জয়নাল আবেদিন। বয়স ৫৭ বছর। রোববার ঈদুল আজহার সকাল থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাংস কুড়ানো শুরু করেছিলেন তিনি। এভাবে প্রায় ৭ কেজি মাংস সংগ্রহ করেছেন।
সংগৃহীত মাংস থেকে ২ কেজি ঘরে রেখে বাকি ৫ কেজি ফেনী শহরের রেল স্টেশন এলাকায় নিয়ে এসেছেন বিক্রি করতে।
জয়নাল জানান, ঘরে চাল-ডাল নেই। তাই মাংস বিক্রি করেই এসব কিনে বাড়ি ফিরবেন। রেলস্টেশনের পাশে একটি কলোনিতে গত ৮ বছর ধরে বসবাস করছেন তিনি।
শুধু জয়নাল নন, সরেজমিনে দেখা গেছে- নিম্ন আয়ের বেশ কিছু মানুষ ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকা থেকে মাংস কুড়িয়ে এনে শহরের বড় মসজিদের সামনে, রেলগেইট কিংবা মিজান রোড এলাকায় তা বিক্রি করছেন।
স্থানীয় দুলাল তালুকদার জানান, যারা কোরবানি দিতে পারেন না তারা কম দামে এই হাট থেকে মাংস কিনে নেন। ঈদের দিনে মাংস বিক্রি ও কেনার জন্য ফেনীর রেলস্টেশনের পাশে জমজমাট মাংসের বাজার বসে।
এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। রোববার বিকাল থেকেই ছিন্নমূল ও দরিদ্র লোকজন ফেনীর বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির মাংস সংগ্রহ করে তা এই বাজারে নিয়ে এসেছেন। যারা কোরবানি দিতে পারেনি তারা এবং কিছু হোটেল ব্যবসায়ী এই মাংস কিনে নিচ্ছেন।
এদিকে হাটে মাংস বিক্রি করতে আসা জসিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা সারাদিন অনেক কষ্ট করে মাংস খুঁজে এনে যখন হাটে বিক্রি করি, তখন কিছু লোক আমাদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে যায়। গরিব মানুষের কাছ থেকে যারা টাকা নিয়ে যায়, তারা আমাদের থেকেও মিসকিন। আল্লাহ তাদের বিচার করবে।’
ঈদুল আজহার নামাজ আদায়ের পরপরই পশু কোরবানির পর্ব শুরু হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুপুর দেড়টা-দুইটার মধ্যেই শেষ হয়ে যায় মাংস কাটা আর ভাগ-বন্টন। এরপর চলে গরিবদের মধ্যে মাংস বিলি।
বিলিয়ে দেয়া মাংস সংগ্রহ করে কিছু অংশ নিজেদের জন্য রেখে একটি শ্রেণি বাদবাকি মাংস বিক্রি করে দেন।
আরও পড়ুন:আগামী চার দিন সারা দেশে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল শনিবার আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া ২৭ মে পশ্চিম-মধ্য এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পাবে।
আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
আগামীকাল সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং রংপুর বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
এছাড়াও আগামী মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
আর আগামী বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো কিংবা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা (১-৩) ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় দিনদিন বেড়েই চলেছে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। মাদকের নীল দংশন থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে স্থানীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের শত চেষ্টা কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাদক ব্যাবসায়ীরা তাদের ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক বিরোধী র্যালী সেমিনার কোনো কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছেনা মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। ৫ই আগষ্টের আগে প্রশাসনের তৎপরতা থাকায় উপজেলায় মাদকের ভয়াবহতা কিছুটা কম থাকলেও সম্প্রতি আবার বেড়েছে মাদকের বিস্তার।
মাদকের এই ভয়াবহ বিস্তারে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় রয়েছেন উপজেলার অভিভাবকরা।
কয়েকটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌর শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় মাদক কারবারীরা মাদকের কেনাবেচা করে থাকে। এর মধ্যে পৌর শহরেই রয়েছে বেশ কয়েকটি মাদকের স্পট। পৌর ৬নং ওয়ার্ডের ওয়াপদা রোড, আঃ জঃ কলেজ গেইট ও তৎসংলগ্ন এলাকা, উত্তর বাসষ্টান্ড, দক্ষিণ বাসষ্টান্ড, পঞ্চায়েত বাড়ির চৌরাস্তা, পৌর ৯নং ওয়ার্ডের বিএনপি বাজার, পৌর ১নং ওয়ার্ডের জয়া সড়ক, পৌর ৪নং ওয়ার্ডের সালাহউদ্দিন কমিশনারের বাড়ির পাশে রয়েছে ২টি স্পট। এছাড়া বড়মানিকা ইউনিয়নের মানিকার হাট বাজারের পাশে একটি স্পট, কুতুবা ইউনিয়নের ছাগলা গ্রাম, পক্ষিয়া ইউনিয়নের বোরহানগঞ্জ বাজার, টবগী ইউনিয়নের রাস্তার মাথা, নতুন ও পুরান হাকিমুদ্দিন বেড়িবাধ এলাকা, হাসাননগর ইউনিয়নের খাসমহল, কাজীরহাট সহ এর আশেপাশে বেশ কয়েকটি স্পট রয়েছে।
জানা যায়, বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া ইউনিয়নের প্রানকেন্দ্র কুঞ্জেরহাট ও এর পাশে ফুলকাচিয়ায় রয়েছে ইয়াবা ও গাজার সবচেয়ে বড়স্পট আর এসব স্পটের নিয়ন্ত্রক ওই এলাকার প্রভাবশালী জ্বীন প্রতারকরা। এদের রয়েছে বেশ শক্তিশালী সিন্ডিকেট এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের হাত ধরে মাদকের চালান পৌছে যায় খুচরা ব্যাবসায়ীদের হাতে। সুত্রটি জানায় এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে অটোরিকশা ড্রাইভার, মটরসাইকেল ড্রাইভার, এরা এই পেশায় কাজ করলেও এরা মাদক বহন করে নিরাপদে কাষ্টমারের কাছে মাদকের চালান পৌছে দেয়।
আরও জানা যায়, ২০২৪ সালের (২২ডিসেম্বর) টবগী ইউনিয়নের হাকিমুদ্দিন বেড়িবাধ এলাকার মাদক বিক্রেতা ইউসুফ কে স্থানীয় জনতা মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক করে। একইদিনে টবগী ইউনিয়নের বেড়িবাধ সংলগ্ন গুচ্ছগ্রামে ঐ এলাকার এক মাদক বিক্রেতা ইয়াবা ডেলিভারি দিতে আসলে স্থানীয় লোকজন দাওয়া দিলে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির লোকজনের সহায়তায় পালিয়ে যায়।
এসব জীবন বিধ্বংসী ক্ষতিকারক দ্রব্য সেবনের ফলে যুবসমাজের সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটছে। এরই পরিণাম স্বরূপ ছেলেমেয়ের হাতে মা-বাবা খুন, মাদকের টাকা জোগাড় করতে না পেড়ে বাবা- মায়ের কাছে টাকা চেয়ে টাকা না পেয়ে অভিমান করে আত্নহত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, রাহাজানি এখনকার নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। মাদকাসক্ত হওয়ার প্রধান কারণ হলো মাদকের সহজলভ্যতা।
পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পুলিশের টহল জোরদার করে মাদক বিক্রেতাদের আইনের আওতায় আনতে পারলে যুবসমাজকে মাদক থেকে দুরে রাখা সম্ভব বলে মনে করছেন এখানকার সচেতন মহল।
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চলমান একটি জলকপাট নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার স্বীকার দৈনিক ইত্তেফাকের তজুমদ্দিন উপজেলা প্রতিনিধি রফিক সাদী ও আজকের ভোলার প্রতিনিধি মো: ফারুকের ওপর হামলার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে তজুমদ্দিন থানা পুলিশ।
শুক্রবার সকালে তজুমদ্দিন উপজেলার স্লুইস গেট এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে এই মামলার এজাহারভূক্ত আসামি আজগর (৪০) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজগর হাজারীগঞ্জ এলাকার মো: মোস্তফার পুত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক এর প্রতিনিধি রফিক সাদী ও আজকের ভোলা প্রতিনিধি মো: ফারুক নির্মাণস্থলে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কন্সট্রাকশন এর কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে আহত করে তাদের সাথে থাকা ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়।
পরবর্তীতে হামলার শিকার ওই দুই সাংবাদিকদের মধ্যে মো: ফারুক তজুমদ্দিন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেফতার করে। বাকিরা পলাতক রয়েছে।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মোহাব্বত খাঁন জানান, সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগে ১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাকী আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে খাওয়ার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে ফেনীর কয়েকটি উপজেলায়। এসব এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশ নলকূপে পানি নেই। এতে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য।
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার জি.এম.হাট ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির নলকূপে মিলছে না সুপেয় পানি। বেশিরভাগ গভীর নলকূপে পানি উঠছে না। একই চিত্র দেখা দিয়েছে পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, দাগনভূঁঞা ও সদর উপজেলায়। ফলে পানি সংগ্রহে বেশ দূরে ছুটছেন ভুক্তভোগীরা। বাধ্য হয়ে পুকুর বা ডোবার জীবাণুযুক্ত পানি ফুটিয়ে পান করতে হচ্ছে অনেককে।
প্রায় এলাকায় পুকুর, খাল ও জলাশয়ের পানি শুকিয়ে গেছে। অনাবৃষ্টির পাশাপাশি গরমের তীব্রতা বাড়ায় ভূগর্ভের পানির স্তর নেমে গভীর নলকূপেও পাওয়া যাচ্ছে না পানি। জেলার লক্ষাধিক নলকূপে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
‘গত দুই-তিন মাস ধরে গভীর নলকূপে পানি পাচ্ছি না। পানির জন্য এলাকার লোকজন হাহাকার করছে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে নলকূপ দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি করছি,’ এসব কথা বলেন ফুলগাজী উপজেলার জি.এম.হাট ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ উদ দৌলা।
ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা আছমত আরা শিরি বলেন, ‘নলকূপে পানি না উঠায় আমরা পানির জন্য কষ্ট করছি। অপরদিকে নলকূপের সঙ্গে থাকা মোটরেও পানি উঠছে না। অনেক দূর থেকে পানি এনে পান করছি। ওখানেও পানি উঠছে না, দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে এক কলস পানি ভর্তি করতে হয়। নলকূপের পানির জন্য সরকার যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।’
এলাকাবাসী জানান, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় গত ৪-৫ মাস ধরে তারা কোনো গভীর নলকূপে পানি পাচ্ছেন না। পুকুরের পানি ফুটিয়ে পান করা হচ্ছে।
ফেনী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিউল হক বলেন, ‘গত ছয় মাস বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানির লেয়ার নিচে নেমে গিয়ে ফেনীর অনেক এলাকায় গভীর নলকূপে প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পৃথিবীতে কোথাও এভাবে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে না। সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন করে ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার নষ্ট করে ফেলছি। অপ্রয়োজনীয় পানি তোলা থেকে বিরত থাকতে হবে। নলকূপের নির্ভরশীলতা থেকে ফিরে আসতে হবে। ফেনীতে দেড় লাখ নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি নলকূপে পানি উঠছে না। বর্তমানে প্রতি ইউনিয়নে ৮টি করে নলকূপ বরাদ্দ রয়েছে। সামনে অতিরিক্ত বরাদ্দের জন্য চেষ্টা করছি।’
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে পানি বাড়ছে। সেইসঙ্গে অসময়ে শুরু হয়েছে নদীর পাড় ভাঙন। গত বছর নদীভাঙনের পর যেটুক ভূমি ছিল, সেটুকুও এবার ভাঙনের আশঙ্কায় চরম হতাশার দিন পার করছেন নদীপাড়ের শত শত ভাঙন-কবলিত মানুষ।
সরেজমিনে উপজেলার জিগাতলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জিগাতলা গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ফসলিজমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। সেখানে এবার স্থানীয়রা ভুট্টা, তিল, বাদাম, বোরো ধান ও পাটসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করেছিল। এ ছাড়া রামপুর, গোপিনাথপুর, বাসুদেবকোল এলাকাতেও একই চিত্র দেখা যায়।
গত বছরের মতো এবারও উপজেলার চিতুলিয়াপাড়া, ভালকুটিয়া, কষ্টাপাড়া ও মাটিকাটা, পাটিতাপাড়া, কোনাবাড়ীসহ কয়েকটি এলাকায় ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে। এতে দিশাহারা হয়ে পড়ছেন নদীপাড়ের মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বারবার আশ্বাস দিলেও বাঁধের কাজ শুরু হচ্ছে না।
এদিকে প্রতিবছর বন্যায় ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফেলা বাঁধের জিওব্যাগ আনলোড ড্রেজারগুলোর কারণে মাটি ধসে যাচ্ছে। যার ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা ও আধ পাকা সড়ক, গাইড বাঁধ, বসতবাড়ি, মসজিদ-মন্দির, ছোট-বড় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
জিগাতলা গ্রামের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, এখান থেকে প্রতিবছর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হতো। সেসময় কোনো ব্যক্তি প্রতিবাদ করতে পারত না, প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি দিত। সাবেক এমপি ছোট মনির খোকার মাধ্যমে ঘাটটি পরিচালনা করতেন। এখন তার খেসারত দিচ্ছে এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, যমুনা নদীতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। কিন্তু ভাঙনরোধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তাদের দাবি যতদ্রুত সম্ভব ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। তা না হলে ফসলিজমির সঙ্গে তাদের ঘরবাড়িও নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আবদুল্লাহ খানকে একাধিবার মোবাইলে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।
টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী শামীম মিয়া জানান, ভূঞাপুরের ইউএনও এসিল্যান্ডের সঙ্গে তিনি ভাঙন-কবলিত জিগাতলা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। নদীভাঙনের স্থান থেকে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ মিটার নিকটে ঘরবাড়ি রয়েছে। সুতরাং এলাকাটি মনিটরিং করে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোরে একটি তক্ষকসহ পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২০ মে) ভোরে উপজেলার উলাশী ইউনিয়নের মাটিপুকুর গ্রাম থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটকরা হলেন— মাটিপুকুর গ্রামের মৃত হাসেম আলী ব্যাপারীর ছেলে করিম হোসেন (৪৮) ও মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে মামুনুর রশিদ (৪২)।
পুলিশ জানায়, গোপন খবরে মাটিপুকুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে করিমের বাসা থেকে একটি তক্ষক উদ্ধার করা হয়।
এর আগেও করিমের বিরুদ্ধে শার্শা থানায় একই অপরাধের দায়ে একটি মামলা রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে থানায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা হয়েছে। আটকদের আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
কক্সবাজারের টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযানে কোস্ট গার্ডের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধসহ তিন রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করা হয়েছে। এ সময় ৩০ হাজার ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।
আটকরা হলেন উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. ইলিয়াস (৩০), নুর মোহাম্মদ (৬১) ও গুলিবিদ্ধ আব্দুল শক্কুর (৪০)। গুলিবিদ্ধ শক্কুরকে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার দিবাগত রাত আড়াইটায় টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের তুলাতলী ঘাটসংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
অভিযানকালে একটি সন্দেহভাজন ইঞ্জিনচালিত কাঠের নৌকাকে থামার সংকেত দিলে পাচারকারীরা গুলি চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে কোস্ট গার্ড সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। এতে এক পাচারকারী গুলিবিদ্ধ হন। প্রায় এক ঘণ্টার ধাওয়া শেষে নৌকাটি জব্দ করা হয়।
পরে নৌকায় তল্লাশি চালিয়ে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি ৯ মি.মি. বিদেশি পিস্তল ও চার রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় পাচারচক্রের আরও চার সদস্য সাগরে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায়।
কোস্ট গার্ড জানায়, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
অন্যদিকে স্থানীয় জেলেদের দাবি, সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আট জেলে সাগরে মাছ ধরতে যান। পরে গোলাগুলির ঘটনায় তাদের একজনের নিখোঁজ হওয়ার আশঙ্কায় স্বজনরা তুলাতলী ঘাটে ছুটে আসেন।
কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ বলেন, “উপকূলীয় এলাকায় মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে নিয়মিত টহল ও অভিযান পরিচালনা করছে কোস্ট গার্ড। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
মন্তব্য