বগুড়ার গাবতলীর লাঠিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে মারধরের অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরি- জিডি হয়েছে। গত সোমবারের ওই ঘটনায় অধ্যক্ষ রুস্তম আলীর করা জিডিতে মারধরের কোনো কারণ জানাননি।
অবশ্য অনেকেই বলছেন, এর মূলে রয়েছে কলেজের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং উন্নয়ন প্রকল্পের টাকার ভাগাভাগি।
কমিটি নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব নেই দাবি করে অধ্যক্ষ রুস্তম আলী বলেছেন, কলেজের উন্নয়ন কাজে বাধা দিতেই এই হামলা হয়েছে।
অধ্যক্ষ রুস্তম আলীর করা জিডিতে বলা হয়, গত সোমবার সকালে কলেজে যাওয়ার পথে নামাদাঁড়াইল নামক স্থানে তার অটোরিকশার গতিরোধ করেন কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি। তারা ওই শিক্ষককে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারেন।
রুস্তম আলী লাঠিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে ২৪ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন। গত ২৪ এপ্রিল তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান। ১০ মাস আগে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ রোকেয়া পারভীন অবসরে গেলে আব্দুল জলিল নামে আরেক শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরে রাজশাহী বোর্ড থেকে রুস্তম আলীকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়।
দায়িত্ব পেয়ে গত মে মাসে অধ্যক্ষের সুপারিশে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটির সভাপতি হন মোমিনুল হক শিলু। তিনি গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। এ ছাড়া কমিটিতে আরও চারজন সদস্য রয়েছেন।
হামলার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রুস্তম আলী বলেন, ‘নজরুল, এনামুল, আজাদুর, পাপুলসহ অন্তত ২০ জন আমার পথরোধ করেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন দিচ্ছি না সে জন্য তারা গালিগালাজ করে আমাকে হুমকি দেন কুচি কুচি করে কেটে ফেলবেন বলে।’
হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৬ জুলাই প্রতিষ্ঠানের সভায় আলোচনা সাপেক্ষে স্কুল ও কলেজের উন্নয়নমূলক কাজের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ কাজে প্রায় ৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। উন্নয়ন কাজ শুরুর পর থেকেই তারা হুমকি দিতে থাকেন।’
রুস্তম আলী আরও বলেন, ‘সবশেষ সোমবার আমাকে লাঞ্ছিত করে তারা। এ ঘটনায় গাবতলী থানায় একটা জিডি করা হয়েছে, আদালতে মামলাও করা হবে।’
তিনি দাবি করেন, কমিটি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তিনি এই হামলার বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম দাবি করেন, লাঠিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠায় তার পরিবারের অবদান রয়েছে। তার আপন বড় চাচা মোজাম্মেল হক প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য ছিলেন।
১৯৬৫ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা হয়। ২০০২ সালে কলেজ শাখা চালু হয়। আর ২০০৪ সালে এমপিওভুক্ত হয় প্রতিষ্ঠানটি। নজরুল ইসলাম নিজেও ২০০১ সাল থেকে পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি ছিলেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। কিন্তু আমরা কেউ জানতাম না। অথচ শিলু কমিটির সভাপতি হয়ে গেল। তারা গোপনে এই কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হিসেবে রূপ দেয়ার চেষ্টা করছে।’
হামলার বিষয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রুস্তম আলীর পথরোধ আমি করিনি। সেখানে উপস্থিতও ছিলাম না। গত শনিবার স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মাঠে অনুষ্ঠান করেছিল। অধ্যক্ষ তাদের অনুষ্ঠানে আসেননি। এমনকি প্রতিষ্ঠানের টয়লেটের রুম বন্ধ করে রেখেছিলেন। এতে ওই ছেলেরা একটু মনঃক্ষুণ্ণ ছিল। এ কারণে তারাই পথরোধ করে। তবে সেখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
ওই দিনের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া কোনো প্রাক্তন শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত আরএইচএম আজাদুর রহমান একই কথা বলেন। তিনি জানান, লাঠিগঞ্জের স্কুল নিয়ে দুটি গ্রুপ আছে। এক গ্রুপে আছেন শিলু ও শাহাদৎ আলম সাগর। সে গ্রুপটি অধ্যক্ষ রুস্তম আলীকে ব্যবহার করছে। আরেকটি নজরুলের গ্রুপ।
আজাদুর পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফান্ডের হিসাব নিয়ে স্থানীয়ভাবে অনেক কথা ছড়িয়েছে। শিক্ষকদের বেতনের সঙ্গে টিউশন ফি জমা হওয়ার কথা। কিন্তু অধ্যক্ষ রুস্তম আলী সেগুলো দেননি। সেখানে নয়-ছয় হয়েছে।’
আর্থিক বিষয়গুলো প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ রুস্তম আলী বলেন, ‘আগের অধ্যক্ষ অবসরে যাওয়ার আগে কী করেছেন জানি না। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর পরিচালনা কমিটির সভায় সব হিসাব দিয়েছি। শিক্ষকদের কিছু টিউশন ফি পাওনা আছে, এটা সত্যি। তবে সম্প্রতি স্কুল ও কলেজে সংস্কারের কাজে হাত দেয়া হয়েছে। এ জন্য শিক্ষকদের টিউশন ফি বকেয়া রয়েছে, তবে এগুলো তারা পাবেন; এখানে টাকার কোনো নয়-ছয় হয়নি।’
কমিটির রেষারেষির বিষয় নাকচ করে দেন লাঠিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি মোমিনুল ইসলাম শিলু।
তার দাবি, কমিটি নিয়ে কোনো ঝামেলা নেই, স্কুলেও কোনো সমস্যা নেই। যারা অধ্যক্ষের ওপর হামলা করেছেন তারা সন্ত্রাসী। তাদের কাজ হুমকি দেয়া, মারধর করা।
নজরুল ইসলামের বিষয়ে সভাপতি শিলু বলেন, ‘উনি স্কুলের কেউ নন। কমিটিতেও নেই। তার স্কুলের বিষয়ে কথা বলারও কিছু নেই, স্কুলের উন্নয়নের কাজের ভাগ নেয়ার জন্য তারা এখন এসব করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের ওপর হামলা করেছে। একজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আমার এর বিচার চাই। এ জন্য সব ধরনের আইনগত ব্যবস্থা আমরা নেব।’
মারধরের বিষয়ে করা জিডির তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন গাবতলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফজলুল হক। তিনি বলেন, ‘জিডি করার পর এটা আদালত থেকে তদন্তের অনুমতি নিতে হয়। এ জন্য অনুমতিপত্র পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশে সব কাজ করা হবে।’
এ বিষয়ে গাবতলী উপজেলার ইউএনও রওনক জাহান বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনা ঘটার পর আমাকে অধ্যক্ষ রুস্তম আলী বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। বিষয়টি দেখার জন্য পুলিশ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকেই উচ্চ তাপমাত্রায় আলোচনায় রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা। মৃদু, মাঝারি, তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপমাত্রা দেখছে জেলাবাসী। মাঝে তাপমাত্রা সামান্য কমলেও ফের অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের পশ্চিমের এই জেলা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার মানে জেলায় আবারও অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে এই জেলা।
আগের দিন বুধবারও এখানে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। ওইদিন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন তাপমাত্রা নেমেছিল ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেই তীব্র তাপপ্রবাহ বৃহস্পতিবার এসে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে।
জেলা জুড়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবনে অস্বস্তি আরও বেড়েছে। স্বস্তি মিলছে না কোথাও। তীব্র গরমে একটু স্বস্তি পেতে দিনের অধিকাংশ সময় মানুষ গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে।
গরমের প্রভাবে বাড়ছে রোগবালাই। গরমজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে। তীব্র তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ কাজে যেতে পারছে না। নষ্ট হচ্ছে ধান, কলা, আম, লিচুসহ মৌসুমী ফসল।
গোপালপুর গ্রামের কৃষক হান্নান আলী বলেন, ‘এই তাপে মাটে উঠতি ফসল নষ্ট হয়ি যাচ্চি। আর রোদির তাতে মাটে দাঁড়ানু যাচ্চি না। ধানের ক্ষেতে বেশি সেচ লাগচি। তাও আবার দিনের বেলায় পাম্পে পানি উটচি না। রাতি দিতি হচ্চি।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়েছে। জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ রূপ নিয়েছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে। সহসা বৃষ্টি হওয়ার কোনো পূর্বাভাস নেই। চলতি এপ্রিল মাসের শেষ দিন পর্যন্ত আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আইয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
রাজশাহীর বাগমারায় ভাড়া বাসায় আটকে রেখে এক মাস ধরে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার রাতে উপজেলার তাহেরপুর পৌর এলাকার হরিফলার মোড়ের একটি বাসা থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার ও এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক রাজু হোসেন (২৫) পেশায় চা দোকানি। তিনি তাহেরপুর পৌরসভার হরিফলা মহল্লার আবদুর রাজ্জাক শাহের ছেলে।
পুলিশ জানায়, অসুস্থ অবস্থায় তরুণীকে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়ার পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) স্থানান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই তরুণীর বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। ফোনে রাজুর সঙ্গে তার পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৪ মার্চ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফোনে ভুক্তভোগী তরুণীকে তাহেরপুরে নিয়ে আসেন রাজু। পরে তাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় ওঠেন রাজু। সেখানে আটকে রেখে এক মাস ধরে রাজু ওই তরুণীকে ভয় দেখিয়ে ও মারধর করে ধর্ষণ করেন।
এক পর্যায়ে নির্যাতনের শিকার তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে পাশের বাড়ির লোকজন টের পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানান। তিনি থানায় খবর দিলে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ওই বাসা থেকে তরুণীকে উদ্ধার করে। পরে ওই এলাকা থেকে রাজুকে আটক করে পুলিশ। রাতেই তরুণী বাদী হয়ে অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন।
রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মুখপাত্র রফিকুল আলম জানান, মেয়েটার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। আটক তরুণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য