নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার যোগিপাড়া গ্রামে শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আড়াই বছর বয়সী শিশু আদিল ওই একই গ্রামের আলেপ হোসেনের ছেলে।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
পরিবারের বরাতে তিনি জানান, ‘বাড়ির মধ্যে খেলছিল শিশু আদিল। একপর্যায়ে বারান্দায় চার্জে দেয়া অটো ভ্যানের তারে হাত দিলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শিশু আদিলকে মৃত ঘোষণা করেন।
যশোরের অভয়নগরে নাঈমা খাতুন নামে দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় অভিযুক্ত আমজাদ মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রাম থেকে আমজাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত কোরাইশ মোল্লার ছেলে।
এর আগে গত রোববার রাত ১১টার দিকে বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে ধলিয়ার বিলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোসলেম উদ্দিনের পরিত্যক্ত ডোবায় কচুরিপানার ভেতর থেকে নাঈমা খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় সোমবার রাতে নিহত শিশুটির বাবা মনিরুল বিশ্বাস- আমজাদ মোল্লাকে আসামি করে অভয়নগর থানায় মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, নিহত নাঈমা প্রতিবেশী ও মৎস্য ঘের কর্মচারী আমজাদকে বন্ধু বলে ডাকতো। রোববার বিকেলে আমজাদের মৎস্য ঘেরে খেলা করতে যাচ্ছে বলে বেরিয়ে যায় সে।
সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে না এলে নাঈমাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে পরিবারের লোকজন। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত ১১টার দিকে আমজাদের মৎস্য ঘেরের পাশে মোসলেম উদ্দিনের ডোবায় কচুরিপানার ভেতরে নাঈমার একটি হাত দেখতে পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ নাঈমার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
মনিরুল বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়েকে প্রথমে ধর্ষণ করা হয়েছে। পরে খুন করে লাশ গুম করতে কচুরিপানার ভেতর লুকিয়ে রাখা হয়।’
এ বিষয়ে অভয়নগর থানার ওসি একেএম শামীম হাসান জানান, গ্রেপ্তার হওয়া আমজাদকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরের অদূরে বঙ্গোপসাগরে একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে গেছে। এফবি নিশান নামে ওই ট্রলারে ১৫ জন জেলে ছিলেন। চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ১১ জেলে এখনও নিখোঁজ।
নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে ৫ জনের বাড়ি হাতিয়ার বয়ারচরে এবং ৬ জনের বাড়ি জাহাজমারা ইউনিয়নে।
মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে ভাসানচরের উত্তরে খুটার চরের পাশে ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।
ট্রলার মালিক জাহাজমারা ইউনিয়নের বাসিন্দা লুৎফুল্লা মজিব নিশান জানান, এক সপ্তাহ আগে মাঝিসহ ১৫ জেলে সাগরে মাছ ধরতে যায়। মঙ্গলবার রাতে তারা সাগরের মহিপুর এলাকায় জাল ফেলে মাছ ধরছিলেন।
এ সময় প্রবল ঢেউয়ের মুখে পড়ে জেলেদের নিয়ে ট্রালারটি ডুবে যায়। পরে অপর একটি মাছ ধরার ট্রলার তাৎক্ষণিকভাবে চারজনকে উদ্ধার করতে পারলেও ১১ জনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের খুঁজতে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থাকে অবহিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ওই এলাকায় থাকা অন্যান্য ট্রলারের জেলেদেরও খবর দেয়া হয়।
এ বিষয়ে হাতিয়া কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার ওবায়েদ উল্লাহ জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ট্রলারডুবির খবর পেয়ে সাগরে একটি দল পাঠানো হয়। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। পরে সন্ধ্যায় দলটি ফিরে আসে। বিষয়টি ভোলা কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:নরসিংদীর মাধবদীর চরভাসানিয়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আব্দুস সালাম নামের একজন খুন হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত লোকজন প্রতিপক্ষের অন্তত আটটি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাধবদী থানার ভঙ্গারচরে এই ঘটনা ঘটে।
৬৫ বছর বয়সী আব্দুস সালামের বাড়ি উত্তর চরভাসানিয়া গ্রামে। তিনি কাপড় ব্যবসায়ী ছিলেন।
এলাকাবাসী ও সালামের পরিবারের সদস্যরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই পাইকারচর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ও বর্তমান মেম্বার হারুন মিয়ার মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। সকালে ব্যবসার কাজে সিরাজুল ইসলামের চাচাতো ভাই আব্দুস সালাম গোপলদী যাচ্ছিলেন। পথে তাকে মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা।
স্থানীয়রা আরও জানান, সালামকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের লোকজন প্রতিপক্ষ হারুন মেম্বারের সমর্থকদের অন্তত আটটি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
ভঙ্গারচর নৌ-ফাঁড়ি এবং মাধবদী থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অটো চালক ইয়াছিন মিয়া জানান, সকালে সালাম বাজারে যাচ্ছিলেন তার অটোরিকশা দিয়ে। পথে পাঁচ-ছয়জন সালামকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে নিয়ে যায়। ইয়াছিন ফোনে সালামের বাড়িতে এ খবর জানান।
ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে উত্তর চরভাসানিয়ার কান্দাপড়ার কবরস্থানের পাশে তাকে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়।
সালামের ভাতিজি শাহানাজ বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকালে ৮টার দিকে কাকাকে দেখি নদীর পাড়ে। এরপর শুনি বাজারে যাওয়ার সময় অটো থেকে নামিয়ে নিয়ে যায় হারুন মেম্বারের লোকেরা। ওনাকে মারধর করে মেরে ফেলেছে তারা।’
এ ঘটনার জেরে চরভাসানিয়ার গ্রামের কেরমত আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘর ভাঙচুর হয়েছে। তার ছেলে আক্তার হোসেন, মোক্তার হোসেন, আবুল হোসেনের নদীর পাড়ের টিনে ঘরের ভিতর লুটপাটের চিত্র দেখা গেছে।
তবে অভিযোগকারীদের বক্তব্যে গরমিল পাওয়া গেছে। তাদের অভিযোগ, আব্দুল সালামের বাড়ির লোকজন ভাঙচুর করেছেন।
মাধবদী থানার ওসি রকিবুজ্জামান বলেন, ‘আমরা সিরাজ চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশ থেকে ৬টি গরু উদ্ধার করেছি। আব্দুস সালামের মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিপক্ষের বাড়ি-ঘরে হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এখনও কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি।’
আরও পড়ুন:তিন দিন আগে প্রায় ২ লাখ টাকা হারিয়ে আবারও ফেরত পেলেন বরিশাল নগরীর এক মিল মালিক।
মঙ্গলবার বিকালে নগরীর ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম মর্তুজার কাছ থেকে ওই টাকা গ্রহণ করেন আটা-ময়দার মিল মালিক শংকর দাস।
এ সময় কাউন্সিলর জানান, ওই টাকা রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়ে তার অফিসে রেখে গেছেন এক দিনমজুর। তবে সেই দিনমজুরের ইচ্ছায় তার পরিচয় গোপন রাখেন তিনি।
নগরীর বিসিক এলাকার সুগন্ধা ফ্লাওয়ার মিলের মালিক শংকর কুমার সাহা জানান, গত ৬ আগস্ট বিসিক এলাকার ফ্রেশ বেকারি থেকে তাকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা দেয়া হয়। ওই টাকা একটি শপিং ব্যাগে নিয়ে মোটরসাইকেলে ঝুলিয়ে নগরীর হাটখোলা কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
শংকর সাহা বলেন, ‘বিসিক এলাকার এবড়ো-থেবড়ো রাস্তায় শপিং ব্যাগ ছিঁড়ে পড়ে যায়। হাটখোলা গিয়ে দেখি- টাকাভর্তি ব্যাগ নেই।’
তাৎক্ষণিকভাবে টাকার সন্ধান শুরু করেন শংকর। পথে যে কয়টি দোকানে সিসি ক্যামেরা আছে সবগুলোর ফুটেজ দেখেও টাকার সন্ধান পাননি তিনি। গত ৮ আগস্ট সারাদিন টাকার সন্ধানে মাইকিংও করা হয়। টাকা ফিরিয়ে দিলে পুরস্কার দেয়ারও ঘোষণা দেয়া হয়।
এ অবস্থায় টাকা ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন শংকর। কিন্তু মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তাকে নগরীর ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম মতুর্জা আবেদীন ফোন করেন এবং তার হারানো টাকার পরিমাণ জানতে চান। পরে নিশ্চিত হয়ে বিকালে তার কার্যালয়ে গিয়ে টাকা আনতে বলেন।
শংকর সাহা বলেন, ‘রাস্তায় টাকা কুড়িয়ে পাওয়া ব্যক্তি গরীব লোক। তার পরিচয় জানাতে নিষেধ করেছেন। তাই কাউন্সিলর তার পরিচয় জানাননি। এমনকি তাকে আমি চোখেও দেখিনি।’
এ বিষয়ে কাউন্সিলর মর্তুজা আবেদীন বলেন, ‘টাকা কুড়িয়ে পাওয়া ব্যক্তি একজন শ্রমিক। এক কথায় দিনমজুর। টাকা কুড়িয়ে পেয়ে তিনি মালিকের সন্ধান করতে থাকেন। পরে মাইকিং শুনে স্থানীয় কাউন্সিলর হিসেবে আমার কাছে ওই টাকা জমা দিয়ে যান।’
লোকটি কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা জানিয়ে কাউন্সিলর বলেন, ‘এখনও সমাজে ভালো ও নির্লোভ মানুষ আছে! একজন দিনমজুরের যে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার প্রতি লোভ নেই- তা জানুক মানুষ।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও বাইকের সংঘর্ষে মোহাম্মদ ফজলু মিয়া নামের এক এনজিও কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার বাগড়া ঈদগার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি ওপ্পেলা রাজু নাহা।
ফজলু কুমিল্লার নয়নপুর ব্র্যাক অফিসে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি মৌলভীবাজারের জুরি উপজেলায়।
ওসি জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।
আশুরা উপলক্ষে রংপুরে অনুষ্ঠিত তাজিয়া মিছিলে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টার পর নগরীর শিয়া অনুসারীরা বিহারি ক্যাম্প অধ্যুষিত এলাকাগুলো থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বের হয়।
মিছিলগুলো নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্টেশন বাবুপাড়ার দিকে ফিরে যাবার পথে দাবানল মোড়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
মিছিলে অংশ নেয়া একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, স্টেশন রোডে তিন নম্বর ইস্পাহানি ক্যাম্প ও মুসলিমপাড়া ক্যাম্পের দুই গ্রুপের মধ্যে লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দেয়ার ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশের শক্ত অবস্থানের কারণে দুপক্ষই পিছু হটে।
এর আগে গত রোববার তাজিয়া মিছিলে সব ধরনের অস্ত্র ব্যবহারে নিধেষাজ্ঞা দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পুলিশ। তারপরও মিছিলে লাল কাপড়ে মোড়ানো দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিছিলে অংশ নিতে দেখা গেছে।
শোক পালনের এমন দৃশ্য আর অস্ত্রের প্রদর্শনীতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ধর্মপ্রাণ মুসলিমসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে।
মিছিলে অংশ নেয়া আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদারাও ইমাম হোসাইন (রা.) শহীদ হওয়ার দিনটি উদযাপন করে এসেছেন। মূলত ইমাম হোসাইনের (রা.) মৃত্যুতে শোক জানাতেই তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। কিন্তু এর আগে এত উত্তেজনা দেখিনি। এটা দুঃখের বিষয়।’
তবে মিছিলে অংশ নেয়া মুহিত বলেন, ‘এটা অস্ত্র নয়। দুঃখের চিহ্ন হিসেবে আমরা এগুলো এনেছি। মারামারি করার জন্য নয়। আমাদের বাপ-দাদারাও এসব নিয়ে আসত।’
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার ওসি মাহফুজ রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুটি পক্ষ একটু বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করেছিল। অনেকে গোপনে দেশীয় অস্ত্র এনেছিল। কিন্তু আমরা তা প্রদর্শন করতে দেইনি।’
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঈগল এক্সপ্রেসের চলন্ত বাসে অস্ত্রের মুখে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ছয় আসামিকে ৩ দিন করে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া গ্রেপ্তার ১০ জনের মধ্যে বাকি চারজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক ফারজানা হাসানাত মঙ্গলবার বিকেলে আসামিদের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন।
আদালত পরিদর্শক তানবীর আহম্মদ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়া আসামিরা হলেন রতন, মান্নান, জীবন, দ্বীপ, বাবু ও সোহাগ।
আদালত পরিদর্শক বলেন, ‘আদালতে ছয়জনের ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। বিচারক তাদের ৩ দিন করে রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন। বাকি ৪ আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।’
আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়া আসামিরা হলেন, আসলাম , রাসেল, আলাউদ্দিন ও নাইম।
সোমবার রাতে গ্রেপ্তার ১০ জনকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করে র্যাব।
গত মঙ্গলবার রাতে টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঈগল এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি ও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মধুপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন বাসের এক যাত্রী।
শুক্রবার ভোরে কালিয়াকৈরের টান সূত্রাপুর এলাকা থেকে আসামি আউয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সকালে গ্রেপ্তার করা হয় নুর নবীকে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল টাঙ্গাইল শহরের দেওলা এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে ডাকাত দলের সদস্য রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
তারা শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন এ তিন আসামি।
রোববার রাতে ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আরও ১০ আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
পুলিশের বর্ণনায় যা ঘটেছিল
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী ঈগল এক্সপ্রেসের বাসটি সিরাজগঞ্জ রোডে জনতা নামের খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে। সেখানে ৩০ মিনিটের মতো বিরতি শেষে বাসটি ফের ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে।
পথে তিনটি স্থান থেকে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চারজন করে মোট ১২ জন ডাকাত যাত্রীবেশে বাসে ওঠেন এবং পেছনের দিকে খালি সিটে বসেন।
যমুনা সেতু (বঙ্গবন্ধু সেতু) পার হওয়ার আধা ঘণ্টা পর (রাত দেড়টার দিকে) টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকায় ডাকাতরা বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ছুরি, চাকুসহ দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাসের চালককে সিট থেকে উঠিয়ে হাত-পা বেঁধে পেছনে সিটের নিচে ফেলে রাখে।
টহল পুলিশের কাছে ধরা পড়া এড়াতে তারা বাসটিকে গোড়াই থেকে ইউটার্ন করে এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ রোড ধরে যেতে থাকে। এই সময়ের মধ্যে ডাকাত দল বাসটির জানালার পর্দা ও যাত্রীদের পরনের বিভিন্ন কাপড় ছিঁড়ে চোখ এবং হাত বেঁধে ফেলে।
পরে ডাকাতরা বাসের ২৪ যাত্রীর কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। বাসের এক নারীকে পাঁচ-ছয়জন ধর্ষণ করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য