যশোর যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধোনিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানায় বুধবার রাতে মামলাটি করেন নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান মণি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) বেলাল হোসাইন নিউজবাংলাকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ের বাসিন্দা ও যশোর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমেদ মানুয়া, শহরের আশ্রম রোডের আকাশ, রায়হান, টিবি ক্লিনিক ফুড গোডাউনের পাশের মন্টু ওরফে অপূর্ব ওরফে আলী রাজ, টিবি ক্লিনিক এলাকার আল আমিন, মিলন, শংকরপুর হারান কলোনির ইছা মীর এবং চোপদারপাড়া রোডের রিজভী।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে যশোরের নাজির শংকরপুরে আকবরের মোড় এলাকায় ধোনিকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
পুলিশ বলছে, স্থানীয় যুবলীগ কর্মী ইয়াসিন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হলেও এলাকায় সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন ধোনি। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
ওই এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে এবং জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি ছিলেন তিনি।
স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যা হয়েছে বলে নিশ্চিত পুলিশ। কর্মকর্তাদের ধারণা, খুনিরা ধনির পরিচিতই।
যশোর পুলিশের মুখপাত্র গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিদর্শক রূপন কুমার সরকার বলেন, ‘জড়িতদের আটকের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
ধোনি হত্যায় প্রাথমিক তদন্তে রায়হান নামের একজনকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। তাকে আটক করতে পারলে হত্যার জট খুলবে বলে ধারণা বাহিনীটির।
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলে নৈশ কোচে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তাদের মধ্যে ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী রতন হোসেনও আছেন।
রোববার রাতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
টাঙ্গাইলের মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় পরিকল্পনাকারী রতন হোসেনসহ ডাকাত চক্রের ১০ জনকে ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে র্যাব জানায়।
এর আগে আলোচিত এ মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তারা হলেন, রাজা মিয়া, মো. আব্দুল আউয়াল ও মো. নুরনবী। গ্রেপ্তার হওয়া তিন আসামি দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
ধর্ষণের শিকার ওই নারী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন। ওইদিন তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় বলে চিকিৎসকরা জানান।
এ ঘটনায় বাসের যাত্রী কুষ্টিয়ার হেকমত আলী বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা করেন।
মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল এক্সপ্রেসের একটি বাসে ডাকাতি ও এক নারী যাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালুর ঢিবির কাছে বাসের গতি থামিয়ে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন:প্রযুক্তিপণ্যের অন্যতম ব্র্যান্ড গিগাবাইটের নকল ও রিফারবিশড (মেরামত করা) পণ্যে দেশের বাজার সয়লাবের অভিযোগ তুলেছেন খাতটির ব্যবসায়ীরা।
এসব পণ্য বিক্রি করে গিগাবাইটের নামে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন বলেও জানান ব্যবসায়ীরা। তাই গ্রাহকদের গিগাবাইটের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে দেশের একমাত্র পরিবেশক প্রতিষ্ঠান স্মার্ট টেকনোলজিসের দেয়া ওয়ারেন্টি দেখে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এমন আহ্বান জানায় গিগাবাইট।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে গিগাবাইট পণ্যের একমাত্র পরিবেশক স্মার্ট টেকনোলজিসের বিতরণ ব্যবসা পরিচালক জাফর আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ থেকে অসাধু ব্যবসায়ীরা গিগাবাইটের নকল ও রিফারবিশড পণ্য দেশে আনছেন। সেগুলোতে থাকছে না কোনো ওয়ারেন্টি সেবা, বিক্রি হচ্ছে গাগাবাইটের নামেই। ফলে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন তারা, কোনো সমাধান পাচ্ছেন না। এটি দেশের ক্রেতাদের জন্য হুমকি। তাই নকল গিগাবাইট পণ্য থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহারকারীদের অবশ্যই স্মার্টের স্টিকার ও বিক্রয়োত্তর সেবা দেখে পণ্য কিনতে হবে।’
গিগাবাইট বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার খাজা মো. আনাস খান জানান, এখন দেশে আগের মতো গিগাবাইট শুধু গ্রাফিক্স কার্ড ও মাদারবোর্ড আনে না, এর পাশাপাশি মনিটর থেকে শুরু করে অন্য প্রয়োজনীয় কম্পিউটার পণ্যও আনে।
তিনি বলেন, ‘এখন গিগাবাইট বলতে শুধু মাদারবোর্ড আর গ্রাফিক্স কার্ড নয়, আরও অনেক কিছু বোঝেন ক্রেতারা। ফলে এসব পণ্য যখন অসাধু ব্যবসায়ীরা দেশে আনছেন তখন শত শত কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিচ্ছেন। এসব নকল ও রিফারবিশড পণ্য সম্পর্কে আমরা বিষয়টি বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতিকে (বিসিএস) জানিয়েছি। প্রয়োজনে আমরা আইনগত ব্যবস্থাও নেব।’
তিনি জানান, এখন দেগশে গিগাবাইটের মাদারবোর্ড ও গ্রাফিক্স কার্ড ছাড়াও বর্তমানে গিগাবাইট ব্রান্ডের ল্যাপটপ, মনিটর, র্যাম, এসএসডি, কেসিং, পাওয়ার সাপ্লাই, কুলার, মাউস, কি-বোর্ডও পাওয়া যাচ্ছে দেশের বাজারে।
এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলন থেকে নতুন সিরিজের মাদারবোর্ড আনার ঘোষণাও দেয় গিগাবাইট। ইন্টেলের নতুন প্রজন্মের প্রসেসরগুলোর কার্যকারিতা সঠিকভাবে ব্যবহারের সুযোগ দিতে তাই দেশে গিগাবাইট তাদের ইন্টেল ৬০০ সিরিজের মাদারবোর্ডের বায়োস হালনাগাদ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন স্মার্ট টেকনোলজিসের চ্যানেল সেলস ডিরেক্টর মুজাহিদ আলবেরুনী সুজনসহ অন্যরা।
চট্টগ্রামে নির্বিচারে পাহাড় কেটে তৈরি করা ঘর-বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পাহাড় কাটা ও সেখানে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া পাহাড় কেটে এসব স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনের ১৫ ধারা অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এর সঙ্গে একাধিক রুল জারি করেছে আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে রোববার বিচাপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিটকারী মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রিপন বাড়ৈ ও সঞ্জয় মণ্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদালত আদেশের পাশাপাশি রুল জারি করেছেন। রুলে চট্টগ্রামের পাহাড়ে ঘর-বাড়ি নির্মাণ বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
‘একইসঙ্গে পাহাড় কাটা এবং পাহাড়ে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা-ও জানতে চেয়েছেন আদালত।’
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বন ও পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
কেউ যাতে আর পাহাড় না কাটতে পারে সেজন্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে মনিটরিং সেল গঠন করতে বলেছে আদালত।
গত ২৬ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ‘চট্টগ্রামে পাহাড়ে লোভের কোপ: পাহাড় কেটে প্লট, উঠছে দালান’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে ১ আগস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করে এইচআরপিবি।
আরও পড়ুন:অ্যাম্বুলেন্সে স্ত্রীর লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আয়নালের পরিবার ও আহতদের ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে সড়ক পরিবহন আইনের অধীনে গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের ফান্ড গঠনে কী অগ্রগতি হয়েছে তা দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে জানাতে বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ঢাকার রূপনগরের সবজি বিক্রেতা আয়নাল হোসেন অ্যাম্বুলেন্সে স্ত্রীর লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার পথে বগুড়ার শেরপুরে শ্যামলী পরিবহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই আয়নাল হোসেনের মৃত্যু হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্সের চালকও মারা যান। আহত হন আয়নাল হোসেনের তিন সন্তানসহ বেশ কয়েকজন।
এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছিল। শ্যামলী পরিবহনের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। পরে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সাতজন।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য ডলি পারভীনকে ৭০ লাখ ৫০ হাজার, রোজিনা খাতুনকে ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, নিহত আয়নালের তিন ছেলে যথাক্রমে ফরহাদ হোসেনকে ৮ লাখ টাকা, ফিরোজ হোসেনকে ৫ লাখ টাকা, ফরিদ হোসেনকে ৫ লাখ টাকা, আহত দুলফিজুর রহমান রতনকে ৯ লাখ টাকা এবং ক্ষতিগ্রস্ত অ্যাম্বুলেন্স বাবদ পিপল রিনেমেট অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট কাউন্সিলের পরিচালক আব্দুল আলী বাশারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিটটি করা হয়।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘আদালত শুনানি নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রিটকারী সাতজনকে ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। আর সড়ক পরিবহন আইনের অধীনে গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের ফান্ড গঠনে অগ্রগতি সম্পর্কে দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে জানাতে বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
সড়ক ও পরিবহন সচিব, আইন সচিব, বিআরটিএ চেয়ারম্যান ও শ্যামলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান আইনজীবী।
আরও পড়ুন:গাজীপুরে স্বামীকে মারধরের পর চলন্ত বাস থেকে ফেলে নারীকে ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছেন পাঁচ আসামি।
জেলা মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে রোববার বিকেলে আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
একই সময় বিচারিক হাকিম আদালত-৫-এর বিচারক রিফাত আরা সুলতানা ২২ ধারায় অভিযোগকারী নারীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সানোয়ার হোসেন এসব নিশ্চিত করেছেন।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম শফিউল্লাহ রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, শনিবার ভোরে ওই নারীকে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মহানগর পুলিশের একটি টহল দল। কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, স্বামীকে বাস থেকে ফেলে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
এসপি আরও জানান, ঘটনা জানার পর মহাসড়কে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার দিনভর অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার এবং বাসটি জব্দ করা হয়। ওই নারী আসামিদের শনাক্ত করেন।
আসামিরা হলেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার দরিপাড়া গ্রামের ২৩ বছর বয়সী রাকিব মোল্লা, নেত্রকোণা জেলা সদর উপজেলার গুপিরঝুপা গ্রামের ২০ বছর বয়সী সুমন খান, ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাঁঠালকাচারি গ্রামের ২৩ বছর বয়সী মো. সজিব, একই জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার বিলডোলা গ্রামের ১৯ বছর বয়সী মো. শাহীন মিয়া এবং খুলনার রূপসা উপজেলার খান মোহাম্মদপুর এলাকার ২২ বছর বয়সী মো. সুমন হাসান।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোববার দুপুরে অভিযোগ করা নারীর শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে জানিয়েছেন ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সানজিদা হক।
তিনি জানান, ধর্ষণের বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষা জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
যা ঘটেছিল
বাসে ধর্ষণের অভিযোগে ওই নারীর স্বামী শ্রীপুর থানায় শনিবার রাতে মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন এজাহারের বরাতে জানান, নওগাঁ থেকে শুক্রবার রাত ৩টার দিকে গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া বাইপাসে স্বামীর সঙ্গে নামেন ওই নারী। ময়মনসিংহের স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাড়িতে যেতে অন্য একটি গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা। রাত ৩টা ১০ মিনিটে তাকওয়া পরিবহনের বাসে ওঠেন। সে সময় বাসে ছয়-সাতজন যাত্রী ছিলেন।
বাদীর অভিযোগ, রওনা দেয়ার কিছু সময় পর বাসটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের হোতাপাড়ায় পৌঁছালে দুজন যাত্রী নেমে যান। রাত ৩টা ৪০ মিনিটে মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা ফ্লাইওভার পার হয়ে কিছুদূর সামনে গেলে বাসে থাকা দুই-তিনজন এসে হঠাৎ তাকে মারধর শুরু করে। তার স্ত্রী ঠেকাতে গেলে মুখ চেপে ধরা হয়। এরপর বাদীর টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এমসি বাজার এলাকায় তাকে ফেলে দেয়া হয়। তার স্ত্রীকে নামতে দেয়া হয়নি।
এজাহারে আরও বলা হয়, চলন্ত বাসেই ওই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এরপর জৈনাবাজারে ইউটার্ন নিয়ে তাকে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় ফেলে রেখে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন:১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে বিয়ের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগে নাহিদ হাসান নামে এক যুবককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
রোববার বিকেলে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক তারিক হোসেন এই আদেশ দেন। এ সময় অভিযুক্ত নাহিদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জলসিংপুর বাউড়া কোর্ট গ্রামের মোতালেব হোসেনের কিশোরী কন্যার সঙ্গে একই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে নাহিদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও তৈরি হয়। এতে মেয়েটি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের স্বজনরা নাহিদকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এই প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
কিছুদিন পর ২০২১ সালের ২২ এপ্রিল ওই কিশোরীকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে বাড়ির অদূরে একটি ভুট্টাক্ষেতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।
দুদিন পর ভুট্টাক্ষেতে মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন এলাকাবাসী। পরে নিহতের বাবা মতলুব হোসেন মিঠাপুকুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় তখন আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
তবে পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে নাহিদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আদালত সূত্র জানায়, মামলায় ১৪ জনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিচারক আসামি নাহিদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রায় দেন।
সরকারপক্ষের আইনজীবী নয়নুর রহমান টফি বলেন, ‘আমরা মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আসামি যে অপরাধ করেছে, তার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি আশা করেছিলাম। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।’
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল হক প্রমাণিক বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
আরও পড়ুন:অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় পুলিশের বরখাস্ত হওয়া উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়েছে।
ঢাকার বিশেষ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে রোববার মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি। এ জন্য আগামী ১৪ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করে আদালত।
মামলাটিতে অভিযোগপত্রের ৩৩ সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
দুদকের মামলায় আসামিরা হলেন ডিআইজি মিজান, তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে মাহমুদুল হাসান। এর মধ্যে সোহেলিয়া ও মাহবুবুর পলাতক।
২০১৯ সালের ২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
২০২০ সালের ১ জুলাই মিজানকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করা হলে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠান বিচারক।
ওই মামলার বর্ণিত সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধানের সময় দুদক কর্মকর্তা এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেয়ার কথা নিজে গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন ডিআইজি মিজান। ওই মামলাটি ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন।
ঘুষ লেনদেনে দুদকের করা মামলায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি দুদকের বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে আট বছর ও পুলিশের বরখাস্ত ডিআইজি মিজানকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
এর মধ্যে মিজানকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ও বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬৫(এ) ধারায় তিন বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। অন্যদিকে মানিলন্ডারিং আইনের ৪ ধারায় বাছিরকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন দুদকের এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য