বগুড়া শহরের কলোনি এলাকায় সকাল ৮টা ৩২ মিনিটে বিদ্যুৎ চলে যায়। আসে ৯টা ৭ মিনিটে। অথচ এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সময় দেয়া রয়েছে দুপুর ১টা থেকে বেলা ২টা। আরেকটি সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা।
এ অবস্থার কথা জানান এলাকার বাসিন্দা আফতারুন নাহার। তিনি বলেন, ‘নিয়ম তৈরির শুরুতেই গলদ দেখা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার কয়েকবার লোডশেডিং হয়েছে। প্রতিবার ১০-১৫ মিনিট করে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থেকেছে।’
এ অভিযোগ বগুড়ার সব এলাকায়। এলাকাভিত্তিক সময়সূচির বাইরেও লোডশেডিংয়ের ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
সাম্প্রতিক চলা তাপদাহের মাঝে এমন লোডশেডিংয়ে নাজেহাল হয়ে পড়েছে বগুড়াবাসী। এর মধ্যে অনেক এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত লোডশেডিং পোহাতে হয়েছে মানুষদের।
শহরের নাটাইপাড়ার বাসিন্দা রেজওয়ানুল রুপম তার এলাকার মঙ্গলবারের লোডশেডিংয়ের ধারাপাত দেন।
তিনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে লোডশেডিং হয়। ১ ঘণ্টা পর এসে আবার যায় ৩টার দিকে। ঘণ্টা দুয়েক বিদ্যুৎ থাকার পর ৭টার দিকে গিয়ে ১৫ মিনিট লোডশেডিং ছিল। এরপর একেবারে রাতে ১১টা থেকে ১২টা বিদ্যুৎ ছিল না। পরে রাত ২টার দিকে আবার যায়।
কিন্তু ঘুমিয়ে পড়ার কারণে কখন বিদ্যুৎ আসে বলতে পারেননি রুপম। তবে জানান বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যায়। আসে ৯টা ৫০ মিনিটে। এরপর সূচি মোতাবেক সকাল ১০টার দিকে আবার লোডশেডিং শুরু হয়।
বিদ্যুতের সংকটে নাজেহাল খান্দার এলাকার টেলিকম ও ফটোস্ট্যাট ব্যবসায়ী কাওসার আহমেদ। বলেন, ‘সকাল থেকে দুবার লোডশেডিং হয়েছে। অথচ আমাদের এলাকায় দুপুর ১টা থেকে লোডশেডিং দেয়ার কথা।’
কাওসার বলেন, ‘এই লোডশেডিংয়ের কারণে আমার প্রচুর কাস্টমারকে ফেরত দিতে হয়েছে।’
লোডশেডিংয়ে আবাসিক জীবনের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভাব প্রকট হচ্ছে।
গুঞ্জন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘এখন আমাদের অটো রাইস মিলে ধান ভাঙা চলছে। মিলে একবারে প্রায় ১ হাজার ৮০০ মণ ধান সেদ্ধ হয়। এ সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে পুরো ধানের মান নষ্ট হয়ে যাবে। মানে চাল ভেঙে খুদ হয়।
‘এ জন্য অবশ্য মিলে ব্যাকআপ হিসেবে জেনারেটর রাখা হয়। কিন্তু জেনারেটর যেভাবে চলছে, এতে আমাদের ব্যয় কোন পর্যায়ে যাবে তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।‘
এলাকাভিত্তিক সময়সূচির বাইরেও লোডশেডিংয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন উত্তরের এই জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণে সরকারি সংস্থা নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের বিতরণ বিভাগ-২-এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা যে বরাদ্দ পাচ্ছি সেই বরাদ্দে সব এলাকায় বিদ্যুৎ নিরবচ্ছিন্ন রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য রুটিনমাফিক ২ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের বাইরেও গ্রাহকদের কষ্ট করতে হচ্ছে।’
পাওয়ার গ্রিড অফ বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিজিসিবি) বগুড়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সোলাইমান বাদশা বলেন, জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৩০ মেগাওয়াট। আজকে সরবরাহ হয়েছে ১০৭ মেগাওয়াট। মঙ্গলবার চাহিদা ১৪০ মেগাওয়াট। সরবরাহ ছিল ৮৭ মেগাওয়াট।’
আরও পড়ুন:মাগুরার শালিখা উপজেলার রায়জাদাপুর আদাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল ২০১৩ সালে। এত বছরেও নতুন ভবন না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতেই চলছিল পাঠদান।
ভবনটির বারান্দার ছাদ গত মঙ্গলবার ধসে পড়েছে। তবে ঘটনাটি সন্ধ্যায় ঘটেছে বলে কেউ হতাহত হয়নি। এরপর থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে।
সরকারি বিদ্যালয়টির একমাত্র ভবন ছিল এটি। চার কক্ষের ভবনটি ১৯৯৫ সালে নির্মাণ করা হয় বলে স্কুলসূত্রে জানা গেছে।
সরেজমিন বৃহস্পতিবার দেখা গেছে, ধসে যাওয়া ছাদের অংশ বারান্দায় পড়ে আছে। স্কুলটি দড়ি দিয়ে ঘেরাও করে লাল নিশানা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। বারান্দার ছাদ ধসে পড়ার পর পাশাপাশি চারটি কক্ষের সবকটির ছাদের আস্তর খসে পড়েছে, বেরিয়ে গেছে রড।
স্থানীয় জালাল মিয়া বলেন, ‘ভাগ্য ভালো যে দিনের বেলায় এ ঘটনা (ছাদ ধসে পড়া) ঘটেনি... দিনে ঘটলে ছাদের নিচে চাপা পড়ে অনেকে মারা যেতে পারত।’
স্কুলের সামনে টহল দিতে দেখা যায় সহকারী শিক্ষক সুদিপ্ত বিশ্বাস ও মসিউর রহমানকে।
তারা নিউজবাংলাকে জানান, মঙ্গলবার স্কুল বন্ধ ছিল। সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় ছেলেরা ভবনের বারান্দায় বসে সাধারণত আড্ডা দেয়। তবে মঙ্গলবার কেউই ছিল না। এ কারণে কেউ হতাহত হয়নি।
সুদিপ্ত বলেন, ‘পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও আমরা ক্লাস নিয়ে গেছি। কারণ আর কোনো ভবন নেই। কিছুদিন আগে শ্রেণিকক্ষের ছাদ খসে পড়লে ক্লাস নেয়া বন্ধ করা হয়। কিন্তু আমরা শিক্ষকরা সেখানে অফিসসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করি।
‘প্রায় ১০০ শিক্ষার্থীর জীবনে কী নেমে আসত যদি ছাদটি স্কুলের সময় ধসে পড়ত? ভাবতেই আমাদের ভয় লাগছে। তাই কেউ যেন ভবনে ঢুকতে না পারে সে জন্য পাহারা দেয়া লাগছে।’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপতী রায় বলেন, ‘প্রতিনিয়ত আমাদের ছেলেমেয়েদের ঝুঁকি নিয়ে পড়াতে হয়। আমাদের এই বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের জন্য দরখাস্ত দিয়েছিলাম এমপির ডিও লেটার সহকারে। কাগজে-কলমে আমাদের বিল্ডিংটি এসেছে। কয়েকবার মাটিও পরীক্ষা করে নিয়ে গেছে। অথচ আজও ভবনটি করা হয়নি।
‘কাগজে-কলমে যেহেতু এসেছে তাহলে ভবনটি গেল কোথায়? জরাজীর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালিকায় (জিপিএস) ১৪টি বিদ্যালয়ের নাম আছে... সব স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু রায়জাদাপুর আদাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি হয়নি।’
বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘স্কুলে ছেলেমেয়েদের ঝুঁকির মধ্য দিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। দুইটা শেডে কীভাবে ১০০ ছেলেমেয়ে পড়বে? নতুন ভবনের মাটি পরীক্ষা করে নিয়ে গেছে, তারপর কী কারণে ভবনটি নির্মাণে দেরি হচ্ছে আমার জানা নেই।’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকবর হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবনধসের বিষয়টি আমি জেনেছি। পুরোনো ভবনটি ২০১৩ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে কোনো ক্লাস হয় না। ক্লাস নেয়ার জন্য সেখানে দুইটা শেড করে দেয়া হয়েছে।
‘২০১৬ সালে নতুন ভবন স্থাপনের নোটিশ এসেছে। কিন্তু কেন এখনও ভবনটি নির্মাণ হয়নি তা আমি বলতে পারব না। ভবনের মাটি পরীক্ষা করার জন্য প্রকৌশলীকে বলা হয়েছিল। তিনি পরীক্ষাও করেছেন, কিন্তু তারপর কী হয়েছে জানি না।’
উপজেলা প্রকৌশলী শোয়েব মোহম্মদ বলেন, ‘বিদ্যালয়ের মাটি পরীক্ষা করে আমরা রিপোর্ট ঢাকায় পাঠিয়েছি। কিন্তু ঢাকা থেকে আমাদের কোনো নোটিশ আসেনি। যার ফলে ভবনটি এখনও নির্মাণ হয়নি।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের পটিয়ায় মাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে পৌরসভার সাবেক মেয়র শামসুল আলম মাস্টারের ছেলে মাইনুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
নগরীর নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে বুধবার বাসে ঢাকা যাওয়ার সময় পথে তাকে আটক করে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ।
নগরীর চান্দগাঁও ক্যাম্পে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, জমির বিরোধের জেরে গত ১৬ আগস্ট মা জেসমিন আকতারকে গুলি করে পালিয়ে যান মাইনুল। হাসপাতালে নেয়ার পর জেসমিনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে পটিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, ঢাকায় পালানোর চেষ্টার সময় বুধবার মাইনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী সাতকানিয়ার রসুলপুর এলাকার একটি গুদাম থেকে পিস্তল জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন আসামি।
কী কারণে বিরোধ- জানতে চাইলে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সাবেক মেয়র শামসুল ছিলেন জাতীয় পার্টির নেতা। গত ১৩ জুলাই বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মারা যান। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বিপুল সম্পত্তি তিনি রেখে যান।
‘সন্তানদের মধ্যে ছোট ছেলে ও মেয়ে থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। গেল ঈদে তারা দেশে আসেন। সম্পত্তি নিয়ে তিন ভাই-বোনের মধ্যে তখন থেকেই বিরোধ শুরু হয়। মাইনুলের অভিযোগ ছিল যে মা দুই ছেলেকে বঞ্চিত করে সম্পত্তি মেয়েকে দেয়ার চেষ্টা করছিলেন।’
এসব বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে গত ১৬ আগস্ট মাইনুল তার মাকে গুলি করেন।
আরও পড়ুন:শরীয়তপুরের ডামুড্যার একটি স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে, তদন্তে গঠন করা হয়েছে কমিটি।
এ ঘটনায় তোপের মুখে পড়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারও।
অভিযুক্ত রথি কান্ত ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের পাশাপাশি ছাত্রী স্কাউটেরও ইন্সট্রাক্টর।
বিদ্যালয়ের তিন ছাত্রী ও দুজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কিছুদিন আগে এক ছাত্রী স্কাউটে ভর্তি হতে আগ্রহ দেখায়। ছুটির পর তাকে স্কুলের একটি কক্ষে দেখা করতে বলেন শিক্ষক রথি কান্ত। মেয়েটি সেখানে গেলে তাকে যৌন হয়রানি করা হয়। মেয়েটি পালিয়ে বের হয়ে ঘটনা জানায় স্কাউটের বন্ধুদের।
আরেক ছাত্রী নিউজবাংলাকে জানায়, এ ঘটনা নিয়ে স্কাউটে বন্ধুদের সঙ্গে মেয়েটির কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পরে ফেসবুকে। এরপর ডামুড্যা উপজেলা শহরে বিষয়টি জানাজানি হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কাউট টিমের আরেক ছাত্রী বলে, ‘আমাদের অনেককেই এই নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তবে মান-সম্মানের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে চায় না। শিক্ষকদের এমন অনিয়ম প্রশয় দেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক দায়ী। তিনি নিজেও ছাত্রীদের বিভিন্ন সময়ে বাজে কথা লিখে ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ পাঠান।’
আরেক অভিভাবক বলেন, ‘আমার নাম প্রকাশ করতে পারবেন না। যেখানে শিক্ষক ছাত্রীকে হেনস্তা করে সেখানে লেখাপড়ার কি পরিবেশ থাকতে পারে? মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভেবেই বালিকা বিদ্যালয়ে দিয়েছি। এখন তো আতঙ্কে আছি।’
এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের জন্য প্রধান শিক্ষক সুজিতকে কল করা হলে তিনি সাংবাদিকদের গালমন্দ করেন বলে অভিযোগ করেছেন দৈনিক আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শাহাদাত হোসেন।
শাহাদাত জানান, তাকে ও আরেক সাংবাদিক আশিকুর রহমানকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন প্রধান শিক্ষক। সেসব কথোপকথনের অডিও রেকর্ডিংও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
শাহাদাত বলেন, ‘একটি তথ্য জানতে চাওয়া কি অপরাধ? তিনি যেভাবে আমাকে হুমকি ও গালাগালি করেছেন আমি নিজে এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। একজন শিক্ষকের এমন আচরণের নিন্দা জানাই এবং তার শাস্তি দাবি করছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শিক্ষক রথি কান্তকে একাধিকবার কল করা হয়। তবে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
প্রধান শিক্ষক সুজিত বলেন, ‘ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর তার বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণের বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন সুজিত।
এ বিষয়ে ডামুড্যা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন জানান, ঘটনাটি তার নজরে এসেছে। তদন্তের পর অবশ্যই দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:‘আমাদের ফ্যাক্টরিতে লাখখানেক কেজি চা এক সপ্তাহ ধরে পড়ে আছে। শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে এগুলো প্রক্রিয়াজাতকরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পাতাগুলো নষ্ট হচ্ছে। আর দুই-এক দিন এভাবে চললে এই পাতা থেকে আর চা হবে না। হলেও গুণগত মান খুব খারাপ হবে।’
চলমান শ্রমিক ধর্মঘটে চা উৎপাদনের ক্ষয়ক্ষতির বর্ণনা দিতে গিয়ে নিউজবাংলাকে এমনটি বলছিলেন আকিজ গ্রুপের মালিকানাধীন মৌলভীবাজারের বাহাদুরপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল জব্বার।
দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ধর্মঘট পালন করছেন দেশের সব চা বাগানের শ্রমিকরা। এতে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে দেশের উৎপাদনশীল এই খাতে। ভরা মৌসুমে শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে বেশির ভাগ বাগানের ফ্যাক্টরিতেই নষ্ট হচ্ছে তোলা পাতা। আবার বাগানের কচি পাতা বয়স্ক হয়ে পড়ছে। এতে দেশে উৎপাদন হ্রাসেরই শঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০২১ সালে দেশে রেকর্ড ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ২০১৯ সালে। সে বছর ৯ কোটি ৬০ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল। তবে এবার তাতে ধস নামার শঙ্কা বাগান মালিক ও কর্মকর্তাদের। ধর্মঘটের কারণে বাগানগুলোতে প্রতিদিন ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি তাদের।
চা বাগানের শ্রমিকরা বর্তমানে দৈনিক ১২০ টাকা মজুরি পান। মজুরি বাড়িয়ে তা ৩০০ টাকা করার দাবিতে ৮ আগস্ট থেকে আন্দোলনে নামেন তারা। প্রথমে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন। দাবি মেনে না নেয়ায় গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে বন্ধ হয়ে পড়েছে দেশের ১৬৬টি চা বাগানের উৎপাদন ও পাতা উত্তোলন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকরা।
উত্তোলিত চা নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় মঙ্গলবার কারখানা চালু করতে যান মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ধামাই চা বাগানের কর্মকর্তা। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা তা তালা দিয়ে রাখেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের মুক্ত করেন।
এই বাগানের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শেখ কাজল মাহমুদ বলেন, ‘শ্রমিকদের আন্দোলনে আমাদের কোনো বিরোধিতা নেই। কিন্তু ফ্যাক্টরিতে বাগানের অনেক পাতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই পাতা বিক্রি করে তাদের ও আমাদের মজুরি দেয়া হয়। শ্রমিকরা যেহেতু আপাতত কাজ করছে না, তাই আমরা সবাই মিলে ফ্যাক্টরি চালু করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তারা এসে আমাদের তালা মেরে দেয়।’
বৃষ্টির সময়কে চায়ের উৎপাদন মৌসুম ধরা হয়। ফলে এখন চায়ের ভরা মৌসুম। এই সময়ে ধর্মঘটের কারণে সব বাগানের কারখানায় নষ্ট হচ্ছে উত্তোলিত চা। প্রায় এক কোটি কেজি চা সব বাগানের ফ্যাক্টরিতে জমা পড়ে আছে বলে দাবি বাংলাদেশ চা সংসদের।
ধর্মঘটের কারণে ফ্যাক্টরির চা-পাতা নষ্ট হওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার বিভিন্ন বাগানের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
মৌলভীবাজারের ডিনস্টন (খেজুরী ছড়া) চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক খালিদ হাসান রুমী মঙ্গলবার রাতে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি জিডি করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে ৯৯২০০ কেজি চা পাতা প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব হয়নি। এই পরিমাণ পাতা থেকে ২২ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হতো। যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
১ লাখ ৫৩ হাজার কেজি চা পাতা নষ্ট হওয়ার অভিযোগ এনে একই থানায় জিডি করেছেন রাজঘাট চা বাগানের ব্যবস্থাপক মাঈনুল এহছান।
ফিনলে চা কোম্পানির চিফ অপারেটিং অফিসার তাহসিন আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন বাগানে ৩৫ কোটি টাকার চা-পাতা নষ্ট হয়েছে। এগুলো থেকে আর ভালো মানের চা হবে না।’
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েকটি বাগানের পক্ষ থেকে কাঁচা চা-পাতা নষ্টের অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমরা প্রতিটি কারখানা সরেজমিনে পরিদর্শন করে তার সত্যতা নিশ্চিত করব।’
কেবল ফ্যাক্টরির চা-পাতা নয়, বাগানের পাতাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে বাংলাদেশ চা সংসদের সিলেট বিভাগের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চায়ের জন্য মূলত কচি পাতাগুলো তোলা হয়। সব বাগানেই কচি পাতা বয়স্ক হয়ে যাচ্ছে। এগুলো থেকে আর চা হবে না। এ ছাড়া বৃষ্টি শেষ হয়ে গেলে গাছে আর কচি পাতা গজাবে না। ফলে একদিকে যেমন উৎপাদনে ধস নামবে, অন্যদিকে চায়ের গুণগত মানও হ্রাস পাবে।’
শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে সব বাগান মিলিয়ে প্রতিদিন ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
প্রতি দুই বছর পর পর বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদ ও শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে চা শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণ করা হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালে চা শ্রমিকদের মজুরি ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ, দুই বছর পেরিয়ে গেলেও মালিকপক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে সম্মত হচ্ছে না।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে জানিয়ে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল নিউজবাংলাকে বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। মাত্র ১২০ টাকায় এই বাজারে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। আমরা না বাঁচলে বাগান মালিকরা উৎপাদন করবেন কিভাবে। তাই বাগান মালিক ও চা শিল্পের স্বার্থেই শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন। তাদের ন্যূনতম বেঁচে থাকার মতো মজুরি নির্ধারণ করা প্রয়োজন।’
শ্রম দপ্তরের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের উপপরিচালক নাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ভরা মৌসুমে ধর্মঘটের কারণে মালিক-শ্রমিক উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পুরো চাশিল্পই ক্ষতির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে আমরা দুই দফা তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ১৬ আগস্ট শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আমরা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘২৩ আগস্ট মালিক ও শ্রমিক পক্ষের নেতাদের নিয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বসবেন। আশা করি, এতে একটা সমাধান হবে। ধর্মঘট প্রত্যাহার করে ওই বৈঠকে যোগ দেয়ার জন্য আমি শ্রমিক নেতাদের অনুরোধ করছি।’
আরও পড়ুন:নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের সিঁড়ি থেকে কুড়িয়ে পাওয়া নবজাতককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেএমসি ইউনিটে দুই নারী ঢুকে কাউকে কিছু না বলে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত নার্স। তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ ঘটনায় দায় নিতে অস্বীকার করেছেন।
বুধবার বিকেল ৪টার দিকে শিশু ওয়ার্ডের কেএমসি ইউনিট থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়।
এর আগে রোববার রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের চতুর্থ তলার সিঁড়ি থেকে কন্যাশিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রোববার রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের নতুন ভবনের চতুর্থ তলার সিঁড়িতে কাপড়ে মোড়ানো ছিল একটি নবজাতক। তার কান্না শুনে হাসপাতালে আসা মানুষ জড়ো হন। চার-পাঁচ দিনের শিশুটি শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। ওয়ার্ড বয় রাজু হোসেন শিশুটিকে তুলে নিয়ে পঞ্চম তলায় শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক সদর মডেল থানা পুলিশকে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিশুটির নিরাপত্তার জন্য রাতেই এক নারী কনস্টেবলকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতে শিশুটির সঙ্গেই ছিলেন ওই নারী কনস্টেবল।
পুলিশ জানায়, রাতেই অক্সিজেনসহ নানা ওষুধ দিয়ে শিশুটিকে সুস্থ করে তোলা হয়। তাকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের কেএমসি ইউনিটে রাখা হয়েছিল। পরদিন এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হেফাজতে শিশুটিকে রেখে চলে আসেন ওই কনস্টেবল।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত শিশুটিকে হাসপাতালের কেএমসি ইউনিটে দেখা গেলেও দুপুর ১টার পর আর তাকে দেখা যায়নি।
শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত ইন্টার্ন নার্স আকলিমা খাতুন বলেন, ‘বাচ্চার অভিভাবক পরিচয়ে দুজন নারী কেএমসি ইউনিটে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। আমি পাশের কক্ষে রোগী দেখতে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর কেএমসি ইউনিটে ফিরে এসে কক্ষে প্রবেশ করতে চাইলে ওই দুই নারী পরে আসতে বলেন। একটু পর গিয়ে দেখি শিশু এবং ওই দুজন কোথাও নেই।’
শিশু বিভাগের প্রধান ডা. রতন কুমার সিংহ বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে রাউন্ডে বাচ্চাটিকে দেখার পর একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। তারপর বাচ্চাটি কীভাবে নিখোঁজ হলো আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কিছু জানতে হলে তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’
নওগাঁ সদর মডেল থানার (ওসি তদন্ত) রাজিবুল ইসলাম বলেন, একটি শিশু পাওয়া গেছে মর্মে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানায় অবগত করে। সেখানে একজন নারী কনস্টেবল পাঠানো হয়েছিল। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করে। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে অভিভাবক প্রাপ্তিসাপেক্ষে আইনি প্রক্রিয়ায় বাচ্চাটি তারা হস্তান্তর করবে- এমন লিখিত দিলে বাচ্চাটি তাদের হেফাজতে বুঝিয়ে দিয়ে নারী কনস্টেবল চলে আসেন। বাচ্চা হারানোর ঘটনায় পুলিশের কোনো গাফিলতি নেই।’
এ বিষয়ে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, ‘বাচ্চাটিকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে বুঝিয়েও দেয়া হয়। আমরা শুধু নিজেদের হেফাজতে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছিলাম। পরে বাচ্চাটিকে ছাড়পত্র ছাড়াই কে কীভাবে নিয়ে গেছে আমার জানা নেই।’
কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বাচ্চাটি চুরি হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্বে কোনো অবহেলা ছিল না। বাচ্চা হস্তান্তরের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। আমরা শুধু নিজেদের হেফাজতে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছিলাম। শুনেছি বাচ্চাটির মা ও নানি পরিচয়দানকারী দুজন তাকে নিয়ে চলে গেছেন।’
আরও পড়ুন:মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্ত থেকে এক বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
মুজিবনগর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার শহিদুল ইসলাম জানান, মুজিবনগর সীমান্তের ১০৫ নম্বর মেইন পিলার এলাকায় ভারত অংশ থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এক বাংলাদেশেকি ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ সদস্যরা।
তিনি জানান, হৃদয়পুর ক্যাম্পের বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, আটক ব্যক্তির নাম রুবেল। তিনি কুষ্টিয়া জেলার বাসিন্দা। পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাকে ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।
বিজিবির শহিদুল বলেন, ‘রুবেল কীভাবে সীমান্ত এলাকায় গেছেন, তা জানা যায়নি। ধারণা করছি, তিনি মুজিবনগরে বেড়াতে এসে সীমান্ত এলাকায় চলে গেছেন।’
মানিকগঞ্জে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ মামলায় দণ্ডিত গ্রামীণ সংস্থা ও গ্রামীণ শক্তি নামের দুটি এনজিওর চেয়ারম্যান মো. মাসুদ রানা ইন্তা ও তার স্ত্রী লিলি বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৪৩ বছর বয়সী মো.মাসুদ রানা ইন্তার বাড়ি মানিকগঞ্জ সদরের ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম শানবান্দা এলাকায়। তার স্ত্রী লিলি বেগম ৩৫ বছর বয়সী।
বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মীর্জা আব্দুল্লাহেল বাকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ময়মনসিংহ শহরের একটি বিউটি পারলার থেকে বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি কর্মকর্তা জানান, ২০০১ সালে মানিকগঞ্জ সদরের বালিরটেক ফেরিঘাট এলাকায় গ্রামীণ সংস্থা ও গ্রামীণ শক্তি নামের দুটি এনজিও ঋণ প্রদান ও গ্রাহকদের আমানত সংগ্রহ শুরু করে। গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর দুই এনজিওর চেয়ারম্যান মো.মাসুদ রানা ইন্তা ও তার স্ত্রী লিলি বেগমসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন আব্দুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। মামলার পর তারা পালিয়ে যান।
২০১৯ সালে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা মীর্জা আব্দুল্লাহেল বাকী জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আনারুল ইসলাম তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বুধবার ময়মনসিংহ শহর থেকে মাসুদ রানা ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেন।
তিনি আরও জানান, মামলার সাজা এড়াতে ময়মনসিংহ গিয়ে মাসুদ রানা ইন্তা নিজের নাম পরিবর্তন করে সাজেদুল ইসলাম নামে জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার শুরু করেন।
সাত মামলায় ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং ২১ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মানিকগঞ্জ সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. মনির হোসেন, মো. আলী আক্কাছ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো.আনারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য