আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন- ইভিএমে ভোট দেয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের এক নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের পর পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপনির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
সোমবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) ওই ভোট স্থগিত ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। আগামী বুধবার ইউনিয়নটিতে ভোট হওয়ার কথা ছিল।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক আসাদুজ্জামান আরজু জানান, নির্বাচন কমিশনের উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
গত শনিবার এক উঠান বৈঠকে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহিম ফারুকের এক সমর্থক ‘ভোট হবে ইভিএমে, কে কোথায় ভোট দেবে তা কিন্তু আমাদের কাছে চলে আসবে। অতএব ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই, টেনশনেরও কিছু নাই’ বলে বক্তব্য দেন।
আওয়ামী লীগ নেতা জোবায়দুল হক রাসেলের বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেই সময় তার পাশেই বসে ছিলেন চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারুক।
ইসির চিঠিতে বলা হয়, বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শূন্য পদের উপনির্বাচনে প্রচারের সময় আচরণবিধি লঙ্ঘন বিষয়ে প্রার্থী ইব্রাহিম ফারুকের বিষয়ে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এসএম মহসীন একাধিকবার রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ করেন।
সে বিষয়ে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, বরিশালকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ারও নির্দেশ দেয় ইসি।
এমন অবস্থায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০-এর বিধি ৯০-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নির্বাচন কমিশন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ওই নির্বাচন স্থগিত রাখার কথা বলা হয়। সে সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারিসহ পদ্ধতিগতভাবে কার্যক্রম গ্রহণেরও নির্দেশ দেয়া হয়।
বিএনপি যে রাজপথের ভয় দেখায়, তাতে কোনো লাভ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত ‘ইতিহাস কথা কয়’ শীর্ষক তিনদিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। কেননা রাজপথে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়েই আওয়ামী লীগ আজকের অবস্থানে।
‘তাই নৈরাজ্যের পথ ছেড়ে নির্বাচনের পথে হাঁটুন, নির্বাচনকে মোকাবিলা করুন। আগস্ট মাস যাইতে দেন, তারপর টের পাবেন কত ধানে কত চাল।’
সরকার পতনে বিএনপি নেতাদের হুমকি-ধামকির জবাবে তিনি বলেন, ‘নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, শব্দবোমা ব্যবহার করে হুমকি-ধমকি দিয়ে এই আওয়ামী লীগকে ভয় দেখানো যাবে না। এই আওয়ামী লীগ আপনাদের প্রতিরোধ করেছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঘাড় ধরে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে নিয়েছে।
‘তাই বলছি হুমকি-ধমকি ছেড়ে নির্বাচনে আসুন। নির্বাচন সাংবিধানসস্মতভাবে হবে, সেই নির্বাচনে যদি আপনারা জয়লাভ করতে পারেন আপনাদেরকে ফুলের মালা দিয়ে আমরা বরণ করে নেব। আপনাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করব।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, ‘শেখ হাসিনা যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন, তিনিই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি ৫বছর পূর্ণ ক্ষমতায় থেকে শান্তিপূর্ণভাবে সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন।
‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের ধারক-বাহক। আমাদের নেত্রী সত্যের ধারক-বাহক। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের ধারক-বাহক। কাজেই রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ নাই।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জাতির বীর সন্তান, আমরা জাতির পিতার আদর্শের সন্তান, আমরা আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশে আছি, আমরা থাকব। আমরা পালাবো না।’
স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।
আরও পড়ুন:
অন্য দেশের তুলনায় ‘দেশের মানুষ বেহেশতে আছে’ বলে একদিন আগে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সমালোচনার মুখে পড়ে তার ব্যাখ্যা দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সিলেটে জেলা পরিষদের আয়োজনে শনিবার দুপুরে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ওই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলেছি, অন্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি এবং তাদের তুলনায় আমরা বেহেশতে আছি, এই কথা বলেছিলাম। কিন্তু আপনারা (সাংবাদিকরা) এক্কেবারে উল্টা!’
আগের দিনের মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বেহেশতের কথা আমি বলেছি, কম্পারেটিভ টু আদার কান্ট্রি (অন্য দেশের তুলনায়)। আর আপনারা সব জায়গায় লিখেছেন ‘বেহেশত বলেছেন’...মানে টুইস্ট করা হয়েছে। ...বলেন নাই যে আমাদের মূল্যস্ফীতি অন্য দেশের তুলনায় কম...।’
এর আগে শুক্রবার সকালে সিলেটে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে; একটি পক্ষ থেকে এমন প্যানিক ছড়ানো হচ্ছে। বাস্তবে এর কোনো ভিত্তি নেই।’
মন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঢেউ ওঠে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ নিয়ে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য জনগণের সঙ্গে তামাশা।
শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি ইংল্যান্ডে ১২ ভাগ, টার্কিতে ৬৭ ভাগ, পাকিস্তানে ৩৭ ভাগ, শ্রীলংকায় ১৫০ ভাগ, আর আমরা ৭ ভাগ। সেই দিক দিয়ে আমরা ভালো আছি।’
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে এ সময় তিনি বলেন, ‘ভারত সরকারের আমন্ত্রণে আগামী মাসের ৪-৫ তারিখ প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যাবেন। সেই সফরে ভারতের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়গুলো প্রধান্য পাবে। সেখানে বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনায় আসবে।’
বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ নদীগুলো খননের ব্যাপারে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ১০-১২ বছর বিরতির পর এ মাসের শেষের দিকে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সেই বৈঠকে ৬টি নদীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সবকটি নৌপথ আগের মতো সচল করার বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে।’
সিলেটের আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয় উজানের পাহাড়ি ঢলে। তাই ওইসব এলাকার বন্যার পূর্বাভাস যেন ভারত বাংলাদেশকে আগাম জানায় ও ড্যামগুলো উন্মুক্ত করার আগে বিষয়টি নিয়ে তথ্য দেয়, সে প্রস্তাবও ভারতকে দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন:বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাকে জনগণের সঙ্গে তামাশা হিসেবে দেখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ফখরুল এ অবস্থান ব্যক্ত করেন।
সিলেটের এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পে ‘ভূমি অধিগ্রহণবিষয়ক’ মতবিনিময় সভা শেষে শুক্রবার সকালে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই সময় তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে।’
ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশের মানুষের যখন প্রতি মুহূর্তে ভোগান্তি হচ্ছে, কষ্ট করছে এবং তারা হিমশিম খাচ্ছে, জীবন দুর্বিষহ হচ্ছে, সেই সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন যে, বেহেশতে আছে। আমি দুঃখিত ব্যক্তিগত পর্যায়ে কথা বলছি।
‘ইদানীংকালে উনার (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) যে চেহারা, সেই চেহারার মধ্যে যেটা ফুটে উঠেছে যে, স্ফীত হয়েছেন এবং বেশির ভাগ মন্ত্রীদের যেটা হয়েছে যে, সবাই আমাদের দেশি ভাষায় বলি, স্যরি যে একটা হালকা কথা বলব, চিটনাই বেড়ে গেছে। তার কারণটা হচ্ছে, প্রচুর লুটপাট হচ্ছে। সেই লুটপাটের কারণে তারা জনগণের সঙ্গে পরিহাস, তামাশা শুরু করেছে এই সমস্যা নিয়ে।’
জনদুর্ভোগের সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্য দেয়ার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় এর আগেও এমন এমন সব উক্তি করেছেন, যে উক্তিগুলো দেশের মানুষের কাছে কিছুটা হাস্যকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে উনার এ রকম পরিহাস করার কোনো অধিকার নেই।’
আরও পড়ুন:দেশের জনগণ নয় বরং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থকরা এখন বেহেশতে আছেন বলে মনে করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের এক বক্তব্যের সমালোচনায় শনিবার নয়াপল্টনে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নয়, সরকারের বশংবদরা বেহেশতে আছে। কিন্তু জনগণ আপনাদের দুঃশাসনের নরকে আছে।’
বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ সুখে আছেন বলে শুক্রবার সকালে সিলেটে এক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে।’
ওই বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগের উদ্দেশে রিজভী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ওয়ার্ডের নেতারা এখন কোটিপতি। লক্ষ কোটি টাকা লুটপাট করে যারা বিদেশে টাকা পাচার করেছে, যারা বিদেশে অট্টালিকা তৈরি করেছে সেই টাকা পাচারকারীরা বেহেশতে আছেন। তবে সে বেহেশত সাদ্দাতের বেহেশত। অচিরেই সেই বেহেশত ভেঙে খান খান হয়ে যাবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মোমেন সাহেব আপনি তো বাজারে যান না, রিকশাওয়ালার কথা শোনেন না, গরিব মানুষের কথা শোনেন না। একটা ডিমের দাম এখন সাড়ে ১২ টাকা, এক হালি ডিমের দাম পঞ্চাশ টাকা, এক কেজি ইলিশ কিনতে দুই হাজার টাকা লাগে।
‘সবজি বাজারে এখন আগুন, মানুষ চাল-ডাল-সবজি কিনতে পারছে না। অভাবের তাড়নায় মানুষ সন্তান বিক্রি করছে। জনগণ আপনাদের তৈরি করা আগুনে জ্বলে পুড়ে মরছে। মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তরা এখন হাহাকার করছে, এগুলো গণমাধ্যমে উঠছে, যদিও গণমাধ্যম চাপে আছে। তারপরেও অনেক কিছু গণমাধ্যমে উঠে আসছে।’
রিজভী বলেন, ‘গোটা দেশে এখন দুর্ভিক্ষের ছায়া বিস্তারলাভ করেছে। আপনারা বেহেস্তের কথা বলে অহংকার করেন, জনগণের টাকা হরিলুট করে আপনাদের অনেক টাকা, আপনারা বেহেশতে থাকতে পারেন, মোমেন সাহেব আপনার এই বক্তব্য ক্ষুধার্ত জনগণের সাথে চরম রসিকতা।’
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে রাজপথ দখলের হমকি দেন, যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী না থাকে তাহলে আপনারা রাজপথ থেকে ভীত শৃগালের মতো পালিয়ে যাবেন।
‘বিএনপি নেতা-কর্মীদের গুম করে, খুন করে, বিচারবহির্ভূত হত্যা করে, সম্পদ হরিলুট করে, চুরি করে আপনারা অহংকার দেখাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া মাঠে নামলে আপনারা তুলার মতো উড়ে যাবেন।’
রিজভী বলেন, ‘এত বড় কথা বলেন, আপনার নেত্রীকে এক এগারোতে যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কই তখন তো রাজপথে একটি মিছিল করতে পারেননি। ১৫ আগস্টের ঘটনার সময় তো রাস্তায় নামেননি। আপনাদের পতন কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে জিয়া মঞ্চ আয়োজিত এ সভায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
রিজভী বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকো একজন দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক ও নিরহংকার মানুষ ছিলেন। রাজনৈতিক কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যখন আন্দোলন করছিলেন, তখন শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়াকে বালুর ট্রাক দিয়ে বন্দি করে রেখেছিলেন
‘মায়ের সে দুর্দিন তার ছোট সন্তান মেনে নিতে পারেননি। সেদিন মানসিকভাবে চাপে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছিল।’
আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, ফয়েজ উল্লাহ ইকবাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:গরু পাচার মামলায় ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (সিবিআই) জিজ্ঞাসাবাদ এড়াতে পারলেন না তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট মণ্ডল। অসুস্থতার অজুহাত তুলে ১০ বার সিবিআই নোটিশ এড়ালেও শেষরক্ষা হয়নি। এবার গ্রেপ্তারের পর সিবিআই তাকে ১০ দিনের হেফাজতে নিয়েছে।
শুক্রবার সকালে কলকাতার আলিপুর কমান্ডো হাসপাতালে প্রায় ঘণ্টাখানেক তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে। এরপর ৪ সদস্যের বিশেষ মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়ে দেয়, কেষ্ট মণ্ডলের বড় কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকলেও ‘টেনশন’ কমাতে ওষুধ দেয়া হয়েছে।
হাসপাতালের ছাড়পত্র মিলতেই দুপুর ১২টা থেকে গরু পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। বীরভূমের প্রভাবশালী এ নেতাকে সিবিআই কর্মকর্তারা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করলেও স্বীকারোক্তি মেলেনি। কেষ্ট জবাব দিচ্ছেন দায় এড়িয়ে।
কলকাতার নিজাম প্যালেসের ১৪ তলায় সিবিআই গেস্ট রুমে রাখা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডল কেষ্টকে। তার শোবার চৌকির পাশে রাখা আছে অক্সিজেন সিলিন্ডার, শ্বাসকষ্টের পুরনো সমস্যার কারণে। একজন সাহায্যকারী আছেন তার পাশে। তিনি নিয়মিত যেসব ওষুধ সেবন করেন, তা দেয়া হচ্ছে। ১০ দিনের হেফাজতে ডায়েট চার্ট মেনে খাবার দিতে বলেছে আদালত।
সিবিআই তদন্তকারীরা জানতে চাইছেন গরু পাচারে তৃণমূল নেতার যোগসূত্র ও আর্থিক লেনদেন বিষয়ে। চক্রের সদস্যদের নাম জানতে চাইছেন তারা। কেষ্ট মণ্ডল প্রথম দিনের জেরায় এসব প্রশ্ন এড়িয়ে যান কৌশলে।
এদিকে কেষ্ট মণ্ডলের দুর্দিনে কৌশলী অবস্থান নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। নেতার নাম উল্লেখ না করলেও দলের তরফে এক সংবাদ সম্মেলনে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে, ‘দল কারো পাপের দায় নেবে না।’
তবে কেষ্টর সমর্থকরা শুক্রবার মেদিনীপুরে মিছিল করেছে। সিবিআই তদন্তের প্রতিবাদে শনিবার রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের কর্মসূচি আছে।
এ পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘উইকেট আরও পড়বে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবার মন্ত্রিসভার বৈঠক করতে হবে জেলে গিয়ে।’
তৃণমূলের অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট মণ্ডলকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)। পরে আসানসোলের বিশেষ আদালতে তুললে বিচারক ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগের চেয়ে বড় আন্দোলনকারী দেশে আর নেই, ভবিষ্যতেও হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান।
ঢাকার সাভারে আশুলিয়া প্রেস ক্লাব চত্বরে শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্রমিক সংগঠন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে এই নেতা বলেন, ‘মহানবী (সা.) বলেছিলেন, আগুনের স্রষ্টা ছাড়া আর কেউ প্রাণী হত্যা করতে পারে না। কিন্তু ওনারা (বিএনপি) মানুষ হত্যা করেছিলেন পেট্রলবোমা দিয়ে। তারপরে আজকে বড় বড় কথা বলেন।
‘রাজনীতি করা, রাজনীতির শিক্ষা আমাদের দেন? আন্দোলনের কথা আমাদের বোঝান? আওয়ামী লীগের চাইতে বড় আন্দোলনকারী আর কেউ নাই, ভবিষ্যতেও হবে না।’
আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারাই একসময় বলেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা মানি না। আপনারাই আন্দোলনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কনসেপ্টকে নষ্ট করেছিলেন। এখন সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আর কোনো সুযোগ নাই।
‘নির্বাচন হবে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে। নির্বাচন শেখ হাসিনা পরিচালনা করবে না। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। শেখ হাসিনা শুধু ওই তিন মাসের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন।’
ইউরোপ, আমেরিকা আর সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ছেড়ে দেয়া উন্নয়নের নৌকা এখন শ্রীলঙ্কার পথে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি জ্বালানি খাতে দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশেরও দাবি জানিয়েছেন।
রাজধানীর মিরপুরে এক কর্মী সম্মেলনে শুক্রবার বিকেলে তিনি এ কথা বলেন।
মিরপুর ও শাহ্আলী থানা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জি এম কাদের।
তিনি বলেন, ‘ইউরোপ, আমেরিকা আর সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ছেড়ে দেয়া উন্নয়নের নৌকা এখন শ্রীলঙ্কার পথে। দেশে লোডশেডিং বাড়ছে, ডলারের দাম বাড়ছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। কিন্তু কেন এসব বাড়ছে সে ব্যাপারে জবাব নেই সরকারের। তারা বিশ্বব্যাংক আর আইএমএফকে গালাগাল দিয়ে এখন ঋণের জন্য তাদের পেছনেই ঘুরছে।
‘আমরা দেশের স্বার্থে কথা বললেই সরকারের কিছু নেতা ষড়যন্ত্র খোঁজেন। দেশ শ্রীলঙ্কার মতো ব্যর্থ হতে চলেছে বলায় আমাদের তারা মূর্খ বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেই তারা গালাগাল দিতে শুরু করেন। তারা বুঝতে চান না, মানুষ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়।’
জ্বালানি খাতে দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের মানুষ জানতে চায়, জ্বালানি খাতে প্রতি বছর কত হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। কারা এই দুর্নীতির সাথে জড়িত, তাদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। অথচ সরকার দুর্নীতিবাজ ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অপরাধীদের পক্ষ নিচ্ছে।’
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম পাঠানের সভাপতিত্বে পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সফিকুল ইসলাম সেন্টুসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য