সিলেটের কিনব্রিজের নিচে নিজের রিকশায় গা এলিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন চালক আলম মিয়া। ঘামে তার পুরো শরীর ভিজে গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আলম বলেন, ‘সকালে রিকশা নিয়ে বেরিয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত তিনটা ট্রিপও দিতে পারিনি। এই গরমে রিকশা চালানো অসম্ভব। আকাশ থেকে যেন আগুন ঝড়ছে।’
আলমের পাশে দাঁড়িয়েই সড়কের পাশের দোকান থেকে কিনে লেবুর শরবত খাচ্ছিলেন আব্দুল কাদির।
পেশায় ভ্যানচালক কাদির বলেন, ‘কদিন ধরেই খুব গরম। আজকে তো অসহ্য অবস্থা। একটু সময় ভ্যান চালালেই দম একেবারে আটকে আসে। আর সড়কে তো পা দেয়া যাচ্ছে না। পা পুড়ে যাচ্ছে।’
টানা বৃষ্টি আর দীর্ঘ বন্যায় এমনিতেই কাহিল অবস্থা সিলেটবাসীর। এবার গরমে ওষ্ঠাগত প্রাণ। কদিন থেকেই দাবদাহ চলছে সিলেটে। তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির নিচে নামছেই না। বৃহস্পতিবার বিকেলে তা ৩৭ ডিগ্রিতে গিয়ে ঠেকেছে। সকাল থেকেই শুরু হয় তীব্র রোদ। এতে বিপাকে পড়েছেন শ্রমিক শ্রেণির মানুষ।
তাপমাত্রা ৩৭ এর পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে আর্দ্রতা। আবহাওয়াসংক্রান্ত সাইট অ্যাকুওয়েদার অনুযায়ী সিলেটের গড় আর্দ্রতা ৫৭ শতাংশ। একই পরিমাণ আর্দ্রতা ঘরের ভেতরের। যাকে এ সাইট বলছে বিপদজনক অবস্থা। যে কারণে সিলেটের তাপমাত্রা বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার পর থার্মোমিটারে ৩৭ দেখালেও প্রকৃতপক্ষে অনুভূত হচ্ছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো উষ্ণতা।
এই সাইটের তথ্য অনুযায়ী, একই সময় ঢাকার তাপমাত্রা থার্মোমিটারে ৩৫ দেখালেও প্রকৃতপক্ষে অনুভূত হচ্ছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উষ্ণতা।
শেষ আষাঢ়ে আবহাওয়ার এই অগ্নিমূর্তিকে আরও অসহনীয় করে তুলেছে লোডশেডিং। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে গরম বেড়েছে। প্রকৃতির এই রুদ্রমূর্তি শুক্রবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। শনিবার থেকে বৃষ্টি হতে পারে।
গরমের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে নগরের মিরাবাজার এলাকার ব্যবসায়ী রিপন চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটে মাঝামাঝি বলে কিছু নেই। বৃষ্টি তো টানা বৃষ্টি। বন্যা তো ভয়ংকর বন্যা। আবার রোদ হলেও তা অসহনীয়। শরীর পুড়িয়ে দেয়ার মতো।’
তিনি বলেন, ‘একে তো তীব্র গরম তার ওপর কিছুক্ষণ পরপর বিদ্যুৎ চলে যায়। দিনে ৬-৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে ঘরে থাকাও দায় হয়ে উঠেছে।’
অবাধে বৃক্ষ নিধন, জলাশয় ভরাট ও পাহাড় টিলা কাটার কারণে প্রকৃতি এমন অস্বাভাবিক আচরণ করছে বলে মনে করেন পরিবেশবাদী সংগঠন ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবির।
তিনি বলেন, ‘প্রকৃতির ওপর আমরা নির্যাতন চালিয়েছি। এখন প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিচ্ছে।’
আশরাফুল বলেন, ‘এখন তো তীব্র রোদে একটু বিশ্রাম নেয়ার মতো গাছপালাও সড়কের পাশে নেই। উন্নয়নের নামে সব কেটে ফেলা হয়েছে।’
গত ৭ দিন ধরেই তীব্র গরম সিলেটে। বাতাসেরও দেখা নেই। গরমে অতিষ্ঠ মানুষজন একটু বৃষ্টি ও বাতাসের অপেক্ষায় ছটফট করছেন। সূর্য ডোবার পরও তাপমাত্রা কমছে না।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ৭ জুলাই থেকে সিলেটে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। ৭ জুলাই থেকে ৯ জুলাই প্রতিদিন সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
১০ জুলাই ৩৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি, ১১ জুলাই ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি, ১২ জুলাই ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি , ১৩ জুলাই ৩৬ ডিগ্রি এবং ১৪ জুলাই বৃহস্পতিবার ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
সিলেট নগরের সাগরদীঘির পার এলাকার বাসিন্দা সোহাগ আহমদ বলেন, ‘একদিকে রোদের তীব্রতা অন্যদিকে লোডশেডিং। ঘরে-বাইরে কোথাও একদণ্ড শান্তিতে বসার সুযোগ নেই। গরম বাড়ার সঙ্গেসঙ্গে লোডশেডিংও বেড়ে গেছে।’
তবে তীব্র রোদেরও উপকারিতা দেখছেন দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকার বাসিন্দা আজমল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সড়ক এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। রোদের কারণে পানি দ্রুত কমছে। কিন্তু বৃষ্টি হলেই তো পানি আবার বেড়ে যাবে। ফলে আমরা আছি উভয়সংকটে।’
আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আবহাওয়ার বর্তমান পরিস্থিতি আপাতত খুব একটা পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। রোববারের পর বৃষ্টিপাতের প্রবণতা ধীরে ধীরে বাড়বে।’
এই আবহাওয়াবিদের দাবি, বর্ষাকাল মানে ছিটেফোঁটা হলেও বৃষ্টি হয়। কিন্তু তাতে তাপপ্রবাহে জর্জরিত মানুষের জন্য সুখবর নেই।
তরিফুল নেওয়াজ খান বলেন, ‘এখন যদিও খুব সামান্য পরিমাণ বৃষ্টি হয়, এই বৃষ্টিতে কিন্তু যে তাপপ্রবাহ আছে, সেটার খুব একটা পরিবর্তন হবে না। বর্ষাকালে তাপমাত্রা নামার জন্য যে কন্টিন্যুয়াস বৃষ্টিটা দরকার, সেই বৃষ্টিটা হয়তো বা শিগগিরই হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।’
আষাঢ়ের দিন ফুরিয়ে শ্রাবণ আসতে চলল। ভরা বর্ষা মৌসুমেও নেই বৃষ্টি। কেন এমন পরিস্থিতি তার ব্যাখ্যা পাওয়া গেলে তরিফুলের কথায়। এমন অবস্থাকে আবহাওয়াবিদরা বলে থাকেন মনসুন ট্র্যাপ বা মৌসুমি বায়ুর ফাঁদ।
তিনি বলেন, ‘মৌসুমি বায়ুর যে লো প্রেসার এরিয়া ওড়িশা উপকূলের দিকে আছে। ওড়িশা উপকূলের দিকে থাকার কারণে ম্যাক্সিমাম জলীয় বাষ্পগুলো সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ার দিকে চলে যাচ্ছে। ফলে দেখা যাচ্ছে, বৃষ্টিপাতের জন্য প্রচুর ময়েশ্চার আসতে হবে বে অফ বেঙ্গল থেকে, ফলে আমাদের এই অংশে বৃষ্টিপাত হওয়ার জন্য যে পরিমাণ ময়েশ্চার প্রয়োজন, সেই পরিমাণ ময়েশ্চারের জোগানটা আসছে বঙ্গোপসাগর থেকে।’
তবে এই পরিস্থিতি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বদলে যাবে বলে আশা করছেন এই আবহাওয়াবিদ।
তার দাবি, এটা যখন ধীরে ধীরে সেন্ট্রাল ইন্ডিয়া থেকে নর্দার্ন ইন্ডিয়ার দিকে সরে আসবে, বাংলাদেশের দিকে চলে আসবে, তখন প্রচুর ময়েশ্চার বাংলাদেশে আসবে। পরবর্তী সময়ে বৃষ্টিপাতের প্রবণতাটাও বাড়বে।
প্রকৃতির এই উত্তাপের ছাপ পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও। ফেসবুকে গরম নিয়ে হাপিত্যেশ করছেন এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। অনেকেই আবার সুইমিং পুল, ঝরনা বা নদীতে গোসলের ছবি দিচ্ছেন ফেসবুকে।
দুপুরে নগরের মাছিমপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সুরমার জলে দাপাদাপি করছে একদল শিশু-কিশোর। তাদেরই একজন মাইদুল ইসলাম। সে বলে, পানিও গরম হয়ে গেছে। ডুব মেরে থাকলে কিছুটা ভালো লাগে।
আরও পড়ুন:দেশের আট বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে হতে পারে শিলা বৃষ্টি।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জানানো হয়, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গা এবং রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দক্ষিণ/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ায় ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
ঢাকায় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, রোববার ঢাকায় সূর্যোদয় ৫টা ১২ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে এবং তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন:চাষযোগ্য জমি ও মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে বাইসাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন দুই ভারতীয় যুবক।
‘মাটি বাঁচাও’ স্লোগানে ১৫ দিনের সফরে তারা বাংলাদেশের ৯টি জেলা ঘুরে প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন।
শুক্রবার দুপুরে ওই দুই যুবক বগুড়ায় পৌঁছেন।
তারা হলেন কলকাতার নদীয়ার কৃষ্ণপুর এলাকার ৪০ বছর বয়সী পলাশ পাইক ও বেলেঘাটার গৌতম কর্মকার। পলাশ পেশায় শিক্ষক। গৌতম ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার।
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে তারা ১৬ মে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।
যশোর থেকে তারা যান খুলনায়। এরপর গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মুন্সিগঞ্জ, ঢাকা, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ হয়ে বগুড়ায় আসেন।
গৌতম জানান, পৃথিবীতে ক্রমাগতভাবে চাষযোগ্য জমি কমে যাচ্ছে। অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পৃথিবীতে চাষযোগ্য জমি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
পলাশ ও গৌতম বিভিন্ন গবেষণার বরাতে দাবি করেন, পৃথিবীর জনসংখ্যা বাড়ছে। এতে খাদ্য উৎপাদনে বিভিন্ন সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
চাষযোগ্য জমি কমতে থাকলে পৃথিবীর মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে। এ প্রেক্ষাপটে ভারতে ইষা ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন মাটি বাঁচানোর আন্দোলন করছে। ওই আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা বাংলাদেশে সচেতনতা সৃষ্টিতে এসেছেন।
পলাশ জানান, তারা প্রতিদিন একটি জেলার অন্তত ১৫ জন কৃষকের সঙ্গে কথা বলছেন। তাদের বুঝাচ্ছেন, কীটনাশক দিলে মাটির ক্ষতি হয়। এ ছাড়া রাসায়নিক সারের বদলে জৈব সার ব্যবহার এবং বেশি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানাচ্ছেন।
পলাশ বলেন, ‘বগুড়া থেকে নাটোর, রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়ায় ক্যাম্পেইন করে বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে ভারতে ফিরব।’
আরও পড়ুন:দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে সকলের সমন্বিতভাবে কাজ করার তাগিদ জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এই ঝুঁকি নিরসনে আমাদের সম্মন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। অনেক টেকনিক ব্যবহার করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে স্ট্রেংদেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স’ সুপার (সুপার) কনসোর্টিয়াম প্রকল্প আয়োজিত দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বিষয়ক আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে সবচেয়ে বড় কাজটি হয়েছে সিপিপি গঠন। যেটা ছিল পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মতো একটি ধারণা। যা সারা বিশ্বে অনুকরণীয় মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে এবং সাইক্লোনের মতো দূর্যোগ ব্যস্থাপনায় বড় সক্ষমতা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় জ্বলাশয় ভড়াট করে বিল্ডিং তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিবছর ১ লাখ ভবন তৈরি হচ্ছে। কোন নিয়ম-নীতি মানা হচ্ছে না। এতে এই শহর বিপদের মুখে পড়ছে। তাই আমাদের আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে হবে। এই কর্মশালায় সুপার প্রকল্প দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে কাজ করেছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা আগুনের খবর খুব দ্রুত পেয়ে যাবো।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আ ম নাসির উদ্দিন বলেন, স্ট্রেংদেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স' সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্প, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি কৃত্রিক বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক সমাধান কল্ল্যাণপুর বস্তিতে পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করেছে। যা আগুন এবং জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত দুর্যোগ ঝুঁকির আগাম পূর্বাভাস দিতে সক্ষম। ফলে, দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি রোধ অনেকাংশে সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে ১৫-২০ মিনিট লেগে যাচ্ছে। আমাদের এই প্রযুক্তির মাধ্যমে দুর্যোগের ১০ সেকেন্ডের মধ্যে খবর পেয়ে যাবো। এতে দুর্যোগ ঝুঁকির প্রথমেই যেনে গেলে খুব সহজেই আমরা মোকাবেলা করতে পারবো।’
কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিজি একো বাংলাদেশের হেড অব অফিসের আন্না অরলান্ডি, ফায়ার সারভিস এবং সিভিল ডিফেন্স এর সাবেক মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ইঞ্জি. আলি আহমদ খান, ঢাকা ইউনাইটেড পারপাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীরামাপ্পা গঞ্চিকারা, ইউনাইটেড পারপাস বাংলাদেশের দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও জরুরি সাড়াদান ইউনিটের প্রধান মাসুদ রানা, সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আ ম নাসির উদ্দিন ও ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও প্রকৌশল বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন এন্ড হিউমেনিটেরিয়ান এইড (একো) এর অর্থায়নে জনসাধারণ এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মাঝে দুর্যোগে সহনশীলতা গড়ে তোলার জন্য ‘সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে অ্যাকশনএইড, ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন। এই প্রকল্পে কৌশলগত সহায়তাকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দফতর (ইউএনআরসিও)।
আরও পড়ুন:
গবেষকরা ২০০০ সালের দিকে ধরেই নিয়েছিলেন যে বাংলাদেশ থেকে বাটাগুর বাসকা (কালি কাইট্টা) প্রজাতির কচ্চপ একেবারে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে গত ৯ বছরে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে ৩২৬টি কচ্চপের জন্ম হয়েছে। সেখান থেকে ৫২টি কচ্ছপকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়েছে। প্রকৃতিতে ফিরছে বিলুপ্তপ্রায় এই কচ্ছপ।
এমনই বাস্তবতায় ২৩ মে মঙ্গলবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব কচ্ছপ দিবস।
করমজল প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘অনেক খোঁজাখুঁজির পর ২০০৮ সালের দিকে ভোলা, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার কয়েকটি পুরনো জমিদার বাড়ির পুকরে ৮টি বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপ পাওয়া যায়। সেগুলোর মধ্যে ছিল চারটি নারী ও চারটি পুরুষ। এরপর উদ্যোগ নেয়া হয় পরিচর্যার মাধ্যমে এগুলোর প্রজনন ঘটিয়ে বংশ বিস্তারের।
‘ওই বছরই গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে প্রজননের কাজ শুরু হয়। সেখানে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৯৪টি বাচ্চার জন্ম হয়। কিন্তু বাচ্চাগুলো বার বার অসুস্থ হতে থাকে। কারণ প্রজাতিটি ঈষৎ লবণযুক্ত পরিবেশে ভাল বংশ বিস্তার করে। ভাওয়ালে তেমন পরিবেশ নেই।’
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মূল ৮টি কচ্ছপ ও ভাওয়ালে জন্ম নেয়া ৯৪টি বাচ্চা ২০১৪ সালে লবণাক্ত বনভূমি সুন্দরবনের করমজলে নিয়ে আসা হয়। সেখানে গবেষণায় বাংলাদেশ বন বিভাগের সঙ্গে আরও তিনটি সংস্থা যোগ দেয়। এগুলো হলো- প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, অস্ট্রিয়ার জু ভিয়েনার গবেষণা দল ও যুক্তরাষ্ট্রের টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স। পুকুরে তাদের পরিচর্যা শুরু হয়। ডিম দেয়ার উপযোগী করে পুকুর পাড়ে স্যান্ড বিচ তৈরি করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে কেন্দ্রটিতে ডিম দিতে শুরু করে মহাবিপন্ন প্রজাতির বাটাগুর বাসকা কচ্ছপগুলো।
হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘করমজলে প্রথমে ২০১৭ সালে দুটি কচ্ছপ ৬৩টি ডিম পাড়ে। তা থেকে ৫৭টি বাচ্চার জন্ম হয়। বাটাগুর বাসকার প্রজাতির কচ্ছপের চলাফেরা, পছন্দের পরিবেশ ও যাত্রাপথসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য জানতে ২০১৭ সালে অবমুক্ত করা দুটি কচ্ছপের দেহে ট্রান্সমিটার লাগিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল সুন্দরবনের নদীতে।
এরপর প্রতি বছরই ডিম দিচ্ছে ও বাচ্ছার জন্ম হচ্ছে। গবেষণার জন্য এগুলোকে প্রকৃতিতেও অবমুক্ত করা হচ্ছে। বর্তমানে করমজলে ৪৩২টি বাটাগুর বাসকা রয়েছে।’
প্রকৃতিতে বাটাগুর বাসকা টিকে আছে কি-না, তা জানতে ট্রান্সমিটার লাগানো হয়েছিল শুধু পুরুষ কচ্চপের গায়ে। গবেষকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর পাঁচটি বাটাগুর বাসকার শরীরে রেডিও ট্রান্সমিটারের সঙ্গে স্যাটেলাইট যুক্ত করে সুন্দরবনের ৪৩ নম্বর কম্পার্টমেন্ট এলাকা কালিরচরে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবমুক্ত করা হয়। অবমুক্ত হওয়া বাটাগুর বাসকাগুলোর বিচরণ ও জীবনাচার ভিয়েনা থেকে পর্যবেক্ষণ করা হতে থাকে। তবে প্রকৃতিতে কোনো নারী বাটাগুর বাসকার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সাধারণত এক বছর পর খোলস বদলালে কচ্ছপের দেহ থেকে ওই ট্রান্সমিটার পড়ে যায়।
ঈষৎ লবণযুক্ত পরিবেশ বাটাগুর বাসকা বসবাসের উপযোগী হলেও, মিঠা ও নোনা দুই ধরনের পানিতেই এরা টিকে থাকতে পারে। এই ক্ষমতা অন্য কোনো কচ্ছপের নেই। এদের দেহ অপেক্ষাকৃত বড়। দৈর্ঘ্যে প্রায় ৬০ সেন্টিমিটার ও ওজন ১৮ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
পুরুষ কচ্ছপের খোলস বা কৃত্তিকাবর্ম বাদামি থেকে সবুজ। স্ত্রী কচ্ছপের ক্ষেত্রে জলপাই ধূসর রঙের। মাথা ছোট, তুণ্ড উপরের দিকে বাঁকানো, সূঁচালো এবং বেশ প্রসারিত। প্রকৃতিতে এরা বেঁচে থাকতে পারে ৪০ থেকে ৭০ বছর পর্যন্ত।
আজাদ কবির বলেন, ‘বাটাগুর বাসকা সাধারণত পূর্ণিমা গোনের কাছাকাছি সময়ে রাতের শেষভাগে পুকুর পাড়ের বালুতে প্রায় এক ফুট গর্ত করে ডিম পাড়ে। পরে সেই ডিম তুলে নিয়ে ইনকিউবেশনে (বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ) রাখা হয়। ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তামপাত্রায় ইনকিউবেশনে রাখলে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।
‘গবেষণার জন্য করমজল থেকে এখনও মাঝেমধ্যে কিছু বাচ্চা গাজীপুরের ভাওয়ালে নেয়া হয়। এই গবেষণায় বেশ সফলতা এসেছে। আর সে সুবাদে বিলুপ্তপ্রায় এই কচ্ছপ ধীরে ধীরে ফিরে আসছে প্রকৃতিতে।’
এক সময় সুন্দরবন থেকে শুরু করে মিয়ানমার-থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়া উপকূল পর্যন্ত বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের বসতি ছিল। তবে কিছু মানুষের খাবার হিসেবে এই কচ্ছপের দিকে দৃষ্টি এবং প্রকৃতির বিরূপতায় এটি বিলুপ্ত হতে বসেছিল।
প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ে কাজ করা সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচারের (আইইউসিএন) তালিকায় এই প্রাণীর নাম মহাবিপন্ন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। ফলে এটি শিকার, মাংস বা অংশবিশেষ অথবা এর থেকে উৎপন্ন দ্রব্য দান, বিক্রি বা অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
আরও পড়ুন:রাজধানীর সাত মসজিদ রোডসহ ঢাকার সব পাবলিক পরিসরে গাছ কাটা বন্ধ এবং কাটা গাছের স্থানে দেশীয় প্রজাতির গাছ রোপণসহ পাঁচ দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়েছে।
‘সাতমসজিদ সড়ক গাছ রক্ষা আন্দোলন’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে নগর ভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করে আন্দোলনকারীরা। পদযাত্রায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ গাছ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতির ব্যানার নিয়ে অংশ নেন।
পদযাত্রাটি নগর ভবনে পৌঁছানোর আগেই বঙ্গবাজার সংলগ্ন এনেক্সকো টাওয়ার এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে আন্দোলনকারীদের থামিয়ে দেয় পুলিশ।
পরে সেখানেই সড়কের একাংশে অবস্থান নেন তারা। এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘যেই মেয়র গাছ কাটে সেই মেয়র চাই না’, ‘গাছ কেটে উন্নয়ন, রুখে দাও জনগণ’, ‘নিষ্ঠুর নগর প্রশাসন চাই না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, মেয়র কিংবা সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের তাদের সামনে এসে গাছ কাটার ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।
এ সময় তার কাছে সাত মসজিদ সড়কের গাছ কাটা বন্ধ করে সেই স্থানে দেশীয় প্রজাতির গাছ লাগানো, প্রকল্পের নামে বাণিজ্য বন্ধ, বৃক্ষ ও নগরবাসীবান্ধন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণের মাধ্যমে নগরের গাছ ও সবুজবলয় সুরক্ষা, ধানমন্ডির সাত মসজিদ সড়কসহ সব পাবলিক পরিসরে উন্নয়নের নামে গাছ কাটা বন্ধ, নগর উন্নয়নে প্রকৃতিভিত্তিক পরিকল্পনার দাবি জানানো হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘উন্নয়নকাজে কিছু গাছ কাটা পড়েছে। নগরের যে কোনো উন্নয়নকাজ সিটি করপোরেশনের প্রকোশলী, নগর পরিকল্পনাবিদসহ বিভিন্ন অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে গ্রহণ করা হয়। যেসব গাছ কাটা হয়েছে সেখানে নতুন করে গাছ লাগানো হবে।’
দাবিগুলো মেয়রকে জানিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন এই নির্বাহী কর্মকর্তা।
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আমিরুল রাজিব বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছি। কিন্তু কোনো উসকানি ছাড়াই পুলিশ বাধা দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমাদের দাবি তাদের অবশ্যই মানতে হবে। না হলে আমরা আরও জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলব।’
আরও পড়ুন:দেশের আট বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে সোমবার থেকে বুধবারের মধ্যে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জানানো হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গা এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দক্ষিণ/দক্ষিণপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার, যা অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
ঢাকায় রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৩৭ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সোমবার ঢাকায় সূর্যোদয় ৫টা ১৩ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন:বাতাসের নিম্ন মানের দিক থেকে আইকিউএয়ারের তালিকায় বিশ্বের ১০১টি শহরের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, যেখানে ঢাকার অবস্থান চতুর্থ।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানির র্যাঙ্কিংয়ে রোববার সকাল ৮টা ৫১ মিনিটে ওই অবস্থানে ছিল শহর দুটি। একই সময়ে বাতাসের নিম্ন মানের দিক থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল ভারতের দিল্লি ও চীনের শেনইয়াং।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ সকালের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ১৫ দশমিক ৩ গুণ বেশি। একই সময়ে লাহোরের বাতাসে পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল ডব্লিউএইচওর আদর্শ মাত্রার চেয়ে ২৬ দশমিক ২ গুণ বেশি।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
সকাল ৮টা ৫১ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৬২। এর মানে হলো সে সময়টাতে অস্বাস্থ্যকর বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয় রাজধানীবাসীকে। একই সময়ে লাহোরের বাতাসের স্কোর ছিল ১৯০। এর অর্থ হলো ওই সময়ে অস্বাস্থ্যকর বাতাস নিতে হয় লাহোরবাসীকেও।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য