কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অসুস্থ এক বন্দি মারা গেছেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
৫৫ বছর বয়সী আনোয়ার হোসেন খানের বিস্তারিত পরিচয় এবং কোন মামলায় তিনি কারাগারে ছিলেন, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। তার বাবার নাম আছিউল হক।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী মো. আল আমিন বলেন, সকালে কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ঢামেকে নেয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঈগল এক্সপ্রেসের চলন্ত বাসে অস্ত্রের মুখে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ছয় আসামিকে ৩ দিন করে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া গ্রেপ্তার ১০ জনের মধ্যে বাকি চারজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক ফারজানা হাসানাত মঙ্গলবার বিকেলে আসামিদের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন।
আদালত পরিদর্শক তানবীর আহম্মদ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়া আসামিরা হলেন রতন, মান্নান, জীবন, দ্বীপ, বাবু ও সোহাগ।
আদালত পরিদর্শক বলেন, ‘আদালতে ছয়জনের ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। বিচারক তাদের ৩ দিন করে রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন। বাকি ৪ আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।’
আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়া আসামিরা হলেন, আসলাম , রাসেল, আলাউদ্দিন ও নাইম।
সোমবার রাতে গ্রেপ্তার ১০ জনকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করে র্যাব।
গত মঙ্গলবার রাতে টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঈগল এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি ও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মধুপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন বাসের এক যাত্রী।
শুক্রবার ভোরে কালিয়াকৈরের টান সূত্রাপুর এলাকা থেকে আসামি আউয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সকালে গ্রেপ্তার করা হয় নুর নবীকে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল টাঙ্গাইল শহরের দেওলা এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে ডাকাত দলের সদস্য রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
তারা শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন এ তিন আসামি।
রোববার রাতে ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আরও ১০ আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
পুলিশের বর্ণনায় যা ঘটেছিল
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী ঈগল এক্সপ্রেসের বাসটি সিরাজগঞ্জ রোডে জনতা নামের খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে। সেখানে ৩০ মিনিটের মতো বিরতি শেষে বাসটি ফের ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে।
পথে তিনটি স্থান থেকে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চারজন করে মোট ১২ জন ডাকাত যাত্রীবেশে বাসে ওঠেন এবং পেছনের দিকে খালি সিটে বসেন।
যমুনা সেতু (বঙ্গবন্ধু সেতু) পার হওয়ার আধা ঘণ্টা পর (রাত দেড়টার দিকে) টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকায় ডাকাতরা বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ছুরি, চাকুসহ দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাসের চালককে সিট থেকে উঠিয়ে হাত-পা বেঁধে পেছনে সিটের নিচে ফেলে রাখে।
টহল পুলিশের কাছে ধরা পড়া এড়াতে তারা বাসটিকে গোড়াই থেকে ইউটার্ন করে এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ রোড ধরে যেতে থাকে। এই সময়ের মধ্যে ডাকাত দল বাসটির জানালার পর্দা ও যাত্রীদের পরনের বিভিন্ন কাপড় ছিঁড়ে চোখ এবং হাত বেঁধে ফেলে।
পরে ডাকাতরা বাসের ২৪ যাত্রীর কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। বাসের এক নারীকে পাঁচ-ছয়জন ধর্ষণ করে।
আরও পড়ুন:ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ রেখে পালিয়েছেন আরেক নারী। সোমবার রাত সোয়া ১টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটেছে।
ঢামেকের জরুরি বিভাগে দায়িত্বগত ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সোমবার গভীর রাতে দুই নারী অপর এক নারীকে জরুরি বিভাগের গেটে নিয়ে আসেন। ট্রলি ম্যান কবির হোসেন তাকে ট্রলিতে তোলার পর সঙ্গে থাকা দুই নারী টিকিট কেটে আনার কথা বলে সটকে পড়েন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে জরুরি বিভাগে ওই অজ্ঞতানামা নারীকে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।’
‘ওই নারীর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে ও পেট উঁচু দেখা গেছে। এতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এই বিষয়ে শাহবাগ থানায় জিডি করা হয়েছে।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘রাত সোয়া ১টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে দুজন মহিলা ওই অজ্ঞাত নারীকে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। পরে ওই দুই নারী টিকিট কাটার কথা বলে ওখান থেকে পালিয়ে যান।
‘ওই নারীর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে ওই নারীর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পালিয়ে যাওয়া দুই নারীকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
রাজধানীর কামরাঙ্গীর চরে এসপিএ ডায়গনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক হাসান মিসবাহ ও ক্যামেরা পারসন সাজু মিয়ার ওপর হামলা হয়েছে।
ডায়গনস্টিক সেন্টারটির মালিক ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এ সময় দুই সাংবাদিককে মারধর করেন। তাদের ক্যামেরা ভাংচুর করা হয় এবং ছিনিয়ে নেয়া হয় মোবাইল ফোন ও গাড়ির কাগজপত্র। শুধু তাই নয়, প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাদেরকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসেও ওই দুই সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়।
আহত সাংবাদিক হাসান মিসবাহ বলেন, ‘ওই হাসপাতালে একজন ভুয়া চিকিৎসক বসেন। তিনি অন্য একজন চিকিৎসকের বিএমডিসি নম্বর ব্যবহার করে ওই হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে বসে আছেন।
‘ওই হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডাক্তার ওসমানীকে এই ভুয়া চিকিৎসকের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ক্ষেপে যান। তখন আমি বলি- আপনি এই হাসপাতালের মালিক ও একজন ডাক্তার। আপনার নামের পাশেও বিএমডিসি নম্বর লেখা নেই। এটা লেখা থাকলে ভাল হয়।’
হাসান মিসবাহ বলেন, ‘কথোপকথনের এই ডাক্তার ওসমানী বলে ওঠেন- তুই কি আমাকে ভুয়া ডাক্তার মনে করছিস? তুই জানিস আমি কে? দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি। এই তোকে ইন্টারভিউ দেব না।
‘এ পর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার চশমা ভেঙে ফেলেন। আমরা বের হয়ে গাড়িতে আসার পর উনি সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। ড্রাইভারের কাছ থেকে মোবাইল গাড়ির কাগজ নিয়ে নেয়। এরপর তিনি আমার মোবাইল ফোন সেট কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন। আমাকে ও ক্যামেরা পারসন সাজু ভাই এবং ড্রাইভারকে ১৫-২০ জন মিলে মারধর করে। পরে আমাদেরকে একটা রুমে নিয়ে আটকে রাখে।’
আহত এই সাংবাদিক আরও বলেন, ‘ওখানে কিছুক্ষণ পর দুজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন। তাদের একজনের নাম মিলন হোসেন। তিনি পরিচয় জানতে চাইলে আমরা পরিচয় দেই। এরপর কার্ড চাইলে ক্যামেরা পারসন সাজু ভাই তার কার্ড বের করে দেন।
‘কার্ড হাতে নিয়ে পুলিশ সদস্য মিলন বললেন-তোরা ভূয়া সাংবাদিক। তখন আমি আবার আমার পরিচয় দেই এবং জানাই যে অফিসের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে এখানে এসেছি। আপনি অফিসে ফোন দেন। উনি কোনো কথা না শুনে চেয়ার থেকে উঠে আমার দিকে তেড়ে আসেন এবং আমার মুখে আঘাত করেন।’
এদিকে খবর পেয়ে অন্য পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের উদ্ধার করেন। এ সময় দুইজনকে আটক করা হয়। এছাড়া সাংবাদিকদের মারধর করার দায়ে কামরাঙ্গরচর থানার এসআই মিলন হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাফর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনায় আমরা ইতোমধ্যে জড়িত দুজনকে আটক করেছি। এছাড়া সাংবাদিকের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য এসআই মিলনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বসে থাকাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের এক ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধর করে কান এবং নাক ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭-৮ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক এ কে এম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে তিনি একই হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন।
অবশ্য মারধরের শিকার হলেও অভিযুক্তদের নাম জানাতে পারেননি সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আমাকে যখন মারা হচ্ছে, তখন তারা বলেছে এটা ঢাবি ক্যাম্পাস। আমি সেখানে কী করছি? এ সময় তাদের গায়ে ঢাবির লোগো সংবলিত টিশার্ট ছিল।’
এই ঘটনায় সাজ্জাদ মঙ্গলবার শাহবাগ থানায় জিডি এবং আগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানান।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাজ্জাদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত আমি হাসপাতালের রিডিংরুমে পড়াশোনা করি। ৯টার পর ইচ্ছে হলো, একটু চা খেয়ে আসি। এরপর চা খেতে শহীদ মিনারে যাই। চা খেয়ে শহীদ মিনারের নিচে বসে বাদাম খাচ্ছিলাম।
‘কিছুক্ষণ পর দেখি, সাত-আটজন ছেলে এসে সেখানে বসা সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। আর কাউকে কাউকে তুলে দিচ্ছিল। তাদের কয়েকজনের গায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সংবলিত টিশার্ট ছিল।’
তিনি বলেন, ‘পরে দুই-তিনজন ছেলে আমার কাছেও আসে। এসে জিজ্ঞেস করে, আমি সেখানে কী করছি? আমার পরিচয় কী, আমি কোথাকার? আমি নিজের পরিচয় দিলে তারা আমার পরিচয়পত্র দেখতে চায়। সে সময় আমার সাথে কার্ড ছিল না।’
সাজ্জাদ বলেন, ‘আমার কাছে পরিচয়পত্র নেই জানালে তারা আমাকে বলে, পরিচয়পত্র নেই কেন? আমাদের কাছে তো পরিচয়পত্র আছে। তখন আমি বললাম, সবাই কি সব সময় পরিচয়পত্র নিয়ে ঘোরে?’
‘তাকে এই প্রশ্ন কেন করলাম সে জন্য একজন সাথে সাথে আমাকে থাপ্পড় মেরে বলে আমার সাথে তো আইডি কার্ড আছে, তোর সাথে থাকবে না কেন? এরপর পাশে থাকা দুই-তিনজন এসে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারা শুরু করে।’
সাজ্জাদ বলেন, ‘মারধরের একপর্যায়ে আমি চিৎকার করে বলি, আমি কী করেছি? আমাকে মারছেন কেন? আপনারা চাইলে আমার সঙ্গে ঢাকা মেডিক্যালে গিয়ে আমার পরিচয়পত্র দেখে আসতে পারেন।
‘এই কথা বলার পর তাদের একজন বলে, আপনি আবার কথা বলেন! এটা বলেই আরও কয়েকটা থাপ্পড় দিল। এ সময় আমার চিল্লানি শুনে তাদের সাথে আসা বাকিরাও আমার সামনে চলে আসে। তারা এসে ইচ্ছেমতো আমাকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। এর মধ্যে একজন কানের নিচে থাপ্পড় দিলে আমি ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাই।’
সাজ্জাদ বলেন, ‘আমি কেন বসে যাই এবং কেন সেখান থেকে যাচ্ছি না, সে কথা বলে একজন আমাকে তার জুতা পায়ে মুখ বরাবর লাথি মারে। আমার মুখে স্যান্ডেলের বালি পর্যন্ত লেগে ছিল।
‘এরপর তারা আমাকে ধাক্কিয়ে ফুটপাত পর্যন্ত নিয়ে আসে। এই আনা পর্যন্ত যে যেভাবে পারছে আমারে মারছে। পরে তারা আমাকে একটা রিকশায় তুলে দিলে আমি আমার হলে ফিরে আসি।’
সাজ্জাদ বলেন, ‘হলে আসার পর আমি এক কানে কম শুনতেছি, নাক থেকে রক্ত বের হচ্ছিল। মাড়িও কেটে গেছে। গালের পাশে ফুলে আছে। চোখ ডান পাশেরটা লাল হয়ে আছে। এরপর ইমার্জেন্সিতে গেলাম। পুলিশ কেস সিলসহ ইঞ্জুরি নোট লিখল। নাক-কান-গলায় রেফার করল। নাক দেখে বলল, নাকের সেপ্টাম ইনজুর্ড হয়েছে।
‘কান দেখে বলেছে, কানের পর্দায় ব্লিডিং স্পট আছে, হিয়ারিং লস আছে কি না বুঝতে অডিওগ্রাম করতে হবে।’
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টা আমি শুনেছি। তবে এখনো কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। কেউ থানায় অভিযোগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের শনাক্ত করতে সার্বিক সহযোগিতা করবে।’
আরও পড়ুন:বগুড়ার শাজাহানপুরে কচুক্ষেত থেকে ফাহিম ফয়সাল নামে এক স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার সাজাপুর বানারশি গ্রামে থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে সোমবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিল ফাহিম।
নিহত ১৬ বছরের ফাহিম সাজাপুর ফকিরপাড়া গ্রামের শাহাদাৎ হোসেন সাজুর ছেলে। সে সুলতানগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর থানার এসআই শামীম হোসেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত ফাহিমকে গ্রামে ঘুরতে দেখা গেছে। এর পর থেকেই নিখোঁজ ছিল সে। আজ সকালে গ্রামের একটি কচুক্ষেতে ফাহিমের মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাদের খবরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
এসআই শামীম বলেন, ‘ফাহিমের শরীরে ছোট ছোট অনেক ক্ষত রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।’
শাজাহানপুর থানার তদন্ত পরিদর্শক আব্দুর রউফ বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
নিহতের স্বজনরা জানান, স্থানীয় কয়েক কিশোরের সঙ্গে ফাহিমের দ্বন্দ্ব ছিল। সোমবার আশুরা উপলক্ষে মিলাদে গণ্ডগোলও হয়েছিল। এরপর রাতে ফাহিমকে এলাকায় দেখা গেলেও পরে আর বাড়ি ফেরেনি সে। সকালে কচুক্ষেতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। দ্বন্দ্বের জেরে তাকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহ সদরে কথা-কাটাকাটির জেরে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে মো. আসাদ নামে এক তরুণ খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সদরের চুরখাই প্রিয়কুঞ্জ পার্ক এলাকায় সোমবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ১৮ বছর বয়সী আসাদ এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে। তিনি বালু শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন।
আসাদের পরিবারের বরাতে তিনি বলেন, ‘আসাদ রাতে তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে চুরখাই প্রিয়কুঞ্জ এলাকায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেখানে হঠাৎ কথা-কাটাকাটির জেরে আসাদকে তার বন্ধুদের কেউ একজন ছুরিকাঘাত করেন।
‘পরে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক হোসেন আরও বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের মধুপুরে আলোচিত ঈগল এক্সপ্রেসের চলন্ত বাসে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০ জনকে আদালতে তোলা হচ্ছে।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে তাদের তোলার কথা রয়েছে।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি হেলাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার ১০ জনকে আজ বিকেলে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রুমী খাতুনের আদালতে তোলা হবে।’
সোমবার রাতে র্যাব গ্রেপ্তারকৃত ১০ জনকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেন।
এর আগে গত রোববার রাতে ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব। সোমবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মূল পরিকল্পনাকারী রতন হোসেন, মো. আলাউদ্দিন, সোহাগ মণ্ডল, খন্দকার মো. হাসমত আলী ওরফে দীপু, বাবু হোসেন ওরফে জুলহাস, মো. জীবন, আব্দুল মান্নান, নাঈম সরকার, রাসেল তালুকদার ও আসলাম তালুকদার ওরফে রায়হান। তাদের বয়স ১৮ বছর থেকে ৩২-এর মধ্যে।
বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। গত শনিবার রাতে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গত ২ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী ঈগল এক্সপ্রেসের বাসটি সিরাজগঞ্জ রোডে জনতা নামক খাবার হোটেলে যাত্রাবিরতি করে। সেখানে ৩০ মিনিটের মতো বিরতি শেষে বাসটি ফের ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে।
পথে তিনটি স্থান থেকে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চারজন করে মোট ১২ জন ডাকাত যাত্রীবেশে বাসে ওঠেন এবং পেছনের দিকে খালি সিটে বসেন।
যমুনা সেতু (বঙ্গবন্ধু সেতু) পার হওয়ার আধাঘণ্টা পর (রাত দেড়টার দিকে) টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকায় ডাকাতরা বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ছুরি, চাকুসহ দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাসের চালককে সিট থেকে উঠিয়ে হাত-পা বেঁধে পেছনে সিটের নিচে ফেলে রাখে।
টহল পুলিশের কাছে ধরা পড়া এড়াতে তারা বাসটিকে গোড়াই থেকে ইউটার্ন করে এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ রোড ধরে যেতে থাকে। এই সময়ের মধ্যে ডাকাতদল বাসটির জানালার পর্দা ও যাত্রীদের পরনের বিভিন্ন কাপড় ছিঁড়ে চোখ এবং হাত বেঁধে ফেলে।
পরে ডাকাতরা বাসের ২৪ যাত্রীর কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। বাসের এক নারীকে পাঁচ-ছয়জন ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় বাসের যাত্রী হেকমত আলী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য