গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
টুঙ্গিপাড়ায় শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি।
এ সময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের হাতে নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের ও সব শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লেখেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি সেখানে লেখেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। আমরাও দেশ এ অবস্থায় পেতাম না। বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান বাঙালির আত্মমর্যাদার প্রতীক পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে আড়াই ঘণ্টায় এ সমাধিস্থলে আসতে পারার জন্য জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বারবার ক্ষমতায় আসলে উন্নয়নে অনেক দেশকে অতিক্রম করে যাবে।’
শ্রদ্ধা নিবেদেনর সময় বিএসএমএমইউ-এর ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিত কুমার কুন্ডু, সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শেখ শাহীন আলম, কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এসএম ইয়ার-ই-মাহাবুব উপস্থিত ছিলেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-রেজিস্ট্রার সহকারী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন, উপ-রেজিস্ট্রার কার্ডিওলজিস্ট ডা. মুহাম্মদ কামাল হোসেন, হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ডা. পবিত্র কুমার দেবনাথ, সার্জারি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. অরুপ কুমার বিশ্বাস, কার্ডিওলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. বশির আহমেদ জয়, এনেসথিয়া এন্যালজেসিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডা. শরীফ উদ্দিন সিদ্দিকী।
এর আগে সকাল ৯টায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর খয়েরহাটে মুন্সীবাড়িতে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের গোপালগঞ্জ শাখার নির্মাণাধীন জমি ঘুরে দেখেন এবং দিক নির্দেশনা দেন উপাচার্য।
আরও পড়ুন:টানা দুদিন বৃদ্ধির পর আবারও কমে এসেছে করোনাভাইরাস শনাক্তের হার। তবে ওই দুদিন মৃত্যুশূন্য থাকলেও বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৮২৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৭০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। নতুন শনাক্তদের মধ্যে ১০১ জনই ঢাকার বাসিন্দা।
এদিন শনাক্তের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ, যা আগের দিনও ছিল ৪ দশমিক ৫৪। সে হিসাবে এক দিনের ব্যবধানে শনাক্ত কমেছে ১ দশমিক ১২ শতাংশ, যা করোনার চতুর্থ ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।
নতুন শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৯ হাজার ৬০৪ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যুসহ এ পর্যন্ত দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৯ হাজার ৩১৫ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সেরে উঠেছেন ৩৩৪ জন। সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৫২ হাজার ৮৩৮ জন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্চের শেষে আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে ওই বছরের ৪ অক্টোবর।
গত ২১ জানুয়ারি দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ দেখা দেয়। প্রায় তিন মাস পর ১১ মার্চ তা নিয়ন্ত্রণে আসে। তিন মাস করোনা স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে ছিল। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ। তবে করোনার চতুর্থ ঢেউ সামলে ভাইরাসটি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন:গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার কিছুটা বাড়লেও মৃত্যু ছিল শূন্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত।
একদিনে ২ হাজার ১১০টি নমুনা পরীক্ষায় ৯৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। নতুন শনাক্ত ৯৩ জনের মধ্যে ৪৬ জনই ঢাকার বাসিন্দা।
শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। সোমবার যা ছিল ৪ দশমিক ৯। সে হিসেবে একদিনের ব্যবধানে শনাক্ত বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩২ ভাগ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মঙ্গলবার পাঠানো বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৯ হাজার ২২২ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু না থাকায় মৃতের সংখ্যা অপরিবর্তিত আছে। এখন পর্যন্ত দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৯ হাজার ৩১৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন ২২৮ জন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৫১ হাজার ৯৬৫ জন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্চের শেষে আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে গত ৪ অক্টোবর।
গত ২১ জানুয়ারি দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ দেখা দেয়। প্রায় তিন মাস পর ১১ মার্চ নিয়ন্ত্রণে আসে। তিন মাস করোনা স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে ছিল। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ।
তবে করোনার চতুর্থ ঢেউ সামলে ভাইরাসটিকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন:শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে রোগীর লাঞ্ছিত হওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনাটি গত শনিবারের। ভিডিওতে লাঞ্ছিত করার দৃশ্য দেখা গেলেও ওই চিকিৎসক এটিকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।
চিকিৎসক আকরাম এলাহী সদর হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জন।
২ মিনিট ৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা গেছে, হাসপাতালে নিজ চেম্বারে বসে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন আকরাম। এর মধ্যে একজন তার পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে বসেন। আকরাম তার পিঠে কিল দেন ও লাথি মারেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে চিকিৎসক আকরাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি কোনো রোগীর গায়ে হাত তুলিনি। ঘটনার দিন রোগীর অনেক চাপ ছিল। ওই সময় ওই রোগী জোর করে আমার চেম্বারে ঢোকার চেষ্টা করলে আমার সহকারী তাকে বাধা দেয়। বাধা দিলে সে ওই সহকারীর গায়ে হাত তোলে।
‘আমার সহকারী এমনিতেই অসুস্থ, হার্টের রোগী। পরে সে আমার চেম্বারে ঢুকে আমাকে কামড় দিতে গেলে আমি দূরে সরে আসি।’
রোগীকে লাঞ্ছনার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোনো রোগীকে থাপ্পর বা লাথি মারিনি। আমি আমি নিজেকে বাঁচাতে সরে এসেছি। আর যেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে এগুলো মিথ্যে। আমি কোনো রোগীকে মেরেছি এমন কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি।’
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন আবদুল্লাহ আল মুরাদ এ ধরনের ঘটনা সম্পর্কে অবগত নন জানিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ভিডিওর ওই রোগীর পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি চিকিৎসক আকরাম বা হাসপাতালের কেউ। এ কারণে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন:নবজাতকের জন্য বিশেষ সেবা ইউনিট চালুর মাধ্যমে শিশু মৃত্যু কমিয়ে এসডিজির লক্ষ্য অর্জনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মানিকগঞ্জে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের পুরনো ভবনে শনিবার নবজাতক শিশুর জন্য বিশেষ সেবা ইউনিটের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে ভূমিষ্ঠ হওয়া এবং বিভিন্ন রোগ ও অল্প ওজন নিয়ে জন্ম নেয়া শিশুদের পরিচর্যায় হাসপাতালে বিশেষ একটি ব্যবস্থা দরকার হয়। আর সেই ব্যবস্থাই হলো নবজাতক শিশুর বিশেষ সেবা ইউনিট (স্ক্যানু)। এখানে কিছুদিন রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। এর মাধ্যমে শিশুটির জীবন রক্ষা পায়।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে সদ্যোজাত প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে ৩২টির মৃত্যু হয়। এসডিজির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে এই সংখ্যা ১২টিতে নামিয়ে আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে মানিকগঞ্জে নবজাতক শিশুর বিশেষ সেবা ইউনিট (স্ক্যানু) স্থাপন করা হয়েছে।’
‘ইতোমধ্যে দেশের ৫০টি হাসপপাতালে স্ক্যানু স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলা হাসপাতালে এটি স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে শিশু মৃত্যুর হার কমে আসবে এবং আমাদের এসডিজি অর্জন সহজ হবে।’
মায়েদের উদ্দেশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সদ্যোজাত দুর্বল ও অসুস্থ শিশুকে দ্রুত স্ক্যানুতে নিয়ে আসুন। তাহলে শিশুটির সুচিকিৎসা হবে এবং জীবন রক্ষা পাবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, মহাপরিচালক (এমসিটিবি) প্রফেসর ডা. শাকিল আহম্মেদ, মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেন ও সিভিল সার্জন মোয়োজ্জেম আলী খান চৌধুরীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সহকর্মীকে মারধরে জড়িতদের শনাক্ত করতে না পারায় কর্মবিরতিতে গেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রায় ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ঢাকা মেডিক্যালের কোনো চিকিৎসা কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছেন না তারা। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে যোগ না দেয়ায় চাপ পড়েছে হাসপাতালটির পুরো চিকিৎসাব্যবস্থায়।
সাজ্জাদ হোসেন নামের ওই ইন্টার্ন চিকিৎসককে গত সোমবার রাতে কয়েকজন শহীদ মিনারে মারধর করেন। মারধরকারীরা নিজেদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে দাবি করেছিলেন।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিচার চেয়ে এই কর্মসূচি পালন করছে হাসপাতালটির ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগসহ অন্তত চারটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও কোনো ইন্টার্ন চিকিৎসক নেই। তারা না থাকায় কাজের চাপ পড়ছে স্থায়ী চিকিৎসকসহ ওয়ার্ডগুলোতে দায়িত্বে থাকা অন্যদের।
মেডিক্যালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সরা জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মূলত সকালবেলা সিনিয়র শিক্ষকদের সঙ্গে রাউন্ডে থাকেন। হাতে-কলমে শিক্ষা নেন। এর বাইরে জরুরি বিভাগ এবং অন্য ওয়ার্ডগুলোতেও তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করেন।
জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জরুরি বিভাগে প্রতি শিফটেই ইন্টার্নরা থাকে। গতকাল থেকে নেই। তারা না থাকায় আমাদের কাজে চাপ পড়ছে।’
শুক্রবার হওয়ায় রোগীর চাপ কম থাকায় সামলে নেয়া যাচ্ছে বলে জানান ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের একজন নার্স।
তিনি বলেন, ‘আজকে রোগী কম। ইন্টার্ন না থাকলেও খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। তবে রোগী বাড়লে চাপ বাড়বে।’
তারা না থাকলেও চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে না বলে দাবি হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হকের। তবে প্রায় ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক একসঙ্গে কাজ না করায় চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় চাপ পড়েছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি।
সহকর্মীকে মারধরের বিচার চেয়ে আল্টিমেটাম দেয় ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ। ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের পর বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় তারা।
অবশ্য এমন কর্মবিরতি দিয়ে কিছুটা সমালোচনার মুখেও পড়েছেন ইন্টার্নরা।
কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে তারাও পড়েছেন উভয় সংকটে। একদিকে সহকর্মীর বিচার না পাওয়া, অন্যদিকে চিকিৎসা প্রদান থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখা। দুটো বিষয়ই তাদের প্রশ্নের মুখে ফেলছে।
তাই তারা চান, দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হোক।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের এই কর্মসূচিতে পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতারা।
পরিষদের সভাপতি ডা. মহিউদ্দিন জিলানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা চিকিৎসা থেকে নিজেদের বিরত রাখতে চাই না। আমরা বিচার চাই। কিন্তু এই কদিনেও জড়িতদের শনাক্ত করতে না পারাকে প্রশাসনের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছি আমরা। জড়িতদের আইনের আওতায় না আসা পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে।’
কর্মবিরতি থেকে সরে আসার আভাস দিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক ডা. মারুফ উল আহসান। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল আমাদের মেডিক্যাল কলেজ প্রশাসনসহ অন্যদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। বৈঠক থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
ঢাকা মেডিক্যালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘আমরা পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। জড়িতদের শনাক্তে পুলিশ চেষ্টা করছে।’
ইন্টার্নদের কর্মবিরতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রায় ২০০ ইন্টার্ন আমাদের এখানে রয়েছে। তারা না থাকায় অন্যদের ওপর চাপ পড়ছে। তবে আমাদের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ নেই।’
মারধরের ওই ঘটনায় সাজ্জাদ মঙ্গলবার শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
মারধরে জড়িতে শনাক্তের বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদূত হাওলাদার বলেন, ‘ভুক্তভোগী জিডি করেছেন। ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় আমরা সরাসরি কাউকে শনাক্ত করতে পারিনি। আমরা কয়েকজন সন্দেহভাজনকে দেখিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে শনাক্তের চেষ্টা করেছিলাম।
‘সেটাও সম্ভব হয়নি। কারণ অন্ধকারে কয়েকজন মিলে মারধর করায় ভুক্তভোগী কাউকে দেখলে চিনতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। আমরা তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। আশা করছি, একটু সময় লাগলেও জড়িতদের শনাক্ত করতে পারব।’
আরও পড়ুন:দেশে করোনার বুস্টার ডোজ টিকা কার্যক্রমে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা পিছিয়ে রয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণে ছেলে-মেয়ে প্রায় সমান থাকলেও বুস্টার ডোজে মেয়েরা পিছিয়ে রয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে অনেক মেয়ে বুস্টার ডোজ নিচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ৫ থেকে ১১ বছরের শিশুদের করোনা টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ সময় পরীক্ষামূলকভাবে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী ১৬টি শিশুকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘টিকা কার্যক্রম পরিচালনায় আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম হয়েছি। সারাবিশ্ব আমাদের প্রশংসা করছে। অনেক দেশ এখনও ১০ থেকে ৱ১৫ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারেনি। কিন্তু বাংলাদেশ টিকা দিয়ে মানুষকে সুরক্ষায় নিয়ে এসেছে। মৃত্যুও শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। আমরা একদিনে এক কোটি বিশ লাখ টিকা দিয়েছি। টিকায় আমাদের সক্ষমতা আছে। বিশ্ববাসী জানে আমরা টিকা দিতে পারি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই একটা চেইন মেইনটেইন করে টিকা দিয়েছি। ঝুঁকি বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্বদের আগে টিকা দিয়েছি। ফ্রন্টলাইনারদেরও আগে দিয়েছি। সবশেষে এখন শিশুদের টিকা হাতে পেয়েছি। তাই কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি।’
শিশুদের টিকাদান প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিকের দুই কোটি ২০ লাখ শিশুকে টিকা দিতে হবে। এই শিশুদের জন্য প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ টিকা লাগবে। ইতোমধ্যে ৩০ লাখের মতো টিকা পাওয়া গেছে। বাকি টিকা যুক্তরাষ্ট্র সরকার কোভ্যাক্সের মাধ্যমে দেবে বলে নিশ্চিত করেছে।
‘এই টিকা শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। খুবই নিরাপদ। যুক্তরাষ্ট্রে এই টিকা দেয়া হচ্ছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর অনুমোদন দিয়েছে। যে টিকাগুলো এসেছে সেগুলো দুই মাসের ব্যবধানে দিতে হবে। ২৫ আগস্ট থেকে পুরোদমে শিশুদের টিকা দেয়া হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিশুরা এমনিতেই করোনা থেকে নিরাপদ ছিল। এখন পর্যন্ত দেশে ২৯ হাজার লোক মারা গেছেন। তাদের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই ৫০ বছরের বেশি বয়সী। এই তালিকায় তরুণদের সংখ্যাও খুবই কম। তবে দেশে করোনায় ৫ থেকে ১১ বছরের কেউ মারা গেছে এমন খবর এখনও শোনা যায়নি।’
বক্তব্য শেষে মন্ত্রী শিশুদের টিকা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি রাজেন্দ্র বোহরা, ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট প্রমুখ।
শিশুদের মধ্যে প্রথম টিকা নিল নীধি নন্দিনী: ৫ থেকে ১১ বছরের শিশুদের মধ্যে করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে আবুল বাশার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নীধি নন্দিনী। বৃহস্পতিবার বিআইসিসিতে শিশুদের করোনা টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের উপস্থিতিতে প্রথম টিকা নেয় এই শিক্ষার্থী। এরপর একে একে অন্য শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হয়।
টিকা নেয়া শিক্ষার্থীরা হলো- দ্বিতীয় শ্রেণির সৌম্য দ্বীপ দাস, চতুর্থ শ্রেণির মো. আবু সায়েম ফাহিম, পঞ্চম শ্রেণির বিকাশ কুমার সরকার, তৃতীয় শ্রেণির সাইমুন সিদ্দিক, তৃতীয় শ্রেণির মো. আরাফাত শেখ, আকিব আহমেদ সায়ন, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহমুদ হোসেন ও আল-আমিন, তৃতীয় শ্রেণির শামীমা সিদ্দিকা তাসিন, রুপা আক্তার, হুমায়রা আফরিন তামান্না, চতুর্থ শ্রেণির তাসলিমা আক্তার, সানজিদা আক্তার, মোছা. নুসরাত জাহান আরিন এবং প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী হীরা আক্তার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা টিকা ব্যবস্থপনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক বলেন, ‘দেশে বর্তমানে শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ফাইজারের করোনা টিকা মজুত আছে ৩০ লাখ। এ মাসের ২৮ তারিখের মধ্যে আরও ৭০ লাখ টিকা আমাদের হাতে আসবে। আমরা একসঙ্গে অনেক বেশি করোনা টিকা আনব না। চাহিদা দেখেই টিকা আনা হবে। পরবর্তী সময়ে ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হবে শিশুদের প্রথম ডোজের টিকা কার্যক্রম। এর দুই মাস পর দেয়া হবে দ্বিতীয় ডোজ।’
আরও পড়ুন:সাবেক সেনাদের গাঁজা কেনা সহজ করতে আরও টাকা ঢালতে যাচ্ছে কানাডা সরকার। বলা হচ্ছে, সরকার এবার এ খাতে প্রায় ১৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার খরচ করবে। এই অঙ্ক গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় ১৩৫ শতাংশ বেশি। কানাডার ভেটেরান অ্যাফেয়ার্স ২০০৮ সাল থেকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত গাঁজার জন্য এ অর্থ ব্যয় করছে।
বিনোদনমূলক ক্ষেত্রে গাঁজার ব্যবহার ২০১৮ সালের অক্টোবরে বৈধ করে কানাডা। উরুগুয়ের পর কানাডা এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া দ্বিতীয় দেশ। সংঘটিত অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই এবং ভোক্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পদক্ষেপ হিসেবে এ ব্যবস্থাটির বৈধতা দেয় জাস্টিন ট্রুডোর সরকার।
কানাডায় ওষুধ হিসেবে গাঁজা ২০০১ সাল থেকে বৈধ। গবেষণায় দেখা গেছে, উদ্বেগ, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার মতো সমস্যায় যারা ভোগেন, তাদের ক্ষেত্রে গাঁজা ভীষণ কার্যকর।
২০০৮ সালে আইনি নানা বাধা কাটিয়ে ভেটেরান অ্যাফেয়ার্স অবসরপ্রাপ্ত সেনাদের চিকিৎসায় ঔষধি গাঁজার অনুমোদন দেয়। তিন বছর পর ২০১১ সালে গাঁজাকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে নিয়মকানুনগুলো সহজ করে সরকার। এ বছর গাঁজা কেনার জন্য ৩৭ জনকে ৮১ হাজার ডলার দেয়া হয়।
ভেটেরান অ্যাফেয়ার্স বলছে, মেডিক্যাল গাঁজা ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানে দারুণ একটি ক্ষেত্র। এ নিয়ে আরও গবেষণা চলবে। বয়স্ক এবং তাদের পরিবারের কল্যাণে প্রয়োজনীয় নীতি সমন্বয় করা হবে।
কানাডিয়ান সিনেট কমিশন ২০১৯ সালে চিকিৎসার উদ্দেশে গাঁজার ইতিবাচক ফলাফলের ওপর জোর দিয়েছিল। বিশেষ করে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার বিরুদ্ধে ‘অত্যন্ত আসক্তিযুক্ত’ ওপিওডের বিকল্প ধরা হচ্ছে গাঁজাকে।
সিনেটররা বলেন, ‘গাঁজার দাম নিয়মিত মূল্যায়ন করা দরকার। কারণ কিছু অভিজ্ঞ সেনার সামর্থ্যের চেয়ে বেশি খরচ হতে পারে।’
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে কমপক্ষে ১৮ হাজার সাবেক সেনাকে ঔষধি গাঁজার জন্য টাকা দিয়েছিল কানাডা সরকার, যা ফেডারেল খরচের (১১ কোটি ৮০ লাখ ডলার) সমান।
বিশেষজ্ঞরা প্রবীণদের জন্য পরিকল্পনাটিকে অনেকাংশেই সমর্থন করেন। তবে তারা বলছেন, এটির সঙ্গে মনোসামাজিক সহায়তা থাকা জরুরি, বিশেষ করে উদ্বেগ এবং পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য