প্রায় ২৭ লাখ টাকার সম্পদের হিসাব গোপন এবং সাড়ে ১২ লাখ টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়ে শরীয়তপুরের এক ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বৃহস্পতিবার মামলাটি করেন।
অভিযুক্ত ৫২ বছর বয়সী আব্দুস সালাম খান জাজিরা উপজেলার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কাজ করেন। তিনি শরীয়তপুর পৌরসভার দক্ষিণ বালুচরা এলাকার বাসিন্দা।
২০২০ সালে সালামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ আসে। এরপর দুদকের সমন্বিত ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক কমলেশ মন্ডল তার সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন।
সালাম সে সময় নড়িয়ার ভোজেশ্বর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ছিলেন। দুদকের অনুসন্ধান শুরু হলে থেকে তাকে সদরের চন্দ্রপুর ইউনিয়নে বদলি করা হয়। এরপর তাকে পাঠানো হয় জাজিরার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নে।
অনুসন্ধান কর্মকর্তার প্রতিবেদনে দেখা যায়, সালাম তার সম্পদের যে হিসাব জমা দিয়েছেন, তাতে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৯ টাকা গোপন করেছেন, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ ছাড়া তিনি ১২ লাখ ৬১ হাজার ৪৪৩ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রেখেছেন যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
গত ২০ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয় থেকে আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দেয়া হয়। ১ আগস্ট দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুর থেকে মামলা করার জন্য একজন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়। তখন বৃহস্পতিবার সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান মামলাটি করেন।
আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, প্রমাণ দুদকের কাছে রয়েছে। দুদকের আইন অনুযায়ী এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারণে মামলা করা হয়েছে।’
তবে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই আব্দুস সালাম খান বলেছেন, ‘আমার আয়-বহির্ভূত কোনো সম্পদ নেই। দুদক অনুসন্ধান করেও তা বের করতে পারেনি। আমার যা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে তা আয়কর বিবরণীতে উল্লেখ আছে।’
তার বিরুদ্ধে দুদকে কোনো মামলা করেছে কি না, সেটিও জানা নেই বলে দাবি করেন সালাম।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক শফিউল্লাহ জানান, ‘আয় বহির্ভূত সস্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়ায় ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এখনও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ চূড়ান্ত হয়নি। নিয়োগের পর তদন্ত কর্মকর্তা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করতে পারবেন।’
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বলেন, ‘মামলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমি নিশ্চিত নই। মামলা হয়ে থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা তদন্তের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একজন অধ্যাপকের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে না এবং এ ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদেরকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. ইমরুল কায়েস খান, শোয়েব মাহমুদ এবং সামসুর রহমান বাদল।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দু কুমার রায়।
আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব জানান, কমিটি গঠনের আদেশের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসকে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম কেন সরবরাহ করা হবে না তা জানতে চেয়েছে আদালত।
এ ছাড়া কেমিক্যাল রক্ষণাবেক্ষণে জন্য সুনির্দিষ্ট স্থান নির্ধাণন করার নির্দেশনা ও কেমিক্যাল ডিপোতে সংরক্ষিত কেমিক্যালের পরিমাণ, কী ধরনের কেমিক্যাল রাখা হবে তা প্রদর্শনের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
গত ৪ জুন রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অর্ধশত মানুষ নিহত এবং আহত হয় শতাধিক।
ওই ঘটনায় নিহত ও আহতদের জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত ২৯ জুন হাইকোর্টে রিট করে দুটি মানবাধিকার সংস্থা ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট’ এবং সিসিবি ফাউন্ডেশনের পক্ষে আইনজীবী পল্লব।
রিটে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব, শিল্প সচিব, বাণিজ্য সচিব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, স্মার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিএম কন্টেইনার বিডি লিমিটেডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালকসহ ২০ জনকে বিবাদী করা হয়। রিটের শুনানি নিয়ে বুধবার এ আদেশ দেয় হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন:উদ্বোধনের একদিন পরেই ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা চলাচলে সরকারি সংস্থা বিআরটিসি বাস বন্ধ করে দিয়েছে জেলা বাস মালিক সমিতি। এমনকি মাঝপথ থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে যাত্রীদের। তাদের সঙ্গে করা হয়েছে দুর্ব্যবহার, বাসের শ্রমিকদের হাত পা কেটে দেয়ার হুমকিও এসেছে।
পরিবহন মালিকদের কাছে সরকারি সংস্থার এই করুণ ‘আত্মসমর্পণে’ যাত্রীরা একইসঙ্গে হতাশ ও ক্ষুব্ধ। এর কারণ, বিআরটিসির বাসে ভাড়া যেমন তুলনামূলক কম, সেই সঙ্গে আসনও কিছুটা আরামদায়ক।
এই অবস্থায় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নিলেও রুখে দাঁড়িয়েছে জনতা। বিআরটিসি বাস চলতে দেয়া না হলে বোয়ালমারীতে ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির কোনো বাস ঢুকতে দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তারা।
পদ্মাসেতু চালু হওয়ার আগে থেকেই ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিআরটিসি বাস চলাচলের দাবি উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ ফরিদপুরের নগরকান্দা থেকে বাস চালু করে।
মঙ্গলবার বোয়ালমারী থেকে বিআরটিসি বাস চালু করে কর্তৃপক্ষ। উদ্বোধনের পরদিন বুধবার সকাল ৭টায় বোয়ালমারী টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার গুলিস্তানের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে একটি বাস।
পথে ভাঙ্গা বাস টার্মিনালে এসে যাত্রী তুলতে গেলে সেটিকে আটকে দেয় সেখানকার বাস মালিক সমিতির লোকজন। নামিয়ে দেয়া হয় যাত্রীদের। ফলে চরম বিপাকে পড়েন তারা।
বাসের সুপারভাইজার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বাসটি সকাল ৭টায় ভাঙ্গা টার্মিনালের কাছে পৌঁছালে সেটিকে আটকে দেয়া হয়। আমাকে মারধর করে এবং হাত পা কেটে ফেলার হুমকি দেয়।’
যাত্রী ইমরান ফরহাদ বলেন, ‘আমাদের বাসটি ভাঙ্গা বাস টার্মিনালে আসার পর বেশ কয়েক ব্যক্তি চালকের কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নেয়। তারা চালক ও হেলপারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। যাত্রীদের সঙ্গেও তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।’
বাস বন্ধ করে দেবার খবর বোয়ালমারীতে পৌঁছালে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
বেশ কয়েকজন ক্ষুব্ধ মানুষ ঘোষণা দেন, বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করা হলে ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির কোনো গাড়িই বোয়ালমারীর উপর দিয়ে চলাচল করতে দেয়া হবে না।
বিআরটিসির ম্যানেজার (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বিআরটিসির বাস বন্ধ করার কোনো এখতিয়ার নেই জেলা বাস মালিক গ্রুপের। পরিবহন সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। সেই হিসাবে বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করা ঠিক হয়নি।’
ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান বলেন, ‘বিআরটিসি সারাদেশের ২৩ রুটে যে রুট পারমিট দিয়েছে সেখানে কোন উপজেলার অনুমতি নেই। তাছাড়া জেলা বাস মালিক গ্রুপ থেকেও অনুমতি নেয়নি। ফলে আমরা বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ‘বাস চলাচলের বিষয়ে একটি ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আশা করছি এ সমস্যাটির সমাধান হয়ে যাবে।
‘বিআরটিসির পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর কচুক্ষেতে রজনীগন্ধা মার্কেটে স্বর্ণের দোকানে চুরির মামলায় আসামি আলাউদ্দিন ও শাহজালালকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দুই দিনের রিমান্ড শেষে বুধবার আসামিদের আদালতে হাজির করে তদন্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে রাখার আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে রোববার দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
স্বর্ণের দোকানে চুরির মামলায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার স্বর্ণারটেক গ্রাম থেকে ৫ আগস্ট রাতে আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় কুমিল্লার সদর দক্ষিণ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শাহজালালকে। এ সময় তার হেফাজত থেকে বাদীর শনাক্তমতে উদ্ধার করা হয় ১৬ ভরি ৪ আনা ওজনের স্বর্ণালংকার।
মামলা থেকে জানা যায়, রজনীগন্ধা মার্কেটের নিউ বিসমিল্লাহ্ জুয়েলার্সের মালিক ২৯ জুলাই দুপুরে পার্শ্ববর্তী রূপনগর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে যান। নামাজ শেষে ফেরার পথে তিনি জানতে পারেন যে তার দোকানের শাটার খোলা। তিনি দ্রুত দোকানে গিয়ে দেখেন স্বর্ণের বিভিন্ন ধরনের ৪০ ভরি ও রুপার ৫০ ভরি গয়না চুরি হয়ে গেছে। এ ঘটনার পরদিন রূপনগর থানায় একটি মামলা করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মানব পাচার মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। খালাস দেয়া হয়েছে চারজনকে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল তিন আসামির উপস্থিতিতে বুধবার দুপুরে এ রায় দেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডিতরা হলেন মর্জিনা বেগম, জেসমিন বেগম, মো. টিটু ও সাহাবুদ্দিন। এর মধ্যে জেসমিন বেগম পলাতক।
পরিদর্শক জানান, ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর বায়েজিদ নামের ৮ বছরের এক শিশু নিখোঁজ হয়। পরে বায়েজিদের মা নারায়ণগঞ্জ র্যাব-১১-এর কাছে অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া হচ্ছে। মুক্তিপণ না পেলে বায়েজিদকে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন অপহরণকারীরা। এরপর ১৮ জানুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগং রোড এলাকা থেকে বায়েজিদকে উদ্ধার করে র্যাব।
এ ঘটনায় ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সায়েদাবাদ ও সিদ্ধিরগঞ্জ বাগমারা এলাকা থেকে ৮ জনকে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মানব পাচার আইনে মামলা হয়।
ওই বছরের শেষের দিকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা। এতে বলা হয়, অপহরণকারীরা বায়েজিদকে অপহরণের কথা স্বীকার করেন। একই সঙ্গে তারা আরও অন্তত ১৭টি শিশু অপহরণের কথাও জানান।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রকিব উদ্দিন বলেন, ‘১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে অভিযোগ প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারক চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। পাশাপাশি একটি ধারায় ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর লালবাগ কেল্লার সামনে থেকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) এক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, যেসব মোটরসাইকেলে অতিরিক্ত লক দেয়া থাকে না এবং দুর্বল লক, সেগুলো টার্গেট করত চক্রটি। এরপর চক্রটি তাদের কাছে থাকা মাস্টার চাবি দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ সেকেন্ডের মধ্যে মোটরসাইকেল চুরি করে পালিয়ে যেত। পরে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় এসব মোটরসাইকেল বিক্রি করা হতো।
লালবাগ থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চক্রের মূলহোতা সোহেল ও তার সহযোগী সুনীল, হুমায়ুন, হৃদয়, আওয়াল ও স্বাধীন।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি করা ১০টি মোটরসাইকেল ও চুরিতে ব্যবহৃত বেশ কিছু নকল চাবি উদ্ধার করা হয়।
উপকমিশনার জাফর হোসেন জানান, গত ২৪ জুলাই লালবাগ কেল্লার সামনে থেকে এক এনএসআই কর্মকর্তার মোটরসসাইকেল চুরি হয়। লালবাগ থানায় চুরির অভিযোগ করলে শুরু হয় তদন্ত কার্যক্রম।
তিনি জানান, প্রথমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং এলাকা থেকে চোর চক্রের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাদের দেয়া তথ্যে শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ থেকে চক্রের বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) কে এন রায় নিয়তির নেতৃত্বে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, চোর চক্রের অন্যতম হোতা সোহেল গত ৫ থেকে ৬ বছর ধরে মোটরসাইকেল চুরি করে আসছিলেন। চক্রের সদস্যরা নকল চাবি ব্যবহার করে মুহূর্তেই মোটরসাইকেল চুরি করে পালিয়ে যেতেন। চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আরও পড়ুন:সিরাজগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আব্দুর রহমান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডিত ২২ বছরের শ্রী সঞ্জয় চন্দ্র সরকারের বাড়ি বেলকুচি উপজেলার শোলাকুড়া গ্রামে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, শোলাকুড়া গ্রামের শ্রী পবিত্র সরকারের মেয়ে পূজা সরকারকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রতিবেশী সঞ্জয় চন্দ্র প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিত। পূজা প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এরই মধ্যে পূজাকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার জন্য পাত্র খুঁজতে থাকেন বাবা। পাত্রপক্ষ পূজা সরকারকে দেখতেও আসে।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পূজাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সঞ্জয়। ২০২১ সালের ৩ মে বাড়িতে ঢুকে পূজাকে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যান তিনি।
এ ঘটনায় পূজার বাবা বেলকুচি থানায় হত্যা মামলা করেন। গ্রেপ্তারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সঞ্জয় চন্দ্র। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বুধবার আসামির উপস্থিতিতে আদালত এ রায় দেয়। রায়ের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন:ভারতে নারী পাচার চক্রের মুল হোতাসহ চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
টিকটক তারকা বানানো এবং বেশি বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে ভারতে নারী পাচারে জড়িত এক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডি বলছে, ‘স্ত্রী ও শ্যালিকাকে ভারতে পাচারের ঘটনায় ইউসুফ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই ইউসুফের দেওয়া তথ্যে ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।তারা হলেন- রানা আহমেদ, মো. সুজন মিয়া, মো. সাহাবুদ্দীন, নাইমুর রহমান ওরফে শামীম ওরফে সাগর।’
বুধবার সিআইডি সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান, সিআইডির মানবপাচার প্রতিরোধ ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম ।
তিনি বলেন ‘ভুক্তভোগী ২ নারীকে ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার বাঘাডাঙা সীমান্ত দিয়ে গত বছরের ৪ মে ভারতে পাচার করা হয়। সেখানে থাকা আসামিদের সহায়তায় যৌন পল্লীতে বিক্রি করে দেয়া হয় বলেও জানান তিনি।’
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘যৌন পল্লী থেকে পালিয়ে যায় দুই নারী। পরে ভারতীয় পুলিশের সহয়তায় গত ২২মার্চ বাংলাদেশে আসেন। তাদের দেয়া জবানবন্দির ভিত্তিতে সিআইডির বিশেষ টিম এই মানব পাচার চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।’
চক্রের বিদেশী সদস্যদের তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
মন্তব্য