জনঘনত্বের হিসাবে দেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ বাস করে ঢাকা বিভাগে। আর সবচেয়ে কম মানুষের বাস বরিশাল বিভাগে।
বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথম ডিজিটাল ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
সবশেষ জনশুমারির তথ্যানুযায়ী, ঢাকা বিভাগে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস করছেন দুই হাজার ১৫৬ জন। অন্যদিকে সবচেয়ে কম জনঘনত্বের বরিশালে বর্গকিলোমিটারপ্রতি জনসংখ্যা ৬৮৮।
ঢাকার পরই সবচেয়ে বেশি জনঘনত্ব ময়মনসিংহে। সেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করছেন এক হাজার ১৪৬ জন। এরপর রয়েছে রাজশাহী, সেখানে বর্গকিলোমিটারপ্রতি জনঘনত্ব এক হাজার ১২১।
তালিকার ৪ নম্বরে রয়েছে রংপুর বিভাগ। সেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস করছেন এক হাজার ৮৮ জন।
বন্দরসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম হলেও সামগ্রিকভাবে এ বিভাগে জনঘনত্ব বেশ কম। বেশি জনঘনত্বের দিক থেকে চট্টগ্রাম বিভাগ আছে ৫ নম্বরে। সেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করছেন ৯৭৯ জন।
আর ৬ নম্বরে থাকা সিলেটে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করছেন ৮৭৩ জন। তালিকার ৭ নম্বরে থাকা খুলনার জনঘনত্ব ৭৮২।
জনশুমারিতে দেখা যাচ্ছে, দেশে সামগ্রিকভাবে বর্গকিলোমিটারপ্রতি জনঘনত্ব এক হাজার ১১৯। এর আগের ২০১১ সালের শুমারিতে জাতীয় জনঘনত্ব ছিল ৯৭৬।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে প্রথম শুমারিতে জাতীয়ভাবে প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যা ছিল ৪৮৪।
২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী ২০১১ সালের তুলনায় ঢাকা বিভাগে জনঘনত্ব বর্তমানে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সেই তুলনায় সবচেয়ে কম জনঘনত্বের বরিশালে বর্গকিলোমিটার প্রতি জনসংখ্যা তেমন বাড়েনি।
২০১১ সালে বরিশালে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস করতেন ৬৩০ জন, এখন তা পৌঁছেছে ৬৮৮ জনে। ২০১১ সালের শুমারিতে ঢাকা বিভাগে বর্গকিলোমিটার প্রতি জনঘনত্ব ছিল ১ হাজার ৫২১।
আরও পড়ুন:পাঁচদিনের সফরে রোববার ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান মিশেল ব্যাচলেট। দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে এই সফর বলে এক বার্তায় জানিয়েছে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সদর দফতর।
বার্তায় বলা হয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট সরকারের আমন্ত্রণে রোববার থেকে বাংলাদেশে সরকারি সফর করবেন। জাতিসংঘের কোনো মানবাধিকার প্রধানের এটিই হবে প্রথম কোনো সরকারি সফর।
ঢাকা সফরকালে হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অন্যান্য মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সুশীল সমাজ সংস্থার প্রতিনিধি এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের সঙ্গেও দেখা করবেন। একটি অনুষ্ঠানেও বক্তব্য দেবেন তিনি। তিনি কক্সবাজারেও যাবেন।
এদিকে বুধবার জেনেভায় ৯টি মানবাধিকার সংগঠন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর প্রধানের সফরে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানানো উচিত বলে দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। বিশেষ করে ‘নাগরিক সমাজের জন্য সুযোগ সংকুচিত হওয়া’ ও ‘নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়নের’ নিন্দা জানানো উচিত বলে দাবি তাদের।
সংগঠনগুলো হলো- অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক, এশিয়ান ফেডারেশন অ্যাগেইনস্ট ইনভলান্টারি ডিস-অ্যাপিয়ারেন্স, এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম-এশিয়া), ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট, মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিয়স জাস্টিস, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ), ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অ্যাগেইনস্ট এনফোর্সড ডিস-অ্যাপিয়ারেন্সেস, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস এবং রবার্ট জে কেনেডি হিউম্যান রাইটস।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের এ সফর সামনে রেখে ২১ জুলাই ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এ সফরকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেবে।
সূত্র জানায়, সফর থেকে বাংলাদেশের সম্ভাব্য অর্জন এবং ঝুঁকিগুলোও বিবেচনায় নিয়েছে সরকার, বিশেষ করে এই সফর ঘিরে বিভিন্ন মহলের নানামুখী প্রচারের আশঙ্কাও রয়েছে।
সম্প্রতি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তরের প্রধান মিশেল ব্যাচলেটের সফরে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জনগুলো তুলে ধরবে সরকার। আমরা এই সফরের জন্য অধীর অপেক্ষায় আছি। তিনি আমাদের অগ্রগতি দেখবেন এবং চ্যালেঞ্জগুলো জানতে পারবেন।’
আরও পড়ুন:ইউরোপ, আমেরিকা আর সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ছেড়ে দেয়া উন্নয়নের নৌকা এখন শ্রীলঙ্কার পথে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি জ্বালানি খাতে দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশেরও দাবি জানিয়েছেন।
রাজধানীর মিরপুরে এক কর্মী সম্মেলনে শুক্রবার বিকেলে তিনি এ কথা বলেন।
মিরপুর ও শাহ্আলী থানা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জি এম কাদের।
তিনি বলেন, ‘ইউরোপ, আমেরিকা আর সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ছেড়ে দেয়া উন্নয়নের নৌকা এখন শ্রীলঙ্কার পথে। দেশে লোডশেডিং বাড়ছে, ডলারের দাম বাড়ছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। কিন্তু কেন এসব বাড়ছে সে ব্যাপারে জবাব নেই সরকারের। তারা বিশ্বব্যাংক আর আইএমএফকে গালাগাল দিয়ে এখন ঋণের জন্য তাদের পেছনেই ঘুরছে।
‘আমরা দেশের স্বার্থে কথা বললেই সরকারের কিছু নেতা ষড়যন্ত্র খোঁজেন। দেশ শ্রীলঙ্কার মতো ব্যর্থ হতে চলেছে বলায় আমাদের তারা মূর্খ বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেই তারা গালাগাল দিতে শুরু করেন। তারা বুঝতে চান না, মানুষ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়।’
জ্বালানি খাতে দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের মানুষ জানতে চায়, জ্বালানি খাতে প্রতি বছর কত হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। কারা এই দুর্নীতির সাথে জড়িত, তাদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। অথচ সরকার দুর্নীতিবাজ ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অপরাধীদের পক্ষ নিচ্ছে।’
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম পাঠানের সভাপতিত্বে পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সফিকুল ইসলাম সেন্টুসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন:ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের মধ্য দিয়ে জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘ প্রায় সাত বছর পর মাঠে নামেন এনামুল হক বিজয়। তখন আলো ছড়াতে না পারলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তার ব্যাট ছিল দ্যুতিময়।
লম্বা বিরতির পর জাতীয় দলে জায়গা পেয়ে নিজের দাপুটে পারফরম্যান্সের জন্য তিনি কৃতিত্ব দিয়েছেন সতীর্থদের। তাদের সাহস ও প্রত্যাশায় ভালো করতে পেরেছেন বলে মনে করেন বিজয়।
জিম্বাবুয়ে সিরিজ শেষে শুক্রবার দেশে ফিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই জানান ডানহাতি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
দীর্ঘদিন পর দলে ফিরে বেশ ভালোভাবেই মানিয়ে নিতে দেখা যায় বিজয়কে। সর্বশেষ ছয় ম্যাচের প্রতিটিতেই তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১০০-এর বেশি। প্রতিটি ম্যাচেই তাকে বেশ সাবলীল ব্যাটিং করতে দেখা গেছে। সতীর্থদের থেকে সাপোর্ট পাওয়ায় এই কাজটা বেশ সহজ হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
এনামুল হক বিজয় বলেন, ‘আমি যখন অনেক দিন পর দলে ফিরলাম, প্রতিটি খেলোয়াড়ের কাছ থেকে দারুণভাবে সাপোর্ট পেয়েছি। তামিম ভাই, রিয়াদ ভাইয়ের কাছ থেকে, জুনিয়রদের মধ্যে আফিফ, তাসকিন, মোসাদ্দেক, লিটনসহ সবাই আমাকে ভালোমতো গ্রহণ করেছেন। তারা বুঝতে দেননি, এখানে আমি অনেক দিন পর এসেছি। দলে আমরা এক পরিবারের মতো ছিলাম।’
সতীর্থদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিজয় বলেন, ‘প্রতিটি খেলোয়াড়ই চাচ্ছিলেন আমি যেন রান পাই। ভালো পারফরম্যান্স করার জন্য তারা অনেক বেশি উৎসাহিত করেছেন। এভাবে সহযোগিতা পেলে কাজ সহজ হয়ে যায়।
‘যেহেতু আমি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট বা প্রিমিয়ার লিগে বেশ ভালো সময় পার করেছি। এ কারণে সবাই চাচ্ছিলেন যেন আমি জাতীয় দলেও পারফর্ম করি। সবার দোয়াটা কাজে লেগেছে। সবার চাওয়া ও সহযোগিতায় পারফরম্যান্স করা অনেক ইজি হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে, এমন একটি ভিডিও ঘুরপাক খাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওতে দাবি করা হয়, এটি চলতি মাসের (আগস্ট) ঘটনা।
ভিডিওতে দেখা যায়, রাস্তায় জিনিসপত্র পোড়ানো হচ্ছে, ছোড়া হচ্ছে বিস্ফোরক। কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে পুলিশও।
ভিডিওটি আসলে ২০১৩ সালের মে মাসের ৬ তারিখের। ধর্ম অবমাননার কোনো ঘটনায় সেদিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল বিক্ষুব্ধরা।
রয়টার্সের ফ্যাক্টচেক টিম বলছে, ভুল ক্যাপশনে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে।
টুইটারে গত ৭ আগস্ট শেয়ার করা ভিডিওর পাশে লেখা হয়, ‘বাংলাদেশ… সরকার মধ্যরাত থেকে পেট্রলের দাম ৫১ শতাংশ এবং ডিজেলের ৪২ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার পর, বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ এবং তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে…. সারা বাংলাদেশে পেট্রল স্টেশনে লম্বা লাইনের খবর পাওয়া গেছে।’
টুইটটিতে লাইক পড়েছে হাজার হাজার।
টুইটারের পাশাপাশি ফেসবুকেও শেয়ার হয় ভিডিওটি। ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘বাংলাদেশ... সরকার পেট্রল এবং ডিজেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ এবং তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।
Bangladesh… protests and hard clashes have erupted in several cities after the government has decided to increase petrol prices by 51% and diesel by 42% effective midnight….
— Wall Street Silver (@WallStreetSilv) August 7, 2022
Huge lines are reported at petrol stations all over Bangladesh…
🔊sound pic.twitter.com/JQmUsLBIAD
বাংলাদেশ ৬ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ায়। ভর্তুকির বোঝা কমানোর লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত বলে জানায় সরকার। তবে এই সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতি বাড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। ইতোমধ্যেই মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের ওপরে রয়েছে।
৪১৬ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। বছরের পর বছর ধরে বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল দেশ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি।
তবে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় আমদানি কমাতে বাধ্য হয়েছে ঢাকা। ঋণ চাইতে হচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে।
অবস্থা বিবেচনায় লিটারপ্রতি পেট্রলের দাম ৫১.২% বাড়িয়ে ১৩০ টাকা, ৯৫–অকটেনের দাম ৫১.৭% বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫% বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে।
স্থানীয় মিডিয়া বলছে, এই দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে লোকজন এখানে প্রতিবাদ করছে।
রয়টার্সের ফ্যাক্টচেক দল বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। গুগলে বিপরীত চিত্র অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভিডিওটি ২০২২ সালের বিক্ষোভের সঙ্গে একেবারেই সম্পর্কিত নয়।
ভিডিওটি আসলে ২০১৩ সালের মে মাসের। বাংলাদেশে একটি ধর্ম অবমাননাবিরোধী আইনের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক প্রতিবাদে ওই বিক্ষোভ হয়েছিল। ধর্মীয় সংস্কারের দাবিতে ২০১৩ সালের ৬ মে হওয়া বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে কট্টরপন্থিদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:চাঁদপুরে ৩ হাজার ৮০০ লিটার চোরাই ডিজেল জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড।
শুক্রবার সকালে উত্তর মতলব (মোহনপুর) থানার দশআনি লঞ্চঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুটি পরিত্যক্ত ঘরে এ পরিমাণ ডিজেল পাওয়া যায়।
তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করা যায়নি।
শুক্রবার দুপুরে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সকালে দশআনি লঞ্চঘাট এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দুটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে ৩ হাজার ৮০০ লিটার চোরাই ডিজেল জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৪ লাখ ৩৩ হাজার ২০০ টাকা।
‘এ সময় চোরাই ডিজেলের প্রকৃত মালিক খুঁজে না পাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের সংকটময় মুহূর্তে এ ধরনের তেল চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে কোস্ট গার্ডের অভিযান চলমান রয়েছে।’
ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান চলবে বলে জানান তিনি।
জব্দ করা ডিজেল চাঁদপুর উত্তর মোহনপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:উদ্বোধনের দেড় মাসের মাথায় দ্বিতীয়বারের মতো পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে জন্মভিটা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেখানে পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য।
এর আগে গণভবন থেকে শুক্রবার সকালে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে সড়কপথে রওনা হন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর মাওয়া টোল প্লাজার ৬ নম্বর লেন দিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দেয়। এ সময় ২৫ হাজার ৭৫০ টাকা টোল পরিশোধ করেন তিনি।
বেলা পৌনে ১১টার দিকে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। এরপর ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
গত ৪ জুলাই পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর প্রথমবারের মতো স্থাপনাটির ওপর দিয়ে বাড়িতে যান সরকারপ্রধান। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
ওই দিন গণভবন থেকে সকাল ৮টার পরপরই টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। যাত্রাপথে পদ্মা সেতুতে কিছুক্ষণ পায়চারি করে জাজিরা প্রান্তে সার্ভিস এরিয়ায় ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে কিছুটা সময় বিশ্রাম নেন তিনি।
ওই দিন পুত্র ও কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে পদ্মা সেতুতে ছবিও তুলেছিলেন শেখ হাসিনা। তার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল।
আরও পড়ুন:৬ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শীর্ষপদের ব্যক্তিরা তার নামে নানা গল্প বানিয়ে গণমাধ্যমে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন সামিয়া রহমান, যাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পদাবনতি দেয়ার পর সম্প্রতি সেই আদেশ আবার অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।
শুক্রবার সকালে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ওই বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। ঢাবি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই সাবেক শিক্ষক।
বর্তমানে দেশের বাইরে থাকা সামিয়া রহমান লিখেছেন, ‘গত ৬টা বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষপদের ব্যক্তিদের হিংসা, প্রতিহিংসা, নোংরামি, ষড়যন্ত্র দেখতে দেখতে কখনো মনে হতো, আমিও ওদের মতোই ওদের ঘৃণা করি, ওদের প্রকৃত চরিত্র উন্মোচন করি।
‘আবার পরে মনে হতো, তাহলে আমিও তো ওদের পর্যায়েই নোংরামিতে নেমে গেলাম। তফাত আর থাকল কোথায়- মানুষে আর অমানুষে।’
তিনি লিখেছেন, ‘ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করেছি। সৃষ্টিকর্তা পরীক্ষা করলেও শেষ পর্যন্ত ন্যায় বিচার করেন বলেই বোধহয় উচ্চ আদালত প্রমাণ দিয়েছে ওদের সিদ্ধান্ত অবৈধ। গত ৬ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ ব্যক্তিরা আমার নামে নানা গল্প বানিয়ে বছরের পর বছর গণমাধ্যমে বিক্রি করেছে।’
সামিয়া ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাকে তারা হুমকি-ধমকির মধ্যে রেখেছিল ক্রমাগত। আমি চাকরি না ছাড়লে, আমি গণমাধ্যমে বক্তব্য দিলে আমার ক্ষতি করবে- এমন প্রচণ্ড চাপের মধ্যে বছরের পর বছর আমি ছিলাম।
‘যে লেখাটিতে আমি জড়িত ছিলাম না, আমার স্বাক্ষর ছিল না, সেই লেখাটি নিয়ে আমার বিরুদ্ধে তারা ষড়যন্ত্র করে গেছে বছরের পর বছর। শিকাগো প্রেসের নাম করে মিথ্যা ফেইক চিঠি তৈরি করে আমার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন তদন্ত শুরু করে।’
এই শিক্ষক ফেসবুকে আরও লিখেছেন, ‘আদালতে তো প্রমাণিত হয়েছেই এটি মিথ্যা, ফেইক চিঠি। ট্রাইব্যুনাল বলেছে, প্লেজারিজম হয়নি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় শাস্তি দিল। কিসের ভিত্তিতে? এমনকি ট্রাইব্যুনালের রায়ের কপি পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে দিতে চায়নি মাসের পর মাস, পাছে সত্যি প্রমাণ হয়ে যায়।
‘মারজানের লিখিত স্বীকারোক্তিতে তার লেখা জমা দেবার, রিভিউ করা, স্বাক্ষর করার প্রমাণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে থাকা সত্ত্বেও একবারের জন্যও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন গণমাধ্যমে সেটি প্রকাশ করেনি। একবারের জন্যও প্রকাশ করেনি যে আমার কাছ থেকে তারা কোনো লেখা পায়নি এবং ডিন অফিস থেকেও কোনো লেখা আমার কাছে রিভিউ করার জন্য আসেনি।’
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগাম অবসর চেয়ে করা সামিয়া রহমানের আবেদন সম্প্রতি গ্রহণ করে তাকে অবসরের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি তার কাছ থেকে ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা পাবে জানিয়ে এই টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ওই প্রসঙ্গে ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় ৪ আগস্ট মামলায় হেরে বর্তমান প্রশাসন ৮ আগস্ট আমার কাছে টাকা দাবি করে একটা ই-মেইল পাঠায়। যে ই-মেইল ৮ আগস্ট পাঠানো, কিন্তু এর ভেতরে ব্যাক ডেটে হাতে লেখা ৩ আগস্ট। মামলায় হেরে যেয়ে কি এখন এই প্রতিহিংসা? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আমার কোনো দেনা নেই। বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আমার পাওনা আছে। আদালতে লড়াই করেছি। করে যাব। সৃষ্টিকর্তা বলেতো একজন আছেন। তিনিই ন্যায়বিচার করবেন।’
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান ও সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অফ কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: এ কেস স্টাডি অফ দ্য কালচারাল ইম্পেরিয়ালিজম’ শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’ জার্নালে প্রকাশ করা হয়।
এটি ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’তে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোঁর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামের একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল বলে অভিযোগ ওঠে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এক লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই চুরির কথা জানিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো প্রেস।
শুধু ফুকোঁই নন, বুদ্ধিজীবী এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইম্পেরিয়ালিজম’ বইয়ের পাতার পর পাতা সামিয়া ও মারজান হুবহু নকল করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমেদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।
দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে গত বছর ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২৯ অক্টোবর তাদের অ্যাকাডেমিক অপরাধের শাস্তির সুপারিশ করতে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে আহ্বায়ক করে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শাস্তির বিষয়ে সুপারিশ জমা দিলে সিন্ডিকেটের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।
গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির বিষয়টি প্রমাণ পাওয়ার পর ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় তাকে এক ধাপ পদাবনতি দিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয়। তবে এই আদেশের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে যান।
গত ৪ আগস্ট সামিয়া রহমানকে পদাবনতির আদেশ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে তাকে সব সুযোগ-সুবিধা ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। তবে আগেই সামিয়া আগাম অবসরের আবেদন করায় এবং সেটি কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করায় আপাতত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শিক্ষকতা করা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য