চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে উত্তপ্ত ক্যাম্পাস। অভিযোগ উঠেছে, ৩৭৬ সদস্যের বিশাল এই কমিটিতে হত্যা মামলার আসামি, চাঁদাবাজিতে অভিযুক্ত, অছাত্র, বিবাহিত, চাকরিজীবী এবং বিএনপি ও জামায়াত-সংশ্লিষ্ট অনেকে স্থান পেয়েছেন।
চবি শাখা ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা এই কমিটির বিরোধিতায় ক্যাম্পাসে দুদিন ধরে অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন।
চবি ছাত্রলীগের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই কমিটিতে স্থান পেয়েছেন ৩৭৬ জন। এর মধ্যে সহসভাপতি পদে আছেন ৬৯ জন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে স্থান পেয়েছেন ১১জন।
হত্যা মামলার আসামি শীর্ষ পদে
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন রাজু মুন্সী। তিনি হিসাববিজ্ঞান বিভাগে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হলেও এখনও পাস করতে পারেননি। ছাত্রত্ব না থাকলেও থাকেন আবাসিক হলে।
কমিটিতে পদ পাওয়া এই নেতা ২০১৩ সালে ঘটে যাওয়া সিআরবি জোড়া খুন মামলার আসামি। এ ছাড়া চলতি বছরের ৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের এক শিক্ষককে মারধর ও হত্যার হুমকি দেন এই ছাত্রনেতা।
সহসভাপতি পদ পাওয়া প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয়ের নামেও আছে হত্যা মামলা। চবির আলোচিত ছাত্রলীগ কর্মী তাপস হত্যা মামলার আসামির তালিকায় তার নাম রয়েছে।
তাপস হত্যা মামলার আরেক আসামি এস এম জাহেদুল আউয়াল নতুন কমিটিতে সহসভাপতি পদ পেয়েছেন।
এ ছাড়া বিভিন্ন ঘটনায় মামলার আসামি হয়েছেন এমন অনেকেই কমিটিতে ওপরের সারির পদে আসীন হয়েছেন বলে নেতাকর্মীদের অভিযোগ।
রামদায় ধার দেয়া দুই কর্মী সহসভাপতি পদে
২০১৫ সালে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানানোকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগের সেই সময়ের সভাপতি আলমগীর টিপু ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বীর অনুসারী নেতা-কর্মীদের সৃষ্ট অস্থিরতার সময়ে দুই শিক্ষার্থী ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসেন।
২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষার পরদিন একটি জাতীয় দৈনিকে একটি ছবি ছাপা হয়। সেখানে দেখা যায়, শাখা ছাত্রলীগের সেই সময়ের সভাপতি আলমগীর টিপুর দুই অনুসারী শাহজালাল হলের তৃতীয় তলার বারান্দায় রামদায় ধার দিচ্ছেন। তারা হলেন মিজানুর রহমান খান ওরফে শ্রাবণ মিজান ও মোফাজ্জল হায়দার ইবনে হোসাইন ওরফে টাইগার মোফা।
এই ছবি প্রকাশের পরপর ক্যাম্পাসে হইচই শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই দুই কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করে। এ ছাড়া ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাদের কোনো পদে রাখা হয়নি।
বিতর্কিত সেই দুজন এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি পদ পেয়েছেন। এ দুজনই বর্তমানে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর অনুসারী।
আজীবন বহিষ্কৃত হয়েও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠনবহির্ভূত কাজে জড়িত থাকার দায়ে ২০১৬ সালে ছয়জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
তার হলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সে সময়ের সহসভাপতি মো. রাকিব উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আরমান, যুগ্ম সম্পাদক আবু তোরাব পরশ, আপ্যায়ন সম্পাদক মিজানুর রহমান, সদস্য সাইদুল ইসলাম সাঈদ ও আরিফুল হক টিপু।
আজীবন বহিষ্কার হয়েও বর্তমান কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন সাঈদুল ইসলাম সাঈদ। তিনি ইকবাল হোসেন টিপুর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
কীভাবে তার নাম কমিটিতে এলো তা জানার জন্য ইকবাল হোসেন টিপুকে ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত নেতাও আছেন কমিটিতে
বিশ্ববিদ্যালয়ের বগিভিত্তিক গ্রুপ বিজয়ের নেতা মো. ইলিয়াস পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পদক পদ পেয়েছেন। তিনি আগের কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছিলেন। নিজের কর্মীদের অনেককে পদবঞ্চিত করার অভিযোগে তাকে ‘মাদক কারবারি’ আখ্যা দিয়ে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন বিজয়ের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। তাদের দেয়া পাঁচ দফা দাবির প্রথমটিই ছিল, মো. ইলিয়াসকে কমিটি থেকে বহিষ্কার করতে হবে। তাকে দুই মাস আগে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয় বলে জানান বিজয় গ্রুপের আরেক পদবঞ্চিত নেতা দেলোয়ার হোসেন।
এ বিষয়ে মো. ইলিয়াস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তারা যদি আমাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাহলে আমার কাছে পদ চায় কীভাবে? তাদের দায়িত্ব কি আমি নেব? আর আমি কীভাবে পদ দেব? আমি কি সাইনিং অথরিটি, নাকি কমিটি আমি গঠন করেছি?’
ইলিয়াস আরও বলেন, ‘ক্ষোভের বশে অনেকে অনেক কিছুই বলতে পারে। ২০১০ সাল থেকে আমি রাজনীতি করছি, গ্রুপ চালাচ্ছি। আমার নামে মাদক বিষয়ে অভিযোগ থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বসে আছে কেন? আমি যদি কোনো অপরাধ করে থাকি, কোনো মামলা বা অভিযোগ যদি থাকে তাহলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।’
এক ভাই ছাত্রদলে, অন্য ভাই ছাত্রলীগে
পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহসভাপতি পদ পাওয়া আবু বক্কর তোহা শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিনের আপন ভাই। এর সত্যতা তোহা নিজেও স্বীকার করেছেন। তবে তার ভাইয়ের সঙ্গে পরিবারের কোনো যোগাযোগ নেই বলে তিনি দাবি করেন।
কমিটিতে চাকরিজীবীর নাম
বর্তমান কমিটিতে কয়েকজন চাকরিজীবীও স্থান পেয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে উপনাট্য ও বিতর্ক বিষয় সম্পাদক পদ পেয়েছেন অনুপম রুদ্র। তিনি চবি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে দেড় বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন।
এ ছাড়া সহসভাপতি পদ পাওয়া এস এম জাহিদুল আউয়াল চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।
নিজের অজান্তেই কমিটিতে পদ
নিজের অজান্তেই কমিটিতে সহসভাপতি পদ পেয়ে বসে আছেন বিজন চৌধুরী নামে একজন। ২০১৩-১৪ সেশনের এই ছাত্র দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়ে আর লেখাপড়া চালিয়ে যাননি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী হিসেবে নিজেকে দাবি করলেও কমিটিতে তার নাম আছে তা তিনি নিজেই জানতেন না।
বিজন বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বগিভিত্তিক রাজনীতির বিজয় গ্রুপের একজন কর্মী ছিলাম। তবে অপরাজনীতির শিকার হয়ে আমি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতি অনেক আগেই ছেড়ে দেই।’
মানা হয়নি গঠনতন্ত্র ও জ্যেষ্ঠতার ক্রম
ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের প্রথম ভাগের ৬ নম্বর ধারার (সাংগঠনিক কাঠামো) ‘জ’ নম্বরে বলা আছে, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ সাংগঠনিক জেলা হিসেবে গণ্য হবে।’
একই ভাগের ধারা ১০ থেকে জানা যায়, ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা শাখায় সহসভাপতি হতে পারবেন ২১ জন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন ৯ জন। সাংগঠনিক সম্পাদকও হতে পারবেন ৯ জন। কিন্তু চবি ছাত্রলীগের কমিটিতে সহসভাপতির পদ পেয়েছেন ৬৯ জন। আর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পেয়েছেন ১১ জন করে।
কমিটি গঠনে জ্যেষ্ঠতার ক্রম মানা হয়নি- খোদ পদ পাওয়া নেতারাই এমন অভিযোগ করেছেন। চবির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই কমিটিকে তারা ‘বিশৃঙ্খল’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
নতুন কমিটিতে সহসভাপতি পদ পাওয়া রকিবুল হাসান দিনার বলেন, ‘এই কমিটি নিয়ে আমরা পুরোপুরি অসন্তুষ্ট। বিশৃঙ্খল একটি কমিটি হয়েছে। সিনিয়র-জুনিয়রের কোনো ক্রম নেই। ক্যাম্পাস ও রাজনীতি ছেড়ে দেয়া অনেকেই কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। কমিটি নিয়ে প্রত্যাশার বিন্দু পরিমাণও পূরণ হয়নি। এর দায়ভার চবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের।’
সহসভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় বলেন, ‘চবি ছাত্রলীগের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য কমিটি এটি। এই কমিটিতে চাকরিজীবী, বিবাহিত, রাজনীতি ছেড়ে চলে যাওয়া ও রাজনীতি না করা অনেকেই পদ পেয়েছেন। কমিটিতে সিনিয়রকে জুনিয়র পোস্ট আর জুনিয়রকে সিনিয়র পোস্ট দেয়া হয়েছে। গঠনতন্ত্র মানা হয়নি। কোনো শৃঙখলাও নেই। বিশাল হলেও এটাকে পকেট কমিটি বলা যায়।’
তিনি অভিযোগ করেন, সভাপতি ও সেক্রেটারি তাদের অনুসারীদের বেশি পদ দিয়েছেন। ফলে তার অনুসারীরা বঞ্চিত হয়েছেন।
তার বিরুদ্ধেও যে মামলা আছে তা স্বীকার করে প্রদীপ বলেন, ‘শুধু তাপস হত্যা নয়; ২০১৪ সালে আমানত হলের শিবির সেক্রেটারি মামুন হত্যা মামলায় আসামির তালিকায়ও তার নাম রয়েছে।
ভাইরাল ২ পাতা, সত্যতা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না
এদিকে কমিটি ঘোষণার পর আরও দুই পাতা ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তাতে আরও ৫০ জনের নাম সহসভাপতি পদে আছে। তবে এই দুটি পেজের সত্যতা ও কত সদস্যের কমিটি সেটি নিশ্চিত করে বলছেন না দায়িত্বশীল কেউই।
যারা পদ দিলেন, তারাই এড়াচ্ছেন সাংবাদিকদের
কমিটি নিয়ে বিতর্ক ও অভিযোগের বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুকে বেশ কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও প্রতিবারই তিনি লাইন কেটে দেন।
সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রশ্ন শুনে লাইন কেটে দেন। ফলে তার মন্তব্যও পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার কল দেয়া হলে তারা ফোন ধরেননি।
চবি ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে বিষয়গুলো সামনে আসছে সেগুলোর তথ্য-প্রমাণসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে জমা দিলে আমরা তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।’
কারা জমা দেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা অভিযোগ করছেন, যারা অভিযোগ করতে চান তারা জমা দেবেন। প্রয়োজনে নাম গোপন রেখেও দপ্তর সেলে অভিযোগ জমা দিতে পারেন।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিতু বলেন, ‘কমিটির সদস্যসংখ্যা নিয়ে অনেক জটিলতা আছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আজ বা কাল বসব। এরপর সবিস্তারে বলব।’
গঠনতন্ত্র মানা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কীভাবে কী হলো, বিষয়গুলো কীভাবে সুরাহা করা যায়, তা নিয়ে আমরা কথা বলছি। আমরা পরে জানাব।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য