দেশে লোডশেডিংয়ের সূচি করায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করায় বিএনপি নেতাদের ধুয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি শাসনামলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, বিএনপি নেতারা কোন মুখে এই বিষয়ে কথা বলেন। নেতাদের লাজ-শরম আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিদ্যুৎ বিভাগ সারা দেশে সময়সূচি তৈরি লোডশেডিংয় শুরু করার দিন মঙ্গলবার রাজধানীতে সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপি কোন মুখে বড় কথা বলে? তাদের কি বিন্দুমাত্র লাজ-শরম নেই? যারা দেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছিল, দিনের পর দিন যাদের শাসনামলে দিনের অর্ধেক সময় লোডশেডিং চলত, শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, তারা আজ বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে!’
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি শাসনামলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ছিল নাজুক। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ও তার জোটের বড় পরাজয়ের পেছনে যেসব কারণ কাজ করেছে, তার মধ্যে অন্যতম ছিল বিদ্যুৎ খাত নিয়ে ব্যর্থতা।
এই পাঁচ বছরে বিএনপি সরকার একটিও নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে পারেনি, উল্টো এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন কার্যাদেশ বাতিল করেছে। বিদ্যুতের দাবিতে এখানে সেখানে বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছে সেই সরকার। এমনকি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিও হয়েছে।
বিএনপি নেতাদের সেই দিনগুলো স্মরণ করিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘জনগণ বিদ্যুৎ সংযোগহীন খাম্বা দুর্নীতির কথা এখনও ভুলে যায়নি। ভুলে যায়নি বিদ্যুতের দাবিতে মিছিলে গুলির কথা, হারিকেন-কুপি নিয়ে বিক্ষোভ এবং বিদ্যুৎ ভবন ঘেরাও করার কথা।
‘বিএনপি আমলে জনগণ বিদ্যুৎ পায়নি, পেয়েছিল খাম্বা।’
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর বিদ্যুৎ খাতকে অগ্রাধিকার নিয়ে কাজ করেছে। এই সময়ে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নানা প্রকল্পের সুফলও পেয়েছে দেশ। এক যুগে বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা ছয় গুণের বেশি বেড়েছে, উৎপাদনও বেড়েছে চার গুণের বেশি। বিদ্যুতের আরও কয়েকটি বড় প্রকল্প উৎপাদনে আসার অপেক্ষায়।
বিদ্যুৎ খাত নিয়ে বরাবর গর্ব করে থাকেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তবে গত এক বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির পর দেশে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে তরল গ্যাস বা এলএনজি আপাতত আমদানি করা হবে না। গ্যাসের ঘাটতিজনিত উৎপাদনের যে সংকট সেটি সমাধান করা হবে লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে। দেশে এখন দুই হাজার মেগাওয়াট ঘাটতি আছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ গত কয়েক বছরে লোডশেডিং শব্দটা ব্যবহার করত না। তারাই এখন লোডশেডিংয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এলাকাভিত্তিক সূচিও ঠিক করা হয়েছে। দিনে এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
লোডশেডিংয়ের কারণে বিএনপির সরকার পতনের ‘রঙিন খোয়াব’ অচিরেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে বলেও মন্তব্য করেন কাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রেখে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারের নির্দেশনাগুলো মেনে চলার জন্যও জনগণের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সারা বিশ্বেই এখন নাজুক উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি মার্কেট চরম অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি যাতে বড় কোনো ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সে লক্ষ্যে সরকারকে আগেভাগেই কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
জাপানের মতো উন্নত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশও তাদের সাড়ে তিন কোটির বেশি মানুষকে নিয়মিত বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে পারছে না বলেও উল্লেখ করেন কাদের। বলেন, ‘একই অবস্থা অস্ট্রেলিয়ারও। তাই সবাইকে এই সংকটকালীন সময়ে রেশনিং করতে হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে, উন্নত রাষ্ট্র আমেরিকাতেও এসএমএসের মাধ্যমে জনগণকে এনার্জির ব্যবহার লিমিট করতে বলা হয়েছে।’
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সাময়িক জানিয়ে জনগণকে ধৈর্য ধরার এবং সহযোগিতা করার আহ্বানও জানান ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দেন। তার ওপর অতীতে যেমন আস্থা রেখেছেন, এখনও রাখুন।’
আরও পড়ুন:রাজনীতি কিংবা ভোটের মাঠে নবগঠিত রাজনৈতিক জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’-এর কোনো গুরুত্ব নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততাহীন ও রাজনীতিতে পরিত্যাজ্যরা মিলে এই জোট গঠন করেছে।
রাজধানীর মিণ্টো রোডের সরকারি বাসভবনে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি মূলত সাত দলের জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ গঠন নিয়ে জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের ঘোষণার জবাব দেন।
সোমবার জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন- এই সাত দলের সমন্বয়ে এই জোটের ঘোষণা দেয়া হয়।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চ নামে ৭ দলীয় একটি জোট গঠিত হয়েছে দেখলাম। যারা এই জোট গঠন করেছে তারা সবাই রাজনীতিতে পরিত্যক্ত ব্যক্তিবিশেষ এবং রাজনীতিতে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন। এরা প্রত্যেকেই নানা দল করে, নানা ঘাটের পানি খেয়ে আজকের এ অবস্থায় এসেছেন। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এখন তারা একটি জোট গঠন করে নিজেদের গুরুত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন মাত্র।
হাছান মাহমুদ এর আগে সকালে মহাখালীতে পদ্মা সেতু নিয়ে ছেলেধরা গুজবের জের ধরে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার তাসলিমা বেগম রেনুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদেরকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহায়তা দেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘২০১৯ সালে যখন পদ্মা সেতুর কাজ পুরোদমে শুরু হয় তখন বিএনপি-জামায়াত সারাদেশে গুজব ছড়িয়ে দেয় যে পদ্মা সেতুতে মানুষের রক্ত লাগবে, নরবলি দিতে হবে।
‘তসলিমা বেগম রেনু সে সময় বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করাতে গিয়ে গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে নির্মম হত্যার শিকার হন। শুধু তসলিমা বেগমই নন, বিএনপি-জামায়াতের ওই গুজবের কারণে আরো অনেককে অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, মহাখালী থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে ঢাকাস্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রতিনিধিদল।
দলের চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের পলিটিক্যাল চিফ স্কট ব্রান্ডন এবং পলিটিক্যাল, ইকোনমিক ও কালচারাল কাউন্সিলর আর্টুরো হাইন্স জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে গেলে জি এম কাদের তাদের স্বাগত জানান।
এ সময় তারা বন্ধুপ্রতিম যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।
সভায় আশা প্রকাশ করা হয়, আগামী দিনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে।
এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিশেষ দূত ও উপদেষ্টা মাসরুর মওলা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা এত সহজ নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
ভোলা জেলা পরিষদ মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তোফায়েল বলেন, ‘বিএনপি কথায় কথায় বলে আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নেই। অথচ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবৃতি দিয়েই তার দলকে টিকিয়ে রেখেছেন।
‘প্রেস রিলিজ আর সংবাদ সম্মেলন ছাড়া তাদের আর কোনো কাজ নেই। মির্জা ফখরুল বলেছেন আওয়ামী লীগ যেকোনো সময় বিদায় নেবে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা এত সহজ নয়। বিএনপি ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন করেছিল, আন্দোলনের মুখে ৩১ মার্চ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। আওয়ামী লীগ সেই দল।’
প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকলেও বিএনপির ওপর কোনো অত্যাচার-নির্যাতন করেনি। অথচ বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগের কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারেননি। এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন।
‘বিএনপি যখনই সুযোগ পায় তখনই মানুষের ওপর অত্যাচার করে। ভোলায় সমাবেশে পুলিশের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছে বিএনপি, ১৪ বছরে এমন ঘটনা ঘটেনি। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিটি অঙ্গসংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকলে আওয়ামী লীগকে কেউ কিছুই করতে পারবে না। বিএনপি অত্যাচার শুরু করলে পাল্টা জবাব দিতে হবে।’
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি দোস্ত মাহামুদ।
বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আজিজুল ইসলাম, ভোলা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজিবুল্লাহ নাজু, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলী নেওয়াজ পলাশ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান।
আরও পড়ুন:সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনে নামলেও আগেরবারের মতো হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি না দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
নজরুল এও মনে করেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকার ব্যর্থ। আর এ কারণে জনগণ ক্ষুব্ধ হচ্ছে। সংগঠিত হচ্ছে। এ কারণে যে কর্মসূচিই বিএনপি দেবে, তাতেই জনগণ সম্পৃক্ত হবে।
আশুরা উপলক্ষে মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে মিলাদ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
নজরুল বলেন, 'আমরা হরতাল করি না বা করতে পারি না- তা না। কিন্তু যখন-তখন করব কেন? আমরা অবরোধ এর আগে করতে পারি নাই তা না। কিন্তু যখন-তখন করব কেন? যখন করার সিদ্ধান্ত হবে তখন করব।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের সংঘবদ্ধ সংগ্রাম প্রতিরোধ মানেই আন্দোলন। সেটা হরতালের মাধ্যমে হতে পারে। আরও বিভিন্ন মাধ্যমে হতে পারে।’
২০১৩ সালের শেষে এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচনের আগে এবং ২০১৫ সালে ওই সরকারের এক বছর পূর্তির দিন থেকে বিএনপির আন্দোলনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ দেয়া হয়। পরে সেটি অকার্যকর হয়ে পড়লে হরতাল ও অবরোধ একসঙ্গে ঘোষণা করা হয়।
২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর সরকার গঠন হলে বিএনপি তার আন্দোলন স্থগিত করলেও ২০১৫ সালের আন্দোলনের বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি।
সে সময়ের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ আর হরতাল প্রত্যাহার বা স্থগিত কিছুই করা হয়নি। সেই কর্মসূচি এখনও আছে কি না-এই প্রশ্নও এখন আর কেউ বিএনপিকে করে না। এর মধ্যে বিএনপি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আবার আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বলছে, দাবি পূরণ না হলে নির্বাচনে তারা যাবে না, আর ভোট করতেও দেয়া হবে না।
নজরুল ইসলাম খান মনে করেন, বিএনপি এবার যে কর্মসূচি দেবে, তা খুবই সফল হবে। তিনি বলেন, ‘সরকারের যে অযোগ্যতা রাষ্ট্র পরিচালনায়, যে ব্যর্থতা- এর বিরুদ্ধে জনগণের মত সংগঠিত হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংগঠিত হচ্ছে। তাতে আগামী দিনে যখনই কর্মসূচি দেব, জনগণ সম্পৃক্ত হবে।’
আন্দোলন নিয়ে বিএনপিতে কোনো মতভেদ আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের অনেক মন্ত্রীরা আছেন তারা বলেন আমরা নাকি আন্দোলন করতে পারি না। তারা আন্দোলন বলতে যা বুঝে এটা যদি সবাই বুঝতে চান তাহলে বিপদ হবে।'
‘এটা যদি সভ্য দেশ হতো, তাহলে অন্যান্য সভ্য দেশের মতো বেশ কিছু লোক যদি একত্রে দাবি জানাত, তাহলে সেই দাবির বিবেচনা করে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিত।’
গত নির্বাচনে বিএনপির জোটের দুই শরিক এবং আরও পাঁচটি ছোট দল ও সংগঠন নিয়ে নবগঠিত ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ সম্পর্কে অবস্থান জানতে চাইলে নজরুল বলেন, ‘এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ, আমরা যে জাতীয় ঐক্যের কথা বলছি, জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কথা বলছি, সে ক্ষেত্রে একটা অগ্রগতি বলেই আমরা মনে করি।
‘তারা যেসব দাবি উল্লেখ করেছে সেই দাবিগুলো দীর্ঘদিন ধরে আমরা করে আসছি। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনরায় গঠন করতে হবে। এসব কথা তাদের দাবিতে আছে আমরা দেখলাম।
‘দীর্ঘদিন যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কথা বলে আসছি তার একটা সাফল্য। এই জোট গঠনের ফলে আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের এক ধাপ অগ্রগতি।’
বিএনপি সরকারবিরোধী ‘বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম’ গঠনের যে উদ্যোগ নিয়েছে তার অগ্রগতি কত দূর- জানতে চাইলে নজরুল বলেন, ‘এই ব্যাপারগুলো আলোচনার মাধ্যমে হয়। আগে থেকে বোঝা গেলে ব্যর্থ করে দেয়ার লোক আছে। কিছু মন্ত্রীর কথায় বিভ্রান্ত হয়েন না। বড়ই বিপদে আছে তারা।’
বিএনপি এককভাবে ক্ষমতায় আসতে চায় না জানিয়ে তিনি বলেন, 'দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন, সরকার পতনের লড়াইয়ে যারা যুক্ত থাকবেন, তাদের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে দেশ পরিচালনার কাজ করব।’
আরও পড়ুন:
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি বাস ভাড়া আদায় নিয়ে কঠোর কোনো বার্তা না দিয়ে পরিবহন মালিক সমিতির সহযোগিতা চাইলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, সহযোগিতা না পেলে তারা আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
আগে থেকেই বর্তমান হারের চেয়ে বেশি আদায় করা নগর পরিবহনে এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্ধারিত হারের চেয়ে দ্বিগুণ বা তার চেয়ে বেশি আদায়ের মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর কার্যকর কোনো উদ্যোগ না থাকার মধ্যে এই কথা বললেন মন্ত্রী।
মঙ্গলবার রাজধানীতে সরকারি বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়ানোর পর রাজধানীতে কিলোমিটারপ্রতি ২ টাকা ৫০ পয়সা হারে ভাড়া নির্ধারণ করে বিআরটিএ জানিয়েছে, সর্বনিম্ন ভাড়া থাকছে আগের মতো ১০ টাকা।
তবে রাজধানীতে গত কয়েক বছর ধরে ওয়েবিল নামে একটি কৌশলে অতিরিক্ত যে ভাড়া আদায় চলছে, একই পদ্ধতিতে এবার কিলোমিটারপ্রতি কোথাও সাড়ে তিন টাকা, কোথাও চার টাকা, এমনকি ৬ টাকা হারে আদায়ের প্রমাণ মিলছে।
বাড়তি ভাড়া আদায়ে স্বল্পসংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নামিয়ে জরিমানা করে এর আগে কখনও সফল না হওয়া বিআরটিএ এবারও একই পদ্ধতিতে মাঠে নেমেছে। তবে তাতে সুফল মিলছে না। ওয়েবিল বন্ধ হয়নি। আর সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা না রেখে ১৫ টাকা বা তার চেয়ে বেশি আদায় চলছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাস ভাড়ার পরিস্থিতি জানতে রোববার মিরপুর থেকে কাকলী যান।
মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের পূরবী সিনেমা হলের সামনে থেকে বাসে ওঠেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা। তিনি কালসী হয়ে বনানী ফ্লাইওভার পার হয়ে নৌবাহিনীর সদরদপ্তর পার হয়ে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়িতে নামেন।
এই পথের দূরত্ব ৮ দশমিক ২ কিলোমিটার। কিলোমিটার আড়াই টাকা হারে ভাড়া হারে ভাড়া আসে ২০ টাকা ৫০ পয়সা। কিন্তু জাফরউল্লাহর কাছ থেকে আদায় করা হয় ৩০ টাকা। বলা হয়, ৩০ টাকা না দিলে যেন তিনি নেমে যান।
অর্থাৎ সরকার নির্ধারিত হারের চেয় দেড়গুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে এই রুটে। এটি সব রুটের চিত্র। মোহাম্মদপুর থেকে বনশ্রী হয়ে চলাচলকারী স্বাধীন পরিবহনে কোনো কোনো গন্তব্যে ৬ টাকা কিলোমিটার, উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত চলা রাইদা পরিবহনে কোনো কোনো গন্তব্যে ৪ টাকা কিলোমিটার হারে ভাড়া আদায়ের প্রমাণ পেয়েছে নিউজবাংলা।
গত নভেম্বরে বাস ভাড়া বাড়ানোর পর একই ধরনের অনিয়মের সময় বিআরটিএ কর্মকর্তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেও টানা তিন দিন চেষ্টা করেও এবার সংস্থাটির বক্তব্যই পাওয়া যাচ্ছে না।
সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এখনও বাসমালিকদের সুমতির দিকে তাকিয়ে। তিনি বলেন, ‘পরিবহন মালিক-শ্রমিকগণ সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন। তারাসহ বৈঠক করে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা বাস্তবে প্রয়োগ করবেন।
‘যারা সমন্বয়কৃত ভাড়ার বেশি আদায়ের চেষ্টা করছেন- আমাদের মনিটরিংয়ের আওতায় তারা রয়েছেন। তাই আবারও তাদের সহযোগিতা চাচ্ছি। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।’
বাসে ধর্ষণ ও ডাকাতির মতো ঘটনা যারা ঘটায় তাদের ‘গণশত্রু’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করছে। এদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।’
‘সংকট কেবল বাংলাদেশে নয়’
গোটা বিশ্বেই এখন অর্থনৈতিক সংকট ঘনীভূত হচ্ছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির সরবরাহে অস্থিতিশীলতা ও মূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ সংকট কোনো দেশের নয়, এ সংকট সারা বিশ্বের।
‘বাস্তবতা অনুধান না করে বিএনপি ও তার দোসররা শুধু বাংলাদেশ সরকারকে দায়ী করছেন।’
দুর্নীতি আর লুটপাটের অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ নিয়েও কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। বলেন, ‘অন্ধকারে ঢিল না ছুড়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ দিয়ে বলুন, কোথায় কারা, কে দুর্নীতি করছে। দুর্নীতির প্রশ্নে শেখ হাসিনা সরকারের শূন্য সহিষ্ণুতা নীতির কোনো নড়চড় হয়নি।’
‘নির্বাচন হতে না দেয়ার আস্ফালন করে লাভ নেই’
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার না থাকলে ভোটে না যাওয়া এবং ভোট হতে না দেয়ার বিষয়ে বিএনপি এবং সমমনা দলগুলোর বক্তব্য নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
‘নির্বাচনে আসা না আসা যেকোনো দলের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ব্যাপার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু নির্বাচন হতে না দেয়ার আস্ফালন করে লাভ নেই।’
যতই বাধা আসুক, সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে বলেও ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ নেতা।
সরকার আন্দোলনে ভীত- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য ‘কমেডি ক্লাবের জন্য জুতসই হতে পারে’ উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘দেশের বাস্তবতার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই।’
তিনি বলেন, ‘একবার শুনি রাজপথ দখলে নেবে, আবার শুনি সরকারকে টেনে নামাবে, কখনও শুনি নির্বাচন হতে দেবে না। আসলে বিএনপির সক্ষমতা কতটুকু তা আমাদের জানা আছে।
‘বিএনপি নেতাদের প্রতিদিন অভিন্ন বক্তব্য, হুমকি-ধমকি শুনতে শুনতে জনগণ এখন হাসে।’
আরও পড়ুন:জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের মনে করেন দেশে যখন তেলের দাম কম ছিল, তখন হাজার হাজার কোটি টাকা লাভ হয়েছে। আর সেই সব টাকা লুটপাট হয়েছে। এখন আবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বল ও দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সোমবার রাজধানীর কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে জাতীয় পার্টি। সেখানেই পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘সরকারের নির্দয় সিদ্ধান্তে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকলে সরকার এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
‘যখন তেলের দাম কম ছিল, তখন হাজার হাজার কোটি টাকা লাভ হয়েছে। সেই টাকা গেল কোথায়? নিশ্চয় তা লুটপাট হয়েছে। করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এখন মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। তখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বল ও দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে।’
সরকারের সমালোচনায় তিনি বলেন, ‘তেলের দাম বাড়লেই গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন সরকার পরিবহন মালিকদের হাত-পা ধরে ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজি না হলে যাত্রীকে পথে নামিয়ে দেয়া হয়। জনগণের এই দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই।
‘বিদ্যুৎ খাতে রেন্টাল, কুইক রেন্টাল আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে উৎপাদন ছাড়াই হাজার কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে। আমরা জ্বালানি খাতের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলছি।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে জি এম কাদের বলেন, ‘আগে আমি যখন বলেছি, দেশ শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে। তখন বলা হলো আমি নাকি মূর্খ। তাহলে দেশের এই অবস্থা কেন? শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের অনেক মিল আছে। সেখানে স্বৈরশাসন চলেছে, জনগণের কাছে শাসকদের জবাবদিহি নেই। আর সেখানে মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট ও দুর্নীতি চলেছে।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমরা সরকারের সঙ্গে নির্বাচনি জোট করেছিলাম। তারা এত লুটপাট-দুর্নীতি করবে, এটা ভাবতেও পারিনি। প্রধানমন্ত্রী গণভবনের গণ্ডির মধ্যে থেকে সঠিক অবস্থা জানতে পারছেন না। তার দলের লোকজন কীভাবে লুটপাট করছে, তা জানতে পারছেন না।’
সমাবেশে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামসহ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয় পার্টি দুই দিনের কর্মসূচি দিয়েছে। সোমবার সমাবেশের পাশাপাশি তারা পল্টন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে। ১০ আগস্ট তারা দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশের পরিস্থিতি দেখে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিশ্বাস জমেছে, সরকারের দিন ফুরিয়ে এসেছে। তারা বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও ভোলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী নিহতের প্রতিবাদে সোমবার রাজধানীতে যুবদলের বিক্ষোভে তিনি এ কথা বলেন।
বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অবশ্য সংশয় প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি যেভাবে কর্মসূচি দিচ্ছে, তাতে সরকারের পতন হবে না।
তবে ফখরুল বলেন, ‘এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে সরকারের দিন ফুরিয়ে এসেছে। তাদের পক্ষে আর সম্ভব হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির কারণেই আজকে জ্বালানি তেলের সংকটসহ দেশে নানা সংকট শুরু হয়েছে। কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে।’
সমাবেশ থেকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন বিএনপি নেতা। জানান, আগামী বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে ও পরদিন দেশের সব জেলা ও মহানগরে সমাবেশ হবে।
ফখরুল বলেন, ‘এরপর আরও বৃহত্তর কর্মসূচি নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাব। এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারের পতন ত্বরান্বিত করব।‘
অবশ্য বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ফখরুলকে উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের মনে হয় সীমানা নির্ধারণ হয়ে গেছে। সীমানা হয় প্রেস ক্লাব, না হয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে। আমরা যদি এই সীমানার বাইরে না যেতে পারি, তাহলে এই সরকারের পতন হবে না।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘শুধু বক্তব্য দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামানো যাবে না। আমরা সবাই বক্তৃতা করেও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামানো যাবে না। শেখ হাসিনাকে নামাতে রাজপথে আমাদের যেমন কুকুর, তেমন মুগুর কর্মসূচি দিতে হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘গতকাল ঢাকার শাহবাগে বামপন্থি ছাত্রদের ছোট একটি মিছিল হয়েছে। সেখানে পুলিশ নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। সারা দেশে এই অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে এ সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে চায়।
‘তারা শুধু আমাদের নুরে আলম-আব্দুর রহিমকে হত্যা করেনি, গত ১৫ বছরে তারা আমাদের ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম ও খুন হত্যা করেছে। ৩৫ লাখের বেশি নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে সরকার হয়রানি করেছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য