ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কা এশিয়া তথা দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের জন্য সর্তক বার্তা বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান।
বিশ্ব সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিসটালিনা জর্জিবা শনিবার জানিয়েছেন, অতিমাত্রায় ঋণের বোঝা, সীমিত সম্পদ ও নীতিমালা থাকার কারণে বেশ কিছু দেশ ভয়াবহ সমস্যার পড়ে যেতে পারে। বেশি দূর নয়, সতর্কতামূলক শ্রীলঙ্কার দিকে নজর দিলেই হবে।
আইএমএফ প্রধানের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নয়নশীল দেশগুলো ব্যাপক মাত্রায় অর্থ পাচার ও অতি মুনাফার আশায় উন্নত দেশে মূলধন বিনিয়োগের মতো সংকটে জর্জরিত হতে পারে। এতে করে সংকট মোকাবিলায় এসব দেশের সরকারের নেয়া নীতিমালা বড় ধরনের হোচট খেতে পারে।
খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের মতো অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির দাম পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে দুই কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দেশ শ্রীলঙ্কা।
দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ছাড়িয়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। সেই সঙ্গে পণ্যমূল্য এক বছরে বেড়েছে ৮০ শতাংশ। চলতি বছর আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারসহ বিভিন্ন মুদ্রার বিপরীতে দ্বীপরাষ্ট্রটির মুদ্রা রুপির ব্যাপক দরপতন হয়েছে।
গত কয়েক বছরে বিপুল পরিমাণ ঋণের চাপে পড়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে গত দুই দশকে শ্রীলঙ্কা প্রথমবারের মতো বৈদেশিক ঋণের বোঝায় দেউলিয়া ও খেলাপি রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
এমন অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য দেশটির সরকার আইএমএফের কাছ থেকে জরুরি সহায়তা হিসেবে ৩ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের ডলার পরিমাণ বেল আউট চেয়েছে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অচলাবস্থার কারণে তা আটকে গেছে।
সেই সঙ্গে বিশ্ববাজারে এমন অস্থিরতার মধ্যে লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতি ও ঊর্ধ্বমুখী সুদের হার, মুদ্রার দরপতন, উচ্চমাত্রায় ঋণের বোঝা ও রিজার্ভের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে এশিয়াসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশ ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছে আইএমএফ।
চীন এ অঞ্চলে বিভিন্ন দেশকে বড় অঙ্কের ঋণ সহায়তা দিয়েছে। সেই সঙ্গে বলা চলে, এসব দেশের অর্থব্যবস্থাপনা ও ভবিষ্যৎ নির্ধারণে পরোক্ষ প্রভাব ও ভূমিকাও রয়েছে বেইজিংয়ের।
তবে চীনের ঋণ সহায়তা দেয়ার শর্ত এখনও স্পষ্ট নয় এবং তারা কীভাবে খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনা করে তাও স্পষ্ট করে না।
এ অবস্থায় পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ ও লাওসসহ আরও কয়েকটি দেশে শ্রীলঙ্কার পরিণতি আসতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে আইএমএফ।
লাওস
পূর্ব এশিয়ার দেশ লাওস কয়েক মাস ধরে ঋণখেলাপি হওয়ার শঙ্কার মধ্যে রয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ৭৫ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে চরম জ্বালানির সংকট ও লাগামহীন মূল্যের পাশাপাশি এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে দারিদ্র্যসীমায় নামিয়ে দিয়েছে।
ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা কিপের দরপতন হয়েছে ৩৩ শতাংশের বেশি।
পাকিস্তান
পাকিস্তানে মে মাসের শেষ দিকে সরকারের দেয়া ভর্তুকি তুলে নেয়ার পর জ্বালানির দাম ৯০ শতাংশের বেশি ছাড়িয়েছে। ব্যয় সংকোচনের নীতি নেয়ার পাশাপাশি দেশটি আইএমএফের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বেল আউট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামকে সামাল দিতে মরিয়া দেশটির সরকার। জুন মাসে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি রেকর্ড করা হয়েছে ২১.৩ শতাংশ যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বড় শিল্পগুলোর ওপর ১০ শতাংশ কর চাপিয়েছে সরকার। আইএমএফের অন্যতম শর্ত হিসেবে সরকারের রাজস্ব ও ব্যয়ের মধ্যকার ব্যবধান কমিয়ে আনতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
শ্রীলঙ্কা ও লাওসের মতো পাকিস্তানের বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ ব্যাপকহারে কমতে শুরু করেছে। গত বছর আগস্টের তুলনায় তা নেমে হয়েছে অর্ধেকে।
মালদ্বীপ
দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে জনগণের মাথাপিছু ঋণ বেড়ে ১০০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
শ্রীলঙ্কার মতো করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত এই দেশটির অর্থনীতি অনেকাংশে পর্যটনশিল্পের ওপর নির্ভরশীল।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল দেশগুলোতে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ দ্রুত বেড়ে যায়। দেশটিতে জ্বালানির দাম আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে কারণ এর অর্থনীতি বহুমুখী নয়।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি মে মাসে বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ, যা গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
রিজার্ভের পরিমাণ কমতে থাকায় এরই মধ্যে সরকার অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি বন্ধ করার নীতি অনুমোদন দিয়েছে। প্রবাসীদের আয় (রেমিট্যান্স) দেশে পাঠানোকে উৎসাহিত করতে এ-সংক্রান্ত নীতিমালা আরও সহজ করেছে সরকার। সেই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ কমিয়ে আনা হয়েছে।
অর্থনীতি বিশ্লেষক কিম ইং তান বিবিসিকে জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক সংকটে থাকা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সরকার নিত্যপণ্য ও স্বাস্থ্যসেবায় ভর্তুকি চালিয়ে যেতে চরম হিমশিম খাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারকে ব্যয়ের তালিকা গুরুত্বের ভিত্তিতে আবারও সাজাতে হবে। এবং ভোক্তার আচরণের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে কঠোর নীতিমালাও আরোপ করেছে সরকার।’
খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী দাম মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্বের অর্থনীতিতে ফের চাপ সৃষ্টি করেছে।
বিশ্ববাজারে নানা ঘাত-প্রতিঘাত সামাল দিতে উন্নয়নশীল দেশগুলো ব্যাপকহারে বিশ্বসংস্থার কাছ থেকে ঋণ নেয়া অব্যাহত রেখেছে।
সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল
এদিকে, বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থার দুর্বলতা ও খেলাপি ঋণের উচ্চহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সফররত প্রতিনিধি দল।
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে এ উদ্বেগের কথা জানিয়েছে আইএমএফ। ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সুশাসনের তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশের আর্থিক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আইএমএফের পাঁচ সদস্যের স্টাফ মিশন গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন। এর আগে গত মার্চে তারা প্রথম এসেছিলেন।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চায় আইএমএফ। সংস্থাটি বলেছে, সরকার খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে নানা রকম সুযোগ-সুবিধা দেয়ার পরও তা কমেনি। বরং আগের চেয়ে বেড়েছে। এর কারণ জানতে চায় আইএমএফ।
জবাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এই চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে।
বিপরীত মত
বৈদেশিক ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এমন দেশের তালিকা প্রকাশ সম্প্রতি করেছে ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট। এই তালিকায় স্থান পাওয়া ২৫টি দেশের র্যাঙ্কিং করতে তারা ব্লুমবার্গের ডেটা ব্যবহার করেছে।
তবে এই তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই। বাংলাদেশ ঋণখেলাপি হতে পারে, এমনটা ভাবছে না কানাডাভিত্তিক সংবাদ প্রতিষ্ঠান ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট।
তবে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে তালিকায় নাম রয়েছে পাকিস্তানের।
সরকারি বন্ড, ৫ বছরের ডিফল্ট ক্রেডিট অদল-বদল, জিডিপিতে সুদের ব্যয়ের হার, জিডিপিতে সরকারি ঋণের হারের ওপর ভিত্তি করে এই তালিকা করা হয়েছে।
২০২২ সালের মে মাসে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ঋণখেলাপি হয়ে যায়। দেশটির সরকারকে ৭৮ মিলিয়ন ডলারের সুদ পরিশোধের জন্য ৩০ দিন বাড়তি সময় দেয়া হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত দেশটি কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়।
আরও পড়ুন:‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই, যার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহ থেকেই এ শিল্পী হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, প্রতুলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুলের গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় গান হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার গানের গুণমুগ্ধ ছিলেন। মমতার তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে।
বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। শৈশব থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য শিল্পী ছিলেন তিনি।
তার মতে, সৃষ্টির মুহূর্তে লেখক-শিল্পীকে একা হতে হয়। তারপর সেই সৃষ্টিকে যদি মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায়, কেবল তাহলেই সেই একাকিত্বের সার্থকতা। সেই একক সাধনা তখন সকলের হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় হারনাই জেলায় শুক্রবার শ্রমিক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির কোয়েটা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা শাহজাদ জাহরি এএফপিকে জানান, হারনাই জেলায় এ বোমা বিস্ফোরণে ১০ খনিশ্রমিক নিহত হন।
একই জেলার আরেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সেলিম তারিন এএফপিকে বলেন, ‘শ্রমিকরা কাজের জায়গা থেকে বাজারে কেনাকাটার জন্য যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তাদের গাড়িটি আক্রমণের শিকার হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ছিল একটি আইইডি বিস্ফোরণ।আমরা হামলার তদন্ত করছি।’
হারনাই দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি জেলা।
কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে বেলুচ লিবারেশন আর্মি প্রায়ই অন্যান্য প্রদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বা পাকিস্তানিদের, বিশেষ করে বেলুচিস্তানের পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলার দাবি করে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনাবাহিনীর আলাদা তিন অভিযানে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রদেশের লাক্কি মারওয়াত, কারাক ও খাইবার জেলায় অভিযান চালায়।
এতে আরও বিবৃতিতে বলা হয়, লাক্কি মারওয়াতে অভিযানে ১৮ সন্ত্রাসী নিহত ও ছয়জন আহত হন। কারাক জেলায় আরও ৮ সন্ত্রাসী নিহত হন।
সেনাবাহিনী আরও বলেছে, তাদের তৃতীয় অভিযানটিতে গোষ্ঠীটির নেতাসহ ৪ সন্ত্রাসী নিহত ও দুজন আহত হন।
অভিযানে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
এলাকায় অন্য সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি নির্মূল করতে একটি ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানো হচ্ছে।
সেনাবাহিনী বলেছে, দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিপদ নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
আরও পড়ুন:ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
পুলিশ জানায়, একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মীর কাজ করতেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বাহিনীটি আরও জানায়, শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা একটি নির্জন এলাকায় নারীর মৃতদেহ দেখতে পান। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন।
কর্ণাটক থেকে পিটিআই শনিবার এ খবর জানায়।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রাণ হারানো নারী বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি ছয় বছর ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন।
তার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তবে তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
ওই নারী বৃহস্পতিবার তার সহকর্মীকে বলেছিলেন, তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে বলেন তাকে ছাড়াই চলে যেতে। তবে বাড়ি ফিরতে নারীর দেরি হলে তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন জায়গায় গিয়েছিলেন পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল।
তথ্য পাওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পূর্ব বিভাগ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) দেবরাজ।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
নয়াদিল্লি মাওবাদীদের দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা দমনে পদক্ষেপ জোরদার করেছে। শুক্রবার পুলিশ এই খবর জানায়।
কয়েক দশকের মাওবাদী সহিংসতায় ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হন।
বিদ্রোহীদের দাবি, তারা প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সহিংসতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছত্রিশগড়ের বিজাপুর জেলার বন-জঙ্গলে বৃহস্পতিবার এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পি. এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১২ মাওবাদী নিহত হয়েছে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই শতাধিক মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সরকার আশা করছে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্রোহীদের দমন করা সম্ভব হবে।
বিদ্রোহীরা গত কয়েক বছরে সরকারি সেনাদের টার্গেট করে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
চলতি মাসের গোডার দিকে রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৯ ভারতীয় সেনা নিহত হন।
আরও পড়ুন:ভারতের মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় অনুপ্রবেশকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খান।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রাত আড়াইটায় একজন অনুপ্রবেশকারী বাসায় ঢুকে সাইফ আলীকে ছয়বার ছুরিকাঘাত করে। বর্তমানে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার চলছে।
হাসপাতালকর্মীরা বলছেন, সাইফ আলী খান এখন বিপদমুক্ত। রাতে তার নিউরো সার্জারি করা হয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি চলছে।
এ ঘটনায় বান্দ্রা থানায় একটি এজাহার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, সাইফ আলী যখন বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন একজন অনুপ্রবেশকারী চুপিসারে তার বাসায় ঢোকেন। এ সময়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাইফের হাতাহাতি হয়।
এরপর সাইফ আলী খানকে ছয়বারের বেশি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান অনুপ্রবেশকারী।
এক বিবৃতিতে লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছয়টি আঘাতের মধ্যে দুটি তার মেরুদণ্ডের কাছে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
এরই মধ্যে তার বাসার তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
এক বিবৃতিতে সাংবাদিক ও ভক্তদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে সাইফ আলী খান টিম।
এতে বলা হয়, ‘এটি এখন পুলিশের কাজ। আমরা আপনাদের হালানাগাদ তথ্য জানিয়ে দেব।’
কারিনা কাপুর খান টিমও একই বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিবারের অন্য সদস্যরা ভালো আছেন।’
আরও পড়ুন:নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই শনিবার বলেছেন, তিনি তার জন্মভূমি পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে ‘অভিভূত’ ও ‘আনন্দিত’।
ইসলামি বিশ্বে নারী শিক্ষাবিষয়ক বিশ্বব্যাপী এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২০১২ সালে স্কুলছাত্রী মালালাকে পাকিস্তানি তালেবানরা গুলি করে এবং এরপর তিনি বিদেশে চলে যান। বিদেশে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকবার তিনি দেশে আসেন।
রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলনে পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।’
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুই দিনব্যাপী এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন শনিবার সকালে। এতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
স্থানীয় সময় রোববার ইউসুফজাইয়ের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম এক্সে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি সকল মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলব। আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কেন তালেবান নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারেও বলব।'
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে জানান, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তালেবান ইসলামাবাদের এ আমন্ত্রণে কোনো সাড়া দেয়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামী আইন আরোপ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘লিঙ্গ বর্ণবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান তীব্র শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটিতে দুই কোটি ৬০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। তাদের অধিকাংশই দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকার একটি স্কুল বাসে ২০১২ সালে পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের হামলার পর ইউসুফজাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়।
পরবর্তী সময়ে তিনি নারী শিক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হন তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য