময়ে এটি ঢাকায় এসে পৌঁছাবে। এরপর এটি এয়ারওর্দিনেস সার্টিফিকেট (এওসি) পাবে। এরপর থেকেই আমরা অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে ফ্লাইট শুরু করব।
‘বেবিচক আমাদের বলেছে, এই মুহূর্তে শাহজালালে ওভারনাইট পার্কিংয়ের সুযোগ নেই। আমাদের অন্য কোনো বিমানবন্দরে রাতে পার্কিং করতে বলেছে। আমরা সে অনুযায়ী সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে রাতে পার্কিংয়ের সব ব্যবস্থা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অপারেশন শুরুর পর সকালে সিলেট বা চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট ঢাকায় নিয়ে আসব এবং সারাদিন এখান থেকে অপারেট করে রাতে আবার সিলেট বা চট্টগ্রামে ফ্লাইট নিয়ে গিয়ে সেখানে রাত্রিকালীন পার্কিং করব।’
এয়ার অ্যাস্ট্রার যাত্রা শুরু করলে দেশে ফ্লাইট পরিচালনায় থাকা বেসরকারি এয়ারলাইনসের সংখ্যা হবে তিন। এর ফলে এভিয়েশন খাতে অপারেটরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বেবিচকের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো এয়ারলাইনস ফ্লাইট শুরুর পর প্রথম এক বছর আবশ্যিকভাবে তাদের অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক বছর পর আন্তর্জাতিক গন্তব্যে উড়ালের অনুমতি চাইতে পারে এয়ারলাইনস।
গত ২৫ বছরে দেশে ১০টি বেসরকারি এয়ারলাইনস যাত্রা শুরু করলেও এখন টিকে আছে মাত্র দুটি। এ সময়ের মধ্যে একে একে পাখা গুটিয়েছে অ্যারো বেঙ্গল, এয়ার পারাবত, রয়্যাল বেঙ্গল, এয়ার বাংলাদেশ, জিএমজি এয়ারলাইনস, বেস্ট এয়ার, ইউনাইটেড এয়ার ও রিজেন্ট এয়ার।
সর্বশেষ করোনার মধ্যে গত বছরের মার্চ থেকে ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে আরেকটি এয়ারলাইনস রিজেন্ট এয়ার। কয়েক দফা চালুর কথা বললেও আর ফ্লাইটে ফেরেনি এয়ারলাইনসটি। বন্ধ হয়ে যাওয়া এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে জিএমজি, রিজেন্ট ও ইউনাইটেড আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও চালাত।
দেশে বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ছাড়া ফ্লাইটে রয়েছে বেসরকারি এয়ারলাইনস ইউএস বাংলা ও নভোএয়ার।
বেবিচক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘নতুন দুটি এয়ারলাইনসকে ঢাকার বাইরে থেকে অপারেশন শুরু করতে বলা হয়েছে। ঢাকায় আমাদের স্থান খুব লিমিটেড। এজন্য আমরা বলে দিয়েছি যদি চালু করতে হয় তাহলে ঢাকার বাইরে থেকে আপনারা অপারেশন শুরু করেন। তারা সেভাবেই তাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
‘থার্ড টার্মিনাল হওয়ার পর নতুন পার্কিং হবে, তখন তারা ঢাকা থেকে অপারেট করতে পারবে। এখনও প্রক্রিয়া চলছে।’
শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর। সে সময় এর নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির নির্মাণ শুরু হয়। বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রাক্কলন অনুযায়ী ২০২৩ সালের জুনের আগেই চালু করা যাবে এই টার্মিনাল।
এ হিসাবে এয়ার অ্যাস্ট্রা যদি ঢাকায় বেস স্থাপন করে ফ্লাইট পরিচালনা করতে চায় তাদের অপেক্ষা করতে হবে অন্তত ১০ মাস।
আরও পড়ুন:রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আগামী বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
বাংলাদেশের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রাখাইনের সঙ্গে শেয়ার করছে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কোনো ধরনের কৌশলগত পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা বা প্রস্তুতি রয়েছে কিনা?- এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘পুরো পরিস্থিতি আমরা খুবই গভীরভাবে মনিটর করছি। সার্বিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রধান উপদেষ্টা উচ্চপদস্থ একজন প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি গভীরভাবে এটা মনিটর করবেন। যারা যারা অংশীজন আছেন তাদের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আগামী বছর আমাদের একটা বড় কাজ হবে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করা। এর ভেন্যু ও অন্যান্য বিষয় মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ঠিক করে ফেলব। আশা করছি, এই সম্মেলনটা হবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে।’
বিশ্বের সব দেশ এতে অংশ নেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীনসহ রোহিঙ্গা ইস্যুতে যারা খুবই আগ্রহী তারা সবাই থাকবে।’
জাতিসংঘের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অনেকবার কথা হয়েছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশগ্রহণের সময় এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, চলতি বছরের ৫ আগস্ট থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্পর্কিত ঘটনায় মোট ৮৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ, নরসিংদী, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক হামলার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওইসব জায়গায় নতুন কিছু ঘটনা ঘটলে গ্রেপ্তার ও মামলার সংখ্যা বাড়বে। এসব মামলার বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
আরও পড়ুন:পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. ফজলুল কাদের।
পিকেএসএফ-এর ১২তম ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মঙ্গলবার তাকে আগামী তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেয় পিকেএসএফ পরিচালনা পর্ষদ।
মো. ফজলুল কাদের ১৯৯০ সালের ১ অক্টোবর ম্যানেজমেন্ট এক্সিকিউটিভ হিসেবে পিকেএসএফ-এ তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ২০২১ সালের ৮ আগস্ট পিকেএসএফ-এর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। গত ২২ আগস্ট থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় পরামর্শক হিসেবে তিনি জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, সৌদি আরব, বাহরাইন, জর্ডান ও মরক্কোয় কাজ করেছেন।
মো. ফজলুল কাদের ১৯৭৯ সালে তৎকালীন মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসএসি ও ১৯৮১ সালে মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে এইচএসএসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং ১৯৮৮ সালে আইবিএ-তে এমবিএ ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
ফজলুল কাদের যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট, থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, টেমেনস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পেশাগত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছে। জাতিসংঘের এই সংস্থা বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার জোরদার ও সুরক্ষার লক্ষ্যে কাজ করে।
মঙ্গলবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক বার্তায় বলা হয়েছে, সোমবার বিকেলে মানবাধিকার কাউন্সিলের সাংগঠনিক অধিবেশনে ২০২৫ সালের কর্মকাণ্ড নির্ধারণী বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেনেভায় জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানবাধিকার কাউন্সিলের ব্যুরোতে কাজ করবেন।
মানবাধিকার কাউন্সিলের কার্যালয়ে একজন প্রেসিডেন্ট এবং চারজন ভাইস প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘের পাঁচটি আঞ্চলিক গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করেন।
ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া ২০২৪ সালের অক্টোবরে শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপের (এপিজি) প্রতিনিধিত্বকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংস্থায় কাজ করার সময় এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল।
এপিজি সর্বসম্মতিক্রমে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য বাংলাদেশের প্রার্থিতা সমর্থন করে এবং কাউন্সিলের বৃহত্তর সদস্যপদ বিবেচনার জন্য মনোনয়ন দেয়।
অবশেষে প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সমাপ্ত হয়, যখন বাংলাদেশ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য কাউন্সিল সদস্যদের সর্বসম্মত সমর্থন অর্জন করে।
২০০৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মানবাধিকার কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের এই মর্যাদাপূর্ণ মানবাধিকার সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ নির্বাচন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসের বিচক্ষণ নেতৃত্বের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ও বিশ্বাস এবং বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা ও ক্রমবর্ধমান প্রভাবের স্বীকৃতির আরেকটি উদাহরণ।
জ্ঞানের নানা শাখায় অবদান বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ব্যক্তির তালিকা করেছে প্রভাবশালী বিজ্ঞান বিষয়ক ব্রিটিশ সাময়িকী ‘নেচার’। ২০২৪ সালের এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সাময়িকীটি সোমবার ‘দ্য রেভ্যুলিউশনারি ইকোনমিস্ট হু বিকাম দ্য আনলাইকলি লিডারস অফ বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জ্ঞান-বিজ্ঞানে অবদান রাখা তালিকাভুক্ত ১০ ব্যক্তির তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ বিক্ষোভের পর ৫ আগস্ট বাংলাদেশের স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর ছাত্রনেতারা শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশের নেতৃত্ব গ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। নেতৃত্বের কাজটি ড. ইউনূসের জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার ছয় দশকের কর্মজীবনে দারিদ্র্য বিমোচনে লড়াই করার জন্য ধারণার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার কাজের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সমস্যা নির্ধারণ করে তা সমাধানের জন্য গবেষণা করা।
ড. ইউনূসের সঙ্গে ৩০ বছর ধরে কাজ করা অ্যালেক্স কাউন্টস বলেছেন, ‘তার বয়স আশির কোটায়। তবে তার শারীরিক ও মানসিক শক্তি এখনও অটুট। তিনি একজন সহানুভূতিশীল মানুষ এবং তার যোগাযোগ পদ্ধতিও দুর্দান্ত।
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ড. ইউনূস। এরপর পড়াশুনার জন্য ১৯৬০-এর দশকে পাড়ি দেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে তিনি পরিবেশগত অর্থনীতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নিকোলাস জর্জেসকু-রোগেনের অধীনে পড়াশোনা করেন। তার অন্যতম লক্ষ্য ছিল অর্থনীতি ও পরিবেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝা।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশে ফিরে আসেন ইউনূস। দেশ গঠনে নিজের ভূমিকার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন তিনি। ক্ষুদ্রঋণ বা মাইক্রোক্রেডিটের জন্য পরিচিত পেয়েছেন ড. ইউনূস। ওই ক্ষুদ্রঋণের পরিমাণ ১০০ ডলার বা তার চেয়ে কম। তিনি দেখিয়েছেন ক্ষুদ্রঋণ সমাজের প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য বদলে কেমন ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির অধ্যাপক থাকাকালীন ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ শুরু করেন ড. ইউনূস। তিনি একটি মডেল তৈরি করেন যেখানে ব্যবসার মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে খুব অল্প পরিমাণ ঋণ দেয়া হয়।
এর ধারাবাহিকতায় ১৯৮৩ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন গ্রামীণ ব্যাংক। এর মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে এই ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার প্রসার ঘটে। বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয়েছে তার এই উদ্ভাবন। তবে এর অনেক সমালোচকও রয়েছে।
তবে গ্রামীণ ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা এবং ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশের সংস্কারে নেতৃত্ব দেয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ড. ইউনূস কি ছাত্রদের সংস্কারের দাবি পূরণে সক্ষম হবেন? বিশেষ করে দুর্নীতির অবসান, নাগরিকদের অধিকার, কর্মসংস্থান ও শিক্ষার সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি কি সফল হবেন?
কার্যত সবাই এখন এ প্রশ্নটি করছে। এসবের পাশাপাশি ড. ইউনূস গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারবেন কি না সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্কতা জারি করেছে।
মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সতর্কতা জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে যে, অনেক ভিনদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন এবং অবৈধভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।’
যেসব বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন বা কর্মরত আছেন, তাদের অবিলম্বে বাংলাদেশে অবস্থানের বা কর্মরত থাকার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বৈধতা অর্জনের জন্য বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর/প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় অবৈধভাবে অবস্থানকারী এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সাবেক শিক্ষা সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সোলেমান খানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে শিক্ষা সচিব ছিলেন সোলেমান খান। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর তাকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে বদলি করা হয়। পরিকল্পনা কমিশন সদস্যের পদটি সচিব পদমর্যাদার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সোলেমান খানের চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং সরকার জনস্বার্থে তাকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেয়া প্রয়োজন বলে বিবেচনা করে। তাই সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৫ ধারায় দেয়া ক্ষমতাবলে তাকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেয়া হল। তিনি বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধা পাবেন।
সরকারি চাকরি আইনের ৪৫ ধারা অনুযায়ী সরকার যে কাউকে কারণ দর্শানো ছাড়াই চাকরি থেকে অবসরে পাঠাতে পারে। তবে তার আগে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিতে হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার এর আগে আরও কয়েকজন সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ১১তম দ্বিপাক্ষিক সামরিক সংলাপ শুরু হচ্ছে আগামীকাল বুধবার। দু’দিনব্যাপী এর সামরিক সংলাপ যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইতে অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, এই সামরিক সংলাপে বাংলাদেশ থেকে একটি সামরিক প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের অপারেশনস ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আলীমুল আমীন।
সামরিক সংলাপ দুই দেশের পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এই সংলাপে উভয় দেশের সামরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
উল্লিখিত সংলাপে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি, দুর্যোগ মোকাবিলা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন, যৌথ অনুশীলন ও মহড়া, কর্মশালা ইত্যাদি ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয় আলোচিত হবে।
প্রতিনিধি দলে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য