ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত হয়েছেন।
উপজেলার গুনিয়াউক ইউনিয়নের গুনিয়াউক গ্রামে রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় নারীসহ উভয় পক্ষের আরও ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিহত ৩৯ বছর বয়সী আক্তার মিয়া গুনিয়াউক গ্রামের খুরশেদ আলীর ছেলে।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, আক্তার মিয়া তার চাচাতো ভাই দুলাল মিয়ার জমি দখল নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। এর সমাধান না হতেই আক্তার ও তার লোকজন জোরপূর্বক জমিতে বাথরুম নির্মাণ করেন। এ নিয়ে রোববার রাতে আক্তার মিয়া ও দুলাল মিয়ার পরিবারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
সংঘর্ষে নারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে আহত আক্তার মিয়াকে গুরুতর অবন্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথেই তিনি মারা যান।
নাসিরনগর থানার ওসি হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’
বন্দর নগর চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ১৩ জন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও তিনজন। আহত হন অন্তত ৫০ জন। তাদের মধ্যে অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।
প্রায় ১০ বছরের ব্যবধানে এবার ঢাকায় বক্স গার্ডার চাপায় মারা গেলেন পাঁচজন।
বাস্তবতা হলো, ওই ঘটনার ১০ বছরেও মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি। মামলার এই দীর্ঘসূত্রতা ঢাকায় বক্স গার্ডার পড়ে প্রাণহানির জন্য দায়ী বলে মনে করছে সচেতন নাগরিক কমিটি।
চট্টগ্রামে গার্ডার ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে কেউ মামলা করেনি। ঘটনার দুদিন পর চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ মামলা করেন। তাতে প্রকল্প পরিচালকসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। সাক্ষী করা হয় ২৭ জনকে।
এর প্রায় এক বছর পর ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর তদন্ত শেষে আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। ২০১৪ সালের ১৮ জুন তৎকালীন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এস এম মজিবুর রহমান প্রতিবেদন গ্রহণ করে আট আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন। পরবর্তীতে ২০২০ সালে মামলাটি চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।
ওই আটজন হলেন- ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আখতারের তৎকালীন প্রকল্প ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনজুরুল ইসলাম, প্রকল্প প্রকৌশলী আব্দুল জলিল, আমিনুর রহমান, আব্দুল হাই, মোশাররফ হোসেন রিয়াজ, মান নিয়ন্ত্রণ প্রকৌশলী শাহজান আলী ও রফিকুল ইসলাম। তাদের মধ্যে রফিকুল ইসলামের নাম মামলার এজাহারে ছিল না। তদন্ত শেষে পুলিশ তার নাম অভিযোগপত্রে যুক্ত করে।
বিচার শুরুর আট বছর পেরিয়ে গেলেও মামলার সাক্ষীদের আদালতে হাজির করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এ বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর অনুপম চক্রবর্তী বলেন, ‘বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার মামলার বিচার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই মামলায় আসামিরা যেন সর্বোচ্চ শাস্তি পান আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।
‘দীর্ঘদিন ধরে মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে চলছিল। ২০২০ সালে সেখান থেকে চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে দেয়া হয়েছে। মামলায় মোট ২৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। রোববারও মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ছিল। সাক্ষী না আসায় তা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘৩ অক্টোবর এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারণ করেছে আদালত। ৩ তারিখে সাক্ষী হিসেবে চিকিৎসক পুলক কুমার বিশ্বাসের আদালতে আসার কথা রয়েছে। তার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়ে গেলে মামলাটি ক্লোজ করতে পারব।’
চট্টগ্রামে ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে ১৬ প্রাণহানির পরও দ্রুত বিচারকাজ শেষ না করাকেই ঢাকায় গার্ডার পড়ে প্রাণহানির জন্য দায়ী করছেন সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সে সময় নিহতদের কারও ময়নাতদন্ত হয়নি। এটাই বলে দেয় এর বিচার কী হতে পারে। আর বিচারব্যবস্থার ওপর আস্থা নেই বলে ক্ষতিগ্রস্তরা সে সময় মামলা করেনি। অথবা মামলা না করার জন্য তাদের ফোর্স করা হয়েছিল। এ দেশে মানুষ বিচার পায় আর্থসামাজিক অবস্থান বিবেচনায়। বড় প্রোফাইলের কেউ না হলে বিচার পায় না।’
তিনি বলেন, ‘বহদ্দারহাটের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলে অন্যান্য বড় প্রকল্পের ঠিকাদাররা সচেতন থাকতেন। ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করলে সবাই সতর্ক হতো। কর্তৃপক্ষ পাবলিকের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখত। চট্টগ্রামের ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেই ঢাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অসতর্ক ছিল। ফলে গার্ডার পড়ে আবারও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।’
অ্যাডভোকেট আখতার কবির আরও বলেন, ‘একটা চাঞ্চল্যকর ঘটনার বিচার নিশ্চিতে তিনটি পক্ষকে সচল থাকতে হয়। পুলিশকে দ্রুত তার কাজটা শেষ করতে হবে। দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিষয়ে আদালতকে জানাতে হবে। তাদের প্রতিবেদনের ওপরই সুষ্ঠু বিচারের বিষয়টি অনেকটা নির্ভর করে।
‘দ্বিতীয়ত, প্রসিকিউশন পক্ষ সাক্ষীদের হাজির করে সাক্ষ্য আদায় করবে, দোষীদের স্বীকারোক্তির ব্যবস্থা করবে। তারা বসে থাকলে মামলা এগোবে না। আর আদালতকে পুরো বিষয়টি তদারকি করতে হবে। এসব হয়নি বলেই মামলাটি এখনও সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে ঝুলে আছে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের পটিয়ায় মাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে পৌরসভার সাবেক মেয়র শামসুল আলম মাস্টারের ছেলে মাইনুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
নগরীর নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে বুধবার বাসে ঢাকা যাওয়ার সময় পথে তাকে আটক করে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ।
নগরীর চান্দগাঁও ক্যাম্পে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, জমির বিরোধের জেরে গত ১৬ আগস্ট মা জেসমিন আকতারকে গুলি করে পালিয়ে যান মাইনুল। হাসপাতালে নেয়ার পর জেসমিনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে পটিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, ঢাকায় পালানোর চেষ্টার সময় বুধবার মাইনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী সাতকানিয়ার রসুলপুর এলাকার একটি গুদাম থেকে পিস্তল জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন আসামি।
কী কারণে বিরোধ- জানতে চাইলে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সাবেক মেয়র শামসুল ছিলেন জাতীয় পার্টির নেতা। গত ১৩ জুলাই বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মারা যান। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বিপুল সম্পত্তি তিনি রেখে যান।
‘সন্তানদের মধ্যে ছোট ছেলে ও মেয়ে থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। গেল ঈদে তারা দেশে আসেন। সম্পত্তি নিয়ে তিন ভাই-বোনের মধ্যে তখন থেকেই বিরোধ শুরু হয়। মাইনুলের অভিযোগ ছিল যে মা দুই ছেলেকে বঞ্চিত করে সম্পত্তি মেয়েকে দেয়ার চেষ্টা করছিলেন।’
এসব বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে গত ১৬ আগস্ট মাইনুল তার মাকে গুলি করেন।
আরও পড়ুন:গরু পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (সিবিআই) হেফাজতে আছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। তার কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই।
সুকন্যার বিপুল সম্পদের উৎস জানতে বুধবার ৪ সদস্যের সিবিআই টিম হানা দিয়েছিল বীরভূমের নিচুপট্টির বাড়িতে। দলে একজন নারী তদন্তকারীও ছিলেন। তারা সরাসরি বাড়ির দোতালায় উঠে যান।
সুকন্যার নামে একাধিক সম্পত্তি, কোম্পানি, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নথি দেখিয়ে তদন্তকারীরা জানতে চান তার উৎস। পেশায় শিক্ষিকা সুকন্যা সব শুনে নিশ্চুপ থাকেন। এক পর্যায়ে কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেন, মা মারা গেছেন। বাবা সিবিআই হেফাজতে। এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মত মানসিক পরিস্থিতি তার নেই।
মানবিক ইস্যু সামনে আসায় মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে তদন্তকারী দল কেষ্ট মন্ডলের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যায়। এর আগে ‘অসুস্থতার’ অজুহাত তুলে ৯ বার সিবিআই নোটিশ এড়িয়ে যান কেষ্ট। দশমবারে তাকে সুযোগ না দিয়ে সিবিআই তাকে গ্রেপ্তার করে ১০ দিনের হেফাজতে নিয়েছে।
কেষ্টকে গ্রেপ্তারের পর পরই সুকন্যার বিপুল সম্পত্তির উৎস জানতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠিয়েছিল সিবিআই। তিনিও জেরা এড়াতে বাবার পথে হাটেন মানসিক কষ্টের কথা জানিয়ে।
তদন্ত সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে, এএনএম অ্যাগ্রোচেন ফুডস এবং নীড় ডেভেলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানা রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল ও তার স্বজনদের নামে। কয়েক কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের নামে।
এদিকে সুকন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে শিক্ষকতা পেশায় তার নিয়োগ বিষয়ে। টেট পাশ না করেই তিনি পেশায় যোগ দেন এবং প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকে অবৈধভাবে বেতন তোলেন। তার জন্য হাজিরা খাতা বাড়িতে আনা হতো বলেও অভিযোগ আছে। এসব বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার তাকে হাইকোর্টে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। সুকন্যা সেখানে গেলে অবশ্য বিচারক তাকে চলমান মামলায় হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।
অনুব্রত মণ্ডল কেষ্টকে রাখা হয়েছে কলকাতার নিজাম প্যালেসের ১৪ তলায় সিবিআই গেস্ট রুমে। সেখানেই তার জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) মেয়েদের ওয়াশরুমে ঢুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এক নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত তানজীন আল আলামিন মেয়েদের ওয়াশরুমে প্রবেশের কথা স্বীকার করলেও কাউকে হেনস্তা করা হয়নি বলে দাবি করেছেন।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সংস্কৃতিবিষয়ক উপসম্পাদক তানজীন আল আলামিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিকেন্দ্রিক সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
অভিযোগ করা ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বুধবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে টিএসসিতে এই ঘটনার শিকার হন বলে দাবি করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর পরামর্শে তিনি সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ ইমেইলে পেয়েছেন জানিয়ে ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এটি খুব দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের যা করণীয় আমরা সেটি করব।’
ছাত্রী তার অভিযোগে লিখেছেন, ‘গত ১৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ৮টা ২০ মিনিটে আমি টিএসসিতে নারীদের জন্য নির্ধারিত ওয়াশরুম ব্যবহার করছিলাম। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তানজীন আল আলামিন মদ্যপ অবস্থায় নারীদের ওয়াশরুমে ঢোকেন। তিনি একটি টয়লেটের দরজা খোলা রেখে অর্ধনগ্ন হয়ে মূত্রত্যাগ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি আমার দিকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন।
‘এতে আমি প্রচণ্ড ভীত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। পরে আমি বন্ধুদের নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাচ্ছিল্যের সুরে কথা বলতে থাকেন। তিনি ভুল স্বীকার করেননি। বরং তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। এমতাবস্থায় আমি হয়রানি ও হুমকির প্রেক্ষিতে অনিরাপদ বোধ করছি এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।’
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ও তার সহযোগীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন শিক্ষার্থী।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে তানজীন আল আমিন বলেন, ‘আমি মেয়েটাকে কোনোভাবে হেনস্তা করিনি। সে সময় আমি প্রাকৃতিক ডাকের চাপে ছিলাম। তাই ভুল করে মেয়েদের ওয়াশরুমে ঢুকে গেছি।
‘ভুল বুঝতে পেরে আমি বের হয়ে পুরুষদের ওয়াশরুমে গেছি। পরে মেয়েটি এবং তার বন্ধুরা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন। আমি তাকে এবং তার বন্ধুদের বারবার সরি বলেছি। আমি যখন হলে চলে আসি, তখন তারা আমাকে ফোন করেন। তখনও আমি বারবার সরি বলেছি। এটি মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে। এখন আমি মেয়েটির সাথে সরাসরি দেখা করব। তিনি যেভাবে বলবেন, সেভাবে করব আমি।’
মদ্যপ থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মেয়েটার হয়তো এ রকম মনে হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর উত্তরায় বক্স গার্ডার দুর্ঘটনার পেছনে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের অবহেলার আরেক নমুনার কথা জানিয়েছে ক্রেন পরিচালনাকারীকে গ্রেপ্তার করা র্যাব।
বাহিনীটি জানিয়েছে, যে গার্ডারটি গাড়িতে তোলা হচ্ছিল, সেটির ওজন ৭০ টন। কিন্তু যে ক্রেন দিয়ে সেটি তোলা হচ্ছিল, সেটি বড়জোর ৫০ টন তোলার ক্ষমতা রাখে।
এই ক্রেনটির কাগজে-কলমে উত্তোলন ক্ষমতা ৮০ টন হলেও পুরোনো হওয়ার কারণে শক্তি ক্ষয়ে সেই ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
গত সোমবার বিকেলে উত্তরার জসিম উদ্দীন মোড়ে রাখা গার্ডারটি একটি গাড়িতে তোলার সময় সেটি পিছলে পাশ দিয়ে চলা একটি প্রাইভেট কারকে পিষ্ট করে। এতে এর পাঁচ আরোহী মারা যান। বেঁচে ফেরেন কেবল দুজন, যাদের বিয়ে হয়েছে দুর্ঘটনার কেবল দুই দিন আগে।
এই দুর্ঘটনার পরপরই জানা যায়, নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি না করেই এই গার্ডারটি তোলা হচ্ছিল। সেদিনই প্রশ্ন ওঠে, ক্রেনটির এই সক্ষমতা ছিল কি না, আর আসলে সেই ক্রেনটি কে পরিচালনা করছিলেন।
তবে ক্রেনের চালক এবং ঠিকাদারি কোম্পানির কর্মীরা সবাই পালিয়ে যাওয়ায় সেদিন এসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি।
দুর্ঘটনার দুই দিন পর ক্রেনচালকসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। আর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কী পাওয়া গেছে, সেটি বাহিনীটি প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার।
দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীটির মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ হারানো ক্রেনটির সর্বোচ্চ ৪৫ থেকে ৫০ টন ওজনের গার্ডার সরানোর সক্ষমতা ছিল। কিন্তু সোমবার ১৫ আগস্ট দুর্ঘটনার দিন এই সক্ষমতার ক্রেনটি দিয়ে ৬০ থেকে ৭০ টন ওজনের গার্ডার সরানো হচ্ছিল।
‘এত ভারী গার্ডার উঠানোর সময় ক্রেনে কাউন্টার ওয়েট রাখার দরকার ছিল। তাও রাখেনি দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। ফলে ক্রেনের বাড়তি ওজন বহন করা সম্ভব হয়নি।’
এই দুর্ঘটনায় ঠিকাদারি কোম্পানির অবহেলার আরেক নমুনার কথা জানান এই র্যাব কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া ক্রেনটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী। চালক নিজেরও এ ধরনের কোনো ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না।’
এই দুর্ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক হাদিউজ্জামান ঠিকাদারি কোম্পানি, বাস্তবায়নকারী সংস্থা আর তদারকি সংস্থা তিন সংস্থার অবহেলাকেই দায়ী করেছিলেন।
সেদিন তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্রেন ঠিক আছে কি না। তার আগে দেখতে হবে ক্রেন যে অপারেট করছিল, তার লাইসেন্স আছে কি না। সে অভিজ্ঞ কি না, এটাও তদন্তের মাধ্যমে দেখতে হবে।
‘আমার গার্ডারের যে ওজন এবং ক্রেনের যে সক্ষমতা, সেটা ঠিক আছে কি না। এই জিনিসটাও গুরুত্বপূর্ণ।’
এখানে প্রশাসনিক অবহেলা আছে বলেও মনে করেন এই দুর্ঘটনা বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটা করছে, ভালো কথা। কিন্তু তারা ঠিকমতো প্র্যাকটিস করছে কি না, এটার নজরদারি বা তদারকির দায়িত্ব তো বাস্তবায়নকারী সংস্থার। এই ধরনের প্রকল্পের সুপারভিশনের দায়িত্ব আরেক সংস্থার থাকে।
‘তার মানে কাজটা ঠিকমতো হচ্ছে কি না, সেটার জন্য সুপারভিশন সংস্থা আছে, আমাদের বাস্তবায়নকারী সংস্থা আছে, এটার একটা সমন্বয় দরকার। আমি যেটা মনে করি, এই ধরনের কাজ একটা বড় কাজ।
‘পাশাপাশি এটা অনেক বিজি একটা করিডর। এই করিডরে কাজ করতে গেলে অবশ্যই যারা বাস্তবায়ন করছে, তাদের ২৪ ঘণ্টা ৭ দিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি এবং তদারকি করতে হবে। কোথাও যদি কনস্ট্রাকশন প্র্যাকটিসের ব্যত্যয় হয়, তাকে কিন্তু জবাব দিতে হবে। এই জবাব দিতে হয় না বলেই আমরা দেখছি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে যেভাবে কাজ করার কথা, সেভাবে হয় না। তাদের মধ্যে অবহেলার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে।’
এই দুর্ঘটনার পর যে প্রাথমিক তদন্ত করেছে সরকার, তাতে ঠিকাদারি কোম্পানির অবহেলার প্রমাণ উঠে এসেছে বলে জানানো হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনায় বাস্তবায়নকারী সংস্থা বিআরটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলামকেও তদন্তের আওতায় আনতে বলেছেন।
এই নির্মাণকাজ নিয়ে সফিকুলের যে অবহেলা রয়েছে, সেটি দুর্ঘটনার দিন তার বক্তব্য ও র্যাবের বক্তব্যের পার্থক্যে উঠে এসেছে। সফিকুল ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেছিলেন, যে ক্রেন দিয়ে বক্স গার্ডারটি তোলা হচ্ছিল সেটির সক্ষমতা ছিল।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘বিআরটি প্রকল্পের থার্ড পার্টি হিসেবে বিল্ড ট্রেড ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেড থেকে মাসিক ভাড়ার চুক্তিতে ক্রেনটি আনা হয়। ক্রেনটি ১৯৯৬-৯৭ সাল থেকে চলছে। প্রথমে ক্রেনটির সক্ষমতা ৮০ টন ছিল। পরে আস্তে আস্তে ক্রেনটির সক্ষমতা কমে যায়। সর্বশেষ ক্রেনটি দিয়ে ৪৫ থেকে ৫০ টন ভর শিফট করা সহজ ছিল। কিন্তু এই ক্রেন দিয়ে ৬০ থেকে ৭০ টন ওজনের গার্ডারটি শিফট করা হচ্ছিল।’
তিনি জানান, ২০২১ সালে সর্বশেষ ফিটনেস যাচাই করা হয়, এরপর ক্রেনটির আর কোনো ফিটনেস যাচাই করা হয়নি।
খন্দকার মঈন বলেন, ‘আমরা গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, অতিরিক্ত ভার বহন করায় ক্রেনটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায়। এ ধরনের গার্ডার শিফট করতে কাউন্টার লোড ব্যবহার করা উচিত ছিল। আরেকটি ক্রেন পাশাপাশি স্ট্যান্ডবাই রাখা উচিত ছিল। নিরাপত্তাব্যবস্থার অনেক ঘাটতি ছিল।’
আরও পড়ুন:নাটোরে শিক্ষক খাইরুন নাহারের মৃত্যুর ঘটনায় ঘুরে-ফিরে সামনে আসছে মোটর সাইকেল প্রসঙ্গ। তার স্বামী কলেজ ছাত্র মামুনের বাইকের দাবি নাকি তার আগের পক্ষের ছেলে বৃন্তের আবদারে সংসারে অশান্তির শুরু? নাকি অন্য কোনো কারণে মৃত্যুর ঘটনা? এসব প্রশ্ন নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।
রাজশাহীর একটি কলেজে একাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত খাইরুন নাহারের আগের পক্ষের ছেলে সালমান নাফি বৃন্ত বলেন, ‘অনেকের ধারণা আমার মাকে খুন করা হয়েছে। যদি এটা মার্ডার না-ও হয় তাহলে সুইসাইড করার জন্য মাকে উৎসাহ দিয়েছে মামুন। টাকা-পয়সাসহ অনেক বিষয়ে সে মেন্টালি প্রেসারে রাখছিল মাকে।
‘ওই ছেলে (মামুন) বিভিন্ন সময়ে টাকা-পয়সা নিত। সে বাইক কেনার টাকা আম্মুর কাছ থেকে নিয়েছে। সব খরচ নিত। আম্মু আমাকেও একটা বাইক কিনে দেয়ার কথা বলেছিল। মামুন এটা কিনতে দিতে বাধা দিচ্ছিল। এটা নিয়েও ওদের মাঝে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। সে রাতেও মামুনের সাথে আম্মুর ঝগড়া হয়েছিল।’
খাইরুনের খালাতো ভাই নাইম হোসেন বলেন, ‘বিয়ের পর খাইরুন নিজের টাকায় মামুনকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন। মামুন আবারও নতুন মডেলের মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। এসব কারণে দুজনের মাঝে মনোমালিন্য হতে থাকে। খাইরুন আত্মহত্যা করলেও এর জন্য একমাত্র মামুনই দায়ী।’
অন্যদিকে মামুন হোসেনের বোন ময়না খাতুন বলেন, ‘ভাই ও ভাবীর মধ্যে কোনোদিন ঝগড়া বিবাদ দেখিনি। ভাবীর বাবার বাড়ি থেকে চাপ ছিল। ভাবীর আগের পক্ষের ছেলে বৃন্ত তার কাছে বাইক কেনার জন্য পাঁচ লাখ টাকা এবং বাড়ি লিখে দেয়ার দাবি করে। আমাদের বিশ্বাস, ছেলের সঙ্গে মনোমালিন্য, বাপ-মা বিয়ে মেনে না নেয়া- এসব কারণে ভাবী আত্মহত্যা করেছেন।’
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, সম্প্রতি তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। খাইরুনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলতেন মামুন। মামুনের সম্মতিতে খাইরুন তার আগের পক্ষের বড় ছেলেকে মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার জন্য টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে মামুন আর ওই টাকা দিতে দেননি। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছিল।’
প্রসঙ্গত, ৪০ বছর বয়সী কলেজ শিক্ষিকা খাইরুন নাহার ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন ২২ বছর বয়সী মামুনকে।
স্থানীয় পৌর এলাকার বাসিন্দা খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খাইরুন নাহার প্রথমে বিয়ে করেছিলেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলায়। প্রথম স্বামীর দুটি সন্তানও রয়েছে। পারিবারিক কলহে সেই সংসার বেশিদিন টেকেনি।
২০২০ সালে তাদের বিচ্ছেদ হওয়ার পর কেটে যায় দীর্ঘদিন। এরই মাঝে ফেসবুকে খায়রুন নাহারের পরিচয় হয় ২২ বছরের তরুণ মামুনের সঙ্গে। মামুনের বাড়ি একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামে। তিনি নাটোরের নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
ফেসবুকে পরিচয় থেকে দুজনের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২১ সালের ২৪ জুন তাদের প্রথম পরিচয় হয়। তারপর ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বরে তারা বিয়ে করেন।
গত রোববার সকালে নাটোর শহরের বলারিপাড়া থেকে কলেজ শিক্ষক খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তার স্বামী মামুন হোসেন কারাগারে রয়েছেন।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে আদালত প্রাঙ্গণে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় দুই আইনজীবীর নামে মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানায় বুধবার রাত ১টার দিকে মামলাটি করেন হামলার শিকার সাংবাদিক আল আমিন শিকদার।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এজাহারনামীয় দুই আসামি হলেন, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার পূর্ব কলাউজান গ্রামের সাহেদুল হক ও আধুনগর আকতারিয়া পাড়া গ্রামের ইসহাক আহমেদ।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সংবাদ সংগ্রহের জন্য বুধবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে গাড়ি নিয়ে চট্টগ্রাম আদালতে যাচ্ছিলেন যমুনা টেলিভিশনের প্রতিবেদক আল আমিন শিকদার ও ক্যামেরাপার্সন আসাদুজ্জামান লিমন। আদালত প্রাঙ্গণে যাওয়ার সময় গাড়ির হর্ন বাজালে কয়েকজন আইনজীবী ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে টেনেহিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন তাদের।
এ সময় হত্যার উদ্দেশ্যে আল আমিনের গলা টিপে ধরেন তারা। মারধরের এ ভিডিও ফুটেজ ধারণ করার সময় ক্যামেরাপার্সন লিমনকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। ভবিষ্যতে কোনো দিন কোর্ট বিল্ডিংয়ে আসার চেষ্টা করলে তাদের জানে মেরে ফেলার হুমকিও দেন আসামিরা।
আরও বলা হয়, মারধরকারীরা একপর্যায়ে ২ সাংবাদিকের পকেট থাকা দুটি স্মার্টফোন ও ৫ হাজার টাকা নিয়ে নেন। এরপর তাদের মারতে মারতে পুরাতন আইনজীবী ভবনের তৃতীয় তলায় নিয়ে যান। সেখানে একটি কক্ষে আটকে রেখে ফের মারধর করা হয় তাদের। এ সময় ভিডিও ক্যামেরার মেমোরি কার্ড ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন তারা। পরে খবর পেয়ে অন্য সাংবাদিকরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মামলার এক নম্বর আসামি সাহেদুল হক। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ওনারা জোরে গাড়ির হর্ন দেয়ায় শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা হর্ন না দিতে বলেছিল; কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তারা আক্রমণাত্মক কথা বলতেছিল। একপর্যায়ে এটা নিয়ে কথা কাটাকাটি থেকে ইসহাক ভাইয়ের সঙ্গে একটু ধস্তাধস্তি হয়েছে। আমি তাদের আলাদা করে চলে গিয়েছিলাম। হামলার বিষয়টি সত্য না’
সিসিটিভি ফুটেজে আল আমিনের গলা চেপে ধরতে দেখা যাওয়ার ও দুই সাংবাদিককে পুরাতন আইনজীবী ভবনে নিয়ে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি এগুলো জানি না, এ রকম কিছু হয়নি।’
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ওসি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাতে আল আমিন একটি এজাহার দায়ের করেছেন, আমরা মামলাটি নিয়েছি। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
এদিকে ২ সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সামাবেশ ও মিছিল করেছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য