জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি সংশোধন করতে গেলে প্রামাণিক হিসেবে বেশ কিছু বাড়তি কাগজপত্র দিতে হয়। অযৌক্তিকভাবে এসব বাড়তি কাগজপত্র না চাইতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন- ইসি। সেই সঙ্গে আবেদন নিষ্পত্তি করতে ৩০ দিনের সময়ও বেঁধে দিয়েছে কমিশন।
ইসির এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী সোমবার এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা দেশের সব আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন।
এর আগে চলমান রাজনৈতিক সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, ‘এনআইডিতে কোটি কোটি ভুল।’
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ১০ লাখের মতো আবেদন জমা পড়ে আছে। দিন দিন বেড়েই চলেছে এই সংখ্যা। কিন্তু মাঠ পর্যায় থেকে সেগুলোর সুরাহা হচ্ছে না। ফলে নাগরিকদের ভোগান্তি বাড়ছে।
অনেক সময় মাঠ কার্যালয় থেকে সেবাগ্রহীতার কাছে এত বেশি কাগজপত্র চাওয়া হয়, যা সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। এতে ভোগান্তির সঙ্গে সঙ্গে সেবা পাওয়া থেকেও বঞ্চিত হন সাধারণ মানুষ।
তবে মাঠ কর্মকর্তাদের দাবি, একই আবেদন নাকচ হওয়ার পর অনেকেই পুনরায় আবেদন করেন। এ ছাড়া অনেকেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া হলে পরে আর যোগাযোগ করেন না। এসব কারণে আবেদন ঝুলে যায়।
বিষয়টি নজরে আসায় নির্বাচন আবেদনগুলো মাঠ পর্যায় থেকেই দ্রুত নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে চাওয়া তথ্য সংশোধন করা না গেলে বাতিল করতে হবে। সেটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করতে হবে এবং সেখানেও কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে সেটি ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো যাবে বলেও জানানো হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যই ছিল নাগরিক সেবা আরও সহজ ও গতিশীল করা। সে লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে ক, খ, ও গ ক্যাটাগরির সংশোধনের আবেদন সংযুক্ত দলিলাদি যাচাই-বাছাইকরণ এবং প্রয়োজনানুসারে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আবেদন নিষ্পত্তি (অনুমোদন/বাতিল) করে নাগরিক সেবাকে গতিশীল করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।
এ ক্ষেত্রে নাগরিকদের দুর্ভোগ লাঘবে বিষয়টি সামনে রেখেই এনআইডি সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করতে হবে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তার আওতাভুক্ত ক্যাটাগরির আবেদন পরীক্ষা করে নিজেই নিষ্পত্তি করবে। এ জন্য যথাযথ শিক্ষাসনদ, জন্মসনদ বা অন্য যৌক্তিক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকার পরও অযৌক্তিকভাবে কোনো কাগজপত্র চাওয়া যাবে না।
আবেদন করার পর সেটি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে প্রয়োজনে শুনানির ব্যবস্থা করা এবং যাচাই-বাছাই করে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিষ্পত্তি করবেন। সে জন্য মাঠ পর্যায়ে সপ্তাহে দুই দিন শুনানির ব্যবস্থা করতে হবে এবং তারপর ১০ কার্য দিবসের মধ্যে সেটি নিষ্পত্তি করতে হবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়।
ক্যাটাগরি বিভাজনের পর থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তার অধীনে আবেদন নিষ্পত্তি করতে ক্যাটাগরি 'ক' ৭ কার্য দিবস, 'খ' ১৫ কার্য দিবস ও 'গ' ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ দিনের সময় পাবেন।
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা তার আওতাধীন আবেদন নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে সেটি সঠিক কাগজপত্রসহ, সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়ে মহাপরিচালক, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ বরাবর পাঠাতে হবে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তার কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যারে ইউজার অ্যাকাউন্টটি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। সংশোধনের আবেদন নিষ্পন্নের বিষয়টি জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ হতে কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকবে বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে জবাবদিহিও করতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, যেসব নাগরিক অনলাইনে আবেদন করতে ব্যর্থ হবেন তাদের উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে অনলাইনে আবেদনের বিষয়ে সহযোগিতা দিতে হবে।
আরও পড়ুন:আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর গত ২৯ অক্টোবর সকাল ৬টায় যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল। সেই হিসাবে বুধবার (২৯ নভেম্বর) পর্যন্ত টানেল যুগে এক মাস পাড়ি দিয়েছে দেশ। এই এক মাসে সব মিলিয়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার ১৯৭টি যানবাহন বঙ্গবন্ধু টানেল পাড়ি দিয়েছে বলে জানিয়েছে সেতু বিভাগ। এসব যানের বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ১২ লাখ ২১ হাজার টাকা।
২০১৩ সালে বঙ্গবন্ধু টানেলের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে ২০২৫ সাল পর্যন্ত টানেল দিয়ে বছরে ৬৩ লাখ যানবাহন চলাচল করতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। সে হিসাবে গড়ে প্রতিদিন ১৭ হাজার ২৬০টির বেশি যান চলাচলের কথা এ টানেল দিয়ে। তাছাড়া সম্ভাব্য যান চলাচলের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে আদায় করা টোল থেকে ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে ১২৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। টানেল উদ্বোধনের পরবর্তী ৫০ বছরে শূন্য দশমিক ১৬৬ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধির কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
তবে টানেল চালুর পর সেতু বিভাগের তথ্য বলছে, গেল এক মাসে গড়ে দৈনিক ৫ হাজার ৬৫২টি যান বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে চলাচল করেছে। আর টোল হিসেবে দৈনিক গড়ে আয় হয়েছে ১৩ লাখ ২৯ হাজার ১০০ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। যান চলাচলের সংখ্যা ও লক্ষ্যমাত্রার এত বিশাল তারতম্যে টানেল থেকে সরকারের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এই এক মাসে টানেল দিয়ে যেসব যান চলাচল করেছে তার অধিকাংশই ব্যক্তিগত। এখনও টানেল দিয়ে নির্দিষ্ট কোনো রুটের গণপরিবহন চালু হয়নি। তাছাড়া দূরপাল্লার অনেক বাস এখনও শাহ-আমানত সেতু দিয়ে কর্ণফুলি পাড়ি দিচ্ছে। ফলে বঙ্গবন্ধু টানেলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে চলাচলকারী সব যানবাহনের চাপ পড়ছে না।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী তানভীর রিফা বলেন, ‘টানেল দিয়ে এখনও পুরোপুরি বাণিজ্যিক যান চলাচল শুরু হয়নি। কারণ দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও মাতারবাড়ীকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি।’
অন্যদিকে টানেলের বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া প্রতি ৫ বছর পর পর টানেলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের প্রতিস্থাপন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার। এর সঙ্গে টানেল রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বছরে খরচ হবে আরও ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার।
টানেল নির্মাণে ব্যয় করা প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার মধ্যে দুই শতাংশ সুদে বাংলাদেশকে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয় চীন। ২০২৫ সাল থেকে টানেলের আয় দিয়ে সেই ঋণ পরিশোধ করবে সরকার। কিন্তু বর্তমানে যে হারে টোল আদায় হচ্ছে তা চলতে থাকলে বছরে আয় হবে ৪৯ কোটি ৪৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা, যা প্রায় ৪ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলারের সমান। এমন পরিস্থিতিতে টানেলের আয় দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ ও যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপন ব্যয় মেটানোই কঠিন হয়ে পড়বে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
তবে ২০১৩ সালের সমীক্ষায় মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, মিরসরাই-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়ক, মীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পাঞ্চল ও দক্ষিণ চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন নানা শিল্প কারখানা চালু হওয়ার বিষয়টি হিসেবে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর এবং মিরসরাই-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়ক এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। এমনকি দক্ষিণ চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন শিল্প কারখানাগুলোও তাদের কার্যক্রম এখনও পুরোদমে চালু করেনি। এসবের কারণে শুরুতে তুলনামূলক কম যান চলাচলকে অনেকটা কাঙ্ক্ষিত হিসেবেই ধরে নেয়া হচ্ছে।
এদিকে টানেলের প্রভাবে আনোয়ারা-পটিয়া এলাকায় ব্যাপক শিল্পায়ন ও বছরে অন্তত ১৭ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের কথা সমীক্ষায় বলা হলেও এখনও তা কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে। তাই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও টানেলের পুরোপুরি সুফল পেতে এখন থেকেই চট্টগ্রামে সকল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা মাথায় রেখে মহাপরিকল্পনা সাজানোর কথা বলছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
এ বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, ‘ফিজিবিলিটি স্টাডিজে অনেক কিছু দেখা যায়, কিন্তু ইনিশিয়ালি (প্রাথমিক অবস্থায়) এত গাড়ি হবে না। কারণ গাড়ি ওদিকে কী জন্য যাবে? ওখানে কী এমন ইন্ডাস্ট্রি হয়েছে যে গাড়ি যাবে? ওদিক থেকে কেনই বা গাড়ি আসবে? ওখানে তো সেই ডেভেলপমেন্টটা (উন্নয়ন) এখনও হয়নি। কাজেই টানেল দিয়ে এত তাড়াতাড়ি গাড়ি যাবে না। বিষয়টা হলো যে, ওই দিকে গাড়ি জেনারেট করার মতো তো সেরকম ডেভেলপমেন্ট হয়নি। ওরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছে ঠিক আছে, কিন্তু সেদিকে যদি শিল্পায়ন না হয় তাহলে তো গাড়ি যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।’
টানেল দিয়ে যান চলাচল কম হওয়ার কারণ হিসেবে টোলের তুলনামূলক বেশি হারকেও দোষেন পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের এই নেতা। তিনি বলেন, ‘ওইদিকে যেহেতু আপনার কাজ নাই, আপনি তো যাচ্ছেন না বা যাবেন না। আর ওই দিকে কাজ থাকলেও আপনি এখন কোন দিক দিয়ে যাবেন? আপনি টানেল দিয়ে গেলে আপনার টোল দিতে হবে কত, আর শাহ আমানত ব্রিজ দিয়ে গেলে টোল দিতে হবে কত? এগুলো তো টাকা, এই চড়া দ্রব্যমূল্যের বাজারে টাকার হিসেব তো করবেই জনসাধারণ।
‘যাদের কাঁচা টাকা আছে, গাড়ি আছে, তারা যাবে। বাস গেলে তো বাসে অনেক টোল নেয়, সাধারণ মানুষ তো বাসে যাবে না। একটা ৩০ সিটের বাস গেলেও তো ৩০০ টাকা টোল নেয়। মানে প্রতি জনের ঘাড়ে দশ টাকা করে বেশি পড়বে। তাহলে বাসচালকও তো যাত্রী পাবে না। সাধারণ মানুষ কেন অতিরিক্ত টাকা পে (পরিশোধ) করবে? এতদিন যেগুলো গেছে প্রথম প্রথম, এগুলো তো সব টুরিস্ট বাস। ফিজিবিলিটি স্টাডিজে যে পূর্বাভাস দিয়েছে, এ অঞ্চলে ওই রকম যানবাহন হতে আরও অনেক বছর সময় লাগবে।’
‘লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী টোল আদায় না হলে স্বপ্নের এ টানেল অনেকটা হাতি পোষার মতো হবে’ জানিয়ে টানেলের সুফল পেতে এর দু’পাশে পরিকল্পিত নগরায়নের পরামর্শ দেন তিনি। বলেন, ‘আর এখন টোল টেক্সট যদি না পাই, এগুলো আমাদের জন্য হোয়াইট এলিফ্যান্ট (শ্বেতহস্তী) হয়ে যাবে।
‘টানেল হয়ে গেছে এখন আর কিছু করার নেই। দু’পাশেই শিল্পায়ন করতে হবে; পরিকল্পিত নগরায়ন, টার্মিনাল- এগুলোর সবই করতে হবে। এখন সেগুলো এই পরিস্থিতিতে কবে হবে তার কোন ঠিক নেই।’
অবকাঠামো ও অবস্থানগত কারণে টানেলের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ পদ্মা সেতুর চেয়েও বেশি হবে বলে জানান এ নগর পরিকল্পনাবিদ।
তার সুরে সুর মেলালেন আরেক নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামকে ঘিরে আগামীর বাংলাদেশকে মাথায় রেখে এখন থেকেই মহাপরিকল্পনা সাজাতে হবে যাতে এই অঞ্চলে পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চল, আবাসিক এলাকা ও পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা যায়। এখানে এসবের উপাদানগুলোও রয়েছে। এ কাজগুলো করলে টানেল ব্যবহারে পণ্যবাহী যানবাহনের পাশাপাশি অন্যান্য যানবাহনও বাড়বে।’
গত ২৮ অক্টোবর বেলা ১১টা ৪১ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে খোলে দেশের দখিনা দুয়ার। দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত এটাই প্রথম টানেল।
এর আগে ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং টানেল নির্মাণকাজের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এরপর ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেলের প্রথম টিউব নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।
টানেলটি নির্মাণ করেছে চীনা কোম্পানি চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। শুরুতে প্রকল্প ব্যয় ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা ধরা হলে ২০১৭ সালে তা বাড়িয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা করা হয়।
আরও পড়ুন:আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০টি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দুই হাজার ৭৪১ জন।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শরিফুল আলম বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ৩০০টি সংসদীয় আসনের জন্য আজ ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখ মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন পর্যন্ত ২ হাজার ৭৪১ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। মোট দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রসমূহে ৩০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছে।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল ৪টা ছিল মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময়। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কতসংখ্যক মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে, তার হিসাব দিয়েছে ইসি।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো থ্রেট দেখছেন না বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
ভোটের দিনের কোনো থ্রেট আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশপ্রধান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা কোনো থ্রেট দেখছি না। এরপরও গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের সব জায়গায় ফিট করা আছে। তারা যে তথ্য দেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেই আলোকে ব্যবস্থা নেবে। সকল প্রস্তুতি নিতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও প্রস্তুত আছি।’
আইজিপি বলেন, ‘আমরা সিইসি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। যখনই নির্বাচন আসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবাই নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে আসি। ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করি। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠভাবে করার জন্য আইন অনুযায়ী যে কাজ করার দরকার তাই করে থাকি।
‘আমরা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমরা আশা করছি, ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী একটা অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন দেশবাসীকে উপহার দিতে পারব।’
আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ কেমন? এখন পর্যন্ত আশঙ্কাজনক কোনো খবর আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আশঙ্কাজনক কোনো খবর নেই, বা বোধও করছি না।’
সহিংসতা প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, ‘সহিংসতা যারা করছে তারা বাসে আগুন দিচ্ছে, গাড়িতে আগুন দিচ্ছে, ট্রেনে আগুন দিচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে অ্যারেস্ট হচ্ছে। তবে আমরা তৎপর আছি। আমাদের তৎপর থাকার কারণে রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। বর্তমানে ৮০ শতাংশ গাড়ি রাস্তায় চলাচল করছে। প্রায় সবকিছুই স্বাভাবিক হচ্ছে। যারা চোরাগুপ্তা হামলা চালাচ্ছে, দেশের আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন:ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে আলোচনার বিষয় সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। খবর ইউএনবির
ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম অন অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এমপাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ডস গ্লোবালি’ এর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ‘উদ্বিগ্ন হওয়ার’ অনেক কারণ রয়েছে।
সম্প্রতি চালু হওয়া মার্কিন উদ্যোগের ওপর পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে দূতাবাসের দেয়া একটি চিঠিতে বলা হয়, ‘স্মারকলিপিতে শ্রম অধিকার সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তার পেছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করার চেষ্টা করবে।’
১৬ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম প্রকাশ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, যারা ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক অধিকার রক্ষাকারী, শ্রমিক সংগঠনকে হুমকি দেয়, ভয় দেখায়, আক্রমণ করে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য জরিমানা ও ভিসা বিধিনিষেধের মতো সব সরঞ্জাম ব্যবহার করে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য তারা কাজ করবে।
আরও পড়ুন:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে তলব করেছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি।
বুধবার তার নির্বাচনি এলাকা মাগুরায় গিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করার ঘটনায় শুক্রবার তাকে সশরীরে হাজির হয়ে ওই ঘটনার ব্যাখা দিতে বলেছে জেলার এই কমিটি।
মাগুরা-১ আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধানী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ সত্যব্রত শিকদার বৃহস্পতিবার এ তলব আদেশ দেন। এতে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে তার বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে না তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে সাকিবকে।
তলব আদেশে বলা হয়েছে, আপনি সাকিব আল হাসান, মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী হিসেবে গত বুধবার ঢাকা থেকে মাগুরা আগমনের সময় পথে কামারখালী এলাকা থেকে শোডাউন করে গাড়িবহর নিয়ে মাগুরা শহরে প্রবেশ করেন এবং নাগরিক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তাতে জনগণের চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেন, যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, ইলেকট্রিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর মাধ্যমে আপনি সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮-এর ৬ (ঘ), ৮ (ক), ১০ (ক) এবং ১২ ধারার বিধান লঙ্ঘন করেছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, উক্ত আইন ভঙ্গের কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে না, শুক্রবার বিকেল ৩টায় স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে তার লিখিত ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
এর আগে বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মাগুরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়ামে মাগুরাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত এক নাগরিক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন সাকিব। সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নিজের জন্য এবং আওয়ামী লীগের জন্য ভোট প্রার্থনা করেন। এ ছাড়া জেলায় তিনি একাধিকবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
আরও পড়ুন:অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে শুক্রবার থেকে চালু হচ্ছে কক্সবাজার এক্সপ্রেস। ঢাকা ও কক্সবাজার দুই জায়গা থেকেই কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনটি উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ চলাচলের উদ্বোধন করা হবে। কক্সবাজারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর।
একই দিনে রাত পৌনে ১০টার দিকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকেও উদ্বোধন হবে ট্রেনটির। ওই সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান উপস্থিত থেকে কক্সবাজারগামী যাত্রিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
রেলওয়ে সূত্রে আরও জানা গেছে, কক্সবাজার এক্সপ্রেসে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন ছাড়বে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে। চট্টগ্রামে এসে পৌঁছাবে রাত ৩টা ৪০ মিনিটে। ২০ মিনিট যাত্রা বিরতি দিয়ে রাত ৪টার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে ট্রেনটি। কক্সবাজারে পৌঁছাবে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ রাজধানী থেকে পর্যটন শহরে যেতে সময় লাগবে ৮ ঘণ্টা ১০ মিনিট।
অপরদিকে, কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেন ছাড়বে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। এই ট্রেন চট্টগ্রামে আসবে বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে। আর ঢাকায় পৌঁছবে রাত ৯টা ১০ মিনিটে।
জানা যায়, ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সাতকানিয়ায় নির্মিত চারটি সেতু ট্রেন ট্রায়ালের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে। কক্সবাজার স্টেশনে পদায়ন করা হয়েছে একজন ইনচার্জসহ মোট ৪জন স্টেশন মাস্টারকে। এছাড়া বাড়ানো হয়েছে প্রয়োজনীয় লোকবল।
ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তায় ১০ জন রেলওয়ে পুলিশ নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানা পুলিশ ইনচার্জ এসএম শহিদুল ইসলাম।
রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পয়লা ডিসেম্বর কক্সবাজার থেকে ঢাকা বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলের জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। দফায় দফায় সভা করে সকল পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার স্টেশন মাস্টার মো. গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘কক্সবাজার থেকে ঢাকায় প্রথম বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলে আমরা প্রস্তুত। নির্দিষ্ট সময়ে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেন কক্সবাজার ছেড়ে যাবে। যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা থাকবে।’
ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৩২৫ টাকা, এসি সিটের ১ হাজার ৫৯০ টাকা এবং এসি বার্থের (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ভাড়া ২ হাজার ৩৮০ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৩৮৬ টাকা, এসি সিটের ৪৬৬ এবং এসি বার্থের ৬৯৬ টাকা।
গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেল পথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রেল নেটওয়ার্কে ৪৮তম জেলা হিসেবে যুক্ত হয় কক্সবাজার।
ওই সময় তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড় থেকে কক্সবাজার অথবা রাজশাহী থেকে কক্সবাজার, দক্ষিণাঞ্চল সুন্দরবন থেকে কক্সবাজার, এমনকি গোপালগঞ্জ-ফরিদপুর, অর্থাৎ সমগ্র বাংলাদেশ থেকেই যাতে সহজে কক্সবাজার আসা যায় সেই পদক্ষেপও আমরা নেব। এই যোগাযোগগুলো সম্পন্ন হলে আমাদের পর্যটনের ক্ষেত্রে একটা বিরাট পরিবর্তন আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
কক্সবাজারে নির্মাণ করা হয়েছে আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন। দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন বলেন, ‘ছয়তলার এই স্টেশনে রয়েছে চলন্ত সিঁড়ি, মালামাল রাখার লকার, হোটেল, রেস্তোরাঁ, শপিংমলসহ আধুনিক সব সুবিধা। ৪৬ হাজার মানুষের ধারণ ক্ষমতা সম্বলিত স্টেশনটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এতে আছে কনভেনশন হল, ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন বুথ, এটিএম বুথ, এমনকি প্রার্থনার স্থানও। স্টেশনে ফুড কোর্ট, হোটেল ও শপিং কমপ্লেক্সের বিষয়টি বাইরের এজেন্সি দ্বারা টেন্ডারিংয়ের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে।’
দোহাজারী-কক্সবাজার ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১০ শুরু হয়ে ২০১৩ সালে শেষ হবার কথা ছিল। তবে, ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল একনেকে অনুমোদিত হয় এবং এ লাইনে ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। কিন্তু জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ২০১৬ সালে সংশোধিত প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকায়। এই বাজেটে এডিবি ঋণ দেয় ১৩ হাজার ১১৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা আর বাকি চার হাজার ৯১৯ কোটি সাত লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
একনেক অনুমোদনের পর, প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০১০ সালের ১ জুলাই-২০২২ সালের ৩০ জুন ধরা হয়। এ রেলপথ নির্মাণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় এক হাজার ৩৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব হয়। প্রকল্পের ১৬৫ একর সংরক্ষিত বনাঞ্চল ডি-রিজার্ভকরণসহ প্রকল্পে ব্যবহারে অনুমতি পেতে কালক্ষেপণ হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে সবকাজ শেষ হতে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
কক্সবাজারের সঙ্গে শুধু ঢাকা নয়, পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গেও এ রেলপথ যুক্ত হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবির।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বুধবার সর্বাত্মক অবরোধের পর বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করছে বিএনপি।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গত সোমবার বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ দুই কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সর্বাত্মক হরতাল পালন করবে বিএনপি।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের পর থেকে হরতাল, অবরোধের মতো কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে দলটি।
সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার এবং সপ্তাহের মাঝামাঝি মঙ্গলবার বাদে বাকি দিনগুলোতে কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
মন্তব্য