স্বজনরা দেশের বাইরে, তিনি একাই থাকতেন দেশে। দুই সপ্তাহ ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার পর তাকে নিজ বাসায় পাওয়া যায় মৃত অবস্থায়। মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকদিন আগে। পুলিশ যখন উদ্ধার করে তখন গায়ে পোকা কিলবিল করছিল।
তার নাম ইকবাল উদ্দিন আহমেদ। পেশায় চিকিৎসক। রাজধানীর বড় মগবাজার এলাকার একটি বাসা থেকে তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জাতীয় জরুরি নম্বরে কল পেয়ে দরজা ভেঙে ঢুকে বাহিনীটি।
মঙ্গলবার রাতে ১২টার দিকে বড় মগবাজার ২২৭ নম্বর গ্র্যান্ড প্লাজা বাড়ির সাত তলার নিজ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে তার মরদেহটি উদ্ধার করার পর ময়নাতন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
সিদ্ধেশ্বরী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মোফিজুর রহমান বলেন, ৭২ বছর বয়সী ইকবালের স্ত্রী-মেয়ে দেশের বাইরে থাকেন। তাদের সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ ধরে কোনো যোগাযোগ হচ্ছিল না। ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পেয়ে রাতে ওই বাসা থেকে ডা. ইকবাল উদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ‘অর্ধগলিত মরদেহে পোকা ধরা অবস্থায় পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’
ইকবাল উদ্দিনের মেয়ের জামাই আরিফুর রহমান সিদ্দীক বলেন, ‘আমার শ্বশুর-শাশুড়ি (হাবিবা বেগম) ও মেয়েকে নিয়ে সৌদি আরব থাকতেন। তিনি দুইবার স্ট্রোক করেছেন। এজন্য গত ৫ থকে ৬ বছর আগে তিনি দেশে চলে আসেন। এরপর থেকে বড় মগবাজারের বাড়িটির নিজ ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রী-মেয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে । এরপর থেকে ফোনের রিং হলেও আর যোগাযোগ করতে পারছিলেন না।’
মঙ্গলবার ওই বাড়ির কেয়ারটেকার সার্ভিস চার্জের জন্য ওই বাসায় গিয়ে তাকে অনেক ডাকাডাকি করেন। ভেতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে এরপর থানা পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ দরজা ভেঙে ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। বাসার বাথরুমে উপুর হয়ে পড়েছিল মরদেহ।
পুলিশের ধারণা, অসুস্থতার কারণেই মৃত্যু হয়েছে তার।
আরও পড়ুন:বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে বাংলাদেশ তুলনামূলক অনেক এগিয়ে আছে বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম ‘অশ্রুঝরা আগস্টে শোকসঞ্জাত শক্তির অন্বেষা’ শিরোনামে এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি ড. মীজানুর রহমান।
প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে দেশকে দ্বিতীয় পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিরা। বঙ্গবন্ধুকে শোষিত মানুষের পক্ষে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তাই তাকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র হয়।’
দেশ আগের তুলনায় অনেক ভালো চলছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ এখন উন্নয়নের ছোঁয়ায় প্রতিনিয়ত নিজেদেরকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে।
‘ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেড়ে ওঠা নেতৃত্ব দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। তারা নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিদ্যুতের সংকটকে সামনে এনে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা চলছে। অথচ ২০০৮ সালের আগে দেশের মানুষ দুই-তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ পেয়েছে কিনা মনে করতে পারবে না। তাই রাস্তায় কেউ হারিকেন নিয়ে নামলেই দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে না।’
সেমিনারে নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, জাতীয় কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রশিদ আসকারী সহ ফোরামের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সিনিয়র সাংবাদিক বিভু রঞ্জন সরকার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস।
আরও পড়ুন:এসডিজি ও এমডিজির লক্ষ্যগুলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষা, শিল্প-বাণিজ্য, রাষ্ট্র পরিচালনা নীতিতে দেখা যায় বলে মন্তব্য করেছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন, কিন্তু সেই স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সে সময়ের নেয়া শিক্ষা নীতি, শিল্প-বাণিজ্য নীতি, রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিলে; তার সেসব নীতির মাঝে আজকের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা), এমডিজির (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) লক্ষ্যগুলোই দেখতে পাব আমরা।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদৎ বার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে রোববার দুপুরে এ আয়োজন ছিল।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার ফলে বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আজকে আমরাই আমাদের সম্পদ ব্যবস্থাপনা-নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি, যার সুযোগ করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুই। বাঙালির শত বছরের সংগ্রাম-ত্যাগের পর বঙ্গবন্ধুই দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।’
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক, ধর্মীয়, নৈতিকদর্শনসহ সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনে অবদানের প্রশংসা করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুষ্ঠু রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেন অধ্যাপক শিবলী। দেশের কৃষি, শিক্ষা, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অতুলনীয় নেতৃত্বের গুণের মাধ্যমে দেশের সকল সমস্যার সমাধান করে চলেছেন।’
এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের নিহত সদস্যসহ সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
জাতীয় শোক দিবসে সকলকে শহীদদের জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর শৈশব থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস আলোচনা করেন।
অধ্যাপক সামাদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের জন্য যেসব অবদান রেখেছেন, যা কিছু করেছেন; সেসব আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জানাতে হবে এবং ছড়িয়ে দিতে হবে।’
নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধুর আপোষহীন অবস্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৪৯ সালে ২৭ জনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। যাদের ২৬ জনই মুচলেকা দিয়ে ছাত্রত্ব ফিরিয়েছেন। একমাত্র বঙ্গবন্ধুই মুচলেকা দেননি, আপোষ করেননি।’
বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, আব্দুল হালিম, ড. মিজানুর রহমান, ড. রুমানা ইসলামসহ কমিশনের কর্মকর্তারা আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:দলে অনুপ্রবেশকারী 'হাইব্রিড’রা প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতাদের কোণঠাসা করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
রাজধানীর শাহবাগে এক অনুষ্ঠানে রোববার দুপুরে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মিলনায়তনে রোববার এক আলোচনা সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটি।
সভায় খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রায় ১৫ বছর একটানা ক্ষমতায়, এ সময়ে দলের মধ্যে অনেকের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। তাদের আমরাই ঢুকিয়েছি, পদ-পদবি দিয়েছি, আসন দিয়েছি। যারা বংশগতভাবে আওয়ামী লীগ করে, তাদের অনুপ্রবেশকারীরা এখন কোণঠাসা করে রেখেছে, একদম গোল করে ঘিরে রেখেছে।
‘যারা অরিজিনাল আওয়ামী লীগার তাদের বাইরে রেখে এখন অনুপ্রবেশকারীরা নেতা সেজেছে। এই অবস্থা চলতে দেয়া যাবে না। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সব খবর রাখেন। তিনিও এসব বিষয়ে নজরদারি করছেন এবং করবেন।’
মাঠের রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আন্দোলন-সংগ্রামে তারাই রাজপথে লাঠি নিয়ে থাকি। হাইব্রিডরা সেখানে যাবে না।
‘এই দেশের স্বাধীনতা এনেছেন আমাদের বাবা-চাচা, তাই স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। চোরার দলকে ক্ষমতায় গিয়ে বোমাবাজি, লুটপাট করতে দেয়া যাবে না। তাদের ফের হাওয়া ভবন বানানোর সুযোগ দেয়া যাবে না। আমরা তাদের রাজপথে মোকাবিলা করার জন্য তৈরি আছি।’
লিটন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ক্ষমতা গ্রহণের এক বছরের মধ্যেই দেশে অস্থিরতা তৈরি করা হলো বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের স্লোগান দিয়ে। কারা ছিলেন এর নেপথ্যে? পরাশক্তির ইন্ধন ছিল। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ির সামনে জাসদের মিছিল থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়, ঈদের জামাতে গুলি করে সংসদ সদস্যকে হত্যা করা হয়। ব্যাংক ডাকাতির পর জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হয়।
‘স্বাধীনতার পর থেকেই ষড়যন্ত্র চলে আসছে। কুড়িগ্রামের পাগল বাসন্তীর গায়ে মাছ ধরার জাকি জাল দিয়ে দুর্ভিক্ষের প্রচার করা হয়। অথচ সে জালের দাম তখনকার সময়ে একটি শাড়ির চেয়ে তিন গুণ। খাদ্যাভাব হতে পারে ভেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বঙ্গবন্ধু গম চাইলেন, খাদ্য সহায়তার সেই জাহাজ দেশের কাছাকাছি এসেও ফিরে চলে গেল। বিশেষ চক্র এভাবেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার ক্ষেত্র তৈরি করেছিল। রশিদ-হুদারা ছিল এ ক্ষেত্রে স্রেফ ভাড়াটিয়া খুনি। বিদেশি শক্তি বাদ দিলে জিয়াউর রহমান ছিল এ ক্ষেত্রে মাস্টার মাইন্ডের এক নম্বর।’
সভায় আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিশন গঠন এখন সময়ের দাবি। নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে, বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে কী ছিল, কারা পর্দার আড়ালে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল।’
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য সৈয়দ আবদুল আওয়াল শামীম, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্বদ্যিালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য পবিত্র সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমেদ, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ও সাংবাদিক আবেদ খান আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মানিলন্ডারিং মামলায় টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপক শাহ মো. জোবায়েরের ১২ বছরের দণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভূঞা রোববার এ রায় ঘোষণা করেন।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দেয়া হয়েছে। যা তার সম্পদ থেকে বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
টেলিটক থেকে চাকরিচ্যুত শাহ মো. জোবায়ের এখন পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
শাহ মো. জোবায়ের টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডে কর্মরত অবস্থায় ২০০৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত বেতনভাতা বাবদ ৫৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকা আয় করেন।
অন্যদিকে রাজধানীর উত্তরার এইচএসবি শাখায় সঞ্চয়ী হিসাবে বেতন বহির্ভূত দুর্নীতির মাধ্যমে ৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা করা হয় এফডিআররে।
এ ছাড়া প্রাইম ব্যাংক গুলশান শাখায় সঞ্চয়ী হিসাবে ৩৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা জমা করেন তিনি। যার মধ্যে ৩১ লাখ ২০ হাজার টাকার এফডিআর ও ৪ লাখ ২৭ হাজার ২৬৫ টাকা ৩৭ টাকা অন্য জায়গায় স্থানান্তর করেন।
এর বাইরেও আসামি ব্র্যাক ব্যাংক নর্থ গুলশান শাখায় সঞ্চয়ী হিসাবে ৪ কোটি ৭৮ লাখ, বেসিক ব্যাংক গুলশান শাখার হিসাবে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, ইসলামী ব্যাংক মিরপুর-১ শাখায় ৫ লাখ টাকা এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাংক গুলশান শাখায় ১০৩ দশমিক ০১ টাকা জমা ও উত্তোলন করেন।
এভাবে জোবায়ের বেতন-ভাতা ছাড়াও দুর্নীতির মাধ্যমে ৫ কোটি ৭৪ লাখ ৭০ হাজার ৬৮৭ টাকা নিজের নামে জমা ও অন্য স্থানে স্থানান্তের করেন। যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মধ্যে পড়ে।
এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিন গুলশান থানায় জোবায়েরকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১৮ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দেন কমিশনের সহকারী পরিচালক মুজিবুর রহমান। পরের বছর ১৩ জুন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য নেয় আদালত।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ‘ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ’ ব্যানারে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি পালনের বিরোধিতা করা শিক্ষার্থীরা ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ নামে নতুন ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকাল ৫টায় বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ায় স্মরণসভা করার ঘোষণা দিয়েছেন নতুন এই ব্যানারের সংগঠকেরা। সেই সঙ্গে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদনে বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া-মাহফিল আয়োজনের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনে অবিচল থাকবেন।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের উদ্যোগে শনিবার আয়োজিত কর্মসূচির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদকে ভিন্ন দিকে নেয়ার অপচেষ্টা চলছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমাদের গতকালের (শনিবার) কর্মসূচি কোনোভাবেই ক্যাম্পাসে আয়োজিত শোক দিবসের অনুষ্ঠানবিরোধী ছিল না। ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করেন। তার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আমরা সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সদা প্রস্তুত।’
রোববার দুপুরে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেয়া শিক্ষার্থী তার পরিচয় প্রকাশে রাজি হননি। এ সময় বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আবরার ফাহাদ হত্যার পর রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া বুয়েটে শনিবার সভা করে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন ছাত্রলীগের সাবেক একদল নেতা। এ ঘটনা নিয়েই পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এলেন শিক্ষার্থীরা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আমাদের কর্মসূচি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চলছে। এই অপপ্রচার আমাদের ভীত এবং একইসঙ্গে ব্যথিত করেছে।
‘আমরা বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু সর্বজনীন। তার চেতনা ধারণ করতে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের পরিচয় প্রয়োজন পড়ে না। বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে জাতীয় দিবসগুলোর অনুষ্ঠান নিয়মিত হয়ে আসছে।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকার পরেও শনিবার রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের ব্যানার দেখে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে জানান এবং কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামের সামনে অবস্থান নেন।
‘লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির কালো থাবা আমাদের নিরাপদ ক্যাম্পাসকে যেন পুনরায় ত্রাসের রাজত্বে পরিণত না করতে পারে, সেই আশঙ্কার জায়গা থেকে গতকাল আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমবেত হই। বিক্ষোভের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের ব্যানার ব্যবহার করার অনুমতি দেয়ায় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জবাবদিহি আদায় করা।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তাদের আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে বুয়েটের সব প্রশাসনিক ও একাডেমিক দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি, বুয়েটের সব শিক্ষার্থী এবং সাবেক শিক্ষার্থী ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর শাহজাহানপুর থানাধীন পাবনা কলোনিতে দেবরের বাসা থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শাহজাহানপুর থানা পুলিশ রোববার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করে।
৪৮ বছর বয়সী ওই গৃহবধূর নাম সাবিনা ইয়াসমিন। প্রকৌশলী স্বামীর সঙ্গে বনানীর ডিওএইচএসের একটি বাসায় থাকতেন এক ছেলের এ জননী।
শাজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ জানান, পাবনা কলোনির ওই বাসার পাঁচ তলা থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তার দেবরের কাছে জানতে পারি, নিহতের মানসিক সমস্যা ছিল। মানসিক কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানতে পেরেছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
গৃহবধূর দেবর ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘গত শুক্রবার ভাইয়ের বাসা থেকে ভাবী আমার বাসায় চলে আসেন। আজ সকালে বাসার সবার চক্ষু আড়াল করে রুমের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না প্যাঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ভাবী। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।’
তিনি বলেন, ‘আমার ভাবীর মানসিক সমস্যা ছিল। আমরা তাকে ডাক্তার দেখাচ্ছি। কী কারণে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, এ বিষয়ে আমরা কিছুই বলতে পারব না।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর গুলশান-২ গোলচক্কর এলাকার জাহিদ প্লাজার ১৪ তলায় জেনারেটর উঠানোর সময় পড়ে গিয়ে মো. শফিউর রহমান নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক রাত পৌনে ২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সহকর্মী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দিনমজুর হলেও সাধারণত আমাদের রাতে কাজ করতে হয়। গত রাতে আমরা কয়েকজন মিলে গুলশান-২-এর জাহিদ প্লাজার ১৪ তলা ভবনে একটি জেনারেটর উঠানোর সময় আমাদের সহকর্মী শফিউর পা পিছলে নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, শফিউরের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার ঠাকুরপাড়ায়। তিনি মো. ফরিদুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে মিরপুর-১১ লাইন-১ ৫/২১ নম্বর বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা ছিলেন তিনি। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।’
মন্তব্য