একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে সারা বিশ্বের মানুষকে শাস্তি দেয়া কোনোভাবেই উচিত নয় বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অবরোধ আরোপ করে কোনো দেশ বা জাতিকে যে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, সেটাও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
সারা বিশ্বের মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবে, অর্থনীতির কথা ভেবে রাশিয়ার ওপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার সকালে আটতলা অফিস ভবন উদ্বোধন এবং বঙ্গবন্ধু কূটনৈতিক উৎকর্ষ পদক প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আশা করি যে একটি দেশকে শাস্তি দিতে যেয়ে বিশ্বের মানুষকে শাস্তি দেয়া, এখান থেকে সরে আসাটা বোধ হয় বাঞ্ছনীয় এবং সেটা সবাই চাইবে। আমি এটা মনে করি।’
করোনাভাইরাস মহামারির অভিঘাত থেকে অর্থনীতি যখন পুনরুদ্ধার হতে শুরু করেছে, তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আবারও বিশ্ব অর্থনীতিকে ও বিশ্বের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘তার ওপর আমেরিকা যে স্যাংশন (অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা) দিয়েছে, এই স্যাংশন দেয়ার ফলে আমাদের পণ্যপ্রাপ্তিতে বা যেগুলো আমরা আমদানি করি, সেখানে বিরাট বাধা আসছে। শুধু তা-ই নয়, পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে এবং আমরা কোথায় আমাদের প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী পাব, সেই প্রাপ্তির ক্ষেত্রটাও সংকুচিত হয়ে গেছে।
‘আর এই প্রভাবটা শুধু বাংলাদেশ নয়, আমি মনে করি এটি আমেরিকা, ইউরোপ, ইংল্যান্ড থেকে শুরু করে সারা বিশ্বব্যাপী এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, মানুষ কিন্তু কষ্ট ভোগ করছে।’
পৃথিবীর মানুষ যে কষ্ট পাচ্ছে এই বিবেচনা বোধ উন্নত দেশগুলোর থাকা উচিত বলেও জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এটি আসলে উন্নত দেশগুলোর বিশেষভাবে বিবেচনা করা উচিত বা আমেরিকার এটি বিবেচনা করা উচিত। তারা যে স্যাংশন দিচ্ছে, তাতে যে তাদের দেশের লোকও কষ্ট পাচ্ছে, সেদিকেও কিন্তু তাদের দৃষ্টি দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
‘এই স্যাংশন যাদের বিরুদ্ধে দিচ্ছেন, তাদের আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাচ্ছেন, কিন্তু তারা আসলে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে? তার থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ হচ্ছে সব দেশে। সেই উন্নত দেশ, উন্নয়নশীল দেশ, সব দেশের মানুষ বা যারা নিম্ন আয়ের দেশ, সব দেশই কিন্তু কষ্ট পাচ্ছে।
‘কারণ করোনা মহামারি থেকে কেবল আমরা একটু উদ্ধার পাচ্ছিলাম, তখনই এই যুদ্ধ আর স্যাংশন। সত্যিই আমাদের জন্য বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি, স্যাংশন দিয়ে কোনো দেশ বা জাতিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। সেটা নিশ্চয়ই এখন দেখতে পাচ্ছেন। তার প্রভাবটা নিজেদের ওপর এসেও পড়ে। কাজেই এই স্যাংশন তুলে দেয়া এবং পণ্য পরিবহন আর যুদ্ধ যারা করতে থাকেন, কিন্তু পণ্য পরিবহন বা আমদানি-রপ্তানিটা যেন সহজভাবে হয় আর সাধারণ মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’
খাদ্য সারা বিশ্বের মানুষের সবচেয়ে ‘বড় চাহিদা’ বলেও মনে করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
তিনি বলেন, ‘সেখানে সমস্যায় পড়ে গেছে অনেক উন্নত দেশও। আজকে আমরা যেটা খবর পাই বিভিন্ন দেশ থেকে, আমাদের অনেক লোক সেখানে বসবাস করে, প্রত্যেকের জীবনটা দুর্বিষহ হয়ে যাচ্ছে। আর আমার দেশে, আমি সব সময় চেষ্টা করছি, আমাদের যে মাটি, মানুষ আছে, আমরা উৎপাদন বাড়াব। আমাদের খাদ্যটা যেন আমরা নিজেরাই উৎপাদন করে চলতে পারি, সে ব্যবস্থাটাও করব, সঙ্গে যদি কাউকে সাহায্য করতে পারি, সেটাও করব।’
উৎপাদন বাড়ানোর উপকরণের ঘাটতি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘উৎপাদন বাড়াতে গেলে আমাদের সার প্রয়োজন, আমাদের ডিজেল প্রয়োজন, আমাদের বিভিন্ন উপকরণ প্রয়োজন। সেটা আমরা পাচ্ছি না। কাজেই এভাবে মানুষকে কষ্ট দেয়ার কী অর্থ থাকতে পারে, আমি ঠিক জানি না।’
অবরোধ আরোপ করে মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গেও তুলনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এক দিক থেকে বলতে গেলে, এটাও তো মানবাধিকার লঙ্ঘন করার শামিল। কারণ মানুষের যে অধিকার আছে সেই অধিকার থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়।’
‘যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই’
বাংলাদেশ কখনও যুদ্ধ চাই না, বরং শান্তি বজায় রেখে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার পক্ষে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এখন শুধু রাজনৈতিক না, আমাদের অর্থনৈতিক কূটনীতিতেও গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ পৃথিবীটা এখন একটা গ্লোবাল ভিলেজ। আমরা একে অপরের ওপর নির্ভরশীল।
‘আমাদের সেভাবেই কাজ করতে হবে যে, সকলের সঙ্গেই মিলে আমরা কাজ করব, যেন মানুষের উন্নতি হয়। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।’
বাংলাদেশের অবস্থানটা সবসময় শান্তির পক্ষে জানিয়ে তিনি বলেন, “সবসময় আমরা শান্তি চাই। জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ সেই নীতিটা যথাযথভাবে আমি মেনে চলি, আমাদের রাষ্ট্র মেনে চলে।
“কারণ আমি সবসময় বিশ্বাস করি, আমার দেশের মানুষ, তাদের দারিদ্র্যমুক্ত করতে হবে। তাদের জীবনে মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের উন্নত জীবন দিতে হবে।”
ব-দ্বীপ বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে চলতে হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে সবসময় এই দেশ ঝুঁকিতে থাকে। কাজেই এ দেশের মানুষগুলোকে একটু সুন্দরভাবে বাঁচার ব্যবস্থা করে দেয়া, তার জীবনটাকে অর্থবহ করে দেয়া, এটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
সমুদ্রসীমায় অধিকার প্রতিষ্ঠা ও আলোচনার মাধ্যমে ছিটমহল বিনিময়ের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের যে সমস্ত সমস্যাগুলো ছিল আমরা কিন্তু সকলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এটা সমাধান করে আমাদের দেশের মানুষের অধিকারটা আমরা নিশ্চিত করেছি।’
নিজ নিজ দেশের প্রান্তিক মানুষের প্রতি আরও নজর দিতে উন্নত রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘কারণ আমার কাছে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমার দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি। তার জন্য সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রেখেই আমরা আমাদের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে চাই, তবে এটাও ঠিক আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য যতটুকু আছে, আমরা সেভাবেই চলতে চাই।
‘আমরা কারও কাছ থেকে অতিরিক্ত পয়সা নিই না। আমরা যতগুলো প্রজেক্ট হাতে নিই, প্রত্যেকটা প্রজেক্ট আমরা আগেই হিসাব করি, প্রজেক্ট থেকে রিটার্ন কী আসবে। শুধু একটা কিছু তৈরি করার জন্য আমরা করি না। একটা কাজ করলে মানুষ কতটা লাভবান হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যেন কোথাও কারও ওপর পরনির্ভরশীল হয়ে না পড়ি, আমরা যেন আত্মনির্ভরশীল থাকতে পারি এবং আমরা যেন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে এটাকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’
দুর্নীতিচেষ্টার মিথ্যা অভিযোগ এনে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়া, রাজনৈতিক বাদানুবাদের নানা দিক ওঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পারে, আমরা পারি, এটাই আমরা প্রমাণ করেছি। কাজেই আমি মনে করি এটা আমাদের দেশের মানুষের জন্য বিরাট অবদান হবে।’
রোহিঙ্গা ইস্যু
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও উন্নত দেশগুলোর সক্রিয় ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা মানবিক কারণে এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি, কিন্তু তিনটা বছর পূর্ণ হয়ে গেছে। আমাদের জন্য এটা আসলে একটা বিরাট বোঝা। একে তো করোনাভাইরাস, তার ওপর যুদ্ধ। এমন পরিস্থিতিতে উন্নত দেশগুলো যখন অর্থনৈতিকভাবে হিমশিম খাচ্ছে, এখানে আমাদের এই সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের ওপর আরেকটা বোঝা টানা যে কত কষ্টকর, সেটা সকলের উপলব্ধি করা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘এই রোহিঙ্গারা যেন নিজের দেশে ফিরে যেতে পারে, তাদের ছেলেমেয়েরা যেন তাদের দেশে মানুষ হতে পারে, তারা একটা ভালো পরিবেশে চলে যেতে পারে, এভাবে ক্যাম্পের জীবনযাপন যেন না করতে হয়, তাদেরও তো একটা মানবাধিকার আছে, কাজেই সে ব্যাপারে সকলেই একটু সক্রিয় হবেন, সেটা আমি আশা করি।’
আট তলা ভবন উদ্বোধন
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর, উইং ও শাখার জন্য স্থান সংকুলানের চাহিদা এই ভবনের মাধ্যমে অনেকাংশে পূরণ হবে এবং আধুনিক সুবিধাবিশিষ্ট কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সরকারের গণপূর্ত অধিদপ্তর ও স্থাপত্য অধিদপ্তর আট তলা ভবনটির নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। চার বছরে এ জন্য ব্যয় হয় ৭৭ কোটি টাকা।
পদক পেলেন দুই দূত
কূটনীতিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য এ বছর ‘বঙ্গবন্ধু কূটনৈতিক উৎকর্ষ পদক’ পেলেন পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন ও ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।
আরও পড়ুন:সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলের নৃশংসতার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
বাংলাদেশে সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ সিদকি আল-হাব্বাশের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। আজ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানা অনুযায়ী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন জানান।
ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. আল-হাব্বাশ বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের স্থায়ী সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
ফিলিস্তিনিদের নিরন্তর সমর্থনের জন্য দেশটির প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যের ওপরও জোর দেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আমন্ত্রণে ড. আল-হাব্বাশ তিন দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
মন্তব্য