চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় মেহেদী হাসান হৃদয় নামে ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রকে নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি জড়িত হিসেবে মেহেদীকে চিহ্নিত করলেও র্যাবের শনাক্ত করা ছয়জনের মধ্যে তার নাম পাওয়া যায়নি।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর রবিউল হাসান ভুঁইয়া নিউজবাংলাকে শুক্রবার ঘটনায় জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করা গেছে বলে জানান। তাদের একজন ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মেহেদী হাসান হৃদয় (বান্টি)।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ভুক্তভোগী ছাত্রীর তথ্যের ভিত্তিতে দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের একজনের নাম মেহেদী হাসান হৃদয় ও আরেকজন আজিম হোসাইন।’
শনিবার বেলা ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে ছয়জনকে শনাক্ত ও চারজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র্যাব। এই ছয়জনের মধ্যে মেহেদী হাসান হৃদয়ের নাম নেই। বাহিনীটির বর্ণনা অনুযায়ী তাদের শনাক্ত করা ছয়জনই ওই ছাত্রীকে নিপীড়িত করেছে। গ্রেপ্তার চারজনও মেহেদী হাসান হৃদয়ের সম্পৃক্ততা না থাকার কথা জানিয়েছে বলে জানায় র্যাব।
র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘একটু আগেও ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের একটু কনফিউশন রয়েছে, আমরা এখনও তাকে (মেহেদী) পুরোপুরি সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখিনি। তবে ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, সাইফুল ও মেহেদীর চেহারার মধ্যে একটি কনফিউশন রয়েছে। সাইফুলকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত এটা নিশ্চিত হতে পারছি না আমরা।
‘এখানে আরেকটি তথ্য বলি, ভুক্তভোগী একটু আগে জানিয়েছে, সে হল থেকে প্রথম যে মোবাইলে কথা বলেছে, মোবাইলটি ছিল মেহেদীর। তার মোবাইল দিয়েই সে (ভুক্তভোগী) কথা বলেছে। তো এ ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত মেহেদীকে আমরা অভিযুক্ত করতে পারছি না। সেই সঙ্গে সাইফুলকে না ধরা পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না। গ্রেপ্তার বাকিদের তথ্য অনুযায়ীও মেহেদী তাদের সঙ্গে ছিল না।’
এই বিষয়ে প্রক্টর রবিউল হাসান ভুঁইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সন্দেহভাজন হিসেবে মেহেদীর নাম এসেছিল। প্রকৃত অপরাধীদের সঙ্গে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করার পর তারা বলল যে, মেহেদী ছিল না।’
তাহলে এর আগে শনাক্ত হিসেবে মেহেদীর নাম কেন বলা হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জন থেকে, বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে তার নাম এসেছ। সন্দেহভাজন হিসেবে অনেক নাম এসেছিল। আসল আসামিদের যখন মুখোমুখি করা হয়েছে, তারা তো র্যাবের কাছে স্বীকার করছে, আমরা এই কজন ছিলাম।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সত্য থেকে একচুলও নড়েনি দাবি করে তিনি বলেন, ‘ওনারা মূল আসামিদের ভুক্তভোগীর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে তাদের চিহ্নিত করছে। মূল যে চিহ্নিত আজম, তার মাধ্যমে বাকিদের চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের চিহ্নিত করেছে তারা নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করছে। আজমসহ সবাই বলছে মেহেদী ছিল না।’
সিসিটিভিতেও মেহেদী হাসানের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
বহিষ্কার হচ্ছেন চবির ৩ ছাত্র
যৌন নিপীড়নের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাদের মধ্যে তিনজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তিনজন স্থানীয় বহিরাগত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হলেন, ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আজিম হোসাইন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের নুর হোসেন শাওন ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নুরুল আবছার বাবু। বহিরাগতরা হলেন মো. সাইফুল, হাটহাজারী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাসুদ রানা ও মো. সাইফুল।
তাদের মধ্যে দুই সাইফুল ছাড়া বাকিরা গ্রেপ্তার হয়েছেন।
র্যাব কর্মকর্তা এম এ ইউসুফ বলেন, ‘শুক্রবার ঘটনার মূল অভিযুক্ত আজিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং স্থানীয়। তার নেতৃত্বে পুরো ঘটনা ঘটেছে। তাকে গ্রেপ্তারের পর আমরা বাকিদের নাম পাই।’
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে তিনজন শিক্ষার্থী এ ঘটনায় জড়িত তাদের আজীবনের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪তম বার্ষিক সিনেট সভায় শনিবার বেলা ২টার দিকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
তিনি বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যে চারজনকে ধরা খুবই কষ্টকর। তাও সেটা হয়েছে। চারজনের মধ্যে তিনজন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তাদের আজ অথবা আগামীকালের মধ্যে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে।’
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গায় শিকার করে নিয়ে যাওয়ার সময় ৩৫টি হীরামন টিয়া উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে পাখিগুলো অবমুক্ত করেন ইউএনও শামীম ভুইয়া।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্যপ্রাণি নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘পানকৌড়ি’ এর সভাপতি বখতিয়ার হামিদ বিপুল।
তিনি বলেন, ‘সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা পানকৌড়ির দুই সদস্য জানতে পারি, পাখি শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে শিকারিরা। ওই খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কুলচারার মোড়ে অপেক্ষা করতে থাকি। এ সময় দিগড়ী গ্রামের হযরত, আলা, শাজাহান ও ডোমচারার শরিফুলকে বস্তার মধ্যে করে পাখি ধরে নিয়ে যেতে দেখি।’
বিপুল জানান, বস্তার মধ্যে পাখি নিয়ে যেতে দেখে শিকারিদের পিছু নেন তারা। এ অবস্থায় বস্তাগুলো ফেলে পালিয়ে যায় শিকারিরা। পরে বস্তার ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় ৩৫টি হীরামন টিয়া এবং পাখি শিকারের সরঞ্জাম।
পরে পাখিগুলোকে অবমুক্ত করতে বস্তা থেকে বের করে খাঁচায় ঢুকিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নেয়া হয়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভুইয়া জানান, পাখি বা পরিযায়ী পাখি শিকার বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
ইউএনও বলেন, ‘দুপুরে পাখিগুলো অবমুক্ত করা হয়েছে। পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় বস্তা ও পাখি শিকারের সরঞ্জাম।’
পাখি শিকারের সঙ্গে জড়িতদের তলব করা হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, হীরামন টিয়ার বসবাস ভারতে হলেও এই প্রজাতির উল্লেখ যোগ্য পাখি আগস্টের শুরুর দিকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে আসে। মূলত খাবারের সন্ধানেই এরা বাংলাদেশে আসে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে আবার চলে যায়।
আরও পড়ুন:বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে উপস্থিত পুলিশের ভূমিকার বিষয়টি তদন্তে জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে সোমবার রাতে কমিটি গঠন করা হয়।
নিউজবাংলাকে মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি কে এম এহসান উল্লাহ। তবে কমিটির সদস্যদের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।
বরগুনা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনের সামনে সোমবার দুপুরে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বেধড়ক পেটায় পুলিশ।
এ সময় সেখানে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা কয়েকটি মোটরসাইকেল ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেন।
এ ঘটনায় এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ‘পুলিশ বলেছিল, গাড়ি ভাঙচুরকারীকে তারা চিনতে পেরেছে। আমি বলেছি, যে ভাঙচুর করেছে, তাকে দেখিয়ে দিন। আমি তাকে আপনাদের হাতে সোপর্দ করব। আসলে তাদের (পুলিশের) উদ্দেশ্যই ছিল ছাত্রলীগের ছেলেদের মারবে। আমি তাদের মার ফেরানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেখানে এত পুলিশ আসছে যে কমান্ড শোনার মতো কেউ ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্বিচারে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তা মহররম ছিলেন সেখানে। তিনি অনেক ভুল করেছেন।
‘যেখানে আমি উপস্থিত, সেখানে তিনি এমন কাজ করতে পারেন না। আমি তাকে মারপিট করতে নিষেধ করেছিলাম। তারা (পুলিশরা) আমার কথা শোনেননি।’
এমপি শম্ভুর করা অভিযোগ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, ‘ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে কী ঘটেছে ডিআইজি স্যারের নেতৃত্বে আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। এমপি সাহেব মুরব্বি মানুষ। তার সঙ্গে পুলিশের কেউ অশোভন আচরণ করে থাকলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এ বিষয়ে জানতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মহররম আলী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এস এম তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলতে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তারা কল রিসিভ করেননি। পরে সরকারি নম্বরের ওয়াটসঅ্যাপে খুদেবার্তা পাঠালেও সাড়া মেলেনি।
যা ঘটেছিল
বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে ফেরার সময় শিল্পকলা একাডেমির সামনে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর পদবঞ্চিত কয়েকজন হামলা চালায়। এ সময় দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা জানান, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শিল্পকলায় প্রবেশের সময় হামলাকারীরা ছাদ থেকে তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ কারণে পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে।
আট বছর পর গত ১৭ জুলাই বরগুনা শহরের সিরাজ উদ্দীন টাউন হল মিলনায়তনে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়। এরপর ২৪ জুলাই রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেন।
এতে জেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৩৩ সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়। এর পর থেকে নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বরগুনা শহরে পদবঞ্চিতরা বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ মিছিল ও ভাঙচুর চালায়।
আরও পড়ুন:নাটোরে কলেজ শিক্ষক খাইরুন নাহারের মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী কলেজ ছাত্র মামুনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলা হতে পারে। আইনজীবী, চিকিৎসক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুন তাদের দাম্পত্য কলহের কথা স্বীকার করেছেন। মামুন দাবি করেছেন যে শনিবার রাত ২টায় দাম্পত্য কলহের জের ধরে তিনি খাইরুনকে লাথি মেরে ঘরের বাইরে চলে যান। এরপর শিক্ষক খাইরুন নাহার বেশ কয়েকবার ফোন করলেও মামুন ফোন রিসিভ করেননি। এতে ক্ষোভে খাইরুন নাহার আত্মহত্যা করেছেন।
‘মামুন সেদিন রাত ২টা ১৭ মিনিটি থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করেছেন এমন তথ্য পেয়েছে পুলিশ। ইতোমধ্যে বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, রাত ২টা ১৭ মিনিটের দিকে মামুন বাসার বাইরে যাচ্ছেন।
‘আরেকটি ফুটেজ পাওয়া গেছে ওই বাসার দেড় কিলোমিটার দূরের জেলগেট এলাকার। তাতে কারারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে মামুনকে। এছাড়া সদর থানার সামনে সেলফি তোলা ও নিজের মোবাইলে দাম্পত্য কলহ নিয়ে আপেক্ষ প্রকাশ করে নিজেই ভিডিও করেন মামুন।’
পুলিশ সুপার জানান, সম্প্রতি তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। খাইরুনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলতেন মামুন। মামুনের সম্মতিতে খাইরুন তার আগের পক্ষের বড় ছেলেকে মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য দুই লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে মামুন আর ওই টাকা দিতে দেননি। এমন নানা বিষয় নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছিল।
রোববার সকালে নাটোর শহরের বলারিপাড়ায় নান্নু ম্যানশনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে খায়রুন নাহরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তার চাচাত ভাই অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় মামুনকে গ্রেপ্তার দেখায়।
বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় সন্দেহজনকভাবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার বিকেলে মামুনকে জেলা দায়রা জজ আদালতে তোলা হয়। এ সময় মামুনের জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার স্বপন। তবে এই আবেদন নাকচ করে মামুনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দীন।
পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে যে খাইরুন নাহার আত্মহত্যা করেছেন। আর যদি আত্মহত্যা হয়ে থাকে তবে মামুনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হবে। এজন্য ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
খাইরুনের মরদেহের ময়নাতদন্তকারী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সামিউল ইসলাম শান্ত জানান, খাইরুন নাহারের মরদেহে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গলায় ফাঁসের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে শ্বাসরোধে মৃত্যুর আলামত পাওয়া গেছে। তবে ভিসেরা রিপোর্ট এলেেএ বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
খাইরুনের খালাতো ভাই নাইম হোসেন বলেন, ‘বিয়ের পর খাইরুন নিজের টাকায় মামুনকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন। মামুন আবারও নতুন মডেলের মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। এসব কারণে দুজনের মাঝে মনোমালিন্য হতে থাকে। খাইরুন আত্মহত্যা করলেও এর জন্য একমাত্র মামুনই দায়ী।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার স্বপন বলেন, ‘মামুন হোসেনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি পুলিশ। এ কারণে ৫৪ ধারায় তাকে আদালতে পাঠিয়েছে।’ তবে মামুনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা হতে পারে এমন ইঙ্গিত দেন তিনি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ জানান, খাইরুন নাহারের মৃত্যুর ঘটনায় তার চাচাতো ভাই নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খামার নাচকৈড় গ্রামের সাবের উদ্দিন অপমৃত্যু মামলা করেছেন। এরপর পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মামুনকে আদালতে পাঠায়। এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-প্রমাণে এটি আত্মহত্যা বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পর মূল বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। এটি আত্মহত্যা হলে আত্মহত্যায় প্রচারণাকারী হিসেবে মামুন অভিযুক্ত হতে পারেন।
মামুনকে নিয়ে স্বজন ও এলাকাবাসী যা বলছেন
নাটোরের গুরুদাসপুরের পাটপাড়া এলাকায় মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় বেশ কয়েকজনের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তাদের একজন মিঠুন আলী বলেন, ‘মামুন বিয়ে করার আগে নিজ বাড়ি থেকেই কলেজে যেত। এলাকায় তাকে সবাই ভাল ছেলে হিসেবেই জানত।’
মমতাজ বেগম নামে মধ্যবয়সী এক নারী জানান, মামুনকে ভালো ছেলে হিসেবেই তিনি জানেন। দেখা হলে আদব-কায়দার সঙ্গেই কথাবার্তা বলতেন।
বাবলু হোসেন নামে আরেকজন বলেন, ‘মামুনের বাবার নাম মোহাম্মদ আলী। এলাকায় সে বাইক নিয়ে ঘোরাঘুরি করতো। সবসময় ফিটফাট থাকত। ওর সম্পর্কে এর বেশি কিছু জানি না।’
মামুনের মা রাবেয়া বেগম বলেন, ‘আমরা তো মামুন ও খাইরুনের বিয়েটা হাসিমুখেই মেনে নিয়েছিলাম। তারপর যে কী থেকে কী হয়ে গেল। আমার ব্যাটাকে ফিরিয়ে এনে দাও।’
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ গার্মেন্টস কর্মী নুরুজ্জামানকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, তীব্র স্রোতের কারণে ডুবুরি দল নদীর তলদেশে যেতে পারছে না। তবে নুরুজ্জামানকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের ডিফেন্সর স্টেশন অফিসার সঞ্জয়।
সোমবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে সেতুর ঢাকামুখী মাওয়ার ১০/১১ নম্বর পিলার অংশে চলন্ত প্রাইভেট কার থেকে ঝাঁপ দেন ৩৮ বছরের নুরুজ্জামান। তার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানা এলাকায়। নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরের উর্মি গার্মেন্টসে কাজ করতেন তিনি।
এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়েও তার খোঁজ পায়নি ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের উদ্ধার অভিযান শুরু করে নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
তবে তীব্র স্রোতের কারণে ডুবুরি দল নদীর তলদেশে যেতে পারছে না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে ঠিক কী কারণে ওই ব্যক্তি নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে মাওয়া নৌ-পুলিশ। নদীতে ঝাঁপ দেয়ার কারণ বলতে পারছেন না নুরুজ্জামানের স্ত্রী ও ঝাঁপ দেয়ার সময় প্রাইভেট কারে থাকা ওমর ফারুকও।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে হেফাজতে নিয়েছে নৌ-পুলিশ।
সোমবার রাতে সেতু থেকে ঝাঁপ দেয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি ধারণ করা হয় পাশের লেনে থাকা বিপরীতগামী অন্য একটি চলন্ত গাড়ি থেকে। বলা হচ্ছে, চলন্ত প্রাইভেট কার থেকেই লাফ দেন নুরুজ্জামান। তবে গাড়ি চলন্ত অবস্থায়ই তিনি লাফ দিয়েছেন কি না, ওই ভিডিও থেকে তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
নুরুজ্জামান যখন নদীতে ঝাঁপ দেন, সে সময় চালক ছাড়া প্রাইভেট কারে ছিলেন পেশায় অটোমিস্ত্রি ওমর ফারুক। তারা নারায়ণগঞ্জে একই এলাকায় থাকেন।
ঘটনার পর তিনি জানান, ১৫ আগস্ট উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিতে এদিন সকাল ৭টার দিকে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে রওনা দিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যান তারা। তবে তারা সমাধিতে ফুল দিতে পারেননি। সেখান থেকে ফেরার পথেই পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ দেন নুরুজ্জামান।
ওমর ফারুকের বর্ণনায়, ‘তিন-চার দিন আগে থেকে (নুরুজ্জামান) বলতেছিল- আমারে নিয়া টুঙ্গিপাড়ায় যাইব, বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিব, শ্রদ্ধা জানাইব। আমার তো কাজ আছে, আমি যাইতে পারুম না বলি। তখন সে আমাকে বলল, তোমার কাজের মজুরি আমি দিয়া দিব, আমার সঙ্গে চলো। আমি লোকটার কথা ফালাইতে পারিনি। সে জন্য আমি তার সাথে গেছি।
‘কাঁচপুর থেকে তার সাথে আমি গাড়ি ভাড়া করি। সেখান থেকে আমরা সকালে রওনা দিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় যাই। ওইখানে যাওয়ার পর আমাদের কার্ড নাই, তাই আমরা ঢুকতে পারি নাই। তখন প্রধানমন্ত্রীর আসার সময় ছিল। বড় নেতারাও ওইখানে দাঁড়াতে দিচ্ছিল না। নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিল, তারাও আমাদেরকে ওখান থেকে সরে যেতে বলে। তখন আমরা সাইডে আইসা পড়ছি।’
সমাধিতে ফুল দিতে না পেরে নুরুজ্জামান সে সময় মোবাইল দিয়ে ভিডিও করছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সে ভিডিও করার সময় বলতেছিল, এই ভিডিওগুলি আমি ফেসবুকে ছাইড়া দিমু। আমি ফুল দিতে পারি নাই, কষ্ট পাইছি। সাড়ে ১০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করি। আমি সারা মাসের বেতনের টাকা খরচ কইরা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল ও শ্রদ্ধা জানাইতে আসছি, আমি বঙ্গবন্ধুরে কতটুকু ভালোবাসি তাই ভিডিওর মধ্যে...’
ওমর ফারুকের ভাষ্য, সেখানে ২ ঘণ্টার মতো অবস্থান করে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিতে ব্যর্থ হয়ে তারা বাড়ি উদ্দেশে রওনা দেন। ফেরার পথে পদ্মা সেতুতে ঢাকাগামী লেনটিতে কাজ চলছিল। সে কারণে তাদের প্রাইভেট কারটিও ধীরগতিতে ছিল। তখনই কারের পেছনের সিটে বসা নুরুজ্জামান হঠাৎ দরজা খুলে নদীতে ঝাঁপ দেন।
এ ঘটনার কারণ জানেন না স্ত্রী সবুরাও। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি, আমার স্বামী পদ্মা সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দিছে। খবর শুনে সেখানে গিয়ে আমি তাকে খুঁজতে থাকি। কী কারণে সে নদীতে ঝাঁপ দিছে বলতে পারি না।’
এ বিষয়ে মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অহিদুজ্জামান বলেন, ‘টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার জন্য একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করেছিলেন নুরুজ্জামান। কিন্তু ফুল দেয়ার অনুমতি কার্ড না থাকায় সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়। এরপর পদ্মা সেতুতে ঢাকামুখী লেন দিয়ে ফেরার পথে নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি।
‘এ ঘটনায় নুরুজ্জামানের সঙ্গে গাড়িতে থাকা ওমর ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফাঁড়িতে নেয়া হয়েছে।’
ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের ডিফেন্সর স্টেশন কর্মকর্তা সঞ্জয় বলেন, ‘তীব্র স্রোতের কারণে ডুবুরি দল নদীর তলদেশে যেতে পারেনি। তবে নৌ-পুলিশের সহায়তায় সেতুর আশপাশ এলাকায় নুরুজ্জামাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।’
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নিজ ঘরের সিঁধ কেটে ঢুকে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক ডাব বিক্রেতার বিরুদ্ধে। জাহের আলী নামে ওই ব্যক্তিকে মঙ্গলবার আটক করেছে পুলিশ।
হত্যার ঘটনাটি ঘটে সোমবার রাতে, উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের বড় গোল্লারপাড় গ্রামে।
নিহত নারী হলেন দক্ষিণ রানীগাঁও গ্রামের শাহনাজ পারভীন।
সহকারী পুলিশ সুপার নালিতাবাড়ী সার্কেল আফরোজা নাজনীন এসব নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে শাহনাজ ও জাহেরের বিয়ে হয়। দুজনেরই আগের সংসারে বিয়েবিচ্ছেদ হয়; আগের পক্ষের সন্তানও আছে। এই বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, নালিতাবাড়ীর গ্রামে শাশুড়ি ও ননদের সঙ্গে থাকতেন শাহনাজ। জাহের জামালপুরে ডাবের ব্যবসা করেন। সোমবার গভীর রাতে নিজ ঘরের সিঁঁধ কেটে ঢুকে ওড়না পেঁচিয়ে ঘুমন্ত স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যান তিনি। সকালে পরিবারের লোকজন ঘরে মৃত অবস্থায় শাহনাজকে দেখে পুলিশে জানান।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সহকারী পুলিশ সুপার বলেন, ‘পারিবারিক কলহের কারণেই গৃহবধু খুন হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে তিনি (জাহের) আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’
আরও পড়ুন:পারিবারিক কলহের জেরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় গৃহবধূকে শিলের আঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত রুবেল মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ।
সদর উপজেলার পশ্চিম রসুলপুর এলাকায় মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ১৯ বছরের ফারজানা আক্তার পশ্চিম রসুলপুর এলাকার নুর নবীর মেয়ে।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হক।
নিহতের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে তিনি জানান, একই এলাকার রুবেলের সঙ্গে ছয় মাস আগে বিয়ে হয় ফারজানার। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে কলহ চলছিল।
এর জেরে একাধিকবার স্থানীয়ভাবে বিচার-সালিশও হয়েছে তাদের। গত সোমবারও সালিশ হয় তাদের নিয়ে। কিন্তু আজ ভোরে আবারও তাদের মধ্যে ঝগড়া হলে শিল দিয়ে ফারজানার মুখে ও মাথায় আঘাত করে গুরুতর আহত করেন রুবেল।
এ সময় ফারজানার চিৎকারে আশপাশের লোকজন গিয়ে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ফারজানার মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘সকালে গৃহবধূর স্বজনরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।’
ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক মোস্তফা কামাল খান বলেন, ‘ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী রুবেল মিয়াকে আটক রাখে। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
গাজীপুরের ধীরাশ্রম এলাকায় পঞ্চগড়গামী দ্রুতযান এক্সপ্রেসের চারটি বগি লাইনচ্যুতির ঘটনায় দেশের উত্তরবঙ্গমুখী কয়েকটি ট্রেন দেরিতে ছেড়েছে।
আগামীকাল বুধবারের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ।
রোববার রাতে গাজীপুরের ধীরাশ্রম এলাকায় ঢাকা ছেড়ে যাওয়া দ্রুতযান এক্সপ্রেসের চারটি যাত্রীবাহী বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে আহত হয় ৭ যাত্রী।
দুর্ঘটনার কারণে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ১১ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। সোমবার সকাল ৮টার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত পঞ্চগড়গামী ‘দ্রুতযান এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি সরিয়ে নেয়া হলে চলাচল স্বাভাবিক হয়।
তবে পরবর্তী সময়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও বেশ কয়েকটি ট্রেন দেরিতে ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলস্টেশনের পরিবহন কর্মকর্তা আমিনুল হক।
নিউজবাংলাকে তিনি জানান, ‘গত পরশুদিন দুর্ঘটনার পর কয়েকটি ট্রেন দেরিতে ছেড়ে গেছে। যে ট্রেনগুলো দেরিতে ছেড়ে গেছে সেগুলো রেলওয়ে পশ্চিম বিভাগের অর্থাৎ উত্তরবঙ্গ ও খুলনাগামী ট্রেন বলেই জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এগুলোকে শিডিউল বিপর্যয় বলা যায় না। কয়েকটি ট্রেন ২-৩ ঘণ্টা দেরি করেছে দুর্ঘটনার কারণে। আগামী ২-১ দিনের মধ্যে এটা ঠিক হয়ে যাবে।’
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত পরশুদিন দুর্ঘটনা হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক দেরি হয়েছে। প্রায় ১১-১২ ঘণ্টা লেগেছে। সে সময় প্রায় ১২ ঘণ্টার মতো উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। সেই পরিস্থিতি এখনও ফেস করতে হচ্ছে।’
তিনি জানান, উত্তরবঙ্গগামী কয়েকটি ট্রেন দেরিতে ছেড়ে গেছে। যার মধ্যে রয়েছে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস, পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস ও খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন। যার প্রতিটি ট্রেন ২ থেকে ৩ ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আগামীকালের মধ্যে ট্রেনের এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য