হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গ্রেপ্তার প্রশান্ত কুমার হালদার বা পি কে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন আগামী ১৬ আগস্ট ঠিক করেছে ঢাকার একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ বদলির আদেশ দেন এবং অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন তারিখ ঠিক করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, পূর্ণিমা রানী হালদার, অমিতাভ অধিকারী, প্রীতিশ কুমার হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অনঙ্গ মোহন রায়, স্বপন কুমার মিস্ত্রি, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অবন্তিকা বড়াল, সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা এবং শংখ ব্যাপারী।
এদের মধ্যে শংখ ব্যাপারী, সুকুমার মৃধা, অবন্তিকা বড়াল, অনিন্দিতা মৃধা কারাগারে রয়েছেন।
এর আগে ২৭ মার্চ এ মামলার পলাতক ১০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
মামলা থেকে জানা যায়, দেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পি কে হালদার নামে-বেনামে বিভিন্ন কোম্পানির নামে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বের করে নেন। এই টাকা আর ফেরত না আসায় ওই চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না।
প্রতিষ্ঠান চারটি হলো ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।
টাকা বের করার আগে শেয়ার কিনে তিনি এসব প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।
তিনি দেশ ছাড়েন ২০১৯ সালের শেষ দিকে। আর এই আর্থিক কেলেঙ্কারি জানাজানি হয় ২০২০ সালের শুরুতে।
পলাতক থাকা অবস্থায় ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, পি কে হালদার নামে-বেনামে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ জমি কিনেছেন।
বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী এই সম্পদের মূল্য ৯৩৩ কোটি টাকা হলেও এই সম্পদের বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা।
এর মধ্যে নিজের নামে তিনি জমি কিনেছেন ৪ হাজার ১৭৪ শতাংশ। এর দাম দলিলে দেখানো হয়েছে ৬৭ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ৯৩০ টাকা। অথচ এই সম্পদের বর্তমান মূল্য ২২৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া ধানমন্ডিতে তার নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, প্রশান্ত তার নিকটাত্মীয় পূর্ণিমা রানী হালদারের নামে উত্তরায় ১২ কোটি টাকা দামের একটি ভবন করেছেন।
আর পূর্ণিমার ভাই উত্তম কুমার মিস্ত্রির নামে তেজগাঁও, তেজতুরী বাজার ও গ্রিন রোডে ১০৯ শতাংশ জমি কেনেন।
যার বাজারমূল্য ২০০ কোটি টাকা। প্রশান্ত তার কাগুজে কোম্পানি ক্লিউইস্টোন ফুডসের নামে কক্সবাজারে দুই একর জমির ওপর আটতলা হোটেল তৈরি করেছেন।
যার আর্থিক মূল্য বর্তমানে ২৪০ কোটি টাকা। এ ছাড়া পি কের খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী এবং অনঙ্গ মোহন রায়ের নামে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৪০৪ শতাংশ জমি কিনেছেন, যার দাম ১৬৭ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও কানাডীয় ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্যের বরাত দিয়ে দুদক প্রতিবেদনে বলেছে, পি কে হালদার ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে তার ভাই প্রীতিশ হালদারের কাছে ১ কোটি ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪ কানাডীয় ডলার পাচার করেন, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:তদন্তে প্রমাণিত ৩৫ রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কক্সবাজারে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে- তা জানতে চেয়েছে উচ্চ আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়। খবর বাসসের
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জানান, ২০১৬ সাল থেকে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কিছু ক্ষমতাধর কথিত জনপ্রতিনিধির যোগসাজশে অর্থের বিনিময়ে অসংখ্য রোহিঙ্গাদেরকে জাল ঠিকানা, ভুয়া বাবা-মা সাজিয়ে ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে জন্ম নিবন্ধন, ভোটার আইডিসহ দেশের নাগরিকত্ব দিতে সরাসরি সহায়তা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, ওই ইউনিয়নে অন্তত ৩৭০ জন রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন ও ভোটার আইডি দেয়া হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় স্থানীয় এক বাসিন্দা ৩৮ জন রোহিঙ্গার নাম উল্লেখ করে বিবাদীদের প্রতি অভিযোগ দাখিল করেন। ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনে ৩৮ জনের মধ্যে ৩৫ জন রোহিঙ্গার বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়।
আইনজীবী আরও জানান, এতে ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের জড়িতদের প্রমাণ পাওয়া যায় এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছেন। কিন্তু এসব রোহিঙ্গাকে নাগরিকত্ব দেয়া সংক্রান্ত কাগজপত্র বাতিল করে তাদের নাম ভোটার তালিকে থেকে বাদ দেয়ার জন্য জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এসব রোহিঙ্গাদের ভোটার রেখেই ওই ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হয়। এ অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হামিদ হাইকোর্টে রিট করেন।
শুনানি শেষে বিবাদীদের প্রতি চার সপ্তাহের রুল জারি করে ভোটার তালিকা থেকে তদন্তে প্রমাণিত রোহিঙ্গাদের নাম বাদ এবং আগামী ৬ জুনের মধ্যে কক্সবাজার জেলায় কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে- তা তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে আজ উচ্চ আদালত।
রিটে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সংশ্লিষ্ট ১৭ জনকে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নতুন তিন বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বুধবার জারি করা হয়েছে। খবর বাসসের
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারককে তাদের শপথ গ্রহণের তারিখ হতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করেছেন।
নবনিযুক্ত আপিল বিভাগের বিচারপতিগণ হলেন-বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ কভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের বেধড়ক পিটিয়েছে সংগঠনটির কয়েকজন সদস্য। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) এই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
দৈনিক খবরের কাগজের বিনোদন প্রতিবেদক মিঠুন আল মামুন জানান, তার ক্যামেরাম্যানসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বৈশাখী টিভির সাংবাদিক লিয়ন মীর জানান, শপথ গ্রহণ শেষে চিত্রনায়িকা ময়ূরীর মেয়ের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন এক রিপোর্টার। এসময় অভিনেতা শিবা শানু ওই সাংবাদিককে বেরিয়ে যেতে বলেন। না যেতে চাইলে তাকে ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন তিনি।
কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত হয়ে শিবা শানুকে থামাতে চান। এরপর শিল্পী সমিতির আরেক নেতা চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী ‘মার মার’ বলে তেড়ে যান সাংবাদিকদের দিকে। শুরু হয় সাংবাদিক ও শিল্পীদের মধ্যে তুমুল মারামারি। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। রক্তাক্ত আহত হন কয়েকজন সাংবাদিক। মারামারিতে যোগ দেন আলেকজান্ডার বোসহ কয়েকজন জুনিয়রও।
মিঠুন আল মামুন ঘটনার বিষয়ে বলেন, ‘আমি একজন শিল্পীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলাম। এ সময় খল অভিনেতা শিবা শানু আমাকে জিজ্ঞেস করেন যে কেন সাক্ষাৎকার নিচ্ছি। এরপরই তিনি আমার ওপর হামলা চালান।
‘এ সময় কয়েকজন সাংবাদিক এগিয়ে এলে জয় চৌধুরী অশ্লীল গালি দিয়ে জুনিয়র শিল্পীদের নির্দেশ দেন সাংবাদিকদের ওপর চালানোর। জয় ও শিবা শানুর নেতৃত্বেই আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।’
এ ঘটনার পরপরই এফডিসিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএফডিসির খোলা প্রাঙ্গণে এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টায় সভাপতি মিশা সওদাগরের নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু মিশাকে শপথ পাঠ করান।
ঝিনাইদহ জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন ভোরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক রোকনুজ্জামান মিলন। আনসারের জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ হোসেন ও মহেশপুর উপজেলা টিআই হুসাইনসহ আনসার সদস্যরা তাকে মারধর করে একটি ঘরে আটকে রাখেন। পরে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন।
সংবাদকর্মীরা জানান, ৮ মে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আনসার অফিসে নির্বাচনকালীন অস্থায়ী সদস্য নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সেই খবর সংগ্রহের জন্য সাংবাদিক রোকনুজ্জামান মিলন সেখানে গেলে তার সঙ্গে অসদাচরণ করেন জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ। এক পর্যায়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে ঝিনাইদহে কর্মরত সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জেলায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা।
ভুক্তভোগী রোকনুজ্জামান মিলন বলেন, ‘আমি সংবাদ সংগ্রহের জন্য ওই অফিসের বাইরে অপেক্ষা করছিলাম। জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ হোসেন এক নারীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছিলেন। আমি এগিয়ে গেলে আমাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন সোহাগ।
‘আমি সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে অন্য আসনার সদস্যরা আমাকে টেনে-হিঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে কিল-ঘুষি মারেন। আমাকে সেখানে এক ঘণ্টা আটকে রাখার পর মোবাইল ফোন ফেরত দেয়া হয়। পরে মোবাইলে সহকর্মীদের ফোন করলে তারা এসে আমাকে উদ্ধার করেন। আমি ওই কর্মকর্তাসহ ঘটনায় জড়িত অন্যদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ হোসেন বলেন, ‘যেভাবে বলা হচ্ছে তেমন কিছু ঘটেনি। সে প্রথমে পরিচয় না দেয়ায় তাকে রুমের মধ্যে বসিয়ে রেখেছিলাম। তাকে মারধর বা লাঞ্ছিত করা হয়নি।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বুড়িচং সীমান্তে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছেন।
উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চড়ানল তেঁতুলতলা সীমান্তে সোমবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত বিল্লাল হোসেন (২৮) রাজাপুর ইউনিয়নের লড়িবাগ এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিল্লাল হোসেন ভারত থেকে অবৈধ পথে চিনি ও অন্য পণ্য ওঠা-নামার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সোমবার রাত ৮টার দিকে তেঁতুলতলা সীমান্ত দিয়ে আসা চিনি নামানোর সময় বিএসএফের সদস্যরা গুলি করে তাকে। তার শরীরে ৩০টির মতো ছররা (ছোট গুলি) গুলি লাগে।
পরে বিল্লালকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। গুলিতে তার চোখ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন জানান, গুলিতে আহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। সীমান্তের ঘটনা সম্পর্কে বিজিবি বলতে পারবে।
বিজিবির সংকুচাইল বিওপির কামান্ডার ফারুক কামাল জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তারা এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন:পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) বিপুল পরিমাণ টাকাসহ দুই উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া পুলিশ আসার খবর পেয়ে আগেই পালিয়ে যান ঠিকাদার রাজীব ও কনকসহ কয়েকজন। এ সময় ওই দুই কর্মকর্তার কাছ থেকে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে পাবনা পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে তাদের আটক করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যায় তাদের পাবনা সদর থানা পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়।
আটককৃতরা হলেন- দাপুনিয়া ইউনিয়নের টিকশাইল গ্রামের বাসিন্দা পাবনা পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদ রানা এবং কুমিল্লার মেঘনা থানার শিবনগরের বাসিন্দা ও পাবনা পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মোশাররফ হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকালে ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পাবনা পাউবোতে অনুসন্ধানে যান কয়েকজন সাংবাদিক। সেখানে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাসুদ রানার কক্ষে গেলে ওই কক্ষ ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। কয়েকবার ধাক্কা দেয়ার পর মাসুদ রানা দরজা খোলেন। কক্ষে ঠিকাদার ও স্থানীয় কমিশনার আরিফুজ্জামান রাজিব ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোশাররফসহ কয়েকজনকে দেখা যায়। এ সময় টেবিলে বিপুল অর্থও দেখতে পান সাংবাদিকরা। এরপরই আরেক ঠিকাদার কনক হাজির হন।
সরকারি অফিসে ঠিকাদারের সঙ্গে বন্ধ কক্ষে কীসের অর্থ লেনদেন হচ্ছে, তা জানতে চান সাংবাদিকরা, কিন্তু প্রশ্নের সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন তারা। বিষয়টি সন্দেজনক মনে হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন ওই সাংবাদিকরা। পুলিশ এসে পৌঁছানোর আগেই দুই ঠিকাদার পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে দুই প্রকৌশলীকে আটক করে এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) খবর দেয়।
তাদের সেখানেই দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য সংগ্রহ করে দুদক ও পুলিশ। পরে সন্ধ্যার দিকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তানভীর আহমেদ দীপ নামের পাবনা পাউবোর এক ঠিকাদার বলেন, ‘আটক দুইজন হয়ত ষড়যন্ত্রের শিকার হতে পারে। কারণ তারা মাত্র কয়েকমাস এখানে এসেছেন। এত দ্রুত এসব টাকা লেনদেন করবে, এটা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। কোনো ঠিকাদার তাদের কাছ থেকে সুবিধামতো কাজ (প্রকল্প) না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হয়ত ফাঁসিয়েছে।’
আনিছুর রহমান মারুফ নামের আরেক ঠিকাদার বলেন, ‘প্রত্যেক অফিসের কাজে কর্মকর্তাদের বিশেষ কমিশন দিতে হয়। কাজের শুরু থেকে ধাপে ধাপে এসব টাকা দিতে হয়। না দেয়া হলে বিল আটকে দেয়া হয়।’
পাবনা পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি দেখছে। কোথাকার টাকা, কীভাবে লেনদেন হলো- সেসব বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পাবনা সদর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, ‘পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ ফোন করে জানান যে সেখানে ঘুষের টাকা লেনদেন হচ্ছে। খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকাসহ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সত্যতা পেলে দুই প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে দুদককে অবহিত করা হয়েছে। তারা বিষয়টি অনুসন্ধান করবে।’
এ বিষয়ে দুদক, পাবনা শাখার কর্মকর্তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বান্দরবানে যৌথ অভিযানে এক ছাত্রলীগ নেতাসহ ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে তাদের আদালতে তোলা হলে জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এএসএম এমরান কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রুমা সদর ইউনিয়নের মুনলাই পাড়ার বাসিন্দা লাল নুন নোয়াম বম, লাল দাভিদ বম, চমলিয়ান বম, লাল পেক লিয়ান বম, ভান মুন নোয়াম বম, লাল মিন বম ও বান্দরবান সদর লাইমি পাড়ার বাসিন্দা ভান বিয়াক লিয়ান বম।
তাদের মধ্যে ভান মুন নোয়াম বম রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। সংগঠনবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
২৩ এপ্রিল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অং ছাইং উ পুলু ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন মানিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ থেকে ভান মুন নোয়াম বমকে বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অং ছাইং উ পুলুয়ের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এর আগে সোমবার রুমা সদর ইউনিয়নের মুনলাইপাড়া থেকে ছয়জন এবং বান্দরবানের মিলনছড়ি পুলিশ চেকপোস্ট থেকে ভান বিয়াক লিয়ান বমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংক শাখায় ২ এপ্রিল রাতে ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, মসজিদে হামলা, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পাঁচটি মামলা হয়।
পরদিন দুপুরে বান্দরবানের থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এই ডাকাতির ঘটনায় চারটি মামলা হয়।
নয়টি মামলায় এ পর্যন্ত মোট ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ৫৬ জনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য