সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন লাগোয়া গোলাখালী গ্রামবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে বাঘের আতঙ্ক। বাঘের ভয়ে রাতে তারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
স্থানীয়রা বলছেন, রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সুন্দরবন থেকে একটি বাঘ গোলাখালী গ্রামে চলে আসে। ১৫ মিনিট মতো হাঁটাহাঁটি করে বাঘটি আবার বনে ফিরে যায়।
গোলাখালীর চিংড়ি ঘেরের মালিক রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ঈদের দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে সুন্দরবন থেকে একটি বাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এরপর বাঘটি তার চিংড়ি ঘেরের রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করতে থাকে।
স্থানীয়রা বাঘ দেখে চিৎকার শুরু করে এবং টিনে বাড়ি দিয়ে শব্দ করতে থাকে। এতে বাঘটি আবার বনে চলে যায়।
এই গ্রামের ভোলানাথ মণ্ডল বলেন, ‘বাঘের ভয়ে গ্রামের মানুষ আতঙ্কিত। আমরা রাতে ঘর থেকে বের হতে পারছি না।’
এ ঘটনায় সাতক্ষীরার সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) এম এ হাসান বলেন, ‘বন বিভাগের সহায়তায় স্থানীয় ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি) এবং কমিউনিটি পেট্রল গ্রুপের (সিপিজি) সদস্যরা সব সময় ঘটনাস্থলে টহল দিচ্ছেন।
‘ওই এলাকায় সবাইকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। তা ছাড়া গরু-ছাগল যেন বনের দিকে যেতে না পারে সে জন্য গ্রামবাসীকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গ্রামটি সুন্দরবন লাগোয়া হওয়ায় মাঝেমধ্যেই সেখানে বাঘের আনাগোনা দেখা যায়।’
কিশোরগঞ্জে সৎমেয়ের জামাইকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হবে।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সায়েদুর রহমান বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে এ রায় দেন।
আসামি ৬০ বছর বয়সী আবু বাক্কারের বাড়ি কিশোরগঞ্জ পৌর এলাকার তারাপাশা এলাকায়।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু সাঈদ ইমাম নিউজবাংলাকে এসব নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী শারমীন আক্তারের সঙ্গে ওমর ফারুকের বিয়ে হয় ২০১৪ সালে। এর পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে নানা বিষয়ে তার কলহ চলত। বিষয়টি সৎবাবা আবু বাক্কারকে বিভিন্ন সময় তিনি জানিয়েছিলেন। এসব কারণে মেয়ের জামাইয়ের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন বাক্কার।
২০১৯ সালের ৩০ মে সকালে ওমর ফারুক স্ত্রীকে নিতে শ্বশুরবাড়ি গেলে বাক্কারের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে দা দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন বাক্কার। সে রাতেই বাক্কারকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন মেয়ে শারমিন।
আরও পড়ুন:ডিমের ডজন দেড় শ টাকা। বাড়তে শুরু করেছে শাকসবজির দামও। বেশ কয়েক বছর ধরে গরিবের আমিষের চাহিদা পূরণ করে এসেছে যে তেলাপিয়া-পাঙাশ মাছ; দাম বেড়ে সেগুলোও এখন নাগালের বাইরে!
কুমিল্লার বাজারে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে নাভিশ্বাস মধ্যবিত্ত শ্রেণিরও।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুমিল্লা মহানগরীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে গিয়ে এসব বিষয় নজরে এসেছে।
নগরীর রাজগঞ্জ বাজারে যে পাঙাশ মাছ ১২০ টাকা বিক্রি হতো, তা এখন ২০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর অপেক্ষাকৃত বড় তেলাপিয়া মাছ কেজিপ্রতি ২২০ টাকার কমে মিলছে না।
এই বাজারেই দীর্ঘদিন ধরে মাছ বিক্রি করেন মো. ইউসুফ। তিনি জানান, মাস দুয়েক আগেও ১২০ টাকা কেজি দরে তারা পাঙাশ বিক্রি করেছেন। কিন্তু মাছের খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আকৃতিভেদে পাঙাশের মণ পাইকারিতে এখন ৪ হাজার ২০০ থেকে শুরু করে সাড়ে ৫ হাজার টাকায়ও কিনতে হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে তাই কয়েক দিনের মধ্যেই পাঙাশ মাছ কেজিতে বেড়ে গেছে ৬০/৭০ টাকা।
নগরীর টমসম ব্রিজ এলাকার মাছ ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, ‘বড় তেলাপিয়ার দাম চাই ২২০ টাকা কেজি। পরে দরকষাকষি করে ২০০ টাকায়ও বিক্রি করি।’
নগরীর বাদশা মিয়া বাজারের মাছ ব্যবসায়ী সৈয়দ মিয়া বলেন, ‘আমরা খুচরা বিক্রেতারা যখন পাইকারদের কাছে মাছের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাই তখন পাইকাররা বলেন, তেলের দাম বেড়েছে, এ কারণে বেড়েছে গাড়ি ভাড়া।
‘আর মাছচাষিরা জানান, মাছের খাবারের দাম বেড়েছে। তাই মাছের বাজারের এই অবস্থা।’
অনেক দর-কষাকষির পর দুই কেজি পাঙাশ ৩০০ টাকায় কিনেছেন লামিয়া আক্তার। স্নাতকের এই শিক্ষার্থী জানান, হোস্টেলের বাজার করতে এসেছেন তিনি। ডিম, পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছই তাদের প্রধান খাবার। কিন্তু এগুলোর দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা এখন বিপাকে পড়েছেন।
ভ্যানচালক নওয়াব মিয়া বলেন, ‘তরকারির দাম বাড়ছে। এখন আধা কেজি কইরা কিনি। ছোট সাইজের তেলাপিয়া আর পাঙাশ দিয়া কোনো রকমে সংসার টানতাম। এখন এই দুইটারও দাম বেড়েছে। কী করবো, মাথায় আসছে না।’
আরও পড়ুন:খাবারের নিম্নমান এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের অভিযোগে বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার প্রতিবাদে ডাকা ধর্মঘট ৮ ঘণ্টা পর তুলে নেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনার পর হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ধর্মঘট তুলে নিলে চালু হয় খাবারের দোকানগুলো।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির সভাপতি মো. সেলিম মুন্সি।
তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন আমাদের দুই মাস সময় দিয়েছেন। এর মধ্যে কুয়াকাটার সব খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁর পরিবেশ উন্নত করা ও মানসম্মত খাবার পরিবেশনের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুরো বিষয়টি তদারক করবেন।
‘এর ফলে খাবারের মান ও পরিবেশ নিয়ে পর্যটকের আর কোনো অভিযোগ থাকবে না বলে আমরা বিশ্বাস করি। আশা করি আমাদের সব মালিক জেলা প্রশাসনের দেয়া নিয়মগুলোর প্রতি সচেষ্ট থাকবেন। পর্যটকবান্ধব খাবার হোটেল করতে পারলে আমাদেরই ভালো।’
এর আগে ধর্মঘট ডাকার কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছিলেন, প্রতিদিন ম্যাজিস্ট্রেট খাবার হেটেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। একই হোটেলে একাধিকবার জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি বুধবার সকালে বলেন, ‘গত ১১ আগস্ট আল-মদিনা নামের একটি হোটেলে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তখন ওই হোটেল মালিক তার সমস্যা সমাধানে ১৫ দিন সময় চেয়ে নেন; কিন্তু গতকাল (মঙ্গলবার) আবার ওই হোটেলেই ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
‘মালিক জরিমানা না দিতে পারায় তাকে বেশ কিছুক্ষণ আটকে রাখা হয়। পরে তার পরিবারের সদস্যরা ধার করে টাকা এনে তাকে ছাড়িয়ে নেন।’
ভ্রাম্যমাণ আদালতের হয়রানির অভিযোগ তুলে বুধবার সকাল ৯টা থেকে বন্ধ রাখা হয় উপজেলার সব খাবারের হোটেল ও রেস্তোরাঁ।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত শহীদুল্লাহ নিউজবাংলাকে সকালে বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর কুয়াকাটায় পর্যটকের উপস্থিতি বাড়ছে। এখানকার হোটেলগুলোর খাবারের মান নিয়ে পর্যটকরা প্রশ্ন তুলেছেন। পচা-বাসি খাবার দেয়া, অতিরিক্ত দাম রাখার অভিযোগ তুলেছেন।
‘পর্যটকদের সেবার মান অক্ষুণ্ন রাখতে, খাবার হোটেলগুলোতে মানসম্মত খাবার পরিবেশন, তাদের সঙ্গে পর্যটকবান্ধব আচরণ করতে হবে। মূলত আমরা এসব নিয়েই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি।’
আরও পড়ুন:সিলেট নগরের তালতলা এলাকার একটি হোটেলের কক্ষ থেকে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
হোটেল শাহবানের তৃতীয় তলার কক্ষের দরজা ভেঙে বুধবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জয় ভট্টাচার্য নামে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জয়ের বাড়ি সুনামগঞ্জের নতুন পাড়া এলাকায়।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াসিন খান এসব নিশ্চিত করেছেন।
হোটেলের স্বত্বাধিকারী ব্যারিস্টার আরশ আলী জানান, ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা পরিচয়ে গত ১৫ আগস্ট জয় ওই হোটেলের একটি কক্ষ ভাড়া নেন। মঙ্গলবারও তিনি বের হয়েছিলেন। আজকে সারা দিন বের না হওয়ায় ডাকাডাকি করলেও সাড়া দেননি। পরে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ পায়।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক ইয়াসিন জয়ের পরিবারের বরাত দিয়ে বলেন, ‘জয় তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিলেন তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তবে নিয়োগের কোনো কাগজপত্র দেখাননি। চাকরিতে যোগদানের জন্য ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে তিনি ১৫ আগস্ট বাড়ি থেকে বের হন।’
চাচা বিপুল মৈত্র নিউজবাংলাকে জানান, মাস্টার্স পাসের পর ৩ বছর ধরে জয় বেকার ছিলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
বিপুল বলেন, ‘প্রথমে জয় শুনেছিল যে সে নিয়োগ পেয়েছে। পরে জানতে পারে নিয়োগ হয়নি। এ নিয়ে হতাশা থেকে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।’
সহকারী পরিচালক পদে জয় ভট্টাচার্য নামে কেউ নিয়োগ পেয়েছেন কি না এমন তথ্য জানা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেট শাখার উপপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী।
আরও পড়ুন:রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির দুর্গম পাহাড়ি এলাকা সাজেকে একটি কলাবোঝাই জিপ উল্টে দুজন মারা গেছেন।
সাজেকের মাচালং বাজার থেকে বাঘইহাট যাওয়ার সময় নাইল্লাছড়ি এলাকায় বুধবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন ৪৫ বছর বয়সী কলা ব্যবসায়ী ইলিয়াছ হোসেন ও ৪০ বছর বয়সী অনন্ত ত্রিপুরা। অনন্ত গাড়িতে কলা তোলা আর নামানোর কাজ করতেন।
ইলিয়াছের বাড়ি উপজেলার বঙ্গতলী ইউনিয়নের করেঙ্গাতলী ও অনন্তের বাড়ি সাজেকের মাচালং এলাকায়।
সাজেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল হক নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘কলা বোঝাই করা একটি জিপ উল্টে গাড়ির নিচে চাপা পড়ে দুজন নিহত হয়েছেন। তাদের বাড়ি বাঘাইছড়ি উপজেলায়। তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার পর থেকে চালক পলাতক।’
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার বলেন, ‘সাজেকের নাইল্লাছড়িতে কলা বোঝাই করা একটি জিপ উল্টে দুজন নিহত হয়েছেন।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে লেভেল ক্রসিংয়ে উঠে যাওয়া মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১৩ জন নিহতের ঘটনায় গেটম্যান ও নিহত মাইক্রোচালকের দায় খুঁজে পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনসার আলীকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটি।
প্রতিবেদনে লেভেল ক্রসিংয়ের দায়িত্বে থাকা গেটম্যান সাদ্দাম হোসেন ও নিহত মাইক্রোচালক গোলাম মোস্তফা নিরুকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আবুল কালামের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
বুধবার আবুল কালাম নিজেই নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। গেটম্যান সাদ্দামের ঘটনাস্থলে অনুপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে মামলায় সে আসামি হয়ে কারাগারে আছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেয়া হবে। আর মাইক্রোবাসচালক তো মারাই গেছে।’
২৯ জুলাই আরঅ্যান্ডজে কোচিং সেন্টার থেকে খইয়াছড়া ঝরনায় ঘুরতে যান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফেরার পথে মীরসরাইয়ের বড়তাকিয়া রেলস্টেশন এলাকায় অরক্ষিত একটি লেভেল ক্রসিংয়ে পর্যটকবাহী মাইক্রোটিকে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান ১১ জন। পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান দুজন। এ ঘটনায় আহত তিনজন এখনও চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে গেটম্যান সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানায় মামলা করেন সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) জহিরুল ইসলাম। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ঘটনার সময় সাদ্দাম হোসেন লেভলে ক্রসিংয়ে ছিলেন কি না এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। দুর্ঘটনার পর প্রাণহানির পুরো দায় মাইক্রোচালকের বলে দাবি করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
তখন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেখানে রাস্তায় ক্রসিংয়ে সাদ্দাম নামে একজন গেটকিপারের দায়িত্বে ছিলেন। তার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি দাবি করেছেন যে সময়মতোই ক্রসিংবার ফেলেছিলেন। তার কথা অমান্য করে মাইক্রোবাসের চালক বারটি তুলে রেললাইনে গাড়ি তুলে দেয়। এতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।’
পরে রেলওয়ে কর্মকর্তার এ দাবি সত্য নয় দাবি করেন বেঁচে ফেরা দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোর যাত্রী জুনায়েদ কায়সার ইমন।
ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া মাইক্রোর পেছনের সারিতে ছিলেন হাটহাজারীর কলেজছাত্র জুনায়েদ। তিনি জানান, ক্রসিংয়ে কোনো বার ছিল না। এ কারণে চালক গাড়ি টেনে নেন রেললাইনে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেছিলেন, ‘ট্রেনের কোনো ব্যারিকেড ছিল না। ট্রেন যখন আসছিল তখন বৃষ্টি পড়ছিল। আমরা বুঝতে পারিনি যে ট্রেন আসছে। ড্রাইভার গাড়ি চালানোর সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন এসে মেরে দিয়েছে। খেয়ালও করিনি। নিমিষেই ট্রেন চলে আসছে। আমি পড়ে গেছি পেছনে। কীভাবে পড়লাম, কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি।’
এ ঘটনা তদন্তে পরে দুটি কমিটি গঠন করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে একটি কমিটি গেটম্যান ও মাইক্রোবাসের চালককে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে প্রতিবেদন দিয়েছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ৫ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
জেলার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল হালিম বুধবার সকালে এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মনোরঞ্জন দাশ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডিতরা হলেন নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন, বলকিপার আবদুল মান্নান, তার ভাই আবদুল গাফফার, বলকিপার রমজান আলী এবং বাবুল রহমান ওরফে রনি।
পিপি জানান, ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটি এলাকায় অবস্থিত দুটি মসজিদে জুমার নামাজের পর বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর নেভাল প্রভোস্ট মার্শাল কমান্ডার এম আবু সাঈদ নগরীর ইপিজেড থানায় মামলা করেন।
সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে করা এই মামলায় আসামি করা হয় ৪ জনকে। পরে পুলিশের তদন্তে আসামি আবদুল মান্নানের বড় ভাই জেএমবি সদস্য আবদুল গাফফারের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।
মনোরঞ্জন বলেন, ‘মামলার এক বছর পর ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় তদন্ত কর্মকর্তা। বিচার শুরুর পর চলতি বছরের ২৩ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বুধবার রায় ঘোষণা করেন আদালত।’
আসামিদের মধ্যে এম সাখাওয়াত হোসেন পলাতক। বাকিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান পিপি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য