গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ শহরের নগুয়া এলাকায় বিদ্যুৎ গেছে একবারই, সেটিও মিনিট দুয়েকের জন্য। অন্যদিকে এখান থেকে কিলোমিটার সাতেক দূরে রহিমপুর গ্রামে শুক্রবার রাত ১১টায় বিদ্যুৎ যায়, আসে রাত ৩টায়।
নগুয়া এলাকাটি কিশোরগঞ্জ শহরের এক প্রান্তে। সেখানে বিদ্যুতের এই ভালো অবস্থা জেলা সদরের মানুষের কাছে বিরল নয় মোটেও।
একযুগ আগে দেশে বিদ্যুতের যখন অসহনীয় পরিস্থিতি তখনও কিশোরগঞ্জ শহরের পরিস্থিতি খারাপ ছিল না অতটা। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ার পর সেটির উন্নতি হয় আরও বেশি।
গ্রামে বিদ্যুৎ যাওয়া শুরু করেছে যখন থেকে, তখন থেকে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তিও কমতে শুরু করে, যেটি আবার ফিরে এসেছে জুনের শেষদিক থেকে। আর গত সপ্তাহে ঘটা করে যখন লোডশেডিং শুরু হয়, তখন কিশোরগঞ্জ শহরের বিপরীত চিত্র দেখা দেয় গ্রামে।
রহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা শাকিল ভুঁইয়া বলেন, ‘দিনের বেলায় যেমন তেমন, রাতের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। যখন তখন কারেন্ট যায়। আর এবার শ্রাবণ মাসেও বৃষ্টি নাই, গ্রামে এত গরম পড়বে, সেটি কল্পনায়ও ছিল না।’
কিশোরগঞ্জ শহরের মতো দেশের সব জেলা সদরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি অতটা ভালো নয়। তবে কিশোরগঞ্জে শহর ও গ্রামে যে ব্যবধান, সেটি সব জেলাতেই। শহরে লোডশেডিং যতটা করা হচ্ছে, গ্রামে করা হচ্ছে বহুগুণ।
কুমিল্লার গ্রামে রাতে তিনবার ভোগান্তি
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একজন কর্মকর্তা জানান, ‘আমাদের অধীন উপজেলাগুলোতে প্রতিদিন মুহূর্তে গড়ে ৭ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও দিনের বেলা মাত্র তিন মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাপ্লাই দিতে পারছি। এক মাস ধরে দিনে তিন থেকে চার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকছেই।’
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা বিভিন্ন গ্রামের মধ্যে শিমপুর, কালিরবাজার, জগন্নাথপুর এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়েছে নিউজবাংলার। তারা জানান, রাত ৮টা বাজলেই লোডশেডিং শুরু হয়। এক ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ আসে। রাত ১২টায় আবার যায়, এরপর ভোরে আরেকবার। গত চার-পাঁচ দিন ধরে এভাবেই চলছে।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ্য বলছে, জেলার চার সমিতির অন্তর্ভুক্ত উপজেলাগুলোয় দিনে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা আছে। নিয়মিত ১০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়। প্রয়োজনের তুলনায় গড়ে ২০ শতাংশ কম বিদ্যুৎ পান গ্রামাঞ্চলের লোকজন।
কুমিল্লা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন প্রামাণিকের দাবি অবশ্য ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় ফিডারের সমস্যার কারণে তা মেরামত করতে হয়। ওই সময় প্রয়োজনেই লোডশেডিং করা লাগে। কুমিল্লায় বেঁধে দেয়া সময়ের বাইরে লোডশেডিং হয় না।’
লক্ষ্মীপুরের চিত্র
লক্ষ্মীপুরে গ্রাম এলাকায় দিন-রাত মিলিয়ে লোডশেডিং হচ্ছে ৮ থেকে ১০ বার। ঘণ্টার হিসেবে বিদ্যুৎহীন সময় কাটাতে হচ্ছে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা।
জেলার পাঁচ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। পিক আউয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা ৯৭ মেগাওয়াট। কিন্তু অধিকাংশ সময়ে সরবরাহ অনেক কম।
লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, ‘রাত-দিন মিলে ৪-৫ বার লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। এর বাইরে কোনো কিছু করার নাই।’
ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান সবুজ বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে শিক্ষার্থীরা হাঁপিয়ে উঠেছে। পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারছে না। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।’
জেলা বণিক ও দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সরকার এলাকাভিত্তিক যে সময় দিয়েছে, সেটা কার্যকর হচ্ছে না। যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্যের কী হবে জানি না।’
মানিকগঞ্জের গ্রামে বিদ্যুৎ যায় ঘণ্টায় ঘণ্টায়
মানিকগঞ্জে জেলা ও উপজেলা সদরে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লোডশেডিং হলেও এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকছে।
লতপুরের জিয়াউল হক বলেন, ‘আগে তো কারেন্ট কম যাইত। কিন্তু সরকারের ঘোষণার পর থেকে কারেন্ট বেশি যায়। বুধবার রাতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা কারেন্ট ছিল। এর পর সকাল থেকে আসা-যাওয়ার মধ্যেই আছে। বর্তমানে এমন অবস্থা হইছে, যে আমাদের এলাকায় টানা এক ঘণ্টাও কারেন্ট থাকে না।’
সাটুরিয়ার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘দিনের বেলায় একটু কম যায়। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং দেয়। তা ছাড়া রাতে একবার কারেন্ট গেলে সারা রাতে আসার খবর থাকে না। এখন তো মনে হইতেছে সরকারের ঘোষণার আগেই আমরা ভালো ছিলাম।’
সিংগাইরের রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৭ ঘণ্টাও আমরা কারেন্ট পাই না। সরকার যে ঘোষণা দিছে, তার চেয়ে দুই ঘণ্টা বেশি বিদ্যুৎ না থাকলেও সমস্যা কম হবে। কিন্তু বর্তমানের অবস্থায় আমরা সবাই খুব বিরক্ত হইতেছি।’
মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. আব্দুর রশিদ মৃধা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি এক ঘণ্টার মধ্যে থাকতে। কিন্তু নানা কারণে পারছি না। তাছাড়া শহর ও শিল্প কারখানাকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।’
ব্যাটারিই চার্জ হচ্ছে না মেহেরপুরের গ্রামে
এই জেলায় ২৪ ঘণ্টায় যে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়, তার বেশির ভাগই রাতে হয় বলে জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। গরমে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন অনেকে। পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় যে, অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জেও সমস্যা হচ্ছে।
ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালক মখলেচ মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ভ্যান চার্জ হতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। অথচ গত রাতে বিদ্যুৎই ছিল তিন ঘণ্টা। গাড়িতে চার্জ না থাকলে ভাড়া মারব কীভাবে?’
মোবাইল মেরামতকারী দোকানি মো. মামুন বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে যারা মোবাইল সারাতে দিয়ে গেছে, তাদের কাজ এখনো শেষ করতে পারিনি। পারব কীভাবে? সারা দিনে বিদ্যুৎ পাচ্ছি তিন থেকে চার ঘণ্টা। আবার রাতের অবস্থা আরও খারাপ।’
গৃহিণী শারমিন আক্তার বলেন, ‘দিনের বেলায় সংসারের কাজ কাজ সারতে গিয়ে সময় শেষ হয়ে যায়। রাতে যে একটু ঘুমাব, তার আর উপাই নাই। বাড়িতে ছোট ছোট ছেলে মেয়ে। গত রাতে আধাঘণ্টা পর পর বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় বাচ্চাদের বাতাস করা লাগছে।’
মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবু রাহান জানান, জেলায় পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা ১১৬ মেগাওয়াট। অফপিক আওয়ারে চাহিদা ৭০ মেগাওয়াট। বতর্মানে তারা পাচ্ছেন অর্ধেকেরও কম।
নীলফামারীতে অর্ধেক সময় বিদ্যুৎহীন
চাহিদার অর্ধেক পাচ্ছেন নীলফামারীর সাড়ে চার লাখ গ্রাহক। ফলে ২৪ ঘণ্টার অর্ধেক সময়ই থাকতে হচ্ছে বিদ্যুৎহীন।
এই গ্রাহকের মধ্যে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড বা নেসকোর গ্রাহক এক লাখ ৩৬ হাজার এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩ লাখ ১৬ হাজার।
নীলফামারী জেলা শহরের প্রগতি পাড়া এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আহমেদ আজিজ শুভ বলেন, ‘শুনেছি এক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না। কিন্তু চিত্র পুরোটাই আলাদা। কয়েক দফায় লোডশেডিং হয়েছে এবং বিদ্যুৎ থাকছে না। আমার ব্যবসা বিদ্যুৎ নির্ভর। এভাবে চলতে থাকলে নিঃস্ব হতে হবে।’
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নীলফামারীর মহাব্যবস্থাপক সুলতান নাছিমুল হক জানান, তাদের ৬৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হলেও পাওয়া যাচ্ছে ৪০ মেগাওয়াট।
নোয়াখালীতে লোডশেডিংয়ে শিডিউল বিপর্যয়
লোডশেডিংয়ের ‘শিডিউল বিপর্যয়ের’ পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুতের নোখাখালীর কর্মকর্তারা সন্তোষজনক কোন জবাব দিতে পারছেন না।
মাইজদী হাউজিং এস্টেট এলাকার ফয়জুল ইসলাম বলেন, ‘দিনে রাতে একাধিক বার লোডশেডিং হচ্ছে। কিছুক্ষণ পরপর বিদ্যুৎ চলে যায়। জেলার সব এলাকায় একইভাবে লোডশেডিং করা হচ্ছে।’
নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, ‘জেলায় ১৫৫ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ১০০ মেগাওয়াট। ফলে সিডিউল অনুযায়ী লোডশেডিং দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ও মাইকিং করে জনগণকে সচেতন করার কার্যক্রম চলছে।’
‘ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে রাঙ্গামাটিতে’
সাপছড়ি ইউনিয়নের বোধিপুর বাসিন্দা সংগীতশিল্পী লক্ষীদেবী চাকমা জানান, ঘোষণা দিয়ে লোডশেডিং শুরুর দিন মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কমপক্ষে ৮-৯ বার লোডশেডিং হয়েছে।
কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া এলাকার এক স্থানীয় সুমন চাকমা বলেন, ‘হুট করে লোডশেডিং হয় আবার ৩-৪ মিনিট পর বিদ্যুৎ চলে আসে। আবার অনেক সময় একবার বিদ্যুৎ গেলে প্রায় দেড় ঘণ্টার অধিক সময় লাগে বিদ্যুৎ আসতে।’
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের রাঙ্গামাটি বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকোশলী মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক লোডশেডিং শুরু হয়েছে। সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে প্রথম প্রথম একটু হিমশিম হতে পারে। ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য