ময়মনসিংহের ত্রিশালে যে ট্রাকচাপায় শিশুসন্তানসহ এক দম্পতি নিহত হয়েছিলেন, মৃত্যুর আগ মুহূর্তে মায়ের পেট ফেটে বেরিয়ে এসেছিল এক শিশু; সেই ট্রাকের চালক রাজু আহমেদ শিপনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
ঢাকার সাভার এলাকা থেকে সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১৪ ময়মনসিংহ সদর দপ্তরের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর আখের মুহম্মদ জয়।
তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি এখন দেশজুড়ে আলোচনায়। ঘটনার পর থেকেই র্যাবের গোয়েন্দা শাখা নজরদারি বাড়ায়। এর ধারাবাহিকতায় রাতে ঢাকার সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ট্রাকচালক শিপনকে গ্রেপ্তার করে র্যাবের একটি অভিযাত্রিক দল।
‘মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।’
এর আগে শনিবার বিকেলে তিনজনকে চাপা দেয়ার ঘটনায় পুলিশ ট্রাকটিকে জব্দ করতে পারলেও তাৎক্ষণিক পালিয়ে যান চালক। নিহত জাহাঙ্গীর আলমের বাবা অজ্ঞাত আসামি করে মামলার পর পুলিশ চালককে খুঁজলেও তার পরিচয় মিলছিল না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সেকান্দার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিশুসহ তার বাবা-মা নিহতের পর থেকেই চালককে শনাক্তের চেষ্টা করা হয়। মামলার পর থেকে চালককে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে পুলিশ মাঠে কাজ করে। তবে রাতেই র্যাব চালককে গ্রেপ্তার করে। যদিও তার সম্পূর্ণ পরিচয় এখনও জানতে পারিনি।’
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই ট্রাকচালকের নাম শিপন। ৪৩ বছর বয়সী শিপন রাজশাহীর বাঘা থানার বাসিন্দা।
চালকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনার পরপরই শিপন তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেন। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে গা ঢাকা দেন তিনি। তাই তার সঙ্গে আর কারও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
সোমবার রাতে ট্রাকমালিক মঞ্জুর রহমানের সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার। তার বাড়িও বাঘা থানায়।
তিনি বলেন, ‘ট্রাকে চালক ও হেলপার দুজনই ছিল৷ রাজশাহী থেকে মাল বোঝাই করে ঢাকা হয়ে ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিল ট্রাকটি। শনিবার ত্রিশালে শিশুসহ তিনজন নিহত হওয়ার পর সন্ধ্যার দিকে নিশ্চিত হয়েছি ট্রাকটি আমার।
‘এরপর চালকের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর থেকে প্রতিদিন কল করা হলেও নম্বর বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করতে পারিনি।’
মঞ্জুর রহমান বলেন, ‘চালককে সংশ্লিষ্ট থানায় আত্মসমর্পণ করাতে তার পরিবারের সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু চালক কোথায় আছে নিশ্চিতভাবে কেউ বলতে পারেনি। তারা জানান, আইনগতভাবে চালকের কঠিন শাস্তি হবে- এমন ধারণা থেকেই তিনি পালান।
চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গাড়ির আপডেট কাগজপত্র ছিল কি না জানতে চাইলে মঞ্জুর রহমান বলেন, ‘অন্তত ১০ বছর আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স করেন ওই চালক। তিনি গাড়ি চালানোতে দক্ষ। হেলপারও সম্প্রতি টাকা দিয়ে সহযোগী চালকের কার্ড সংগ্রহ করেন। ত্রিশালে এ ঘটনার আগে চালক কখনও কাউকে চাপা দেননি।’
মঞ্জুর রহমানের রয়েছে চারটি ট্রাক। এর মধ্যে তিনটি কিনেছেন কিস্তিতে। তিনজনকে চাপা দেয়া ট্রাকটি কিস্তিতে দুই বছর আগে কিনেছিলেন। সম্প্রতি কিস্তি সম্পূর্ণ পরিশোধ হলেও হঠাৎ এমন দুর্ঘটনায় পড়ল। এখন মামলা কতদূর গড়াবে এবং এটি কিভাবে সমাধান হবে, সেটাই ভাবছেন তিনি।
বেঁচে থাকা নবজাতক ও অন্য দুই ভাই-বোনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নিহতদের জীবন তো আর ফিরিয়ে দিতে পারব না। তাই আপস-মীমাংসা হওয়াই ভালো। কারণ বেঁচে থাকা নবজাতকসহ তার ভাই-বোনের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী আমি অর্থ দিলে তা দিয়ে তারা অনেকটাই ভালো থাকতে পারবে। তবে টাকার পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হলে দিতে পারব না।
‘পরিবারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা হলেই সবচেয়ে ভালো হবে। আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে অবশ্যই নবজাতকের বাড়িতে যাব তাদের দেখতে।’
নিহত জাহাঙ্গীর আলমের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে মামলা করেছি। গ্রেপ্তার চালকের কঠিন শাস্তি হবে- এমনই আশা করি।’
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় গত শনিবার ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান উপজেলার রায়মনি এলাকার ৪২ বছরের জাহাঙ্গীর আলম, তার ৩২ বছর বয়সী স্ত্রী রত্না বেগম ও তাদের ৬ বছর বয়সী মেয়ে সানজিদা আক্তার।
ত্রিশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল আমিন স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতগতির ট্রাকটি ময়মনসিংহের দিকে আসছিল। বেলা সোয়া ৩টার দিকে ত্রিশালের কোর্ট বিল্ডিং এলাকা পর্যন্ত আসতেই সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওই দম্পতিসহ তাদের কন্যাশিশুকে চাপা দেয় ট্রাকটি।
এতে ঘটনাস্থলেই স্বামী নিহত হন। আর মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেট চিড়ে বেরিয়ে আসে তার গর্ভে থাকা কন্যাশিশু।
এ সময় স্থানীয়রা নিহত দম্পতির আহত সন্তান সানজিদা ও সদ্যোজাত কন্যাকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে পৌঁছার আগেই সানজিদারও মৃত্যু হয়। সদ্যোজাত শিশুটির ডান হাতের দুটি হাড় ভেঙে গেলেও সে বেঁচে আছে। ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া এলাকার লাবীব নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শিশুটি চিকিৎসাধীন।
এদিকে সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হকের নির্দেশে ত্রিশাল উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সোনালী ব্যাংকের ত্রিশাল শাখায় নবজাতক কন্যাসহ তার দুই ভাই-বোন ৮ বছরের এবাদত ও ১০ বছরের জান্নাতকে সহায়তার জন্য একটি যৌথ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে।
এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসন শিশুদের দেখভাল করার জন্য উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের সহায়তায় তাদের দাদি সুফিয়া আক্তারের জন্য একটি প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করা হয়। একই সঙ্গে শিশুদের জন্য ভিজিডি কার্ডের ব্যবস্থা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:সাংবাদিক সোহানা পারভীন তুলির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের এক মাসেও তদন্তে তেমন অগ্রগতি হয়নি। মৃত্যুর আগের দিন তুলি তার বন্ধু রফিকুল ইসলাম রঞ্জুর ফোনে একটি মেসেজ পাঠান। সেখানে আত্মহত্যার হুমকির কথা থাকলেও রঞ্জুকে একবারের পর আর জিজ্ঞাসাবাদ করেনি পুলিশ।
সাংবাদিক রঞ্জুর বিরুদ্ধে তুলিকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগ তুলছেন তার পরিবার ও সাবেক সহকর্মীরা। এ ঘটনায় হাজারীবাগ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, রঞ্জুর সঙ্গে তুলির কী সম্পর্ক ছিল, মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সময়ে তাদের কী কথোপকথন হয়েছে তা জানতে তুলির মোবাইল ফোন সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এ কাজ শেষ করতে সময় লাগবে।
রাজধানীর রায়েরবাজারের মিতালী রোডের বাসা থেকে গত ১৩ জুলাই দুপুরে সোহানা পারভীন তুলির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হাজারীবাগ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন তুলির ভাই মোহাইমেনুল ইসলাম।
হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এখনও ময়নাতদন্ত ও মোবাইল ফোনের ফরেনসিক রিপোর্ট পাইনি। রিপোর্ট পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া যাবে।’
রিপোর্ট পেতে কত সময় লাগতে পারে সে বিষয়ে নিশ্চিত নন পুলিশের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়োরটি দিয়ে রিপোর্টগুলো আনার চেষ্টা করছি। তবে সিআইডিতে সারা দেশের বিষয়গুলো আসে। এ কারণে রিপোর্ট পেতে সময় লাগে। মেডিক্যাল রিপোর্ট পেতেও সময় লাগবে।’
ঘটনার পর তুলির বাসার দারোয়ান একটি মোটরসাইকেলের নম্বর পুলিশকে দেন। তার সূত্র ধরেই পুলিশ রফিকুল ইসলাম রঞ্জুকে শনাক্ত করে। তুলির সঙ্গে সম্পর্ক ও নিয়মিত যোগাযোগ থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন রঞ্জু। তবে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ তিনি স্বীকার করেননি।
আরও পড়ুন: প্রাণোচ্ছল, পরোপকারী তুলির মনে কী দুঃখ ছিল
হাজারীবাগ থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রঞ্জুকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। দীর্ঘ সময়ের জন্য ঢাকার বাইরে কোথাও গেলে আমাদের অবহিত করতে বলেছি। তদন্তের প্রয়োজনে আবার ডাকলে তাকে আসতে হবে।’
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট ডিএমপি রমনা বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, তুলির সঙ্গে সাংবাদিক রঞ্জুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মোবাইল ফোনে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হতো এবং তুলির বাসায়ও রঞ্জু প্রায়ই যাতায়াত করতেন। ঘটনার আগের দিন বিকেল ৩টা ৯ মিনিটে রঞ্জুকে তুলি মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। এক লাইনের মেসেজে লেখা ছিল, ‘আজকে তুই মরার খবর পাবি’।
তিনি বলেন, ‘রঞ্জুকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তুলির পাঠানো মেসেজটি তিনি না দেখেই ডিলিট করে দেন বলে দাবি করেছেন।’
তুলির ভাই মোহাইমেনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, আপুকে আত্মহত্যার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা তথ্য-প্রমাণের জন্য অপেক্ষা করছি। আপুর ফোন সিআইডির কাছে আছে। তাদের রিপোর্ট পেলে অনেক কিছুই বেরিয়ে আসবে। আমরা চাই, পুলিশ তদন্ত করে সত্য বের করে আনুক। আমরা ঘটনার বিচার চাই।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুলির সাবেক এক সহকর্মী বলেন, ‘রঞ্জু মোবাইলে মেসেজ পেয়ে তুলিকে ফেরানোর চেষ্টা করলে আজ হয়তো সে বেঁচে থাকত। নিশ্চয়ই ওদের মধ্যে এমন কিছু হয়েছে, যাতে তুলি এমন কথা লিখে মেসেজ করেছে। তাদের মধ্যে কী হয়েছিল, কেন তুলি আত্মহত্যার পথ বেছে নিল, তা তদন্তে বেরিয়ে আসা উচিত।‘
তুলির ফোনে পাঠানো মেসেজ ও সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে রফিক রঞ্জু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না কী কারণে সে এ ধরনের মেসেজ দিয়ে থাকতে পারে। একটা ভালো সম্পর্ক ছিল, কোনো ধরনের ঝগড়া বা এ ধরনের কোনো কিছু আমার সঙ্গে ওর হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘মেসেজটি আমি দেখিনি। এরপর আর কোনো কথাও হয়নি। পরদিনই তো খবরটা পাইছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সোহানা তুলি এক দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতায় জড়িত ছিলেন। সবশেষ ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত তিনি অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনে কর্মরত ছিলেন। এরপর কয়েক মাস সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যাকশন বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছিলেন।
বাংলা ট্রিবিউনের আগে তিনি কাজ করেছেন দৈনিক কালের কণ্ঠ ও দৈনিক আমাদের সময়ে।
সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রঞ্জু সবশেষ কর্মরত ছিলেন দৈনিক সমকালে। তুলির ঘটনার পর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।
আরও পড়ুন:বরিশালের সন্ধ্যা নদীতে বাল্কহেড ডুবির চার দিন পর নিখোঁজ সুকানির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল শুক্রবার বিকেলে ডুবে যাওয়া বাল্কহেডের ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে। এর আগে মঙ্গলবার সকালে নদীর খেজুরবাড়ি পয়েন্ট থেকে নিখোঁজ কালামের মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।
বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকসুদ আলম চৌধুরী নিউজবাংলাকে মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত সুকানি মিলন হাওলাদার পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার সুটিয়াকাঠি ইউনিয়নের নান্দুহার গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে।
ওসি বলেন, ‘শুক্রবার সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল মিলনের খোঁজে ডুবে যাওয়া বাল্কহেডে তল্লাশি চালায়। বিকেল ৪টার দিকে বাল্কহেডের ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে।’
ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সোমবার রাত ৯টার দিকে উজিরপুরের মীরের হাটসংলগ্ন সন্ধ্যা নদীতে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ‘এমভি মর্নিং সান-৯’ লঞ্চে ধাক্কা দিয়ে ডুবে যায় বালুবাহী বাল্কহেডটি। এতে নিখোঁজ হন শ্রমিক কালাম ও সুকানি মিলন।
বাল্কহেডের ধাক্কায় ফেটে যায় লঞ্চের তলাও। পরে লঞ্চটিকে উজিরপুরের বড়াকোঠা ইউনিয়নের চৌধুরীর হাট ঘাটে নোঙর করা হয়।
ঘটনার পর লঞ্চের যাত্রী জিয়াউর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা লঞ্চের ছাদে ছিলাম। লঞ্চটিও দ্রুতগতিতে চলছিল। এর মধ্যে দেখতে পাই আড়াআড়িভাবে আসা বালুবাহী একটা বাল্কহেড থেকে সেটার মাস্টার লাইট মেরে সিগন্যাল দিচ্ছিলেন।
এ সময় লঞ্চ ও বাল্কহেডটি প্রায় একই গতিতে চলছিল জানিয়ে এই যাত্রী বলেন, ‘একপর্যায়ে বাল্কহেডটি লঞ্চের মাঝখানে ধাক্কা দেয়। এতে বাল্কহেডটি ডুবে যায়।’
পরদিন মঙ্গলবার সকালে বানারীপাড়া উপজেলাধীন সন্ধ্যা নদীর খেজুরবাড়ি পয়েন্ট থেকে ৫৫ বছরের কালাম সাইজুদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন:ফেনীতে বিক্ষোভ মিছিলে বিএনপি-ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের নামে মামলা করেছে পুলিশ। ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সিরাজ মিয়া শুক্রবার রাতে বিস্ফোরক আইনে মামলাটি করেন।
একই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন নিউজবাংলাকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় ফেনী জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বেলাল হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাহ উদ্দিন মামুন, সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াদ, ফেনী পৌর সদস্য সচিব ইব্রাহিম হোসেন ইভুসহ যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
জ্বালানি তেল ও নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে শুক্রবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বিএনপি। বিকেলের দিকে শহরের ইসলাম রোড থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি ট্রাংক রোডের জিরো পয়েন্টের দিকে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীরা মিছিলকারীদের ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে পথচারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
আরও পড়ুন:সালমান রুশদিকে ২০ সেকেন্ডে ১০ থেকে ১৫ বার আঘাত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। দৃশ্যটা এতটাই নাটকীয় ছিল যে উপস্থিত দুই হাজারের বেশি দর্শক শুরুতে এটিকে ‘স্টান্ট’ ভেবেছিল।
নিউ ইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেয়ার সময় স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় হামলার শিকার হন লেখক সালমান রুশদি। তাকে হাসপাতালে নেয়া হলেও অবস্থা সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রাব্বি চার্লস নামের একজন বলেন, ‘প্রথমে বুঝতে পারিনি কী ঘটছে। কয়েক সেকেন্ড পর বিষয়টি বুঝতে পারি। হামলাটি প্রায় ২০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল।’
এপির একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, হামলাকারী রুশদিকে ১০ থেকে ১৫ বার ঘুষি বা ছুরিকাঘাত করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন ক্যাথলিন জোনস। তিনি বলেন, ‘হামলাকারী কালো পোশাকে ছিলেন, মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা ছিল। আমরা ভেবেছিলাম সম্ভবত এটি একটি স্টান্টের অংশ। তবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বিষয়টা স্পষ্ট যায়।’
এপি বলছে, হামলার পর রুশদি তৎক্ষণাৎ মেঝেতে পড়ে যান। তখন হামলাকারী শান্ত হয়। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে লেখককে ঘিরে ফেলেন। অনুষ্ঠানে আনুমানিক আড়াই হাজার লোক উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘রুশদিকে মুহূর্তের মধ্যে বেশ কয়েকবার আঘাত করা হয় এবং তিনি তার রক্তের ওপরই লুটিয়ে পড়েন।’
ঘটনার পরই রিটা ল্যান্ডম্যান নামের একজন সহযোগিতার জন্য এগিয়ে গিয়েছিলেন এই বলে যে, তাকে জীবিত মনে হচ্ছে এবং তার সিপিআর প্রয়োজন।
ল্যান্ডম্যান বলেন, ‘লোকজন বলাবলি করছিল, তার এখনও নাড়ির স্পন্দন আছে, নাড়ির স্পন্দন আছে...।’
হামলাটির মুহূর্তে সামনের সারিতেই বসেছিলেন ওহিওর ক্লিভল্যান্ডের বাসিন্দা রজার ওয়ার্নার। তিনি বলেন, ‘তিনি (রুশদি) রক্তে ভেসে যাচ্ছিলেন। আর মেঝেতে রক্তের স্রোতধারা বইছিল।
‘আমি শুধু তার চোখের চারপাশে রক্ত দেখছিলাম, যা তার গাল বেয়ে নেমে যাচ্ছিল।’
Thank you to the swift response of @nyspolice & first responders following today's attack of author Salman Rushdie.
— Governor Kathy Hochul (@GovKathyHochul) August 12, 2022
Our thoughts are with Salman & his loved ones following this horrific event. I have directed State Police to further assist however needed in the investigation.
নিউ ইয়র্ক স্টেট পুলিশ ছুরিকাঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, রুশদিকে হেলিকপ্টারে কাছের একটি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। হামলাকারী তাদের হেফাজতে আছে।
নিউ ইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল টুইটে বলেন, ‘আমরা সালমান (রুশদি) এবং তার প্রিয়জনদের পাশে আছি। তদন্তে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।’
আরও পড়ুন:ঘটনাটি কি সত্য?
সন্তানকে বিক্রি করে দিতে বাজারে তুলেছেন মা- এমন শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর এ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। নিজের মা সন্তানকে বিক্রি করতে চাইছেন, তা অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। বিষয়টির সত্যাসত্য জানতেও আগ্রহী ছিলেন আরও অনেকেই।
এ বিষয়ে খোঁজ নিতেই শুক্রবার নিউজবাংলা গিয়ে হাজির হয় খাগড়াছড়ি সদরের ভাইবোন ছড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের পাক্কুজ্যছড়ি গ্রামে। সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রতিবেশী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- ছেলেকে বিক্রি করতে বাজারে তোলার ঘটনাটি সত্য।
অভাব অনটনের সংসারে ছেলেকে ঠিকমতো খাবার ও ভরণপোষণ দিতে পারছিলেন না সোনালী চাকমা। তবে তার সিদ্ধান্তে স্বজন ও স্থানীয়রা হতবাক।
এদিকে শুধু অভাব নয়, সোনালী চাকমার কিছু অস্বাভাবিক আচরণের কথাও জানিয়েছেন তার পরিচিত মানুষেরা।
তারা জানান, ৪৭ বছরের সোনালী চাকমার স্বামী শতোর্ধ্ব এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। সোনালীর তিন ছেলের মধ্যে বড় দুই ছেলের একজন বিয়ে করে আলাদা আর মেঝো ছেলে খাগড়াছড়ি সদরে দিনমজুরের কাজ করেন।
ছোট ছেলে রামকৃষ্ণকে নিয়ে পৈত্রিক ভিটায় একটি গোয়ালঘরের পাশেই থাকেন সোনালী। বাবা, মা ও ভাইয়ের বাড়ি পাশাপাশি হলেও অভাব অনটনে কেউই তার খোঁজ রাখে না। এ অবস্থায় দিনমজুরি করে যা আয় হয়, তা দিয়ে সোনালীর সংসারও চলে না।
এর মধ্যেই দীর্ঘদিন ধরে মৃগী রোগে ভোগছেন তিনি। কিন্তু ছেলের মুখেই খাবার তুলে দিতে না পারা সোনালীর জন্য মৃগী সহ অন্যান্য রোগের ওষুধ কিনে খাওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। নানা প্রচেষ্টার পরও চিকিৎসা নিতে না পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি সদরের বাজারে নিয়ে ছেলেকে বিক্রি করে দিতে দর হাঁকেন সোনালী।
ছেলেকে ছেড়ে থাকতে অনেক কষ্ট হবে জানিয়ে অভাব ঘুচাতে তাকে বিক্রির চেষ্টা অকপটে স্বীকার করেন সোনালী নিজেও। এ সময় কেঁদে ওঠেন তিনি।
সোনালী চাকমার ভাই ভারতব চাকমা বলেন, ‘দিদি (সোনালী) মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন। মৃগী রোগী। এ জন্য মাঝেমাঝে এলোমেলো কথা ও কাজ করেন। গত বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি বাজার থেকে এক চেয়ারম্যান ফোন করে ছেলেকে বিক্রি চেষ্টার কথা জানালে বাবা গিয়ে দিদি ও ভাগিনাকে নিয়ে আসেন।’
এ সময় নিজেরদের অভাবের কারণে সোনালীর চিকিৎসা করাতে পারেন না বলেও আক্ষেপ করেন ভারতব।
যেভাবে জানাজানি হয় ঘটনাটি
বৃহস্পতিবার সকালে খাগড়াছড়ি বাজারে এসে সবজি বিক্রি করতে আসা কয়েক নারীর কাছে ছেলেকে বিক্রির প্রস্তাব দেন সোনালী। তাদের মধ্যে একজন তার ছেলেকে ৫ হাজার টাকায় কিনতে চান। কিন্তু সোনালী ১২ হাজার টাকার কমে বিক্রি করবেন না বলে জানিয়ে দেন।
এভাবে দর কষাকষির এক পর্যায়ে সদর উপজেলার কমলছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুনীল জীবন চাকমা বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তার হস্তক্ষেপে মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়।
মা-ছেলের বর্তমান অবস্থা
ভাইবোন ছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ানম্যান সুজন চাকমা জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ওই মা-ছেলের পাশে দাড়াঁনোর পাশাপাশি শিশুটিকে একটি সদনে থাকার ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করছেন।
সংরক্ষিত আসনের সাংসদ বাসন্তী চাকমা জানান, পরিবারটির জন্য ৬ মাসের খাদ্য শস্য ও নগদ কিছু টাকা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সদর ইউএনও-কে বলে একটি সরকারি ঘরের ব্যবস্থা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মো. ছাবের জানান, মৃগী রোগীদের মানসিক সমস্যা হতে পারে। তবে বর্তমানে সময়মতো চিকিৎসা নিলে তা অনেকটাই ভালো হয়ে যায়।
তিনি জানান, জেলা সদর হাসপাতালে এই রোগে ভালো ও বিনামূল্যে চিকিৎসা হয়। সোনালী চাইলে তাকে স্বাস্থ্য বিভাগ সহযোগিতা দেবে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর পান্থপথের ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামের আবাসিক হোটেলে বুধবার সকাল ৮টায় আসেন ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা রেজাউল করিম। সঙ্গে ছিলেন সদ্য এমবিবিএস পাশ করা জান্নাতুল নাঈম সিদ্দীক। হোটেলের কক্ষটি বাইরে থেকে তালা দিয়ে সাড়ে ১০টার দিকে বেরিয়ে যান রেজাউল। এরপর তিনি ফিরে আসেননি।
হোটেলটি থেকে বুধবার রাতে জান্নাতুলের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে কলাবাগান থানা পুলিশ। এরপর খোঁজ শুরু হয় রেজাউলের। অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে র্যাব চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে রেজাউলকে গ্রেপ্তার করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তবে জান্নাতুলকে হত্যার কারণসহ রহস্যজট কাটেনি প্রাথমিক তদন্তে।
হোটেল স্টাফদের দেয়া তথ্য ও ফুটেজ বিশ্লেষনে জানা যায়, রেজাউল ও জান্নাতুল হোটেলের চতুর্থ তলার ৩০৫ নম্বর কক্ষে ছিলেন। রেজাউল বের হয়ে যাওয়ার পর কক্ষটি দীর্ঘ সময় বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। দীর্ঘসময় কক্ষ তালাবদ্ধ দেখে রাত ৯টার দিকে কলাবাগান থানা পুলিশকে খবর দেয় হোটেল কর্তৃপক্ষ। পরে পুলিশ ওই কক্ষের বিছানা থেকে গলাকাটা অবস্থায় জান্নাতুলের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা শফিকুল আলম কলাবাগান থানায় মামলা করেছেন। আসামি করা হয়েছে রেজাউল ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের। জান্নাতুলকে কেন হত্যা করা হয়েছে, সে ব্যাপারে ধারণা দিতে পারেননি স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রেজাউল করিম রেজাকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব জান্নাতুল হত্যার বিস্তারিত তথ্য জানাবে।
পুলিশ জানিয়েছে, মরদেহ উদ্ধারের পর ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষন করা হয়। ওই হোটেলের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ভিকটিম ও আসামি ঘটনার আগেরদিনও স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে যান। তারা বেলা ১টা থেকে বিকেল ৫ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। বুধবার সকাল আটটায় তারা আবার যান সেখানে। কিন্তু দুই ঘণ্টা পর একা বেরিয়ে যান রেজাউল।
কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, বুধবার সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে নারী চিকিৎসককে হত্যা করা হয় বলে ধারণা মিলেছে। তবে কেন তাকে হত্যা করা হয়েছে, তা জানা যায়নি। রেজাউলের সঙ্গে জান্নাতুল দুই দফা হোটেলটিতে যান, সে বিষয়ে প্রমাণ মিলেছে।
‘রেজাউলকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। এ দুজনের রুমে ঢোকার পর অন্য কাউকে সেখানে যেতে দেখা যায়নি। রেজাউল কক্ষটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে বেরিয়ে যান।’
নিহত জান্নাতুলের গ্রামের বাড়ি নরসিংদী, রেজাউল করিমের বাড়ি কক্সবাজার। তাদের দুজনের সম্পর্ক পরিবার মেনে নেয়নি বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে জান্নাতুলের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সিঙ্গাপুরে হাসপাতালে মৃত্যু হওয়া র্যাবের এয়ার উইং পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের প্রথম জানাজা হয়েছে।
রাজধানীর কালশীর বাইতুর রহমান জামে মসজিদে বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে তার জানাজা হয়।
এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিঙ্গাপুর থেকে ইসমাইলের মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এসে পৌঁছায়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় র্যাব সদরদপ্তরে ইসমাইলের দ্বিতীয় জানাজা হবে। সে জানাজায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, র্যাবের মহাপরিচালক ও অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
জোহরের নামাজের পর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসমাইলের তৃতীয় জানাজা হবে। সে জানাজা শেষে তার মরদেহ বনানীর সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
গত ২৭ জুলাই ঢাকার নবাবগঞ্জে প্রশিক্ষণ চলাকালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার শিকার হন র্যাবের এয়ার উইং পরিচালক ৫৪ বছর বয়সী ইসমাইল হোসেন। তাকে শুরুতে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৫ আগস্ট সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ইসমাইলকে। ৬ আগস্ট তার মেরুদণ্ডের সফল অস্ত্রোপচার হয়, কিন্তু অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় তার অবস্থার অবনতি ঘটে। ৯ আগস্ট আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য