ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কা এশিয়া তথা দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের জন্য সর্তক বার্তা বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান।
বিশ্ব সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিসটালিনা জর্জিবা শনিবার জানিয়েছেন, অতিমাত্রায় ঋণের বোঝা, সীমিত সম্পদ ও নীতিমালা থাকার কারণে বেশ কিছু দেশ ভয়াবহ সমস্যার পড়ে যেতে পারে। বেশি দূর নয়, সতর্কতামূলক শ্রীলঙ্কার দিকে নজর দিলেই হবে।
আইএমএফ প্রধানের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নয়নশীল দেশগুলো ব্যাপক মাত্রায় অর্থ পাচার ও অতি মুনাফার আশায় উন্নত দেশে মূলধন বিনিয়োগের মতো সংকটে জর্জরিত হতে পারে। এতে করে সংকট মোকাবিলায় এসব দেশের সরকারের নেয়া নীতিমালা বড় ধরনের হোচট খেতে পারে।
খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের মতো অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির দাম পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে দুই কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দেশ শ্রীলঙ্কা।
দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ছাড়িয়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। সেই সঙ্গে পণ্যমূল্য এক বছরে বেড়েছে ৮০ শতাংশ। চলতি বছর আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারসহ বিভিন্ন মুদ্রার বিপরীতে দ্বীপরাষ্ট্রটির মুদ্রা রুপির ব্যাপক দরপতন হয়েছে।
গত কয়েক বছরে বিপুল পরিমাণ ঋণের চাপে পড়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে গত দুই দশকে শ্রীলঙ্কা প্রথমবারের মতো বৈদেশিক ঋণের বোঝায় দেউলিয়া ও খেলাপি রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
এমন অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য দেশটির সরকার আইএমএফের কাছ থেকে জরুরি সহায়তা হিসেবে ৩ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের ডলার পরিমাণ বেল আউট চেয়েছে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অচলাবস্থার কারণে তা আটকে গেছে।
সেই সঙ্গে বিশ্ববাজারে এমন অস্থিরতার মধ্যে লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতি ও ঊর্ধ্বমুখী সুদের হার, মুদ্রার দরপতন, উচ্চমাত্রায় ঋণের বোঝা ও রিজার্ভের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে এশিয়াসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশ ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছে আইএমএফ।
চীন এ অঞ্চলে বিভিন্ন দেশকে বড় অঙ্কের ঋণ সহায়তা দিয়েছে। সেই সঙ্গে বলা চলে, এসব দেশের অর্থব্যবস্থাপনা ও ভবিষ্যৎ নির্ধারণে পরোক্ষ প্রভাব ও ভূমিকাও রয়েছে বেইজিংয়ের।
তবে চীনের ঋণ সহায়তা দেয়ার শর্ত এখনও স্পষ্ট নয় এবং তারা কীভাবে খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনা করে তাও স্পষ্ট করে না।
এ অবস্থায় পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ ও লাওসসহ আরও কয়েকটি দেশে শ্রীলঙ্কার পরিণতি আসতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে আইএমএফ।
লাওস
পূর্ব এশিয়ার দেশ লাওস কয়েক মাস ধরে ঋণখেলাপি হওয়ার শঙ্কার মধ্যে রয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ৭৫ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে চরম জ্বালানির সংকট ও লাগামহীন মূল্যের পাশাপাশি এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে দারিদ্র্যসীমায় নামিয়ে দিয়েছে।
ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা কিপের দরপতন হয়েছে ৩৩ শতাংশের বেশি।
পাকিস্তান
পাকিস্তানে মে মাসের শেষ দিকে সরকারের দেয়া ভর্তুকি তুলে নেয়ার পর জ্বালানির দাম ৯০ শতাংশের বেশি ছাড়িয়েছে। ব্যয় সংকোচনের নীতি নেয়ার পাশাপাশি দেশটি আইএমএফের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বেল আউট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামকে সামাল দিতে মরিয়া দেশটির সরকার। জুন মাসে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি রেকর্ড করা হয়েছে ২১.৩ শতাংশ যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বড় শিল্পগুলোর ওপর ১০ শতাংশ কর চাপিয়েছে সরকার। আইএমএফের অন্যতম শর্ত হিসেবে সরকারের রাজস্ব ও ব্যয়ের মধ্যকার ব্যবধান কমিয়ে আনতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
শ্রীলঙ্কা ও লাওসের মতো পাকিস্তানের বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ ব্যাপকহারে কমতে শুরু করেছে। গত বছর আগস্টের তুলনায় তা নেমে হয়েছে অর্ধেকে।
মালদ্বীপ
দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে জনগণের মাথাপিছু ঋণ বেড়ে ১০০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
শ্রীলঙ্কার মতো করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত এই দেশটির অর্থনীতি অনেকাংশে পর্যটনশিল্পের ওপর নির্ভরশীল।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল দেশগুলোতে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ দ্রুত বেড়ে যায়। দেশটিতে জ্বালানির দাম আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে কারণ এর অর্থনীতি বহুমুখী নয়।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি মে মাসে বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ, যা গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
রিজার্ভের পরিমাণ কমতে থাকায় এরই মধ্যে সরকার অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি বন্ধ করার নীতি অনুমোদন দিয়েছে। প্রবাসীদের আয় (রেমিট্যান্স) দেশে পাঠানোকে উৎসাহিত করতে এ-সংক্রান্ত নীতিমালা আরও সহজ করেছে সরকার। সেই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ কমিয়ে আনা হয়েছে।
অর্থনীতি বিশ্লেষক কিম ইং তান বিবিসিকে জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক সংকটে থাকা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সরকার নিত্যপণ্য ও স্বাস্থ্যসেবায় ভর্তুকি চালিয়ে যেতে চরম হিমশিম খাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারকে ব্যয়ের তালিকা গুরুত্বের ভিত্তিতে আবারও সাজাতে হবে। এবং ভোক্তার আচরণের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে কঠোর নীতিমালাও আরোপ করেছে সরকার।’
খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী দাম মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্বের অর্থনীতিতে ফের চাপ সৃষ্টি করেছে।
বিশ্ববাজারে নানা ঘাত-প্রতিঘাত সামাল দিতে উন্নয়নশীল দেশগুলো ব্যাপকহারে বিশ্বসংস্থার কাছ থেকে ঋণ নেয়া অব্যাহত রেখেছে।
সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল
এদিকে, বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থার দুর্বলতা ও খেলাপি ঋণের উচ্চহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সফররত প্রতিনিধি দল।
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে এ উদ্বেগের কথা জানিয়েছে আইএমএফ। ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সুশাসনের তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশের আর্থিক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আইএমএফের পাঁচ সদস্যের স্টাফ মিশন গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন। এর আগে গত মার্চে তারা প্রথম এসেছিলেন।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চায় আইএমএফ। সংস্থাটি বলেছে, সরকার খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে নানা রকম সুযোগ-সুবিধা দেয়ার পরও তা কমেনি। বরং আগের চেয়ে বেড়েছে। এর কারণ জানতে চায় আইএমএফ।
জবাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এই চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে।
বিপরীত মত
বৈদেশিক ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এমন দেশের তালিকা প্রকাশ সম্প্রতি করেছে ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট। এই তালিকায় স্থান পাওয়া ২৫টি দেশের র্যাঙ্কিং করতে তারা ব্লুমবার্গের ডেটা ব্যবহার করেছে।
তবে এই তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই। বাংলাদেশ ঋণখেলাপি হতে পারে, এমনটা ভাবছে না কানাডাভিত্তিক সংবাদ প্রতিষ্ঠান ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট।
তবে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে তালিকায় নাম রয়েছে পাকিস্তানের।
সরকারি বন্ড, ৫ বছরের ডিফল্ট ক্রেডিট অদল-বদল, জিডিপিতে সুদের ব্যয়ের হার, জিডিপিতে সরকারি ঋণের হারের ওপর ভিত্তি করে এই তালিকা করা হয়েছে।
২০২২ সালের মে মাসে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ঋণখেলাপি হয়ে যায়। দেশটির সরকারকে ৭৮ মিলিয়ন ডলারের সুদ পরিশোধের জন্য ৩০ দিন বাড়তি সময় দেয়া হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত দেশটি কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়।
আরও পড়ুন:সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিকিনি পরা ছবি পোস্ট করায় প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যে আঘাত লেগেছে মনে করে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় এক ইংরেজি শিক্ষিকাকে চাকরিচ্যুত করেছে কর্তৃপক্ষ। চাকরিচ্যুতির সে ঘটনায় সাঁতারের পোশাক পরা ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন সমাজের বিভিন্ন মহলের মানুষজন।
মেন্টাল হেলথ অ্যাক্টিভিস্ট রত্নবলী রায় ফেসবুকে নিজের সাঁতারের পোশাক পরা ছবি পোস্ট করে সেন্ট জেভিয়ার্স ইউনিভার্সিটির এই পিছিয়ে পড়া মনোভাবের বিরুদ্ধে সবাইকে সাঁতারের পোশাক পরা ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদ জানানোর আবেদন জানান। ৱ
রত্নাবলী তার ফেসবুকে, ‘কাঁচকলা। কাঁচকলা। ব্যক্তি শিক্ষকের পোশাক ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে বিড়ম্বনার হয় না। এটি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় জানি। যে কর্তৃপক্ষ এটা বোঝে না, তাদের শিক্ষার পরিধি বাড়ানোর দরকার।’
রত্নাবলীর পোস্টকে সমর্থন করে তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি আরও অনেকে সাঁতারের পোশাক পরা ছবি পোস্ট করে এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন।
সেন্ট জেভিয়ার্স ইউনিভার্সিটির ওই শিক্ষিকা গত বছর জুন মাসে তার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে বিকিনি পরা কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। যা সম্পূর্ণ প্রাইভেট বলে দাবি করেছেন তিনি।
ঘটনার দুই মাস পর অক্টোবরে তিনি কাজে যোগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে একটি বৈঠকে ডেকে তার বিকিনি পরা ছবির প্রিন্ট দেখিয়ে অশ্লীল মন্তব্য ও যৌন হেনস্তার পাশাপাশি তাকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করে বলে সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে।
এ বিষয়ে ওই শিক্ষিকা আগে যাদবপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন। সেখানে তিনি বলেন, ইনস্টাগ্রাম প্রাইভেট মোডের ছবি, যা কিনা ২৪ ঘণ্টা পর এমনি মুছে যাওয়ার কথা, দুমাস পর সেই ছবি দেখিয়ে তাকে হেনস্থা করা হয়েছে। তাকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।
তার দাবি, তার প্রোফাইল হ্যাক করা হয়ে থাকতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য শিক্ষিকার দাবি অস্বীকার করে, তিনি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন বলে দাবি করেছে।
সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইংরেজি স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
ওই ছাত্রের বাবা অভিযোগে লেখেন, ‘ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক শিক্ষিকার বিকিনি পরা ছবি দেখছিল আমার ছেলে। ছবিগুলো কুরুচিকর, অশ্লীল, প্রায় নগ্ন। যৌন উত্তেজনামূলক পোশাক পরা। শিক্ষিকার অন্তর্বাস পরা ছবি দেখছে ছেলে, বাবা হিসেবে এ দৃশ্য অত্যন্ত লজ্জার।’
এরপর ফেসবুকে চিঠিটি ভাইরাল হয়। পরে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৯৯ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছে বলেও দাবি করেন ওই শিক্ষিকা।
শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী মিরাতুন নাহার এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি অধ্যাপনা পেশার সঙ্গে দীর্ঘ ৩৪ বছর যুক্ত ছিলাম। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এত তুচ্ছ একটা বিষয় নিয়ে তিনি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে যাচ্ছেন কেন? প্রাইভেট হোক আর পাবলিক হোক। এরকম মনোবৃত্তিটা হয় কীভাবে? এরকম প্রশ্ন আমার মনে জাগে। তাই বলে, তার ওপর কিছু আমি আরোপ করতে চাই না।’
মীরাতুন্নাহার বলেন, ‘যেটা শুনতে পাচ্ছি, একজন মাত্র অভিভাবক অভিযোগ করেছেন। তাও ঘটনার দুমাস পরে এবং তিনি তখনও অধ্যাপনায় যোগ দেননি। সেরকম সময়ের ইনস্টাগ্রাম পোস্ট। এই তথ্যগুলো যুক্তিসঙ্গত। সেন্ট জেভিয়ার্সের যিনি অধ্যক্ষ তিনি আমার খুব পরিচিত। তার ব্যক্তিগত জীবন, তিনি কেমন মানুষ, আমার জানা। ফলে তার মতো মানুষ বা কর্তৃপক্ষ একটা মানুষের উপর সবটা কর্তৃত্ব করবেন, এটা হতে পারে না।
‘অধ্যাপনা জীবনের বাইরের ঘটনা নিয়ে যদি চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়, তার তীব্র নিন্দা করছি। অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে বলে আমি মনে করি। এটা ঠিক হয়নি।’
সাহিত্যিক আবুল বাশার নিউজবাংলার থেকে এই ঘটনা শোনার পর তিনি বলেন, ‘বর্তমান ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত পরিসর বলে আর কিছু নেই। তবে আমাদের জানতে হবে কীভাবে ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করতে হয়, সেই সামাজিক জ্ঞানও মানুষের নেই।’
আবুল বাশার আরও বলেন, ‘চাকরি এখন খোলামকুচি নয়। ইচ্ছে করলেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যায়? বিকিনি পরে উনি তো আর বিশ্ববিদ্যালয় যাননি?
‘কোথায় কী গোপন ছবি বেরিয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন সিদ্ধান্ত নেবেন? একটা ব্যক্তিগত পরিসর আর একটা সামাজিক পরিসর। বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক পরিসরের অংশ। দুটোকে গুলিয়ে ফেলার কারণ নেই। ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার করে জীবন বিনাশী, হঠকারী সিদ্ধান্ত, এটা মোটেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঠিক কাজ করেনি।’
আরও পড়ুন:একেই বলে ধৈর্য। নয়তো ২০ রুপির জন্য দীর্ঘ ২২ বছর কেউ মামলা চালিয়ে যায়? তাও আবার সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে! অবশেষে গত সপ্তাহে মামলার রায় আসে তার পক্ষে।
সময়টা ১৯৯৯ সাল। উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা তুঙ্গনাথ চতুর্বেদী রেলযাত্রার জন্য দুটি টিকিট কিনেছিলেন। সেদিন তার কাছ থেকে নির্ধারিত টাকার চেয়ে ২০ রুপি বেশি নেয়া হয়েছিল।
ঘটনাটি ঘটে মথুরা সেনানিবাস রেলওয়ে স্টেশনে। পেশায় আইনজীবী চতুর্বেদী বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি।
ভোক্তা আদালত গত সপ্তাহে চতুর্বেদীর পক্ষে রায় দেয়। রেলওয়েকে বলা হয়, সুদসহ অর্থ ফেরত দিতে বাদীকে।
চতুর্বেদী বলেন, ‘এই মামলায় ১০০টিরও বেশি শুনানিতে অংশ নিয়েছি। মামলা লড়তে যে শক্তি এবং সময় হারিয়েছি, তার মূল্য আপনি দিতে পারবেন না।’
ভারতে ভোক্তা আদালত বিশেষভাবে পরিষেবা সম্পর্কিত অভিযোগগুলোর ফয়সালা করে। তবে এসব আদালত থাকে মামলায় ঠাসা। কখনো কখনো সাধারণ মামলাগুলোর সমাধানে কয়েক বছর লেগে যায়।
ঘটনায় সময় চতুর্বেদীর বয়স ছিল ৪২ বছর। মথুরা থেকে মোরাদাবাদে যাচ্ছিলেন তিনি। একজন টিকিট-বুকিং কেরানি তার কেনা দুটি টিকিটের জন্য অতিরিক্ত চার্জ করেছিলেন।
প্রতিটি টিকিটের দাম ৩৫ রুপি ছিল। চতুর্বেদী দুটি টিকিট নিয়ে কেরানিকে ১০০ রুপির একটি নোট দিয়েছিলেন। ৭০ টাকার পরিবর্তে কেরানি তার কাছ থেকে নিয়েছিলেন ৯০ রুপি। ১০ রুপি তাকে ফেরত দেয়া হয়।
চতুর্বেদী সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তারা বিষয়টিকে পাত্তা দেয়নি। তাই উত্তর-পূর্ব রেলওয়ের (গোরখপুর) বুকিং ক্লার্কের বিরুদ্ধে মথুরার একটি ভোক্তা আদালতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন চতুর্বেদী৷
তিনি জানান, ভারতে বিচারব্যবস্থা যে ধীর গতিতে কাজ করে, তার জন্য এত বছর লেগেছে।
‘রেলওয়ে মামলাটি খারিজ করার চেষ্টা করেছিল। তারা জানিয়েছিল, রেলওয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ একটি রেলওয়ে ট্রাইব্যুনালে সুরাহা করা উচিত, ভোক্তা আদালতে নয়। তবে আমি ২০২১ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখিয়ে প্রমাণ করি বিষয়টির শুনানি ভোক্তা আদালতে হতে পারে।’
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর, বিচারক রেলওয়েকে ১৫ হাজার রুপি জরিমানা করেন। অর্থাৎ আদালত রেলওয়েকে ১৯৯৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১২ শতাংশ হারে সুদে ২০ রুপি ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আর যদি ৩০ দিনের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্থ প্রদান না করা হয়, তবে সুদের হার হবে ১৫ শতাংশ।
চতুর্বেদী বলেন, ‘যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছি তা খুব অল্প। মামলাটি আমাকে যে পরিমাণ মানসিক যন্ত্রণা দিয়েছে তা অপূরণীয়। আমার পরিবার বহুবার মামলা তুলে নিতে চাপ দিয়েছিল।
‘এটা আসলে অর্থের বিষয় নয়। এটা ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই। তাই মামলাটি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর যেহেতু আমি নিজে একজন আইনজীবী, তাই নিজেই মামলাটি লড়েছি। বাড়তি অর্থ খরচ হয়নি।
‘কোনো ব্যক্তির সরকারি পদমর্যাদা যাই হোক না কেন, তাকে জনগণের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এটাই নিয়ম। আপনি যদি এমন করেন, তবে দুর্নীতি ঠেকানোর জন্য অনেকটাই সহজ হবে।‘
মামলা অন্যদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে বলে বিশ্বাস তুঙ্গনাথ চতুর্বেদীর। তিনি বলেন, ‘লড়াই কঠিন মনে হলেও, হাল ছেড়ে দেবেন না।’
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে গুলিতে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বান্দিপোর জেলার আজাজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
পুলিশ জানিয়েছে, সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত মোহম্মদ আমরেজ বিহার থেকে ওই এলাকায় এসেছিলেন।
আমরেজকে গুলি করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এরপর হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এর আগে এদিন সকালে রজৌরিতে ভারত ও পাকিস্তানকে বিভক্তকারী সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) কাছে হামলায় নিহত হন তিন সেনা সদস্য।
কাশ্মীর পুলিশের টুইট বার্তায় গুলিতে শ্রমিক নিহতের তথ্য নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নেয়ার পরও তাকে বাঁচানো যায়নি।
গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে জম্মু-কাশ্মীরে দেশটির অন্য রাজ্যের শ্রমিকদের গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটছে। গত সপ্তাহে বিহার থেকে আসা এক শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
এর আগে অক্টোবরে বিহারের বাসিন্দা ফুচকা বিক্রেতা অরবিন্দ কুমার শাহকে শ্রীনগরে এবং উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা কাঠমিস্ত্রি সাগির আহমেদকে পুলওয়ামায় খুন করা হয়েছিল।
এর পর কুলগামের ওয়ানপো এলাকায় বিহারের তিন শ্রমিককে গুলি করা হয়। চলতি বছরের জুনে চাদুরা এলাকায় মগ্রেপোরায় একটি ইটভাটার দুই বিহারি শ্রমিককেও একই কায়দায় খুন করা হয়।
এই পরিস্থিতিতে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কাছে নিরাপত্তার দাবিতে বিহার, উত্তর প্রদেশসহ কয়েকটি রাজ্যের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:সাময়িক অবস্থানের জন্য থাইল্যান্ডে পৌঁছেছেন সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মুখে গত মাসে পালিয়ে সিঙ্গাপুরে যাওয়া শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ব্যাংককের ডন মুয়েং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে গোতাবায়াকে বহনকারী বেসরকারি উড়োজাহাজটি।
থাইল্যান্ড সরকারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিমানবন্দরে পৌঁছার পর প্রায় ৪০ মিনিট ভিআইপি সেকশনে অবস্থান করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট। পরে একটি কালো প্রাইভেট কারে চড়ে তিনি গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হন।
অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্টের থাইল্যান্ডমুখী হওয়ার খবরটি বুধবারই জানিয়েছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির কর্মকর্তারা।
থাই কর্মকর্তারা বলেছিলেন, গোতাবায়াকে প্রবেশের সুযোগ দেয়ার অনুরোধ করেছিল শ্রীলঙ্কা সরকার। এর ভিত্তিতে তাকে অস্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেয়া হবে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ওচা বলেছিলেন, গোতাবায়ার আগমনের বিষয়টি নিয়ে তিনি অবগত। শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট তৃতীয় কোনো দেশে আশ্রয় খুঁজছিলেন বলে মানবিক বিবেচনায় তাকে থাইল্যান্ডে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
গোতাবায়া থাইল্যান্ডে কতদিন থাকবেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি প্রায়ুত চান। তিনি বলেছেন, ব্যাংককে বসে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেবেন না লঙ্কার সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান।
আরও পড়ুন:ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি সেনাক্যাম্পে বন্দুকধারীর হামলায় ৩ সেনা নিহত ও ২ জন আহত হয়েছেন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারীরা এ সময় সেনাক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। সেনা সদস্যের পাল্টা গুলিতে ২ বন্দুকধারীও নিহত হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মুকেশ সিং বলেন, ‘কয়েকজন সন্ত্রাসী পারগালের আর্মি ক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা করলে রক্ষীরা তাদের চ্যালেঞ্জ জানায়। এ সময় গোলাগুলি শুরু হয়।’
ক্যাম্পের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে আরো সেনা পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ বলছে, এই হামলার পেছনে রয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তাইয়্যেবা।
২০১৮ সালে জম্মুর সুনজোয়ান ক্যাম্পে হামলার পর এটিই সেনা ক্যাম্পে সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা।
২০১৬ সালে উরি ক্যাম্পে একই ধরনের হামলায় ১৮ সেনা নিহত হন।
জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এক টুইট বার্তায় নিহত সেনা সদস্য ও কর্মকর্তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহত সেনাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
আরও পড়ুন:শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে থাইল্যান্ডে ঢোকার চেষ্টায় আছেন বলে জানিয়েছে থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে তিনি কখন সফর করতে চেয়েছিলেন, তা প্রকাশ করা হয়নি।
থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তানি সাংগ্রাট বলেন, ‘গোটাবায়ার একটি কূটনৈতিক পাসপোর্ট আছে, যা তাকে ৯০ দিনের জন্য যেকোনো দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়। তিনি ব্যাংককে অস্থায়ীভাবে বসবাস করতে চাইছেন।
‘শ্রীলঙ্কার পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে যে সাবেক প্রেসিডেন্টের থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। পরে তিনি অন্য দেশে চলে যাবেন।’
সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র ঘাটতির কারণে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও অফিসে হামলা চালায়। পরদিন ১৪ জুলাই সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান গোটাবায়া রাজাপাকসে।
সিঙ্গাপুর থেকে পদত্যাগ করেন গোটাবায়া। তিনিই শ্রীলঙ্কার প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি মধ্যবর্তী মেয়াদে পদত্যাগ করেছেন।
গোটাবায়া বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুর ছেড়ে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই সূত্রের বরাতে রয়টার্স এ খবর ছেপেছে। শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে এ মন্তব্যের জবাব দেয়নি। সিঙ্গাপুরে শ্রীলঙ্কার দূতাবাস থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গোটাবায়ার এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী কলম্বোতে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার তার সিঙ্গাপুর ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এক্সটেনশনের জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। তবে বুধবার সকাল পর্যন্ত তা হয়নি।’
প্রভাবশালী রাজাপাকসে পরিবারের সদস্য গোটাবায়া। তিনি শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীর পর প্রতিরক্ষা সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রতিরক্ষা সচিব থাকাকালীন সরকারি বাহিনী ২০০৯ সালে তামিল টাইগার বিদ্রোহীদের পরাজিত করে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়। কিছু অধিকার গোষ্ঠী এখন চাইছে, গোটাবায়া যে যুদ্ধাপরাধ করেছেন, তা তদন্ত করা হোক। গোটাবায়া এর আগে কঠোরভাবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গোটাবায়া যদি শ্রীলঙ্কায় ফিরে আসেন, তবে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করা হলে, আইন তাকে নাও বাঁচাতে পারে।
আরও পড়ুন:সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় বিরোধীদের বিরুদ্ধে পাল্টা দুর্নীতিগ্রস্ত বলে অভিযোগ তুলেছেন শাসক দল তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রীরা।
তৃণমূল বলছে, ‘আমাদের কোন লুকোচাপা নেই। তবু দুর্নীতিগ্রস্ত বলে দাগ লাগানোর চেষ্টা করছে বিরোধীরা।’
বুধবার বিধানসভায় ডাকা তৃণমূলের সংবাদ সম্মেলনে ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক, অরূপ রায়, শিউলি সাহা, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিরোধীদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন।
এ দিন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত দুদিন ধরে রাজ্যে সবচেয়ে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূলের ১৯ নেতা মন্ত্রীর সম্পত্তি বৃদ্ধি এবং জনস্বার্থ মামলা। আদালতের রায় নিয়ে কিছু বলার নেই। আইন আইনের মতো চলবে।’
এ দিন ব্রাত্য বলেন, 'সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে অধীর রঞ্জন চৌধুরী, সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য, আবু হেনা, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, নেপাল মাহাতো, ধীরেন বাগদি সহ একাধিক ব্যক্তির। তালিকায় তাদের নামও রয়েছে। সেগুলো নিয়ে কোন চর্চা হচ্ছে না কেন ? একটা ধারণা তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তৃণমূলই কেবল দুর্নীতিগ্রস্ত।’
অন্যদিকে ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'নির্বাচনী হলফনামায় আয়-ব্যয়ের সমস্ত হিসাব দিয়েছি । আয়কর দপ্তর কোন পদক্ষেপ করেনি। রোজগার করা, সম্পত্তি বাড়ানো কোন অন্যায় নয়। এটা জনস্বার্থ মামলা নয়, রাজনৈতিক স্বার্থে করা মামলা।'
২০১১ সাল থেকে তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় দেয়া সম্পত্তির পরিমাণ বহুগুণ বেড়েছে। ২০১৭ সালে এ বিষয়ে বিপ্লব কুমার চৌধুরী ও অনিন্দ্য সুন্দর দাস নামে দুই ব্যক্তি কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন। এই মামলায় ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অরূপ রায়, ব্রাত্য বসু, জাভেদ খান, শিউলি সাহা ও অন্যান্য নেতা মন্ত্রীদের নাম রয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য