শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার ঘোষণায় কুমিল্লা থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার সব যাত্রীবাহী বাসের ভাড়া বাড়িয়েছেন পরিবহন ব্যবসায়ীরা। হঠাৎ ভাড়া বাড়ার প্রতিবাদে বাসস্ট্যান্ডজুড়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন সাধারণ যাত্রীরা।
শনিবার সকাল ১০টায় নগরীর শাসনগাছা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা থেকে ঢাকার ভাড়া আদায় করা হচ্ছে আড়াই শ টাকা। গত শুক্রবার পর্যন্ত শাসনগাছা থেকে ঢাকাগামী তিশা ও এশিয়া পরিবহনের ভাড়া ছিল ২০০ টাকা।
নগরীর জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ডের পরিবহনসংশ্লিষ্টরা জানান, বাসগুলো ডিজেলে চলে। প্রতি লিটার ডিজেল ৩৪ টাকা বেড়ে যাওয়ায় এশিয়া এয়ারকন যাত্রীপ্রতি ৩০০ টাকা করে নিচ্ছে। তাদের আগের ভাড়া ছিল আড়াই শ টাকা।
এশিয়া এয়ারকনের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই। তেলের দাম বাড়লে বাস ভাড়াও বাড়াতে হয়। আমরা তো আর ভর্তুকি দিয়ে বাস চালাতে পারি না।’
খবর নিয়ে জানা গেছে, শনিবার থেকেই কুমিল্লা-চাঁদপুর রুটে ৪০ টাকার ওপরে বাস ভাড়া বাড়তে পারে।
এদিকে তেলের দাম বাড়ায় প্রায় বন্ধ রয়েছে প্রিন্স সৌদিয়ার বাস চলাচল। প্রিন্স সৌদিয়ার ম্যানেজার টিপু সুলতান বলেন, ‘আগে আমরা কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামের ভাড়া নিতাম ২৬০ টাকা। শনিবার সকাল থেকে ৩০০ টাকা করে নিচ্ছি। সকাল থেকে আমাদের ১০টি গাড়ি ছেড়ে গেছে। তবে চট্টগ্রামে আন্দোলনের ফলে চট্টগ্রাম থেকে বাস আসতে পারছে না।’
বাস সংকট ও ভাড়া বাড়ার ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন অনেক যাত্রী। জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, অনেকেই বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন।
বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষারত চট্টগ্রাম কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী কাজী নাজিয়া আক্তার বলেন, ‘সকাল ১০টায় এসেছি বাসস্ট্যান্ডে। এখনও কোনো বাস পাচ্ছি না। আমার মতো আরও অনেকেই এই সমস্যায় পড়েছেন।’
কক্সবাজারে চাকরি করা আহমেদ উল্লাহ বলেন, ‘একদিকে ভাড়া বেড়েছে। অন্যদিকে বাস নেই। বড় ঝামেলায় আছি।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার খবরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কয়েকটি পরিবহনের বাস ভাড়া বাড়ালেও বাসের সংখ্যা খুবই কম। শহরের পৈরতলা ও ভাদুঘর বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাসের ভাড়া বেশি নেয়ার বিষয়ে তিশা বাসের কাউন্টার মাস্টার জানিয়েছেন, মালিকপক্ষের নির্দেশেই তারা বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।
তিশা বাসের কাউন্টার ম্যানেজার জানান, ঢাকাগামী তিশা বাসের নরমাল সিটের ভাড়া ২৫০ টাকা, সেটি এখন বাড়িয়ে ৩০০ টাকা এবং এসি সিটের আগের ভাড়া ছিল ৩০০ টাকা, তা এখন ৩৫০ টাকা করা হয়েছে।
তবে পরিবহন মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত না থাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামগামী অনেক বাসের ভাড়া এখনও বাড়ানো হয়নি বলে জানিয়েছেন আন্তজেলা বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে দায়িত্ব থাকা মো. বাবুল মিয়া।
এদিকে সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামের বাস বন্ধ ছিল বলে জানান পরিবহন মালিকরা। এতে দুর্ভোগে পড়েন বেশ কিছু যাত্রী।
নেত্রকোণা: তেলের দাম বাড়ায় নেত্রকোণার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব রুটেই বাস ভাড়া বেড়েছে। চলাচলরত বাসের সংখ্যাও অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। এতে বাসের বিকল্প হিসেবে ট্রেন, সিএনজিসহ অন্যান্য গণপরিবহনের ওপর চাপ বেড়েছে।
নেত্রকোণা বাস মালিক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, সরকার এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় তারা কোনো বাস ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেননি। তবে চালক ও শ্রমিকরা রুটভেদে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছেন।
সরেজমিন নেত্রকোণার আন্তজেলা বাসস্ট্যান্ড, রাজুরবাজার বাসস্ট্যান্ড ও বনোয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বাস ভাড়া বেশি নেয়ার প্রমাণ মিলেছে। আন্তজেলা বাসস্ট্যান্ডে নেত্রকোণা-ময়মনসিংহ রুটের কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, টিকিট বিক্রেতা জুয়েল মিয়া পূর্বনিধারিত ৬৫ টাকার বদলে ৮০ টাকা করে টিকিটি বিক্রি করছেন। অন্যদিকে নেত্রকোণা-ঢাকা রুটের কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকার বদলে ৩৫০ টাকায়।
এ ছাড়া রাজুরবাজার বাসস্ট্যান্ডে নেত্রকোণা-মোহনগঞ্জ ও নেত্রকোণা-কলমাকান্দা রুটের এবং বনোয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডে নেত্রকোণা-মদন রুটের বাস ভাড়া ১০-১৫ টাকা করে বেশি নেয়া হচ্ছে।
বাস ভাড়া বাড়ানোর ফলে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসা হতেও দেখা গেছে। আন্তজেলা বাসস্ট্যান্ডের শাহজালাল ও মহুয়া কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক যাত্রীই টিকিট বিক্রেতার সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক করছেন।
মিলন কুমার দাস নামে পঞ্চগড় থেকে নেত্রকোণায় আসা এক যাত্রী অভিযোগ করেন, ‘গাজীপুর থেকে নেত্রকোণায় আসতে আমার কাছ থেকে ৩৮০ টাকা ভাড়া নিয়েছে। অর্থাৎ ৮০ টাকা বেশি নিয়েছে। এটা ডিজেলের দাম বাড়ানোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।’
এদিকে বাস ভাড়া বাড়ানোর ফলে সিএনজি, ট্রেন, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য গণপরিবহনের ওপর চাপ বেড়েছে। অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে বাসের বদলে অনেকে সিএনজি বা মোটরসাইকেলে চলাচল করছেন। এ অবস্থায় সিএনজি ভাড়াও ২০ টাকা করে বেশি নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
রংপুর: রংপুর থেকেও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দূরপাল্লার সব বাসের ভাড়া বেড়েছে। শনিবার সকাল থেকেই এসি বাসে ২০০ আর নন-এসি বাসে আপাতত ৪০ টাকা বাড়িয়েছেন তারা।
ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট বাস কাউন্টারের ম্যানেজাররা।
টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, বাসের ভাড়া বাড়ানোর ফলে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ।
ঢাকাগামী যাত্রী সীমা বলেন, ‘আমি আগামীকাল ঢাকা যাব। এ জন্য এসআর ট্র্যাভেলসে এসির টিকিট নিলাম। ভাড়া নিল ১ হাজার ৫০০ টাকা। কাউন্টার থেকে বলছে তেলের দাম বাড়ানোর কারণে ভাড়া বেশি নিচ্ছে।’
যাত্রী ফরহাদ হোসেন সুমন বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকটি বাসের কাউন্টারে গেছি। সবাই ভাড়া বাড়িয়েছে। ফতেহ আলী পরিবহনে ৪০ টাকা বেশিতে টিকিট নিলাম।’
আজিজুল ইসলাম নামে এক যাত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘কার কাছে অভিযোগ বা কার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব? করার কিছু নাই। যা আদেশ হবে তাই মানতে হবে। তবে এভাবে জনগণকে চিপায় ফেলে জিনিসের দাম বাড়ানো উচিত নয়।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অভ্যন্তরীণ রুটের পরিবহন মালিকরা বলছেন, বাসের ভাড়াও বাড়ানো হবে। যদিও ভাড়া বাড়ালে তারা যাত্রী সংকটে পড়বেন বলেও আশঙ্কা করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিশ্বরোড মোড়ে রহনপুর ও নাচোল রুটে চলাচল করা বাসের স্ট্যান্ডে দেখা যায়, পরিবহন শ্রমিকরা যাত্রীদের ডাকছেন টিকিট কেনার জন্য।
২৪ বছর থেকে গাড়ি চালাচ্ছেন মোহাম্মদ রাজু নামে এক চালক। তিনি জানান, ‘যে গাড়িটার তেল লাগত ১ হাজার ৭৫০ টাকার, সেটির এখন লাগবে ২ হাজার ৫১০ টাকার তেল। ছোট গাড়িগুলোর জন্য আমরা তো এমনিতেই যাত্রী পাই না। ভাড়া বাড়ালে তো আরও যাত্রী পাব না।’
এ অবস্থায় জেলার অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে তেলের দাম বাড়লেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী ও অন্যান্য জেলাগামী বাসগুলোতে আগের ভাড়া রাখতে দেখা গেছে। তবে কিছুটা শিডিউল বিপর্যয় ছিল। পরিবহনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোববার থেকে বাসের ভাড়া না বাড়ানো হলে তারা আর বাস চালাতে পারবেন না।
সাভার: ঢাকার সাভারে বিভিন্ন রুটের গণপরিবহনগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। ভাড়া নিয়ে বাসের স্টাফদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কও করছেন তারা। অন্যদিকে সিন্ডিকেট করে সড়কে বাসের সংখ্যাও কমিয়ে দেয়া হয়েছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
শনিবার সকাল থেকে সাভারের বিভিন্ন রুটে চলাচলরত যাত্রীরা কোথাও দ্বিগুণ আবার কোথাও তিন গুণ বেশি ভাড়া আদায়ের কথাও জানিয়েছেন।
ধামরাইয়ের বাসিন্দা সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী লাকী আক্তার বলেন, ‘আমি গণবিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। ধামরাইয়ের জয়পুরা থেকে সাভারের বাইশমাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপরিবহনেই যাতায়াত করি। গতকাল জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার পর আজ বাসে ভাড়া দিতে গিয়ে বাসের লোকদের সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়েছে। ১০ টাকার ভাড়া যাত্রীসেবা নামের বাসের কন্ডাক্টর ৩০ টাকা চাচ্ছে। পরে অনেক তর্ক-বিতর্কের পর ২০ টাকা দিয়েছি। এভাবে তিন গুণ বেশি ভাড়া হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কীভাবে চলাচল করব?’
এই রুটের তাসনুভা তাবাসসুম নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘সাভারের রেডিও কলোনি থেকে ধামরাই গিয়েছি সকালে ডি লিংক পরিবহনের বাসে। ১০ টাকার ভাড়া ২০ টাকা চাইছে। অনেক চিল্লাপাল্লা করে ১৫ টাকা দিয়েছি। তা ছাড়া অন্য দিনের তুলনায় আজ রাস্তায় বাস অনেক কম। ফলে বাসের জন্য অনেক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে।’
আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকাতেও বেশি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
এসব অভিযোগ নিয়ে সাভার পরিবহনের বাসচালক নাদিম বলেন, ‘তেলের দাম বাড়লে আমরা কী করুম? আমরা ১০-২০ টাকা বেশি ভাড়ার কথা বলে যাত্রী তুলছি।’
আশুলিয়া এক্সপ্রেস পরিবহনের পরিচালক জি এম মিন্টু বলেন, ‘এখনও ভাড়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আমরা পাইনি। রাতে মালিক সমিতির বৈঠক আছে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। কিছু ড্রাইভার নিজেদের মতো করে গাড়ি রোডে নামিয়ে চালাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সমুদ্রসীমার একটি পরিপূর্ণ হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলতে আরো পেশাদারিত্ব, দক্ষতা, নিষ্ঠার সাথে কাজ করার জন্য হাইড্রোগ্রাফিক পেশাজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত আরো মজবুত ও সমৃদ্ধ করতে সমুদ্র তলদেশের নির্ভুল মানচিত্রায়নের মাধ্যমে একটি কার্যকর ও টেকসই সমুদ্রনীতি গড়ে তুলতে হবে।
‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বাংলাদেশে ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।’
তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ দিবসটি আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সাথে এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য-‘সিবেড ম্যাপিং: এনাবলিং ওশান এ্যাকশন’- যার মাধ্যমে গভীর সমুদ্রের তলদেশের মানচিত্রায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে, অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত হয়েছে বলে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় বঙ্গোপসাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু বাংলাদেশই নয়, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোও তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বঙ্গোপসাগরের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে একটি উৎপাদনমুখী ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এ লক্ষ্য অর্জনে সমুদ্র সম্পদকে আরো কার্যকরভাবে ব্যবহারে বিশদ, হালনাগাদ ও নির্ভুল হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যের কোনো বিকল্প নেই।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও সমুদ্রসীমার হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ, চার্ট প্রস্তুত, সকল দেশি ও বিদেশি জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের সমুদ্র আইন অনুযায়ী, আমাদের মহীসোপান অঞ্চল নির্ধারণ এবং সুনীল অর্থনীতি বিকাশে হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগের কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আমাদের সামরিক ও নৌ-নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ সমুদ্র বন্দরের উন্নয়ন, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উপকূলীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
তিনি ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
শনিবার সরকারি ছুটি থাকলেও বাজেট কার্যক্রম চলমান থাকায় কাস্টমস ও ভ্যাট এবং আয়করসহ রাজস্ব আদায়ের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য সকল দপ্তর খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী বেনাপোল কাস্টমস হাউস শনিবার সরকারি ছুটির দিনেও খোলা থাকার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, বেনাপোল কাস্টম হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার এইচ এম শরিফুল ইসলাম। বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক থাকবে বলে জানান এ কর্মকর্তা। ১৮ জুন উম্মে আয়মান কাশমী (দ্বিতীয় সচিব বোর্ড প্রশাসন-১) স্বাক্ষরিত একপত্রের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে জানানো হয়েছে যে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে বাজেট কার্যক্রম চলমান থাকায় আগামী ২১/০৬/২০২৫ ও ২৮/০৬/২০২৫ তারিখ শনিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং এর অধীনস্থ কাস্টমস ও ভ্যাট এবং আয়করসহ রাজস্ব আদায়ের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য সকল দপ্তর খোলা রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের ভিড় বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। বেড়ে চলেছে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সরকারের দেওয়া হিসাবে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। এই সময়ে সারা দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫১ জন। তবে এই সময়ের মধ্যে কারো মৃত্যু হয়নি।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে আক্রান্তের দিক থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে বরিশাল বিভাগ, যেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৮৬ জন।
শুক্রবার (২০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৮ জন। আর ঢাকার বাইরে অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১২৭ জন।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২০ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৭ হাজার ৭৭ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ০৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।
এই সময়ের মধ্যে মোট ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।
জলবায়ু সহনশীলতা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিবহন অবকাঠামো ও ব্যাংক খাতে সংস্কারে চারটি প্রধান উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে ১৩০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (২০ জুন) রাজধানীর ইআরডি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও এডিবির মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদির সিদ্দিকী এবং এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং সংশ্লিষ্ট নথিতে সই করেন।
ইআরডি সচিব বলেন, ‘এই চুক্তিগুলো আমাদের জলবায়ু সহনশীলতা জোরদার, অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিচ্ছন্ন জ্বালানির প্রসার ও আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এডিবির সহায়তা আমাদের জাতীয় অগ্রাধিকার অনুযায়ী অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।’
যে ৪ প্রকল্পে অর্থায়ন করা হবে—৪০ কোটি ডলারের ‘জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচি (সিআরআইডিপি)’ সই করেছে এডিবি ও বাংলাদেশ। এই কর্মসূচির লক্ষ্য জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধি, নির্গমন হ্রাস এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। এই প্রকল্পের আওতায় এজেন্সি ফ্রান্সেস ডি ডেভেলপমেন্ট (এএফডি) থেকে প্রায় ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার এবং এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক থেকে ৪০ কোটি ডলার সহ-অর্থায়ন পাবে বাংলাদেশ।
এ ছাড়া, বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ গঠন, দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন জোরদার, জেন্ডার-সংবেদনশীল স্থানীয় অভিযোজন প্রচার এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও পরিবহন মাস্টার প্ল্যানকে সহায়তা করবে সিআরআইডিপি।
এরপর রয়েছে ২০ কোটি ডলারের ‘বিদ্যুৎ সঞ্চালন শক্তিশালীকরণ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি একীভূতকরণ প্রকল্প’। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বগুড়া, চাঁদপুর, গোপালগঞ্জ, হবিগঞ্জ, পিরোজপুর ও সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন গ্রামীণ জেলায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন অবকাঠামো উন্নীত করা হবে।
পাশাপাশি দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির একীভূতকরণে সহায়তা করবে এই প্রকল্প, যা নির্ভরযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
তাছাড়া, ঢাকা উত্তর-পশ্চিম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করিডোর উন্নয়নে ২০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে এডিবি ও বাংলাদেশ সরকার। করিডোরটির উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দেশের আঞ্চলিক বাণিজ্য আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করা হবে। প্রকল্পটি ভুটান, ভারত ও নেপালের সঙ্গে আঞ্চলিক সংযোগ উন্নয়নে সহায়তা করবে বলে বলা হয়েছে।
এতে জলবায়ু সহনশীল ডিজাইন ও জেন্ডার-সংবেদনশীল বৈশিষ্ট্য যেমন ফুটব্রিজ ও মটরবিহীন যানবাহনের জন্য আলাদা লেন অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল ও সংস্কারের পথে এগিয়ে নিতে ৫০ কোটি ডলারের ‘ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ও সংস্কার কর্মসূচি’ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
এই সংস্কারকেন্দ্রিক কর্মসূচিটি নিয়ন্ত্রক তত্ত্বাবধান শক্তিশালী করবে, আর্থিক সম্পদের গুণমান উন্নত করবে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়ানো ও খেলাপি ঋণ সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই প্রকল্প সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই সমন্বিত সহায়তা প্যাকেজ বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী সহনশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মন্তব্য করেন হো ইউন জিয়ং।
সীমান্তের ওপারে ভারতের ভেতরে সিলেটের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উৎমাছড়া সীমান্তের ওপারে জাকারিয়া আহমদ (২৩) নামের ওই যুবকের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে বলে খবর পান পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি বিজিবি ও পুলিশকে জানিয়েছে পরিবার।
নিহত জাকারিয়া (২৩) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার লামারগ্রাম কামালবস্তির আলাউদ্দিন আলাইয়ের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোরে জাকারিয়া বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ১২৫৭ নম্বর মেইন পিলারের ২০ নম্বর ছাফ পিলারের নিকটবর্তী ভারতের অভ্যন্তরে একটি গাছের ডালে দড়িতে ঝুলন্ত একটি মরদেহ দেখা গেছে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর নিহত ব্যক্তির পরিবার মরদেহটি জাকারিয়ার বলে শনাক্ত করে।
তার পরিবারের সদস্যরা জানান, গত সোমবার একই ইউনিয়নের কাকরাইল গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে জাকারিয়ার বিয়ে হয়েছিল।
সিলেট কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ জানান, ‘সীমান্তের পিলারের ওপারে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। লাশ উদ্ধারের জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র উৎমাছড়া ক্যাম্পের কমান্ডারের সাথে আলাপ হয়েছে। নিহতের পরিবার থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হলে পরবর্তীতে বিজিবি ও পুলিশের সদস্যরা গিয়ে লাশ উদ্ধার করতে পারবে। যেহেতু সীমান্তের ওপারে তাই কিছু আইনি জটিলতার জন্য লাশ উদ্ধারে বিলম্ব হচ্ছে।’
এদিকে , বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) উৎমা বিওপি ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) সমন্বয়ে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি।
কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ফেনীর ফুলগাজীতে মুহুরী নদীর একটি স্থানে বাঁধ ভেঙে লোকালয় পানি ঢুকেছে । এতে চার গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ২০২৪ এর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার বছর না পেরোতেই আবারও বাঁধ ভাঙনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দায়সারা কাজকে দুষছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জনগণ বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারের দায়সারা সংস্কার ও মেরামতের কারণে এখানকার জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ১০টার দিকে এ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত ১০টার দিকে ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর বরইয়া বণিকপাড়া সহদেব বৈদ্যের বাড়ি-সংলগ্ন মুহুরী নদীর বাঁধের একটি স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় জনগণ প্রাণপণ চেষ্টা করেও এ ভাঙ্গন ঠেকাতে পারেনি।
এতে উত্তর বরইয়া, দক্ষিণ বরইয়া, বণিকপাড়া, বসন্তপুর এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এ ছাড়া গতকাল সন্ধ্যা থেকে ফুলগাজী তরকারি বাজার-সংলগ্ন স্থানে মুহুরী নদীর পানি প্রবেশ করে বাজারের একটি অংশ প্লাবিত হয়েছে। আজ শুক্রবার বৃষ্টি না
হাওয়ায় ফুলগাজী বাজার থেকে পানি নেমে গেছে।
প্রতি বছর দায়সারা বাঁধ মেরামত ও নদী সংস্কার না করার কারনে স্থানীয় এলাকাবাসী পানি উন্নয়ন বোর্ডেকে এজন্য দায়ী করছেন। এখানকার জনগণ প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানিতে প্লাবিত হওয়ার কারণে কোন ত্রাণ নয়, তারা চায় টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার ফেনীর ফুলগাজী বাজার ও ভাঙ্গন স্থান পরিদর্শন করেছেন। তিনি স্থানীয় জনগণকে আতঙ্কিত না হয় সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় ফেনীতে নদীর পানি বাড়ছে। তবে মুহুরী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। বাঁধের ভাঙ্গন স্থল রক্ষায় স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের নিরাপত্তায় আমাদের কাজ অব্যাহত রয়েছে।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আমন্ত্রণে আগামী রবিবার (২২ জুন) চীন সফরে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিএনপির মিডিয়া সেল সদস্য সৈয়দ সায়রুল কবীর খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই সফরের জন্য বিএনপিকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছে সিপিসি।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার ও দলীয় পর্যায়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ই এই সফরের মূল লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেন তিনি। সায়রুল কবীর আরও জানান, মির্জা ফখরুলের সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির চার সদস্য— মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। এ ছাড়া, চেয়ারপারসনের তিন উপদেষ্টা— জহির উদ্দিন স্বপন, ইসমাইল জাবিউল্লাহ ও অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া এবং দলের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেলও প্রতিনিধিদলে রয়েছেন।
সফর শুরুর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় চীনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের আমন্ত্রণে চীনা দূতাবাসে সাক্ষাৎ করে বলেও জানান তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বিবেচিত চীনের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক গভীর করার প্রত্যাশারই প্রতিফলনই এই সফর। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রেক্ষাপটে বেইজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
এদিকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপিকে একটি ‘প্রতীক্ষমাণ সরকার’ হিসেবে বিবেচনা করছেন অনেক পর্যবেক্ষক, যার অপেক্ষা চলছে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত।
এই সফরকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভিন্ন দলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চীনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতারা। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর চীন বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়িয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিএনপি, সদ্য-গঠিত এনসিপি ও কিছু ইসলামপন্থী দল।
এর আগে, চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার এবং দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আটটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে গঠিত একটি ২১ সদস্যের ‘অনন্য’ প্রতিনিধিদল ১১ দিনের সফরে চীন যায়।
ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। চীনা কর্তৃপক্ষ জানায়, গত আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে বহুদলীয় সম্পর্ক জোরদারের কৌশলের অংশ হিসেবেই এই সফর আয়োজন করা হয়।
১১ দিনের সফরে প্রতিনিধিদলটি বেইজিং, শানশি এবং ইউনান প্রদেশে সিপিসির কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে।
মন্তব্য