দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শ্রী শ্রী যশোমাধবের রথযাত্রা ঢাকার ধামরাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ৯ জুলাই রথের উল্টো রশি টানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এর আনুষ্ঠানিকতা।
শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে ৩৫১তম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রথের কার্যক্রম শুরু হয়।
ধামরাইয়ে শ্রী শ্রী যশোমাধব মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) জীবন কানাই দাশের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শাসসুল আলম।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার শ্রী বিক্রম কে দোরাইস্বামী, ঢাকা-২০ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদ, ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সরদার, ধামরাই পৌরসভার মেয়র আলহাজ গোলাম কবির মোল্লাসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
রথযাত্রা উপলক্ষে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে রথখলা এলাকায়। এ সময় হাজার হাজার নারী-পুরুষ চিনি-কলা ছিটিয়ে যশোমাধবের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দর্শনার্থী লক্ষ্মী চক্রবর্তী বলেন, ‘দুই বছর পর রথ উৎসবে অনেক মানুষ এসেছে। লোকসমাগম দেখে খুব ভালো লাগছে। আট দিন পর রথ টান হবে, মাসব্যাপী মেলা হবে। আমি প্রতিদিনই আসব।’
যশোমাধব মন্দিরের সহকারী পুরোহিত উজ্জ্বল গাঙ্গুলী জানান, প্রধান অতিথি রথযাত্রার জন্য পুরোহিতের হাতে প্রতীকী রশি প্রদান করলে রশি টেনে শ্রী শ্রী যশোমাধবকে তার কথিত শ্বশুরালয় পৌর এলাকার যাত্রাবাড়ী মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। যাত্রাবাড়ীতেই রথটি প্রতি বছরের মতো ৯ দিন অবস্থান করবে। ৯ দিন পর উল্টো রথ টেনে আবার আগের জায়গায় আনা হবে।
বরিশাল: শুক্রবার বিকেলে নগরীর ব্রজমোহন কলেজ রোডের শ্রী শ্রী শংকর মঠের রাধা শ্যাম সুন্দর মন্দিরে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
সেখান থেকে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) উদ্যোগে রথযাত্রা বের করা হয়। প্রতি বছরই একটি রথে করে বলদেব, সুভদ্রা ও জগন্নাথকে নিয়ে যাত্রা হলেও এবার তিনটি ভিন্ন রথে এই যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এবার প্রথম রথে বলদেব, পরে সুভদ্রা এবং শেষে জগন্নাথ দেবের রথ ছিল।
রথযাত্রাটি জেলখানার মোড় হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে অমৃতাঙ্গনে এসে শেষ হয়। এক সপ্তাহ পর এখান থেকেই উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
নীলফামারী: শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে নীলফামারী জেলা শহরের গাছবাড়ি থেকে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) উদ্যোগে রথযাত্রাটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কালিবাড়ী মন্দিরে এসে শেষ হয়।
গাছবাড়িতে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ।
এতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারী কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট অক্ষ্ময় কুমার রায়, নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান সান্ত্বনা চক্রবর্তী ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার রায় বক্তব্য দেন।
ইসকন জেলা সভাপতি ভবদেস রায় উদ্বোধনী আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন।
এ ছাড়া শহরের কালেক্টরেট চত্বরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শিব মন্দির প্রাঙ্গণে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদের প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন। এতে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় শিব মন্দির কমিটির সভাপতি তিমির কুমার বর্মন। বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাহারুল ইসলাম।
পরে ভক্তরা রথ নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিলন পল্লী মন্দিরে যান।
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরেও শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উদযাপন করা হয়েছে। বিকালে এক বর্ণাঢ্য রথযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে সকালে রথযাত্রা উপলক্ষে শহরের ইসকন মন্দিরে বিশ্ব শান্তি কামনায় যজ্ঞসহ বিভিন্ন মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ, পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শংকর মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক স্বপন চন্দ্র নাথ।
এর আগে আলোচনা সভায় লক্ষ্মীপুর ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ সখাবেশ বলরাম গোপাল দাস ব্রহ্মাচারীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসকনের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মাচারী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মাচারী, ঢাকা রাধা রমন মন্দিরের অধ্যক্ষ শুভ নিতাই দাস ব্রহ্মাচারী, লক্ষ্মীপুর ইসকন মন্দিরের প্রধান উপদেষ্টা কেশব দাস, বাংলাদেশ ইসকনের প্রধান পুরোহিত মাধব মুরারী দাস ব্রহ্মাচারী।
রথযাত্রায় শাড়ি, ধুতি, পাঞ্জাবি, ফতুয়াসহ নানা রঙের পোশাকে সেজে অংশগ্রহণ করে নানা বয়সী পূণ্যার্থীরা।
বাগেরহাট: শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের লাউপালায় গোপাল জিউর মন্দিরে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই রথযাত্রায় অংশ নেয় সনাতন হিন্দু ধর্মের হাজার-হাজার ভক্ত পূণ্যার্থী।
লাউপাল ছাড়াও বাগেরহাট শহরের রাধেশ্যাম মন্দির, গোবিন্দ মন্দির, কচুয়ার শিবপুর ও রামপালের হুড়কায় শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
লাউপালায় রথযাত্রা উপলক্ষে মাসব্যাপী মেলায় পুতুল নাচ, সার্কাসসহ দেশীয় ঐতিহ্যবাহী চারু-কারু ও মৃৎশিল্পের বাহারি পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানিরা।
পটুয়াখালী: শুক্রবার দুপুরে বৈদিক যজ্ঞানুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির (ইসকন)-এ সাত দিনব্যাপী রথযাত্রা উৎসবের সূচনা হয়েছে। এ সময় ভক্ত সমাগমে মন্দির চত্বর পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
যজ্ঞের আগুনে বিভিন্ন দ্রব্য আহুতি এবং বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে পুরোহিতরা দেশ ও জাতির শান্তি ও কল্যাণ কামনায় ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন। বিকেলে মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথটি যাত্রা শুরু করে শহর প্রদক্ষিণ করে।
নাটোর: শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে নাটোর শহরের বড়গাছা পালপাড়া মন্দির কমিটির আয়োজনে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রথযাত্রা উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল।
বিকেলে শহরের রানি ভবানী রাজবাড়ির শ্যামসুন্দর মন্দির থেকে প্রাচীন রথের যাত্রা শুরু হয়। মন্দির কমিটির আয়োজনে দড়িতে টান দিয়ে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জুবায়ের ও পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি। শত শত নারী-পুরুষ ভক্তবৃন্দ রথের দড়ি টেনে নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে লালবাজার এলাকায় জয় কালিবাড়ী মন্দির প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
এ ছাড়া উপর বাজার শ্রী শ্রী মদন গোপাল মন্দির ও ইসকন মন্দিরের আয়োজনে আরও দুটি রথ বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিজ নিজ মন্দিরে ফিরে যায়। সাত দিন পর আবারও উল্টো রথে দেবতা ফিরে যাবেন রানি।
আরও পড়ুন:ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।
সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।
এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।
হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাবের গোয়েন্দা দল।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য