রাজধানীর কাফরুলের একটি ভবনের সাততলা থেকে পড়ে তানিয়া আক্তার নামে ২১ বছর বয়সী এক গৃহকর্মী নিহত হয়েছেন।
গৃহকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান অনিক অবশ্য দাবি করেছেন, তাদের গৃহকর্মী ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ছাদ থেকে পড়ে গেলে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক রাত ৯টায় তানিয়া আক্তারকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
গৃহকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান অনিক বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে সে আমাদের এখানে কাজ করে। আমার শ্বশুরবাড়িতে ১১ বছর, আমার এখানে তিন বছর ধরে কাজ করছিল।’
তিনি বলেন, ‘কী কারণে সে ভবন থেকে লাফ দিয়েছে সেটা বলতে পারব না। তবে তার মানসিক কিছু সমস্যা ছিল।’
নিহত তানিয়ার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের শান্তিবাগ এলাকায়, বর্তমানে কাফরুল থানায় পূর্ব কাজীপাড়ায় থাকতেন।
ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘কাফরুলের একটি ভবন থেকে পড়া এক গৃহকর্মীকে আহত অবস্থায় মেডিক্যালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান। মেয়েটির দুই হাত ভাঙা, মুখমণ্ডলে আঘাত ছিল।’
ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে কাফরুল থানায় জানানো হয়েছে।
সৎমা ও এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বাবাকে গুম করার অভিযোগ তুলেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থী। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাবিত সিয়াম সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ তুলে তার বাবাকে উদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন।
সাবিত সিয়াম লিখিত বক্তব্যে জানান, তার বাবা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী সচিব মো. সোলায়মান আলী তালুকদারকে ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে গুম করা হয়।
মাসুদ মোল্লা নামে যাত্রাবাড়ীর এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রতারণা, সংমার বিরুদ্ধে পিতাকে নির্যাতন ও গুম এবং পিবিআই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রভাবিত হয়ে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার অভিযোগ করেন তিনি।
সিয়াম বলেন, ‘মাসুদ আলম মোল্লা যাত্রাবাড়ীর একজন অসাধু প্রকৃতির লোক। তিনি বাবার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে ফ্ল্যাট বন্ধকের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। কিছুদিন পর তিনি বাবার কাছ থেকে আরও ৩৭ লাখ টাকা ধার নেন। এরপর তিনি ওই ফ্ল্যাট বেদখল দেন।
‘বাবা টাকা ফেরত চাইলে মাসুদ মোল্লা ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের একাউন্ট থেকে (চেক নং-এমসিই ১২২১৯৫৬) ১২ লাখ টাকা এবং উত্তরা ব্যাংক লিমিটেডের একাউন্ট থেকে ১৭ লাখ টাকার (চেক নং-৭৪৯৩৫৬৭) দুটি ভুয়া চেক দেন।’
এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘এ বিষয়ে বাবা ২০২০ সালের ৭ জুন যাত্রাবাড়ী থানায় জিডি করেন। আমার বড় ভাই সাকিব তালুকদার একই মাসের ২২ তারিখ আরেকটি জিডি করেন। আর এই দুঃসময়ে সৎমা মাহফুজা বেগম বাবাকে বাসা থেকে বের করে দেন। অসুস্থ বাবাকে নিয়ে আমি মিরপুরের বাসায় থাকতে শুরু করি। বাবা যখন বাসায় একা থাকতেন তখন সৎমা এসে তার ওপর নির্যাতন চালাতেন। এই পর্যায়ে বাবা মাহফুজা বেগমকে তালাক দেন।
‘তালাকপ্রাপ্ত হয়ে মাহফুজা বেগম কৌশলে সৎবোন ফারিয়া তালুকদারের মাধ্যমে বাবাকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে নির্যাতন চালান। এরপর থেকে আমার বাবা নিখোঁজ। নিজেকে আড়াল করতে ওই বছরের ২২ ডিসেম্বর মাহফুজা বেগম ফতুল্লা থানায় জিডি করেন। বাবাকে উদ্ধারের উদ্দেশ্যে থানায় মামলা করতে চাইলে আমাদেরকেও মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন মাহফুজা বেগম।’
সংবাদ সম্মেলনে জবির এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ কোর্টে আমি মামলা করি। পিবিআই নারায়ণগঞ্জকে মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে আমার বাবা পাগল হয়ে হারিয়ে গেছেন উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেন।
‘আমার বাবা একজন পঙ্গু মানুষ। করোনার সময়ে তিনি কী করে একাকী হারিয়ে যাবেন? সব ঘটনা শুনে, দেখে আমরা নিশ্চিত হই যে বাবাকে গুম করা হয়েছে। আমি বাবাকে ফেরত পেতে প্রশাসনের প্রতি জোর আরজি জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:দেশে সাইবার অপরাধের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের ৫০ দশমিক ২৭ শতাংশ সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। ছবি বিকৃত করে অপপ্রচার, পর্নোগ্রাফি কনটেন্ট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার এবং অনলাইনে ও ফোনে মেসেজ পাঠিয়ে হুমকি দিয়ে মানসিক হয়রানির ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে।
করোনা-পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের প্রবণতা বাড়তে শুরু করেছে। এর ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগেরই বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এর হার ৮০ দশমিক ৯০ শতাংশ।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের (সিসিএএফ) ‘বাংলাদেশে সাইবার অপরাধ প্রবণতা-২০২২’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন গবেষক দলের প্রধান ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সিনিয়র লেকচারার মনিরা নাজমী জাহান।
তিনি বলেন, ‘১৯৯ জন ভুক্তভোগীর মধ্যে মাত্র ৫৩ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে অভিযোগ করেছেন। এটা মোট ভুক্তভোগীর মাত্র ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ২০২১ এর পরিসংখানের তুলনায় মাত্র ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি।
সমস্যা নিয়ে পুরুষ অভিযোগকারীর ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারস্থ হয়েছেন। সে তুলনায় নারী অভিযোগকারীর সংখ্যা কম, মাত্র ১১ দশমিক ০৬ শতাংশ।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েও আশানুরূপ ফল পাননি ৫৫ দশমিক ২৭ শতাংশ ভুক্তভোগী। মাত্র ৭ দশমিক ০৪ শতাংশ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারস্থ হয়ে আশানুরূপ ফল পেয়েছেন।
২০২১ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায়, অভিযোগের পর আশানুরূপ ফল পেয়েছেন মোট ভুক্তভোগীর ২২ দশমিক ২২ শতাংশ, যা ২০২২ সালের পরিসংখ্যানের তুলনায় ১৫ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি। এবারের প্রতিবেদনে প্রত্যাশিত ফল পাওয়ার পরিমাণ অনেকাংশে কমেছে।
প্রাপ্ত উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের আইনি ব্যবস্থা না নেয়ার কারণের মধ্যে ভিন্নতা দেখা গেছে। বিষয়টিকে গোপন রাখতে আইনি ব্যবস্থা নেননি সর্বোচ্চ ২১ শতাংশ ভুক্তভোগী। এছাড়া ১৭ শতাংশ ভুক্তভোগী সামাজিক ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য, ১৭ শতাংশ আইনি ব্যবস্থা নিয়ে উল্টো হয়রানি এড়াতে এবং ১৭ শতাংশ অভিযোগ করেও কোনো লাভ হবে না ভেবে কোনো ব্যবস্থা নেননি।
তবে আশঙ্কাজনক তথ্য হলো, অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো পদক্ষেপ নিতে সাহস করেননি ৭ শতাংশ ভুক্তভোগী। অন্যদিকে ২ শতাংশ ভুক্তভোগী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন আছে তা মনেই করেননি।
সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় সিসিএ ফাউন্ডেশন আট দফা সুপারিশ করেছে।
সুপারিশগুলো হলো- ১. ব্যাপকভাবে সাইবার সচেতনতামূলক কার্যক্রম, ২. জাতীয় বাজেটে সাইবার সচেতনতায় গুরুত্ব দেয়া, ৩. বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সিএসআরে সাইবার সচেতনতা বাধ্যতামূলক করা, ৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাইবার পাঠ অন্তর্ভুক্ত করা, ৫. সাইবার সাক্ষরতা বৃদ্ধি, ৬. সচেতনতামূলক কাজে রাজনৈতিক জনশক্তির সঠিক ব্যবহার, ৭. গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার এবং ৮. অংশীজনদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে সুস্থ সাইবার সংস্কৃতি গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা কাজী মুস্তাফিজের সভাপতিত্বে আলোচকদের মধ্যে ছিলেন ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির প্রেসিডেন্ট মো. ইমদাদুল হক, প্রযুক্তিবিদদের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইসাকা ঢাকা চ্যাপ্টারের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সুলতানা ইশরাত জাহান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সুবিধাভোগীরাই তার খুনি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু।
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিউশনের সেমিনার হলে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
১৪ দলের এই মুখপাত্র বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সুবিধাভোগী কারা ছিল এবং কারা ষড়যন্ত্র করেছে তা জিয়া, মোশতাক ও জাতীয় পার্টির কাজই পরিষ্কার করে দেয়। সেই ষড়যন্ত্র এখনও আছে। কেননা বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা বলেন, ‘ওই সময় আমাদের নেতৃত্ব কেন কোনো ঘোষণা দিতে পারল না, সে কথা আজ বলতে চাই না। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য কুশীলবদের খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিশন গঠন সময়ের দাবি। বিচার বিভাগ হোক বা গণকমিশন হোক, সেটা গঠন করে নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করা হোক।’
সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিছক কোনো ব্যক্তিকে হত্যা নয়। তা ছিল বাংলাদেশকে দ্বিতীয় পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র। সেই কাজ জেনারেল জিয়াউর রহমান পরিকল্পিতভাবে করেছেন। এরশাদ করেছেন। সংবিধানে এখনও সাম্প্রদায়িকতা-সামরিক সরকারের ক্ষত আছে। এগুলো ধীরে ধীরে দূর করতে হবে।’
কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ মেনন অনুষ্ঠানে ছিলেন না। তার পক্ষে সূচনাপত্র পড়ে শোনান দলের নেতা কামরুল আহসান। ওই পত্রে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ষড়যন্ত্র প্রকাশ করতে ‘জাতীয় তদন্ত কমিশন’ গঠনের দাবি জানানো হয়।
একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল নায়ক জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ভাবধারায় ফিরিয়ে নেয়া হয়েছিল। সে কারণে সংবিধান সংশোধন করে জিয়া বিসমিল্লাহ বসান মাথার উপরে। বঙ্গবন্ধু ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধ করেছিলেন। জিয়া সেটা ফিরিয়ে আনেন।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি। অন্যদের মধ্যে কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর পুরানা পল্টনে গ্রাফিক্স মেলা নামের একটি দোকানে প্রিন্টিং প্লেটের বান্ডিল পড়ে আবদুর রহিম নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার বিকেলে ৫টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি নিলে চিকিৎসক সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের দূর সম্পর্কের আত্মীয় রিপন বলেন, ‘আমরা ওই এলাকায় বিভিন্ন দোকানে লেবারের কাজ করি।’
তিনি জানান, বিকেলে গ্রাফিক্স মেলা দোকানে তারা ৫ জন মিলে নতুন মালপত্র আনছিলেন। মালিকের লোকজন তাদের দিয়ে সেখানের অন্য মালামাল সরিয়ে ফেলতে বলে। তখন তারা জায়গা খালি করার কাজ করছিলেন।
সে সময় দোকানে থাকা প্রিন্টিং প্লেটের বান্ডিলের লট আব্দুর রহিমের ওপরে পড়ে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর পান্থপথের আবাসিক হোটেলে নারী চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিককে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আসামি রেজাউল করিম রেজা। তিনি নিজেকে জান্নাতুলের স্বামী হিসেবে দাবি করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, শনিবার আসামি রেজাউলকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির আদালতে হাজির করেন। আসামি স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে চান। তদন্ত কর্মকর্তা ১৬৪ ধারায় তা রেকর্ড করতে আদালতে আবেদন জানান।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলম আসামির জবানবন্দি রেকর্ডের পর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত এ মামলার এজাহার গ্রহণ করে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে আসামি রেজাউলকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জান্নাতুলকে হত্যার বিস্তারিত তথ্য জানা যায়। পুলিশ আসামির রক্তমাখা গেঞ্জি, মোবাইল ফোন ও ব্যাগ জব্দ করে।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকের সঙ্গে রেজাউলের পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২০ সালের অক্টোবরে তারা গোপনে বিয়ে করেন।
পরিবারের অমতে বিয়ে করায় তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন। রেজাউলের একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় তা নিয়ে ঝগড়া হয় দুজনের। এরই সূত্রে রেজাউল সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে জান্নাতুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
গত ১০ আগস্ট জান্নাতুলকে তার জন্মদিন উদযাপনের কথা বলে নেয়া হয় পান্থপথের ‘ফ্যামিলি অ্যাপার্টমেন্ট’ নামের আবাসিক হোটেলে। সেখানে থাকা অবস্থায় রেজাউলের সঙ্গে জান্নাতুলের তর্ক ও ধস্তাধস্তি হয়। রেজাউল ব্যাগে থাকা ছুরি বের করে জান্নাতুলের শরীরে একাধিক আঘাত করেন। একপর্যায়ে গলা কেটে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান।
তালাবদ্ধ রুম থেকে জান্নাতুলের মরদেহ উদ্ধারের পর কলাবাগান থানায় মামলা হয়। জান্নাতুলের পিতা শফিকুল আলম এ মামলা করেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মতিঝিলে একটি ১৮তলা ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম মোহাম্মদ শিপন। বয়স ২২ বছর।
শনিবার বেলা ২টার দিকে ভবনে থাই গ্লাস লাগানোর সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, শিপনের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ নাজিরপুর গ্রামে। তিনি ঢাকায় গ্লাস ফিটিংয়ের কাজ করতেন। শনিবার শাপলা চত্বরসংলগ্ন মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ভবনে কাজ করার সময় শিপন দুর্ঘটনায় পড়েন। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। বিকেল ৪টার দিকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আলী বলেন, ‘১৮ তলা ভবনের একটি কক্ষে গ্লাস ফিটিংয়ের সময় অসাবধানতাবশত পড়ে যান শিপন। খবর পেয়ে আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়েছিলাম। সেখানে তার মৃত্যু হয়।’
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্ট রাজধানীর বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকবে। শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবসে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্যসহ বিভিন্ন স্তরের জনসাধারণ ধানমন্ডি-৩২, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন।
এ সময় ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে বিভিন্ন পরিবহনযোগে ও হেঁটে অসংখ্য নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের আগমন ঘটবে। এ উপলক্ষে ধানমন্ডি–৩২-এর চারপাশে রাস্তায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের যানবাহন সুষ্ঠুভাবে চলাচল নিশ্চিত করতে ও যানজট এড়াতে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর এলাকায় চলাচলরত গাড়িচালক বা ব্যবহারকারীদের ১৫ আগস্ট ভোর থেকে অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত গমনাগমনের জন্য নিচের পথ অনুসরণের অনুরোধ করা হয়েছে:
১. মিরপুর-গাবতলী থেকে রাসেল স্কয়ার-আজিমপুর অভিমুখী যাত্রীবাহী যানবাহন ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোডে ডানে মোড় নিয়ে শংকর-জিগাতলা-সায়েন্সল্যাব হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাবে;
২. নিউ মার্কেট ও সায়েন্সল্যাব থেকে রাসেল স্কয়ার অভিমুখী যাত্রীবাহী যানবাহন ধানমন্ডি ২নং রোড বামে মোড় নিয়ে জিগাতলা-শংকর (সাতমসজিদ রোড) হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাবে;
৩. রেইনবো এফডিসি থেকে রাসেল স্কয়ার অভিমুখী যাত্রীবাহী বাস সোনারগাঁও ক্রসিংয়ে বামে মোড় নিয়ে বাংলামটর দিয়ে শাহবাগ হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাবে;
৪. আমন্ত্রিত অতিথিদের গমনাগমনের পথ: মানিক মিয়া এভিনিউ-ধানমন্ডি ২৭ হয়ে মেট্রো শপিং মলের সামে ডানে মোড় নিয়ে আহসানিয়া মিশন ক্রসিং হয়ে বামে মোড় নিয়ে ৩২নং পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছাবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য