বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ ঈদ উদযাপন শেষে নতুন প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য এবং সিভিল স্টাফদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর বুধবার সকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
আইজিপি বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহায় পুলিশ সদস্যরা কোরবানির পশু পরিবহন ও পশুর হাটের নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ও পথে-প্রান্তরে প্রান্তিক মানুষের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি এজন্য সব পুলিশ সদস্যকে ধন্যবাদ জানান।
করোনা সংক্রমণ রোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও আহ্বান জানান আইজিপি।
পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলা ডলারের দৌড় থামাতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপরও কমছে না মুদ্রাটির তেজি ভাব, কাটছে না সংকট।
ডলারের বাজারে অস্থিরতা চলছে কয়েক মাস ধরে। বেড়েই চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর এই মুদ্রার দর। কমছে টাকার মান। দুই মাসের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে প্রায় ৭ শতাংশ; এক বছরে বেড়েছে ১২ শতাংশের বেশি।
বাজারে ‘স্থিতিশীলতা’ আনতে ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১ মাস ৮ দিনে (১ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট) বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ থেকে ১৫০ কোটি (দেড় বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোমবারও রাষ্টায়ত্ত জ্বালানি তেল আমদানি ও বিপণন সংস্থা বাংলাাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) তেল আমদানি এবং বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প করপোরেশনের (বিসিআইসি) সার আমদানির এলসি (ঋণপত্র) খুলতে ব্যাংকগুলোর কাছে ১৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়েছে।
এ হিসাবে এই ১ মাস ৮ দিনে গড়ে প্রতিদিন ৪ কোটি ডলার বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে কখনোই এত কম সময়ে ব্যাংকগুলোর কাছে এত বেশি ডলার বিক্রি করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত ২০২১-২২ অর্থবছরের পুরো সময়ে ৭ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি উল্লম্ফন ও আমদানি ব্যয় কমায় বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজার থেকে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কারণেই বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। সেই চাহিদা পূরণের জন্যই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাজারে ডলার ছাড়া হচ্ছে। আসলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম প্রধান কাজ এটি। যখন বাজারে ডলারের ঘাটতি দেখা দেবে তখন ডলার বিক্রি করা হবে। আবার যখন সরবরাহ বেশি হবে তখন কেনা হবে।’
সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এ কথা ঠিক যে, এখন বেশি বিক্রি করা হচ্ছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে করোনা মহামারির ধাক্কা কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সব দেশের মতো আমাদেরও আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। সে কারণেই বেশি ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। রিজার্ভের ওপরও চাপ পড়ছে।
‘তবে সুখের খবর হচ্ছে, আমদানি কমতে শুরু করেছে। রপ্তানির পাশাপাশি রেমিট্যান্সও বাড়ছে। শিগগিরই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’
এদিকে কিছুদিন ‘স্থির’ থাকার পর যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে আরও ৩০ পয়সা দর হারিয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকা। আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে সোমবার এক ডলারের জন্য খরচ করতে হয়েছে ৯৫ টাকা।
এর আগে সবশেষ ২৫ জুলাই ডলারের বিপরীতে টাকার মান ২৫ পয়সা কমে দাঁড়ায় ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা।
অন্যদিকে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে সোমবার ডলারের দর উঠেছে ১১৫ টাকা ৬০ পয়সা।
ব্যাংকগুলো নগদ ডলারও বেশি দামে বিক্রি করেছে। সিটি ব্যাংক ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। ইস্টার্ন ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০৬ টাকা ৫০ পয়সা দরে। এসআইবিএল থেকে নগদ ডলার কিনতে লেগেছে ১০৩ টাকা ২৫ পয়সা।
অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক সোমবার ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। অগ্রণী ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০৪ টাকায়। জনতা ব্যাংক থেকে নগদ ডলার কিনতে লেগেছে ১০৩ টাকা। আর সোনালী ব্যাংক নিয়েছে ১০২ টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, এক মাসের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ৭ শতাংশের মতো। আর এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ১২ শতাংশ।
খোলাবাজারে ডলারের চাহিদা বাড়লে মুদ্রা বিনিময়ের প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত ব্যাংক থেকে ডলার কিনে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে থাকে। এখন ব্যাংকেও ডলারের সংকট। এ জন্য অনেক ব্যাংক এখন উল্টো খোলাবাজারে ডলার খুঁজছে।
আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে দেশে ডলারের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডলারের দাম। এ জন্য রিজার্ভ থেকে ডলার ছেড়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিনিয়ত দামও বাড়াচ্ছে। তারপরও সংকট কাটছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক যে দামে ডলার বিক্রি করছে, ব্যাংকগুলোতে তার চেয়ে ৭ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে ডলার বিক্রি করছে। ফলে আমদানিকারকদের বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে।
অনেক ব্যাংক পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম ১০৫ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। বাজারে ডলারের ব্যাপক চাহিদা থাকায় অনেক ব্যাংক ১১০ টাকা দিয়ে ডলার সংগ্রহ করছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।
এদিকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে দর বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়ায় ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে পাঁচটি দেশি এবং একটি বিদেশি ব্যাংক। সোমবার ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে লেখা চিঠিতে এই নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ডলারের কারসাজি রোধে খোলা বাজার ও এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোতে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনার পর এবার ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রিজার্ভ ৩৯ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার
ডলার বিক্রির কারণে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ চাপের মধ্যে রয়েছে। সোমবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৯ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। জুলাই মাসের ৫ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলারের আমদানি খরচ হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে সাত মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
১২ জুলাই এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। চাহিদা মেটাতে রিজার্ভ থেকে অব্যাহতভাবে ডলার বিক্রির ফলে আরও কমে গেছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এই সূচক।
আরও পড়ুন:ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে চলতি বছর অন্যতম খাদ্যশস্য গম ও ভুট্টা আমদানি ব্যাহত হচ্ছে।
এ লক্ষ্যে গম ও ভুট্টার সংকট কাটাতে দেশীয় পর্যায়ে উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এ দুই খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়াতে চাষিদের জন্য এক হাজার কোটি টাকার পুনরর্থায়ন তহবিল করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ তহবিলের আওতায় কৃষক সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন।
সবশেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে সার্কুলার জারি করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, তিন বছর মেয়াদি এ তহবিল থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ সুদে অর্থ পাবে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকপর্যায়ে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে।
চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে এ তহবিলের মেয়াদ শুরু হবে।
কোভিড-পরবর্তী আর্থিক সংকট মোকাবিলায় দেশের কৃষি খাত গতিশীল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি।
গত অর্থবছরে কৃষিঋণের লক্ষ্য ছিল ২৮ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা।
ব্যাংকগুলো মোট ২৮ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে, যা অর্থবছরের মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন:রাজধানীর কামরাঙ্গীর চরে এসপিএ ডায়গনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক হাসান মিসবাহ ও ক্যামেরা পারসন সাজু মিয়ার ওপর হামলা হয়েছে।
ডায়গনস্টিক সেন্টারটির মালিক ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এ সময় দুই সাংবাদিককে মারধর করেন। তাদের ক্যামেরা ভাংচুর করা হয় এবং ছিনিয়ে নেয়া হয় মোবাইল ফোন ও গাড়ির কাগজপত্র। শুধু তাই নয়, প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাদেরকে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসেও ওই দুই সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়।
আহত সাংবাদিক হাসান মিসবাহ বলেন, ‘ওই হাসপাতালে একজন ভুয়া চিকিৎসক বসেন। তিনি অন্য একজন চিকিৎসকের বিএমডিসি নম্বর ব্যবহার করে ওই হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে বসে আছেন।
‘ওই হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডাক্তার ওসমানীকে এই ভুয়া চিকিৎসকের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ক্ষেপে যান। তখন আমি বলি- আপনি এই হাসপাতালের মালিক ও একজন ডাক্তার। আপনার নামের পাশেও বিএমডিসি নম্বর লেখা নেই। এটা লেখা থাকলে ভাল হয়।’
হাসান মিসবাহ বলেন, ‘কথোপকথনের এই ডাক্তার ওসমানী বলে ওঠেন- তুই কি আমাকে ভুয়া ডাক্তার মনে করছিস? তুই জানিস আমি কে? দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি। এই তোকে ইন্টারভিউ দেব না।
‘এ পর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার চশমা ভেঙে ফেলেন। আমরা বের হয়ে গাড়িতে আসার পর উনি সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। ড্রাইভারের কাছ থেকে মোবাইল গাড়ির কাগজ নিয়ে নেয়। এরপর তিনি আমার মোবাইল ফোন সেট কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন। আমাকে ও ক্যামেরা পারসন সাজু ভাই এবং ড্রাইভারকে ১৫-২০ জন মিলে মারধর করে। পরে আমাদেরকে একটা রুমে নিয়ে আটকে রাখে।’
আহত এই সাংবাদিক আরও বলেন, ‘ওখানে কিছুক্ষণ পর দুজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন। তাদের একজনের নাম মিলন হোসেন। তিনি পরিচয় জানতে চাইলে আমরা পরিচয় দেই। এরপর কার্ড চাইলে ক্যামেরা পারসন সাজু ভাই তার কার্ড বের করে দেন।
‘কার্ড হাতে নিয়ে পুলিশ সদস্য মিলন বললেন-তোরা ভূয়া সাংবাদিক। তখন আমি আবার আমার পরিচয় দেই এবং জানাই যে অফিসের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে এখানে এসেছি। আপনি অফিসে ফোন দেন। উনি কোনো কথা না শুনে চেয়ার থেকে উঠে আমার দিকে তেড়ে আসেন এবং আমার মুখে আঘাত করেন।’
এদিকে খবর পেয়ে অন্য পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের উদ্ধার করেন। এ সময় দুইজনকে আটক করা হয়। এছাড়া সাংবাদিকদের মারধর করার দায়ে কামরাঙ্গরচর থানার এসআই মিলন হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাফর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনায় আমরা ইতোমধ্যে জড়িত দুজনকে আটক করেছি। এছাড়া সাংবাদিকের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য এসআই মিলনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজনীতি কিংবা ভোটের মাঠে নবগঠিত রাজনৈতিক জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’-এর কোনো গুরুত্ব নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততাহীন ও রাজনীতিতে পরিত্যাজ্যরা মিলে এই জোট গঠন করেছে।
রাজধানীর মিণ্টো রোডের সরকারি বাসভবনে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি মূলত সাত দলের জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ গঠন নিয়ে জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের ঘোষণার জবাব দেন।
সোমবার জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন- এই সাত দলের সমন্বয়ে এই জোটের ঘোষণা দেয়া হয়।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চ নামে ৭ দলীয় একটি জোট গঠিত হয়েছে দেখলাম। যারা এই জোট গঠন করেছে তারা সবাই রাজনীতিতে পরিত্যক্ত ব্যক্তিবিশেষ এবং রাজনীতিতে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন। এরা প্রত্যেকেই নানা দল করে, নানা ঘাটের পানি খেয়ে আজকের এ অবস্থায় এসেছেন। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এখন তারা একটি জোট গঠন করে নিজেদের গুরুত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন মাত্র।
হাছান মাহমুদ এর আগে সকালে মহাখালীতে পদ্মা সেতু নিয়ে ছেলেধরা গুজবের জের ধরে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার তাসলিমা বেগম রেনুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদেরকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহায়তা দেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘২০১৯ সালে যখন পদ্মা সেতুর কাজ পুরোদমে শুরু হয় তখন বিএনপি-জামায়াত সারাদেশে গুজব ছড়িয়ে দেয় যে পদ্মা সেতুতে মানুষের রক্ত লাগবে, নরবলি দিতে হবে।
‘তসলিমা বেগম রেনু সে সময় বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করাতে গিয়ে গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে নির্মম হত্যার শিকার হন। শুধু তসলিমা বেগমই নন, বিএনপি-জামায়াতের ওই গুজবের কারণে আরো অনেককে অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, মহাখালী থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বাস ভাড়ায় নগরবাসী কতটা ঠকছে, সেটি এবার স্বচক্ষে দেখলেন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা কাজী জাফরউল্লাহ। যতটা ভাড়া হওয়া উচিত, তিনি দিয়েছেন তার দেড়গুণেরও বেশি।
এরপর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন অন্যদের সঙ্গে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। বলেছেন, মানুষের কষ্ট হচ্ছে, সরকার যেন ব্যবস্থা নেয়।
বছরের পর বছর ধরে নগরবাসী তারই মতো ঠকছেন, কখনও কখনও ঠকার হার তার চেয়ে বেশি। বাস ভাড়া যত বাড়ে, নগরবাসীর নিত্যদিনের ক্ষতি তত বাড়ে।
ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়ানোর পর বিআরটিএ হিসাব করে দিয়েছে ভাড়া হবে কিলোমিটারে আড়াই টাকা। সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা হিসেবে, চার কিলোমিটার যাওয়া যাবে এই টাকায়।
তবে কিলোমিটার হিসেবে ঢাকায় ভাড়া নেয় না বাস কোম্পানিগুলো। যাত্রী ঠকাতে কয়েক বছর ধরে চালু হয়েছে ওয়েবিল নামে এক ধরনের পদ্ধতি। কোনো কোনো বাসে দুই কিলোমিটার পরপর বসানো হয়েছে ওয়েবিল, কোথাও কোথাও আড়াই বা তিন কিলোমিটার পরপর।
এক ওয়েবিল থেকে আরেক ওয়েবিল পর্যন্ত কোনো বাস আগে নিত ১০ টাকা, কোনো বাস ১৫ টাকা। এই হিসাবে ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি ৫ টাকাও পড়ে। এখন ভাড়া বাড়ানোর পর আদায় চলছে ১৫ টাকা করে। যে পথের দূরত্বে আগে আদায় হতো ১৫ টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা, যেখানে নেয়া হতো ২০ টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ৩০-এভাবেই চলছে।
তবে আগে যে ভাড়া নেয়া হতো, সেটিও যে সরকার নির্ধারিত হার, এমন নয়। বরং বর্তমান যে হার ঘোষণা করা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি আদায় হতো আগেই।
এই বিষয়টি না জানার কারণে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফররুল্লাহ যতটা ঠকেছেন ভেবেছেন, আসলে ঠকেছেন তার চেয়ে বেশি।
তিনি মিরপুরের পূরবী সিনেমা হলের সামনে থেকে বাসে উঠে নামেন বনানীর কাকলী মোড়ে। এই পথের দূরত্ব হয় ৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার। নির্ধারিত ভাড়া হয় ১৭ টাকা।
কিন্তু আগে থেকে আদায় করা হতো ২০ টাকা। জাফরউল্লাহকে দিতে হয়েছে ৩০ টাকা। তিনি ভেবেছেন ঠকেছেন ১০ টাকা, আসলে ঠকেছেন ১৩ টাকা।
সরকার সর্বোচ্চ ভাড়া ঠিক করেছে কিলোমিটারপ্রতি আড়াই টাকা। আওয়ামী লীগ নেতা দিয়েছেন ৪ টাকা ১১ পয়সা হারে।
নিউজবাংলাকে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘সরকার ২০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি অনুমোদন করেছে। তার মানে ২০ টাকার জায়গায় ৩০ টাকা নেয়া তো ৫০ শতাংশ বেশি হলো। এটা তো উচিত না। দেখলাম তো যাত্রীদের যথেষ্ট কষ্ট হচ্ছে।’
এই প্রতারণার বিষয়টি জেনে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন- জানতে চাইলে জাফরউল্লাহ বলেন, ‘পার্টি অফিসে বসে আমাদের সাধারণ সম্পাদক সাহেবকে (সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের) জানিয়েছি। সেখানে সেন্ট্রাল কমিটির অনেকে ছিলেন। তাদের সামনে তাকে আমি অবহিত করেছি। এরপর যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আমার তো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা নেই।’
-সড়কমন্ত্রী কোনো জবাব দিয়েছেন?
জাফরউল্লাহ বলেন, ‘কাদের সাহেব ধৈর্য্যের সঙ্গে সময় দিয়ে আমার কথা শুনলেন। এটার ওপর আরও বিভিন্ন লোক মন্তব্য করেছেন, কাদের সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এটা যে সত্য সেটা এখন মনে হয় তিনি বুঝতে পারছেন।’
জাফরউল্লাহ ভাড়া ‘কমই দিয়েছেন’
আওয়ামী লীগ নেতা ভাড়ার যে অনিয়ম দেখে সড়কমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, তিনি যতটা ঠকেছেন, নগরবাসী ঠকছেন আরও বেশি।
মোহাম্মদপুর থেকে বনশ্রী হয়ে চলাচলকারী স্বাধীন পরিবহনে কোনো কোনো গন্তব্যে ৬ টাকা কিলোমিটার পর্যন্ত ভাড়া আদায় করছে। এমনকি সরকারি সংস্থা রাজউক রাজধানীর হাতিরঝিলে যে বাস পরিচালনা করে, সেখানেও নেয়া হয় বাড়তি ভাড়া।
এফডিসি বাসস্টপ থেকে পুলিশ প্লাজা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটারে এতদিন ভাড়া ছিল ১৫ টাকা, এখন করা হয়েছে ২০ টাকা। আগে কিলোমিটার প্রতি ভাড়া পড়ত ৫ টাকা, এখন ৬ টাকা ৬৬ পয়সা।
এফডিসি বাসস্টপ থেকে রামপুরা পর্যন্ত আগে ভাড়া নেয়া হতো ২০ টাকা, এখন করা হয়েছে ২৫ টাকা। ৪ দশমিক ২ কিলোমিটার দূরত্বে আগে ভাড়া পড়ত ৪ টাকা ৭৬ পয়সা, এখন পড়ছে ৫ টাকা ৯৫ পয়সা।
এমনকি মধুবাগ পর্যন্ত দূরত্ব কম হলেও ভাড়া নেয়া হচ্ছে একই।
রামপুরা থেকে মধুবাগ পর্যন্ত ৩ দশমিক ৬ কিলোমিটারের জন্যও আদায় করা হচ্ছে ২০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫ টাকা।
আগে ভাড়ার হার ছিল ৪ টাকা ১৬ পয়সা, এখন হয়েছে ৫ টাকা ৫৫ পয়সা।
বিআরটিএ বলেছে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা, কিন্তু রাজউক করেছে দ্বিগুণ।
‘কোম্পানি উঠাইয়া দিলে আমরা ওয়েবিলে ভাড়া নেব না’
কাজী জাফরুল্লাহ যে পথ ধরে বাসে চড়েন, সেই পথে চলে রবরব পরিবহন, যেটি গাবতলী থেকে মেরাদিয়া বাজার পর্যন্ত যায়।
এই বাসে মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ইসিবি পর্যন্ত ৪.২ কিলোমিটার পর্যন্ত ভাড়া হতে পারত ১০ টাকা ৫০ পয়সা। কিন্তু নিচ্ছে ১৫ টাকা।
কালাপানি থেকে বাড্ডা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারে ভাড়া নিচ্ছে ৩৫ টাকা। বেশি নিচ্ছে ১০ টাকা, প্রতি কিলোমিটারে পড়ে সাড়ে তিন টাকা।
কালশী থেকে তিতুমীর কলেজ পর্যন্ত ৮.৪ কিলোমিটারে ভাড়া আসে ২১ টাকা। আদায় হচ্ছে ২৫ টাকা।
রবরব গাড়ির ড্রাইভার মো. ইসমাইল বলেন, ‘আড়াই টাকা হিসাব করলে হয় না মামা। চেকে যে টাকা আসে সেটা নেই।’
ওয়েবিল তো অবৈধ। তাহলে এভাবে ভাড়া নিচ্ছেন কেন- জানতে চাইলে উত্তরে তিনি বলেন, ‘কোম্পানি উঠাইয়া দিলে আমরা ওয়েবিলে ভাড়া নেব না। তারা যেমনে চালায় আমরা সেইভাবে চলি। তারা চেকে চেকে টাকা নিচ্ছে। আমরা সেইভাবেই ভাড়া কাটতেছি।’
এই চালকের বক্তব্যে আরও একটা বিষয় উঠে এসেছে, সেটি হলো, যারা প্রতিবাদ করছে, তাদের কাছ থেকে ভাড়া কম নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কারও কাছ থেকে পাঁচ টাকা বেশি, কারও কাছ থেকে কম নিচ্ছি।’
এই বাসে যিনি ভাড়া কাটছেন, তার কাছে জানা গেল, এই রুটে ওয়েবিল বসিয়ে ছয়টি চেক হিসেবে ভাড়া আলাদা করা হয়েছে। প্রতি চেকে ভাড়া ছিল ১০ টাকা। এখন করা হয়েছে ১৫ টাকা।
৫০ শতাংশ বাড়ানোর পর আগে ভাড়া ছিল ৬০ টাকা, এখন হয়েছে ৯০ টাকা। বিআরটিএ যে ভাড়ার চার্ট দিয়েছে, তাতে ভাড়া আসে ৬৬ টাকা।
এই পরিবহনশ্রমিক বলেন, ‘মালিকপক্ষ এইভাবেই চালাচ্ছে। আমাদের কাজ ভাড়া নেয়া। আমাদের থেকে যাত্রী হিসাব করে টাকা নেয়।’
আরও পড়ুন:ঢাকার নবাবগঞ্জে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত র্যাবের এয়ার উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ইসমাইলের মৃত্যু হয় বলে মঙ্গলবার এক খুদেবার্তায় জানিয়েছে র্যাবের মিডিয়া উইং।
গত ২৭ জুলাই প্রশিক্ষণের সময় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার শিকার হন ইসমাইল। এতে মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত পান তিনি।
দুর্ঘটনার পর ইসমাইলকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। পরবর্তী সময়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৫ আগস্ট তাকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৬ আগস্ট তার মেরুদণ্ডের সফল অস্ত্রোপচার হয়।
অস্ত্রোপচারের পর অন্য শারীরিক জটিলতার কারণে ইসমাইলের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তার।
র্যাব কর্মকর্তা ইসমাইলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন, আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে দর বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়ায় ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে পাঁচটি দেশি এবং একটি বিদেশি ব্যাংক।
দেশি পাঁচ ব্যাংক হচ্ছে- ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ও সাউথইস্ট ব্যাংক। আর বিদেশি ব্যাংকটি হচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম সোমবার রাতে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘ট্রেজারি অপারেশনে অতিরিক্ত মুনাফা করায় পাঁচটি দেশি এবং একটি বিদেশি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ডলার সংরক্ষণ করে দর বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়ায় জরুরিভিত্তিতে ওই ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণ করতে সোমবার সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’
এদিকে কিছুদিন ‘স্থির’ থাকার পর যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে আরও ৩০ পয়সা দর হারিয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকা। আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে সোমবার এক ডলারের জন্য খরচ করতে হয়েছে ৯৫ টাকা।
এর আগে সবশেষ ২৫ জুলাই ডলারের বিপরীতে টাকার মান ২৫ পয়সা কমে দাঁড়ায় ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা।
অন্যদিকে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে সোমবার ডলারের দর উঠেছে ১১৫ টাকা ৬০ পয়সা।
ব্যাংকগুলো নগদ ডলারও বেশি দামে বিক্রি করেছে। সিটি ব্যাংক ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। ইস্টার্ন ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০৬ টাকা ৫০ পয়সা দরে। এসআইবিএল থেকে নগদ ডলার কিনতে লেগেছে ১০৩ টাকা ২৫ পয়সা।
অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক সোমবার ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। অগ্রণী ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০৪ টাকায়। জনতা ব্যাংক থেকে নগদ ডলার কিনতে লেগেছে ১০৩ টাকা। আর সোনালী ব্যাংক নিয়েছে ১০২ টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে টাকা-ডলার বিনিময় হার ঠিক হয়ে থাকে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী। সোমবার ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে। দাম নির্ধারিত হয়েছে ৯৫ টাকা। আর এটাই আজকের আন্তব্যাংক দর।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, এক মাসের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ৭ শতাংশের মতো। আর এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ১২ শতাংশ।
খোলাবাজারে ডলারের চাহিদা বাড়লে মুদ্রা বিনিময়ের প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত ব্যাংক থেকে ডলার কিনে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে থাকে। এখন ব্যাংকেও ডলারের সংকট। এ জন্য অনেক ব্যাংক এখন উল্টো খোলাবাজারে ডলার খুঁজছে।
আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স কমে যাওয়ায় দেশে ডলারের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডলারের দাম। এ জন্য রিজার্ভ থেকে ডলার ছেড়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিনিয়ত দামও বাড়াচ্ছে। তারপরও সংকট কাটছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক যে দামে ডলার বিক্রি করছে, ব্যাংকগুলোতে তার চেয়ে ৭ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে ডলার বিক্রি করছে। ফলে আমদানিকারকদের বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে।
অনেক ব্যাংক পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম ১০৫ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। বাজারে ডলারের ব্যাপক চাহিদা থাকায় অনেক ব্যাংক ১১০ টাকা দিয়ে ডলার সংগ্রহ করছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য