প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তারসহ ৪ আসামিকে জামিন দেয়নি হাইকোর্ট। তবে আসামিদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে আদালত।
মঙ্গলবার বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
তিনি বলেন, ‘চার আসামির আপিল শুনানির জন্য আদালত গ্রহণ করেছে। তাদের যে অর্থদণ্ড ছিল সেটি স্থগিত করেছে, আর মামলার নথি তলব করেছে। আসামিপক্ষের পৃথক জামিন আবেদনের পরামর্শ দিয়েছে আদালত।’
আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন গাজী মো. মহসিন ও শাহানারা পারভীন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার, মো.ইয়াছিন আলী, তোফাজ্জল হোসেন ও আব্দুস সাত্তার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনের ১০ বছর করে এবং বাকি ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় সাতক্ষীরার আদালত।
রায়ে চার বছর করে কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড পাওয়া চার আসামি হাইকোর্টে আপিল করেন। একই আবেদনে তারা জামিনও প্রার্থনা করেন। ওই আপিল শুনানির জন্য আদালত গ্রহণ করে মঙ্গলবার আদেশ দেয়।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০০২ সালে কলারোয়ার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। সে বছর ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যাচ্ছিলেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে। কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহর পৌঁছালে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা গুলিবর্ষণ করে এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় বিরোধীদলীয় নেতা প্রাণে রক্ষা পেলেও তার গাড়িবহরে থাকা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, শেখ হাসিনার ক্যামেরাম্যান শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এ ঘটনায় আহত হন।
কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ মোসলেম উদ্দিন এ ঘটনায় কলারোয়া থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। থানা মামলাটি রেকর্ড না করায় একই বছরের ২ সেপ্টেম্বর তিনি সাতক্ষীরার আমলি আদালতে মামলা করেন। এ মামলা খারিজ হয়ে যাবার পর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হয়। এ সময় তদন্ত করে পুলিশ তৎকালীন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়।
মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলে ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে মামলা বাতিলের আবেদন করেন আসামিরা। এরপর ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ৯০ দিনের মধ্যে বিচার কাজ শেষ করার জন্য সাতক্ষীরা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
হাইকার্টের নির্দেশের পরে ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর মামলাটির বিচার কাজ নতুন করে শুরু হয়। মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাদের সাজা ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন:হত্যা মামলায় ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মাজহারুল ইসলাম সুজনের মুক্তির দাবি তুলে সোমবার স্লোগান দেয়া একদল মানুষকে ধাওয়া দিয়েছেন উপস্থিত লোকজন।
ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
আদালতে শুনানি শেষে সাবেক এমপিকে কারাগারে নেয়ার সময় ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে তার শাস্তির দাবি করে একাধিক ডিম নিক্ষেপ করে উত্তেজিত জনতা।
অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক রমেশ কুমার ডাগারের আদালতে আজ ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক এমপিকে জামিন ও রিমান্ড আবেদন শুনানির জন্য তোলা হয়। বিচারক জামিন ও রিমান্ড আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কবির বকুল বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও আদালত চত্বরে সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজনকে যখন প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে তোলার জন্য আনা হয়, তখন প্রস্তুতি নিয়ে থাকা একদল মানুষ তার মুক্তির দাবি তুলে স্লোগান দেয়। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে বিশৃঙ্খলারও চেষ্টা করে তারা।
‘পরে উপস্থিত লোকজন তাদের ধাওয়া দিয়ে আদালত থেকে বের করে দেয় এবং সাবেক এমপিকে যখন আদালত থেকে বের করে কারাগারে নেয়া হয়, তখন উত্তেজিত জনগণ তাকে বেশ কয়েকটা ডিম নিক্ষেপ করেন।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী সোহরাব হোসেন প্রধান বলেন, ‘সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজনের আজকে একটি মামলায় জামিন ও রিমান্ড শুনানির তারিখ ছিল। তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। আদালত রিমান্ড ও জামিন দুটোই নামঞ্জুর করেন।’
সাবেক এ এমপির বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে গত ১৫ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঘটনার জন্য কোনো মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না মর্মে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে এক নবযাত্রা সূচিত হয়েছে।
‘এ গণঅভ্যুত্থানকে সাফল্যমণ্ডিত করতে যেসব ছাত্র-জনতা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনের মাঠে থেকে এর পক্ষে কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ১৫ জুলাই হতে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সংগঠিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট ঘটনার জন্য কোনো মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হলো। এ বিষয়ে অসত্য তথ্য প্রদান করে কোনো সুবিধা অর্জনের বিরুদ্ধেও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হলো।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে এক নারীর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে রোববার তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত একটি পত্রে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
ওই পত্রে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির রোববার এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।’
ইমরান হোসেন শিশিরের বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া সদরের সাফাইশ্রী এলাকায়। তার এক প্রতিবেশী নারীর তিন মিনিট ৪১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও রোববার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ওই নারী ইমরান হোসেন শিশিরের সঙ্গে প্রায় ছয় বছর ধরে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেন।
দুজন ভারতে ৯ দিন এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে একসঙ্গে আবাসিক হোটেলে একই কক্ষে রাত্রিযাপন করেছেন বলেও দাবি করেন ওই নারী।
শিশিরের চাপে একাধিকবার গর্ভপাত করতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তার অভিযোগ, এতদিন পর্যন্ত তাকে বিয়ের আশ্বাস দিলেও গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে শিশির তার সঙ্গে সর্ম্পক ছিন্ন করে নানা রকমের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এ কারণে বাধ্য হয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতাদের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি।
এদিকে ওই নারী শ্রীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় সংবাদ সম্মলন করে তার বক্তব্য সংবলিত ভিডিও সুপার এডিট করে বানানো হয়েছে বলে দাবি করেন। এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারও দাবি করেন তিনি।
যদিও স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন, শিশিরের চাপে পড়ে ওই নারী সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছেন।
আরও পড়ুন:সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি সীমান্তে রোববার অভিযান চালিয়ে ২২ হাজার ৫৪০ কেজি ভারতীয় আপেল জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বাহিনীটির সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিজিবির সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (২৮ বিজিবি) কর্তৃক দায়িত্বপূর্ণ বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি সীমান্তে অভিযান পরিচালনা করে ১ কোটি ৩৬ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ২২ হাজার ৫৪০ কেজি ভারতীয় আপেলসহ দুটি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে।
‘অদ্য ১৩ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখ ১৫৩০ ঘটিকায় বিজিবির সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (২৮ বিজিবি) অধীনস্থ চিনাকান্দি বিওপির (সীমান্ত চৌকি) কমান্ডার জেসিও সুবেদার ওবায়দুর রহমানের নেতৃত্বে বিজিবির একটি টহলদল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে দায়িত্বপূর্ণ বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাধীন ধনপুর ইউনিয়নের ঝিগাতলা নামক স্থানে চোরাচালানবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে মালিকবিহীন ২২ হাজার ৫৪০ কেজি ভারতীয় আপেলসহ দুটি বড় ট্রাক জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
‘জব্দকৃত মালামালের আনুমানিক সিজার মূল্য ১ কোটি ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। জব্দকৃত আপেল ও ট্রাক সুনামগঞ্জ কাস্টমস অফিসে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
বিচারক নিয়োগ হলে চলতি সপ্তাহেই জুলাই-গণহত্যায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেয়া হবে।
রোববার ধানমন্ডিতে ট্রাইব্যুনাল কার্যালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘জুলাই-গণহত্যার বিচারের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেয়া হবে।
‘বিচারক নিয়োগ হলে এ সপ্তাহেই জুলাই-গণহত্যায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হবে।’
তিনি জানান, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৬০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে।
তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিম নিয়োগ হলেও বাকি রয়েছে বিচারক নিয়োগ। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) জানিয়েছিলেন, চলতি সপ্তাহেই এজলাসে বসবেন বিচারকরা। শুরু হবে বিচার প্রক্রিয়া। এবার চিফ প্রসিকিউটরও একই কথা জানালেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে গণহত্যার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে। বিচারের জন্য আইন সংশোধন ও ভবন মেরামতের কাজও চলমান।
আরও পড়ুন:সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে পতিত সরকারের প্রভাবশালী লোক জড়িত ছিল মর্মে প্রাথমিক তদন্তে নাম এসেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
রোববার সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পুরনো বাস স্টেশনের একটি হোটেলে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় বাদীপক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরকে ২৯ সেপ্টেম্বর নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
শিশির মনির বলেন, ‘ঘটনার ১২ বছর পর টাস্কফোর্স গঠন করে এটি তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট প্রদানের জন্য সরকারকে ছয় মাস সময় দেয়া হয়েছে। এতে গণমাধ্যম, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম এসেছে। বেশকিছু সংবেদনশীল মানুষ এর সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পাওয়া গেছে।
‘তদন্তটি এখন প্রপার ডাইমেনশনে আছে। মামলাটি যে জায়গায় গেছে এখন সরকার আর কোনো বাধা দিচ্ছে না। আপাতত কোনো বাধা নেই, উদ্দেশ্যের কোনো সংকট নেই, সরকারের আগ্রহের কোনো ঘাটতি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাগর-রুনির মরদেহে দুই ব্যক্তির ডিএনএ পাওয়া গেছে। এখন এদের খোঁজা হচ্ছে। আশা করছি এই দুই ব্যক্তির তথ্যও আপনারা জানতে পারবেন।
‘শুধু সরকারের দায়িত্বে ছিলেন তা নয়, সরকারের পাশে থেকে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম এসেছে। আপাতত তদন্ত চলা অবস্থায় সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম বলায় আইনগত বাধা আছে, তাই বলছি না। তবে ইন্ডিকেশন আছে, ইশারাই যথেষ্ট আমার মনে হয়।’
আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আরও বলেন, ‘বেশ কয়েকটি রিপোর্ট আছে। সেগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে। আগামীকাল মিটিং আছে। সেই মিটিংয়ে হয়তো আরেকটু ক্লিয়ার হওয়া যাবে।’
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামস উদ্দিন, জেলা জামায়াতের আমীর মোহাম্মদ তোফায়েল আহমদ, সুনামগঞ্জের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। তাদের একমাত্র ছেলে পাঁচ বছর বয়সী মাহির সরওয়ার মেঘ সেই সময় বাসায় ছিল।
সাগর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে এবং রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যার ঘটনায় আলী রোমান শেরেবাংলা থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ পর্যন্ত ১১১ বার সময় বাড়ানো হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য রয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর অদূরে সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শওকত হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিয়া জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যায় তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের যাদুরচর গ্রাম থেকে শওকত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শওকত হোসেন সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের যাদুরচর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি সাভার উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি। এছাড়াও তিনি সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাকুর্তা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেনের বড় ভাই।
শওকত হোসেনের বিরুদ্ধে ১৯ আগস্ট শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হত্যার ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মন্তব্য