শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার ঘোষণায় কুমিল্লা থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার সব যাত্রীবাহী বাসের ভাড়া বাড়িয়েছেন পরিবহন ব্যবসায়ীরা। হঠাৎ ভাড়া বাড়ার প্রতিবাদে বাসস্ট্যান্ডজুড়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন সাধারণ যাত্রীরা।
শনিবার সকাল ১০টায় নগরীর শাসনগাছা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা থেকে ঢাকার ভাড়া আদায় করা হচ্ছে আড়াই শ টাকা। গত শুক্রবার পর্যন্ত শাসনগাছা থেকে ঢাকাগামী তিশা ও এশিয়া পরিবহনের ভাড়া ছিল ২০০ টাকা।
নগরীর জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ডের পরিবহনসংশ্লিষ্টরা জানান, বাসগুলো ডিজেলে চলে। প্রতি লিটার ডিজেল ৩৪ টাকা বেড়ে যাওয়ায় এশিয়া এয়ারকন যাত্রীপ্রতি ৩০০ টাকা করে নিচ্ছে। তাদের আগের ভাড়া ছিল আড়াই শ টাকা।
এশিয়া এয়ারকনের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই। তেলের দাম বাড়লে বাস ভাড়াও বাড়াতে হয়। আমরা তো আর ভর্তুকি দিয়ে বাস চালাতে পারি না।’
খবর নিয়ে জানা গেছে, শনিবার থেকেই কুমিল্লা-চাঁদপুর রুটে ৪০ টাকার ওপরে বাস ভাড়া বাড়তে পারে।
এদিকে তেলের দাম বাড়ায় প্রায় বন্ধ রয়েছে প্রিন্স সৌদিয়ার বাস চলাচল। প্রিন্স সৌদিয়ার ম্যানেজার টিপু সুলতান বলেন, ‘আগে আমরা কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামের ভাড়া নিতাম ২৬০ টাকা। শনিবার সকাল থেকে ৩০০ টাকা করে নিচ্ছি। সকাল থেকে আমাদের ১০টি গাড়ি ছেড়ে গেছে। তবে চট্টগ্রামে আন্দোলনের ফলে চট্টগ্রাম থেকে বাস আসতে পারছে না।’
বাস সংকট ও ভাড়া বাড়ার ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন অনেক যাত্রী। জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, অনেকেই বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন।
বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষারত চট্টগ্রাম কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী কাজী নাজিয়া আক্তার বলেন, ‘সকাল ১০টায় এসেছি বাসস্ট্যান্ডে। এখনও কোনো বাস পাচ্ছি না। আমার মতো আরও অনেকেই এই সমস্যায় পড়েছেন।’
কক্সবাজারে চাকরি করা আহমেদ উল্লাহ বলেন, ‘একদিকে ভাড়া বেড়েছে। অন্যদিকে বাস নেই। বড় ঝামেলায় আছি।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার খবরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কয়েকটি পরিবহনের বাস ভাড়া বাড়ালেও বাসের সংখ্যা খুবই কম। শহরের পৈরতলা ও ভাদুঘর বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাসের ভাড়া বেশি নেয়ার বিষয়ে তিশা বাসের কাউন্টার মাস্টার জানিয়েছেন, মালিকপক্ষের নির্দেশেই তারা বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।
তিশা বাসের কাউন্টার ম্যানেজার জানান, ঢাকাগামী তিশা বাসের নরমাল সিটের ভাড়া ২৫০ টাকা, সেটি এখন বাড়িয়ে ৩০০ টাকা এবং এসি সিটের আগের ভাড়া ছিল ৩০০ টাকা, তা এখন ৩৫০ টাকা করা হয়েছে।
তবে পরিবহন মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত না থাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামগামী অনেক বাসের ভাড়া এখনও বাড়ানো হয়নি বলে জানিয়েছেন আন্তজেলা বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে দায়িত্ব থাকা মো. বাবুল মিয়া।
এদিকে সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামের বাস বন্ধ ছিল বলে জানান পরিবহন মালিকরা। এতে দুর্ভোগে পড়েন বেশ কিছু যাত্রী।
নেত্রকোণা: তেলের দাম বাড়ায় নেত্রকোণার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব রুটেই বাস ভাড়া বেড়েছে। চলাচলরত বাসের সংখ্যাও অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। এতে বাসের বিকল্প হিসেবে ট্রেন, সিএনজিসহ অন্যান্য গণপরিবহনের ওপর চাপ বেড়েছে।
নেত্রকোণা বাস মালিক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, সরকার এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় তারা কোনো বাস ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেননি। তবে চালক ও শ্রমিকরা রুটভেদে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছেন।
সরেজমিন নেত্রকোণার আন্তজেলা বাসস্ট্যান্ড, রাজুরবাজার বাসস্ট্যান্ড ও বনোয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বাস ভাড়া বেশি নেয়ার প্রমাণ মিলেছে। আন্তজেলা বাসস্ট্যান্ডে নেত্রকোণা-ময়মনসিংহ রুটের কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, টিকিট বিক্রেতা জুয়েল মিয়া পূর্বনিধারিত ৬৫ টাকার বদলে ৮০ টাকা করে টিকিটি বিক্রি করছেন। অন্যদিকে নেত্রকোণা-ঢাকা রুটের কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকার বদলে ৩৫০ টাকায়।
এ ছাড়া রাজুরবাজার বাসস্ট্যান্ডে নেত্রকোণা-মোহনগঞ্জ ও নেত্রকোণা-কলমাকান্দা রুটের এবং বনোয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডে নেত্রকোণা-মদন রুটের বাস ভাড়া ১০-১৫ টাকা করে বেশি নেয়া হচ্ছে।
বাস ভাড়া বাড়ানোর ফলে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসা হতেও দেখা গেছে। আন্তজেলা বাসস্ট্যান্ডের শাহজালাল ও মহুয়া কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক যাত্রীই টিকিট বিক্রেতার সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক করছেন।
মিলন কুমার দাস নামে পঞ্চগড় থেকে নেত্রকোণায় আসা এক যাত্রী অভিযোগ করেন, ‘গাজীপুর থেকে নেত্রকোণায় আসতে আমার কাছ থেকে ৩৮০ টাকা ভাড়া নিয়েছে। অর্থাৎ ৮০ টাকা বেশি নিয়েছে। এটা ডিজেলের দাম বাড়ানোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।’
এদিকে বাস ভাড়া বাড়ানোর ফলে সিএনজি, ট্রেন, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য গণপরিবহনের ওপর চাপ বেড়েছে। অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে বাসের বদলে অনেকে সিএনজি বা মোটরসাইকেলে চলাচল করছেন। এ অবস্থায় সিএনজি ভাড়াও ২০ টাকা করে বেশি নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
রংপুর: রংপুর থেকেও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দূরপাল্লার সব বাসের ভাড়া বেড়েছে। শনিবার সকাল থেকেই এসি বাসে ২০০ আর নন-এসি বাসে আপাতত ৪০ টাকা বাড়িয়েছেন তারা।
ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট বাস কাউন্টারের ম্যানেজাররা।
টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, বাসের ভাড়া বাড়ানোর ফলে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ।
ঢাকাগামী যাত্রী সীমা বলেন, ‘আমি আগামীকাল ঢাকা যাব। এ জন্য এসআর ট্র্যাভেলসে এসির টিকিট নিলাম। ভাড়া নিল ১ হাজার ৫০০ টাকা। কাউন্টার থেকে বলছে তেলের দাম বাড়ানোর কারণে ভাড়া বেশি নিচ্ছে।’
যাত্রী ফরহাদ হোসেন সুমন বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকটি বাসের কাউন্টারে গেছি। সবাই ভাড়া বাড়িয়েছে। ফতেহ আলী পরিবহনে ৪০ টাকা বেশিতে টিকিট নিলাম।’
আজিজুল ইসলাম নামে এক যাত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘কার কাছে অভিযোগ বা কার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব? করার কিছু নাই। যা আদেশ হবে তাই মানতে হবে। তবে এভাবে জনগণকে চিপায় ফেলে জিনিসের দাম বাড়ানো উচিত নয়।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অভ্যন্তরীণ রুটের পরিবহন মালিকরা বলছেন, বাসের ভাড়াও বাড়ানো হবে। যদিও ভাড়া বাড়ালে তারা যাত্রী সংকটে পড়বেন বলেও আশঙ্কা করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিশ্বরোড মোড়ে রহনপুর ও নাচোল রুটে চলাচল করা বাসের স্ট্যান্ডে দেখা যায়, পরিবহন শ্রমিকরা যাত্রীদের ডাকছেন টিকিট কেনার জন্য।
২৪ বছর থেকে গাড়ি চালাচ্ছেন মোহাম্মদ রাজু নামে এক চালক। তিনি জানান, ‘যে গাড়িটার তেল লাগত ১ হাজার ৭৫০ টাকার, সেটির এখন লাগবে ২ হাজার ৫১০ টাকার তেল। ছোট গাড়িগুলোর জন্য আমরা তো এমনিতেই যাত্রী পাই না। ভাড়া বাড়ালে তো আরও যাত্রী পাব না।’
এ অবস্থায় জেলার অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে তেলের দাম বাড়লেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী ও অন্যান্য জেলাগামী বাসগুলোতে আগের ভাড়া রাখতে দেখা গেছে। তবে কিছুটা শিডিউল বিপর্যয় ছিল। পরিবহনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোববার থেকে বাসের ভাড়া না বাড়ানো হলে তারা আর বাস চালাতে পারবেন না।
সাভার: ঢাকার সাভারে বিভিন্ন রুটের গণপরিবহনগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। ভাড়া নিয়ে বাসের স্টাফদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কও করছেন তারা। অন্যদিকে সিন্ডিকেট করে সড়কে বাসের সংখ্যাও কমিয়ে দেয়া হয়েছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
শনিবার সকাল থেকে সাভারের বিভিন্ন রুটে চলাচলরত যাত্রীরা কোথাও দ্বিগুণ আবার কোথাও তিন গুণ বেশি ভাড়া আদায়ের কথাও জানিয়েছেন।
ধামরাইয়ের বাসিন্দা সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী লাকী আক্তার বলেন, ‘আমি গণবিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। ধামরাইয়ের জয়পুরা থেকে সাভারের বাইশমাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপরিবহনেই যাতায়াত করি। গতকাল জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার পর আজ বাসে ভাড়া দিতে গিয়ে বাসের লোকদের সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়েছে। ১০ টাকার ভাড়া যাত্রীসেবা নামের বাসের কন্ডাক্টর ৩০ টাকা চাচ্ছে। পরে অনেক তর্ক-বিতর্কের পর ২০ টাকা দিয়েছি। এভাবে তিন গুণ বেশি ভাড়া হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কীভাবে চলাচল করব?’
এই রুটের তাসনুভা তাবাসসুম নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘সাভারের রেডিও কলোনি থেকে ধামরাই গিয়েছি সকালে ডি লিংক পরিবহনের বাসে। ১০ টাকার ভাড়া ২০ টাকা চাইছে। অনেক চিল্লাপাল্লা করে ১৫ টাকা দিয়েছি। তা ছাড়া অন্য দিনের তুলনায় আজ রাস্তায় বাস অনেক কম। ফলে বাসের জন্য অনেক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে।’
আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকাতেও বেশি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
এসব অভিযোগ নিয়ে সাভার পরিবহনের বাসচালক নাদিম বলেন, ‘তেলের দাম বাড়লে আমরা কী করুম? আমরা ১০-২০ টাকা বেশি ভাড়ার কথা বলে যাত্রী তুলছি।’
আশুলিয়া এক্সপ্রেস পরিবহনের পরিচালক জি এম মিন্টু বলেন, ‘এখনও ভাড়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আমরা পাইনি। রাতে মালিক সমিতির বৈঠক আছে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। কিছু ড্রাইভার নিজেদের মতো করে গাড়ি রোডে নামিয়ে চালাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ওয়েস্টিন পারনাস হোটেলে আজ থেকে ০৩(তিন) দিনব্যাপী (১৬-১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কো-অপারেশন কনফারেন্স (জিআইসিসি)-২০২৫ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। সম্মেলনে সেতু সচিব সেতু বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের উপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সেতু সচিব প্রেজেন্টেশনে উল্লেখ করেন সেতু বিভাগের কয়েকটি প্রকল্পে কোরিয়ান ইডিসিএফ/ইডিপিএফ (EDCF/EDPF) অর্থানয়ের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের পরিবহন খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
জিআইসিসি-২০২৫ সম্মেলনের লক্ষ্য কোরিয়ান নির্মাণ সংস্থাগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করা এবং বিভিন্ন দেশের প্রকল্প বাস্থবায়নকারীদের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করা। এটি মূলত একটি বিজনেস-টু-বিজনেস প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যেখানে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো বিদেশী সরকার, প্রজেক্ট ডেভেলপার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে। সম্মেলনে প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ৩০টি দেশের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এবং কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ সংস্থাগুলির কর্মকর্তারা রয়েছেন।
এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো: বিভিন্ন দেশের আসন্ন অবকাঠামো প্রজেক্ট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান, বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন, নতুন প্রজেক্টে অংশগ্রহণের জন্য চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কোরিয়ান উন্নত প্রযুক্তি যেমন স্মার্ট সিটি, হাই-স্পিড রেল, এবং স্মার্ট পোর্ট সিস্টেমের সাথে পরিচিতি করা।
এছাড়াও সম্মেলনের বাকী অংশে বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের প্যানেল আলোচনা, বিভিন্ন দেশের প্রজেক্ট ব্রিফিং, ব্যক্তিগত বিজনেস মিটিং, কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো তাদের নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২ দিনব্যাপী ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ১ম বর্ষ শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয়ভাবে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর ‘ফ্রেশার্স রিসিপশন-২৫’ নামে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রথমদিনে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ এবং দ্বিতীয় দিনে দার্শনিক অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান উপস্থিত থাকবেন।
মঙ্গলবার ফ্রেশার্স রিসিপশন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি ও অধ্যাপক ড. আ.ব.ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী কর্তৃক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, প্রথম দিনে (২০ সেপ্টেম্বর) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, আইন অনুষদ ও বিজ্ঞানভুক্ত তিন অনুষদের নবীন শিক্ষার্থীদের এবং ২১ সেপ্টেম্বর থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ, কলা অনুষদ ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি ইউনিটে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান করা হবে এবং সকল নবীনদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ প্রদান করা হবে।
অনুষ্ঠিতব্য অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর সভাপতিত্বে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে থাকছেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মো. তানজীম উদ্দিন খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
এ সময় ফ্রেশার্স রিসিপশন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি জানান, ‘আমাদের আয়োজন সম্পন্ন, আমরা চমৎকার একটা অনুষ্ঠান উপহার দিব। ইতোমধ্যে ১ টি সেন্ট্রাল কমিটির অধীনে ৬ টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের সরসপুর গ্রামের ‘ছায়া নীড় সেবাকেন্দ্রে’ আশ্রিত ঠিকানাহীন এক বাক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত মোশারফ হোসেনকে আসামি হিসেবে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক পারভীন আক্তার। ১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পারভীন আক্তার অভিযোগ করেন প্রায় আট মাস ধরে গাজীপুরের পুলিশ সুপার ও কাপাসিয়া থানার ওসির কাছে ধর্ণা দিয়েও এ বিষয়ে কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না।
পারভীন আক্তার জানান, গত বছরের ডিসেম্বরের ১২ তারিখ সন্ধ্যার পর তিনি ওই প্রতিবন্ধী যুবতীকে রাতের ভাত রান্না হয়েছে কিনা তা দেখতে পার্শ্ববর্তী রান্নাঘরে পাঠানোর পর দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সে ঘরে ফিরে আসেনি। এ সময় তিনি রান্নাঘরে গিয়ে তাকে খুঁজে পাননি। এ সময় আশপাশের বাসা বাড়ি, রাস্তা-ঘাট ও হাট-বাজারে খোজ নিয়েও তার কোনো সন্ধান পাননি। দুদিন পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে পার্শ্ববর্তী তরুল গ্রামের কাজলের স্ত্রী নামে একজন ফোনে তাকে ওই মেয়েটি তাদের বাড়িতে আছে বলে জানান। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি তার প্রতিবেশি দেবর ও তার আশ্রমে কর্মরত দিনমজুর মোশারফ হোসেনকে ওই প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে আশ্রমে নিয়ে আসার জন্য পাঠান।
পরে আশ্রমে নিয়ে এসে নিখোঁজের বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই মেয়েটি জানায়, তরুল গ্রামের শামসুল হকের ছেলে সিয়াম (১৯), নাজিমউদ্দিনের ছেলে খোকন মিয়া (২৫) ও কামাল হোসেনের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (৩০) ওই রাতে তাকে রান্নাঘরের পাশ থেকে জোর করে তুলে নিয়ে সিয়ামদের বাড়ির পাশে একটি ভাঙ্গা ঘরে নিয়ে যায় এবং দুই রাতে তারা তিনজন পালাক্রমে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ বিষয়ে তিনি কাপাসিয়া থানায় ওই তিনজনের নামে একটি মামলা করলে পুলিশ সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে এবং বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে।
কিন্তু পরে ওই প্রতিবন্ধী তার আশ্রমের এক সাথীর কাছে জানায়, মোশারফ হোসেন আশ্রমে নিয়ে আসার সময় এক জঙ্গলে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে এ কথা কাউকে বলতে নিষেধ করেছিল। এবং বিষয়টি প্রকাশ হলে তাকে মেরেও ফেলার হুমকি দিয়েছিল। এ বিষয়টি জানতে পেরে তিনি থানা পলিশকে মোশারফের নাম আসামিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করলেও তার কথা আমলে নিচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে হাজির হয়ে বিষয়টি জানালে তিনি থানায় ফোন করে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্ট সবার সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। অভিযুক্ত মোশারফ পার্শ্ববর্তী কড়িহাতা ইউনিয়নের পাকিয়াব গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযুক্ত মোশারফ হোসেনের মোবাইল নম্বারে একাধিকবার কল দিয়েও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
কাপাসিয়া থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, এ মামলাটি তিনি কাপাসিয়া থানায় যোগদানের অনেক আগেই হয়েছে। একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ মামলার বাদি যদি আর কোনো আসামি অর্ন্তভুক্ত করার আবেদন জানান, তবে আইনগতভাবে খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নির্বাচিত সরকার না থাকলে দেশের অর্থনীতির প্রাণচাঞ্চল্য আসবে না। তাই অতি দ্রুত দেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচিত সরকার গঠন করতে হবে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টায় ভৈরব কেবি মডেল পাইলট হাই স্কুল প্রাঙ্গণে ভৈরবে চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বার্ষিক সাধারণ সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন।
এ সময় ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তিনি আরো বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভৈরব বাজার থেকে মেন্দিপুর পর্যন্ত মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি পূর্বাঞ্চলকে ইকোনমিক জোন ও পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
তিনি আরও বলেন, মাদক ও ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশের পাশাপাশি এলাকার প্রবীণ ও যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
সাধারণ সভার আনুষ্ঠানিকতার উদ্বোধন করেন, ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক শবনম শারমিন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম।
এছাড়া ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ জাহিদুল হক জাবেদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ.এইচ.এম আজিমুল হক, ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোসিয়েশন সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, চেম্বার সদস্য ও ভৈরব উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মো. শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি মো. মুজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল কোরআন তেলাওয়াত। স্বাগত বক্তব্য, বিগত সভার প্রস্তাব পাঠ ও অনুমোদন, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাৎসরিক নিরীক্ষিত অডিট রিপোর্ট আলোচনা ও অনুমোদন, সম্মানিত চেম্বার সদস্যবৃন্দদের সাধারণ আলোচনা ও উন্নয়ন প্রস্তাব, চেম্বারের সকল সম্মানিত সদস্যদের সম্মানে সম্মাননা স্মারক প্রদান, সেরা করদাতা, নারী উদোক্তাদের সম্মাননা প্রদান ও মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে ।
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে গত এক মাস ধরে অবস্থান করছে একদল বন্যহাতি। ১৭ সদস্যের এই হাতির দলে সম্প্রতি দুটি নতুন শাবকেরও জন্ম হয়েছে। তবে এদের তাণ্ডবে বাগানের শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, চা গাছপালা এবং বাগানের ভেতরের কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে বাগানের ২ নম্বর সেকশনে বসবাসকারী বহু শ্রমিক ইতিমধ্যেই বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলী নদীর উত্তর পাড়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী জানান, মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এ সময় তিনি, তার স্ত্রী ও সন্তানরা কোনোমতে ঘর থেকে পালিয়ে ইঞ্জিনচালিত বোটে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে প্রাণে রক্ষা পান।
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, ‘মঙ্গলবার গভীর রাতে হাতির গর্জন শুনতে পাই। হঠাৎ একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা করে ভেতরে ঢুকতে চাইছিল। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে কোনোমতে ঘরের পেছন দিয়ে বের হয়ে বোটে উঠে এপারে চলে আসি।’
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা জানান, প্রায় প্রতিদিনই হাতির দল বাগানে হানা দিচ্ছে। কখনো পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ করেই আবার বাগানে নেমে এসে গাছপালা ও বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এতে শ্রমিকরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, ‘হাতিরা শান্তিপ্রিয় প্রাণী। তারা নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। বাদ্য-বাজনা, বাঁশির সুর কিংবা উচ্চ শব্দ তারা সহ্য করতে পারে না। গত সোমবার শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশি বাজানো হলে হাতির দল চা বাগান ছেড়ে গভীর বাঁশবনে চলে যায়।’
এ বিষয়ে কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, ‘দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার কারণে তারা খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। তাই আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল সংরক্ষণ করা।’
পাবনা সদর উপজেলার বালিয়াহালট সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন ভারতীয় নাগরিক সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী। এছাড়াও জালিয়াতি করে শ্বশুরের নামে লিজ নেয়া সরকারি সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ভারতের জাতীয় পরিচয়পত্র ও আধার কার্ডে দেখা যায়, সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪পরগণা জেলার দক্ষিণ ব্যারাকপুর শহরের দমদমের সূর্যসেন পল্লি, ৪৬৭ এলাকার নির্মল কুমারের ছেলে। সুখরঞ্জন চক্রবর্তীর ভারতীয় পরিচয়পত্রের তালিকাভুক্তির নাম্বার০০০০/০০৮০২/৭৬৩৯৭ এবং আধার কার্ডের নাম্বার ৪০৫০২২৩৪৩৩৫১। তিনি পাবনা পৌরসভাধীন রাধানগর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা পরিচয়ে বাংলাদেশে সরকারি চাকরি করছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী বাংলাদেশের সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের চাকরি করছেন। তিনি পার্শ্ববর্তী ভারতের নাগরিক, সেখানে তার জমিজমা ও ফ্লাট বাড়ি রয়েছে। তার স্ত্রী ও বড় ছেলে ভারতে থাকেন। ছোট ছেলে বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণের জন্য তাকে পাবনায় রেখে প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণ করছেন। মাঝেমধ্যে ১৫দিন/১ মাস ছুটি নিয়ে তারা ভারতে যান।
সুখ রঞ্জনের শ্বশুর দীপক কুমার রায়ের নামে লিজ নেয়া সরকারি সম্পত্তি জালিয়াতি করে তিনি নিজের নামে করে নেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে সুখ রঞ্জন চক্রবর্তীর শ্যালক সুমন কুমার রায় বলেন, ‘আমার বাবা শহরের মুরগি পট্টিতে সরকারি জমি লিজ নিয়ে সেখানে বসবাস করতেন। বর্তমানে আমি সেই বাড়িতে বসবাস করি। বাবা মারা যাওয়ার পর ওই জমি আমার মায়ের নামে লিজ দেয়া হয়। মা মারা যাওয়ার পর কাউকে কিছু না জানিয়ে শুধুমাত্র আমার বোনকে (সুখ রঞ্জন চক্রবর্তীর স্ত্রী) একমাত্র উত্তরসূরি বানিয়ে পাবনা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। যিনি বর্তমানে ভারতীয় নাগরিক এবং ভারতেই বসবাস করেন।এমনকি পৌরসভাতেও আমার একমাত্র বোনকে উত্তরসূরি বানিয়ে আবেদন দিয়েছে। আমার বাড়িতে বসবাস করে এখন আমাকেই বাড়ি ছাড়া করতে চায়’।
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর জানান, আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে, কাগজপত্রও পেয়েছি। ইতোমধ্যেই আমি সংশ্লিষ্টদের তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছি। আশা করি খুব শিগগিরই তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাবো এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারব।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা, এইসব কাগজপত্র বানানো যায়। আমার স্ত্রী-সন্তানরা ওর ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা করে ভারতে চলে গেছে। তাদের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। আমি আনার চেষ্টা করেছি কিন্তু তারা আসেনি। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হলে আমি সব ডকুমেন্টস আছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ছাত্রাবট গ্রামে হাইব্রিড লাউ ‘ডায়না’ চাষে সাফল্য পেয়েছেন কৃষক মো. জাহাঙ্গীর মিয়া, যা এলাকায় সাড়া ফেলেছে। লালতীর সীড লিমিটেডের অধিক ফলনশীল ও আকর্ষণীয় এই লাউ জাতটি চাষ করে তিনি অল্প সময়ে লাভবান হয়েছেন। তার সাফল্য দেখে এলাকার বেকার যুবকসহ অনেক কৃষক ‘ডায়না’ চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
জাহাঙ্গীর মিয়া ও কৃষক গনি মিয়া যৌথভাবে প্রথমবারের মতো ৫৬ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে হাইব্রিড লাউ ‘ডায়না’ চাষ করেন। বর্তমানে তাদের মাঠে সারি সারি গাছে ঝুলছে অগণিত লাউ। চারা লাগানোর মাত্র ৫০-৫৫ দিনের মধ্যেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। প্রতিটি লাউয়ের গড় ওজন ২থেকে ৩কেজি। এ জাতের লাউ টানা তিন মাস ধরে ফল দিতে সক্ষম।
চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে মাঠ থেকে লাউ বিক্রি করা হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। প্রথম পর্যায়ে তারা প্রায় ৫২ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। কৃষকরা আশা করছেন, এই মৌসুমে লাখ টাকার বেশি আয় করতে সক্ষম হবেন।
সফল কৃষক গনি মিয়া বলেন, ‘লাউ চাষে তেমন খরচ নেই। অন্য ফসলের তুলনায় লাউ চাষে খরচ কম লাগে। বর্তমানে বাজারে লাউয়ের চাহিদা অনেক। স্থানীয় বাজার ছাড়াও ক্রেতারা সরাসরি বাগান থেকে লাউ কিনে নিচ্ছেন। উৎপাদন শেষ হলে আমরা টমেটো ও শিম চাষ করবো। সঠিক যত্নের মাধ্যমে ভালো লাভবান হওয়া সম্ভব।’
স্থানীয় কৃষক বিকাশ সরকার জানান, ‘জাহাঙ্গীর মিয়া ও গনি মিয়া খুব অল্প সময়ের মধ্যেই চাষে সফল হয়েছেন। তাদের সাফল্য দেখে আমাদেরও উৎসাহ তৈরি হয়েছে। অনেকেই এখন এই জাতের লাউ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
হাইব্রিড লাউ ‘ডায়না’ বীজের উৎস প্রতিষ্ঠান লালতীর সিড লিমিটেড। ডিভিশন ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী বলেন, ‘হাইব্রিড ‘ডায়না’ অধিক ফলনশীল, আকর্ষণীয় এবং বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুর জন্য উপযোগী। এটি বোতল আকৃতির ও উজ্জ্বল সবুজ রঙের। উচ্চ তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা সহনশীল, লম্বায় ৩০-৩৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। কৃষকদের জন্য এটি অত্যন্ত লাভজনক এবং সারা বছর চাষ করা যায়। তিনি আরো বলেন, জাহাঙ্গীর ও গনি মিয়ার সফলতা দেখেই অন্যান্য কৃষকরাও অনাবাদি জমি কাজে লাগিয়ে লাউ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এতে শ্রীমঙ্গলসহ সারাদেশে সবজি চাষের প্রসার ঘটবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) উজ্জ্বল সূত্রধর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এবার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রায় ৫২ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ করা হচ্ছে। এখানকার আবহাওয়া ও মাটি লাউ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। আমরা নিয়মিত কৃষকদের জমি পরিদর্শন করছি এবং কীটনাশক ব্যবস্থাপনা, নতুন জাতের প্রচার ও সম্প্রসারণে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছি। ধানচাষের তুলনায় খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা লাউ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।’
মন্তব্য