মানিকগঞ্জের ঘিওরে সহকর্মীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে একজনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে ভোর ৪টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ৪৫ বছরের আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায়। আটক শাহিন মিয়ার বাড়ি ঘিওরের বাইলজুরি এলাকায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হামিদুর রহমান জানান, নিহত ও আটক ব্যক্তিরা আনসার সদস্য। তারা উপজেলার বিভিন্ন কর্মকর্তাদের অফিসে রাতে নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করতেন।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজউদ্দিন আহমেদ বিপ্লব নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আব্দুল কুদ্দুস ও শাহিন মিয়ার মধ্যে আগে থেকেই শত্রুতা ছিল। এ কারণে শাহিন তাকে পিটিয়ে ও রান্নার বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।
স্থানীয়রা খবর দিলে মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বর্তমানে শাহিন থানায় রয়েছেন। এ ঘটনায় ঘিওর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত তুমুল জনপ্রিয় সিনেমা হাওয়া’র পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ লংঘনের অভিযোগে বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি করা হয়।
সংস্থাটির বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নারগিস সুলতানা মামলার বাদী হয়েছেন।
মামলায় ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে বলে জানান, বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের ওয়াইল্ডলাইফ পরিদর্শক অসীম মল্লিক।
আদালত মামলাটি আমলে নিলেও তদন্তের জন্য কোনো আদেশ দেয়নি। এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহে আদেশ হতে পারে বলে জানা গেছে।
মামলায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর ধারা ৩৮ (১-২), ৪১ ও ৪৬ লংঘন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় তিনজনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এরা হলেন তদন্ত কমিটিতে কাজ করা আব্দুল্লাহ আস সাদিক, অসীম মল্লিক ও রথিন্দ্র কুমার বিশ্বাস।
হাওয়া সিনেমাটি মুক্তি পায় গত ২৯ জুলাই। মুক্তির পর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত চলচ্চিত্রটির রিভিউতে জানা যায়, চলচ্চিত্রটিতে একটি পাখিকে হত্যা করে চিবিয়ে খেয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।
রিভিউ প্রকাশের পর বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অনেকে। তারপর দেশে পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে কাজ করা ৩৩টি সংগঠনের সমন্বিত প্রয়াস ‘বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)’ গত ১০ আগস্ট এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়।
তার পরদিন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে চলচ্চিত্রটি দেখে আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ মিলেছে বলে জানান বন অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
হাওয়া চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান ও রিজভী রিজুসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:২০১২ সালের ১৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় একটি দোকানে ইলেকট্রনিকস পণ্য চুরির অভিযোগে মামলা করেন আতিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। ওই মামলায় মো. আমান, মো. সিদ্দিক ও ফারুক নামে তিনজনকে আসামি করা হয়।
গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ওই মামলাটির জামিন শুনানি হয়। শুনানিতে আসামি আমান আদালতে হাজির হয়ে জানান বাদীর সঙ্গে তার আপস হয়ে গেছে। যথারীতি মামলার বাদীকেও হাজির করেন তিনি।
এরপর শপথবাক্য পাঠ করে ওই বাদী জানান, আসামি আমান জামিনে গেলে তার কোনো আপত্তি নেই। এ সময় আদালতের বিচারক বাদীর নাম-পরিচয় জানতে চাইলে তিনি যথাযথ উত্তর দিতে ব্যর্থ হন। পরে তার স্বাক্ষর নিয়ে অভিযোগপত্রের সঙ্গে মেলানো হয়। কিন্তু স্বাক্ষরটি না মেলায় আদালতের সন্দেহ হলে বাদী দাবি করা ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
কিছুক্ষণ পরই আদালতে হাজির হন মামলার আসল বাদী আতিকুল ইসলামের আইনজীবী। তিনি আদালতকে জানান, কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আপসের দাবি করা ব্যক্তি মামলার বাদী নন।
এ অবস্থায় আটক ব্যক্তিকে আদালত জিজ্ঞেস করলে তিনি স্বীকার করেন যে মিথ্যা বাদী সেজে তিনি আসামি আমানের পক্ষে আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসেছেন। তার প্রকৃত নাম মো. সালাম এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বাক্কা মিয়ার ছেলে তিনি।
মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার অভিযোগে এ সময় সালাম ও আমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী।
মঙ্গলবার মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার ওই মামলায় সালাম ও আমানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (দ্বিতীয়) আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শামছুর রহমান মঙ্গলবার বিকেলে ওই রায় ঘোষণা করেন।
বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন:সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয় না থাকায় পুরান ঢাকায় রাসায়নিক গুদাম ও কারখানায় আগুনের ঘটনা বাড়ছে বলে মনে করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
রাজধানীর দেবীদাস ঘাট লেনে আগুনে পুড়ে যাওয়া কারাখানা পরিদর্শনের সময় বুধবার তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র তাপস বলেন, ‘যেখানে খাবার হোটেল ও পলিথিন কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে, সেটি একটি ওয়াক্ফ এস্টেট। এখানে স্থাপনার বৈধতা নেই, বাণিজ্য অনুমতি নেই। তার পরও সেখানে রেস্তোরাঁ ও কারখানা হয়েছে অবৈধভাবে।
‘বাণিজ্য অনুমতি না থেকেও সেখানে গ্যাস, বিদ্যুতের সংযোগ গেল কীভাবে? আইনের ব্যত্যয় হলে এ রকম দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।’
সোমবার দেবীদাস ঘাট লেনের চারতলা একটি ভবনে আগুন ধরে ছয় হোটেল কর্মচারীর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মেয়র।
তিনি বলেন, ‘আমরা ২০১৮ সালের পর থেকে এখানে ট্রেড লাইসেন্স দিচ্ছি না। তার পরও কারখানা হচ্ছে, ব্যবসা চলছে। আমরা ১ হাজার ৯২৪টি রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা চিহ্নিত করেছি। এসব স্থানান্তর করতে বলেছি। যার কাজ চলমান।’
মেয়র তাপস আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনঃখনন কার্যক্রম ও নিউ মার্কেটসংলগ্ন বনলতা কাঁচাবাজার পরিদর্শন করেন।
এ সময় মেয়রের সঙ্গে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদসহ স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:দুর্নীতিসংক্রান্ত খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছিলেন বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি নিউজের স্টাফ রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম জুয়েল ও ক্যামেরা পারসন আজাদ আহমেদ। এবার সেই হামলাকারীরাই উল্টো ওই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছে। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ আনা হয়েছে।
বুধবার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে এই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন ভিক্টর ট্রেডিং করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী কাওছার ভুইয়ার ভাই নাজমুল হাসান ভূইয়া।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় স্টাফ রিপোর্টার জুয়েল, ক্যামেরা পারসন আজাদ ছাড়াও অজ্ঞাত উল্লেখ করে ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, ভিক্টর ট্রেডিংয়ের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন সাংবাদিক জুয়েল ও তার সঙ্গীরা। তারা বাদী নাজমুলসহ অন্যদের মারধরও করেন। একপর্যায়ে তারা মামলার ৩ নম্বর সাক্ষী আ. মালেকের ড্রয়ার থেকে টাকা নিয়ে যান।
মামলায় উল্লেখ করা এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম জুয়েল। তিনি বলেন, ‘২ আগস্ট দুপুরে ভিক্টর ট্রেডিংয়ের দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে আমাদের আটকে রেখে মারধর করে। আমাদের ডিভাইসও ক্ষতিগ্রস্ত করে। তারা আমাদের ধারণ করা সব ফুটেজ মুছে দেয়।
‘আমরা ওখান থেকে বের হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেছি। ওই মামলায় থানা পুলিশ কাওছার ভূইয়া ও তার সহযোগী সাত হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনার ১৫ দিন পর ঠিকাদার কাওছারের ভাই নাজমুল আমাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। আমাদের হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই মামলাটি করা হয়েছে।’
জুয়েল আরও বলেন, ‘আমি মামলা করার পর সমঝোতার চেষ্টা করে আসামিরা। আমরা বলেছি, আইন আইনের গতিতে চলবে। আমাদের সঙ্গে সমঝোতা করতে না পেরে হয়রানির উদ্দেশ্যে ঘটনার ১৫ দিন পর তারা আদালতে মামলা করেছে।’
আনীত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকুসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা এ প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
মামলা প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্র্যাব। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্রাইম রিপোর্টারদের এই সংগঠন। এদিন বেলা ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) প্রাঙ্গণে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ৫ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
জেলার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল হালিম বুধবার সকালে এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মনোরঞ্জন দাশ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডিতরা হলেন নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন, বলকিপার আবদুল মান্নান, তার ভাই আবদুল গাফফার, বলকিপার রমজান আলী এবং বাবুল রহমান ওরফে রনি।
পিপি জানান, ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটি এলাকায় অবস্থিত দুটি মসজিদে জুমার নামাজের পর বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর নেভাল প্রভোস্ট মার্শাল কমান্ডার এম আবু সাঈদ নগরীর ইপিজেড থানায় মামলা করেন।
সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে করা এই মামলায় আসামি করা হয় ৪ জনকে। পরে পুলিশের তদন্তে আসামি আবদুল মান্নানের বড় ভাই জেএমবি সদস্য আবদুল গাফফারের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।
মনোরঞ্জন বলেন, ‘মামলার এক বছর পর ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় তদন্ত কর্মকর্তা। বিচার শুরুর পর চলতি বছরের ২৩ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বুধবার রায় ঘোষণা করেন আদালত।’
আসামিদের মধ্যে এম সাখাওয়াত হোসেন পলাতক। বাকিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান পিপি।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জে সৎমেয়ের জামাইকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হবে।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সায়েদুর রহমান বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে এ রায় দেন।
আসামি ৬০ বছর বয়সী আবু বাক্কারের বাড়ি কিশোরগঞ্জ পৌর এলাকার তারাপাশা এলাকায়।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু সাঈদ ইমাম নিউজবাংলাকে এসব নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী শারমীন আক্তারের সঙ্গে ওমর ফারুকের বিয়ে হয় ২০১৪ সালে। এর পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে নানা বিষয়ে তার কলহ চলত। বিষয়টি সৎবাবা আবু বাক্কারকে বিভিন্ন সময় তিনি জানিয়েছিলেন। এসব কারণে মেয়ের জামাইয়ের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন বাক্কার।
২০১৯ সালের ৩০ মে সকালে ওমর ফারুক স্ত্রীকে নিতে শ্বশুরবাড়ি গেলে বাক্কারের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে দা দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন বাক্কার। সে রাতেই বাক্কারকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন মেয়ে শারমিন।
আরও পড়ুন:বিভিন্ন সময়ে তৈরি করেছেন নানা ধরনের মাস্টার চাবি। সেই চাবি দিয়ে পুরান ঢাকাকে টার্গেট করে কয়েক বছরে চুরি করেছেন পাঁচ শতাধিক মোটরসাইকেল। চোরাই মোটরসাইকেল কেরানীগঞ্জ, দোহার, মুন্সীগঞ্জসহ ঢাকার পাশের বিভিন্ন এলাকায় কম দামে বিক্রি করতেন চোর চক্র।
সম্প্রতি রাজধানীর ওয়ারী ও গেন্ডারিয়া থানায় দুটি মোটরসাইকেল চুরি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মোটরসাইকেল চোর চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) ওয়ারী বিভাগ।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
রাজধানীর শনির আখড়া ও ধলপুর এলাকায় মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে মোটরসাইকেল চোর চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ তারা হলেন- চক্রের হোতা নূর মোহাম্মদ, অন্যতম সহযোগী রবিন, সজল, মনির ও আকাশ।
অভিযানে তাদের কাছ থেকে ১৩টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘প্রথমে মোটরসাইকেল চোর চক্রের দুই সদস্য নূর মোহাম্মদ ও রবিনকে যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে চক্রের অন্য তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, মোটরসাইকেল চুরির জন্য তাদের টার্গেটেড এরিয়া ছিল পুরান ঢাকা। ওই এলাকায় সুজুকি জিক্সার মডেলের মোটরসাইকেল চুরি করতেন তারা। গত কয়েক বছরে এই চক্রের সদস্যরা অন্তত ৫০০ মোটরসাইকেল চুরি করেছেন।
দ্রুত বড়লোক হওয়ার নেশায় মোটরসাইকেল চুরি
জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ডিবি জানায়, নূর মোহাম্মদ মূলত জুরাইন এলাকায় একটি কাঠের দোকানে নকশার কাজ করতেন। আগে তার বাসা ছিল ঢাকার কেরানীগঞ্জে হাসনাবাদ এলাকায়। একদিন হাসনাবাদ গলির ভেতর চা দোকানে রবিনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। দুইজন মিলে পরিকল্পনা করেন, কীভাবে দ্রুত সময়ে টাকাওয়ালা হওয়া যায়। নূর মোহাম্দ রবিনকে জানান, তার কাছে করাত ধার দেয়ার রেত আছে, যা দিয়ে মোটরসাইকেলের চাবি পাতলা করে ‘মাস্টার কি’ বানানো যাবে।
পরিকল্পনা মোতাবেক রবিনের জিক্সার মোটর সাইকেলের চাবি রেত দিয়ে ঘঁষে পাতলা করে শারিঘাট, হাসনাবাদ, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে পার্ক করা একটি জিক্সার মোটরসাইকেল পরীক্ষামূলক চুরি করেন। এর পর থেকে তারা এ চাবিকেই ‘মাস্টার কি’ হিসেবে ব্যবহার করে দুই বন্ধু দীর্ঘদিন ধরে মোটরসাইকেল চুরি করে আসছেন বলে জানায় ডিবি।
ডিবির প্রধান হারুন বলেন, ‘চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রি করার জন্য তারা ঢাকার দোহারে সজলকে তাদের চক্রের সদস্য করে নেন। ঢাকা মহানগর এলাকা থেকে বাইক চুরি করে নিরাপদ রোড হিসেবে পোস্তগোলা ব্রিজ পার হয়ে মাওয়া রোডের শ্রীনগর বাইপাস হয়ে মেঘুলা বাজার, দোহার রুট হিসেবে ব্যবহার করে।
‘অন্যদিকে বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়ে কেরানীগঞ্জ, জয়পাড়া ও দোহার এলাকা যাওয়ার রুট হিসেবে ব্যবহার করেন। সজল ও মনির দোহারের বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে চোরাই মোটরসাইকেলগুলোকে ইন্ডিয়ান বর্ডার ক্রস গাড়ি বলে বিক্রি করতেন।’
প্রতিটি চোরাই মোটরসাইকেল তারা ৪০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন। বিক্রির টাকা নূর মোহাম্মদ ৪০ শতাংশ, রবিন ৩০ শতাংশ ও অবশিষ্ট টাকা অন্যরা ভাগ করে নিতেন।
আসামিদের বরাতে ডিবি আরও জানায়, তারা ২০১৫ সাল থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে আসছেন। এ পর্যন্ত ৫০০টিরও বেশি মোটরসাইকেল চুরি করেছেন।
গোয়েন্দা প্রধান জানান, বিভিন্ন থানায় গ্রেপ্তার আসামি নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা, রবিনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা এবং অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে একটি করে মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য