জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর কমিশন ও ট্যাংকলরির ভাড়া না বাড়ানোর প্রতিবাদে ডাকা ধর্মঘট স্থগিত করেছে খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি ও জ্বালানি মালিক সমিতি।
রোববার সকাল থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘট বিকেলে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমিতির নেতারা।
খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদারের সঙ্গে সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন সমিতির খুলনা বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক আমাদের ডেকেছিলেন। দীর্ঘক্ষণের সভায় তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তিনি আমাদের বিষয় নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিগগিরই আলোচনা করতে চেয়েছেন।
‘তাই আমরা আপাতত ধর্মঘট স্থগিত করেছি। কাল সকাল থেকে আবারও তেল পরিবহন শুরু হবে। তবে শিগগিরই দাবিগুলো না মেনে নিলে আমরা আবার ধর্মঘট ডাকব।’
ধর্মঘটের কারণে রোববার সকাল ৮টা থেকে খুলনার পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ ছিল। তেল পরিবহন বন্ধ ছিল খুলনার ১০ জেলা ও বৃহত্তর ফরিদপুরের চার জেলায়।
তবে পাম্প থেকে তেল বিক্রি বন্ধ হয়নি।
সমিতির মহাসচিব ফরহাদ হোসেন ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, ‘তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু আমাদের ট্যাংকলরির ভাড়া বাড়ানো হয়নি। সরকার ভাড়া নির্ধারণ না করে দিলে আমরা ভাড়া বাড়াতে পারি না। এক ট্যাংকলরি তেল নিয়ে নির্ধারিত পাম্পে যেতে আমাদের আগের চেয়ে খরচ বেড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগের তুলনায় তেলের দাম বাড়ানো হলেও পাম্প মালিকদের কমিশন বাড়ানো হয়নি। এসব দাবিতে আমরা আজ থেকে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে পরে আলোচনা করে নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলেছে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি টাকা।
দিনভর গণনা শেষে কিশোরগঞ্জের আলোচিত মসজিদটিতে এ পরিমাণ অর্থ পাওয়ার কথা শনিবার রাত দুইটার দিকে জানান জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
তিনি আরও জানান, শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলার পর টাকাগুলো প্রথমে বস্তুায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢালা হয়। পরে দিনভর গণনা শেষে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।
জেলা শহরের ঐতিহাসিক মসজিদের ৯টি দানবাক্স প্রতি তিন মাস পরপর খোলা হয়। রমজানের কারণে এবার বাক্সগুলো খোলা হয়েছে চার মাস ১০ দিন পর।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে ডিসি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে শনিবার সকালে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। ৯টি দানবাক্স খুলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।
দানবাক্সগুলো খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেন উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে আসেন দূরদুরান্ত থেকে।
টাকা গণনা কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়াও মাদ্রাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৭০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নেন।
এর আগে ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর তিন মাস ২০ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ২৩টি বস্তায় ছয় কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া যায়।
ঐতিহাসিক এ মসজিদের দানবাক্সে একসঙ্গে এত টাকা পাওয়াটা তখন ছিল রেকর্ড। এবার সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
মসজিদে নগদ টাকা ছাড়াও নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ। দানবাক্সে টাকার সঙ্গে থাকে বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান অলংকারও।
পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ডিসি। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পৌরসভার মেয়র মো. পারভেজ মিয়া।
মেয়র পারভেজ মিয়া জানান, পাগলা মসজিদের দানের টাকায় আন্তর্জাতিক মানের একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। কমপ্লেক্সটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম স্থাপত্য হিসেবে বানানো হবে। এ জন্য আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ কোটি টাকা। সেখানে একসঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ২০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর নামাজের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।
মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূইয়া জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে মসজিদে মুসল্লিদের চলাচল এবং নারীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ থাকলেও দান অব্যাহত ছিল।
তিনি আরও জানান, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়া হয়। অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তাও করা হয়। তা ছাড়া সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদেরও এ দানের টাকা থেকে সহায়তা করা হয়েছে।
মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করে থাকেন এ মসজিদে। যারা দান করতে আসেন, তারা বলে থাকেন, এখানে দান করার পর তাদের আশা পূরণ হয়েছে। তাই এখানে দান করেন তারা।
জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দার তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। বর্তমানে সেটি সম্প্রসারিত হয়ে ৩ একর ৮৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:রং আর তুলির আঁচড়ে বর্ণিল হয়েছে কিশোরগঞ্জের হাওর। অলওয়েদার সড়কের ১৪ কিলোমিটারজুড়ে আঁকা হয়েছে আলপনা।
এর মধ্য দিয়ে অলওয়েদার সড়কের পর আরেকটি নতুন রেকর্ড হলো এ জনপদে।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে হাওরের আরেক উপজেলা অষ্টগ্রামের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ‘আলপনায় বৈশাখ ১৪৩১’ নামের ১৪ কিলোমিটারব্যাপী আলপনা আঁকা হয়েছে।
আয়োজকদের দাবি, এটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ আলপনা। একে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান দেয়ার প্রয়াস চালানো হবে।
মিঠামইন জিরো পয়েন্টে রোববার সকাল ১০টার দিকে তুলির শেষ আঁচড় দিয়ে আলপনা আঁকার সমাপ্তি ঘোষণা করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
ওই সময় হাওরের উন্নয়নের রূপকার হিসেবে পরিচিত কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান, বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাওরে যেভাবে পর্যটকরা আসেন, গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে যখন ১৪ কিলোমিটার আলপনা স্থান করে নিতে পারবে, তখন আন্তর্জাতিকভাবে স্থানটি আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হবে। এই বিশ্বরেকর্ড গড়ার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি নববর্ষ উদযাপন ১ বৈশাখকে তুলে ধরতে পারছি।
‘যেভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রা এখন ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ডকুমেন্টে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, একই রকমভাবে আজ গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকেও নতুন একটি রেকর্ড করতে যাচ্ছি ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আলপনা অংকনের মধ্য দিয়ে। এ অবস্থায় বিদেশি পর্যটকরাও হাওরে আসার জন্য আগ্রহী হবে।’
সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, ‘একসময় হাওর ছিল অবহেলিত। মানুষকে দাওয়াত দিয়েও হাওরে আনা যেত না। আর এখন সারা বাংলাদেশ থেকেই মানুষ হাওরের উন্নয়ন দেখতে আসে।’
আলপনা উদ্বোধন শেষে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের এমপি রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিককে নিয়ে মোটরসাইকেলে পুরো সড়ক ঘুরে বেড়ান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যময় সব উৎসব উদযাপনে বাংলালিংক গভীরভাবে দায়বদ্ধ। দেশের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসব পহেলা বৈশাখ এ সকল উৎসবের মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
‘বাংলালিংকের এই আয়োজন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও দেশীয় উৎসবকে তুলে ধরার একটি প্রয়াস।’
বার্জার ও এশিয়াটিকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ১৪ কিলোমিটারজুড়ে আলপনা আঁকার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলালিংক। ৬৫০ জন শিল্পী অংকনে অংশ নেন।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের হাওরের মিঠামইন উপজেলার অলওয়েদার সড়কের জিরো পয়েন্টে এই আলপনা অংকনকাজের উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এমপি আসাদুজ্জামান নূর।
আরও পড়ুন:রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালের পন্টুনে দুই লঞ্চের মধ্যে ধাক্কা লেগে রশি ছিঁড়ে পাঁচ যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় হওয়ায় মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
পাঁচজনের মধ্যে তিনজন এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের মাস্টার ও ম্যানেজার। বাকি দুজন এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের মাস্টার।
ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা চৌধুরী হিমেল শুক্রবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এ আদেশ দেন।
ওই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শুক্রবার সদরঘাট নৌ পুলিশের সদস্যরা আসামিদের আদালতে হাজির করেন। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাত দিনের পুলিশি রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সদরঘাট নৌ থানার উপপরিদর্শক নকীব অয়জুল হক। আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়।
শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেক আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
রিমান্ড পাওয়া আসামিরা হলেন এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার (চালক) আবদুর রউফ হাওলাদার (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার (চালক) সেলিম হাওলাদার (৫৪), ম্যানেজার ফারুক খান (৭০), এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার (চালক) মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার (চালক) মনিরুজ্জামান (২৮)।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার এজহারে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ২টা ৫৫ মিনিটে সদরঘাট টার্মিনালের ১১ নম্বর পল্টুনে এমভি তাসরিফ-৪ নোঙর করা অবস্থায় এমভি ফারহান-৬-এর চালক বেপরোয়া গতিতে লঞ্চ চালিয়ে ১১ নম্বর পন্টুনে ঢোকার সময় তাসরিফ লঞ্চকে ধাক্কা দেয়। এতে তাসরিফ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়। সেটি দ্রুত গতিতে এসে পন্টুনে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের আঘাত করলে তারা নদীতে পড়ে যায়। এতে এক পরিবারের তিনজনসহ পাঁচ যাত্রীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ফারহান এবং তাসরিফ লঞ্চের দায়িত্ব অবহেলা আছে।
লঞ্চ ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারিয়েছেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার মাটিচোরা গ্রামের প্রয়াত আবদুল মালেকের ছেলে বিল্লাল (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬), তাদের মেয়ে সাইমা (৩)। প্রাণ হারানো বাকি দুজন হলেন পটুয়াখালী সদরের জয়নাল আবেদিনের ছেলে রিপন হাওলাদার (৩৮) এবং ঠাকুরগাঁও সদরের নিশ্চিতপুর এলাকার আব্দুল্লাহ কাফীর ছেলে রবিউল (১৯)।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ।
কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে মৃত প্রত্যেকের নমিনির কাছে দাফন-কাফন বাবদ ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালের পন্টুনে বৃহস্পতিবার লঞ্চ দুর্ঘটনায় দুই লঞ্চের মাস্টার ও ম্যানেজারসহ পাঁচজনকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
আটক পাঁচজন হলেন এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের দুই মাস্টার ও একজন ম্যানেজার এবং এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের দুই মাস্টার।
রাতে তাদের আটক করা হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে জানান নৌ পুলিশের ঢাকা জোনের পুলিশ সুপার (এসপি) গৌতম কুমার বিশ্বাস।
এসপি গৌতম জানান, আটককৃতদের ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ দুর্ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আটক পাঁচজন হলেন এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মো. মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. মনিরুজ্জামান (২৪) এবং এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মো. আবদুর রউফ হাওলাদার (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. সেলিম হাওলাদার (৫৪) ও ম্যানেজার মো. ফারুক খাঁন (৭৬)।
যেভাবে দুর্ঘটনা
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদুল ফিতরের দিন বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কোতোয়ালি থানাধীন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের ১১ নম্বর পন্টুনের সামনে ঢাকা থেকে ভোলাগামী এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি টিপু নামে দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে পন্টুনে নোঙর করা ছিল। লঞ্চ দুটির মাঝখান দিয়ে ফারহান নামের আরেকটি লঞ্চ প্রবেশের চেষ্টা চালায়। ওই সময় এমভি ফারহান-৬ লঞ্চটি এমভি টিপু-১৩কে সজোরে ধাক্কা দেয়। পরবর্তী সময়ে এমভি টিপু-১৩ ধাক্কা দেয় এমভি তাসরিফ-৪-কে। ওই সময় এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়।
তারা আরও জানান, ছিঁড়ে যাওয়া সেই দড়িটিই পন্টুনের আশপাশে থাকা পাঁচজনকে সজোরে আঘাত করে। সেখানে গুরুতর আহত অবস্থায় মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে কর্মরত প্রধান ডোম মোহাম্মদ মিলন শেখ জানান, পাঁচজনেরই মৃত্যু হয়েছে মাথায় আঘাত লেগে।
এদিকে লঞ্চের দড়ির আঘাতে পাঁচজনের প্রাণ যাওয়ার পর ধুয়েমুছে স্বাভাবিক করা হয়েছে সদরঘাটের পন্টুন। এ দুর্ঘটনায় সদরঘাট সাময়িক থমকে গেলেও দেড় ঘণ্টা পরই শুরু হয় স্বাভাবিক কার্যক্রম। দুর্ঘটনায় জড়িত এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের যাত্রীদের এমভি কর্ণফুলী-১২ লঞ্চে তুলে দেয়া হয়েছে।
তদন্ত কমিটি
এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সংস্থাটির ক্রয় ও সংরক্ষণ পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম কমিটির আহ্বায়ক, নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. আজগর আলী এবং বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মো. কবীর হোসেন কমিটির সদস্য।
কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে প্রাণ হারানো প্রত্যেক ব্যক্তির স্বজনের কাছে দাফন-কাফন বাবদ ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় বৃহস্পতিবার লঞ্চ দুর্ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের পাশাপাশি তাৎক্ষণিকভাবে দুটি লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ঈদুল ফিতরের দিন বিকেলে সদরঘাট টার্মিনালের পন্টুনে বাঁধা দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে আরেকটি লঞ্চ প্রবেশের সময় একটি লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচ যাত্রীর প্রাণহানি হয়।
এ ঘটনায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজন এক পরিবারের সদস্য।
মর্মান্তিক এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তদন্ত কমিটি
লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রাণহানির বিষয়টি তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে বিআইডব্লিউটিএ।
বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (ক্রয় ও সংরক্ষণ) রফিকুল ইসলাম কমিটির আহ্বায়ক। এ ছাড়া সংস্থাটির নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. আজগর আলী এবং বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মো. কবীর হোসেনকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে।
ঢাকার সদরঘাট নদীবন্দরের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জানান, এমভি ফারহান-৬ লঞ্চটি জোরে পার্কিং করতে যাওয়ায় এমভি তাসরিফ-৪-এর রশি ছিঁড়ে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ দুর্ঘটনার পর এমভি ফারহান-৬ ও এমভি টিপুর যাত্রা বাতিল করেছে বিআইডব্লিউটিএ।
রুট পারমিট বাতিল
বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘লঞ্চের রশি ছিঁড়ে ঘটা এ দুর্ঘটনার পর এমভি ফারহান-৬ ও এমভি তাসরিফ-৪-এর রুট পারমিট তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হয়েছে।’
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর শোক
সদরঘাটে লঞ্চের ছিঁড়ে যাওয়া রশির আঘাতে পন্টুনে থাকা পাঁচ যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
প্রতিমন্ত্রী এক শোকবার্তায় নিহত যাত্রীর আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি আহত যাত্রীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যে লঞ্চ দুর্ঘটনা
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কোতোয়ালি থানাধীন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের ১১ নম্বর পন্টুনের সামনে ঢাকা থেকে ভোলাগামী এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি টিপু নামের দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে পন্টুনে বাঁধা ছিল। লঞ্চ দুটির মাঝখান দিয়ে এমভি ফারহান-৬ নামের আরেকটি লঞ্চ প্রবেশের চেষ্টা চালায়। ওই সময় এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে গেলে পাঁচজন যাত্রী লঞ্চে ওঠার সময় গুরুতর আহত হন। এদের মধ্যে বাবা-মা ও সন্তান ছিল।
তারা আরও জানান, সদরঘাট ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত ব্যক্তিদের মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পাঁচজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেয়ারী শিপিং লাইনস লিমিটেডের মালিকানাধীন এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চটি ঢাকা-চরফ্যাশন-বতুয়া রুটে চলাচল করে।
গুরুতর আহত পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিউজবাংলাকে জানান স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হিমাদ্রি শেখর।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তাদের শরীরে পালস না পাওয়া যাওয়ায় তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। গুরুতর আহত হওয়ায় পাঁচজনের শরীর থেকেই প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।
‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে, তবে এ ঘটনায় এখন কোনো রোগী হাসপাতালে ভর্তি নেই। এ ঘটনায় পুলিশ পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
সদরঘাট নৌ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, নিহত পাঁচজনের মধ্যে এক নারী, তিন পুরুষ ও এক শিশু আছে। তাদের মরদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালে রাখা আছে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত এমভি ফারহান-৬-এর চালক পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন সদরঘাট নৌ থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় প্রাণ হারানো যাত্রীরা হলেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার মাটিচোরা গ্রামের প্রয়াত আবদুল মালেকের ছেলে বিল্লাল (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬), তাদের মেয়ে সাইমা (৩)। তারা তিনজন একই পরিবারের সদস্য। বাকি দুজন হলেন পটুয়াখালী সদরের জয়নাল আবেদিনের ছেলে রিপন হাওলাদার (৩৮) ও ঠাকুরগাঁও সদরের নিশ্চিতপুর এলাকার আব্দুল্লাহ কাফীর ছেলে রবিউল (১৯)।
এ ঘটনায় নৌ পুলিশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের ঢাকা জোনের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস।
আরও পড়ুন:রাজধানীর ডেমরার ধার্মিকপাড়ায় আগুনে লন্ডন এক্সপ্রেস-এর ১৪টি বাস পুড়ে যাওয়ার ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল জানিয়েছে, তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিনকে। কমিটির সদস্য সচিব ডিএডি মো. শামসুজ্জোহা এবং সদস্য ডেমরা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ওসমান গণি।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাত ৮টা ৫০ মিনিটে ডেমরার ধার্মিকপাড়া এলাকার কোনাপাড়ায় একটি গ্যারেজে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও গ্যারেজে থাকা ১৪টি বাস পুড়ে যায়।
আগুনের খবর পেয়ে রাত ৮টা ৫৯ মিনিটে ডেমরা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট প্রথমে ঘটনাস্থলে যায়। পরে সিদ্দিকবাজার স্টেশন থেকে আরও চারটি ইউনিট তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। ছয়টি ইউনিটের সম্মিলিত চেষ্টায় রাত ৯টা ৪৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইনস্পেক্টর মো. আনোয়ারুল ইসলাম ওইদিন মিডিয়াকে জানান, গ্যারেজে দাঁড়ানো কয়েকটি ভলভো বাসে আগুন লেগেছে। তবে বাসে কীভাবে আগুন লেগেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ফয়সালুর রহমান জানান, গ্যারেজে থাকা লন্ডন পরিবহনের ১২ থেকে ১৪টি বাসে আগুন লাগে।
আরও পড়ুন:সাভারের হেমায়েতপুরে তানজিব কোয়েল ফ্যাক্টরির সামনে একটি তেলের লরি উল্টে গিয়ে পাঁচটি গাড়িতে আগুন লাগার ঘটনায় দগ্ধ আটজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ঘটনাস্থলে মারা যান একজন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিটিউটে মঙ্গলবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় নজরুল ইসলামের মৃত্যু হয়। দগ্ধ বাকি সাতজন একই ইনিস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তারা হলেন মিম (১০), আল-আমিন (৩৫), নীড়াঞ্জন (৪৫), মিলন মোল্লা (২২), সাকিব (২৪), ট্রাকের হেলপার হেলাল (৩০) ও তরমুজ ব্যবসায়ী সালাম (২৪)। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জোড়পুল এলাকায় মঙ্গলবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মহাসড়কে আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একটি তেলবাহী লরি উল্টে গিয়ে পেছনে থাকা প্রাইভেটকার ও ট্রাকসহ চারটি গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে আগুন লেগে যায়। এতে ঘটনাস্থলে একজনের মৃত্যু হয়, দগ্ধ হন আটজন।
প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে হেমায়েতপুর এলাকায় তেলের ট্যাংকার আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে পাশের তরমুজের ট্রাকসহ অন্য চারটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। এই ঘটনায় ড্রাইভার, হেলপার ও তরমুজ ব্যবসায়ীসহ আট জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসলে নজরুলকে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘হেমায়েতপুরে দগ্ধ হয়ে আমাদের এখানে আটজন এসেছে। তাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম নামে একজন মারা যায়, বাকি সাতজনকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য