চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ না পাওয়ায় অনির্দিষ্টকালের অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন পদবঞ্চিত বিজয় গ্রুপের নেতা-কর্মীরা।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের আশ্বাসে মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন তারা। আন্দোলনকারীরা শিক্ষা উপমন্ত্রীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করে আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা বিজয় গ্রুপের পদবঞ্চিত নেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের একমাত্র নেতা ও অভিভাবক মহিবুল হাসান চৌধুরী। আমাদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেছেন, আমাদের দাবিগুলো নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে কথা বলবেন। তাই আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’
এর আগে শিক্ষা উপমন্ত্রী সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কঠোর হওয়ার কথা বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন।
সেখানে মন্ত্রী লেখেন, ছাত্র সংগঠনের পদ-পদবির বিষয়ে কোনো দাবি থাকলে সংগঠনের যেকোনো কর্মী, নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। সাংগঠনিক দাবি থাকলে সেটি সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে সমাধান করা যায়। কিন্তু সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট, ভাঙচুর করা, অপহরণ করা, অপরাধ ও হত্যার হুমকি দেয়া কোনোভাবেই ছাত্র সংগঠনের আদর্শিক কর্মীর কাজ হতে পারে না।
যারা এসব করছে তারা নিজেদের স্বার্থেই অরাজকতা করছে, তাদের কাছে সংগঠন বা শিক্ষার মূল্য আছে বলে মনে হয় না। নিজেদের সাংগঠনিক দাবিতে অপরাধমূলক সহিংসতা যারা করছে, তাদের বিষয়ে সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অত্যন্ত কঠোর হওয়া প্রয়োজন।
তিন বছর পর গত রোববার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এর পরপরই ঘোষিত কমিটিতে পদবাণিজ্য ও অছাত্রদের রাখার অভিযোগ এনে বিক্ষোভ-অবরোধ করছেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা।
রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে তালা দেন বিজয় গ্রুপের নেতা-কর্মীরা। তাদের দাবি, বিজয় গ্রুপের আরেক নেতা ও কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া মো. ইলিয়াসকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করা হোক।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের সদর উপজেলার চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় নগদ এজেন্ট আবুল হোসেন খলিফার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
সরেজমিনে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার ১২১ নং চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি শিক্ষার্থীদের ১ হাজার ৯৫০ টাকা এবং প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরকে ১ হাজার ৪৫০ টাকা তাদের মোবাইল অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
উপবৃত্তির এই টাকা পেতে অভিভাবকদের প্রত্যেককেই ‘নগদ’ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। এই সুযোগটিই কাজে লাগান বিদ্যালয়ের পাশে বাংলাবাজার এলাকার নগদ এজেন্ট আবুল হোসেন খলিফা। অ্যাকাউন্ট খোলার সময় তিনি কৌশলে সবার গোপন পিন নম্বর জেনে নিয়েছিলেন।
এ অবস্থায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি ও স্কুল ড্রেসের টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন খলিফা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সালিশের মাধ্যমে তাকে জরিমানা করেন এবং শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি আদায় করেন।
কিন্তু কয়েকজনকে ফেরত দিলেও বাকিদের টাকা দিতে গড়িমসি করছেন খলিফা। এ জন্য তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাদিয়ার মা সাফিয়ে বেগম বলেন, ‘আমার মোবাইলে টাকা আসছে, কিন্তু আমি কোনো টাকা পাইনি। পরে নগদের অফিসে গেলে তারা জানায় আমার মোবাইলে টাকা আসছিল কিন্তু কেউ তা উঠিয়ে নিয়ে গেছে। আমার নগদের পিন নম্বর শুধু আবুলই জানত। আমি আমার মেয়ের টাকা ফেরত চাই।’
শিক্ষার্থী রোহান ও শ্রাবণীর ফুপু চায়না বেগম বলেন, ‘আমার ভাতিজার টাকা আসেনি। আর ভাতিজি ১ হাজার ৯০০ টাকার মধ্যে ১ হাজার পেয়েছে। এই ঘটনার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, ‘শিক্ষার্থীদের বই, খাতা ও স্কুল ড্রেস কেনার জন্য নগদ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা দিয়েছে সরকার। সেই টাকা এজেন্ট আবুল আত্মসাৎ করেছে বলে অভিভাবকরা স্কুলে এসে অভিযোগ করেছেন। পরে আমরা স্থানীয় ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।’
কিছু টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত আবুল বলেন, ‘আমি কিছু টাকা নিয়েছিলাম। আমার ভুল হয়েছে। এ জন্য আমি ক্ষমা চাই। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের কথামতো কিছু টাকা আমি দিয়ে দিয়েছি।’
ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখনও যদি কোনো শিক্ষার্থী টাকা না পায় তা হলে তাদের টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করব।’
এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সৈয়দাতুন নেছা রুপা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টাকা হাতিয়ে নেয়ায় ওই এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মাদারীপুর সদর উপজেলার ইউএনও মো. মাইনউদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী বা তাদের পরিবারের কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের (একাংশ) নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। কার্যনির্বাহী এই কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাফিস আহমদ।
সোমবার নীল দল কার্যনির্বাহী পর্ষদ নির্বাচন-২০২২-এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. সৈয়দ আলম এ ফল ঘোষণা করেন। নির্বাচনে কোনো পদেই বিরোধী প্রার্থী না থাকায় সংগঠনটির গঠনতন্ত্রের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
মোট ১১ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটির সদস্যরা হলেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম, ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছগীর হোসেন খন্দকার, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. কামাল হোসেন।
এ ছাড়া রয়েছেন সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ঝুমুর আহমেদ, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক, চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইমাম হোসেন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেওয়ান বদরুল হাসান এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কে এম সুজাউদ্দিন।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যনির্বাহী পর্ষদের প্রথম সভায় সদস্যদের মধ্য থেকে সহসভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে।
নির্বাচনে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ এম এম গোলাম আদম ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামীমা আক্তার কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন:জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননার দায়ে বরিশালের এক শিক্ষককে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শামিম আহমেদ সোমবার দুপুরে এ রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুর রহমান।
তিনি জানান, আপিল শর্তে আসামিদের ১৫ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে আদালত।
সাজা পাওয়া আসামি হলেন বরিশাল সদর উপজেলার কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতিও।
২০১৯ সালে কাউনিয়া থানায় এই মামলা করেছিলেন কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আব্দুল বারেক।
সে বছর প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপনের অনুরোধ জানান বাদী। স্কুলে এই অনুষ্ঠান করায় অনীহা প্রকাশ করেন শফিকুল। পরে বাদী ও অন্য শিক্ষকদের চাপে জন্মদিন উদযাপনে রাজি হন তিনি।
ওই বছরের ১৭ মার্চ সকালে বঙ্গবন্ধুর ছবিতে শিক্ষকরা শ্রদ্ধা জানান। এ সময় প্রধান শিক্ষক শফিকুল তাচ্ছিল্য করে বাম হাত দিয়ে একটি ফুল বঙ্গবন্ধুর ছবির সামনে ধরেন। উপস্থিত লোকজন এর প্রতিবাদ জানান। তাকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়।
এতে বঙ্গবন্ধুর সম্মানহানি হয়েছে জানিয়ে বাদী মামলা করেন। সাতজনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত প্রধান শিক্ষক শফিকুলকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়।
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুর পাশে না থাকলে দেশ এতো দ্রুত স্বাধীন হতো না। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকাকালীন বঙ্গমাতা গেরিলা হিসেবে কাজ করতেন।’
সোমবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য এ কথা বলেন।
এর আগে হল প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের নেতৃত্বে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখনই কারাবরণ করেছেন তখন বঙ্গমাতা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।’
বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষকবৃন্দ, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা, হলের হাউজ টিউটরবৃন্দ এবং হলের ছাত্রীরা।
এ সময় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে ছাত্রী হল মিলনায়তনে একটি কর্নারের উদ্বোধন করা হয়।
আরও পড়ুন:পাঠকপ্রিয় থ্রিলার সিরিজ ‘মাসুদ রানা’ র ২৬০টি ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব বা মালিকানা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দিয়ে বইগুলোর বিক্রির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের করা লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) মঞ্জুর করে সোমবার এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুরাদ রেজা ও হামিদুল মিসবাহ। আর রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও মো. ইফতাবুল কামাল।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান নিউজবাংলাকে বলেন, “কাজী আনোয়ার হোসেনের পক্ষে পরিবারের করা লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে আপিল তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ‘মাসুদ রানা’ র ২৬০টি ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বই বেচাবিক্রির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছে আদালত। এর ফলে এই ৩১০টি বই বেচাবিক্রি করা যাবে না। সেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে।”
মামলা থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই শেখ আব্দুল হাকিম ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব বা মালিকানা দাবি করে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ দাখিল করেন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আইনি লড়াই শেষে ২০২০ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেয়। পরে এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কাজী আনোয়ার হোসেন হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করে।
রুলে এখতিয়ারবর্হিভূত হওয়ায় কপিরাইট অফিসের ওই সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সংস্কৃতি সচিব, কপিরাইট অফিস, রেজিস্ট্রার অফ কপিরাইটস ও কপিরাইট বোর্ডকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
ওই রুলের দীর্ঘ শুনানি শেষে হাইকোর্ট গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর রিট খারিজ করে রায় ঘোষণা করে। এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা হয়। আদালত কাজী আনোয়ারের পরিবারের সদস্যদের এই আবেদন গ্রহণ করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দেয়।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ ও মানুষের জন্য কীভাবে আত্মত্যাগ করতে হয় নারীরা তা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিতে পারেন।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ’-এর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
গণভবন থেকে এই আয়োজনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি ‘বঙ্গমাতা: এ প্যারাগন অফ উইমেন লিডারশিপ অ্যান্ড ন্যাশন- বিল্ডিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনও উদ্বোধন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি মিসেস সেলিনা হোসেন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া হক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতির পিতার পাশে থেকে আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণা ও সাহস জুগিয়েছেন। সংসার, রাজনীতিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সঠিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
‘বঙ্গবন্ধু রাজবন্দি থাকাকালে তিনি বিভিন্ন মামলা মোকাবিলা, সংসার দেখাশোনা এবং দলীয় কর্মীদের আর্থিক সহযোগিতা করতেন। সংসারের কোনো ব্যাপারে তিনি বঙ্গবন্ধুকে বিরক্ত করতেন না। জেলখানা থেকে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন বার্তা সংগ্রহ করে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছে দিতেন।’
বঙ্গমাতার নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেন্টার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বলেন, ‘বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ ইতিহাসের প্রতিটি পরতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য অবদান রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের অনেক সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিজেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্রী হিসেবে গর্ব অনুভব করি।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। বঙ্গমাতার নামে প্রতিষ্ঠিত এ সেন্টার জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-বিষয়ক গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে কার্যকর অবদান রাখবে বলে আশা করি।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সম্মেলনের দুটি সেশনে চারটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
আরও পড়ুন:জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রোববার বেলা দেড়টার দিকে সড়ক অবরোধ করেন তারা।
এর আগে বেলা ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন শিক্ষার্থীরা।
মহাসড়কে সমাবেশ চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক তাসবিবুল গণি নিলয় বলেন, ‘সরকার জনগণের ভোগান্তি কমানোর বিপরীতে মন্ত্রী, আমলাদের পকেট গরম করার জন্য কাজ করছে। দরিদ্র মানুষগুলো মূল্যবৃদ্ধির পর কীভাবে বাঁচবে তা সরকারের চিন্তার বিষয় নয়।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘সরকার জনগণের কথার কোনো তোয়াক্কা করছে না। এখন জনগণ কীভাবে বাড়তি খরচ মেটাবে। প্রতিমুহূর্তে সরকার আমাদের শোষণ কাঠামোর মধ্যে ফেলছে। এভাবে আমাদের রক্ত চুষে খাওয়া হচ্ছে। আমরা না খেয়ে মরব, আমাদের আমলারা বিদেশে আয়েশ করবেন।’
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, ‘দেশে হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এখন সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। দেশে উৎসবের মতো করে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এর পেছনে একের পর এক খোঁড়া যুক্তি দেয়া হচ্ছে।
‘কিন্তু আমরা সবকিছু সয়ে নিচ্ছি, দিন দিন মেরুদণ্ডহীন হয়ে যাচ্ছি। শুধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সারা দেশ থেকেই মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ আসা উচিত।’
দেশে জনগণের ওপর নানা ধরনের নিপীড়ন চলছে বলে জানান নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অংশুমান রায়। তিনি বলেন, ‘এর সঙ্গে যোগ হয়েছে, দ্রব্যমূল্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। জনগণের কাছ থেকে টাকা বের করে নিতে ব্যবসায়ীবান্ধব সরকার এটি করেছে। এখানে বৈশ্বিক পরিস্থিতির দোহায় দেয়া হচ্ছে।
‘জনগণের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। এ কারণে আমরা আজ সাময়িকভাবে রাস্তায় নেমেছি। আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, সারা দেশের শ্রমিক-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নামব।’
পরে বেলা ২টার দিকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য