মান ও মর্যাদার জন্য শিক্ষকতায় এসেছি, এখন দেখি জীবনও নেই বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্বদ্যিালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার সাইদ।
তিনি বলেন, ‘অনেক দিন আগে সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমা দেখেছিলাম। সেখানে হীরক রাজা সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে বলেছিলেন, বিদ্যাশিক্ষা লোকসান, এতে নাই অর্থ, নাই মান।’
সাভারে শিক্ষক হত্যা ও নড়াইলে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বৃ্হস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. সজীব কুমার ঘোষের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে শিক্ষকরা ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। একই সঙ্গে শিক্ষকদের নিরাপত্তা ও সঠিক মর্যাদা নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার বলেন, ‘সাভারে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হলো, অথচ মারধরের সময় কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলো না।
‘অন্যদিকে নড়াইলে স্বপন কুমার বিশ্বাস পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশকে ফোন দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কীভাবে পারল একটা কলেজের অধ্যক্ষকে এভাবে নির্যাতন করতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কল্পনা করুন, শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দিয়েছে, তার ছবি তোলা হচ্ছিল, এ সময় তিনি মুখটা বন্ধ করে রেখেছিলেন। সেখানে আশপাশে পুলিশ সদস্য ছিল, তারা একনিষ্ঠভাবে তাকিয়ে ছিলেন কিন্তু কিছু করেননি।
‘পুলিশ কীভাবে সহ্য করল একজন অধ্যক্ষকে এভাবে অপমান করা। আমি ধিক্কার জানাই ওই কলেজের সবাইকে। এসব সহ্য করতে পারছি না। এসব ঘটনার বিচার চাই দ্রুত।’
সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, ‘ছাত্ররা কেন উদ্ধত হয়ে যাচ্ছে এর বিশ্লেষণ প্রয়োজন। যে ছাত্ররা এইসব ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তারা একজনের জীবন নিয়েছে (উৎপল কুমার বিশ্বাস), আরেকজনকে জীবন্ত রেখেও মৃত বানিয়ে ফেলেছে।
‘যাদের জন্য এইসব ঘটনা ঘটেছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে হবে। আইন সব দেশেই আছে। আইনের যথার্থ বাস্তবায়ন না হলে অরাজকতার সৃষ্টি হয়। আমার মনে হয় আমাদের দেশেও তাই হচ্ছে।’
একজন শিক্ষক যদি অপদস্থ হয়, সমগ্র জাতি অপদস্থ হয়। বঙ্গবন্ধু শিক্ষকদের অনেক মর্যাদা দিতেন। শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষিত হোক আর ওই কুলাঙ্গারদের ফাঁসি নিশ্চিত করা হোক বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বদ্যিালয়ের ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য।
মানববন্ধনে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তাপসী ঘোষ বলেন, ‘মহান শিক্ষকতাকে পেশা পছন্দ করেছি। কিন্তু যখন দেখি, শিক্ষক ছাত্রের হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন, তখন ঘৃণা ও লজ্জায় মুখ কোথায় রাখি।’
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. সজীব কুমার ঘোষ বলেন, ‘কোন সমাজের দিকে যাচ্ছি আমরা। আমরা সবাই শিক্ষক, জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আমাদেরও করণীয় আছে। মানববন্ধন থেকে আমরা এই ঘটনাগুলোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
আরও পড়ুন:গুচ্ছভুক্ত দেশের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ‘বি’ ইউনিটের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় ৮২.২৫ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন দিগন্ত বিশ্বাস। অর্থনীতি নিয়ে লেখাপড়া করতে চান এই মেধাবী।
দিগন্ত বিশ্বাস দিনাজপুরের পার্বতীপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন। এছাড়া জ্ঞানাঙ্কুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪ দশমিক ৪৪ জিপিএ নিয়ে এসএসসি পাস করেন দিগন্ত। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় তার কেন্দ্র ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
অনুভূতি প্রকাশ করে দিগন্ত বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম হওয়ার অনুভূতিটাই অন্যরকম, সবার অনুপ্রেরণাই আমার এই সফলতার মূল কারণ। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আমার এই সাফল্য।
‘আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও চান্স পেয়েছি। গুচ্ছতেও হয়েছে। এখন সময় যেহেতু আছে তাই ভাবনা-চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেব। দুটোর মধ্যে গুচ্ছে আমার অগ্রাধিকার থাকবে। আর গুচ্ছের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অবশ্যই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। অর্থনীতি নিয়ে পড়তে চাই। ভবিষ্যতে অর্থনীতি নিয়ে কিছু করতে চাই।’
তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট দিগন্ত ছোটবেলা থেকেই দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বেড়ে উঠেছেন। তার বড় বোন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে লেখাপড়া শেষ করে আইনজীবী পেশায় কর্মরত। বড় ভাই রুয়েট থেকে পাস করে বর্তমানে আমেরিকায় পিএচডি করছেন। পাশাপাশি অ্যাপল-এ চাকরি করছেন। তার মা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা। বাবা প্রায় ১৪ বছর আগে মারা গেছেন। তিনিও শিক্ষক ছিলেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা (ম্যানিজিং) কমিটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশ করার বিধান অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। এর ফলে কমিটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য কোনো সুপারিশ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী।
মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেয় বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।
আদালতে রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০০৮ ও ২০১৯ সালের দুটি প্রজ্ঞাপন রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে- প্রাথমিক স্কুল পরিচালনা কমিটিতে দুজন বিদ্ব্যৎসাহী (নারী ও পুরুষ) সদস্য থাকবেন, যাদের নাম প্রস্তাব করবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য।’
এই আইনজীবী বলেন, ‘সাধারণত একজন সংসদ সদস্য যখন কারও নাম প্রস্তাব করেন তখন তাকেই সভাপতি করা হয়। তাহলে নির্বাচনের তো আর প্রয়োজন হয় না। এ কারণে ওই প্রজ্ঞাপনের ২(২) ধারা চ্যালেঞ্জ করে শহীদুল্লাহ নামে একজন অভিভাবক হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেছিলেন।
‘আজ রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুলটিকে যথাযথ ঘোষণা করে আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত বলেছেন, প্রাথমিক স্কুল পরিচালনা কমিটিতে কারা থাকবেন সে ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য পরামর্শ বা কারও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন না।’
এর আগে ভিকারুনিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির বিষয়ে আদালত যে আদেশ দিয়েছিল অনুরূপ আদেশ হয়েছে বলে জানান রিটকারীর পক্ষের এই আইনজীবী।
আরও পড়ুন:নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ড ঢেলে সাজানো হয়েছে। পুরাতন ও বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন ট্রাস্ট্রি বোর্ড গঠন করে একটি আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিদায়ী ট্রাস্টি বোর্ড সদস্যদের অনেকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ লোপাট, জঙ্গিবাদ বিস্তারে ভূমিকা রাখা, যৌন হয়রানি, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এসেছে। এসব কারণে দেশের শীর্ষস্থানীয় এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন করা হলো।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুসারে এ বিশ্ববিদ্যালয়টির ১২ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড নতুন করে গঠন করে মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করে।
এ আদেশের মাধ্যমে মূলত বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানায় বড় ধরনের পরিবর্তন এলো। দেশের কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এ ধরনের সিদ্ধান্ত এবারই প্রথম।
নতুন ট্রাস্টি বোর্ডে উদ্যোক্তা ট্রাস্টি হিসেবে আছেন টি কে গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম এ কালাম, কনকর্ড ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের চেয়্যারম্যন ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম কামাল উদ্দিন, আবুল খায়ের গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবুল কাশেম, মিনহাজ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ইয়াসমিন কামাল, বেক্সিমকো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আহমেদ সোহেল ফসিউর রহমান ও ইউনাইটেড ফসফরাস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফৌজিয়া নাজ।
নতুন ট্রাস্টি বোর্ডে শিক্ষাবিদ হিসেবে আছেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম। আর উদ্যোক্তা ট্রাস্টির উত্তরাধিকারী হিসেবে বোর্ডে আছেন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সিনিয়র ইকনোমিস্ট ড. জুনাইদ কামাল আহমাদ, ইনকনট্রেড লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর হারুন, উদ্যোক্তা জাভেদ মুনির আহমেদ, ফাইজা জামিল ও শীমা আহমেদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি কেনায় অর্থ আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রভাবশালী চার ট্রাস্টি সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহানকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে আদালত। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে এক ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন করতে পারেন। অথচ প্রতি মাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা বাবদ প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়।
সরকারি আদেশে বলা হয়েছে, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের (বিওটি) কিছু সদস্য ও অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকালাপ, জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িত বলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তদন্তে প্রমাণিত হয়, যা দেশের প্রচলিত আইনের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি ক্রয় প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিওটির চারজন সদস্য জমি কেনায় আর্থিক দুর্নীতি করায় দুদকের মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে বর্তমানে কারাবন্দি রয়েছেন। তা ছাড়া ট্রেজারার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারি নথি জালিয়াতির ঘটনায় একজন ট্রাস্ট্রির বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজে অন্তর্ভুক্ত থাকা সমীচীন নয় বলে মনে করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ পূর্ণাঙ্গভাবে পরিচালনা করতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা ও পরিচালনা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং সরকারের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সম্মিলিত সভার সুপারিশ বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর উদ্যোক্তা ট্রাস্টি ও উদ্যোক্তা ট্রাস্টির উত্তরাধিকারীদের সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
সরকারের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে দেশের অন্যতম শীর্ষ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ পর্ষদ থেকে বাদ পড়লেন প্রভাবশালী সদস্য আজিম উদ্দিন আহমেদ, রেহানা রহমান, এম এ কাশেম, মোহাম্মদ শাজাহান ও বেনজীর আহমেদ। তারা প্রত্যেকেই একাধিকবার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। এই পাঁচ সদস্য গত দেড় দশক ধরে ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকের ভূমিকায়। তাদের মেয়াদে জমি কেনার নামে অর্থ আত্মসাৎ, বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় গাড়ি ও ভ্রমণবিলাস, অবৈধভাবে মোটা অংকের সিটিং অ্যালাওয়েন্স গ্রহণের মতো বড় বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি ঘটে নর্থ সাউথে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টিদের অনিয়ম তদন্ত করতে গিয়ে জমি কেনা বাবদ কয়েকশ কোটি টাকার অনিয়ম খুঁজে পায় দুদক।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের জমি কেনায় অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়টির পাঁচ ট্রাস্টিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ পাঁচ ট্রাস্টি হলেন- আজিম উদ্দিন আহমেদ, রেহানা রহমান, এম এ কাশেম, মোহাম্মদ শাহজাহান ও বেনজীর আহমেদ। আর বাকি একজন হলেন আশালয় হাউজিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।
এ মামলায় জামিন চেয়ে গত ২২ মে আদালতে হাজির হলে চার ট্রাস্টিকে শুরুতে পুলিশের হেফাজত এবং পরে কারাগারে পাঠায় আদালত। তারা এখনও জামিন পাননি।
১৯৯২ সালে দ্য নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ট্রাস্ট গঠনকালে এর সদস্য সংখ্যা ছিল ২৩। এর মধ্যে ১৬ জন ছিলেন ‘প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্য’। আর বাকি সাত জন সাধারণ সদস্য। ট্রাস্ট ডিড অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠাতা আজীবন সদস্যদের মৃত্যুর পর তাদের উত্তরসূরী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি হবেন। আর সাধারণ সদস্যদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর পর তাদের সদস্যপদ থাকবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যমতে, বিওটিতে সদস্য সংখ্যা ১৫। এছাড়া উপাচার্য আইনি ক্ষমতাবলে বিওটির সদস্য।
ট্রাস্টি বোর্ডে আকস্মিক এ পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান জামিল আহমেদের মোবাইল ফোনে কল করে এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে চা শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা চা শ্রমিকদের দৈনিক ১২০ টাকা মজুরি ব্যবস্থার তীব্র নিন্দা জানান এবং শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনকে ন্যায়সংগত উল্লেখ করে তাদের দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা করার দাবি জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী শিপন বারেক বলেন, ‘বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবন বিপন্ন। এখন দৈনিক ১২০ টাকা মজুরিতে একজন মানুষের সংসার কেমনে চলবে? এই টাকা দিয়ে তিনবেলা খাবারের জোগান হবে না। তা হলে কীভাবে বাকি চাহিদাগুলো তারা পূরণ করবে? আমাদের দাবি, ৩০০ টাকা নয়, তাদের যেন ৫০০ টাকা দৈনিক মজুরি দেয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই দেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হোক। মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ সবাই যাতে সন্তুষ্ট থাকে। এই চা শ্রমিকরা অনেক নির্যাতিত। কেউ যাতে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় এটিই আমাদের দাবি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী সুদিপ্ত সরকার বলেন, ‘সিলেটের সৌন্দর্য দেখে আমরা মুগ্ধ হই, সাত রঙের চা খেয়ে আমরা মুগ্ধ হই। কিন্তু তার পেছনের শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্ট আমরা দেখি না। এটি আমাদের হৃদয়ে দুঃখের সঞ্চার করে।’
১২০ টাকা দিয়ে পরিবার চালানো সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এত কম টাকায় তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন কখনই সম্ভব নয়। আমরা তাদের বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী স্বপন নাইড়ু মালিকপক্ষকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘চা শ্রমিকরা তো মাত্র ৩০০ টাকা মজুরি চায়। এটি তো খুব বেশি না। তাদের দাবি মেনে নিন। এই শ্রমিকেরা যদি আন্দোলন শুরু করে, তারা যদি কাজ বন্ধ করে দেয় তাহলে শত কোটি টাকা থেকে আপনাদের ফকির বানাতে বেশি সময় লাগবে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষার্থী ছাড়াও জগন্নাথ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চা শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণসভা করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে সোমবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও শোক দিবস উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা এই শোকসভার আয়োজন করেন।
সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করেন।
শিক্ষার্থীরা দুপুরে পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন। আসরের নামাজের পর বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া মাহফিল হয়।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সন্ধ্যা ৬টার দিকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর স্মরণ সভা।
যন্ত্রকৌশল বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিয়াত রিজওয়ানা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ নিয়ে স্মৃতিচারণ পড়েন।
এরপর বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ থেকে ১৯৫২ সালের একটি ঘটনা পড়ে শোনান ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাসমিয়া আফরিন তাসমীন।
বক্তব্য দেন যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এবং ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের সহকারী পরিচালক ড. মো. আশিকুর রহমান।
বাংলাদেশ আইসিটি ডিভিশনের নির্মাণ করা মুজিব আমার প্রেরণা শিরোনামের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
অনুষ্ঠান আয়োজকদের মধ্য থেকে রাফিয়াত রিজওয়ানা বলেন, ‘আমাদের হাতে সময় কম ছিল, এই সময়ের মধ্যে আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাইনি।’
এ বিষয়ে জানতে বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদারকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আরও পড়ুন:বিশ্বব্যাপী জ্বলানি সংকট ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য আগামী বছর নতুন শিক্ষাক্রমে সপ্তাহে পাঁচ দিন ক্লাস হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
সোমবার বিকেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
দীপু মনি বলেন, ‘পাঁচ দিনের মধ্যেই ক্লাসগুলোকে এমনভাবে বিন্যাস করতে চাই, যাতে শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের সমস্যা না হয়।’
এ সময় কাগজের সংকট ও দাম বাড়ার ফলে নতুন বছরে বই ছাপানোর কাজটিকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আখ্যায়িত করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘চেষ্টা করছি যেন আমরা সময়মতো বই-পুস্তক দিতে পরি।’
এ ছাড়া আগামী মাস থেকেই লোডশেডিং কমে যাবে কিংবা থাকবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
দীপু মনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেখানে যদি আমরা এখন থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাসগুলো পাঁচ দিন করি তাহলে এক দিন সাশ্রয়ের সুযোগ পাব। অর্থাৎ শহরে এক দিন শিক্ষার্থীদের স্কুলে আনা-নেয়ার জন্য যে পরিমাণ যানবাহন চলে সেটারও সাশ্রয় হবে।’
তবে এখনও এই বিষয় সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, চাঁদপুর নৌ পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, পিআইবি পুলিশ সুপার রেজওয়ানা নূর, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এম এ ওয়াদুদ, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার প্রমুখ।
আরও পড়ুন:‘ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত শোক সভা আয়োজনে বিরোধিতার মুখে পড়ার দুই দিন পরই বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক জমায়েতের আয়োজন করল সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনটি।
জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় শনিবার রাতে ছাত্রলীগের কর্মসূচির বিরোধিতাকারীদের দেখা যায়নি।
সোমবার বেলা একটার দিকে ছাত্রলীগের ২০ থেকে ৩০ জন নেতা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দেন। বেলা দেড়টার দিকে আসেন বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
এ সময় সংগঠনের কোনো ব্যানার ব্যবহার করা হয়নি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে। যদিও শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আনা ফুলে ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ’ এবং ‘বুয়েটের সাবেক ছাত্রলীগ’ লেখা ছিল।
নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ‘শিবিরের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘জঙ্গিবাদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘জামায়াত-শিবির, রাজাকার, এই মূহূর্তে বুয়েট ছাড়’ ইত্যাদি স্লোাগান দেন।
বুয়েট ছাত্রলীগের সত্তর ও আশির দশকের সাবেক নেতারা গত শনিবার বুয়েটে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করলে সেখানে ব্যাপক হাঙ্গামা হয়। একদল শিক্ষার্থী ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এই বুয়েটে হবে না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে সভাস্থলের বাইরে অবস্থান নেয়।
রাত ৮টার দিকে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা যখন ক্যাফেটরিয়া থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্রলীগের ঠিকানা এই বুয়েটে হবে না’ বলেও স্লোগান দেন।
এই ঘটনা ছাত্রলীগকে ক্ষুব্ধ করে। তারা অভিযোগ করতে থাকে, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও বুয়েটে শিবির ও ধর্মভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাম ব্যবহার করে তারাই এই বিক্ষোভ দেখিয়েছে।
এরপর থেকে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বুয়েটে আবার রাজনীতি করার সুযোগ দেয়ার দাবি জানাতে থাকে। সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন নেতা-কর্মীদের পিটুনিতে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে মারা যান আবরার ফাহাদ নামে এক শিক্ষার্থী। এর প্রতিক্রিয়ায় বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।
গত ৮ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতের এক রায়ে এই ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়, যাদের সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের আয়োজনকে ঘিরে বিক্ষোভকারীরা আবরার হত্যার বিষয়টি সামনে এনেছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ছাত্রলীগের সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক শেখ স্বাধীন শাহেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামধারী জামায়াত-শিবিরের প্রেতাত্মারা কয়েকদিন আগে আমাদের বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দকে অপমান করেছেন। তাদেরকে বার্তা দিতেই আমরা এখানে এসেছি। আমাদের বার্তা এই যে, যেখান থেকে যেভাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নাম মুছে ফেলতে চেষ্টা করবে, তাদেরকে আমরা এক বিন্দুও ছাড় দেব না।’
বুয়েটের সাবেক সভাপতি হাবিব আহমেদ হাবিব মুরাদ বলেন, ‘মুক্তবুদ্ধি ও বিজ্ঞানচিন্তার অন্যতম পীঠস্থান বুয়েট। অথচ এইখানে অবিজ্ঞানমনষ্ক জামায়াত-শিবির এবং জঙ্গিবাদের বীজ বপন হচ্ছে। আমরা শপথ নিতে চাই বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিবাদের সকল আস্তানা নির্মূল করব। বুয়েট প্রশাসনের প্রতি আবেদন, এই বুয়েটকে বিজ্ঞানমনষ্কতার পথে পরিচালিত করতে হবে।’
‘আমরা কেউ ভেসে আসিনি’
বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী খাইরুল বাশার বলেন, ‘সেদিন আমাদেরকে যারা বাধা দিয়েছে তারা জামায়াত-শিবিরের প্রেতাত্মা। এই প্রেতাত্মারা সেদিন অনলাইনে বুয়েটের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে জড়ো করেছে। এই প্রেতাত্মাদের হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হবে ‘
তিনি বলেন, ‘আমরা এই বুয়েটের শিক্ষার্থী। আমরা কেউ ভেসে আসিনি। ছোট ভাইদের বলব, তোমরা পড়ালেখা কর, শিক্ষা, শান্তি, প্রগতির পথে আসো।’
সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘গতকাল শিক্ষার্থীদের প্রেস ব্রিফিংয়ে একজন শিক্ষার্থীকে বলতে শুনেছি ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সংগঠন। কে বলে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সংগঠন? ছাত্রলীগকে চেন তুমি? এই সংগঠনের ইতিহাস জান তুমি? কী বলো তুমি? আমাদের শেষ রক্ত থাকা পর্যন্ত এটির বিচার এই বুয়েটে ক্যাম্পাসে হবেই হবে।
‘যারা এই ঘটনার কুশীলব তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। সেদিন আমাদের সঙ্গে যেটা করা হয়েছে সেটা অন্যায় করা হয়েছে। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য আমরা এখানে এসেছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য