রইজ আহম্মেদ মান্নাকে শীর্ষ পদে রেখে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে ১১ বছর পর। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এই কমিটি অনুমোদন করেন। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ঘোষিত এই কমিটি নিয়ে ইতোমধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
বরিশাল সদর আসনের সাংসদ ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুখ শামীমের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মহানগর ছাত্রলীগের ঘোষিত কমিটি বাতিল করে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে সোমবার দুপুরে।
পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ কর্মী রেজাউর রহমান নিয়ন বলেন, ‘একজন শ্রমিক নেতাকে কি করে ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেয়া হয়? মহানগর ছাত্রলীগে যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে সেই মান্না দুই সন্তানের জনক। তার বড় সন্তানের বয়স প্রায় ১০ বছর। যুগ্ম আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম ও আরিফুর রহমান শাকিলও বিবাহিত। বরিশালে জমকালো আয়োজনে তাদের বিয়ে হয়েছে। ছাত্রত্ব ও বয়স নেই তিনজনেরই। এ ছাড়াও যাদের সদস্য করা হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকের ব্যাকগ্রাউন্ড বিএনপি।’
মান্না এক তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী দাবি করে নিয়ন বলেন, ‘এসব লোককে কমিটিতে এনে ছাত্রলীগকে কলুষিত করা হয়েছে।’
তানভির আহসান নামে সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুখ শামীমের অনুসারী আরেক কর্মী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বরিশালের রাজনীতিতে প্রবেশ করতে চাইছেন অনেকদিন ধরেই। এজন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ছত্রছায়া প্রয়োজন। তাই তাদের নির্দেশনায় কমিটি দিয়েছেন জয়।’
তানভির মনে করেন, ব্যক্তি স্বার্থে সংগঠনের নাম খারাপ করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।
বরিশাল ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্না চলতি মাসে গঠিত বরিশাল বিভাগীয় আঞ্চলিক সড়ক পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের আইন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি বরিশাল বিভাগীয় আঞ্চলিক সড়ক পরিবহন মালিক ফেডারেশনের সহসাংগঠনিক সম্পাদক পদেও আছেন। পাশাপাশি বরিশাল জেলা বাসমালিক গ্রুপের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যও তিনি।
জানা গেছে, বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের অঘোষিত নিয়ন্ত্রকও মান্না। কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মোল্লা লিটন বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন বিএমএফ পরিবহনের কাউন্টার দখলের মাধ্যমে। তবে লিটনকে সরিয়ে জেলা বাসমালিক গ্রুপের মাধ্যমে বিএমএফ কাউন্টারের নিয়ন্ত্রণ নেন মান্না।
প্রথমে অভ্যন্তরীণ রুটের একটি বাস কিনে পরিবহন ব্যবসায় প্রবেশ করেন মান্না। পরে ধীরে ধীরে শ্রমিকনেতা হওয়ার চেষ্টা করেন। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় মিলে যায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের পদও।
একটি সূত্র জানায়, বরিশাল সিটি করপোরেশনের চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী মান্না বিয়ে করেন প্রায় একযুগ আগে। তার সন্তানও রয়েছে।
এদিকে যুগ্ম আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম ও আরিফুর রহমান শাকিলও বিবাহিত। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের কমিটিতে আসার বয়সও নেই তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ অনুসারী জেলা ছাত্রলীগের এক সহসভাপতি বলেন, ‘কোনো ধরনের যাচাইবাছাই ছাড়াই গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই ধরনের কমিটির ঘোষণায় কেন্দ্রীয় কমিটির ভূমিকা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বরিশালের বাসিন্দা হওয়ায় মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর সুপারিশ অনুযায়ী তিনি কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ৫ এর গ ধারায় বলা আছে- কোনো নিয়মিত শিক্ষার্থী (৫ এর ক উপধারা অনুযায়ী) ছাত্রলীগের কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য হতে পারে। বিবাহিত, ব্যবসায়ী ও চাকরিতে নিয়োজিত ছাত্রছাত্রী ছাত্রলীগের কর্মকর্তা হতে পারবে না। তবে গঠনতন্ত্রের এই ধারা মহানগর ছাত্রলীগের ওই তিন নেতার ক্ষেত্রে কার্যকর হয়নি। এ ছাড়া ২৭ বছরের ওপরে কোনো ব্যক্তি কমিটির পদ-পদবি পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই ওই তিনজনেরও পদ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
জেলা ছাত্রলীগের কয়েক কর্মী জানান, সদ্য ঘোষিত মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মান্না গত ১৮ আগস্ট বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলার মামলায় অন্যতম আসামি ছিলেন। এ ছাড়া বিসিক এলাকায় ব্যবসায়ীদের ওপর হামলার মামলায়ও তিনি আসামি। আত্মরক্ষার জন্য তিনি একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার সহসম্পাদকের পরিচয়পত্রও বহন করেন। ২০০৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মান্নার বর্তমান বয়স ৩২ বছর।
এ ছাড়া এক বছর আগে বিয়ে করা এবং ২০০৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া যুগ্ম আহ্বায়ক মাইনুল ইসলামের বর্তমান বয়স ৩০ বছর। অপর যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান শাকিল বিয়ে করেছেন চলতি বছরের ৩১ জানুযারি। তার বয়সও ত্রিশের কাছাকাছি।
সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ছাত্রলীগের আরেক সহসভাপতি বলেন, ‘যাদের কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে তারা সবাই সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠজন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে তিনি যা সুপারিশ করেছেন সেই অনুযায়ী আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই করা হয়নি।’
এসব বিষয় নিয়ে সদ্য ঘোষিত বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘মহানগর ছাত্রলীগে নেতৃত্ব সংকট দেখা দিয়েছে। এই কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে কিছু নেতাকর্মী অন্তত পরিচয় বহন করতে পারবে। আমি বিবাহিত কি না তা মূল বিষয় না। মহানগর ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করতে আমার নেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ যা ভালো মনে করছেন তাই করছেন। টেন্ডারবাজ ও শিক্ষকদের মারধর করা ব্যক্তিদের নিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি করলে সম্ভবত আপনারা খুশি হতেন।’
আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্না বলেন, ‘ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য একটি সম্মেলন জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ যাদের যোগ্য মনে করেছেন তাদের জন্য সুপারিশ করেছেন। এই কমিটিকে এক প্রকার সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি বলা যায়। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় নেতাকর্মীরা পরিচয়হীন ছিল। তিন মাস মেয়াদি এই কমিটির মধ্য দিয়ে হলেও কিছু নেতাকর্মী তাদের পরিচয় পেয়েছে।’
বিবাহিত জীবন এবং দুই সন্তান নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে আর ফোন ধরেননি।
পরিবহন শ্রমিক সংগঠনে রইজ আহম্মেদ মান্নার পদ পাওয়ার প্রমাণ রয়েছে নিউজবাংলার কাছে। এ ছাড়া যুগ্ম আহ্বায়ক মাইনুল ইসলামের বিয়ের ছবিও রয়েছে। আর যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান শাকিলের নিজের ফেসবুক প্রোফাইলেই বিয়ের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ও বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা তানভির হাসান সৈকত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়েছে। তা ছাড়া যেখানে আল নাহিয়ান খান জয় ভাই নিজে দায়িত্ব নিয়ে কমিটি করেছেন, সেখানে আমাদের যাচাই-বাছাই করারও প্রয়োজন নেই। জয় ভাইয়ের বাসাও কিন্তু মহানগরেই। তবুও লিখিত অভিযোগ পেলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।’
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক ইন্দ্রনীল দেব শর্মা রনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি শ্রমিক সংগঠনের পদধারী নেতা হয়ে থাকলে তার ছাত্রলীগের কমিটিতে আসার সুযোগ নেই। বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের মতামত নিয়েই করা হয়েছে। আমরাও যাচাই-বাছাই করেছি। আমাদের যাচাই-বাছাইতে ত্রুটি থাকতে পারে।
‘যে কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে, সেই কমিটি নিয়ে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ধরেননি।
শনিবার রাতে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সামনে নবগঠিত মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিতে পদপ্রাপ্তদের উদ্দেশে ফেসবুক লাইভে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি দীর্ঘ বছর না থাকায় সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। যারা অভিজ্ঞ রয়েছেন তাদের নিয়ে করা খসড়া কমিটি আমার সুপারিশে অনুমোদন হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে তোমরা ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সম্মেলন শেষ করে মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলনের আয়োজন করবা। অনেকে অনেক কথা বলবে সেগুলো মাথায় নেয়া যাবে না।’
১১ বছর পর মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ায় রোববার বিকালে বরিশাল নগরীতে আনন্দ মিছিলও করেছেন মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে তিন সদস্যবিশিষ্ট বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে সাংগঠনিক সম্পাদক তৌসিক আহম্মেদ রাহাত চাকরির সুবাদে ছাত্ররাজনীতি থেকে বিদায় নেয়। এরপর ২০১৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ানকে বহিষ্কার ও ২০২১ সালের ২৫ মে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের দায়ে সভাপতি জসীম উদ্দিনকে অব্যাহতি দিয়ে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য