× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Brahmattar is now a vegetable village wrapped in greenery
google_news print-icon

ব্রহ্মোত্তর এখন সবজির গ্রাম

ব্রহ্মোত্তর-এখন-সবজির-গ্রাম
বাড়ির উঠানে পতিত জমিতে গড়ে ওঠা এসব বাগানে চাষ করা হচ্ছে নানা ধরনের সবজির। ছবি: নিউজবাংলা
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম বলেন, ‘কামার পুকুর ইউনিয়নের ব্রহ্মোত্তর এলাকার পুষ্টি বাগান পরিদর্শন করেছি। খুব ভালো লেগেছে সবজি বাগান দেখে। শুধু সৈয়দপুর নয়, পুরো নীলফামারী জেলার প্রতিটি বাড়িতে এ ধরনের বাগান গড়ে তুলতে আমরা সহযোগিতা করব।’

সাড়া ফেলেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার পারিবারিক পুষ্টি বাগান প্রকল্প। উপজেলার কামার পুকুর ইউনিয়নের ব্রহ্মোত্তর গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির উঠানে পতিত জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে এ বাগান। অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে নানা রঙের শাক-সবজি। সবুজে ঘেরা সবজির বাগান নজর কেড়েছে মানুষের। তাই এটি এখন সবজি গ্রাম হিসেবে পরিচিত।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, সৈয়দপুরে অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির উঠানে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় পুষ্টি বাগান তৈরি হচ্ছে। এ জন্য আগ্রহীদের প্রশিক্ষণসহ সার ও বীজ দেয়া হয়েছে সরকারিভাবে।

ব্রহ্মোত্তর গ্রামের কুতুপাড়া এলাকার আমজাদ হোসেনের স্ত্রী নার্গিস আক্তার বলেন, ‘বাড়ির সামনের জায়গাটুকু পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল, ময়লা ফেলতাম। গরু-ছাগল বেঁধে রাখতাম, প্রসাব-পায়খানা করত অনেকেই। দুর্গন্ধ ছড়াত।

‘এখন এ জায়গায় দেড় শতকে অনেক ধরনোর শাক-সবজির চাষ করছি। টাটকা সবজি সংগ্রহ করে খেতে পারছি। বাগানটি করে অনেক উপকৃত হয়েছি।’

ব্রহ্মোত্তর এখন সবজির গ্রাম

তিনি আরও বলেন, ‘দেড় শতক জায়গা এখন আমার কাছে অনেক বড় সম্পদ মনে হচ্ছে। লাউ, বেগুন, শিম, বরবটি, পেঁপে, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, করলা, কায়তা, পাটশাক, লালশাক ও সবুজ শাক চাষ করছি।’

বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত জায়গায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান গড়ে তুলেছেন সরকারপাড়ার আফতাব উদ্দিনের স্ত্রী জোহরা বেগম।

তিনি বলেন, ‘এখন আর আমাদের বাজার থেকে শাক-সবিজ কিনতে হয় না। নিজেদের বাগানে শাক-সবজি জৈব সার দিয়ে চাষ করছি। এতে কোনো ধরনের রাসায়নিক সার কিংবা কীটনাশক ব্যবহার করছি না। মুরগির বিষ্ঠা, মাছের পানি, উচ্ছিষ্ট সার হিসেবে ব্যবহার করছি।

‘শুধু আমরা খাই তা কিন্তু নয়, অনেকে কিনে নিয়ে যান সবজি। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাচ্ছি আমরা, এটাই বড় বিষয়।’

কোরানীপাড়া এলাকার দিনমজুর মোতালেব হোসেন। তিনিও বাড়ির পাশে দেড় শতক জায়গাজুড়ে গড়ে তুলেছেন সবজির বাগান। বলেন, ‘আমি চিন্তাও করিনি এতটুকু জায়গায় এত ধরনের ফসল ফলানো সম্ভব। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতায় এটি সম্ভব হয়েছে, বিশেষ করে স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোমিনুর মোস্তফা জামানের উদ্যোগেই এটি সম্ভব হয়েছে।’

‘তিনি আমাদের বীজ দিয়েছেন, কোথায় কী বীজ দিতে হবে, কিভাবে জাংলা দিতে হবে, সব শিখিয়ে দিয়েছেন। যার ফলে এ ধরনের বাগান করা সম্ভব হয়েছে।’

রোববার ব্রহ্মোত্তর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ৩৫টি বাড়ি নিয়ে গড়ে ওঠা পাড়াটি এখন সবজি গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। যে কাউকে বললেই দেখিয়ে দেবে সবজি গ্রামের লোকেশন।

আর এলাকার মানুষ এখন আর সরকারপাড়া, কোরানীপাড়া কিংবা কুতুপাড়ার মানুষ হিসেবে নন, পুষ্টি গ্রামের মানুষ হিসেবে পরিচিত।

এলাকার বাসিন্দা পোশাক কারখানার শ্রমিক খাদিজাতুল জান্নাত বলেন, ‘রাস্তা দিয়ে হাঁটলে এখন আর প্রসাব, পায়খানা বা আবর্জনা চোখে পড়ে না। লাউ, শিম, বরবটি, পেঁপে, বেগুনের মতো সবজিগুলোতে এখন চোখ জুড়িয়ে যায়।

ব্রহ্মোত্তর এখন সবজির গ্রাম

‘আমিও পারিবারিক পুষ্টি বাগান করতে যোগাযোগ করেছি ওই কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে। এ বাগানের উপকারিতা চোখের সামনে দেখছি।’

ব্রহ্মোত্তর ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোমিনুর মোস্তফা জামান বলেন, ‘চলতি বছরের শুরু থেকে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন শুরু হয়। কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে প্রশিক্ষণ, বীজ ও সার দিয়ে পরিকল্পনামাফিক এ বাগান তৈরি করা হয়। এর সুফল পাচ্ছেন বাগান মালিক ও এলাকার বাসিন্দারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাগানের মালিকরা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ শাক-সবজি গ্রহণ করতে পারছেন, উৎপাদনে মনোনিবেশ তৈরি হচ্ছে এবং সংসারের কাজের ফাঁকে তারা কৃষিতে সময় দিতে পারছেন। এটি কৃষি বিভাগের একটি সফলতা।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনা বেগম জানান, ‘উপজেলায় ৬০০টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে ২৮৬টি বাগান তৈরি হয়েছে। কামার পুকুর ইউনিয়নের ব্রহ্মোত্তরপাড়ায় ৩৫টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে। এলাকাটি এখন পুষ্টি গ্রাম হিসেবেই পরিচিত।

‘ওই এলাকার বাসিন্দারা এখন নিরাপদ সবজি গ্রহণ করছেন। সরকারিভাবে বীজ, সার ও চারা দেয়া হচ্ছে। শাক-সবজির পাশাপাশি কমলা, পেয়ারা, মাল্টা ও লেবুও উৎপাদন করছেন বাগানিরা।’

এ বিষয়ে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক ইঞ্চি জমিও যাতে খালি না থাকে। কৃষি বিভাগও সে চেষ্টাই করে যাচ্ছে। সেই আলোকে সৈয়দপুরে বাড়ির আঙিনায় পুষ্টি বাগান তৈরি হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘কামার পুকুর ইউনিয়নের ব্রহ্মোত্তর এলাকার পুষ্টি বাগান পরিদর্শন করেছি। খুব ভালো লেগেছে সবজি বাগান দেখে। শুধু সৈয়দপুর নয়, পুরো নীলফামারী জেলার প্রতিটি বাড়িতে এ ধরনের বাগান গড়ে তুলতে আমরা সহযোগিতা করব।’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Untimely rain caused extensive damage to onions in Faridpur

অসময়ের বৃষ্টিতে ফরিদপুরে পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি

অসময়ের বৃষ্টিতে ফরিদপুরে পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি পেঁয়াজের খেতে বৃষ্টির পানি জমে চারা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা জেগেছে। ছবি: নিউজবাংলা
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় এ বছর প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। তবে বৃষ্টিতে এভাবে নষ্ট হয়ে গেলে আগামী মৌসুমে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে ধারণা কৃষকদের।

ফরিদপুরের নগরকান্দায় ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে তিন দিনের টানা বর্ষণে ডুবে গেছে খেতের ফসল। এতে বীজতলাসহ খেত পানিতে ডুবে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পেঁয়াজ চাষ। পানিতে তলিয়ে যাওয়া ৭০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। এতে করে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ার দুশ্চিন্তা তাদের কপালে।

নগরকান্দা গ্রামের কৃষক মো. আহাদ হোসেন বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে আমাদের খেতের পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হালি পেঁয়াজ পচে যাওয়ার ভয়ে কাদার মধ্যেই চারা রোপন করছি। এতে করে আমরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ব।’

একই এলাকার কৃষক ফরহাদ শেখ বলেন, ‘এনজিও থেকে লোন তুলে পেঁয়াজের চারা রোপন করেছি। তিন দিনের বৃষ্টিতে আমার রোপনকৃত সব চারা ডুবে গেছে, আমি এখন কী করব? কীভাবে এনজিওর টাকা শোধ করব?- ভেবে পাচ্ছি না।’

নগরকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তিলক কুমার ঘোষ বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে উপজেলার প্রায় সাড়ে তিন শ’ হেক্টর জমির মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও চল্লিশ হেক্টর জমির হালি পেঁয়াজ বৃষ্টির পানিতে আক্রান্ত হয়েছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের জমি থেকে পানি নামিয়ে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় এ বছর প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। তবে বৃষ্টিতে এভাবে নষ্ট হয়ে গেলে আগামী মৌসুমে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে ধারণা কৃষকদের।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Waterlogging in canal filling Farmers in cycle of crop failure

নালা ভরাটে জলাবদ্ধতা: ফসল নষ্টের চক্রে কৃষক

নালা ভরাটে জলাবদ্ধতা: ফসল নষ্টের চক্রে কৃষক জলাবদ্ধতার কারণে পাকার আগেই খেতে নষ্ট হচ্ছে আমন ধান। ছবি: নিউজবাংলা
আগে থেকে থাকা নালাটি ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণেই প্রতি বছর এমন ভোগান্তি পোহাতে হয় কৃষকদের। বোরো মৌসুমে তো পানি থাকেই, শুকনো আমন মৌসুমেও ধানখেতে থাকে হাঁটুপানি। আবার বৃষ্টির সময় তলিয়ে যায় বীজতলা। সব মিলিয়ে একটি নালা খনন এখন ওই অঞ্চলের কৃষকদের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

খেতের পাকা আমন ধান অনেকেই এখনও কেটে ঘরে তুলতে পারেননি; অনেকে আবার কাটেননিও। কিন্তু তার আগেই ভিজে এসব ধান নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গাইবান্ধার সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের রাধাকৃষ্ণপুরের ধানচাষিদের কপালে তাই এখন দুশ্চিন্তার ছাপ।

জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে নষ্ট হচ্ছে ওই অঞ্চলের পাকা আমন ক্ষেত। একদিকে পানিতে পড়েছে ধান, অপরদিকে শ্রমিক সংকট এবং বাড়তি মজুরির চাহিদায় দিশেহারা এ এলাকার কৃষক। হাড়ভাঙা খাটুনি আর ধার-দেনা করে উৎপাদিত ফসল থেকে লাভবান হওয়া তো দূরের কথা, পুঁজি উঠবে কি না- তা নিয়ে আশঙ্কায় দিন কাটছে তাদের।

আগে থেকে থাকা নালাটি ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণেই প্রতি বছর এমন ভোগান্তি পোহাতে হয় কৃষকদের। বোরো মৌসুমে তো পানি থাকেই, শুকনো আমন মৌসুমেও ধানখেতে থাকে হাঁটুপানি। আবার বৃষ্টির সময় তলিয়ে যায় বীজতলা। সব মিলিয়ে একটি নালা খনন এখন ওই অঞ্চলের কৃষকদের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় কৃষি-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘এই এলাকার পানি নিষ্কাশনের কোনো নালা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতার কারণেই পাকা আমন ধান পানিতে পড়েছে।’

কৃষকরা জানান, হাল, সার, বীজ, কীটনাশক থেকে শুরু করে সেচ, নিড়ানি ও ধান কাটা পর্যন্ত যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, ধান ঘরে তুলতে না পারলে সেই খরচ কীভাবে উঠবে তাদের। এদিকে এ বছরের আমন মৌসুমে অনাবৃষ্টি বা অতি খরার কারণে চাষাবাদের প্রথম পর্যায়ে দফায় দফায় সেচ দিতে গিয়ে গুনতে হয়েছে বাড়তি টাকা; কীটনাশকেও খরচ হয়েছ দ্বিগুণ।

তাদের দাবি, শুধু এই আমন মৌসুমেই নয়, আমন-ইরির দুই মৌসুমেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে তাদের। জলাবদ্ধতার কারণে নষ্ট হয় বীজতলাও। এ ছাড়া এ কারণে একদিকে যেমন সঠিক সময়ে ব্যাহত হয় চারা রোপন, অন্যদিকে কোনো কোনো মৌসুমে অপরিপক্ক কাঁচা ধানই কাটতে হয় চাষিদের। এসব ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে জরুরি ভিত্তিতে ওই এলাকায় নালা খননের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।

নালা ভরাটে জলাবদ্ধতা: ফসল নষ্টের চক্রে কৃষক

সরেজমিনে সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম রাধাকৃষ্ণপুর (ভেলাকোপা) গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পাকরিছিড়া নামক সেতুর উত্তরের পাথারের ফসলের মাঠে পানির মধ্যে ধান কাটছেন চাষি-শ্রমিকরা। ওই এলাকার আমন ধানের জমিগুলোতে এখনও প্রায় হাঁটু পরিমাণ পানি। কোনো কোনো জমিতে পানির পরিমাণ হাঁটুর বেশ নিচে হলেও কাদাপানিতে মিশে গেছে ধানগাছ। যেসব জমির ধানগাছ বেশিদিন ধরে পানিতে পড়ে আছে, সেগুলো প্রায় পঁচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কৃষকরা অনেকটা বিরক্ত পরিবেশেই জমির ধান কাটছেন। এ ছাড়া এ ব্রিজের পশ্চিম-উত্তরে এসকেএসইন সংলগ্ন এলাকায় ও ভেলাকোপা ব্রিজের পূর্ব-পশ্চিম পাশের কিছু জমিতেও একই অবস্থা দেখা গেছে। আটকে থাকা পানি আসলে গেল বর্ষা মৌসুমের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পানি নিষ্কাশনের জন্য সাদুল্লাপুর থেকে আসা নালাটি তুলসিঘাট হয়ে পশ্চিম রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের ওপর দিয়ে বোয়ালী ইউনিয়নের আলাই নদীতে গিয়ে সংযুক্ত হয়। প্রায় ত্রিশ বছর পূর্বে প্রতিবছরই বড় বন্যা হওয়ার কারণে নালার প্রয়োজন নেই মনে করে রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কাদের মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে পূর্ব রাধাকৃষ্ণপুর পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার নালা (৮ নম্বর বোয়ালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ওই অংশ) জমির মালিকরাই ভরাট করে ফেলেন। কিন্তু বর্তমানে বন্যার পানি আর অতিবৃষ্টিতে কয়েকটি ইউনিয়নের পানি সাদুল্লাপুর থেকে আসা নালা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এই এলাকায় এসে পড়ে। আর এই এলাকায় অর্থাৎ ৮ নম্বর বোয়ালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড অংশে পানি নিষ্কাশনের কোনো নালা না থাকা আর জমিগুলো তুলনামূলক নিচু হওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে দেড় শতাধিক ধানচাষিকে।

তবে, ওই এলাকার কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের মৃত কাদের মিয়ার বাড়ির সামনের নালা হতে বোয়ালী ইউনিয়নের পূর্ব রাধাকৃষ্ণপুর নালা পর্যন্ত মাত্র ২ থেকে আড়াই কি.মি. নতুন নালা খনন করে উভয় পাশের পুরাতন নালায় সংযোগ স্থাপন করা হলে এই জলাবদ্ধতা থাকবেনা বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা। ওই অংশে নালা খনন করা হলে দ্রুক পানি নেমে গিয়ে একদিকে যেমন নিরসন হবে জলাবদ্ধতা, অন্যদিকে তিন ফসলি চাষাবাদের সুযোগ সৃষ্টি হয়ে কৃষক লাভবান হবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।

নালা ভরাটে জলাবদ্ধতা: ফসল নষ্টের চক্রে কৃষক

ওই গ্রামের গৃহস্থ কৃষক জফের উদ্দিন দুদু বলেন, ‘দ্রুত পানি নেমে যাওয়ার কোনো নালা না থাকায় প্রতি বছরই বিশেষ করে আমন মৌসুমে প্রায় তিন শ’ বিঘা জমির ফসল বিভিন্নভাবে নষ্ট হয়। এ সময় পানিতে ধান কাটতে কামলা (শ্রমিক) পাওয়া যায় না। গেলেও দ্বিগুণ মজুরি গুনতে হয়। আর এতে করে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

বর্গাচাষি মধু মিয়া বলেন, ‘ধার-দেনা করে এক বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি। সেই ধান পানিতে পড়েছে। এতে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে তা-ই উঠবেনা। দুই পাশেই নালা আছে, এখানেও নালা খনন খুবই দরকার।’

একই গ্রামের গৃহস্থ শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু আমন মৌসুমেই নয়, বোরো মৌসুমেও পানির মধ্যে ধান কাটতে হয়। জলাবদ্ধতার কারণে নষ্ট হয় বীজতলাও। আবার অনেক সময় চারা রোপনের কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টি হলে চারা তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। আমরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।’

জলাবদ্ধতা নিরসনসহ কৃষকদের তিন ফসলের চাষাবাদের সুযোগ সৃষ্টি করতে ওই অংশে নালা খননের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ঠদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাস সাবু বলেন, ‘কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে নালা খননে পরিষদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ওই এলাকায় নালা খনন অপরিহার্য। তাতে কৃষকেরা ক্ষতি থেকে বাঁচবে এবং তিনটি ফসল চাষাবাদ করে তারা লাভবানও হবে।’

এ ব্যাপারে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহামুদ আল হাসান মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সামনে আমরা আলাই নদী নিয়ে একটা প্রজেক্ট (প্রকল্প) হাতে নিচ্ছি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ওই এলাকায় নালা খননে দ্রুতই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Jhalkathi farmers benefit from cotton cultivation

তুলা চাষে লাভবান ঝালকাঠির চাষিরা

তুলা চাষে লাভবান ঝালকাঠির চাষিরা ঝালকাঠির গাবখান গ্রামের একটি তুলা চাষের বাগান। ছবি: নিউজবাংলা
কটন ইউনিট কর্মকর্তা (গাবখান ইউনিট) সৈয়দ শাহিন হোসেন গাজী বলেন, ‘ঝালকাঠি গাবখান থেকে এ তুলা ক্রয় করে নিয়ে যাওয়া হয় যশোরের ঝিকড়গাছার একটি বেসরকারী জিনার মিলে। সেখানে মেশিনের মাধ্যমে জিনিং করে বিভিন্ন কটন মিলে বিক্রি করা হয়। তুলা চাষকে কেন্দ্র করে ঝালকাঠির স্থানীয় প্রান্তিক কৃষকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। ঝালকাঠিতে অনেক পতিত জমি থাকায় এ অঞ্চল তুলা চাষের উপযোগী।’

ঝালকাঠি সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে তুলা চাষ করে আর্থিক লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। এসব তুলা সরাসরি মিল কর্তৃপক্ষ কিনে নেয়ায় তাদের লাভ হচ্ছে বেশি আর এতে তুলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয় আরও অনেক চাষি।

সদর উপজেলার গাবখান-ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের কৃষিভিত্তিক গাবখান গ্রামে যশোর তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় পরীক্ষামূলক ভাবে ২০১১ সালে শুরু হয় রূপালি-১ এবং হোয়াইট গোল্ড জাতের তুলার চাষ।

সেই থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় এক যুগ ধরে তুলা চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন বাগান মালিকসহ এখানকার কৃষক ও শ্রমিকরা।

স্থানীয় তুলা চাষিরা জানান, একটু উচু জমিতে কান্দি পদ্ধতিতে আষাঢ় শ্রাবন মাসে তুলার বীজ লাগানো শুরু হয়। বীজ বপনের ৫৫ থেকে ৬০ দিন পরে গাছে ফুল ধরে। সেই ফুল থেকে বের হয় তুলা। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চৈত্র থেকে বৈশাখ মাস জুড়ে তারা মাঠ থেকে তুলা সংগ্রহ করেন। বিগত বছরগুলোতে একর প্রতি ১০ থেকে ১৫ মন তুলার ফলন হয়েছে।

তবে এ বছর আষাঢ় শ্রাবন মাসে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় অনেক গাছ নষ্ট হয়েছে। তাই এ বছর তুলার ফলন কিছুটা কম হওয়ার কথা জানালের কৃষকরা। তারা মনে করেন, সরকার তুলা চাষের দিকে একটু নজর দিলে অনেক কৃষকের কর্মসংস্থান হবে এবং তুলার ব্যপক চাহিদা থাকায় বাজার নিয়েও কোন শংকা থাকবে না।

কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, ‘২০১১ সালে যশোর তুলা উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় আমি ৮ বিঘা জমিতে তুলা চাষ শুরু করি গাবখান এলাকায়। সেই থেকে এখনও আমি এই তুলা চাষ করে যাচ্ছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে তুলা চাষে কোন লোকসান হয়না। ‘স্থানীয় বেকার ও বয়স্ক লোক দিয়ে এ তুলা মাঠ থেকে সংগ্রহ করে থাকি। তাতে তাদের সংসার খরচটাও এই সিজনে ভালো ভাবে চালাতে পারে। তুলা আমি মাঠ থেকেই যশোরসহ বিভিন্ন মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করে থাকি। শুধু তুলাই নয়, এ তুলার বীজ থেকে তৈল ও খৈড় তৈরি করে বাড়তি আয় করাও সম্ভব।’

দিনমজুর লাল মিয়া হওলাদার বলেন, ‘গাছে ফুল ধরেছে। আর কয়েকমাস পরেই তুলার ফলন হবে। আমি কয়েক বছর ধরে এ বাগানে কাজ করি। বীজ রোপন এবং পরিচর্যা করি দৈনিক মজুরী হিসেবে। তুলা ফলনের পর মাঠ থেকে তুলা তুলে দিয়ে কেজি প্রতি ৩০ টাকা মজুরী পাই। মৌসুমে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ কেজি তুলা মাঠ থেকে সংগ্রহ করতে পারি। আমার বয়স হয়েছে এখন আর কেউ কাজে নেয় না, এই তুলাটা চাষ হয় বলে আমি এখানে কাজ করে টাকা রোজগার করতে পারি।’

আরেক দিনমজুর হেনারা বেগম বলেন, ‘গাবখান এলাকায় তুলা চাষ শুরু হওয়া থেকে আমি প্রতি বছর এখানে কাজ করি। তবে রোপনের কাজ করিনা, আমি শুধু গাছ থেকে তুলা তুলি। আমার স্বামী একজন দিনমজুর, তার আয়ে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয় তাই এ তুলা তুলে যে টাকা পাই তা থেকে আমাদের সংসার ও ছেলে-মেয়ের খরচ চালাই।’

কটন ইউনিট কর্মকর্তা (গাবখান ইউনিট) সৈয়দ শাহিন হোসেন গাজী বলেন, ‘ঝালকাঠি গাবখান থেকে এ তুলা ক্রয় করে নিয়ে যাওয়া হয় যশোরের ঝিকড়গাছার একটি বেসরকারী জিনার মিলে। সেখানে মেশিনের মাধ্যমে জিনিং করে বিভিন্ন কটন মিলে বিক্রি করা হয়। তুলা চাষকে কেন্দ্র করে ঝালকাঠির স্থানীয় প্রান্তিক কৃষকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। ঝালকাঠিতে অনেক পতিত জমি থাকায় এ অঞ্চল তুলা চাষের উপযোগী।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Farmers in Meherpur fear of loss due to high price of potato seeds

মেহেরপুরে আলুর বীজের চড়া দামে লোকসানের শঙ্কায় কৃষক

মেহেরপুরে আলুর বীজের চড়া দামে লোকসানের শঙ্কায় কৃষক মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার একটি আড়তে রাখা আলু। ছবি: নিউজবাংলা
আলুর বীজ বিক্রেতা আবদুল মালেক বলেন, ‘এ বছর বীজ অথবা খাবার আলু দুটোর দামই বেশি। গতবার আমরা যে আলুর বীজ এই সময় ৩০ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি করেছি, এবার তার দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ফলে অনেক চাষিই আলু চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।’

মেহেরপুরে চলতি মৌসুমে আলুর বীজের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় পণ্যটি চাষ করে লাভ তোলা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।

সরকারিভাবে গত বছর কার্ডিনাল ও ডায়মন্ড আলুর বীজ ৩০ থেকে ৩২ টাকা এবং এরিস্টন জাতের আলুর বীজ বিক্রি হয় ৩৫ টাকা কেজিতে। সেখানে চলতি বছরে কার্ডিনাল ও ডায়মন্ড আলুর বীজ সরকারি দাম নির্ধারণ করা হয় ৫৬ টাকা। আর এরিস্টন জাতের আলুবীজ বিক্রির দাম নির্ধারণ করা হয় ৬০ টাকা। অথচ খুচরা বাজারে ডায়মন্ড আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা করে। আর এরিস্টন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা করে। কার্ডিনাল আলুর বীজ বিএডিসি কর্তৃক শেষ হওয়ায় বাজারে তার দেখা মিলছে না।

কৃষকদের বিঘাপ্রতি জমিতে আলু চাষের জন‍্য ছয় মণ হারে বীজের প্রয়োজন হয়। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ যোগ করলে এক বিঘা আলু চাষে কৃষকের বতর্মান সময়ে খরচ পড়বে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে, গত বছর যেটি ছিল ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।

কৃষকদের অভিযোগ, দ্রব‍্যমূল‍্যের ঊর্ধ্বগতির দোহাই দিয়ে ব‍্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ‍্যমে আলুর দামে বাড়িয়েছে, যার ফলে বেড়ে গেছে আলুবীজের দাম। বাজারে সব জিনিসের দাম বাড়ার পাশাপাশি অধিক দামে আলুবীজ কিনে চাষ করার পরে যখন আলু উৎপাদন শেষে বাজারে বিক্রি করতে যান, ঠিক তখনই আলুর দাম কমে যায়। তখন উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় লোকসানে পড়তে হয়।

আর কৃষি বিভাগ বলছে, বতর্মানে আলুর বাজারদর একটু বেশি থাকায় বীজের দাম বেড়েছে। উৎপাদন বাড়লেই আলুর দাম কমে যাবে। তা ছাড়া আলুর বীজের তেমন কোনো সংকট নেই।

কৃষকদের ভাষ্য

মেহেরপুরের গাংনীর কাজিপুর গ্রামের কৃষক হাকিম আলী বলেন, ‘আমরা গত বছর প্রতি কেজি আলুর বীজ কিনেছি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা করে। এ বছর তার দাম বেড়ে হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। ৩০ টাকায় বীজ কিনে আলু উৎপাদন করেও গত বছর আলুর বাজারে দাম কম পাওয়ায় লোকসান হয়েছে। আর এ বছর সার, কীটনাশক, সেচ, শ্রমিক ও বীজের দাম বেশি। তাতে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে।

‘বতর্মানে এক বিঘা আলু চাষ করতে প্রায় ৩০ হাজার টাকার প্রয়োজন পড়বে, যা সব কৃষকের পক্ষে জোগাড় করা এক প্রকার অসম্ভব।’

নওদাপাড়া গ্রামের কৃষক রাজা আহমেদ বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষ যেটিই পছন্দ করবে, তারই দাম বেড়ে যাবে। মনে করছিলাম এ বছর দুই বিঘা জমিতে আলুর চাষ করব, তবে আলুর বীজের যে দাম, তাতে করে আলু চাষ করে জয়ী হওয়া যাবে না। বর্তমানে সার, বীজ, বিষ ও জমির লিজ খরচ দিয়ে আলু চাষে যে পরিমাণ খরচ হবে, ভরা মৌসুমে আলু বিক্রি করে সেই টাকা উঠবে না।

‘কারণ আমাদের যে সময় আলু উৎপাদন শেষে বাজারে নিয়ে যাব, তখন আলুর দাম একবারে কমে নিচে গিয়ে ঠেকবে। আর তখনই লস হবে।’

আলু বীজ বিক্রেতা আবদুল মালেক বলেন, ‘এ বছর বীজ অথবা খাবার আলু দুটোর দামই বেশি। গতবার আমরা যে আলুর বীজ এই সময় ৩০ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি করেছি, এবার তার দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ফলে অনেক চাষিই আলু চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

‘কেননা এত টাকা খরচ করে আলু উৎপাদন শেষে বাজারে বিক্রি করার সময় কৃষকরা আলুর দাম পায় না।’

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার মো. সামসুল আলম বলেন, ‘চলতি মৌসুমে আলু বীজের দাম অন‍্য বছরের তুলনায় বেশি। কারণ বাজারে খাওয়ার আলুর দাম বেশি হওয়ায় এমনটি হয়েছে।

‘জেলায় এ বছর ৮৬০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের সম্ভবনা রয়েছে, যা কিনা গত বছরের সমান। কৃষকরা যত বেশি আলু চাষ করবে, তত বেশি উৎপাদন বাড়বে। উৎপাদন বাড়লেই আমদানি নির্ভরতা কমবে এবং আলুর বাজারদর কমে আসবে। তাই উৎপাদনের বিকল্প নেই।’

আরও পড়ুন:
বেশি মূল্যে আলু পেঁয়াজ বিক্রি, ব্যবসায়ীদের জরিমানা
মেহেরপুরে আলুর সংকট, কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে
অদৃশ্য হাত আলুর বাজার অস্থির করেছে: ভোক্তা অধিকার
মেহেরপুরে সাপের ছোবলে কলেজছাত্রের মৃত্যু
যে কারণে লবণাক্ত মেহেরপুরের অনেক আবাদি জমি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Irregularity in the distribution of agricultural incentives in Naogaon

নওগাঁয় কৃষি প্রণোদনার বীজ-সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

নওগাঁয় কৃষি প্রণোদনার বীজ-সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ নওগাঁয় একই পরিবারের ৮ ব্যক্তি ভিন্ন পরিচয়ে অসাধু উপায়ে সরকারি কৃষি প্রণোদনার সুবিধা নিয়েছেন। ছবি: নিউজবাংলা
মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘কৃষি কার্ড থাকলেই সে কৃষক। নারী বা পুরুষ যেই হোক না কেন তাতে কোন সমস্যা নেই।’ একই ব্যক্তির নামে একাধিক কৃষি কার্ড এবং একই পরিবারে ৮ সদস্যদের নামে কৃষি কার্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলার জেলা প্রতিনিধিকে কোনো উত্তর দিতে পারেননি। অথচ এ বিষয়ে সর্বশেষ পরীক্ষা করার দায়িত্বটি তার।

নওগাঁর মান্দা উপজেলায় রবি শস্য উৎপাদনে সরকারি কৃষি প্রণোদনার বরাদ্দকৃত গম বীজ ও সার বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জেলার কিছু অসাধু কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এমন কর্মকান্ড চলছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় চাষীরা।

চাষীদের অভিযোগ, এক আইডি নাম্বার দিয়ে কৃষি কার্ডের মাধ্যমে একাধিক নাম ব্যবহার করে কৃষি প্রণোদনার বীজ ও সার উত্তোলন করে নিচ্ছে একটি চক্র। তারা এসব বীজ-সার উত্তোলনের পর উৎপাদনের পরিবর্তে বাজারে বিক্রি করছেন। যার কারণে প্রকৃত চাষীরা এসব সুবিধা পাচ্ছেন না।

এতে লাভবান হচ্ছে সুবিধাভোগী অসাধু একাধিক কৃষি কার্ডধারী ব্যক্তিরা। অন্যদিকে, সরকারি কৃষি প্রণোদনার মূল উদ্দেশ্য কম খরচে শস্য উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে।

তারা দাবি করেন, আগে প্রণোদনার বীজ ও সার দেয়ার ক্ষেত্রে যাচাই বাছাইয়ের সুযোগ থাকলেও তা না করেই বর্তমান কৃষি কর্মকর্তারা এভাবেই চালিয়ে যাচ্ছেন বিতরণ কার্যক্রম।

স্থানীয় চাষীরা জানান, রবি শস্য উৎপাদনের জন্য এ বছর ৭০০ জন প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে কৃষি প্রণোদনার সার ও গমের বীজ বিতরণ করার কথা। উপজেলার নুরুল্যাবাদ ইউনিয়নের জন্য ৫০টি কার্ড বরাদ্দ হয়েছে যা তালিকা অনুযায়ী ইতোমধ্যে কৃষকদের বিতরণ করা হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী একটি পরিবারের কর্তার নামে একটি কৃষি কার্ড প্রযোজ্য। কিন্তু পরিবারের কর্তার পরিবর্তে একই পরিবারের নারী-পুরুষ সকল সদস্যকে প্রান্তিক কৃষক ও চাষী বানিয়ে এসব প্রণোদনার সার ও বীজ নিয়েছেন। আবার এক আইডি নাম্বারের কৃষি কার্ড ব্যবহার করে একই ব্যক্তির ভিন্ন ভিন্ন নামে হয়েছে এসব বরাদ্দ ও উত্তোলন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নুরুল্যাবাদ ইউপির ১ নাম্বার ওয়ার্ডের প্রণোদনার সুবিধাভোগী হয়েছেন একই পরিবারের ৮ ব্যক্তি। গোলাম হোসেন ও গোলাম মোস্তফা- দুজনেরই পিতা একজন, তাদের আইডি নাম্বার ২১৪৭৭। হাসান আলী ও তার পিতা গফুর উভয়ের আইডি নাম্বার ০০১৪২। মজিবর আলীর ও মজিবর রহমান উভয়ের পিতা সাইফুল ও ছাইফুল তাদের আইডি নাম্বার ০০৭৮।

এছাড়া প্রবাসী আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী নওশেরা বেগম নামে কৃষি কার্ড করে নিয়েছেন। আরেকজন নুরজাহান নামে কার্ডধারী যিনি পিতার জায়গাতে ভিন্ন নাম বসিয়েছেন। এভাবেই একই পরিবারের ৮ সদস্যদের নামেও উত্তোলন হয়েছে কৃষি প্রণোদনা। তারা জানান, স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারাই তাদের এ অসাধু কাজের সহযোগী।

রবিবার দুপুরে স্থানীয়রা নুরুল্যাবাদ ইউপির জোতবাজারে প্রণোদনার সার ও গমের বীজ ভর্তি একটি ভ্যান আটকের পর ভিডিও ধারণ করেন। এরপর ইউপি সদস্য পাঠিয়েছে এমন কথা বলে ভ্যানটি ইউনিয়ন পরিষদে চলে যায়।

কৃষি প্রণোদনার বরাদ্দকৃত সার ও গম বীজ কৃষকরা সঠিক ভাবে পায়নি এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে রবিবার সন্ধ্যার দিকে নুরুল্যাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের কৃষি অফিসে যান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাইমিনুল হক। তবে এ সময় তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।

স্থানীয় নুরুল্যাবাদ ইউপির উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাজিদুল ইসলাম বলেন, ‘এসব কার্ড কিভাবে হয় আপনারা হয়তো জানেন। নাম মাত্র দায়িত্বে থাকলেও এখানে আমাদের করার কিছুই থাকেনা। আমরা কিছু বললে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (স্যার) ভালো চোখে নেন না।’

এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘কৃষি কার্ড থাকলেই সে কৃষক। নারী বা পুরুষ যেই হোক না কেন তাতে কোন সমস্যা নেই।’

একই ব্যক্তির নামে একাধিক কৃষি কার্ড এবং একই পরিবারে ৮ সদস্যদের নামে কৃষি কার্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলার জেলা প্রতিনিধিকে কোনো উত্তর দিতে পারেননি। অথচ এ বিষয়ে সর্বশেষ পরীক্ষা করার দায়িত্বটি তার।

কথা হলে সোমবার দুপুরে নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘একজনকে একাধিক বার কৃষক সাজিয়ে প্রণোদনা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এমন অভিযোগের সত্যতা পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেহেতু আপনি এ বিষয়ে অবগত করলেন আমরা খোঁজ নিবো।’

আরও পড়ুন:
২৮ অক্টোবর বিএনপি ঢাকা বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না: কৃষিমন্ত্রী
ময়মনসিংহে বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবায় অনিয়মের অভিযোগ
৩০ অক্টোবর থেকে কৃষি মার্কেটের নির্মাণ কাজ শুরু: মেয়র আতিক
স্কুলের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ
কৃষিতে উদ্ভাবিত নতুন বিষয়গুলো কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে: ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Protest by throwing vegetables on the highway
পাবনায় হরতাল-অবরোধ বিরোধী কৃষকবন্ধন!

মহাসড়কে সবজি ঢেলে প্রতিবাদ

মহাসড়কে সবজি ঢেলে প্রতিবাদ মহাসড়কে কাঁচা সবজি ঢেলে হরতাল-অবরোধের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো কৃষক। ছবি: নিউজবাংলা
বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান কুল ময়েজ বলেন, ‘আমরা কৃষকরা তো কোনো দলের না, রাজনীতিও করি না। আমরা সবজি উৎপাদন করি। কিন্তু আমরা সেই সবজি বিক্রি করতে পারছি না। গাড়িতে আগুন দেয়া হচ্ছে। এজন্য কোনো গাড়ি আমাদের সবজি বহন করছে না। ব্যাপারিরাও আসছে না।’

পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলিতে হরতাল-অবরোধ বিরোধী কৃষকবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো কৃষক। এছাড়াও মহাসড়কে কাঁচা সবজি ঢেলে হরতাল-অবরোধের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যানারে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার পাবনা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে কৃষি ভান্ডারখ্যাত মুলাডুলি সবজি আড়তের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ সময় কর্মসূচিতে এক বক্তা বলেন, ‘আমরা সাধারণ কৃষক, আমরা রাজনীতি বুঝি না। কিন্তু রাজনীতির ঝামেলায় পড়ে আমাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার সবজি নষ্ট হচ্ছে। আমরা কৃষকদের জন্য হুমকি, এমন হরতাল-অবরোধ বন্ধ চাই। কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কর্মসূচি না দিতে সকল রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

মহাসড়কে সবজি ঢেলে প্রতিবাদ

বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান কুল ময়েজ বলেন, ‘আমরা কৃষকরা তো কোনো দলের না, রাজনীতিও করি না। আমরা সবজি উৎপাদন করি। কিন্তু আমরা সেই সবজি বিক্রি করতে পারছি না। গাড়িতে আগুন দেয়া হচ্ছে। এজন্য কোনো গাড়ি আমাদের সবজি বহন করছে না। ব্যাপারিরাও আসছে না।’

কর্মসূচিতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম, সাংগঠনিক রেজাউল করিম রেজা, সহ-সভাপতি বেলি বেগম ও মৎসজীবী হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

দুপুর ১২টার দিকে শুরু হওয়া মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন কৃষকরা। এ সময় পাবনা-রাজশাহী মহাসড়কে কাঁচা সবজি ঢেলে হরতাল-অবরোধের প্রতিবাদ জানান তারা।

আরও পড়ুন:
২৮ অক্টোবর পুলিশ হত্যার ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গুলশানের হোটেল থেকে আটক ১০
অবরোধের তৃতীয় দিনেও চট্টগ্রামে বাসে আগুন, ভাঙচুর 
উত্তরায় পরিস্থান পরিবহনের বাসে আগুন
গাইবান্ধায় মাদ্রাসার মাঠ থেকে ককটেল, পেট্রলবোমা উদ্ধার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bagbatis olive market has a daily sales of Tk 4 lakh

বাগবাটির জলপাইয়ের হাটে দৈনিক বেচাকেনা ৪ লাখ টাকা

বাগবাটির জলপাইয়ের হাটে দৈনিক বেচাকেনা ৪ লাখ টাকা সিরাজগঞ্জের বাগবাটিতে বসেছে জলপাইয়ের হাট। ছবি: নিউজবাংলা
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ বাবলু কুমার সূত্রধর জানান, অর্থকারী ফসলের পাশাপাশি পেয়ারা, মাল্টা, কমলা, জাম্বুরা এবং জলপাই চাষে আশাতীত সাফল্য থাকায় চাষিদের এসব ফল চাষে কৃষি বিভাগের তদারকি বাড়ানো হয়েছে।’

মৌসুম জুড়ে সিরাজগঞ্জের বাগবাটিতে জলপাইয়ের হাট সরগরম থাকে। প্রতিদিন এই হাটে গড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার জলপাই কেনাবেচা হচ্ছে। বাগান থেকে জলপাই সংগ্রহ করে আড়ৎদারের কাছে বিক্রি করেই জীবিকা চলছে এলাকার শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও চাষিদের।

এদিকে, সদর উপজেলার বাগবাটি জলপাই হাট থেকে আমদানি করা জলপাই চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। মান ও গুনের কারণে চাহিদা থাকায় ভালো দামও পাচ্ছেন চাষিরা। চাহিদা এবং লাভজনক হবার কারণে প্রতি বছর জলপাই বাগানের পরিধিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বুধবার ও বৃহস্পতিবার সরেজমিনে পিপুলবাড়িয়া বাজার, সীমান্ত বাজার ও রতনকান্দি হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা স্থানীয়দের কাছ থেকে জলপাই ক্রয় করছে। সেই জলপাইগুলো কেউ পানি দিয়ে পরিস্কার করছে আবার কেউ বস্তায় ভরে ট্রাকে তুলছেন কিনে নেয়া জলপাই।

বাগবাটির জলপাইয়ের হাটে দৈনিক বেচাকেনা ৪ লাখ টাকা

মৌসুম আসার আগেই বাগান মালিকদের জামানত দিয়ে বাগান কিনে নেয় বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। ফল পরিপক্ব হলে বাগান থেকে ফল তুলে নিয়ে আড়তে যায় তারা। ফলে কোনো বিড়ম্বনাই থাকছে না এলাকার চাষি-ব্যবসায়ীদের মধ্যে। প্রতি কেজি জলপাই প্রকারভেদে ১৫ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি হাটে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার জলপাই দৈনিক কেনাবেচা হয় বলে জানান স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ীরা।

হাটে জলপাই বিক্রি করতে আসা উপজেলার ঘোড়াচরা গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়ির আঙিনায় লাগানো গাছ বিক্রি থেকে একদিন দুই মণ করে জলপাই এ হাটে এনে বিক্রি করি। প্রতিদিন জলপাই হাট ছাড়াও রোববার ও বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক এই হাট বসে।

ব্যবসায়ী মজিদ বলেন, ‘এ মৌসুমে ২০ জন মিলে প্রায় ২৫ লাখ টাকার জলপাই বাগান কিনেছি। পরিবেশ ভালো থাকলে প্রতি বাগান থেকে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার জলপাই বিক্রির আশা করছি।

আমিনপুর গ্রামের জলপাই বাগানের মালিক আবদুল করিম বলেন, ‘হাটে গড়ে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার জলপাই বিক্রি হয়। প্রকারভেদে প্রতি কেজি জলপাইয়ের দাম থাকে ১৫ থেকে ৩৫ টাকা পরে প্রতি কেজিতে। এখানে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ২৫ থেকে ৩০ টন জলপাই বেচাকেনা হয়।’

বাগবাটির জলপাইয়ের হাটে দৈনিক বেচাকেনা ৪ লাখ টাকা

স্থানীয় চর-খাতা গ্রামের শামমুল মন্ডল জানান, বাগবাটি ইউপিতে জলপাইয়ের ছোট-বড় অনেক বাগান আছে। আরও নতুন নতুন বাগান গড়ে উঠছে এ ব্যবসার সাফল্য দেখে। জলপাইয়ের ভালো দাম পাওয়ার কারণে চাষিদের মধ্যে বাগান করার প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বাগবাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এই এলাকার জলপাইয়ের আকার ও স্বাদে ভালো হওয়ার কারণে বাজারে এর চাহিদা অনেক। এ হাটে জলপাই বিক্রি হয় সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত।’

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত বলেন, ‘জলপাইয়ের উৎপাদন বাড়াতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। এ বছর সদর উপজেলাতে ৩১ হেক্টর জমিতে জলপাই চাষবাদ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ৯১০ টন।’

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ বাবলু কুমার সূত্রধর জানান, অর্থকারী ফসলের পাশাপাশি পেয়ারা, মাল্টা, কমলা, জাম্বুরা এবং জলপাই চাষে আশাতীত সাফল্য থাকায় চাষিদের এসব ফল চাষে কৃষি বিভাগের তদারকি বাড়ানো হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রশিক্ষণে ভাগ্য বদলেছে দীনেশের
ভরা মৌসুমে ইলিশখরায় দুশ্চিন্তায় বাগেরহাটের জেলেরা
জোয়ার ও নিম্নচাপে প্লাবিত বাগেরহাট
ডিজে গানে কান ঝালাপালা ভাসমান পেয়ারার হাটে, অর্থদণ্ড
পানি কমেছে তিস্তা ধরলার, এখনও প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

মন্তব্য

p
উপরে